Ajker Patrika

রায়পুরা ম্যারাথন

সম্পাদকীয়
রায়পুরা ম্যারাথন

ভালো-মন্দ নানা ঘটনা ঘটছে দেশে। শিল্পকলা একাডেমির নাট্যামোদীদের আয়োজনে ডিম ছুড়েছে দুর্বৃত্তরা, সড়ক দুর্ঘটনা কমছে না, কমছে না জিনিসপত্রের দাম। কিন্তু এরই মাঝে নরসিংদীতে ঘটল এক দারুণ ঘটনা। স্বাস্থ্যকর জীবনের জন্য এ ঘটনা খুবই আশাপ্রদ।

নরসিংদীর রায়পুরায় আয়োজন করা হয়েছিল ম্যারাথন। ব্যাপক সাড়াও পড়েছিল তাতে। ভিনদেশের কয়েকজনসহ প্রায় ৭০০ প্রতিযোগী অংশ নিয়েছিলেন এই আয়োজনে। ‘রায়পুরা ম্যারাথন’ নামে অনুষ্ঠিত এই দৌড় প্রতিযোগিতা এবার সাড়া জাগিয়েছিল রায়পুরা তথা নরসিংদীবাসীর মনে। সেই সাড়ায় নিশ্চয়ই উজ্জীবিত হয়েছে দেশের অন্য অঞ্চলের মানুষও।

কেন এই প্রতিযোগিতার জন্য এত সাধুবাদ? কারণ আর কিছুই নয়, একটি ভালো সংবাদের মূল্য অনেক। প্রতিহিংসা, লোভ, মারপিট, লুটতরাজ, দখল, ঘুষ ইত্যাদি খবর মনকে নেতিবাচকের দিকে নিয়ে যায়। আর সবার জন্য আনন্দের সংবাদ মনকে ভালো করে তোলে। জানান দেয়, আশাপ্রদ কিছু ঘটছে কোথাও। এর মূল্য অপরিসীম।

ম্যারাথন নিয়ে দুটো কথা বলা যেতেই পারে। ম্যারাথন আসলে একটি ভেষজ ওষুধ। আমরা তাকে মৌরি নামে চিনি। গ্রিক ভাষায় ম্যারাথন মানে মৌরিগাছ। গ্রিসে এখনো ম্যারাথন নামে একটি শহর রয়েছে। এই ম্যারাথন শহরে খ্রিষ্টপূর্ব ৪৯০ বছর আগে পারস্য আর এথেন্সের (গ্রিস) মধ্যে যুদ্ধ হয়েছিল। ম্যারাথন যুদ্ধে জয়ী হওয়ার পর বিজয়ের বার্তা নিয়ে জীবন বাজি রেখে এক বীর দৌড়ে এসেছিলেন এথেন্সে। যুদ্ধজয়ের সেই দৌড়কেই ম্যারাথন দৌড় নামে আখ্যা দেওয়া হয়।

প্রাচীন অলিম্পিকে ম্যারাথন দৌড় ছিল না। ১৮৯৬ সালে প্রথম এই দৌড় অলিম্পিকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল। ফরাসি নাগরিক মিশেল ব্রেয়াল অলিম্পিকে ম্যারাথন অন্তর্ভুক্ত করার জন্য অক্লান্ত পরিশ্রম করেছিলেন। অলিম্পিকে প্রথম ম্যারাথন বিজয়ী গ্রিসের স্পিরিদোন লুইসের হাতে রুপা দিয়ে তৈরি একটি কাপ তুলে দিয়েছিলেন মিশেল ব্রেয়াল।

রায়পুরার এই প্রতিযোগিতায় তিন ক্যাটাগরিতে ম্যারাথনের আয়োজন করা হয়। এটাও খুব ভালো সিদ্ধান্ত। ৪২ কিলোমিটারের ফুল ম্যারাথনের পাশাপাশি ২১ কিলোমিটারের হাফ ম্যারাথন এবং ১০ কিলোমিটারের ছোট ম্যারাথন ছিল বলে বিভিন্ন বয়সের বিভিন্ন ক্রীড়াবিদ এতে অংশ নিতে পেরেছে।

শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের বিকাশের জন্য এ ধরনের আয়োজনের প্রয়োজন আছে। মানুষ দিনে দিনে খুব বেশি যান্ত্রিক হয়ে যাচ্ছে। যন্ত্রের প্রতি তার নির্ভরতা বাড়ছে। সবকিছু হাতের মুঠোয় থাকায় মানুষের স্পর্শ, মানুষের সঙ্গে সংযোগ ইত্যাদি কমছে। ম্যারাথনের মতো আরও অনেক ধরনের খেলাধূলাকে যদি স্থানীয়ভাবে পৃষ্ঠপোষণা দেওয়া হয়, তাহলে এলাকাবাসীর জন্য তা খুবই উপকারী হবে। তেমনি নাটক-চলচ্চিত্র-গানসহ শিল্পের নানা শাখা যদি সবার কাছে অবারিত হয় এবং তাতে থাকে সাধারণ মানুষের ব্যাপক অংশগ্রহণ, তাহলে মানুষের সুকুমারবৃত্তিও বিকশিত হবে। ‘সুন্দর দেহে সুন্দর মন’ আমাদের সবার কাঙ্ক্ষিত। রায়পুরাবাসীর এই উদ্যোগ থেকে শিক্ষা নিয়ে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে দেহ ও মনকে উজ্জীবিত করতে পারে—এ রকম উদ্যোগ নেওয়া হোক বেশি করে। রায়পুরাবাসীকে ধন্যবাদ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মামলার আসামিসহ বিএসইসির ২২ কর্মকর্তাকে বরখাস্তের সিদ্ধান্ত

সরকারি টাকায় ব্যক্তিগত সড়ক কার্পেটিং বিচারপতি খিজির হায়াতের, প্রমাণ পেয়েছে দুদক

অভিনেতা সিদ্দিককে মারধর করে থানায় সোপর্দ, ছিঁড়ে ফেলা হয় পরনের পোশাক

বগুড়ায় ছাত্রদল নেতার ওপর হামলা, পাঁচ নেতা-কর্মীকে শোকজ

ঐকমত্য কমিশনের সদস্যদের তেলের বরাদ্দ ২৫০ থেকে বেড়ে ৫০০ লিটার

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত