Ajker Patrika

পার্টি অফিসে বোমা রেখে সমাবেশের ঘোষণা সন্ত্রাসী পরিকল্পনারই প্রমাণ: তথ্যমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ১০ ডিসেম্বর ২০২২, ১১: ০০
পার্টি অফিসে বোমা রেখে সমাবেশের ঘোষণা সন্ত্রাসী পরিকল্পনারই প্রমাণ: তথ্যমন্ত্রী

তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘পার্টি অফিসে বোমা রেখে সমাবেশের ঘোষণা বিএনপির সন্ত্রাসী পরিকল্পনারই প্রমাণ। নয়াপল্টনের পার্টি অফিসের ভেতরে বোমা রেখে সামনের রাস্তায় সমাবেশের জন্য এত দিন গোঁ ধরে থেকে বিএনপি প্রমাণ করেছে যে, ঢাকায় শান্তিপূর্ণ সমাবেশ নয়, সন্ত্রাসী কার্যকলাপই ছিল তাদের উদ্দেশ্য।’ 

আজ শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর মিন্টো রোডে সরকারি বাসভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে গত বুধবার নয়াপল্টনে বিএনপি নেতা-কর্মী ও পুলিশের সংঘর্ষের পর বিএনপি অফিস থেকে ১৫টি তাজা বোমা, ২ লাখ পানির বোতল, ১৬০ বস্তা চাল, রান্না করা খিচুড়ি, হাঁড়ি-পাতিল এবং দুই লাখ নগদ টাকা উদ্ধারের কথা উল্লেখ করেন তিনি। 

ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘দেশে মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং যাতে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি না হয়, সেই ব্যবস্থা গ্রহণ করা সরকারের সাংবিধানিক দায়িত্ব। বিশেষ করে পুলিশের ওপর যখন হামলা হয়, রাস্তাঘাট বন্ধ করে বেআইনিভাবে যখন সমাবেশ করা হয়, তখন ব্যবস্থা গ্রহণ করতে সরকার বাধ্য হয়েছে। আমরা গত দুই সপ্তাহ ধরে বারংবার বলেছি, আপনারা যাতে বড় সমাবেশ করতে পারেন, সে জন্য সরকার সর্বাত্মকভাবে সহায়তা করবে। কিন্তু না, তারা দেশে বিশৃঙ্খলা করার জন্য নয়াপল্টনেই সমাবেশ করবে। এটা তো সম্পূর্ণভাবে বেআইনি।’ 

শান্তিপূর্ণ সমাবেশ সবাই করতে পারে এবং সরকার যদি সহায়তা না করত, নিরাপত্তার বিধান না করত, তাহলে বিএনপির পক্ষে কখনো দেশের ৯টি জায়গায় বড় সমাবেশ করা সম্ভব হতো না উল্লেখ করে সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, ‘দেশের সব কটি বিভাগীয় শহরে তারা সমাবেশ করেছে, সরকার তাদের নিরাপত্তা দিয়েছে, সেখানে টুঁ শব্দটুকু হয়নি। যেখানে একটু হয়েছে, সেখানে তারা নিজেরা নিজেরা চেয়ার ছোড়াছুড়ি, মারামারি করেছে।’ 

ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘যখন বিএনপি ক্ষমতায় ছিল, আমরা বিরোধী দলে ছিলাম, তখন আমাদের সমাবেশ করতে দেওয়া হতো না। ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট সন্ত্রাসবিরোধী সমাবেশে গ্রেনেড হামলা চালিয়ে আমাদের নেত্রীকে হত্যার অপচেষ্টাসহ ২৪ জন আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীকে হত্যা এবং প্রায় ৫০০ নেতা-কর্মীকে আহত করা হয়েছিল। শেখ হেলাল এমপির জনসভায় হামলা চালিয়ে এক ডজন মানুষকে হত্যা করা হয়েছিল, কিবরিয়া সাহেব এবং আহসান উল্লাহ মাস্টারের জনসভায় হামলা চালিয়ে তাঁদের হত্যা করা হয়েছিল, সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের জনসভায় হামলা চালিয়ে মানুষ হত্যাসহ শত শত মানুষকে আহত করা হয়েছিল। অথচ ১৪ বছর ধরে আমরা ক্ষমতায়, তাঁরা নির্বিঘ্নে সমাবেশ করেছে।’ 

মির্জা ফখরুল-আব্বাসের গ্রেপ্তার প্রশ্নে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘মির্জা ফখরুল ও মির্জা আব্বাস সবাই ২০১৩-১৪-১৫ সালে ৫০০ মানুষকে পুড়িয়ে হত্যা, ৩ হাজার মানুষকে আগুনে দগ্ধ করা, সাড়ে তিন হাজার গাড়ি পোড়ানো, লঞ্চ-ট্রেন পোড়ানোর হুকুমদাতা হিসেবে আসামি। তাঁরা আদালতকেও বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়েছেন, হাজিরা পর্যন্ত দেননি। এদিকে গত ৭ তারিখ নয়াপল্টনে পুলিশের ওপর হামলা করা হলো, বিএনপি কার্যালয়ের ভেতরে ১৫টি তাজা বোমা পাওয়া গেল। চট্টগ্রাম ও ঢাকাসহ সারা দেশে গাড়িতে আগুন দেওয়া এবং ভাঙচুর করা হয়েছে। এগুলোর হুকুমদাতাও মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেব ও মির্জা আব্বাস। তাঁদের নেতৃত্বে এগুলো হয়েছে। আর তাজা বোমা নিয়ে যখন কেউ পার্টি অফিসে বসে থাকে, তখন তাঁরা সবাইতো অপরাধী, তাঁরা তাজা বোমা নিয়ে কেন বসে ছিলেন? এসব কারণে পুলিশ তাঁদের গ্রেপ্তার করেছে।’ 

লন্ডন থেকে তারেক রহমান বিশৃঙ্খলা ঘটাতে উসকানি দিচ্ছেন কি না—এমন প্রশ্নের জবাবে ড. হাছান বলেন, ‘এই সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড, বিশেষ করে যে নয়াপল্টনেই সমাবেশ করবে এটি তারেক রহমানের নির্দেশেই তারা করেছে। বিএনপির অনেক নেতা শুরু থেকেই রাজি ছিল, এমনকি পুলিশের সঙ্গে প্রথম দুটি বৈঠকে বিএনপিই সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশের প্রস্তাব দিয়েছিল। তারেক রহমানের নির্দেশেই তারা বিগড়ে বসে। মিরপুরে পল্লবী, কালশী মাঠ, ইজতেমার ময়দান, বাণিজ্য মেলার মাঠসহ চার-পাঁচটি বিকল্প প্রস্তাবও তারা উপেক্ষা করে।’ 

হাছান মাহমুদ বলেন, ‘তারেক রহমান ১০ ট্রাক অস্ত্র মামলার দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি এবং খুন, চোরাচালান, মানি লন্ডারিংয়ের আসামি। একজন আসামির নেতৃত্বে যখন দল পরিচালিত হয়, সেই দল অপরাধী-আসামি-সন্ত্রাসীর মতোই আচরণ করবে, বিএনপিতে তাই ঘটছে।’ 

ঢাকায় মার্কিন রাষ্ট্রদূতের বার্তার প্রশ্নে তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, ‘মার্কিন রাষ্ট্রদূত ৭ তারিখের ঘটনা নিয়ে তদন্তের কথা বলেছেন। অবশ্যই তদন্ত হবে। পুলিশ তো বিএনপি অফিসে বোমা পেয়েছে। কারা বোমা রেখেছিল, কারা বোমা বানিয়েছিল, বানানোর টাকা কারা দিয়েছিল, পুলিশের ওপর কীভাবে হামলা করেছিল। এগুলো তদন্তে বেরিয়ে আসবে, পুলিশের কোনো ভুল থাকলে সেটাও তদন্তে বেরিয়ে আসবে। সরকার শান্তিপূর্ণ সমাবেশ নিশ্চিত করেছে। সে কারণেই বিএনপি সারা দেশে ৯টি বড় সমাবেশ করতে পেরেছে এবং ঢাকায়ও যাতে শান্তিপূর্ণ সমাবেশ করতে পারে, সে জন্য সরকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ছাড়াও বিকল্প চারটি প্রস্তাব দিয়েছিল। কিন্তু পার্টি অফিসে বোমা রাখা, পুলিশের ওপর ইট-পাটকেল মারা, হামলা করা, বেআইনিভাবে রাস্তা বন্ধ করে সমাবেশ করা—এগুলো শান্তিপূর্ণ সমাবেশ নয়।’ 

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উদাহরণ দিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘সেখানে ডোনাল্ড ট্রাম্পের সমর্থকেরা ক্যাপিটাল হিলে হামলা করেছিল। সেটি যেমন শান্তিপূর্ণ সমাবেশ নয়, সেটার সঙ্গে যারা যুক্ত ছিল তাদের বিরুদ্ধে যেমন তারা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে এবং করছে, মামলাও পরিচালিত হচ্ছে, এমনকি ডোনাল্ড ট্রাম্পকেও অভিযুক্ত করার প্রক্রিয়া চলছে, এখানেও ৭ তারিখের ঘটনা তাঁর সঙ্গে তুলনীয় যে, এটাও শান্তিপূর্ণ সমাবেশ নয়, সন্ত্রাসী কার্যকলাপ।’ 

এ সময় কিছু গণমাধ্যমের সাম্প্রতিক ভূমিকা নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘গণমাধ্যমের দায়িত্ব হচ্ছে সমাজের চিত্র ফুটিয়ে তোলা। একপেশে সংবাদ পরিবেশন করা গণমাধ্যমের কাজ নয়। সেই ক্ষেত্রে গণমাধ্যম পক্ষপাতদুষ্ট হয়ে যায়। কোনো গণমাধ্যমেরই রাজনীতি করা সমীচীন নয়। আমি আশা করব, যাঁরা এগুলো করছেন তাঁরা রাজনীতি করবেন না, গণমাধ্যম হিসেবেই কাজ করবেন। সরকার গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত করেছে, তার মানে মানুষকে মিস-লিড করার অপচর্চা কোনোভাবেই সমীচীন নয়।' 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

গাজায় শিগগির ২০ হাজার সদস্যের আন্তর্জাতিক বাহিনী মোতায়েন, থাকছে কোন কোন দেশ

‘জাহানারা মুখ খুলেছে, জুনিয়ররা অ্যাবিউজ হলে কি মুখ খুলতে পারবে’

চট্টগ্রামে বিএনপি প্রার্থীর গণসংযোগে গুলিতে বাবলা নিহতের ঘটনায় দুজন গ্রেপ্তার

উচ্চতা ‘কম’ বলে ডেটিং অ্যাপে মামদানিকে প্রত্যাখ্যান করেছিলেন, এখন আফসোস হচ্ছে

সুদান যুদ্ধে আমিরাতের বিপরীতে মিসর-তুরস্কের বিরল ঐক্য, ঢুকছে অস্ত্র ও ড্রোনচালক

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ঔপনিবেশিক শাসনকাঠামো উৎখাত না করায় অভ্যুত্থান বিপ্লবে রূপ নিতে পারেনি: আরিফ সোহেল

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আজ শুক্রবার রাজধানীর সংস্কৃতি বিকাশ কেন্দ্রে মুক্তিফোরাম আয়োজিত ‘সিপাহি-জনতার অভ্যুত্থান ও সাংবিধানিক ধারাবাহিকতার ভ্রান্তি’ শীর্ষক আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন অভ্যুত্থানের অন্যতম সমন্বয়ক আরিফ সোহেল। ছবি: আজকের পত্রিকা
আজ শুক্রবার রাজধানীর সংস্কৃতি বিকাশ কেন্দ্রে মুক্তিফোরাম আয়োজিত ‘সিপাহি-জনতার অভ্যুত্থান ও সাংবিধানিক ধারাবাহিকতার ভ্রান্তি’ শীর্ষক আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন অভ্যুত্থানের অন্যতম সমন্বয়ক আরিফ সোহেল। ছবি: আজকের পত্রিকা

ঔপনিবেশিক শাসনকাঠামো উৎখাত না করায় অভ্যুত্থান বিপ্লবে রূপ নিতে পারেনি বলে মন্তব্য করেছেন জুলাই অভ্যুত্থানের অন্যতম সমন্বয়ক আরিফ সোহেল। আজ শুক্রবার (৭ নভেম্বর) রাজধানীর সংস্কৃতি বিকাশ কেন্দ্রে মুক্তিফোরাম আয়োজিত ‘সিপাহি-জনতার অভ্যুত্থান ও সাংবিধানিক ধারাবাহিকতার ভ্রান্তি’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।

আরিফ সোহেল বলেন, ‘১৮৫৭ থেকে ৭১, ৭৫ এমনকি ২৪-এও আমরা সিপাহি-জনতার একটি বিপ্লবী ঐক্য দেখতে পাই; কিন্তু বিদ্যমান কলোনিয়াল শাসন ও শোষণকাঠামোকে পুরোপুরি উৎখাত না করায় এই ঐক্য অভ্যুত্থান থেকে বিপ্লবে রূপ নিতে পারেনি। ৭ নভেম্বরে হাজির হওয়া সিপাহি-জনতার লড়াইকে সত্যিকার বিপ্লবে রূপ দিতে হলে রাজনৈতিক সচেতনতা নির্মাণ জরুরি।’

আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন কবি, চিন্তক ও অ্যাকটিভিস্ট সাঈদ উজ্জ্বল। তিনি বলেন, বাংলাদেশে সাংবিধানিক ধারাবাহিকতাকে রাষ্ট্রীয় স্থিতির প্রতীক হিসেবে দেখানো হলেও বাস্তবে এটি জনগণের সার্বভৌম ক্ষমতার বিকাশকে বাধাগ্রস্ত করেছে। প্রতিটি গণ-অভ্যুত্থানপরবর্তী সময়ে এই ধারাবাহিকতার নামে শাসকগোষ্ঠী পুরোনো রাষ্ট্রকাঠামোই টিকিয়ে রেখেছে। ফলে রাষ্ট্রকাঠামোর মৌলিক পরিবর্তন না হয়ে কেবল মুখোশ পাল্টেছে, গণসার্বভৌমত্ব প্রতিষ্ঠার পথ আটকে গেছে।

সভায় জুলাই যোদ্ধাসহ বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

গাজায় শিগগির ২০ হাজার সদস্যের আন্তর্জাতিক বাহিনী মোতায়েন, থাকছে কোন কোন দেশ

‘জাহানারা মুখ খুলেছে, জুনিয়ররা অ্যাবিউজ হলে কি মুখ খুলতে পারবে’

চট্টগ্রামে বিএনপি প্রার্থীর গণসংযোগে গুলিতে বাবলা নিহতের ঘটনায় দুজন গ্রেপ্তার

উচ্চতা ‘কম’ বলে ডেটিং অ্যাপে মামদানিকে প্রত্যাখ্যান করেছিলেন, এখন আফসোস হচ্ছে

সুদান যুদ্ধে আমিরাতের বিপরীতে মিসর-তুরস্কের বিরল ঐক্য, ঢুকছে অস্ত্র ও ড্রোনচালক

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

পক্ষে-বিপক্ষে বক্তব্য দিয়ে ঐক্যে ফাটল ধরাবেন না: জামায়াতের উদ্দেশে এ্যানি

লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি
লক্ষ্মীপুরে জেলা শ্রমিক দলের পরিচিত সভায় শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি। ছবি: আজকের পত্রিকা
লক্ষ্মীপুরে জেলা শ্রমিক দলের পরিচিত সভায় শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি। ছবি: আজকের পত্রিকা

জামায়াত নেতাদের বক্তব্যের সমালোচনা করে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি বলেছেন, পক্ষে-বিপক্ষে কঠিন বক্তব্য দিয়ে ঐক্যের মধ্যে ফাটল ধরাবেন না। এই মুহূর্তে ঐক্যে ফাটল ধরলে দেশের জন্য ও নির্বাচনের জন্য বড় ধরনের ক্ষতি হয়ে যাবে। আর এই সুযোগ পাবে ফ্যাসিবাদেরা। তাদের এই সুযোগ দেওয়া হবে না, দেওয়া যাবে না।

আজ শুক্রবার শহরের নিজ বাসভবনে জেলা শ্রমিক দলের পরিচিত সভায় যোগ দিয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি বলেন, ‘জাতীয় ঐকমত্যের সরকারের সুযোগ জাতীয় রাজনীতিতে রয়েছে। সবাই মিলে সে সুযোগ নিয়ে কাজ করি। আগামী নির্বাচনকে ভন্ডুল ও প্রশ্নবিদ্ধ করতে নানা ষড়যন্ত্র এখনো চলছে। যেন দেশে নির্বাচন না হয়, সে জন্য হাসিনা ও তার দল দেশে-বিদেশে বসে হাজার হাজার কোটি টাকা ব্যয় করছে। চক্রান্ত করছে। কিন্তু কোনো ষড়যন্ত্র বা চক্রান্ত কাজে আসবে না। সবাইকে সতর্ক ও সজাগ থাকতে হবে। ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।’

এ্যানি আরও বলেন, হাসিনা রাজনীতি করেননি, করেছেন দুর্নীতি ও লুটপাট। তাঁরা হাজার হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছেন। হাসিনা ও আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা দুঃশাসনে জড়িত ছিলেন।

দেশের মানুষের ওপর নির্যাতন, গুম ও খুনের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। হাসিনা দেশের মানুষকে জিম্মি করে নির্বাচন করে ক্ষমতা দখল করেছিলেন। এ কারণে দলের শত্রু, জনশত্রু ও গণশত্রুতে পরিণত হতে হয়েছে তাঁদের। এত কিছুর পরও ক্ষমতা ধরে রাখতে পারেননি তাঁরা। দেশ ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছেন।

বিএনপির এ যুগ্ম মহাসচিব বলেন, গত ১৭ বছরে স্বৈরাচার শেখ হাসিনার আমলে শ্রমিকেরাও নির্যাতন, গুম ও খুন থেকে বাঁচতে পারেননি। তাঁদের ওপর কঠিন নির্যাতন করা হয়েছে। নতুন একটা বাংলাদেশ গড়তে তারেক রহমান নিরলস কাজ করে যাচ্ছেন। এ দেশে আওয়ামী লীগ আর রাজনীতি করতে পারবে না। কারণ, তাদের রাজনীতি এখন প্রশ্নবিদ্ধ।

এ্যানি আরও বলেন, ‘ইদানীং বিভিন্ন স্থানে দুই-চারজন মিলে হঠাৎ একটি মিছিল বের করে। আবার মিনিটের মধ্যে উধাও। এটা সাময়িক, এটা হবে না। এদিকে সবাইকে খেয়াল রাখতে হবে। যেন কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা করতে না পারে। সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে।’ আগামী নির্বাচনে সবাইকে মিলে ধানের শীষের প্রার্থীকে ভোট দিয়ে বিজয়ী করতে আহ্বান জানান তিনি।

অ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলাম শাহীনের সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য দেন জেলা বিএনপির সদস্যসচিব সাহাবুদ্দিন সাবু, যুগ্ম আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট হাসিবুর রহমান, বিএনপি নেতা ওয়াহিদ উদ্দীন চৌধুরী হ্যাপী, অ্যাডভোকেট হাফিজুর রহমান, জজকোর্টের প্রসিকিউটর আহমদ ফেরদৌস মানিক, শ্রমিক দলের সাবেক সভাপতি আবুল হাশেম, জেলা যুবদলের সভাপতি আবদুল আলীম হুমায়ুন, সাধারণ সম্পাদক রশিদুল হাসান লিংকন, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি অ্যাডভোকেট মহসিন কবির স্বপন, সাধারণ সম্পাদক হারুনুর রশিদ প্রমুখ। সঞ্চালনা করেন সোহেল হোসেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

গাজায় শিগগির ২০ হাজার সদস্যের আন্তর্জাতিক বাহিনী মোতায়েন, থাকছে কোন কোন দেশ

‘জাহানারা মুখ খুলেছে, জুনিয়ররা অ্যাবিউজ হলে কি মুখ খুলতে পারবে’

চট্টগ্রামে বিএনপি প্রার্থীর গণসংযোগে গুলিতে বাবলা নিহতের ঘটনায় দুজন গ্রেপ্তার

উচ্চতা ‘কম’ বলে ডেটিং অ্যাপে মামদানিকে প্রত্যাখ্যান করেছিলেন, এখন আফসোস হচ্ছে

সুদান যুদ্ধে আমিরাতের বিপরীতে মিসর-তুরস্কের বিরল ঐক্য, ঢুকছে অস্ত্র ও ড্রোনচালক

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

১০-২০ কোটি টাকা না থাকলে নির্বাচন করা কঠিন: আসিফ মাহমুদ

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ০৭ নভেম্বর ২০২৫, ২০: ২১
রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে শুক্রবার আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা
রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে শুক্রবার আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা

১০-২০ কোটি টাকা না থাকলে বাংলাদেশের বাস্তবতায় কোনো ব্যক্তির নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা ‘কঠিন’ বলে মন্তব্য করেছেন স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া। তিনি বলেছেন, ‘২০ কোটি টাকা না থাকলে কেউ নির্বাচন করতে পারবেন না। মানে বাংলাদেশের যে বর্তমান বাস্তবতা, এই বাস্তবতায় অন্তত ১০-২০ কোটি টাকা না থাকলে কারোর আসলে নির্বাচন করা কঠিন।’

রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে আজ শুক্রবার বিকেলে ‘নভেম্বর থেকে জুলাই: বিপ্লব থেকে বিপ্লবে’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

উপদেষ্টা বলেন, ‘এমন বাস্তবতায় আসলে যাদের কাছে কালো টাকা আছে, তাদেরই সুযোগ থাকে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার। আপনি কারও থেকে টাকা নিয়ে যে নির্বাচন করবেন, নির্বাচিত হয়ে আসার পর আপনাকে তার স্বার্থ বাস্তবায়ন করতে হবে। আজকে যদি কোনো ব্যবসায়ীর কাছ থেকে বা অন্য কারোর কাছ থেকে টাকা নিয়ে আপনি ইলেকশন করেন, তাহলে আপনাকে তার স্বার্থ দেখতে হবে।’

আসিফ মাহমুদ বলেন, ‘আমাদেরও বারবার চিন্তা করতে হয় যে ইলেকশন করব নাকি করব না। করলে কীভাবে করব; মানুষ কি টাকা ছাড়া ভোট দিবে বা বিদ্যমান যে কাঠামো, এই কাঠামোতে ইলেকশন করা আমাদের জন্য আসলে কতটুকু বাস্তবসম্মত। অনেকে জোহরান মামদানির কথা তুলে বলেন যে এমনটা সম্ভব। কিন্তু এটা এক্সেপশনাল কেস। এক্সেপশনাল কেস তো ৩০০ আসনে ঘটা সম্ভব না।’

আলোচনা সভায় কবি ও রাষ্ট্রচিন্তক ফরহাদ মজহার বলেন, সংবিধান অনুযায়ী অন্তর্বর্তী সরকারের বৈধতা নেই। নতুন রাষ্ট্র বিনির্মাণে গণ-অভ্যুত্থানের পরে গণসার্বভৌমত্বের প্রয়োজন পড়ে; যার মাধ্যমে নতুন রাষ্ট্র কাঠামো বিনির্মাণ হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

গাজায় শিগগির ২০ হাজার সদস্যের আন্তর্জাতিক বাহিনী মোতায়েন, থাকছে কোন কোন দেশ

‘জাহানারা মুখ খুলেছে, জুনিয়ররা অ্যাবিউজ হলে কি মুখ খুলতে পারবে’

চট্টগ্রামে বিএনপি প্রার্থীর গণসংযোগে গুলিতে বাবলা নিহতের ঘটনায় দুজন গ্রেপ্তার

উচ্চতা ‘কম’ বলে ডেটিং অ্যাপে মামদানিকে প্রত্যাখ্যান করেছিলেন, এখন আফসোস হচ্ছে

সুদান যুদ্ধে আমিরাতের বিপরীতে মিসর-তুরস্কের বিরল ঐক্য, ঢুকছে অস্ত্র ও ড্রোনচালক

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

আমরা ভাঙার কাজটা করেছি, গড়ার কাজটা করতে পারিনি: নাহিদ ইসলাম

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
ইউনিভার্সিটি টিচার্স ফোরামের (ইউটিএফ) আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখছেন এনসিপি আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। ছবি: আজকের পত্রিকা
ইউনিভার্সিটি টিচার্স ফোরামের (ইউটিএফ) আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখছেন এনসিপি আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। ছবি: আজকের পত্রিকা

ভাঙার কাজটি করলেও গড়ার কাজটি করতে পারেননি বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। এ কাজে শিক্ষকদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। আজ শুক্রবার (৭ নভেম্বর) দুপুরে বাংলা একাডেমির কবি শামসুর রাহমান সম্মেলনকক্ষে ইউনিভার্সিটি টিচার্স ফোরামের (ইউটিএফ) আত্মপ্রকাশ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘আমরা রাজনৈতিক ফ্যাসিবাদ দূর করতে পেরেছি বা পরাজিত করতে পেরেছি ৫ আগস্টের মধ্য দিয়ে। এরপর আমরা রাষ্ট্র সংস্কারের মধ্যে ঢুকেছি। কিন্তু ব্যক্তি ও সমাজের পরিবর্তন ছাড়া আপনি রাষ্ট্রের ফ্যাসিবাদ দূর করতে পারবেন না বা দূর করলেও সেটা টিকিয়ে রাখতে পারবেন না।’

এ প্রসঙ্গে নাহিদ ইসলাম আরও বলেন, ‘ব্যক্তির চিন্তার পরিবর্তন প্রয়োজন। আমাদের ওপর রাজনৈতিক ফ্যাসিবাদের পাশাপাশি সাংস্কৃতিক ফ্যাসিবাদ চেপে বসেছে। সামাজিক ফ্যাসিবাদ ও ব্যক্তির চিন্তার ভেতরেও যে ফ্যাসিবাদ রয়ে গেছে, সেটা ভাঙতে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়, আমাদের শিক্ষাব্যবস্থা এবং সাংস্কৃতিক চর্চা। এই লড়াইটা, এই কার্যক্রমটা হচ্ছে দীর্ঘমেয়াদি। আমরা ভাঙার কাজটা করেছি, আমরা গড়ার কাজটা করতে পারিনি। এখন আমাদের এই গড়ার কাজে অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে শিক্ষকদের।’

জুলাই সনদের বিষয়ে এনসিপির আহ্বায়ক বলেন, জুলাই সনদে নোট অব ডিসেন্ট বলে কিছু থাকবে না। যা ঐকমত্য হয়েছে, তার বাকিটা ঠিক করবে জনগণ। জনগণ যদি বলে, তাহলে সেগুলো বাস্তবায়িত হবে।

খুব দ্রুত সময়ে জুলাই সনদের আইনি ভিত্তির মধ্য দিয়ে জাতীয় নির্বাচনের দিকে যাওয়ার আশা প্রকাশ করেন নাহিদ। তিনি বলেন, ‘আমরা গণ-অভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষাকে ধারণ করে বাংলাদেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাব।’

আগামী সংসদ সংবিধান সংস্কার পরিষদ হিসেবে কাজ করবে বলে উল্লেখ করেন তিনি। এ প্রসঙ্গে নাহিদ ইসলাম বলেন, সেই সংসদ নতুন সংবিধানের জন্য কাজ করবে। যাঁরা শিক্ষক আছেন, অবশ্যই তাঁদের সেখানে অংশগ্রহণ প্রয়োজন। এনসিপির পক্ষ থেকে তাঁরা সেটি নিশ্চিত করার চেষ্টা করবেন।

জুলাই সনদের আদেশ অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসকে দিতে হবে বলে মন্তব্য করেন এনসিপির আহ্বায়ক। তিনি বলেন, আগামী দিনের যে সংসদ ও সংবিধান সংস্কার পরিষদ, সেখানে তরুণ, শিক্ষক, আলেম, নারী, সংখ্যালঘুসহ সমাজের নানা পেশাজীবীসহ সবাই মিলে জুলাই সনদ বাস্তবায়ন করা হবে। এর আগে অবশ্যই তাঁদের এখনকার দাবি গণভোট। জুলাই সনদের আদেশ অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসকে দিতে হবে।

অনুষ্ঠানে ইউটিএফের কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়। জুলাই চেতনায় অনুপ্রাণিত বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের নিয়ে এই ফোরাম গঠন করা হয়েছে বলে অনুষ্ঠানে জানানো হয়। ইউটিএফের আহ্বায়ক হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মো. সিরাজুল ইসলাম। সদস্যসচিব ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক শামীম হামিদী। অনুষ্ঠানে ইউটিএফের ঘোষণাপত্র পাঠ করেন সিরাজুল ইসলাম। অনুষ্ঠানে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা বক্তব্য দেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

গাজায় শিগগির ২০ হাজার সদস্যের আন্তর্জাতিক বাহিনী মোতায়েন, থাকছে কোন কোন দেশ

‘জাহানারা মুখ খুলেছে, জুনিয়ররা অ্যাবিউজ হলে কি মুখ খুলতে পারবে’

চট্টগ্রামে বিএনপি প্রার্থীর গণসংযোগে গুলিতে বাবলা নিহতের ঘটনায় দুজন গ্রেপ্তার

উচ্চতা ‘কম’ বলে ডেটিং অ্যাপে মামদানিকে প্রত্যাখ্যান করেছিলেন, এখন আফসোস হচ্ছে

সুদান যুদ্ধে আমিরাতের বিপরীতে মিসর-তুরস্কের বিরল ঐক্য, ঢুকছে অস্ত্র ও ড্রোনচালক

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত