Ajker Patrika

আপনারাই সহিংসতা ছড়াচ্ছেন, আপনারাই সন্ত্রাস করেন: মির্জা ফখরুল

নিজস্ব প্রতিবেদক, খুলনা
আপডেট : ২২ অক্টোবর ২০২২, ২১: ১১
আপনারাই সহিংসতা ছড়াচ্ছেন, আপনারাই সন্ত্রাস করেন: মির্জা ফখরুল

চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহের মতো খুলনার গণসমাবেশ থেকেও সরকারের পদত্যাগ এবং নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবি জানিয়েছে বিএনপি। আর তা হলে, জনগণের দুর্বার আন্দোলনের মাধ্যমে শেখ হাসিনার সরকারকে পদত্যাগে বাধ্য করা হবে বলে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এই স্বৈরাচারী সরকারকে হটাতে বাংলাদেশের মানুষ আজ জেগে উঠেছে। শত ভয়ভীতি, বাধা-বিপত্তি এবং হামলা-মামলায় আর জনগণ ভয় পায় না। তারই প্রমাণ খুলনার এই বিশাল গণসমাবেশ। এই গণসমাবেশের যে দাবি, তা মেনে নিয়ে সরকারকে স্বেচ্ছায়, মানে মানে কেটে পড়া উচিত। অন্যথায় এই অবৈধ সরকারকে কীভাবে নামাতে হয় তা জনগণের আন্দোলনই ঠিক করে দেবে।’

বিএনপির বিভাগীয় পর্যায়ে চলমান আন্দোলন কর্মসূচির অংশ হিসেবে আজ শনিবার বিকেলে খুলনা নগরীর সোনালী ব্যাংক চত্বরের যশোর মহাসড়কে গণসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন ফখরুল।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘রক্ত দিচ্ছেন, তা আমাদের অধিকার আদায়ের জন্য, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করার জন্য। আমরা স্বাধীনতা যুদ্ধ করেছিলাম, গণতন্ত্র ও মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা, অর্থনৈতিক মুক্তির জন্য। কিন্তু শেখ হাসিনার সরকার আমাদের সে অধিকার ও গণতন্ত্র নস্যাৎ করেছে। দেশকে আজ নরকে পরিণত করেছে। অর্থনৈতিক ব্যবস্থা ধ্বংস করেছে। তারা জনগণের ভোট চুরি করে ক্ষমতায় গেছে। মধ্য রাতে ভোট ডাকাতি করে অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করে আছে। গণতন্ত্র নস্যাৎ করেছে, আমাদের সকল অর্জন ধ্বংস করেছে। আবার ২০২৩ সালে নির্বাচন আসছে। সে নির্বাচনে জয়লাভ করার জন্য ষড়যন্ত্র শুরু করেছে।’ 

চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহের মতো খুলনার গণসমাবেশ অসংখ্য নেতা-কর্মীরা অংশগ্রহণ করেন। ছবি: আজকের পত্রিকাআওয়ামী লীগের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন কোনোভাবেই সম্ভব নয় মন্তব্য করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আওয়ামী লীগ কখনো গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে না। তারা গণতন্ত্র নষ্ট করে দিয়েছে। এই সরকার দেশের ভোট ব্যবস্থাকেও ধ্বংস করে দিয়েছে। এ থেকে প্রমাণিত হয়, দলীয় সরকারের অধীনে কখনো সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। তাই এই সরকারকে হটিয়ে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন করতে বাধ্য করা হবে।’ 

ফখরুল বলেন, ‘বর্তমানে যে নির্বাচন কমিশন গঠন করা হয়েছে, তা শেখ হাসিনার তৈরি করা নির্বাচন কমিশন। বর্তমান নির্বাচন কমিশন একটা নিরপেক্ষ হাব-ভাব দেখিয়ে তার প্রমাণ করতে চাইছেন, তারা স্বাধীন। নির্বাচন কমিশনের কথা ডিসি, এসপিরা শোনে না। এই নির্বাচন কমিশন দিয়ে কোনো কাজ হবে না। এই জন্য এই নির্বাচন কমিশন নিয়ে আমরা কোনো কথা বলছি না। শেখ হাসিনা সরকারের পদত্যাগ এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন হতে হবে। এই লক্ষ্যেই আমরা আন্দোলন করছি।’ 

বিভিন্ন দুর্নীতি ও লোডশেডিংয়ের কথা তুলে ধরে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এই সরকার মেগা প্রকল্পের নামে মেগা দুর্নীতি করেছে, শেয়ার বাজারে হাজার হাজার কোটি টাকা লুটপাট করেছে। বিদ্যুৎ সেক্টরে হাজার হাজার কোটি টাকা লুটে নিয়ে আজ বিদ্যুৎ দিতে পারছে না। বিদ্যুতের উন্নয়নের নামে দিনে ৫ / ৬ বার লোডশেডিং করা হচ্ছে।’ 

তিনি আরও বলেন, ‘১৯৭৪ সালে আওয়ামী লীগের দুঃশাসনে দেশে দুর্ভিক্ষ হয়েছিল। ইদানীং শেখ হাসিনা দেশে দুর্ভিক্ষের পদধ্বনির কথা বলছেন। কিন্তু কিছুদিন আগে তিনি বলেছিলেন, বাংলাদেশে খাদ্য সংকট হবে না। শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আসার আগে বলেছিল, তারা ১০ টাকা কেজি দরে চল খাওয়াবে। সেই চালের দাম এখন ৯০ টাকা হয়েছে। তারা বলেছিল, ঘরে ঘরে চাকরি দেবে। এখন চাকরি পেতে হলে আওয়ামী লীগের লোকজন ২০ লাখ টাকা ঘুষ নেয়। এরা মিথ্যা প্রচার করে, জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করে। দেশে প্রতিটি জিনিসের দাম বাড়িয়েছে। তারা উন্নয়নের নামে হাজার হাজার কোটি টাকা চুরি করে, লুট করে বিদেশে টাকা পাচার করেছে। আর আমরা জনগণ কষ্টে আছি। বর্গিরা এসে আমাদের সবকিছু লুট করে নিয়ে যাচ্ছে। এরা বর্গি।’

বিএনপির মহাসচিব অভিযোগ করে বলেন, ‘আমরা শান্তিপূর্ণভাবে সমাবেশ করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু আমাদের সমাবেশ পণ্ড করতে ক্ষমতাসীন দলের পেটোয়া বাহিনী এবং পুলিশ আমাদের নেতা-কর্মীদের ওপর বিভিন্ন জায়গায় ধরপাকড়, গ্রেপ্তার ও হামলা করে আহত করেছে। এর বিচার একদিন হবেই। আমরা তো শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করছি, আপনারাই সহিংসতা ছড়াচ্ছেন। আমাদের সমাবেশ পণ্ড করতে আপনারা পরিবহন ধর্মঘট ডেকেছেন। আপনারাই সন্ত্রাস করেন।’

সমাবেশে আরও বক্তৃতা করেন, দলের স্থায়ী কমিটির অন্যতম সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, বাবা গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড. আব্দুল মঈন খান, ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, কেন্দ্রীয় নেতা শহিদ উদ্দিন এ্যানি, নিতাই চন্দ্র রায় ও আব্দুল আউয়াল মিন্টু।

খুলনা বিভাগের আশপাশের বিভিন্ন এলাকা থেকে সমাবেশে আসেন নেতা-কর্মীরা। ছবি: আজকের পত্রিকাবিএনপির গণসমাবেশে খুলনা, যশোর, কুষ্টিয়া, ঝিনাইদহ, চুয়াডাঙ্গা, মেহেরপুর, মাগুরা, নড়াইল, সাতক্ষীরা ও বাগেরহাট জেলার নেতা-কর্মীরা অংশ নেন।

শনিবার বেলা দেড়টার দিকে খুলনা নগর বিএনপির আহ্বায়ক শফিকুল আলম মনার সভাপতিত্বে আনুষ্ঠানিকভাবে গণসমাবেশের কার্যক্রম শুরু হলেও এর আগে থেকেই স্থানীয় নেতারা সমাবেশে বক্তব্য দেওয়া শুরু করেন।

এদিকে পরিবহন বন্ধ থাকায় সমাবেশে আসতে নানা বাধা ও ভোগান্তি সহ্য করতে হয়েছে বলে জানান বিএনপির নেতা-কর্মীরা। অনেকে হেঁটে এবং ব্যক্তিগত গাড়ি ও নৌপথে এসেছেন। পথে ক্ষমতাসীন দলের লোকজন সমাবেশে আসতে বাধা দিয়েছেন বলে অভিযোগ করেন তাঁরা।

খুলনা নগর বিএনপির আহ্বায়ক শফিকুল আলম মনা বলেন, ‘গত (শুক্রবার) রাত থেকে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা ভয়ভীতি দেখালেও মানুষ ভীত নয়। গণপরিবহন বন্ধ থাকার পরও মানুষের উপস্থিতি প্রমাণ করে, এ সরকারকে মানুষ আর দেখতে চায় না।’

এসব অভিযোগের বিষয় খুলনা নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এমডিএ বাবুল রানা আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বিএনপির কর্মসূচিতে আমাদের বাধা দেওয়ার কিছু নেই। অপ্রীতিকর ঘটনা যাতে না ঘটে, সে জন্য আমাদের নেতা-কর্মীরা রাজপথে ছিল। তাদের বাধা দেওয়ার বা সংঘর্ষের খবর আমাদের কাছে নেই। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীর তাদের বাধা দেয়নি।’

যানবাহন বন্ধ করে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা হয়েছে কি না জানতে চাইলে বাবুল রানা বলেন, ‘এটা পরিবহনমালিক-শ্রমিকদের বিষয়। আওয়ামী লীগের সঙ্গে এর কোনো সম্পর্ক নেই। তারা কী কারণে বন্ধ করেছেন, সেটা তারাই ভালো বলতে পারবেন।’

আরও পড়ুন:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বাসা থেকে গ্রেপ্তার আওয়ামী লীগ নেতার সঙ্গের তরুণী ‘যুব মহিলা লীগের সদস্য’

বিএনপির ফাঁকা রাখা ঢাকার আসনে এনসিপির মনোনয়নপত্র নিলেন তাসনিম জারা

চার জেলায় কর্মী নেবে সিটি ব্যাংক, আবেদন শেষ ১৬ নভেম্বর

ঘুষ হিসেবে নেওয়া টাকা ভাগাভাগিতে ফাঁকি দেন না তিনি

ভারতীয় গণমাধ্যমে বলিউডের ‘হি-ম্যান’ ধর্মেন্দ্রর মৃত্যুর খবর

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

জুলাই সনদ বাস্তবায়নে আদেশ জারির সুযোগ নেই, প্রজ্ঞাপন হতে পারে: সালাহউদ্দিন

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
সালাহউদ্দিন আহমদ। ছবি: ভিডিও থেকে নেওয়া
সালাহউদ্দিন আহমদ। ছবি: ভিডিও থেকে নেওয়া

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের বর্তমান সংবিধান অনুযায়ী জুলাই সনদ বাস্তবায়নের জন্য কোনো আদেশ জারির সুযোগ নেই বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ। তিনি বলেছেন, সরকার চাইলে এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করতে পারে। আজ মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

জুলাই সনদ বাস্তবায়ন আদেশ জারির বিষয়ে বিএনপির অবস্থান জানতে চাইলে সালাহউদ্দিন বলেন, ‘আমরা স্পেসিফিক কোনো প্রস্তাব দেইনি যে, আদেশ কে জারি করবে। আমরা একটা সাংবিধানিকতার মধ্যে আছি; সাংবিধানিকভাবে এ সরকার শপথ নিয়েছে; সবকিছু আইনানুগভাবে চলছে। এখন কোনো অধ্যাদেশ জারি করার ক্ষমতা এই সংবিধান অনুযায়ী রাষ্ট্রপতির। যদি কোনো আদেশ জারি করতে হয়, সেই আদেশের মর্যাদা যদি আইনি হয়, সেই আদেশ জারি করার মতো কোনো সাংবিধানিক অবস্থা এখন বাংলাদেশে নেই। কারণ প্রেসিডেন্টের অর্ডার জারি করার একটা বিধান একসময় ছিল, যতদিন পর্যন্ত বাংলাদেশের সংবিধান গৃহীত হয়নি, আপনারা সবাই জানেন, সেরকম পিও অর্থাৎ প্রেসিডেন্ট অর্ডার নিয়ে তখন রাষ্ট্রটা চলতো। সংবিধান গৃহীত হয়ে যাওয়ার পরে রাষ্ট্রপতির আদেশ জারির আর কোনো বিধান রইল না, সেটা বিলুপ্ত হল। এখন কি রকম আদেশ দেবে? সেই আদেশের মর্যাদা কি আইনি মর্যাদা হবে? সেটা এখনো সরকার নির্ধারণ করেনি। একমাত্র অধ্যাদেশ প্রণয়ন করা ছাড়া রাষ্ট্রপতির অন্য কোনোভাবে আইন প্রণয়ন করার ক্ষমতা এখন নেই। কিন্তু আদেশ জারি করার কোনো বিধান বর্তমান সংবিধানে নেই।

‘কিন্তু যদি এখন কোনো প্রজ্ঞাপনকে আদেশ নামকরণ করতে চায় এবং সেটার আইনি মর্যাদা না থাকে, সেটা প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে সরকার প্রকাশ করতে পারে, গ্যাজেট নোটিফিকেশন, সেটা আইন হবে না। এখন সরকার যদি আলোচনার আহ্বান জানায়, সেক্ষেত্রে আলোচনার সুযোগ থাকতে পারে, রাজপথে তো নয়।’

এর আগে গতকাল সোমবার রাতে বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ওই সভার সিদ্ধান্ত জানাতেই এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এতে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ও জ্যেষ্ঠ নেতা খন্দকার মোশাররফ হোসেন।

সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির পক্ষ থেকে স্পষ্ট ভাষায় বলা হয়, জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় ঐতিহাসিক অনুষ্ঠানের স্বাক্ষরিত জুলাই সনদের বাইরে সরকার কোনো সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দিলে সনদে স্বাক্ষরকারী কোনো রাজনৈতিকের উপর কোনো দায় বর্তাবে না অর্থাৎ পরিবর্তিত সনদ দলগুলো মানতে বাধ্য থাকবে না।

বিষয়টি ব্যাখ্যা করে ঐকমত্য কমিশনে বিএনপির প্রতিনিধি সালাহউদ্দিন বলেন, ‘জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫ ঐতিহাসিক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে স্বাক্ষরিত হয়েছে। সেই সনদে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলে বিভিন্ন দফায় কিছু নোট অব ডিসেন্ট আছে। সেই নোট অব ডিসেন্টগুলোর ক্ষেত্রে সনদে বলা আছে যে, দলগুলো যদি নির্বাচনী ইশতেহারে উল্লেখ করে জনগণের ম্যান্ডেট পায়, নোট অব ডিসেন্টগুলো তারা সেভাবে বাস্তবায়ন করতে পারবে। এখানে আমরা একশত ভাগ একমত, এখনো আমরা সেই জায়গায় আছি এবং আমরা স্বাক্ষরিত সনদের বাইরে নাই। কিন্তু জাতীয় ঐকমত্য কমিশন সরকারের কাছে সনদ বাস্তবায়নের উপায় সংক্রান্ত যে সুপারিশ প্রদান করেছে, তার মধ্যে নোট অব ডিসেন্ডের অংশগুলোর উল্লেখ নাই, একদম নাই। শুধু প্রস্তাবগুলোর ব্যাপারে ৪৮টা দফা দিয়ে তারা একটা তফসিল করেছেন। সেই তফসিলে প্রস্তাবগুলো সম্পর্কে গণভোটের প্রস্তাব করেছে।’

তিনি আরো বলেন, ‘গণভোটের বিষয়ে আমরা জাতীয় স্বার্থে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের একই দিনে গণভোটের মাধ্যমে জনগণের সম্মতি নেয়ার জন্য জুলাই জাতীয় সনদের উপরে আমরা রাজি হয়েছিলাম। সে জায়গায় আমরা আছি। এখন এই স্বাক্ষরিত সনদের বাইরে গিয়ে কোনো কোনো রাজনৈতিক দল জুলাই সনদ বাস্তবায়নের জন্য যে অযৌক্তিক এবং নতুন নতুন ইস্যু তৈরি করে যে আন্দোলন করছে, সে ব্যাপারে তারা তাদের বক্তব্য প্রদান করতে পারেন। কিন্তু সনদে স্বাক্ষরিত যে বিষয়গুলো আছে, তার বাইরে যদি সরকার কোনো সিদ্ধান্ত নিতে যায়, তাহলে কোনো রাজনৈতিক দল যারা সনদে স্বাক্ষর করেছে, তাদের উপরে কোনো দায় দায়িত্ব বর্তায় না, বা তারা মানতে বাধ্য নয়। এই মেসেজটা দেয়ার জন্যই আজকে আমাদের এই সংবাদ সম্মেলন।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বাসা থেকে গ্রেপ্তার আওয়ামী লীগ নেতার সঙ্গের তরুণী ‘যুব মহিলা লীগের সদস্য’

বিএনপির ফাঁকা রাখা ঢাকার আসনে এনসিপির মনোনয়নপত্র নিলেন তাসনিম জারা

চার জেলায় কর্মী নেবে সিটি ব্যাংক, আবেদন শেষ ১৬ নভেম্বর

ঘুষ হিসেবে নেওয়া টাকা ভাগাভাগিতে ফাঁকি দেন না তিনি

ভারতীয় গণমাধ্যমে বলিউডের ‘হি-ম্যান’ ধর্মেন্দ্রর মৃত্যুর খবর

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি ছাড়া নির্বাচনের সম্ভাবনা নেই: জামায়াত আমির

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ১১ নভেম্বর ২০২৫, ১৭: ৩২
পল্টন মোড়ে সমাবেশে কথা বলছেন জামায়াত আমির। ছবি: আজকের পত্রিকা
পল্টন মোড়ে সমাবেশে কথা বলছেন জামায়াত আমির। ছবি: আজকের পত্রিকা

জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি ছাড়া কোনো নির্বাচন হওয়ার সম্ভাবনা নেই বলে মন্তব্য করেছেন জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান। আজ মঙ্গলবার রাজধানীর পল্টনে যুগপৎ আন্দোলনের শরিকদের আয়োজিত এক সমাবেশে তিনি এ কথা বলেন।

শফিকুর রহমান বলেন, ‘যারা জুলাই বিপ্লব মানবেন না, তাদের জন্য ২৬ সালে কোনো নির্বাচন নাই। ২৬-এ নির্বাচন দেখতে হলে আগে জুলাই বিপ্লবের স্বীকৃতি লাগবে। আর জুলাই বিপ্লবের স্বীকৃতি দিতে হলে জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি দিতেই হবে। এই আইনি ভিত্তি ছাড়া নির্বাচন হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই।’

তিনি বলেন, ‘এ দেশের মুক্তিকামী মানুষের কথা একটাই, জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে কোনো ভোট অনুষ্ঠিত হতে হবে। গণভোটের ব্যাপারে সকল দল একমত। তাহলে তারিখ নিয়ে এই বায়নাবাজি কেন?’

পল্টন মোড়ে সমাবেশে কথা বলছেন জামায়াত আমির। ছবি: আজকের পত্রিকা
পল্টন মোড়ে সমাবেশে কথা বলছেন জামায়াত আমির। ছবি: আজকের পত্রিকা

জুলাই সনদের ভিত্তিতেই আগামী জাতীয় সংসদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘ওই নির্বাচন যখন অনুষ্ঠিত হবে তখন আর কোনো সংশয় সন্দেহ থাকবে না। আমরা চাই আগামী ফেব্রুয়ারিতে রোজার আগেই জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হোক। এইটা নিয়ে কেউ ধূম্রজাল সৃষ্টি করার পাঁয়তারা চালাবেন না। উদোর পিণ্ডি বুধোর ঘাড়ে ফেলবেন না।’

জামায়াত আমির আরও বলেন, ‘সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের মতামতের ভিত্তিতে একটা চার্টার তৈরি হয়েছে। এটি হচ্ছে গণতন্ত্রের প্রথা, সংখ্যাগরিষ্ঠ যা বলবে বাকিরা তাই মেনে নেবে। কিন্তু আমরা দেখলাম, কেউ কেউ তা মেনে নিতে রাজি নন। যদি আপনি গণতন্ত্রের প্রতি শ্রদ্ধা না দেখান জাতীয় নির্বাচনে আপনি শ্রদ্ধা দেখাবেন কীভাবে? এই জায়গায় আসতে হবে।’

শফিকুর রহমান আরও বলেন, ‘সকল বায়না ভুলে যান। জুলাই শহীদের রক্তের প্রতি সম্মান দেখান। জুলাইয়ে যারা লড়াই করেছে, এখনো কষ্ট করছে, মেহেরবানি করে তাদের বোঝার চেষ্টা করুন।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বাসা থেকে গ্রেপ্তার আওয়ামী লীগ নেতার সঙ্গের তরুণী ‘যুব মহিলা লীগের সদস্য’

বিএনপির ফাঁকা রাখা ঢাকার আসনে এনসিপির মনোনয়নপত্র নিলেন তাসনিম জারা

চার জেলায় কর্মী নেবে সিটি ব্যাংক, আবেদন শেষ ১৬ নভেম্বর

ঘুষ হিসেবে নেওয়া টাকা ভাগাভাগিতে ফাঁকি দেন না তিনি

ভারতীয় গণমাধ্যমে বলিউডের ‘হি-ম্যান’ ধর্মেন্দ্রর মৃত্যুর খবর

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

জুলাই সনদের আইনি ভিত্তির জন্য আগে গণভোট দিন: অন্তর্বর্তী সরকারকে গোলাম পরওয়ার

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ১১ নভেম্বর ২০২৫, ১৬: ৩৯
জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার। ফাইল ছবি
জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার। ফাইল ছবি

অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশে জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেছেন, ‘আপনারা অবিলম্বে জুলাই সনদের আইনি ভিত্তির জন্য আগে গণভোট দিন, তারপর ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচনের জন্য তফসিল ঘোষণা করুন। জাতি আপনাদের সহযোগিতা করবে।’

রাজধানীর পল্টনে আজ মঙ্গলবার দুপুরে পাঁচ দফা দাবি আদায়ে আয়োজিত এক সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।

জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন আদেশ জারি ও ওই আদেশের ওপর চলতি মাসেই গণভোট আয়োজন; ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে উভয় কক্ষে সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব (পিআর) পদ্ধতি চালু; অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের লক্ষ্যে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড (সবার জন্য সমান সুযোগ) নিশ্চিত; ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের জুলুম-নির্যাতন, গণহত্যা ও দুর্নীতির বিচার দৃশ্যমান এবং জাতীয় পার্টি ও ১৪ দলের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা—এই পাঁচ দাবিতে আন্দোলন করছে জামায়াতে ইসলামী।

তাদের সঙ্গে রয়েছে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, খেলাফত মজলিস, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস, বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টি, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি (জাগপা) ও বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট পার্টি।

দাবি আদায়ের লক্ষ্যে ইসলামপন্থী এই আট দল আজ পল্টনে সমাবেশের ডাক দেয়।

সমাবেশে গোলাম পরওয়ার বলেন, ‘জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে প্রায় নয় মাস চেষ্টা করে সাংবিধানিক, রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক নানা সংস্কার নিয়ে আমরা যখন প্রায় একমত হয়েছি, তখন থেকে ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে। সেই ষড়যন্ত্রের সূত্র ধরে আগামী ১৩ তারিখে শাটডাউনের নামে নতুন নাশকতার পরিকল্পনা করা হচ্ছে।’

ষড়যন্ত্রের সুযোগ বন্ধ করে সরকারের কাছে আবেদন জানিয়ে জামায়াতের এ নেতা বলেন, দাবি উঠেছে এক দিনে গণভোট ও জাতীয় নির্বাচনের। তাহলে দ্বিকক্ষবিশিষ্ট পার্লামেন্টসহ যা যা সংশোধন হয়েছে, গণভোটের আইনি ভিত্তি যদি না হয়, তাহলে কিসের ভিত্তিতে জাতীয় নির্বাচন হবে?

গোলাম পরওয়ার বলেন, ‘আমাদের পাঁচ দফায় মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্তদের বিচারের দাবি করেছিলাম। আমরা ধন্যবাদ জানাচ্ছি। আওয়ামী লীগের বিচারপ্রক্রিয়া যখন এগিয়ে যাচ্ছে, যখন এই নভেম্বরে মামলার রায় দেওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে, তখনই ফ্যাসিস্টরা বাংলাদেশজুড়ে ককটেল, গাড়িতে আগুন দিয়ে নাশকতার ষড়যন্ত্র করছে।’

এ সময় স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার উদ্দেশে গোলাম পরওয়ার বলেন, ‘আমরা শুনেছি, ঢাকায় হোটেলে-হোটেলে সন্ত্রাসীরা অবস্থান নিয়েছে। আপনারা অভিযান চালিয়ে ফ্যাসিস্টের দোসরদের গ্রেপ্তার করুন।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বাসা থেকে গ্রেপ্তার আওয়ামী লীগ নেতার সঙ্গের তরুণী ‘যুব মহিলা লীগের সদস্য’

বিএনপির ফাঁকা রাখা ঢাকার আসনে এনসিপির মনোনয়নপত্র নিলেন তাসনিম জারা

চার জেলায় কর্মী নেবে সিটি ব্যাংক, আবেদন শেষ ১৬ নভেম্বর

ঘুষ হিসেবে নেওয়া টাকা ভাগাভাগিতে ফাঁকি দেন না তিনি

ভারতীয় গণমাধ্যমে বলিউডের ‘হি-ম্যান’ ধর্মেন্দ্রর মৃত্যুর খবর

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

সংবিধান মতেই সব হলে নির্বাচন হবে ২০২৯ সালে: হামিদুর রহমান আযাদ

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ১১ নভেম্বর ২০২৫, ১৬: ৩৩
জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আযাদ। ছবি: সংগৃহীত
জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আযাদ। ছবি: সংগৃহীত

সংবিধানে গণভোট নেই যারা বলছেন তাঁদের উদ্দেশে জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আযাদ বলেছেন, সংবিধান মেনে সব করলে ছাব্বিশ সালে নির্বাচন অনুষ্ঠানের কথা কোথাও লেখা নেই। সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন হওয়ার কথা উনত্রিশ সালে।

আজ মঙ্গলবার পল্টন মোড়ে নির্বাচনের আগে গণভোটসহ ৫ দাবিতে আয়োজিত ৮ দলের গণসমাবেশে এ কথা বলেন হামিদুর রহমান।

তিনি বলেন, ‘আমাদের বন্ধুরা কেউ কেউ বলে—সংবিধানে গণভোট নাই। তাদের উদ্দেশে বলতে চাই, আওয়ামী লীগের আমলে সংবিধান সংশোধনের মাধ্যমে গণভোট বাতিল করেছিল শেখ হাসিনা। আজকে যারা বলে সংবিধানে এটা নাই, তারা কি হাসিনার সুরে কথা বলে না?’

তিনি আরও বলেন, ‘আজকে যারা বলে তাদের কাছে জিজ্ঞাসা—৫ বছর পরপর নির্বাচনের কথা সংবিধানে লেখা আছে। চব্বিশে যদি নির্বাচন হয়, তাহলে ছাব্বিশ সালে নির্বাচন হবে কোথায় লেখা আছে? সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন হতে হবে উনত্রিশ সালে।’

হামিদুর রহমান আযাদ বলেন, ‘এই সমাজকে যদি আরও শক্তিশালী করতে, নতুন বাংলাদেশের পথে যাত্রা শুরু করতে হলে সংস্কারের প্রয়োজনে জাতীয় নির্বাচনের আগে গণভোট দিতে হবে। নির্বাচনের আগে গণভোট দেওয়া ছাড়া জুলাই সনদ বাস্তবায়ন সম্ভব নয়, সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়।’

বিএনপিকে উদ্দেশ করে এ জামায়াত নেতা বলেন, ‘আপনারা আবার নতুন করে ফ্যাসিবাদ কায়েম করতে চান, বাংলাদেশের জনগণ এই ষড়যন্ত্র বাংলার মাটিতে হতে দেবে না। সরকারকে বলতে চাই জুলাই সনদ আদেশ জারি করুন।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বাসা থেকে গ্রেপ্তার আওয়ামী লীগ নেতার সঙ্গের তরুণী ‘যুব মহিলা লীগের সদস্য’

বিএনপির ফাঁকা রাখা ঢাকার আসনে এনসিপির মনোনয়নপত্র নিলেন তাসনিম জারা

চার জেলায় কর্মী নেবে সিটি ব্যাংক, আবেদন শেষ ১৬ নভেম্বর

ঘুষ হিসেবে নেওয়া টাকা ভাগাভাগিতে ফাঁকি দেন না তিনি

ভারতীয় গণমাধ্যমে বলিউডের ‘হি-ম্যান’ ধর্মেন্দ্রর মৃত্যুর খবর

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত