Ajker Patrika

৪৭৯ কোটি টাকায় নবম-দশম শ্রেণির বই কেনার প্রস্তাব প্রত্যাহার

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। ফাইল ছবি
অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। ফাইল ছবি

আগামী শিক্ষাবর্ষে জানুয়ারিতেই শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন বই তুলে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ। আজ রোববার সচিবালয়ে সরকারি ক্রয়-সংক্রান্ত উপদেষ্টা কমিটির সভা শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা জানান।

অর্থ উপদেষ্টা বলেন, চলতি বছর শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন বই তুলে দিতে দেরি হলেও আগামী শিক্ষাবর্ষের জানুয়ারিতেই শিক্ষার্থীরা নতুন বই হাতে পাবে। গত বছর বই ছাপানোর কার্যাদেশ দেওয়া হয়েছিল নভেম্বরে। এবার শিক্ষার্থীরা যেন জানুয়ারিতেই নতুন বই পায়, সে জন্য সেপ্টেম্বরে কার্যাদেশ দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে কিছু দেওয়া হয়েছে। যাচাই-বাছাই করে বাকিগুলো সেপ্টেম্বরের মধ্যেই দেওয়া হবে। এ নিয়ে সম্ভবত আগামী সপ্তাহেও বৈঠক হবে।

এর আগে সালেহউদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে ক্রয়-সংক্রান্ত কমিটির সভা ও অর্থনৈতিক বিষয়ক উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির সভা হয়।

সভায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ ২০২৬ শিক্ষাবর্ষের নবম ও দশম শ্রেণির আংশিকের জন্য ৫ কোটি ৫৪ লাখ ৯০ হাজার ৮৬৯ কপি পাঠ্যপুস্তক মুদ্রণ, বাঁধাই ও সরবরাহের একটি প্রস্তাব তোলা হয়। যার ব্যয় ধরা হয় প্রায় ৪৭৯ কোটি টাকা। প্রস্তাবটি যাচাই-বাছাইয়ের পর প্রত্যাখ্যান করা হয়।

সভার তথ্যমতে, ২০২৬ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের হাতে বিনা মূল্যে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ থেকে ২০২৬ শিক্ষাবর্ষের মাধ্যমিক (বাংলা ও ইংরেজি ভার্সন) নবম শ্রেণি, দাখিল নবম শ্রেণি এসএসসি ও দাখিল ভকেশনাল শ্রেণি এবং কারিগরি ট্রেড নবম ও দশম শ্রেণির বিনা মূল্যের পাঠ্যপুস্তক মুদ্রণ, বাঁধাই ও সরবরাহের জন্য মোট ৫ কোটি ৫৪ লাখ ৯০ হাজার ৮৬৯ কপি পাঠ্যপুস্তক মুদ্রণের লক্ষ্যে উন্মুক্ত দরপত্র (ইজিপি) আহ্বান করা হলে ২৩৪টি দরপত্রের বিপরীতে ১৪৪টি প্রতিষ্ঠানের ৭১৮টি দরপত্র জমা পড়ে, যা প্রত্যাহার করা হয়েছে।

এর মধ্যে ৫৯৩টি দরপত্র কারিগরি ও আর্থিকভাবে রেসপন্স হয়। দরপত্রের সব প্রক্রিয়া শেষে দরপত্র মূল্যায়ন কমিটি (জিইসি) কর্তৃক ২২৩টি দরপত্রের রেসপন্স সর্বনিম্ন দরদাতার উদ্ধৃত দর দাপ্তরিক প্রাক্কলিত দরের চেয়ে বেশি ও বর্তমান বাজারদরের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হওয়ায় দরদাতার জামানত ১০ শতাংশ দেওয়ার সুপারিশ করে।

জিইসির সুপারিশ অনুযায়ী উল্লিখিত ২০২৬ শিক্ষাবর্ষের পাঠ্যপুস্তক মুদ্রণ, বাঁধাই ও সরবরাহের জন্য মোট ৪৭৯ কোটি ৮২ লাখ ৪৪ হাজার ৯২৭ টাকার প্রয়োজন হবে। বিষয়টি সরকারি ক্রয়-সংক্রান্ত উপদেষ্টা কমিটিতে বৈঠকে উপস্থাপন করা হলে কমিটি তা আরও যাচাই-বাছাই করতে বলে। এর পরিপ্রেক্ষিতে প্রস্তাবটি প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়।

এ বিষয়ে সাংবাদিকদের আজ অর্থ উপদেষ্টা বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের হাতে ১ জানুয়ারি নতুন বই তুলে দেওয়ার কথা। তবে আমরা যাচাই করে দেখতে চাই—যারা এর আগে কাজ পেয়েছিল, তাদের বইয়ের মান কেমন ছিল, কাগজ কেমন ছিল, একচেটিয়াভাবে কেউ কাজ পাচ্ছে কি না। এ জন্য আজকের প্রস্তাবটি প্রত্যাহার করা হয়েছে।

‘অনিয়মের সংবাদ মাঝেমধ্যেই পাওয়া যায়। যেসব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ উঠেছে, তাদের চিহ্নিত করতে বলা হয়েছে। বই ছাপার জন্য কোন কোন প্রতিষ্ঠানকে দায়িত্ব দেওয়া হবে, সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত এ মাসের মধ্যেই নেওয়া হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত