সম্পাদকীয়
ভারতবর্ষ আক্রমণ করতে এসে বীর আলেকজান্ডার নিছক রসিকতা করে নিশ্চয়ই বলেননি, ‘সত্যিই সেলুকাস, কী বিচিত্র এই দেশ!’ আলেকজান্ডার এই দেশের বৈচিত্র্য আর কতটুকু দেখেছেন? বাংলা পর্যন্ত পৌঁছাতে পারলে তিনি বুঝতে পারতেন কত ধানে কত চাল। ভাগ্যিস, বাংলা পর্যন্ত তাঁকে আসতে হয়নি। জীবনের অনেক বৈপরীত্য দেখার হাত থেকে বেঁচে গেছেন তিনি।
এটা এমনই এক দেশ, যাকে ইতিহাসের এক নির্দিষ্ট সময়ে অনেকেই ‘মবের মুল্লুক’ নামে অভিহিত করেছেন। একদল শিক্ষার্থী ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’-এর নাম নিয়ে বিভিন্ন মানুষকে টার্গেট করে চাঁদাবাজি করতে লেগে গেছে। আলেকজান্ডার এসব দেখে নিশ্চয়ই বুঝতে পারতেন, তাঁর রাজত্বকালে যদি এভাবে হঠাৎ করে মবতন্ত্র কায়েম হতো, তাহলে ক্ষমতায় টিকে থাকা তাঁর পক্ষে সম্ভব হতো না। সহযোদ্ধা সেলুকাসকে বলা ‘বিচিত্র দেশ’ তাঁকে মুহূর্তেই অস্তিত্বহীন করে দিত।
এই বিচিত্র দেশের বিচিত্র এক খবর বেরিয়েছে ২৭ জুলাইয়ের আজকের পত্রিকায়। যদিও বিচিত্র দেশে এ রকম ঘটনা সব সময়ই ঘটে কি না, সে প্রশ্ন আলেকজান্ডার করতেই পারেন। কিন্তু এই প্রশ্নের সহজ উত্তর পাবেন, এ রকম আশ্বাস তাঁকে কেউ দিতে পারবে না। ঝালকাঠির জেলা ও দায়রা জজ আদালতে হত্যা মামলার সাক্ষ্য দিতে গিয়ে কেন বিপাকে পড়েছিলেন আব্দুল মান্নান চুন্নু মৃধা, সে কথা কি দিগ্বিজয়ী বীর ধারণা করতে পারবেন? কেন চুন্নু মৃধা আদালতে সাক্ষ্য দিতে গিয়েছিলেন? কারণ, তিনি রুবেল গাজী হত্যার একমাত্র প্রত্যক্ষদর্শী। তাঁর সাক্ষ্যের ওপর এই মামলার অনেক কিছুই নির্ভর করছে। চুন্নু মৃধা নিজে যা দেখেছেন, সে কথাই নিশ্চয় আদালতে বলেছেন। এবং তারপর কর্মশেষে বাড়ি ফেরার জন্য তৈরি হন। তখন আদালত প্রাঙ্গণেই মামলার আসামিপক্ষ লাঠিসোঁটা দিয়ে তাঁকে বেদম মারধর করে। চুন্নু মৃধা নলছিটি উপজেলার দপদপিয়া ইউনিয়নের কয়া গ্রামের সাবেক ইউপি সদস্য। কিন্তু এই পরিচয় তাঁর রক্ষাকবজ হয়ে উঠতে পারেনি। হামলাকারীরা লোহার হাতুড়ি ও লাঠিসোঁটা দিয়ে তাঁকে রক্তাক্ত করে তোলে। স্থানীয় লোকেরা তাঁকে উদ্ধার করে আদালত ভবনে এনে প্রাথমিক সেবা দেওয়ার পর পুলিশের সহায়তায় ঝালকাঠি জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
আলেকজান্ডারকে যদি বলা হয়, প্রত্যক্ষদর্শী এই সাক্ষীকে আসামিপক্ষ আদালত চত্বরেই মারধর করেছে, তাহলে কি দিগ্বিজয়ী এই যোদ্ধার কপালে ভাঁজ পড়বে না? তাঁদের জামানায় আসামিরা কি আদালত প্রাঙ্গণে হত্যা মামলার প্রত্যক্ষদর্শীকে এভাবে পেটাতে পারতেন? তাঁদের সময়কালে আদালত চত্বর কি এ রকম অরক্ষিত ছিল? এই যদি হয় নিরাপত্তার অবস্থা, তাহলে প্রত্যক্ষদর্শীরা কি আর আদালতে সাক্ষ্য দিতে যাবেন? জীবনের মূল্য বড় নাকি সাক্ষ্য দেওয়ার কর্তব্য বড়? জীবনই যদি না থাকল, তাহলে সাক্ষ্যের দাম কী? এসব কথা ভাবতে ভাবতে আলেকজান্ডারের মাথাটা নিশ্চয়ই ঝিমঝিম করে উঠত। তিনি নিশ্চয়ই মাথা চুলকে সেলুকাসকে বলতেন, ‘সত্যিই সেলুকাস, কী বিচিত্র এই দেশ!’
তবে এবার সে উক্তির উদ্দেশ্য থাকত ভিন্ন!
ভারতবর্ষ আক্রমণ করতে এসে বীর আলেকজান্ডার নিছক রসিকতা করে নিশ্চয়ই বলেননি, ‘সত্যিই সেলুকাস, কী বিচিত্র এই দেশ!’ আলেকজান্ডার এই দেশের বৈচিত্র্য আর কতটুকু দেখেছেন? বাংলা পর্যন্ত পৌঁছাতে পারলে তিনি বুঝতে পারতেন কত ধানে কত চাল। ভাগ্যিস, বাংলা পর্যন্ত তাঁকে আসতে হয়নি। জীবনের অনেক বৈপরীত্য দেখার হাত থেকে বেঁচে গেছেন তিনি।
এটা এমনই এক দেশ, যাকে ইতিহাসের এক নির্দিষ্ট সময়ে অনেকেই ‘মবের মুল্লুক’ নামে অভিহিত করেছেন। একদল শিক্ষার্থী ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’-এর নাম নিয়ে বিভিন্ন মানুষকে টার্গেট করে চাঁদাবাজি করতে লেগে গেছে। আলেকজান্ডার এসব দেখে নিশ্চয়ই বুঝতে পারতেন, তাঁর রাজত্বকালে যদি এভাবে হঠাৎ করে মবতন্ত্র কায়েম হতো, তাহলে ক্ষমতায় টিকে থাকা তাঁর পক্ষে সম্ভব হতো না। সহযোদ্ধা সেলুকাসকে বলা ‘বিচিত্র দেশ’ তাঁকে মুহূর্তেই অস্তিত্বহীন করে দিত।
এই বিচিত্র দেশের বিচিত্র এক খবর বেরিয়েছে ২৭ জুলাইয়ের আজকের পত্রিকায়। যদিও বিচিত্র দেশে এ রকম ঘটনা সব সময়ই ঘটে কি না, সে প্রশ্ন আলেকজান্ডার করতেই পারেন। কিন্তু এই প্রশ্নের সহজ উত্তর পাবেন, এ রকম আশ্বাস তাঁকে কেউ দিতে পারবে না। ঝালকাঠির জেলা ও দায়রা জজ আদালতে হত্যা মামলার সাক্ষ্য দিতে গিয়ে কেন বিপাকে পড়েছিলেন আব্দুল মান্নান চুন্নু মৃধা, সে কথা কি দিগ্বিজয়ী বীর ধারণা করতে পারবেন? কেন চুন্নু মৃধা আদালতে সাক্ষ্য দিতে গিয়েছিলেন? কারণ, তিনি রুবেল গাজী হত্যার একমাত্র প্রত্যক্ষদর্শী। তাঁর সাক্ষ্যের ওপর এই মামলার অনেক কিছুই নির্ভর করছে। চুন্নু মৃধা নিজে যা দেখেছেন, সে কথাই নিশ্চয় আদালতে বলেছেন। এবং তারপর কর্মশেষে বাড়ি ফেরার জন্য তৈরি হন। তখন আদালত প্রাঙ্গণেই মামলার আসামিপক্ষ লাঠিসোঁটা দিয়ে তাঁকে বেদম মারধর করে। চুন্নু মৃধা নলছিটি উপজেলার দপদপিয়া ইউনিয়নের কয়া গ্রামের সাবেক ইউপি সদস্য। কিন্তু এই পরিচয় তাঁর রক্ষাকবজ হয়ে উঠতে পারেনি। হামলাকারীরা লোহার হাতুড়ি ও লাঠিসোঁটা দিয়ে তাঁকে রক্তাক্ত করে তোলে। স্থানীয় লোকেরা তাঁকে উদ্ধার করে আদালত ভবনে এনে প্রাথমিক সেবা দেওয়ার পর পুলিশের সহায়তায় ঝালকাঠি জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
আলেকজান্ডারকে যদি বলা হয়, প্রত্যক্ষদর্শী এই সাক্ষীকে আসামিপক্ষ আদালত চত্বরেই মারধর করেছে, তাহলে কি দিগ্বিজয়ী এই যোদ্ধার কপালে ভাঁজ পড়বে না? তাঁদের জামানায় আসামিরা কি আদালত প্রাঙ্গণে হত্যা মামলার প্রত্যক্ষদর্শীকে এভাবে পেটাতে পারতেন? তাঁদের সময়কালে আদালত চত্বর কি এ রকম অরক্ষিত ছিল? এই যদি হয় নিরাপত্তার অবস্থা, তাহলে প্রত্যক্ষদর্শীরা কি আর আদালতে সাক্ষ্য দিতে যাবেন? জীবনের মূল্য বড় নাকি সাক্ষ্য দেওয়ার কর্তব্য বড়? জীবনই যদি না থাকল, তাহলে সাক্ষ্যের দাম কী? এসব কথা ভাবতে ভাবতে আলেকজান্ডারের মাথাটা নিশ্চয়ই ঝিমঝিম করে উঠত। তিনি নিশ্চয়ই মাথা চুলকে সেলুকাসকে বলতেন, ‘সত্যিই সেলুকাস, কী বিচিত্র এই দেশ!’
তবে এবার সে উক্তির উদ্দেশ্য থাকত ভিন্ন!
অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব গ্রহণের এক বছর পূর্ণ হচ্ছে। গত বছর জুলাই-আগস্টে দেশে গড়ে ওঠা ছাত্র-জনতার তীব্র আন্দোলনের মুখে শেখ হাসিনা সরকারের সাড়ে ১৫ বছরের একনায়কতান্ত্রিক স্বৈরাচারী শাসনের অবসান ঘটে। তখন সাধারণ মানুষের মনে একধরনের ইতিবাচক প্রত্যাশা সৃষ্টি হয়েছিল।
৩ ঘণ্টা আগেবর্ষাকাল এলেই যেন ঢাকায় জলাবদ্ধতা ভর করে বসে। জলাবদ্ধতা যখন এই শহরের ঘাড়ে চেপে বসে, তখন এই নগরের মানুষকে অনেক দুর্ভোগ পোহাতে হয়। আজ এই শহরের এত সমস্যার মুখোমুখি হতে হতো না যদি তারা অপরিকল্পিত নগরায়ণের দিকে না ঝুঁকত, যদি নদী কিংবা খালের স্থান দখল না করে কোনো স্থাপনা করার পরিকল্পনা করত।
৩ ঘণ্টা আগেটাঙ্গাইলের সখীপুর-কচুয়া-আড়াইপাড়া সড়কের যে করুণ অবস্থা, তা আসলে আমাদের সড়ক যোগাযোগব্যবস্থার অব্যবস্থাপনার এক করুণ প্রতিচ্ছবি। সাত কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ সড়ক—যেখানে প্রতিদিন স্কুলশিক্ষার্থী, রোগী, কৃষিপণ্যবাহী ট্রাক ও হাজারো সাধারণ মানুষ চলাচল করে।
৩ ঘণ্টা আগেজুলাই অভ্যুত্থানের এক বছর হয়ে গেল। ওই অভ্যুত্থানের সময় দেশের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের প্রত্যাশা অনেক বেশি ছিল। মূলত তারা ফ্যাসিবাদী সরকারব্যবস্থার পতন ঘটিয়ে একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন দেখেছিল। মূলত বাংলাদেশের মূল সমস্যা সেটাই যে ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ-পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশে একটি
১ দিন আগে