সম্পাদকীয়
তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা ফিরে এসেছে। ১৩ বছর আগে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী এনে নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বিলুপ্ত করা হয়েছিল। সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন)-এর সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার যদিও বলেছেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা ফিরলে ক্ষমতা চিরস্থায়ী করা সম্ভব হবে না, কিন্তু আমাদের মনের সংশয় তাতে কাটছে না। তত্ত্বাবধায়ক সরকার যদি স্বাভাবিক, সুষ্ঠু, গণতান্ত্রিক নির্বাচন করার সুযোগ সৃষ্টি করতে পারে, তাহলে অবশ্যই সেটা আমাদের গণতন্ত্রের জন্য এক সুসংবাদ হিসেবেই বিবেচিত হবে। একই সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলো সুষ্ঠু নির্বাচন করতে সক্ষম নয়, এই বার্তাও কষ্টদায়ক। আমাদের দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে গণতন্ত্রের সুসম্পর্ক নেই, এই ঘটনা সেটাও প্রমাণ করে।
১৯৯০ সালে এরশাদ সরকারের পতনের পর চারটি সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে। এই চারটি নির্বাচনে বিএনপি ও আওয়ামী লীগের মধ্যে ক্ষমতার পালাবদল হয়েছে। ১৯৯১ সালে নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা সংবিধানের অংশ ছিল না। বিশেষ রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে এই সরকার এসেছিল রাজনৈতিক ঐকমত্যের ভিত্তিতে। ১৯৯৪ সালে তৎকালীন বিরোধী দল আওয়ামী লীগ ও অন্যান্য বিরোধী দল নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে সংসদ নির্বাচনের দাবি তোলে। ১৯৯৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে বিএনপি যে নির্বাচন অনুষ্ঠান করে, তাকে প্রহসনের নির্বাচন বলা হলে ভুল হবে না। ফলে রাজনৈতিক দল ও জনতার প্রবল বিক্ষোভের মুখে ১৯৯৬ সালের ২৬ মার্চ বিএনপি সরকার তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করতে বাধ্য হয়। এর পর থেকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে যে নির্বাচনগুলো অনুষ্ঠিত হয়েছে, সেগুলো আন্তর্জাতিক মহলেও গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছে।
কিন্তু এরপর ২০০১-২০০৬ সালের মেয়াদ শেষে বিএনপি-নিয়ন্ত্রিত সরকার তাদের পছন্দের মানুষকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারপ্রধান করার জন্য যাবতীয় কাজ সুসম্পন্ন করে রাখে। অনেকেরই মনে পড়ে যাবে, ২০০১ সালে ক্ষমতায় আসার পর বিএনপি সংবিধান সংশোধনের উদ্যোগ নেয়। সংশোধনীর মাধ্যমে সংরক্ষিত মহিলা আসন ৩০ থেকে বাড়িয়ে ৪৫ করা হয়। সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিদের অবসরের বয়স ৬৫ থেকে বাড়িয়ে ৬৭ করা হয়। সরকারি এবং স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানগুলোয় প্রধানমন্ত্রীর ছবি প্রদর্শনের বিধান রাখা হয়।
সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিদের বয়স বাড়ানোর বিষয়টি সাদামাটা কোনো বিষয় ছিল না। সরকারের পছন্দসই ব্যক্তিকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারপ্রধান করার আয়োজন ছিল সেটা। বিচারপতি হাসানকে ১৩তম প্রধান বিচারপতি করা হয়েছিল দুজন বিচারপতিকে ডিঙিয়ে জ্যেষ্ঠতা লঙ্ঘন করে। এটা করা হয়েছিল এই কারণে যে অবসরের পরই যেন কে এম হাসান প্রধান বিচারপতি হতে পারেন।
এরপর নানা ঘটনার পর এক-এগারো আসে। সেই পথ ধরে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বিলুপ্ত করা হলেও মানুষ কি কাঙ্ক্ষিত গণতান্ত্রিক নির্বাচনব্যবস্থা ফিরে পেয়েছে? আওয়ামী লীগ আমলে সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত নির্বাচনগুলো বরং পরিহাস করেছে গণতন্ত্রের সঙ্গে।
রাজনৈতিক দলগুলোর মানসিকতায় গণতন্ত্র আসা দরকার। নইলে শুধু তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা ফিরলেই অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হবে, এ ধারণার ওপর বিশ্বাস রাখতে ভয় হয়।
তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা ফিরে এসেছে। ১৩ বছর আগে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী এনে নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বিলুপ্ত করা হয়েছিল। সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন)-এর সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার যদিও বলেছেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা ফিরলে ক্ষমতা চিরস্থায়ী করা সম্ভব হবে না, কিন্তু আমাদের মনের সংশয় তাতে কাটছে না। তত্ত্বাবধায়ক সরকার যদি স্বাভাবিক, সুষ্ঠু, গণতান্ত্রিক নির্বাচন করার সুযোগ সৃষ্টি করতে পারে, তাহলে অবশ্যই সেটা আমাদের গণতন্ত্রের জন্য এক সুসংবাদ হিসেবেই বিবেচিত হবে। একই সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলো সুষ্ঠু নির্বাচন করতে সক্ষম নয়, এই বার্তাও কষ্টদায়ক। আমাদের দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে গণতন্ত্রের সুসম্পর্ক নেই, এই ঘটনা সেটাও প্রমাণ করে।
১৯৯০ সালে এরশাদ সরকারের পতনের পর চারটি সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে। এই চারটি নির্বাচনে বিএনপি ও আওয়ামী লীগের মধ্যে ক্ষমতার পালাবদল হয়েছে। ১৯৯১ সালে নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা সংবিধানের অংশ ছিল না। বিশেষ রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে এই সরকার এসেছিল রাজনৈতিক ঐকমত্যের ভিত্তিতে। ১৯৯৪ সালে তৎকালীন বিরোধী দল আওয়ামী লীগ ও অন্যান্য বিরোধী দল নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে সংসদ নির্বাচনের দাবি তোলে। ১৯৯৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে বিএনপি যে নির্বাচন অনুষ্ঠান করে, তাকে প্রহসনের নির্বাচন বলা হলে ভুল হবে না। ফলে রাজনৈতিক দল ও জনতার প্রবল বিক্ষোভের মুখে ১৯৯৬ সালের ২৬ মার্চ বিএনপি সরকার তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করতে বাধ্য হয়। এর পর থেকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে যে নির্বাচনগুলো অনুষ্ঠিত হয়েছে, সেগুলো আন্তর্জাতিক মহলেও গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছে।
কিন্তু এরপর ২০০১-২০০৬ সালের মেয়াদ শেষে বিএনপি-নিয়ন্ত্রিত সরকার তাদের পছন্দের মানুষকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারপ্রধান করার জন্য যাবতীয় কাজ সুসম্পন্ন করে রাখে। অনেকেরই মনে পড়ে যাবে, ২০০১ সালে ক্ষমতায় আসার পর বিএনপি সংবিধান সংশোধনের উদ্যোগ নেয়। সংশোধনীর মাধ্যমে সংরক্ষিত মহিলা আসন ৩০ থেকে বাড়িয়ে ৪৫ করা হয়। সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিদের অবসরের বয়স ৬৫ থেকে বাড়িয়ে ৬৭ করা হয়। সরকারি এবং স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানগুলোয় প্রধানমন্ত্রীর ছবি প্রদর্শনের বিধান রাখা হয়।
সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিদের বয়স বাড়ানোর বিষয়টি সাদামাটা কোনো বিষয় ছিল না। সরকারের পছন্দসই ব্যক্তিকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারপ্রধান করার আয়োজন ছিল সেটা। বিচারপতি হাসানকে ১৩তম প্রধান বিচারপতি করা হয়েছিল দুজন বিচারপতিকে ডিঙিয়ে জ্যেষ্ঠতা লঙ্ঘন করে। এটা করা হয়েছিল এই কারণে যে অবসরের পরই যেন কে এম হাসান প্রধান বিচারপতি হতে পারেন।
এরপর নানা ঘটনার পর এক-এগারো আসে। সেই পথ ধরে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বিলুপ্ত করা হলেও মানুষ কি কাঙ্ক্ষিত গণতান্ত্রিক নির্বাচনব্যবস্থা ফিরে পেয়েছে? আওয়ামী লীগ আমলে সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত নির্বাচনগুলো বরং পরিহাস করেছে গণতন্ত্রের সঙ্গে।
রাজনৈতিক দলগুলোর মানসিকতায় গণতন্ত্র আসা দরকার। নইলে শুধু তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা ফিরলেই অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হবে, এ ধারণার ওপর বিশ্বাস রাখতে ভয় হয়।
বাংলাদেশের রাজনীতিতে দল নিষিদ্ধ করার দাবি যেন এক পুনরাবৃত্ত ইতিহাস। যে দল ক্ষমতায় থাকে, তারা প্রায়ই রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে নিষিদ্ধ করার পথ খোঁজে, আর একটি পক্ষ ‘ফাঁকা মাঠে গোল করার মওকা’ মিলবে ভেবে তাতে সমর্থন জোগায়—যেন নিষিদ্ধ করাই সংকট সমাধানের একমাত্র উপায়।
৫ ঘণ্টা আগেপারিপার্শ্বিক অবস্থা, রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত, লোকমুখের প্রচার ও রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থাপনা বিশ্লেষণ করলে এক বাক্যে উপনীত হওয়া যায় যে নির্বাচন আসন্ন। কিছুটা দ্বিমত ও সন্দেহ প্রকাশ করছেন কেউ কেউ। তবে নির্বাচন হলে কারা জনপ্রতিনিধি হবেন, তা নিয়ে কথা বলা দরকার।
৫ ঘণ্টা আগেআমাদের চিকিৎসাব্যবস্থায় বড় ক্ষত হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে দীর্ঘমেয়াদি রোগ। দেশের প্রায় ৫৩ শতাংশ পরিবারের অন্তত একজন সদস্য কোনো না কোনো দীর্ঘমেয়াদি রোগে আক্রান্ত। ‘পাওয়ার অ্যান্ড পার্টিসিপেশন রিসার্চ সেন্টার’ (পিপিআরসি)-এর সম্প্রতি এক গবেষণায় এ ভয়াবহ তথ্য উঠে এসেছে।
৫ ঘণ্টা আগেআগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন অনুষ্ঠান নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে যতই জোর দেওয়া হচ্ছে, চারপাশে ততই বইছে আশঙ্কার গুমোট হাওয়া। আশঙ্কা দানা বাঁধছে সরকারেরই কিছু কথায়। সরকারের পক্ষ থেকে ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে নির্বাচন অনুষ্ঠানের বিষয়ে জোর দেওয়ার পাশাপাশি বলা হচ্ছে নির্বাচন ভন্ডুল করার ষড়যন্
১ দিন আগে