সম্পাদকীয়
বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে জুলাই অভ্যুত্থান একটি গুরুত্বপূর্ণ মোড় পরিবর্তনকারী ঘটনা। এই অভ্যুত্থান রাষ্ট্র ও শাসনব্যবস্থার এক সংকটময় পটভূমিতে ঘটেছে, যার পরিণতিতে অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয় এবং শুরু হয় রাষ্ট্রব্যবস্থার মৌলিক সংস্কারের এক উচ্চাকাঙ্ক্ষী প্রচেষ্টা। এই প্রেক্ষাপটে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের উদ্যোগে যে ‘জুলাই সনদ’ প্রণয়নের কাজ চলছে, তা নিঃসন্দেহে একটি গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগ।
জুলাই সনদ ঘোষণা নিয়ে রাজনৈতিক মহলে নানা রকম আলোচনা আছে। আজকের পত্রিকায় ২৬ জুলাই ‘ঐকমত্যের জুলাই সনদে ভিন্নমতও থাকবে’ শিরোনামে প্রকাশিত খবর থেকে জুলাই সনদ নিয়ে সর্বশেষ অবস্থা জানা যাচ্ছে। এই সনদে সংবিধান, বিচারব্যবস্থা, নির্বাচন কমিশন, দুর্নীতি দমন, প্রশাসন এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সংস্কারের সুপারিশ অন্তর্ভুক্ত করা হচ্ছে। বেশ কিছু বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্য গড়ে উঠেছে। সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদের সংশোধন, সংসদীয় স্থায়ী কমিটি শক্তিশালীকরণ, নির্বাচন কমিশনের সাংবিধানিক ভিত্তি তৈরি—এসব বিষয়ে ইতিবাচক অগ্রগতি হয়েছে। তবে উচ্চকক্ষ প্রবর্তন, সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব (পিআর), সংসদে নারী আসনে সরাসরি নির্বাচনে অংশগ্রহণের মতো বিষয়গুলোতে এখনো মতভেদ রয়ে গেছে।
কমিশনের পক্ষ থেকে যে ‘নোট অব ডিসেন্ট’ রাখার কথা বলা হচ্ছে, তা রাজনৈতিক বাস্তবতার প্রতি শ্রদ্ধাশীল এক প্রক্রিয়া। এটি একদিকে গণতন্ত্রের বহুমাত্রিকতাকে স্বীকৃতি দেয়, অন্যদিকে ভবিষ্যতে রাজনৈতিক বিভক্তির ঝুঁকিও রেখে দেয়। রাজনৈতিক ঐকমত্যের ভিত্তিতে প্রণীত একটি জাতীয় সনদ যদি নিজেই বিভক্ত অবস্থার প্রতিচ্ছবি হয়, তবে তা বাস্তবায়নে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করতে পারে।
বিএনপি উচ্চকক্ষ, পিআর পদ্ধতি, সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানে নিয়োগের বিধান—এসব বিষয়ে দ্বিমত পোষণ করেছে। কিছু আলোচনায় তারা অংশ না নেওয়ার সিদ্ধান্তও জানিয়েছে। বিপরীতে, জামায়াতসহ একাধিক দল ও জোট সনদের প্রতি সমর্থন জানিয়েছে এবং রক্ত ও ত্যাগের মর্যাদা রক্ষায় এই সনদকে অপরিহার্য বলেছে।
সনদের সময়সীমা নিয়েও উদ্বেগ আছে। কমিশনের মেয়াদ শেষ হচ্ছে ১৫ আগস্ট, আর সরকার চায় ৩১ জুলাইয়ের মধ্যেই ঘোষণা দিতে। এমন সময় চাপ ও অমীমাংসিত বিষয় নিয়ে একগুঁয়েভাবে সনদ ঘোষণা করলে তা একপেশে বা অকার্যকর হয়ে উঠতে পারে।
রাষ্ট্রগঠনের এই নব উদ্যোগে ‘ঐকমত্য’ শব্দটি যতটা গুরুত্বপূর্ণ, ‘ভিন্নমত’ শব্দটিও ততটাই অপরিহার্য। কারণ, মতের বৈচিত্র্য ও বিতর্ক থেকেই উদ্ভব হয় গণতন্ত্রের প্রাণশক্তি। যদি জুলাই সনদ তার লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যে অবিচল থাকে এবং প্রক্রিয়ার প্রতি বিশ্বস্ততা বজায় রাখে, তাহলে এটি এক নতুন বাংলাদেশের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করতে পারে। তবে এর জন্য দরকার হবে ধৈর্য, স্বচ্ছতা এবং সত্যিকার রাজনৈতিক সদিচ্ছা।
মনে রাখতে হবে, ঐকমত্য মানে ভিন্নমতের অনুপস্থিতি নয়। বরং মতের বৈচিত্র্যকে সম্মান জানিয়ে, গণতান্ত্রিক সহনশীলতায় পৌঁছানোই সত্যিকারের ঐকমত্য। যদি জুলাই সনদ এই চেতনায় অনুপ্রাণিত হয়, তবে সেটি কেবল একটি সময়ের দলিল হবে না—বরং হয়ে উঠবে নতুন বাংলাদেশের রূপরেখা। এটা ঠিক, এই কাজটি খুব সহজ নয়। তবে রাজনৈতিক দলগুলো সত্যি আন্তরিক হলে অসম্ভবও নয়।
বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে জুলাই অভ্যুত্থান একটি গুরুত্বপূর্ণ মোড় পরিবর্তনকারী ঘটনা। এই অভ্যুত্থান রাষ্ট্র ও শাসনব্যবস্থার এক সংকটময় পটভূমিতে ঘটেছে, যার পরিণতিতে অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয় এবং শুরু হয় রাষ্ট্রব্যবস্থার মৌলিক সংস্কারের এক উচ্চাকাঙ্ক্ষী প্রচেষ্টা। এই প্রেক্ষাপটে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের উদ্যোগে যে ‘জুলাই সনদ’ প্রণয়নের কাজ চলছে, তা নিঃসন্দেহে একটি গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগ।
জুলাই সনদ ঘোষণা নিয়ে রাজনৈতিক মহলে নানা রকম আলোচনা আছে। আজকের পত্রিকায় ২৬ জুলাই ‘ঐকমত্যের জুলাই সনদে ভিন্নমতও থাকবে’ শিরোনামে প্রকাশিত খবর থেকে জুলাই সনদ নিয়ে সর্বশেষ অবস্থা জানা যাচ্ছে। এই সনদে সংবিধান, বিচারব্যবস্থা, নির্বাচন কমিশন, দুর্নীতি দমন, প্রশাসন এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সংস্কারের সুপারিশ অন্তর্ভুক্ত করা হচ্ছে। বেশ কিছু বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্য গড়ে উঠেছে। সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদের সংশোধন, সংসদীয় স্থায়ী কমিটি শক্তিশালীকরণ, নির্বাচন কমিশনের সাংবিধানিক ভিত্তি তৈরি—এসব বিষয়ে ইতিবাচক অগ্রগতি হয়েছে। তবে উচ্চকক্ষ প্রবর্তন, সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব (পিআর), সংসদে নারী আসনে সরাসরি নির্বাচনে অংশগ্রহণের মতো বিষয়গুলোতে এখনো মতভেদ রয়ে গেছে।
কমিশনের পক্ষ থেকে যে ‘নোট অব ডিসেন্ট’ রাখার কথা বলা হচ্ছে, তা রাজনৈতিক বাস্তবতার প্রতি শ্রদ্ধাশীল এক প্রক্রিয়া। এটি একদিকে গণতন্ত্রের বহুমাত্রিকতাকে স্বীকৃতি দেয়, অন্যদিকে ভবিষ্যতে রাজনৈতিক বিভক্তির ঝুঁকিও রেখে দেয়। রাজনৈতিক ঐকমত্যের ভিত্তিতে প্রণীত একটি জাতীয় সনদ যদি নিজেই বিভক্ত অবস্থার প্রতিচ্ছবি হয়, তবে তা বাস্তবায়নে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করতে পারে।
বিএনপি উচ্চকক্ষ, পিআর পদ্ধতি, সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানে নিয়োগের বিধান—এসব বিষয়ে দ্বিমত পোষণ করেছে। কিছু আলোচনায় তারা অংশ না নেওয়ার সিদ্ধান্তও জানিয়েছে। বিপরীতে, জামায়াতসহ একাধিক দল ও জোট সনদের প্রতি সমর্থন জানিয়েছে এবং রক্ত ও ত্যাগের মর্যাদা রক্ষায় এই সনদকে অপরিহার্য বলেছে।
সনদের সময়সীমা নিয়েও উদ্বেগ আছে। কমিশনের মেয়াদ শেষ হচ্ছে ১৫ আগস্ট, আর সরকার চায় ৩১ জুলাইয়ের মধ্যেই ঘোষণা দিতে। এমন সময় চাপ ও অমীমাংসিত বিষয় নিয়ে একগুঁয়েভাবে সনদ ঘোষণা করলে তা একপেশে বা অকার্যকর হয়ে উঠতে পারে।
রাষ্ট্রগঠনের এই নব উদ্যোগে ‘ঐকমত্য’ শব্দটি যতটা গুরুত্বপূর্ণ, ‘ভিন্নমত’ শব্দটিও ততটাই অপরিহার্য। কারণ, মতের বৈচিত্র্য ও বিতর্ক থেকেই উদ্ভব হয় গণতন্ত্রের প্রাণশক্তি। যদি জুলাই সনদ তার লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যে অবিচল থাকে এবং প্রক্রিয়ার প্রতি বিশ্বস্ততা বজায় রাখে, তাহলে এটি এক নতুন বাংলাদেশের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করতে পারে। তবে এর জন্য দরকার হবে ধৈর্য, স্বচ্ছতা এবং সত্যিকার রাজনৈতিক সদিচ্ছা।
মনে রাখতে হবে, ঐকমত্য মানে ভিন্নমতের অনুপস্থিতি নয়। বরং মতের বৈচিত্র্যকে সম্মান জানিয়ে, গণতান্ত্রিক সহনশীলতায় পৌঁছানোই সত্যিকারের ঐকমত্য। যদি জুলাই সনদ এই চেতনায় অনুপ্রাণিত হয়, তবে সেটি কেবল একটি সময়ের দলিল হবে না—বরং হয়ে উঠবে নতুন বাংলাদেশের রূপরেখা। এটা ঠিক, এই কাজটি খুব সহজ নয়। তবে রাজনৈতিক দলগুলো সত্যি আন্তরিক হলে অসম্ভবও নয়।
অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব গ্রহণের এক বছর পূর্ণ হচ্ছে। গত বছর জুলাই-আগস্টে দেশে গড়ে ওঠা ছাত্র-জনতার তীব্র আন্দোলনের মুখে শেখ হাসিনা সরকারের সাড়ে ১৫ বছরের একনায়কতান্ত্রিক স্বৈরাচারী শাসনের অবসান ঘটে। তখন সাধারণ মানুষের মনে একধরনের ইতিবাচক প্রত্যাশা সৃষ্টি হয়েছিল।
৩ ঘণ্টা আগেবর্ষাকাল এলেই যেন ঢাকায় জলাবদ্ধতা ভর করে বসে। জলাবদ্ধতা যখন এই শহরের ঘাড়ে চেপে বসে, তখন এই নগরের মানুষকে অনেক দুর্ভোগ পোহাতে হয়। আজ এই শহরের এত সমস্যার মুখোমুখি হতে হতো না যদি তারা অপরিকল্পিত নগরায়ণের দিকে না ঝুঁকত, যদি নদী কিংবা খালের স্থান দখল না করে কোনো স্থাপনা করার পরিকল্পনা করত।
৩ ঘণ্টা আগেটাঙ্গাইলের সখীপুর-কচুয়া-আড়াইপাড়া সড়কের যে করুণ অবস্থা, তা আসলে আমাদের সড়ক যোগাযোগব্যবস্থার অব্যবস্থাপনার এক করুণ প্রতিচ্ছবি। সাত কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ সড়ক—যেখানে প্রতিদিন স্কুলশিক্ষার্থী, রোগী, কৃষিপণ্যবাহী ট্রাক ও হাজারো সাধারণ মানুষ চলাচল করে।
৩ ঘণ্টা আগেজুলাই অভ্যুত্থানের এক বছর হয়ে গেল। ওই অভ্যুত্থানের সময় দেশের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের প্রত্যাশা অনেক বেশি ছিল। মূলত তারা ফ্যাসিবাদী সরকারব্যবস্থার পতন ঘটিয়ে একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন দেখেছিল। মূলত বাংলাদেশের মূল সমস্যা সেটাই যে ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ-পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশে একটি
১ দিন আগে