Ajker Patrika

পদ্মায় সেতু নির্মাণ বিপুল চ্যালেঞ্জ জয়

সাহিদুল ইসলাম চৌধুরী
আপডেট : ২৫ জুন ২০২২, ১০: ৪১
পদ্মায় সেতু নির্মাণ বিপুল চ্যালেঞ্জ জয়

প্রশ্ন: পদ্মা নদীর কী কী বৈশিষ্ট্য সেতু নির্মাণের সময় বিবেচনায় নেওয়া হয়েছিল?
বসুনিয়া: প্রথম বিবেচনায় ছিল নদী যেখানে অতিক্রম করতে চাই, সেখানে রাস্তাঘাট আগে থেকেই আছে কি না। থাকলে পুরোপুরি নতুন অ্যালাইনমেন্টে 
যেতে হয় না। খরচও কম পড়ে। এ ছাড়া, নদীর বৈশিষ্ট্য কেমন। ভাঙে কেমন। 

গতিপথ বদলায় কি না। সেতু যে স্থানে হবে, সেখানকার মাটি কেমন। ভূমিকম্পের প্রবণতা কেমন। এসব করতে করতে শুরুতে দুটি স্থান ঠিক করা হয়েছিল। তবে মাওয়া প্রান্তে বর্তমান স্থানে মাটি তুলনামূলকভাবে স্থিতিশীল হওয়ায় এখানেই সেতু নির্মিত হলো। 

প্রশ্ন: প্রকৌশলগত দিক থেকে পদ্মা সেতুর বিশেষ বৈশিষ্ট্য কী কী? 
বসুনিয়া: পদ্মা খুবই খরস্রোতা নদী। বেশ গভীর। নদীর তলদেশ ও গভীরে মাটির অবস্থা বিবেচনায় নিয়ে কাজ করতে হয়েছে। এসব ক্ষেত্রে সেতুতে স্প্যান লম্বা দিতে হয়। স্প্যান ছোট দিলে ‘পিয়ার’ (কলাম, যা সাধারণভাবে পিলার হিসেবে পরিচিত) কাছাকাছি দিতে হয়। এতে পানির ঘূর্ণনে নিচে মাটি সরে যাওয়ার ঝুঁকি থাকে। এসব বিবেচনায় প্রতিটি স্প্যান ১৫০ মিটার করা হয়েছে, যা ৫০০ ফুটের বেশি। সেতুতে এ রকম ৪১টি স্প্যান আছে। সব মিলিয়ে সেতুটি ৬ হাজার ১৫০ মিটার দীর্ঘ। 
সাধারণ সেতুতে প্রি-স্ট্রেসড কংক্রিট স্প্যান দেওয়া হয়। যমুনার ওপর বঙ্গবন্ধু সেতুর স্প্যান প্রি-স্ট্রেসড বক্স গার্ডার করে করে নির্মাণ করা হয়েছে। কিন্তু পদ্মার বর্তমান স্থানে ১৫০ মিটার দীর্ঘ একই ধরনের স্প্যান দিলে ঝামেলা হতো। শুরু থেকেই রেলের ব্যবস্থা এবং মাঝখানে মিডিয়ানসহ চার লেনের প্রশস্ত সেতু নির্মাণের বিষয়টি বিবেচনায় ছিল। শেষ পর্যন্ত সেতুটি ওপরের অংশে ৭২ ফুট চওড়া হয়ে গেছে। এ ছাড়া এখানে দুই ধরনের স্টিল, রিইনফোর্সড কংক্রিট ও প্রি-স্ট্রেসড কংক্রিটের সমন্বয়ে স্প্যানগুলো নির্মাণ করা হয়েছে। এ ছাড়া সেতুর ভিত্তি মজবুত করার জন্য নদীর তলদেশে কমপক্ষে ১২০ মিটার গভীর পাইল করতে হয়েছে। পাইলের অনেক স্থানে বাঁকা করে করতে হয়েছে, যা বেশ ঝামেলার ছিল। 

প্রশ্ন: যমুনার ওপর নির্মিত বঙ্গবন্ধু সেতু থেকে পদ্মা সেতু কীভাবে আলাদা? 
বসুনিয়া: বঙ্গবন্ধু সেতু শুরুতে শুধু সড়ক সেতু হিসেবে নির্মাণ আরম্ভ হয়। পরে একপাশে রেললাইন যুক্ত হয়; কিছুটা ঝুলন্ত অবস্থায়। এটা নিরাপদ। কিন্তু সড়কের পাশাপাশি রেল বসাতে গিয়ে লেনগুলো ছোট হয়ে গেছে। বাস যখন যায়, মনে হয় গায়ে গায়ে লেগে যাচ্ছে। পাঁচ কিলোমিটার লম্বা একটি সেতুতে এটা মানানসই ব্যবস্থা নয়। পদ্মা সেতুতে তা হবে না। এটি যথেষ্ট প্রশস্ত সেতু। 

প্রশ্ন: পদ্মা সেতুতে কিছু কি নতুন করা হয়েছে, যা পৃথিবীর খুব কম সেতুতেই আছে বা আদৌ নেই? 
বসুনিয়া: পদ্মা সেতুর মতো এত গভীরতায় আর কোনো সেতুতে পাইল দেওয়া হয়নি। প্রতিটি পিয়ারের নিচে ছয়টি করে পাইল আছে। সবগুলো পাইল আড়াই ইঞ্চি পুরু স্টিল দিয়ে ১০ ফুট ব্যাসে তৈরি এবং বাঁকা। এর মধ্যে কয়েকটি পিয়ারের নিচে পাইল করার সময় গভীরে কাদামাটি পাওয়া গেল। সেখানে মাটির মান উন্নত করতে তীব্র চাপে রাসায়নিক পদার্থ প্রবেশ করানো হলো। পরে লোড পরীক্ষা করে দেখা গেছে পাইল অনেক শক্তিশালী হয় গেছে।

প্রশ্ন: সেতু কি দেখতে ইংরেজি ‘এস’ আকৃতির? 
বসুনিয়া: ঠিক ‘এস’ নয়। সেতুটি বাঁকানো রেখার মতো। দীর্ঘ সেতু সাধারণত সোজা করে নির্মিত হয় না। যমুনার ওপর বঙ্গবন্ধু সেতুও একটু বাঁকা। এর একটি কারণ হলো, কলামের ওপর যেসব বিয়ারিং সেতুর ওজন বহন করে, তার ছয়-সাতটি মিলে একেকটি মডিউল হয়। একেকটি মডিউল শেষে যেখানে নতুন মডিউল শুরু হয়েছে, সেখানেই বাঁক দিতে হয়েছে। দ্বিতীয়ত, দীর্ঘ সেতুর একটি মনস্তাত্ত্বিক সমীক্ষা থাকে। সেই সমীক্ষায় বলা হয়, সেতু যদি সোজা হয়, তাহলে গাড়িচালকের একঘেয়েমি আসে। সেতুতে বাঁক থাকলে চালকেরা সতর্ক থাকে। এ ছাড়া, সেতু সোজা থাকলে উল্টো দিকের হেডলাইট থেকে আসা আলোয় চালকের বেশ অসুবিধা হয়। চতুর্থ কারণ হলো, বাঁকা সেতুতে আলো জ্বালানো হলে নান্দনিকতা বেড়ে যায়। 

প্রশ্ন: কেন সেতুটি দ্বিতল করতে হলো?
বসুনিয়া: নিচে রেল আর ওপরে গাড়ি চলাচলের ব্যবস্থা করতে গিয়ে সেতুটি দ্বিতল করতে হয়েছে। পাশাপাশি উভয় সুবিধা নিতে গেলে আরও চওড়া করতে হতো সেতুটি। 

প্রশ্ন: সেতু নির্মাণে কী কী চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হয়েছে?
বসুনিয়া: প্রথম চ্যালেঞ্জ এল বিশ্বব্যাংকের তরফ থেকে। তারা অর্থায়ন বন্ধ করল; একই সঙ্গে অন্য বিদেশিরাও। শেষ পর্যন্ত নির্মাণকাজ তত্ত্বাবধানের জন্য বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। দ্বিতীয় চ্যালেঞ্জ ছিল, নিজস্ব অর্থায়নে সেতু করতে গেলে ডলারের সংস্থান। মোট ৩০ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ের মধ্যে যেটুকু কেনাকাটা স্থানীয়ভাবে হয়েছে, তা টাকায় পরিশোধ করা হয়েছে। আর যা বিদেশ থেকে আনতে হয়েছে, তা ডলারে পরিশোধ করা হয়েছে। সরকার তো আর ডলার ছাপায় না। তাই বিদেশ থেকে শ্রমিকের পাঠানো রেমিট্যান্স ও রপ্তানি আয় বাবদ বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোয় যে ডলার আসে, তা খরচ করার ওপর সরকার নিয়ন্ত্রণ আরোপ করল। সেতুর জন্য প্রয়োজনীয় ডলার এসব ব্যাংক থেকে নেওয়া হলো। বিশ্বব্যাংক ও এডিবি থেকে ঋণ পাওয়া গেলে সুদ দিতে হতো হয়তো ১ শতাংশ। বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে দিতে হয়েছে কয়েক গুণ বেশি। 

প্রশ্ন: ২৬ জুন যানবাহন চালুর পর রেললাইন পাতার ক্ষেত্রে কি কোনো সমস্যা হতে পারে?
বসুনিয়া: মূল সেতু নির্মাণের সময়ই উভয় পাশে রেলসেতুর জন্য প্রয়োজনীয় ঢালসহ ৭০ ফুট পর্যন্ত উঁচু ভায়াডাক্ট এবং মূল সেতুর নিচের অংশে স্টিলের কাজ করে দেওয়া হয়েছে। এখন রেলের স্লিপার যাতে সমানভাবে বসে, সে জন্য কংক্রিটের আড়াই ইঞ্চি ঢালাই দিয়ে কমপেনসেটিং স্ল্যাব করে নিতে হবে। এর ওপর স্লিপার বসিয়ে তার ওপর রেললাইন পাতা হবে। কমপেনসেটিং স্ল্যাব ঢালাইয়ের সময় গাড়ি চললে কিছু ঝামেলা হতে পারে। তবে সেতুর লোড নেওয়ার যে ব্যবস্থা আছে, তাতে খুব বেশি কম্পন হওয়ার কথা নয়। তার পরও দরকার হলে রাতে সেতুতে গাড়ি চলাচল বন্ধ করে ঢালাই দেওয়া যেতে পারে। 

প্রশ্ন: এই সেতু নির্মাণ থেকে এখানকার তরুণ প্রকৌশলী ও প্রযুক্তিকর্মীরা কি কিছু শিখলেন?
বসুনিয়া: পদ্মা সেতুর কাজের বিভিন্ন পর্যায়ে মান নিয়ন্ত্রণে এখানে ও চীনে বাংলাদেশের অনেক প্রকৌশলী যুক্ত ছিলেন। অনেক ডিপ্লোমা প্রকৌশলী কাজ করেছেন। যেমন কম্পিউটার-নিয়ন্ত্রিত ঝালাই করা এবং ঠিকমতো ঝালাই হলো কি না, তা এক্স-রে দিয়ে পরীক্ষা করা এবং নদীশাসনের কাজ, সবই তো বাঙালিরাই করেছে। তাঁদের অনেকেই বেশ অভিজ্ঞ হয়ে গেছেন। বিশ্বের বহু নির্মাণ সংস্থায় একই ধরনের কাজে তাঁদের অনেকেই সুযোগ পাবেন। 

প্রশ্ন: সেতু চালুর পর কী কী বিষয়ে নজর রাখা দরকার হতে পারে?
বসুনিয়া: পদ্মা নদীর তীব্র স্রোত ফেরি ও লঞ্চ চলাচলের জন্য একটি চ্যালেঞ্জ। দুটি পিয়ারের (কলাম) মাঝখানে ৪৫০ ফুট জায়গা আছে। ফেরিগুলো মাত্র ৫০ ফুট চওড়া। সেতু অতিক্রম করে ভাটির দিকে যাওয়ার সময় সাবধানে চললে সেতুতে লাগার কোনো কারণ নেই। দুর্ঘটনা এড়াতে নৌ চলাচল কর্তৃপক্ষকে কিছু সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিতে হবে। 

স্বপ্নের পদ্মা সেতু সম্পর্কে সবশেষ খবর পেতে - এখানে ক্লিক করুন 

প্রশ্ন: পদ্মা সেতুতে ৩০ হাজার কোটি টাকার বেশি খরচ হয়েছে। সেতুর বিদ্যমান বৈশিষ্ট্য ঠিক রেখে ব্যয় কি এর চেয়ে কমানো যেত?
বসুনিয়া: বাংলাদেশে নির্মাণ ব্যয় শুরু ও শেষের হিসাবে পার্থক্য হয়ে যায়, কারণ শুরুতে ডিপিপি (ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট প্রফর্মা) ঠিকমতো করা হয় না। জমি অধিগ্রহণে ব্যয়ও এখানে বেশি। এর বাইরে পদ্মা সেতুতে খরচ বেশি হওয়ার বড় কারণ নদীর বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী নির্মাণকাজ করা। তীব্র স্রোত এবং নদীর তলদেশ ও গভীরে মাটির অবস্থা বিবেচনায় সেতুর ভিত্তি মজবুত করার জন্য কমপক্ষে ১২০ মিটার গভীর পাইল করতে হয়েছে। পাইলের অনেক স্থানে বাঁকা করে করতে হয়েছে, যা বেশ ঝামেলার ছিল। সেতুতে স্থাপন করা একেকটি স্প্যানের ওজন ৩ হাজার ১৫০ টন। চীনে নির্মিত এসব স্প্যান আনতে এবং তীব্র স্রোতের নদীতে স্থির থেকে কলামের ওপর স্থাপনে যথাক্রমে শক্তিশালী জাহাজ ও ক্রেন ব্যবহার করতে হলো। এ ধরনের জটিল কাজে অনুমানের বাইরেও বহু ঘটনা ঘটে। যত গভীরে যাবে, কাজে যত অনিশ্চয়তা ও জটিলতা থাকবে, খরচ তত বাড়বে।

পদ্মা সেতু সম্পর্কিত আরও পড়ুন:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের আপ্যায়নে ৮৩ কোটি টাকা ব্যয়ের তথ্য ‘সর্বৈব মিথ্যাচার’

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ০৭ নভেম্বর ২০২৫, ০০: ৫৫
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের আপ্যায়নে ৮৩ কোটি টাকা ব্যয়ের তথ্য ‘সর্বৈব মিথ্যাচার’

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের আপ্যায়নে ৮৩ কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে—সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ বিভিন্ন মাধ্যমে এমন দাবি ছড়িয়ে পড়েছে। তবে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং একে ‘সর্বৈব মিথ্যাচার’ বলে অভিহিত করেছে। প্রেস উইং জানিয়েছে, একটি বিশেষ মহল সরকারের বিরুদ্ধে পরিকল্পিতভাবে এ ধরনের অপপ্রচার চালাচ্ছে।

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইংয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ‘অতি সম্প্রতি মহলবিশেষের পক্ষ থেকে সংঘবদ্ধ অপপ্রচারে বলা হচ্ছে, জাতীয় ঐকমত্য কমিশন আপ্যায়ন বাবদ ৮৩ কোটি টাকা ব্যয় করেছে। এটি সম্পূর্ণ মিথ্যাচার। এটি একটি পরিকল্পিত প্রপাগান্ডা, যা প্রচারকারীরা কমিশনের কোনো ভাষ্য বা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ না করেই চালাচ্ছে।’

বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, জাতীয় ঐকমত্য কমিশন ২০২৫ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি থেকে কার্যক্রম শুরু করে। ২০২৪-২৫ এবং ২০২৫-২৬ অর্থবছরে কমিশনের মোট বাজেট ছিল ৭ কোটি ২৩ লাখ ৩১ হাজার ২৬ টাকা। এর মধ্যে ২০২৫ সালের ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত ব্যয় হয়েছে মাত্র ১ কোটি ৭১ লাখ ৩১ হাজার ১২৬ টাকা, যা মোট বরাদ্দের ২৩ দশমিক ৪৬ শতাংশ।

বাজেটের মধ্যে আপ্যায়ন খাতে বরাদ্দ ছিল ৬৩ লাখ টাকা, যার মধ্যে ব্যয় হয়েছে ৪৫ লাখ ৭৭ হাজার ৬৮৫ টাকা।

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং জানিয়েছে, আপ্যায়ন খাতের অধিকাংশ ব্যয় হয়েছে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা ও কমিশনের বিভিন্ন বৈঠক চলাকালে। এসব বৈঠকে রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতিনিধি, তাঁদের সহযোগী, সাংবাদিক, কমিশনের কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং নিরাপত্তাকর্মীদের জন্য আপ্যায়নের ব্যবস্থা করা হয়েছিল।

প্রথম পর্যায়ে গত ২০ মার্চ থেকে ১৯ মে পর্যন্ত ৪৪টি বৈঠক হয়, যেখানে ব্যয় হয় ৪ লাখ ৯১ হাজার টাকা।

দ্বিতীয় পর্যায়ে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে ৩০টি রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের সঙ্গে ২৩টি বৈঠক হয়। এতে মোট ব্যয় হয় ২৮ লাখ ৮৩ হাজার ১০০ টাকা। এই বৈঠকগুলোর বেশির ভাগই সকাল থেকে রাত পর্যন্ত চলেছে। ফলে নাশতার পাশাপাশি দুপুর ও রাতের খাবারেরও ব্যবস্থা করতে হয়েছে। গড়ে প্রতিদিনের ব্যয় ছিল ১ লাখ ২০ হাজার টাকার কম।

তৃতীয় পর্যায়ে সাতটি বৈঠকে ৩০টি দলের প্রতিনিধিরা অংশ নেন, এতে ব্যয় হয় ৭ লাখ ৮ হাজার ৬০০ টাকা।

এ ছাড়া কমিশনের অভ্যন্তরীণ সভা হয়েছে ৫০টি, যার অনেকগুলোই দিনব্যাপী বা সাপ্তাহিক ছুটির দিনে অনুষ্ঠিত হয়। এই বাবদ মোট ব্যয় হয় ১ লাখ ৫ হাজার ৫২০ টাকা।

রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের সঙ্গে অনানুষ্ঠানিক বৈঠক, নাগরিক সমাজ ও পেশাজীবীদের সঙ্গে বৈঠক এবং তিনটি সংবাদ সম্মেলনসহ মোট ১৩টি সভায় ব্যয় হয় ২ লাখ ৩৪০ টাকা।

বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে বৈঠক হয়েছে ১৩টি, যেখানে আপ্যায়ন বাবদ ব্যয় হয়েছে ৩০ হাজার ৯৬০ টাকা। প্রেস উইং জানিয়েছে, বিশেষজ্ঞরা এসব বৈঠকের জন্য কোনো ভাতা বা সম্মানী নেননি।

এ ছাড়া গত ৯ মাসে অতিথি আপ্যায়নের জন্য ব্যয় হয়েছে ২ লাখ টাকা। এসব অতিথির মধ্যে ছিলেন বিদেশি কূটনীতিক, দেশি-বিদেশি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি, রাজনৈতিক দলের নেতা, সম্পাদক, সাংবাদিক ও অন্য গণ্যমান্য ব্যক্তিরা।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ‘উল্লিখিত বিস্তারিত হিসাব থেকে এটি স্পষ্ট যে, ৮৩ কোটি টাকার দাবি শুধু মিথ্যাচার নয়, বরং ঐকমত্য কমিশন ও তার কার্যক্রমকে হেয় করার একটি সংঘবদ্ধ ও পরিকল্পিত অপপ্রয়াস।’

কমিশনের দাবি, তারা সর্বোচ্চ স্বচ্ছতার সঙ্গে কাজ করেছে, যা গণমাধ্যমে প্রকাশিত দৈনন্দিন সংবাদ থেকেই স্পষ্ট। সাংবাদিকেরা নির্বিঘ্নে কমিশন কার্যালয়ে প্রবেশ করতে পেরেছেন, কমিশনের সহসভাপতি ও সদস্যরা নিয়মিতভাবে গণমাধ্যমকে তথ্য দিয়েছেন এবং প্রেস ব্রিফিং করেছেন।

এ ছাড়া, বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনাগুলো সরাসরি টেলিভিশনে সম্প্রচার করা হয়েছে।

কমিশন আশা প্রকাশ করেছে, যে অসাধু মহল এই প্রপাগান্ডা চালাচ্ছে, তারা অবিলম্বে ভুল স্বীকার করে ক্ষমা প্রার্থনা করবে।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, ‘কমিশন তার দায়িত্ব পালনে দায়িত্বশীল গণমাধ্যমের সহযোগিতা পেয়েছে এবং আশা করে গণমাধ্যমগুলো ভবিষ্যতেও সঠিক তথ্য প্রচারের মাধ্যমে জনগণকে বিভ্রান্তির হাত থেকে রক্ষা করবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

অনিবন্ধিত ও অননুমোদিত ওষুধ লিখলে শাস্তির নীতিমালা প্রস্তাব

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
উপাচার্যের কাছে প্রতিবেদন হস্তান্তর করছেন কমিটির সদস্যরা। ছবি: সংগৃহীত
উপাচার্যের কাছে প্রতিবেদন হস্তান্তর করছেন কমিটির সদস্যরা। ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএমইউ) চিকিৎসকদের ব্যবস্থাপত্রে অনিবন্ধিত ও অননুমোদিত ওষুধ লেখা হলে শাস্তির বিধান রেখে নীতিমালা প্রণয়নের সুপারিশ করেছে সংশ্লিষ্ট কমিটি। আজ বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শাহিনুল আলমের কাছে এ-সংক্রান্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হয়।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালের কয়েকজন চিকিৎসক তাঁদের ব্যবস্থাপত্রে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের (ডিজিডিএ) অনুমোদিত ও নিবন্ধিত নয় এমন ওষুধ লিখে আসছেন। এতে রোগীদের স্বাস্থ্য বড় ধরনের ঝুঁকির মুখে পড়ছে। বিষয়টি তদন্তে মেডিকেল টেকনোলজি অনুষদের ডিন অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ আবু হেনা চৌধুরীকে প্রধান করে একটি কমিটি গঠন করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। কমিটির সদস্য হিসেবে রয়েছেন ফার্মাকোলজি বিভাগের সভাপতি ডা. ইলোরা শারমিন এবং উপ-রেজিস্ট্রার (আইন) ডা. আবু হেনা হেলাল উদ্দিন আহমেদ। সদস্যসচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন সহকারী পরিচালক (আইন) অ্যাডভোকেট তানিয়া আক্তার।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিএমইউর চিকিৎসকদের ব্যবস্থাপত্রে অনিবন্ধিত ওষুধ ব্যবহারের প্রমাণ পাওয়া গেছে। কোনো ওষুধ, ভিটামিন, মিনারেল বা সাপ্লিমেন্টের নাম প্রেসক্রিপশনে লেখা হলে তা আইনভঙ্গের শামিল কি না এবং হলে কী ধরনের আইনি প্রতিকার বা শাস্তি প্রযোজ্য হতে পারে, তা নির্ধারণ করে প্রচলিত আইনের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে নীতিমালা প্রণয়নের সুপারিশ করেছে কমিটি। এ ক্ষেত্রে প্রামাণ্য আইন হিসেবে ‘ঔষধ ও কসমেটিকস আইন-২০২৩’ এবং ‘বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিল আইন-২০১০’ উল্লেখ করা হয়েছে।

অন্য সুপারিশের মধ্যে রয়েছে—যেসব ভিটামিন, মিনারেল সাপ্লিমেন্ট ও হেলথ কেয়ার প্রোডাক্ট বিদেশ থেকে আমদানি হয়, সেগুলো ডিজিডিএ ও বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশন (বিএসটিআই) কীভাবে যাচাই-বাছাই করে, কিংবা এসব পণ্য ব্যবহারের অনুমোদন দেয় কি না, তা নিশ্চিত করতে পদক্ষেপ নেওয়া। প্রতিবেদনটিতে আরও বলা হয়, ডিজিডিএর ওয়েবসাইটে নিবন্ধিত ওষুধের তালিকা সহজেই পাওয়া যায়। এই বিষয়ে চিকিৎসকদের সচেতন করতে আইটি সেকশনের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিতে হবে।

প্রতিকার হিসেবে বিএমইউর চিকিৎসকেরা যেন অননুমোদিত ওষুধ প্রেসক্রিপশনে না লেখেন সে বিষয়ে সচেতনতা বাড়াতে লিফলেট ছাপানো এবং সেমিনার ও সিম্পোজিয়াম আয়োজন করার সুপারিশ করা হয়েছে। পাশাপাশি অনিবন্ধিত ওষুধ লিখলে সম্ভাব্য শাস্তির বিষয়েও চিকিৎসকদের অবহিত করার প্রস্তাব করা হয়েছে।

এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের হাসপাতালের অন্তর্বিভাগ, বহির্বিভাগ এবং প্রবেশদ্বারগুলোতে বড় সাইনবোর্ড স্থাপন, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি বিভাগে চেয়ারম্যান বরাবর চিঠি পাঠানো এবং ডিজিডিএ ও বিএসটিআই কর্তৃক নিবন্ধিত ওষুধের তালিকা বিভাগ ও বহির্বিভাগে সরবরাহের সুপারিশও করা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

গণতন্ত্রের মূল কথা হলো জনগণ ভোট দিতে পারবে: অ্যাটর্নি জেনারেল

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ০৬ নভেম্বর ২০২৫, ২৩: ৪৬
অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান। ছবি: সংগৃহীত
অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান। ছবি: সংগৃহীত

অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান বলেছেন, সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনীর মহৎ উদ্দেশ্য ছিল জনগণের ভোটাধিকার নিশ্চিত করা। গণতন্ত্রের মূলকথা হলো, জনগণ ভোট দিতে পারবে। ভোটাধিকার প্রয়োগটাই এখানে মুখ্য। সে কারণে ত্রয়োদশ সংশোধনী (তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা যুক্ত করা) আনা হয়েছিল। সেই ত্রয়োদশ সংশোধনী আপিল বিভাগ বাতিল করলেন সংখ্যাগরিষ্ঠতার ভিত্তিতে। তার প্রধানত দুটি কারণ–একটি হলো এটা নির্বাচিত সরকার না। আরেকটি হলো, এটাতে বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ক্ষুণ্ন হবে।

তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিলের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল শুনানিতে আজ বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) এসব কথা বলেন রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা মো. আসাদুজ্জামান।

প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন সাত বিচারপতির আপিল বিভাগে আজ নবম দিনের মতো এ বিষয়ে শুনানি হয়। এদিন রাষ্ট্রপক্ষ তাদের শুনানি শেষ করে। এরপর ১১ নভেম্বর পর্যন্ত শুনানি মুলতবি করা হয়।

অ্যাটর্নি জেনারেল শুনানিতে বলেন, ত্রয়োদশ সংশোধনী আপিল বিভাগ বাতিল করলেন এজন্য যে, বিচারকেরা প্রধান বিচারপতি, প্রধান উপদেষ্টা ইত্যাদি হওয়ার লোভ সামলাতে পারবেন না। যদি এটিই সত্য হয়, তাহলে যেসব বিচারপতি প্রধান বিচারপতি হওয়ার লোভে জনগণের ভোটাধিকার কেড়ে নিয়ে রায় দিয়েছিলেন, সেই সিস্টেমটা বদলানো দরকার।

আসাদুজ্জামান আরও বলেন, এটা প্রমাণিত হয়েছে, নির্বাচিত সরকার হলেই গণতন্ত্র নিশ্চিত করতে পারে না। প্রমাণিত হয়েছে, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আওতায় বাংলাদেশের মানুষ কীভাবে নিরপেক্ষভাবে, স্বাধীনভাবে, উন্মুক্তভাবে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারে।

রায় কার্যকর হওয়া প্রসঙ্গে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ‘এই রায় সেই দিন থেকেই কার্যকর হবে। তবে জুলাই বিপ্লবের পর একটি সরকার গঠিত হয়েছে। রাজপথ থেকে নির্ধারণ করা হয়েছে এ দেশের সরকার প্রধান কে হবেন, কোন ধরনের সরকার হবে। দেশের প্রধান বিচারপতি কে হবেন, সেটাও রাজপথ থেকে বলে দেওয়া হয়েছে। এই যে রেভ্যলুশনের (বিপ্লবের) বিজয়ী শক্তি, এটাকে রেভ্যলুশনের থিওরি জুরিসপ্রুডেন্স বলে। এ থিওরি অনুসারে, এই সরকার একটা নির্বাচনের পথ ধরে হেঁটে গেছে। সেই নির্বাচনের পথে হাঁটতে গিয়ে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিয়েছে। এই সরকারের পরে যে সরকার আসবে, সেখান থেকে যদি কার্যকর করেন সেখানে কোনো ব্যত্যয় হবে না।’

বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার প্রসঙ্গে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ‘সরকার প্রধান যখন ৫ আগস্ট পালিয়ে যায়, তার ক্যাবিনেট যখন পালিয়ে যায়, তার সংসদ সদস্যরা যখন পালিয়ে যায়, তখন রাষ্ট্রপতির সামনে যখন কোনো পথ খোলা থাকে না। রাষ্ট্রপতি ১০৬ ধারায় সুপ্রিম কোর্টের কাছ থেকে মতামত নিয়ে সরকার গঠন করেছেন। এই সরকার গঠন শুধু সুপ্রিম কোর্টের মতামতের ওপর নির্ভর করে না। বিপ্লবের তত্ত্ব অনুসারে মুক্তিকামী জনগণ, বিজয়ী জনগণ, স্বাধীন জনগণ, গণ-অভ্যুত্থানের নেতৃত্বকারী জনগণ যেভাবে নির্ধারণ করবেন—সেটাই সংবিধান, সেটাই আইন। সুতরাং রেভ্যলুশনারি থিওরিতে যে জুরিসপ্রুডেন্স স্বীকার করা হলো, গ্রহণ করা হলো—সেই থিওরিটাকেই আমরা হাইলাইট করছি। ১০৬ সব নয়।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠাতে টাকা আত্মসাৎ, ৬ এজেন্সির মালিক-কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা করবে দুদক

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠাতে টাকা আত্মসাৎ, ৬ এজেন্সির মালিক-কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা করবে দুদক

মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠানোর ক্ষেত্রে অতিরিক্ত ৫২৫ কোটি টাকার বেশি আদায় করে আত্মসাৎ ও পাচারের অভিযোগে ৬টি রিক্রুটিং এজেন্সির ১১ মালিক ও কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ৬টি পৃথক মামলা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। আজ বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) বিকেলে দুদকের মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) মো. আক্তার হোসেন কমিশনে মামলাগুলোর অনুমোদনের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

মো. আক্তার হোসেন বলেন, এসব রিক্রুটিং এজেন্সির মালিক ও কর্মকর্তারা মালয়েশিয়াগামী ৩১ হাজার ৩৩১ জন কর্মীর কাছ থেকে সরকারনির্ধারিত ৭৮ হাজার ৯৯০ টাকার পরিবর্তে পাঁচ গুণ অতিরিক্ত অর্থ আদায় করে ৫২৫ কোটি ২২ লাখ ৯৭ হাজার ৫০০ টাকা আত্মসাৎ ও পাচার করেন।

দুদকের সূত্র বলেছে, মেসার্স আমিন ট্যুরস অ্যান্ড ট্রাভেলসের বিরুদ্ধে ৭ হাজার ৪৩০ জনের কাছ থেকে ১২৪ কোটি ৪৫ লাখ ২৫ হাজার টাকা অতিরিক্ত আদায়ের অভিযোগে প্রতিষ্ঠানের মালিক রুহুল আমিনকে আসামি করা হচ্ছে। মেসার্স মেরিট ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেডের মাধ্যমে ৩ হাজার ৪৮৯ জনের কাছ থেকে ৫৮ কোটি ৪৪ লাখ ৭ হাজার ৫০০ টাকা অতিরিক্ত নেওয়ার অভিযোগে প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ, তাঁর স্ত্রী এবং কোম্পানির এমডির নামে মামলা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কমিশন।

৩ হাজার ৩২১ জনের কাছ থেকে অতিরিক্ত ৫৫ কোটি ৬২ লাখ ৬৭ হাজার ৫০০ টাকা আদায়ের অভিযোগে সাদিয়া ইন্টারন্যাশনালের শামীম আহমেদ চৌধুরী নোমানের বিরুদ্ধে এবং ৮ হাজার ১০১ জনের কাছ থেকে অতিরিক্ত ১৩৫ কোটি ৬৯ লাখ ১৭ হাজার ৫০০ টাকা আদায়ের অভিযোগে ইম্পেরিয়াল রিসোর্স লিমিটেডের চেয়ারম্যান মো. ইকবাল হোসাইন ও এমডি বদরুদ্দোজা চৌধুরীর বিরুদ্ধে মামলা করার সিদ্ধান্ত হয়েছে।

৫ হাজার ২০২ জনের কাছ থেকে অতিরিক্ত ৮৭ কোটি ১৩ লাখ ৩৫ হাজার টাকা আদায়ের অভিযোগে আরআরসি হিউম্যান রিসোর্স সার্ভিস লিমিটেডের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান ও এমডি মো. আলমগীর কবীর এবং ৩ হাজার ৭৮৮ জনের কাছ থেকে ৬৩ কোটি ৮৮ লাখ ৯০ হাজার টাকা অতিরিক্ত আদায়ের অভিযোগে থানেক্স ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেডের সাবেক এমডি আব্দুল্লাহ শাহেদ, পরিচালক মো. জয়নাল আবেদীন নোমানী ও এমডি শমসের আহমেদের নামে মামলা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুদক।

মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠিয়ে ১ হাজার ১২৮ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে গত ১১ মার্চ ৩২ জনের বিরুদ্ধে এবং ১ হাজার ১৫৯ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ১৪ সেপ্টেম্বর ১৩টি রিক্রুটিং এজেন্সির কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক।

উল্লেখ্য, বিভিন্ন অনিয়ম ও সিন্ডিকেটের কারণে ২০১৮ সালে বাংলাদেশ থেকে শ্রমিক নেওয়া বন্ধ করেছিল মালয়েশিয়া। পরবর্তীতে ২০২১ সালের ১৯ ডিসেম্বর দেশটি পুনরায় বাংলাদেশ থেকে শ্রমিক নেওয়ার চুক্তি করে। তখন শ্রমিক ভিসায় যেতে সর্বোচ্চ ৭৮ হাজার ৫৪০ টাকা ফি নির্ধারণ করে সরকার, যা ২০২২ সালে প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় অফিস আদেশের মাধ্যমে নিশ্চিত করা হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত