Ajker Patrika

মিছিলে যাওয়ার আগে চিঠি লিখে গিয়েছিল, ট্রাইব্যুনালকে শহীদ আনাসের মা

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
মিছিলে যাওয়ার আগে চিঠি লিখে গিয়েছিল, ট্রাইব্যুনালকে শহীদ আনাসের মা

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় রাজধানীর চানখাঁরপুলে ছয়জনকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ট্রাইব্যুনালে সাক্ষ্য দিয়েছেন আরও তিনজন। তাঁরা হলেন শহীদ শাহারিয়ার খান আনাসের মা সানজিদা খান দিপ্তী, আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী হাফেজ রাব্বী হোসেন এবং গফুর সওদাগর। শহীদ ইসমামুল হক যে দোকানে কাজ করতেন, তাঁর মালিক এই গফুর সওদাগর।

এ নিয়ে এ পর্যন্ত এই মামলায় সাক্ষ্য দিয়েছেন মোট ১১ জন।

আজ রোববার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল–১-এ এই সাক্ষ্য নেওয়া হয়। পরে তাঁদের জেরা করেন আসামিপক্ষের আইনজীবীরা।

অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পাশাপাশি এই মামলার আসামি সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান ও পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন। এর মধ্যে শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান পলাতক। গ্রেপ্তার চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন এ মামলায় রাজসাক্ষী হয়েছেন।

ট্রাইব্যুনালকে শহীদ শাহারিয়ার খান আনাসের মা সানজিদা খান দিপ্তী বলেন, ‘আনাস গেন্ডারিয়া আদর্শ একাডেমির ১০ম শ্রেণির ছাত্র ছিল। ২০২৪ সালের জুলাই মাসে আন্দোলনকারী নিরস্ত্র ছাত্র-জনতাকে যখন গুলি করে হত্যা করা হচ্ছিল, তখন আমাদের খুব কষ্ট হচ্ছিল। ৫ আগস্ট সকালে আনাসকে ঘরে না পেয়ে তার রুমে যাই। সেখানে পড়ার টেবিলে একটা চিঠি পাই। চিঠিতে লেখা ছিল, সে মিছিলে যাচ্ছে; সে নিজেকে আটকাতে পারেনি। চিঠিটা আনাস আমাকে উদ্দেশ্য করে লিখেছিল।’

আনাসের মৃত্যু সম্পর্কে সানজিদা খান বলেন, ‘আন্দোলনে আনাসের সঙ্গে থাকা সৌরভ ও অন্যান্য প্রত্যক্ষদর্শীর কাছ থেকে পরে জানতে পারি, ৫ আগস্ট সকাল ১০টার দিকে হাজার হাজার আন্দোলনকারী শহীদ মিনারে যাওয়ার পথে চানখাঁরপুল এলাকায় পুলিশের বাধার মুখে পড়ে। পুলিশ সাউন্ড গ্রেনেড, রাবার বুলেট ও গুলি ছুড়তে থাকে। তারা তখন জীবন বাঁচাতে নবাব কাটারা গলিসহ বিভিন্ন গলির মুখে আশ্রয় নেয়। আমি আরও জানতে পারি, আনাস নবাব কাটারা গলিতে আশ্রয় নিয়েছিল। সেখানে একজন পুলিশ আনাসকে লক্ষ্য করে গুলি করে। শেখ হাসিনা, আসাদুজ্জামান খান কামাল, ওবায়দুল কাদের ও আবদুল্লাহ আল-মামুনের নির্দেশে ওই হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছিল। আমি হত্যাকারীদের ফাঁসি চাই।’

এরপর আন্দোলনে অংশ নেওয়া হাফেজ রাব্বী হোসেন জবানবন্দিতে বলেন, ‘গত বছরের ৫ আগস্ট আন্দোলনে অংশগ্রহণ করি। আমাদের সঙ্গে আনাসসহ অনেকে ছিল। বেলা ১১টার দিকে পুলিশ সাউন্ড গ্রেনেড, টিয়ার সেল, রাবার বুলেট ও বুলেট নিক্ষেপ করে। আমরা নবাব কাটারা গলির মধ্যে আশ্রয় নিতে বাধ্য হই। সেখানে গুলিতে অনেকে আহত হয়। আমার কপালে ছররা গুলি লাগে। ১২টার দিকে পুলিশ আরও মারমুখী হয়। আমার পাশের একজনের গায়ে গুলি লাগে। ওই সময় পুলিশ নবাব কাটারা গলির মুখে বসে আনাসকে লক্ষ্য করে গুলি করে। তাকে হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে জানতে পারি, আনাস শহীদ হয়েছে।’

রাব্বী হোসেন এই হত্যাকাণ্ডের জন্য শেখ হাসিনা, চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন, ওবায়দুল কাদের, সাবেক ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান, পুলিশ কর্মকর্তা সুদীপ কুমার, আক্তারুল ইসলাম, ইমরুল, আরশাদ, সুজন, ইমাজ হোসেন ও নাসিরুলকে দায়ী করেন। সেই সঙ্গে তাঁদের ফাঁসি চান তিনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

চন্দ্রগ্রহণের সময় মুমিনের করণীয় আমল

মধ্যরাতে কাদের সিদ্দিকীর বাসভবনে হামলা ও ভাঙচুর

বেতন চাইলে গৃহকর্মীদের পিস্তল দেখান সাবেক অতিরিক্ত আইজিপি শামসুদ্দোহা, ৯৯৯-এ কল পেয়ে গ্রেপ্তার

চন্দ্রগ্রহণ চলছে, ব্লাড মুন দেখা যাবে রাত সাড়ে ১১টায়

শেখ হাসিনার শত্রু ছিলাম, তাঁকে বের করেছি, তাঁর ভাগনির চাকরি খেয়েছি: ববি হাজ্জাজ

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত