জন্মনিয়ন্ত্রণ সামগ্রী কেনা
মুহাম্মাদ শফিউল্লাহ, ঢাকা
দরপত্রের জটিলতার সুরাহা না হওয়ায় দেশে সরকারিভাবে বিতরণের জন্মনিয়ন্ত্রণের উপকরণের সংকট প্রকট হয়েছে। এতে পরিবার পরিকল্পনা কার্যক্রম প্রায় স্থবির হয়ে পড়েছে। পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের তথ্যমতে, তাদের কাছে জন্মনিয়ন্ত্রণের উপকরণের মাত্র তিন মাসের মজুত আছে।
জন্মবিরতিকরণ বড়ি (খাওয়ার বড়ি) কিনতে প্রায় দেড় বছর আগে পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের আহ্বান করা ২১৬ কোটি টাকার দরপত্র নিয়ে জটিলতা এখনো কাটেনি। ফলে কোনো জন্মবিরতিকরণ বড়ি কেনা যায়নি। সরবরাহ কমে যাওয়ায় গ্রামীণ ও প্রান্তিক দম্পতিরা উপকরণ পাচ্ছেন না। এতে অপ্রত্যাশিত গর্ভধারণ, অল্প বয়সে মাতৃত্ব ও ঝুঁকিপূর্ণ গর্ভপাতের ঘটনা বাড়ছে। সূত্র বলছে, সংকট কাটাতে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় নতুন করে দরপত্র আহ্বানের কথা ভাবছে।
জাতীয় জনসংখ্যা গবেষণা ও প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের (নিপোর্ট) তথ্য অনুযায়ী, দেশে জন্মনিয়ন্ত্রণ উপকরণের এক-তৃতীয়াংশের (৩৭ শতাংশ) বেশি আসে সরকারি খাত থেকে। বাকিটুকু আসে বেসরকারি খাত (৫৭ শতাংশ), বেসরকারি সংস্থা বা এনজিও (৩ শতাংশ) এবং অন্যান্য উৎস (৪ শতাংশ) থেকে। মোট সাত ধরনের জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতির মধ্যে পাঁচটি সরকারিভাবে দেওয়া হয়। এগুলো হলো—জন্মবিরতিকরণ বড়ি (খাওয়ার বড়ি), ইনজেক্টেবল, কনডম, ইমপ্ল্যান্ট ও আইইউডি।
পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের তথ্য বলছে, সরকারিভাবে সাধারণত প্রতি মাসে ৬০ থেকে ৭০ লাখ পাতা (প্রতি পাতায় ২৮ বড়ি) খাওয়ার বড়ি বিতরণ করা হয়। এ ছাড়া ইনজেক্টেবল ৭ থেকে ১০ লাখ, কনডম ৭০ লাখ থেকে ১ কোটি, ইমপ্ল্যান্ট ৩০ থেকে ৬০ হাজার এবং আইইউডি ১০ থেকে ১৪ হাজার বিতরণ করা হয়। তবে সরবরাহের সংকটে এসব উপকরণ বিতরণ কমেছে।
অধিদপ্তরের সূত্র জানায়, ৪ কোটি ৫০ লাখ মাসিক চক্রের (এক মাসিক চক্রে ২৮টি বড়ি থাকে) জন্মবিরতিকরণ বড়ি কিনতে ২০২৪ সালের ২ জানুয়ারি পাঁচটি লটে ২১৬ কোটি ৪ লাখ ৫০ হাজার টাকার উন্মুক্ত দরপত্র আহ্বান করা হয়। সাতটি প্রতিষ্ঠান দরপত্র জমা দিলেও শর্ত পূরণ করে তিনটি প্রতিষ্ঠান। ১, ২ ও ৩ লটে দরপত্র জমা দেয় বেসরকারি ওষুধ কোম্পানি রেনেটা লিমিটেড ও টেকনো ড্রাগস লিমিটেড। ৪ ও ৫ নম্বর লটের জন্য পপুলার ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড। ওই বছরের ১৩ মার্চ দরপত্র মূল্যায়ন কমিটি কার্যকর প্রতিযোগিতার অভাবে এই পাঁচটি লট বাতিল করে দেয়।
স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগ সূত্র জানায়, দরপত্র বাতিলের পর ওই তিনটি প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ পাবলিক প্রকিউরমেন্ট অথরিটিতে (বিপিপিএ) আপিল করে। বিপিপিএর রিভিউ প্যানেল ৪ ও ৫ নম্বর লটের আপিল খারিজ করে। তবে রিভিউ প্যানেলের রায় যায় ১, ২ ও ৩ নম্বর লটের পক্ষে। এতে পপুলার ফার্মাসিউটিক্যালস হাইকোর্টে রিট করে পক্ষে রায় পায়। এর বিরুদ্ধে পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তর আপিল বিভাগে আবেদন করলে ‘নো অর্ডার’ মর্মে রায় দেন।
এই দরপত্রের বৈধতার মেয়াদ গত বছরের ২৪ ডিসেম্বর শেষ হয়। বৈধতার মেয়াদ বাড়াতে টেকনো ড্রাগস লিমিটেড (লট-১, ২ ও ৩) এবং পপুলার ফার্মাসিউটিক্যালস (লট-৪ ও ৫) হাইকোর্টে রিট করে। এর পরিপ্রেক্ষিতে আদালত চলতি মাসের ৩১ তারিখ পর্যন্ত প্যাকেজের মেয়াদ বা প্যাকেজের আওতায় কার্যক্রম সম্পন্ন করতে প্রয়োজনীয় সময় পর্যন্ত বৈধতা বৃদ্ধি করে রায় দেন। এসব উল্লেখ করে ৭ আগস্ট স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগ থেকে বিপিপিএর প্রধান নির্বাহীর কাছে একটি চিঠি পাঠানো হয়। উপসচিব কামরুন নাহার সুমির সই করা ওই চিঠিতে দরপত্র নিয়ে যে অচলাবস্থা রয়েছে, তা সমাধান করে নতুন ক্রয়প্রক্রিয়া শুরু করার বিষয়ে মতামত দিতে অনুরোধ জানানো হয়।
সূত্র বলছে, নতুন করে কেনা না হওয়ায় জন্মনিয়ন্ত্রণ সামগ্রীর সংকট শুরু হয়। বর্তমানে চাহিদার তুলনায় সরকারি সরবরাহ নেমে এসেছে এক-চতুর্থাংশে। কোনো কোনো অঞ্চলে সরবরাহ শূন্যের কোঠায়। গত বছরের জানুয়ারিতে খাওয়ার বড়ি সরবরাহ করা হয়েছিল ৬১ লাখ, গত জুলাইয়ে তা নেমে আসে ১২ লাখে। একইভাবে ইনজেক্টেবল, কনডম, ইমপ্ল্যান্ট ও আইইউডির সরবরাহও কমেছে।
পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের সূত্র বলছে, দেশের ৪৯৪টি উপজেলার মধ্যে এখন খাওয়ার বড়ি নেই ১৩৪টিতে। শিগগির মজুত শেষ হবে ১১৪টিতে এবং ৫৯টিতে চাহিদার তুলনায় কম রয়েছে। ১৫৪টি উপজেলায় কনডম এবং ৩৩৪টি উপজেলায় আইইউডির মজুত নেই। অন্যান্য পদ্ধতির উপকরণের ক্ষেত্রেও একই রকম চিত্র।
এই অধিদপ্তরের পরিচালক (উপকরণ ও সরবরাহ) মো. আব্দুর রাজ্জাক আজকের পত্রিকা'কে বলেন, জন্মনিয়ন্ত্রণ উপকরণের এমন সংকট আগে কখনো দেখা যায়নি। রাজস্ব খাত থেকে কিছু উপকরণ কেনা হয়েছে। তাতে আগামী তিন মাসের মতো চলতে পারে। গত বছর কোনো উপকরণ কেনা হয়নি। মাঠপর্যায়ে তিন মাসের বিতরণ সামগ্রী থাকার পরও ২৩টি ওয়্যারহাউসে আরও তিন মাসের মজুত থাকার কথা। এখন সব মিলিয়ে তিন মাসের মজুত রয়েছে। নিয়মিত বড় ধরনের ক্রয় না থাকায় সংকট তৈরি হয়েছে।
জনসংখ্যা বিশেষজ্ঞ ও জনস্বাস্থ্যবিদেরা বলছেন, সরকারিভাবে উপকরণ না পাওয়ায় অপ্রত্যাশিত গর্ভধারণের আশঙ্কা বাড়ছে। অল্প বয়সে মাতৃত্ব ও ঝুঁকিপূর্ণ গর্ভপাতের ঘটনাও বাড়তে পারে। এতে মাতৃমৃত্যু ও নবজাতকের স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়ার আশঙ্কাও রয়েছে। একই সঙ্গে জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচিও হোচট খাবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংখ্যাবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ বিল্লাল হোসেন বলেন, ‘গত কয়েক বছরে জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণের বিষয়টি সরকারের অগ্রাধিকারে রাখা হয়নি। দেশে জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি ব্যবহারে সক্ষম দম্পতিদের বড় একটি অংশ কোনো উপকরণ পাচ্ছে না। ফলে অনেকে অপ্রত্যাশিত সন্তান ধারণ করছেন বা গর্ভপাত করাচ্ছেন।’ তিনি জানান, ১৯৯৩ সাল থেকে বাংলাদেশে টিএফআর বা টোটাল ফার্টিলিটি রেট (নারীপ্রতি মোট প্রজনন হার) ছিল ২ দশমিক ৩। ২০০০ সালেও একই অবস্থা ছিল। ২০০৪ ও ২০০৭ সালে কিছুটা কমেছে। তবে ২০২১ সাল থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত আবার ২ দশমিক ৩ হয়েছে। টিএফআর কমাতে সরকারের পদক্ষেপের অভাব রয়েছে।
জানতে চাইলে স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের সচিব ডা. মো. সারোয়ার বারী বলেন, ‘দরপত্র আমরা বাতিল করেছিলাম। পরে প্রতিষ্ঠানগুলো আদালতে গিয়ে আদেশ এনেছে। আমরা আপিল করেছিলাম। সরকার শেষপর্যন্ত জিততে পারেনি। এখন বিষয়টি কীভাবে বাস্তবায়ন করা হবে, তা নিয়ে আমরা বিপিপিএর কাছে মতামত চেয়েছি। তাদের মতামতের আলোকে আমরা পদক্ষেপ নেব।’ তিনি বলেন, উন্নয়ন বাজেটে যে অপারেশন প্ল্যান ছিল, তা বাস্তবায়ন হলে উপকরণগুলো কেনা হতো। কিন্তু অপারেশন প্ল্যান না থাকায় এই সংকট তৈরি হয়েছে। তবে নিয়মিত চাহিদা সামাল দিতে বিশেষ বরাদ্দ এনে কিছু উপকরণ কেনা হয়েছিল।
দরপত্রের জটিলতার সুরাহা না হওয়ায় দেশে সরকারিভাবে বিতরণের জন্মনিয়ন্ত্রণের উপকরণের সংকট প্রকট হয়েছে। এতে পরিবার পরিকল্পনা কার্যক্রম প্রায় স্থবির হয়ে পড়েছে। পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের তথ্যমতে, তাদের কাছে জন্মনিয়ন্ত্রণের উপকরণের মাত্র তিন মাসের মজুত আছে।
জন্মবিরতিকরণ বড়ি (খাওয়ার বড়ি) কিনতে প্রায় দেড় বছর আগে পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের আহ্বান করা ২১৬ কোটি টাকার দরপত্র নিয়ে জটিলতা এখনো কাটেনি। ফলে কোনো জন্মবিরতিকরণ বড়ি কেনা যায়নি। সরবরাহ কমে যাওয়ায় গ্রামীণ ও প্রান্তিক দম্পতিরা উপকরণ পাচ্ছেন না। এতে অপ্রত্যাশিত গর্ভধারণ, অল্প বয়সে মাতৃত্ব ও ঝুঁকিপূর্ণ গর্ভপাতের ঘটনা বাড়ছে। সূত্র বলছে, সংকট কাটাতে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় নতুন করে দরপত্র আহ্বানের কথা ভাবছে।
জাতীয় জনসংখ্যা গবেষণা ও প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের (নিপোর্ট) তথ্য অনুযায়ী, দেশে জন্মনিয়ন্ত্রণ উপকরণের এক-তৃতীয়াংশের (৩৭ শতাংশ) বেশি আসে সরকারি খাত থেকে। বাকিটুকু আসে বেসরকারি খাত (৫৭ শতাংশ), বেসরকারি সংস্থা বা এনজিও (৩ শতাংশ) এবং অন্যান্য উৎস (৪ শতাংশ) থেকে। মোট সাত ধরনের জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতির মধ্যে পাঁচটি সরকারিভাবে দেওয়া হয়। এগুলো হলো—জন্মবিরতিকরণ বড়ি (খাওয়ার বড়ি), ইনজেক্টেবল, কনডম, ইমপ্ল্যান্ট ও আইইউডি।
পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের তথ্য বলছে, সরকারিভাবে সাধারণত প্রতি মাসে ৬০ থেকে ৭০ লাখ পাতা (প্রতি পাতায় ২৮ বড়ি) খাওয়ার বড়ি বিতরণ করা হয়। এ ছাড়া ইনজেক্টেবল ৭ থেকে ১০ লাখ, কনডম ৭০ লাখ থেকে ১ কোটি, ইমপ্ল্যান্ট ৩০ থেকে ৬০ হাজার এবং আইইউডি ১০ থেকে ১৪ হাজার বিতরণ করা হয়। তবে সরবরাহের সংকটে এসব উপকরণ বিতরণ কমেছে।
অধিদপ্তরের সূত্র জানায়, ৪ কোটি ৫০ লাখ মাসিক চক্রের (এক মাসিক চক্রে ২৮টি বড়ি থাকে) জন্মবিরতিকরণ বড়ি কিনতে ২০২৪ সালের ২ জানুয়ারি পাঁচটি লটে ২১৬ কোটি ৪ লাখ ৫০ হাজার টাকার উন্মুক্ত দরপত্র আহ্বান করা হয়। সাতটি প্রতিষ্ঠান দরপত্র জমা দিলেও শর্ত পূরণ করে তিনটি প্রতিষ্ঠান। ১, ২ ও ৩ লটে দরপত্র জমা দেয় বেসরকারি ওষুধ কোম্পানি রেনেটা লিমিটেড ও টেকনো ড্রাগস লিমিটেড। ৪ ও ৫ নম্বর লটের জন্য পপুলার ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড। ওই বছরের ১৩ মার্চ দরপত্র মূল্যায়ন কমিটি কার্যকর প্রতিযোগিতার অভাবে এই পাঁচটি লট বাতিল করে দেয়।
স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগ সূত্র জানায়, দরপত্র বাতিলের পর ওই তিনটি প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ পাবলিক প্রকিউরমেন্ট অথরিটিতে (বিপিপিএ) আপিল করে। বিপিপিএর রিভিউ প্যানেল ৪ ও ৫ নম্বর লটের আপিল খারিজ করে। তবে রিভিউ প্যানেলের রায় যায় ১, ২ ও ৩ নম্বর লটের পক্ষে। এতে পপুলার ফার্মাসিউটিক্যালস হাইকোর্টে রিট করে পক্ষে রায় পায়। এর বিরুদ্ধে পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তর আপিল বিভাগে আবেদন করলে ‘নো অর্ডার’ মর্মে রায় দেন।
এই দরপত্রের বৈধতার মেয়াদ গত বছরের ২৪ ডিসেম্বর শেষ হয়। বৈধতার মেয়াদ বাড়াতে টেকনো ড্রাগস লিমিটেড (লট-১, ২ ও ৩) এবং পপুলার ফার্মাসিউটিক্যালস (লট-৪ ও ৫) হাইকোর্টে রিট করে। এর পরিপ্রেক্ষিতে আদালত চলতি মাসের ৩১ তারিখ পর্যন্ত প্যাকেজের মেয়াদ বা প্যাকেজের আওতায় কার্যক্রম সম্পন্ন করতে প্রয়োজনীয় সময় পর্যন্ত বৈধতা বৃদ্ধি করে রায় দেন। এসব উল্লেখ করে ৭ আগস্ট স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগ থেকে বিপিপিএর প্রধান নির্বাহীর কাছে একটি চিঠি পাঠানো হয়। উপসচিব কামরুন নাহার সুমির সই করা ওই চিঠিতে দরপত্র নিয়ে যে অচলাবস্থা রয়েছে, তা সমাধান করে নতুন ক্রয়প্রক্রিয়া শুরু করার বিষয়ে মতামত দিতে অনুরোধ জানানো হয়।
সূত্র বলছে, নতুন করে কেনা না হওয়ায় জন্মনিয়ন্ত্রণ সামগ্রীর সংকট শুরু হয়। বর্তমানে চাহিদার তুলনায় সরকারি সরবরাহ নেমে এসেছে এক-চতুর্থাংশে। কোনো কোনো অঞ্চলে সরবরাহ শূন্যের কোঠায়। গত বছরের জানুয়ারিতে খাওয়ার বড়ি সরবরাহ করা হয়েছিল ৬১ লাখ, গত জুলাইয়ে তা নেমে আসে ১২ লাখে। একইভাবে ইনজেক্টেবল, কনডম, ইমপ্ল্যান্ট ও আইইউডির সরবরাহও কমেছে।
পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের সূত্র বলছে, দেশের ৪৯৪টি উপজেলার মধ্যে এখন খাওয়ার বড়ি নেই ১৩৪টিতে। শিগগির মজুত শেষ হবে ১১৪টিতে এবং ৫৯টিতে চাহিদার তুলনায় কম রয়েছে। ১৫৪টি উপজেলায় কনডম এবং ৩৩৪টি উপজেলায় আইইউডির মজুত নেই। অন্যান্য পদ্ধতির উপকরণের ক্ষেত্রেও একই রকম চিত্র।
এই অধিদপ্তরের পরিচালক (উপকরণ ও সরবরাহ) মো. আব্দুর রাজ্জাক আজকের পত্রিকা'কে বলেন, জন্মনিয়ন্ত্রণ উপকরণের এমন সংকট আগে কখনো দেখা যায়নি। রাজস্ব খাত থেকে কিছু উপকরণ কেনা হয়েছে। তাতে আগামী তিন মাসের মতো চলতে পারে। গত বছর কোনো উপকরণ কেনা হয়নি। মাঠপর্যায়ে তিন মাসের বিতরণ সামগ্রী থাকার পরও ২৩টি ওয়্যারহাউসে আরও তিন মাসের মজুত থাকার কথা। এখন সব মিলিয়ে তিন মাসের মজুত রয়েছে। নিয়মিত বড় ধরনের ক্রয় না থাকায় সংকট তৈরি হয়েছে।
জনসংখ্যা বিশেষজ্ঞ ও জনস্বাস্থ্যবিদেরা বলছেন, সরকারিভাবে উপকরণ না পাওয়ায় অপ্রত্যাশিত গর্ভধারণের আশঙ্কা বাড়ছে। অল্প বয়সে মাতৃত্ব ও ঝুঁকিপূর্ণ গর্ভপাতের ঘটনাও বাড়তে পারে। এতে মাতৃমৃত্যু ও নবজাতকের স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়ার আশঙ্কাও রয়েছে। একই সঙ্গে জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচিও হোচট খাবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংখ্যাবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ বিল্লাল হোসেন বলেন, ‘গত কয়েক বছরে জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণের বিষয়টি সরকারের অগ্রাধিকারে রাখা হয়নি। দেশে জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি ব্যবহারে সক্ষম দম্পতিদের বড় একটি অংশ কোনো উপকরণ পাচ্ছে না। ফলে অনেকে অপ্রত্যাশিত সন্তান ধারণ করছেন বা গর্ভপাত করাচ্ছেন।’ তিনি জানান, ১৯৯৩ সাল থেকে বাংলাদেশে টিএফআর বা টোটাল ফার্টিলিটি রেট (নারীপ্রতি মোট প্রজনন হার) ছিল ২ দশমিক ৩। ২০০০ সালেও একই অবস্থা ছিল। ২০০৪ ও ২০০৭ সালে কিছুটা কমেছে। তবে ২০২১ সাল থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত আবার ২ দশমিক ৩ হয়েছে। টিএফআর কমাতে সরকারের পদক্ষেপের অভাব রয়েছে।
জানতে চাইলে স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের সচিব ডা. মো. সারোয়ার বারী বলেন, ‘দরপত্র আমরা বাতিল করেছিলাম। পরে প্রতিষ্ঠানগুলো আদালতে গিয়ে আদেশ এনেছে। আমরা আপিল করেছিলাম। সরকার শেষপর্যন্ত জিততে পারেনি। এখন বিষয়টি কীভাবে বাস্তবায়ন করা হবে, তা নিয়ে আমরা বিপিপিএর কাছে মতামত চেয়েছি। তাদের মতামতের আলোকে আমরা পদক্ষেপ নেব।’ তিনি বলেন, উন্নয়ন বাজেটে যে অপারেশন প্ল্যান ছিল, তা বাস্তবায়ন হলে উপকরণগুলো কেনা হতো। কিন্তু অপারেশন প্ল্যান না থাকায় এই সংকট তৈরি হয়েছে। তবে নিয়মিত চাহিদা সামাল দিতে বিশেষ বরাদ্দ এনে কিছু উপকরণ কেনা হয়েছিল।
সরকারি প্রকল্পের পরিকল্পনা গ্রহণ থেকে শুরু করে বাস্তবায়ন শেষ হওয়া পর্যন্ত সময়ে নানা ধাপে অনিয়ম-দুর্নীতি ও সমন্বয়হীনতার অভিযোগ নতুন নয়। এতে অধিকাংশ ক্ষেত্রে প্রকল্প বাস্তবায়নে কালক্ষেপণ হয়, বেড়ে যায় প্রকল্পের ব্যয়। এই অবস্থা থেকে উত্তরণে প্রকল্প পরিকল্পনা, অনুমোদন ও বাস্তবায়ন প্রক্রিয়ার সমস্যা...
২ ঘণ্টা আগেগাজীপুর সিটি করপোরেশনের (জিসিসি) নামে ভুয়া ব্যাংক হিসাব খুলে ২ কোটি ৬০ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে সাবেক মেয়র মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলমসহ সাতজনের নামে মামলা করেছে দুদক। আজ মঙ্গলবার (১৯ আগস্ট) দুদকের মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
৬ ঘণ্টা আগেবাংলাদেশ কর্মচারী কল্যাণ বোর্ড থেকে দেওয়া সরকারি কর্মচারীদের বিভিন্ন অনুদানের পরিমাণ বাড়ানো হয়েছে। বাংলাদেশ কর্মচারী কল্যাণ বোর্ডের প্রস্তাবের পর অর্থ বিভাগের সম্মতির পরিপ্রেক্ষিতে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সচিবালয় শাখা অনুদানের হার পুনর্নির্ধারণ করে আজ মঙ্গলবার প্রজ্ঞাপন জারি করেছে।
৬ ঘণ্টা আগেফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, আর্থিক অপরাধ, জুয়া, সফটওয়্যার আপডেটের ঘাটতি, ফাইল ট্রান্সফার প্রটোকলের দুর্বলতা, ডিডস আক্রমণ ও ডেটা সেন্টারের ঝুঁকি এখন ব্যাংকিং সেক্টরের বড় হুমকি।
৬ ঘণ্টা আগে