নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
চূড়ান্ত হয়েছে জুলাই জাতীয় সনদ-২০২৫। এখন সনদে রাজনৈতিক দলগুলোর স্বাক্ষর করাটাই শুধু বাকি। কিন্তু এই পর্যায়ে এসে শেষ সময়ের কাজটুকু সমাধা হওয়া নিয়েই দেখা দেয় গুরুতর সংকট। সংকট সমাধানের উপায় খুঁজতে গতকাল বুধবার দলগুলোর সঙ্গে জরুরি বৈঠক করে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। কমিশনের সভাপতি ও অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের আহ্বানে অনুষ্ঠিত ওই বৈঠকে শেষে আপাতত স্বস্তি এসেছে। সবকিছু ঠিক থাকলে আগামীকাল শুক্রবার সনদে স্বাক্ষর করবে দলগুলো।
জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় জুলাই সনদ স্বাক্ষরের প্রস্তুতি নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। এর আগে গত মঙ্গলবার রাজনৈতিক দল ও জোটগুলোর কাছে চূড়ান্ত সনদের অনুলিপি পাঠায় জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। অনুলিপির সঙ্গে কমিশনের পক্ষ থেকে দলগুলোর কাছে শুক্রবার সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানের আমন্ত্রণপত্রও পাঠানো হয়। এর পর থেকেই রাজনৈতিক দলগুলোর সনদে স্বাক্ষর করা নিয়ে অনিশ্চয়তা শুরু হয়।
জানা যায়, মঙ্গলবার রাতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি আলী রীয়াজ এবং প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দারের সঙ্গে অনানুষ্ঠানিক বৈঠক করেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামসহ দলটির কয়েক নেতা। এনসিপি নেতারা সেখানে এত দিনের আলোচনা বাদ দিয়ে বিদ্যমান সংবিধান স্থগিত করে নতুন সংবিধানের জন্য নতুন করে কাজ শুরুর দাবি জানান। এটা না হলে এনসিপি সনদে স্বাক্ষর করবে না বলেও জানান দলটির নেতারা। সংকট সমাধানে মঙ্গলবার রাত থেকেই বিভিন্ন দল ও সরকারের কয়েক উপদেষ্টার সঙ্গে কমিশন যোগাযোগ করে। এ সময় ইতালি থেকে দেশের পথে রওনা করেছেন প্রধান উপদেষ্টা। উপায় না পেয়ে তাঁর সঙ্গেও ফোনে যোগাযোগ করে কমিশন। এ ছাড়া বিভিন্ন মাধ্যমে এনসিপিকে বোঝাতে কমিশনের পক্ষ থেকে চেষ্টা করা হয়। এরপরেও তারা তাদের অবস্থানেই অনড় থাকে। এ অবস্থায় সংকটের সমাধান খুঁজতে মঙ্গলবার রাতের আলোচনা গড়ায় বুধবারে। প্রধান উপদেষ্টা দেশে ফেরার পর কমিশন সদস্যরা তাঁর সঙ্গে বৈঠক করেন। সংকটের বিষয়ে কমিশন প্রধান উপদেষ্টাকে জানায়। এই বৈঠকের আগেই এদিন সন্ধ্যায় দলগুলোর সঙ্গে বৈঠকের সিদ্ধান্ত হয়।
ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বৈঠকের পর প্রধান উপদেষ্টা নাহিদ ইসলামের সঙ্গে বৈঠক করেছেন বলে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে। সূত্র জানায়, বৈঠকে নাহিদ তাঁদের দলের অবস্থান তুলে ধরেন। সব শুনে এ সময় সংকট সমাধানে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানান প্রধান উপদেষ্টা। তাঁদের দাবিদাওয়ার বিষয়েও এ সময় আশ্বস্ত করেন তিনি। নাহিদের সঙ্গে এই বৈঠকের মধ্য দিয়েই মূলত বিদ্যমান সংকটের আপাতত স্বস্তি মেলে বলে জানিয়েছে সূত্রগুলো।
একটি সূত্র দাবি করছে, প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে নাহিদ ইসলাম বিস্তারিত আলাপ করেছেন। তাতে মনে হচ্ছে, পরিস্থিতির কিছুটা সমাধান হয়েছে। কিন্তু তাঁদের মনে এখনো অনেক প্রশ্ন রয়ে গেছে।
এদিকে আপাতত স্বস্তি মিললেও জুলাই সনদে স্বাক্ষর করবে কি করবে না, সে বিষয়টি এখনো স্পষ্ট করেনি এনসিপি। স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকার কথা বললেও সনদে স্বাক্ষর করবে কি না, সে বিষয়টি এখনো স্পষ্ট করেনি জামায়াত। এ ছাড়া ইসলামী আন্দোলন, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস, খেলাফত মজলিস ও নেজামে ইসলাম পার্টিও একই অবস্থানে আছে। অন্যদিকে সনদে স্বাক্ষর করবে না বলে জানিয়েছে সিপিবি, বাসদ, বাসদ মার্ক্সবাদী, বাংলাদেশ জাসদ, গণফোরাম।
৩০ দল ও জোটের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার বৈঠক
জুলাই সনদ নিয়ে গতকাল সন্ধ্যায় রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে বিএনপি, জামায়াত, এনসিপিসহ ৩০টি দল ও জোটের সঙ্গে বৈঠক করেন প্রধান উপদেষ্টা। প্রধান উপদেষ্টা ছাড়াও বৈঠকে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ, কমিশনের সদস্য বিচারপতি মো. এমদাদুল হক, সফর রাজ হোসেন, ইফতেখারুজ্জামান, বদিউল আলম মজুমদার, মো. আইয়ুব মিয়া এবং প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার উপস্থিত ছিলেন। রাজনৈতিক নেতাদের মধ্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ইসমাইল জবিউল্লাহ, জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য মতিউর রহমান আকন্দ, জাতীয় নাগরিক পার্টির সদস্যসচিব আখতার হোসেন, বাসদের সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশিদ ফিরোজ, বাসদ মার্ক্সবাদীর সমন্বয়ক মাসুদ রানা, ১২ দলীয় জোটের শরিক বাংলাদেশ এলডিপির মহাসচিব শাহাদাত হোসেন সেলিম, এবি পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জুসহ ৩১টি দল ও জোটের নেতারা বৈঠকে অংশ নেন।
উৎসবমুখর অনুষ্ঠানের মাধ্যমে স্বাক্ষর অনুষ্ঠিত হবে বলে বৈঠকে আশাবাদ ব্যক্ত করেন প্রধান উপদেষ্টা। তিনি বলেন, ‘আগামী শুক্রবার জুলাই সনদ স্বাক্ষর হবে। জাতির মধ্যে সঞ্চারিত করার জন্য আমাদের এই অনুষ্ঠান। আমরা সেখানে উৎসবমুখরভাবে যাব। এই দলিলে সই করব। উৎসবে সারা জাতি শরিক হবে।’
ফেব্রুয়ারির সংসদ নির্বাচনকে জুলাই সনদেরই অংশ উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘নির্বাচনের বিষয়ে বারবার বলছি। যখন যেখানে গেছি বলেছি। ফেব্রুয়ারি মাসে নির্বাচন হবেই। নির্বাচন উৎসবমুখর পরিবেশে হবে। উৎসবমুখর নির্বাচনের জন্য যা যা করণীয়, তার সবই আমরা করব। এর সঙ্গে আমরা কোনো কম্প্রোমাইজ করব না।’
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান না হলে অন্য কোনোভাবে এই সনদ রচনা করা সম্ভব ছিল না উল্লেখ করে ড. ইউনূস বলেন, ‘কেউ আশা করেনি সত্যি এটা হবে। অনেকে এটা নিয়ে অনেক কিছু বলেছেন। কেউ কেউ এটাকে তামাশা বলেছেন। তবে আমি আশাবাদী ছিলাম, একটা না একটা কিছু হবে। এটা না হলে কাজটা এলোমেলো হয়ে যেত। আমরা এলোমেলো না করে সুন্দর ও সুশৃঙ্খলভাবে করতে পেরেছি। প্রকৃতপক্ষে কী সংস্কার হবে, আপনারা তা করে দিয়েছেন। আমরা জুলাই সনদের স্বাক্ষরের বড় উৎসবে শরিক হব। যে কলম দিয়ে স্বাক্ষরিত হবে, তা জাদুঘরে সংরক্ষণ করা হবে। আপনাদের ছবি জাদুঘরে সংরক্ষণ করা হবে।’
সংসদ নির্বাচন প্রশ্নে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘নির্বাচনের বিষয়ে বারবার বলছি। যখন যেখানে গেছি বলেছি। ফেব্রুয়ারি মাসে নির্বাচন হবেই। এটা ঐকমত্য কমিশনের সনদেরই একটি অংশ। সনদের সঙ্গে এটা (নির্বাচন) জড়িত। আমরা যে ঘোষণা করেছি, তা রক্ষা করতে হবে। এটা এমন নয় যে, কথার কথা বললাম, আচ্ছা ঠিক আছে, দুই দিন পরে হবে...এটা ও রকম নয়। নির্বাচন ফেব্রুয়ারিতে হবে এবং উৎসবমুখর পরিবেশে হবে। উৎসবমুখর নির্বাচনের জন্য যা যা করণীয়, তার সবই আমরা করব। এর সঙ্গে আমরা কোনো কম্প্রোমাইজ করব না। আপনারা সবাই মিলে সনদ তৈরি করেছেন।’
এর আগে প্রধান উপদেষ্টার উদ্দেশে বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘আমাদের কন্টিনিউয়াস (ধারাবাহিক) সমর্থন আপনার প্রতি ছিল, আছে। কিন্তু এটা কন্ডিশনাল (শর্তযুক্ত)। আমাদের সমর্থন আরও অব্যাহত থাকবে, এটা সীমাহীন নয়। আমরা চাই, আপনার নেতৃত্বে একটা ঐতিহাসিক নির্বাচন, এটাই হচ্ছে কন্ডিশন (শর্ত)। আপনার প্রতি আমাদের সীমাহীন সমর্থন নয়, আমাদের সীমারেখা আছে। আমরা গণতান্ত্রিক উত্তরণের জন্য এই সীমারেখার মধ্যে আপনাকে সমর্থন দিচ্ছি। আপনি দয়া করে এটা অনুধাবনের চেষ্টা করবেন।’
সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, সচিবালয়ে বদলি পদায়নের জন্য মন্ত্রিপরিষদ একটি ‘ক্যাবিনেট কমিটি’ করা হয়েছে। এটার কোনো চর্চা নেই, এটা কোনো নিয়ম বা রীতি নয়। এ বিষয়ে বিএনপি অসন্তোষ প্রকাশ করেছে।
প্রধান উপদেষ্টার উদ্দেশে সালাহউদ্দিন আহমদ আরও বলেন, ‘যাতে বাংলাদেশের সকল অর্গানের ব্যালেন্স (সব অঙ্গের মধ্যে ভারসাম্য) থাকে, সেটা আপনাকে চেষ্টা করতে হবে, মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা। আমরা চাই না প্রতিরক্ষা বাহিনীগুলোর মধ্যে কোনো রকমের ভারসাম্য নষ্ট হোক। আমরা সেটি অ্যাফোর্ড করতে পারব না এই মুহূর্তে। আমরা চাই, আপনার সাথে প্রতিরক্ষা বাহিনীর সুসম্পর্ক বজায় থাকুক। রাষ্ট্র একটা ব্যালেন্স অবস্থায় থাকতে হবে। আমরা নির্বাচনকে সামনে রেখে কোনো রকমের ঝুঁকির মধ্যে যেতে চাই না। যেতে পারব না।’
আলোচনায় সংস্কার বাস্তবায়ন প্রশ্নে বিএনপির আগের অবস্থানই তুলে ধরেন সালাহউদ্দিন। তিনি বলেন, জাতীয় নির্বাচনের দিন একই সঙ্গে গণভোট হলে আগামী সংসদ জুলাই সনদ বাস্তবায়নে বাধ্য থাকবে। নির্বাচনের বাকি আছে চার মাস। দুই মাস আগে তফসিল দিতে হবে। এর আগে আরেকটি নির্বাচন আয়োজন সম্ভব কি না, তিনি সে প্রশ্ন রাখেন।
জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বলেছেন, গণভোট আর জাতীয় নির্বাচন আলাদা বিষয়; এক দিনে করার প্রস্তাব উদ্ভট আলোচনা। জুলাই সনদ বাস্তবায়নে নভেম্বরে গণভোট দিতে হবে। তাহের বলেন, বিএনপি জুলাই সনদ বাস্তবায়নে গণভোটের বিষয়ে আগে দ্বিমত করলেও পরে গণভোটের বিষয়ে আগ্রহ দেখাচ্ছেন। এ জন্য বিএনপিকে ধন্যবাদ দেন তিনি।
এনসিপির সদস্যসচিব আখতার হোসেন বলেছেন, ‘শেষ মুহূর্তে কিছু বিষয় আমাদের মধ্যে সংশয়ের জায়গা তৈরি করেছে। আসলে জাতিকে অস্পষ্ট রেখে কোনো উদ্যোগ সফল করা সম্ভব নয়। আজকের এই দিনে আমরা আসতে পেরেছি এমন একটি অবস্থানে, যাতে বাংলাদেশে আর কখনো ফ্যাসিবাদ ফিরে না আসে। বাংলাদেশ যেন জবাবদিহিপূর্ণভাবে গণতান্ত্রিক পথে অগ্রসর হতে পারে, সেই বিষয়গুলো নিয়ে আমরা দীর্ঘ সময় ধরে ঐক্যবদ্ধ কমিশনের রাজনৈতিক দলগুলো এক অভূতপূর্ব পদ্ধতিতে, সুন্দর সহনশীল পরিবেশের মধ্য দিয়ে আলোচনার মাধ্যমে প্রণয়নের দিকে এগিয়েছি।’
আকতার বলেন, ‘আমাদের মূল লক্ষ্য জুলাই সনদের বাস্তবায়নের পথকে পরিষ্কার করা, তারপরই আমরা সনদ স্বাক্ষরের দিকে অগ্রসর হব। সবকিছু পরিষ্কার হওয়ার পর যদি সনদ স্বাক্ষরিত হয়, তবে সেটিই হবে আমাদের সাফল্য।’
স্বাক্ষর শেষে নাগরিকদের মধ্যে বিলি হবে সনদ
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি আলী রীয়াজ বলেন, নাগরিকেরা যাতে বুঝতে পারেন, রাষ্ট্র সংস্কারের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলো কী ঐক্যমতে পৌঁছেছে, রাষ্ট্রের ভবিষ্যৎ দিকনির্দেশনা কী এবং অগ্রগতি কত দূর হয়েছে, সেটি তাঁরা পর্যবেক্ষণ করতে পারেন।
তিনি বলেন, ‘আমরা লক্ষ করেছি, গতকাল ও আজকে কিছু তথ্য এদিক-সেদিক প্রচারিত হয়েছে। অনেক রাজনৈতিক দলের নেতা এবং সাংবাদিক আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। তবে আমি জাতীয় কমিশনের পক্ষ থেকে স্পষ্টভাবে বলতে চাই, আমাদের প্রস্তুতি সম্পূর্ণ এবং আপনাদের সহযোগিতায় আমরা আশাবাদী, যেকোনো প্রতিকূল পরিস্থিতি সত্ত্বেও জাতীয় সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠান সফলভাবে সম্পন্ন হবে।’
রাজনৈতিক দলগুলোর উদ্দেশে আলী রীয়াজ বলেন, ‘আমরা আশা করি, আপনারা এই ঐক্যের ধারা এগিয়ে নিয়ে যাবেন। সর্বোপরি, জাতীয় ঐক্য রক্ষা করা এখন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের মধ্যে রাজনৈতিক ভিন্নতা থাকবেই, কিন্তু রাষ্ট্র সংস্কারের শক্তিকে আমরা একত্রে বজায় রাখব, এই বিশ্বাসেই আমরা দাঁড়িয়ে আছি এবং সেটি অব্যাহত রাখব।’
চূড়ান্ত হয়েছে জুলাই জাতীয় সনদ-২০২৫। এখন সনদে রাজনৈতিক দলগুলোর স্বাক্ষর করাটাই শুধু বাকি। কিন্তু এই পর্যায়ে এসে শেষ সময়ের কাজটুকু সমাধা হওয়া নিয়েই দেখা দেয় গুরুতর সংকট। সংকট সমাধানের উপায় খুঁজতে গতকাল বুধবার দলগুলোর সঙ্গে জরুরি বৈঠক করে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। কমিশনের সভাপতি ও অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের আহ্বানে অনুষ্ঠিত ওই বৈঠকে শেষে আপাতত স্বস্তি এসেছে। সবকিছু ঠিক থাকলে আগামীকাল শুক্রবার সনদে স্বাক্ষর করবে দলগুলো।
জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় জুলাই সনদ স্বাক্ষরের প্রস্তুতি নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। এর আগে গত মঙ্গলবার রাজনৈতিক দল ও জোটগুলোর কাছে চূড়ান্ত সনদের অনুলিপি পাঠায় জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। অনুলিপির সঙ্গে কমিশনের পক্ষ থেকে দলগুলোর কাছে শুক্রবার সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানের আমন্ত্রণপত্রও পাঠানো হয়। এর পর থেকেই রাজনৈতিক দলগুলোর সনদে স্বাক্ষর করা নিয়ে অনিশ্চয়তা শুরু হয়।
জানা যায়, মঙ্গলবার রাতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি আলী রীয়াজ এবং প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দারের সঙ্গে অনানুষ্ঠানিক বৈঠক করেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামসহ দলটির কয়েক নেতা। এনসিপি নেতারা সেখানে এত দিনের আলোচনা বাদ দিয়ে বিদ্যমান সংবিধান স্থগিত করে নতুন সংবিধানের জন্য নতুন করে কাজ শুরুর দাবি জানান। এটা না হলে এনসিপি সনদে স্বাক্ষর করবে না বলেও জানান দলটির নেতারা। সংকট সমাধানে মঙ্গলবার রাত থেকেই বিভিন্ন দল ও সরকারের কয়েক উপদেষ্টার সঙ্গে কমিশন যোগাযোগ করে। এ সময় ইতালি থেকে দেশের পথে রওনা করেছেন প্রধান উপদেষ্টা। উপায় না পেয়ে তাঁর সঙ্গেও ফোনে যোগাযোগ করে কমিশন। এ ছাড়া বিভিন্ন মাধ্যমে এনসিপিকে বোঝাতে কমিশনের পক্ষ থেকে চেষ্টা করা হয়। এরপরেও তারা তাদের অবস্থানেই অনড় থাকে। এ অবস্থায় সংকটের সমাধান খুঁজতে মঙ্গলবার রাতের আলোচনা গড়ায় বুধবারে। প্রধান উপদেষ্টা দেশে ফেরার পর কমিশন সদস্যরা তাঁর সঙ্গে বৈঠক করেন। সংকটের বিষয়ে কমিশন প্রধান উপদেষ্টাকে জানায়। এই বৈঠকের আগেই এদিন সন্ধ্যায় দলগুলোর সঙ্গে বৈঠকের সিদ্ধান্ত হয়।
ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বৈঠকের পর প্রধান উপদেষ্টা নাহিদ ইসলামের সঙ্গে বৈঠক করেছেন বলে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে। সূত্র জানায়, বৈঠকে নাহিদ তাঁদের দলের অবস্থান তুলে ধরেন। সব শুনে এ সময় সংকট সমাধানে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানান প্রধান উপদেষ্টা। তাঁদের দাবিদাওয়ার বিষয়েও এ সময় আশ্বস্ত করেন তিনি। নাহিদের সঙ্গে এই বৈঠকের মধ্য দিয়েই মূলত বিদ্যমান সংকটের আপাতত স্বস্তি মেলে বলে জানিয়েছে সূত্রগুলো।
একটি সূত্র দাবি করছে, প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে নাহিদ ইসলাম বিস্তারিত আলাপ করেছেন। তাতে মনে হচ্ছে, পরিস্থিতির কিছুটা সমাধান হয়েছে। কিন্তু তাঁদের মনে এখনো অনেক প্রশ্ন রয়ে গেছে।
এদিকে আপাতত স্বস্তি মিললেও জুলাই সনদে স্বাক্ষর করবে কি করবে না, সে বিষয়টি এখনো স্পষ্ট করেনি এনসিপি। স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকার কথা বললেও সনদে স্বাক্ষর করবে কি না, সে বিষয়টি এখনো স্পষ্ট করেনি জামায়াত। এ ছাড়া ইসলামী আন্দোলন, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস, খেলাফত মজলিস ও নেজামে ইসলাম পার্টিও একই অবস্থানে আছে। অন্যদিকে সনদে স্বাক্ষর করবে না বলে জানিয়েছে সিপিবি, বাসদ, বাসদ মার্ক্সবাদী, বাংলাদেশ জাসদ, গণফোরাম।
৩০ দল ও জোটের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার বৈঠক
জুলাই সনদ নিয়ে গতকাল সন্ধ্যায় রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে বিএনপি, জামায়াত, এনসিপিসহ ৩০টি দল ও জোটের সঙ্গে বৈঠক করেন প্রধান উপদেষ্টা। প্রধান উপদেষ্টা ছাড়াও বৈঠকে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ, কমিশনের সদস্য বিচারপতি মো. এমদাদুল হক, সফর রাজ হোসেন, ইফতেখারুজ্জামান, বদিউল আলম মজুমদার, মো. আইয়ুব মিয়া এবং প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার উপস্থিত ছিলেন। রাজনৈতিক নেতাদের মধ্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ইসমাইল জবিউল্লাহ, জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য মতিউর রহমান আকন্দ, জাতীয় নাগরিক পার্টির সদস্যসচিব আখতার হোসেন, বাসদের সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশিদ ফিরোজ, বাসদ মার্ক্সবাদীর সমন্বয়ক মাসুদ রানা, ১২ দলীয় জোটের শরিক বাংলাদেশ এলডিপির মহাসচিব শাহাদাত হোসেন সেলিম, এবি পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জুসহ ৩১টি দল ও জোটের নেতারা বৈঠকে অংশ নেন।
উৎসবমুখর অনুষ্ঠানের মাধ্যমে স্বাক্ষর অনুষ্ঠিত হবে বলে বৈঠকে আশাবাদ ব্যক্ত করেন প্রধান উপদেষ্টা। তিনি বলেন, ‘আগামী শুক্রবার জুলাই সনদ স্বাক্ষর হবে। জাতির মধ্যে সঞ্চারিত করার জন্য আমাদের এই অনুষ্ঠান। আমরা সেখানে উৎসবমুখরভাবে যাব। এই দলিলে সই করব। উৎসবে সারা জাতি শরিক হবে।’
ফেব্রুয়ারির সংসদ নির্বাচনকে জুলাই সনদেরই অংশ উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘নির্বাচনের বিষয়ে বারবার বলছি। যখন যেখানে গেছি বলেছি। ফেব্রুয়ারি মাসে নির্বাচন হবেই। নির্বাচন উৎসবমুখর পরিবেশে হবে। উৎসবমুখর নির্বাচনের জন্য যা যা করণীয়, তার সবই আমরা করব। এর সঙ্গে আমরা কোনো কম্প্রোমাইজ করব না।’
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান না হলে অন্য কোনোভাবে এই সনদ রচনা করা সম্ভব ছিল না উল্লেখ করে ড. ইউনূস বলেন, ‘কেউ আশা করেনি সত্যি এটা হবে। অনেকে এটা নিয়ে অনেক কিছু বলেছেন। কেউ কেউ এটাকে তামাশা বলেছেন। তবে আমি আশাবাদী ছিলাম, একটা না একটা কিছু হবে। এটা না হলে কাজটা এলোমেলো হয়ে যেত। আমরা এলোমেলো না করে সুন্দর ও সুশৃঙ্খলভাবে করতে পেরেছি। প্রকৃতপক্ষে কী সংস্কার হবে, আপনারা তা করে দিয়েছেন। আমরা জুলাই সনদের স্বাক্ষরের বড় উৎসবে শরিক হব। যে কলম দিয়ে স্বাক্ষরিত হবে, তা জাদুঘরে সংরক্ষণ করা হবে। আপনাদের ছবি জাদুঘরে সংরক্ষণ করা হবে।’
সংসদ নির্বাচন প্রশ্নে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘নির্বাচনের বিষয়ে বারবার বলছি। যখন যেখানে গেছি বলেছি। ফেব্রুয়ারি মাসে নির্বাচন হবেই। এটা ঐকমত্য কমিশনের সনদেরই একটি অংশ। সনদের সঙ্গে এটা (নির্বাচন) জড়িত। আমরা যে ঘোষণা করেছি, তা রক্ষা করতে হবে। এটা এমন নয় যে, কথার কথা বললাম, আচ্ছা ঠিক আছে, দুই দিন পরে হবে...এটা ও রকম নয়। নির্বাচন ফেব্রুয়ারিতে হবে এবং উৎসবমুখর পরিবেশে হবে। উৎসবমুখর নির্বাচনের জন্য যা যা করণীয়, তার সবই আমরা করব। এর সঙ্গে আমরা কোনো কম্প্রোমাইজ করব না। আপনারা সবাই মিলে সনদ তৈরি করেছেন।’
এর আগে প্রধান উপদেষ্টার উদ্দেশে বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘আমাদের কন্টিনিউয়াস (ধারাবাহিক) সমর্থন আপনার প্রতি ছিল, আছে। কিন্তু এটা কন্ডিশনাল (শর্তযুক্ত)। আমাদের সমর্থন আরও অব্যাহত থাকবে, এটা সীমাহীন নয়। আমরা চাই, আপনার নেতৃত্বে একটা ঐতিহাসিক নির্বাচন, এটাই হচ্ছে কন্ডিশন (শর্ত)। আপনার প্রতি আমাদের সীমাহীন সমর্থন নয়, আমাদের সীমারেখা আছে। আমরা গণতান্ত্রিক উত্তরণের জন্য এই সীমারেখার মধ্যে আপনাকে সমর্থন দিচ্ছি। আপনি দয়া করে এটা অনুধাবনের চেষ্টা করবেন।’
সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, সচিবালয়ে বদলি পদায়নের জন্য মন্ত্রিপরিষদ একটি ‘ক্যাবিনেট কমিটি’ করা হয়েছে। এটার কোনো চর্চা নেই, এটা কোনো নিয়ম বা রীতি নয়। এ বিষয়ে বিএনপি অসন্তোষ প্রকাশ করেছে।
প্রধান উপদেষ্টার উদ্দেশে সালাহউদ্দিন আহমদ আরও বলেন, ‘যাতে বাংলাদেশের সকল অর্গানের ব্যালেন্স (সব অঙ্গের মধ্যে ভারসাম্য) থাকে, সেটা আপনাকে চেষ্টা করতে হবে, মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা। আমরা চাই না প্রতিরক্ষা বাহিনীগুলোর মধ্যে কোনো রকমের ভারসাম্য নষ্ট হোক। আমরা সেটি অ্যাফোর্ড করতে পারব না এই মুহূর্তে। আমরা চাই, আপনার সাথে প্রতিরক্ষা বাহিনীর সুসম্পর্ক বজায় থাকুক। রাষ্ট্র একটা ব্যালেন্স অবস্থায় থাকতে হবে। আমরা নির্বাচনকে সামনে রেখে কোনো রকমের ঝুঁকির মধ্যে যেতে চাই না। যেতে পারব না।’
আলোচনায় সংস্কার বাস্তবায়ন প্রশ্নে বিএনপির আগের অবস্থানই তুলে ধরেন সালাহউদ্দিন। তিনি বলেন, জাতীয় নির্বাচনের দিন একই সঙ্গে গণভোট হলে আগামী সংসদ জুলাই সনদ বাস্তবায়নে বাধ্য থাকবে। নির্বাচনের বাকি আছে চার মাস। দুই মাস আগে তফসিল দিতে হবে। এর আগে আরেকটি নির্বাচন আয়োজন সম্ভব কি না, তিনি সে প্রশ্ন রাখেন।
জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বলেছেন, গণভোট আর জাতীয় নির্বাচন আলাদা বিষয়; এক দিনে করার প্রস্তাব উদ্ভট আলোচনা। জুলাই সনদ বাস্তবায়নে নভেম্বরে গণভোট দিতে হবে। তাহের বলেন, বিএনপি জুলাই সনদ বাস্তবায়নে গণভোটের বিষয়ে আগে দ্বিমত করলেও পরে গণভোটের বিষয়ে আগ্রহ দেখাচ্ছেন। এ জন্য বিএনপিকে ধন্যবাদ দেন তিনি।
এনসিপির সদস্যসচিব আখতার হোসেন বলেছেন, ‘শেষ মুহূর্তে কিছু বিষয় আমাদের মধ্যে সংশয়ের জায়গা তৈরি করেছে। আসলে জাতিকে অস্পষ্ট রেখে কোনো উদ্যোগ সফল করা সম্ভব নয়। আজকের এই দিনে আমরা আসতে পেরেছি এমন একটি অবস্থানে, যাতে বাংলাদেশে আর কখনো ফ্যাসিবাদ ফিরে না আসে। বাংলাদেশ যেন জবাবদিহিপূর্ণভাবে গণতান্ত্রিক পথে অগ্রসর হতে পারে, সেই বিষয়গুলো নিয়ে আমরা দীর্ঘ সময় ধরে ঐক্যবদ্ধ কমিশনের রাজনৈতিক দলগুলো এক অভূতপূর্ব পদ্ধতিতে, সুন্দর সহনশীল পরিবেশের মধ্য দিয়ে আলোচনার মাধ্যমে প্রণয়নের দিকে এগিয়েছি।’
আকতার বলেন, ‘আমাদের মূল লক্ষ্য জুলাই সনদের বাস্তবায়নের পথকে পরিষ্কার করা, তারপরই আমরা সনদ স্বাক্ষরের দিকে অগ্রসর হব। সবকিছু পরিষ্কার হওয়ার পর যদি সনদ স্বাক্ষরিত হয়, তবে সেটিই হবে আমাদের সাফল্য।’
স্বাক্ষর শেষে নাগরিকদের মধ্যে বিলি হবে সনদ
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি আলী রীয়াজ বলেন, নাগরিকেরা যাতে বুঝতে পারেন, রাষ্ট্র সংস্কারের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলো কী ঐক্যমতে পৌঁছেছে, রাষ্ট্রের ভবিষ্যৎ দিকনির্দেশনা কী এবং অগ্রগতি কত দূর হয়েছে, সেটি তাঁরা পর্যবেক্ষণ করতে পারেন।
তিনি বলেন, ‘আমরা লক্ষ করেছি, গতকাল ও আজকে কিছু তথ্য এদিক-সেদিক প্রচারিত হয়েছে। অনেক রাজনৈতিক দলের নেতা এবং সাংবাদিক আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। তবে আমি জাতীয় কমিশনের পক্ষ থেকে স্পষ্টভাবে বলতে চাই, আমাদের প্রস্তুতি সম্পূর্ণ এবং আপনাদের সহযোগিতায় আমরা আশাবাদী, যেকোনো প্রতিকূল পরিস্থিতি সত্ত্বেও জাতীয় সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠান সফলভাবে সম্পন্ন হবে।’
রাজনৈতিক দলগুলোর উদ্দেশে আলী রীয়াজ বলেন, ‘আমরা আশা করি, আপনারা এই ঐক্যের ধারা এগিয়ে নিয়ে যাবেন। সর্বোপরি, জাতীয় ঐক্য রক্ষা করা এখন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের মধ্যে রাজনৈতিক ভিন্নতা থাকবেই, কিন্তু রাষ্ট্র সংস্কারের শক্তিকে আমরা একত্রে বজায় রাখব, এই বিশ্বাসেই আমরা দাঁড়িয়ে আছি এবং সেটি অব্যাহত রাখব।’
নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
চূড়ান্ত হয়েছে জুলাই জাতীয় সনদ-২০২৫। এখন সনদে রাজনৈতিক দলগুলোর স্বাক্ষর করাটাই শুধু বাকি। কিন্তু এই পর্যায়ে এসে শেষ সময়ের কাজটুকু সমাধা হওয়া নিয়েই দেখা দেয় গুরুতর সংকট। সংকট সমাধানের উপায় খুঁজতে গতকাল বুধবার দলগুলোর সঙ্গে জরুরি বৈঠক করে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। কমিশনের সভাপতি ও অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের আহ্বানে অনুষ্ঠিত ওই বৈঠকে শেষে আপাতত স্বস্তি এসেছে। সবকিছু ঠিক থাকলে আগামীকাল শুক্রবার সনদে স্বাক্ষর করবে দলগুলো।
জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় জুলাই সনদ স্বাক্ষরের প্রস্তুতি নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। এর আগে গত মঙ্গলবার রাজনৈতিক দল ও জোটগুলোর কাছে চূড়ান্ত সনদের অনুলিপি পাঠায় জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। অনুলিপির সঙ্গে কমিশনের পক্ষ থেকে দলগুলোর কাছে শুক্রবার সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানের আমন্ত্রণপত্রও পাঠানো হয়। এর পর থেকেই রাজনৈতিক দলগুলোর সনদে স্বাক্ষর করা নিয়ে অনিশ্চয়তা শুরু হয়।
জানা যায়, মঙ্গলবার রাতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি আলী রীয়াজ এবং প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দারের সঙ্গে অনানুষ্ঠানিক বৈঠক করেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামসহ দলটির কয়েক নেতা। এনসিপি নেতারা সেখানে এত দিনের আলোচনা বাদ দিয়ে বিদ্যমান সংবিধান স্থগিত করে নতুন সংবিধানের জন্য নতুন করে কাজ শুরুর দাবি জানান। এটা না হলে এনসিপি সনদে স্বাক্ষর করবে না বলেও জানান দলটির নেতারা। সংকট সমাধানে মঙ্গলবার রাত থেকেই বিভিন্ন দল ও সরকারের কয়েক উপদেষ্টার সঙ্গে কমিশন যোগাযোগ করে। এ সময় ইতালি থেকে দেশের পথে রওনা করেছেন প্রধান উপদেষ্টা। উপায় না পেয়ে তাঁর সঙ্গেও ফোনে যোগাযোগ করে কমিশন। এ ছাড়া বিভিন্ন মাধ্যমে এনসিপিকে বোঝাতে কমিশনের পক্ষ থেকে চেষ্টা করা হয়। এরপরেও তারা তাদের অবস্থানেই অনড় থাকে। এ অবস্থায় সংকটের সমাধান খুঁজতে মঙ্গলবার রাতের আলোচনা গড়ায় বুধবারে। প্রধান উপদেষ্টা দেশে ফেরার পর কমিশন সদস্যরা তাঁর সঙ্গে বৈঠক করেন। সংকটের বিষয়ে কমিশন প্রধান উপদেষ্টাকে জানায়। এই বৈঠকের আগেই এদিন সন্ধ্যায় দলগুলোর সঙ্গে বৈঠকের সিদ্ধান্ত হয়।
ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বৈঠকের পর প্রধান উপদেষ্টা নাহিদ ইসলামের সঙ্গে বৈঠক করেছেন বলে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে। সূত্র জানায়, বৈঠকে নাহিদ তাঁদের দলের অবস্থান তুলে ধরেন। সব শুনে এ সময় সংকট সমাধানে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানান প্রধান উপদেষ্টা। তাঁদের দাবিদাওয়ার বিষয়েও এ সময় আশ্বস্ত করেন তিনি। নাহিদের সঙ্গে এই বৈঠকের মধ্য দিয়েই মূলত বিদ্যমান সংকটের আপাতত স্বস্তি মেলে বলে জানিয়েছে সূত্রগুলো।
একটি সূত্র দাবি করছে, প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে নাহিদ ইসলাম বিস্তারিত আলাপ করেছেন। তাতে মনে হচ্ছে, পরিস্থিতির কিছুটা সমাধান হয়েছে। কিন্তু তাঁদের মনে এখনো অনেক প্রশ্ন রয়ে গেছে।
এদিকে আপাতত স্বস্তি মিললেও জুলাই সনদে স্বাক্ষর করবে কি করবে না, সে বিষয়টি এখনো স্পষ্ট করেনি এনসিপি। স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকার কথা বললেও সনদে স্বাক্ষর করবে কি না, সে বিষয়টি এখনো স্পষ্ট করেনি জামায়াত। এ ছাড়া ইসলামী আন্দোলন, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস, খেলাফত মজলিস ও নেজামে ইসলাম পার্টিও একই অবস্থানে আছে। অন্যদিকে সনদে স্বাক্ষর করবে না বলে জানিয়েছে সিপিবি, বাসদ, বাসদ মার্ক্সবাদী, বাংলাদেশ জাসদ, গণফোরাম।
৩০ দল ও জোটের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার বৈঠক
জুলাই সনদ নিয়ে গতকাল সন্ধ্যায় রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে বিএনপি, জামায়াত, এনসিপিসহ ৩০টি দল ও জোটের সঙ্গে বৈঠক করেন প্রধান উপদেষ্টা। প্রধান উপদেষ্টা ছাড়াও বৈঠকে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ, কমিশনের সদস্য বিচারপতি মো. এমদাদুল হক, সফর রাজ হোসেন, ইফতেখারুজ্জামান, বদিউল আলম মজুমদার, মো. আইয়ুব মিয়া এবং প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার উপস্থিত ছিলেন। রাজনৈতিক নেতাদের মধ্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ইসমাইল জবিউল্লাহ, জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য মতিউর রহমান আকন্দ, জাতীয় নাগরিক পার্টির সদস্যসচিব আখতার হোসেন, বাসদের সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশিদ ফিরোজ, বাসদ মার্ক্সবাদীর সমন্বয়ক মাসুদ রানা, ১২ দলীয় জোটের শরিক বাংলাদেশ এলডিপির মহাসচিব শাহাদাত হোসেন সেলিম, এবি পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জুসহ ৩১টি দল ও জোটের নেতারা বৈঠকে অংশ নেন।
উৎসবমুখর অনুষ্ঠানের মাধ্যমে স্বাক্ষর অনুষ্ঠিত হবে বলে বৈঠকে আশাবাদ ব্যক্ত করেন প্রধান উপদেষ্টা। তিনি বলেন, ‘আগামী শুক্রবার জুলাই সনদ স্বাক্ষর হবে। জাতির মধ্যে সঞ্চারিত করার জন্য আমাদের এই অনুষ্ঠান। আমরা সেখানে উৎসবমুখরভাবে যাব। এই দলিলে সই করব। উৎসবে সারা জাতি শরিক হবে।’
ফেব্রুয়ারির সংসদ নির্বাচনকে জুলাই সনদেরই অংশ উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘নির্বাচনের বিষয়ে বারবার বলছি। যখন যেখানে গেছি বলেছি। ফেব্রুয়ারি মাসে নির্বাচন হবেই। নির্বাচন উৎসবমুখর পরিবেশে হবে। উৎসবমুখর নির্বাচনের জন্য যা যা করণীয়, তার সবই আমরা করব। এর সঙ্গে আমরা কোনো কম্প্রোমাইজ করব না।’
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান না হলে অন্য কোনোভাবে এই সনদ রচনা করা সম্ভব ছিল না উল্লেখ করে ড. ইউনূস বলেন, ‘কেউ আশা করেনি সত্যি এটা হবে। অনেকে এটা নিয়ে অনেক কিছু বলেছেন। কেউ কেউ এটাকে তামাশা বলেছেন। তবে আমি আশাবাদী ছিলাম, একটা না একটা কিছু হবে। এটা না হলে কাজটা এলোমেলো হয়ে যেত। আমরা এলোমেলো না করে সুন্দর ও সুশৃঙ্খলভাবে করতে পেরেছি। প্রকৃতপক্ষে কী সংস্কার হবে, আপনারা তা করে দিয়েছেন। আমরা জুলাই সনদের স্বাক্ষরের বড় উৎসবে শরিক হব। যে কলম দিয়ে স্বাক্ষরিত হবে, তা জাদুঘরে সংরক্ষণ করা হবে। আপনাদের ছবি জাদুঘরে সংরক্ষণ করা হবে।’
সংসদ নির্বাচন প্রশ্নে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘নির্বাচনের বিষয়ে বারবার বলছি। যখন যেখানে গেছি বলেছি। ফেব্রুয়ারি মাসে নির্বাচন হবেই। এটা ঐকমত্য কমিশনের সনদেরই একটি অংশ। সনদের সঙ্গে এটা (নির্বাচন) জড়িত। আমরা যে ঘোষণা করেছি, তা রক্ষা করতে হবে। এটা এমন নয় যে, কথার কথা বললাম, আচ্ছা ঠিক আছে, দুই দিন পরে হবে...এটা ও রকম নয়। নির্বাচন ফেব্রুয়ারিতে হবে এবং উৎসবমুখর পরিবেশে হবে। উৎসবমুখর নির্বাচনের জন্য যা যা করণীয়, তার সবই আমরা করব। এর সঙ্গে আমরা কোনো কম্প্রোমাইজ করব না। আপনারা সবাই মিলে সনদ তৈরি করেছেন।’
এর আগে প্রধান উপদেষ্টার উদ্দেশে বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘আমাদের কন্টিনিউয়াস (ধারাবাহিক) সমর্থন আপনার প্রতি ছিল, আছে। কিন্তু এটা কন্ডিশনাল (শর্তযুক্ত)। আমাদের সমর্থন আরও অব্যাহত থাকবে, এটা সীমাহীন নয়। আমরা চাই, আপনার নেতৃত্বে একটা ঐতিহাসিক নির্বাচন, এটাই হচ্ছে কন্ডিশন (শর্ত)। আপনার প্রতি আমাদের সীমাহীন সমর্থন নয়, আমাদের সীমারেখা আছে। আমরা গণতান্ত্রিক উত্তরণের জন্য এই সীমারেখার মধ্যে আপনাকে সমর্থন দিচ্ছি। আপনি দয়া করে এটা অনুধাবনের চেষ্টা করবেন।’
সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, সচিবালয়ে বদলি পদায়নের জন্য মন্ত্রিপরিষদ একটি ‘ক্যাবিনেট কমিটি’ করা হয়েছে। এটার কোনো চর্চা নেই, এটা কোনো নিয়ম বা রীতি নয়। এ বিষয়ে বিএনপি অসন্তোষ প্রকাশ করেছে।
প্রধান উপদেষ্টার উদ্দেশে সালাহউদ্দিন আহমদ আরও বলেন, ‘যাতে বাংলাদেশের সকল অর্গানের ব্যালেন্স (সব অঙ্গের মধ্যে ভারসাম্য) থাকে, সেটা আপনাকে চেষ্টা করতে হবে, মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা। আমরা চাই না প্রতিরক্ষা বাহিনীগুলোর মধ্যে কোনো রকমের ভারসাম্য নষ্ট হোক। আমরা সেটি অ্যাফোর্ড করতে পারব না এই মুহূর্তে। আমরা চাই, আপনার সাথে প্রতিরক্ষা বাহিনীর সুসম্পর্ক বজায় থাকুক। রাষ্ট্র একটা ব্যালেন্স অবস্থায় থাকতে হবে। আমরা নির্বাচনকে সামনে রেখে কোনো রকমের ঝুঁকির মধ্যে যেতে চাই না। যেতে পারব না।’
আলোচনায় সংস্কার বাস্তবায়ন প্রশ্নে বিএনপির আগের অবস্থানই তুলে ধরেন সালাহউদ্দিন। তিনি বলেন, জাতীয় নির্বাচনের দিন একই সঙ্গে গণভোট হলে আগামী সংসদ জুলাই সনদ বাস্তবায়নে বাধ্য থাকবে। নির্বাচনের বাকি আছে চার মাস। দুই মাস আগে তফসিল দিতে হবে। এর আগে আরেকটি নির্বাচন আয়োজন সম্ভব কি না, তিনি সে প্রশ্ন রাখেন।
জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বলেছেন, গণভোট আর জাতীয় নির্বাচন আলাদা বিষয়; এক দিনে করার প্রস্তাব উদ্ভট আলোচনা। জুলাই সনদ বাস্তবায়নে নভেম্বরে গণভোট দিতে হবে। তাহের বলেন, বিএনপি জুলাই সনদ বাস্তবায়নে গণভোটের বিষয়ে আগে দ্বিমত করলেও পরে গণভোটের বিষয়ে আগ্রহ দেখাচ্ছেন। এ জন্য বিএনপিকে ধন্যবাদ দেন তিনি।
এনসিপির সদস্যসচিব আখতার হোসেন বলেছেন, ‘শেষ মুহূর্তে কিছু বিষয় আমাদের মধ্যে সংশয়ের জায়গা তৈরি করেছে। আসলে জাতিকে অস্পষ্ট রেখে কোনো উদ্যোগ সফল করা সম্ভব নয়। আজকের এই দিনে আমরা আসতে পেরেছি এমন একটি অবস্থানে, যাতে বাংলাদেশে আর কখনো ফ্যাসিবাদ ফিরে না আসে। বাংলাদেশ যেন জবাবদিহিপূর্ণভাবে গণতান্ত্রিক পথে অগ্রসর হতে পারে, সেই বিষয়গুলো নিয়ে আমরা দীর্ঘ সময় ধরে ঐক্যবদ্ধ কমিশনের রাজনৈতিক দলগুলো এক অভূতপূর্ব পদ্ধতিতে, সুন্দর সহনশীল পরিবেশের মধ্য দিয়ে আলোচনার মাধ্যমে প্রণয়নের দিকে এগিয়েছি।’
আকতার বলেন, ‘আমাদের মূল লক্ষ্য জুলাই সনদের বাস্তবায়নের পথকে পরিষ্কার করা, তারপরই আমরা সনদ স্বাক্ষরের দিকে অগ্রসর হব। সবকিছু পরিষ্কার হওয়ার পর যদি সনদ স্বাক্ষরিত হয়, তবে সেটিই হবে আমাদের সাফল্য।’
স্বাক্ষর শেষে নাগরিকদের মধ্যে বিলি হবে সনদ
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি আলী রীয়াজ বলেন, নাগরিকেরা যাতে বুঝতে পারেন, রাষ্ট্র সংস্কারের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলো কী ঐক্যমতে পৌঁছেছে, রাষ্ট্রের ভবিষ্যৎ দিকনির্দেশনা কী এবং অগ্রগতি কত দূর হয়েছে, সেটি তাঁরা পর্যবেক্ষণ করতে পারেন।
তিনি বলেন, ‘আমরা লক্ষ করেছি, গতকাল ও আজকে কিছু তথ্য এদিক-সেদিক প্রচারিত হয়েছে। অনেক রাজনৈতিক দলের নেতা এবং সাংবাদিক আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। তবে আমি জাতীয় কমিশনের পক্ষ থেকে স্পষ্টভাবে বলতে চাই, আমাদের প্রস্তুতি সম্পূর্ণ এবং আপনাদের সহযোগিতায় আমরা আশাবাদী, যেকোনো প্রতিকূল পরিস্থিতি সত্ত্বেও জাতীয় সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠান সফলভাবে সম্পন্ন হবে।’
রাজনৈতিক দলগুলোর উদ্দেশে আলী রীয়াজ বলেন, ‘আমরা আশা করি, আপনারা এই ঐক্যের ধারা এগিয়ে নিয়ে যাবেন। সর্বোপরি, জাতীয় ঐক্য রক্ষা করা এখন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের মধ্যে রাজনৈতিক ভিন্নতা থাকবেই, কিন্তু রাষ্ট্র সংস্কারের শক্তিকে আমরা একত্রে বজায় রাখব, এই বিশ্বাসেই আমরা দাঁড়িয়ে আছি এবং সেটি অব্যাহত রাখব।’
চূড়ান্ত হয়েছে জুলাই জাতীয় সনদ-২০২৫। এখন সনদে রাজনৈতিক দলগুলোর স্বাক্ষর করাটাই শুধু বাকি। কিন্তু এই পর্যায়ে এসে শেষ সময়ের কাজটুকু সমাধা হওয়া নিয়েই দেখা দেয় গুরুতর সংকট। সংকট সমাধানের উপায় খুঁজতে গতকাল বুধবার দলগুলোর সঙ্গে জরুরি বৈঠক করে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। কমিশনের সভাপতি ও অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের আহ্বানে অনুষ্ঠিত ওই বৈঠকে শেষে আপাতত স্বস্তি এসেছে। সবকিছু ঠিক থাকলে আগামীকাল শুক্রবার সনদে স্বাক্ষর করবে দলগুলো।
জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় জুলাই সনদ স্বাক্ষরের প্রস্তুতি নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। এর আগে গত মঙ্গলবার রাজনৈতিক দল ও জোটগুলোর কাছে চূড়ান্ত সনদের অনুলিপি পাঠায় জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। অনুলিপির সঙ্গে কমিশনের পক্ষ থেকে দলগুলোর কাছে শুক্রবার সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানের আমন্ত্রণপত্রও পাঠানো হয়। এর পর থেকেই রাজনৈতিক দলগুলোর সনদে স্বাক্ষর করা নিয়ে অনিশ্চয়তা শুরু হয়।
জানা যায়, মঙ্গলবার রাতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি আলী রীয়াজ এবং প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দারের সঙ্গে অনানুষ্ঠানিক বৈঠক করেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামসহ দলটির কয়েক নেতা। এনসিপি নেতারা সেখানে এত দিনের আলোচনা বাদ দিয়ে বিদ্যমান সংবিধান স্থগিত করে নতুন সংবিধানের জন্য নতুন করে কাজ শুরুর দাবি জানান। এটা না হলে এনসিপি সনদে স্বাক্ষর করবে না বলেও জানান দলটির নেতারা। সংকট সমাধানে মঙ্গলবার রাত থেকেই বিভিন্ন দল ও সরকারের কয়েক উপদেষ্টার সঙ্গে কমিশন যোগাযোগ করে। এ সময় ইতালি থেকে দেশের পথে রওনা করেছেন প্রধান উপদেষ্টা। উপায় না পেয়ে তাঁর সঙ্গেও ফোনে যোগাযোগ করে কমিশন। এ ছাড়া বিভিন্ন মাধ্যমে এনসিপিকে বোঝাতে কমিশনের পক্ষ থেকে চেষ্টা করা হয়। এরপরেও তারা তাদের অবস্থানেই অনড় থাকে। এ অবস্থায় সংকটের সমাধান খুঁজতে মঙ্গলবার রাতের আলোচনা গড়ায় বুধবারে। প্রধান উপদেষ্টা দেশে ফেরার পর কমিশন সদস্যরা তাঁর সঙ্গে বৈঠক করেন। সংকটের বিষয়ে কমিশন প্রধান উপদেষ্টাকে জানায়। এই বৈঠকের আগেই এদিন সন্ধ্যায় দলগুলোর সঙ্গে বৈঠকের সিদ্ধান্ত হয়।
ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বৈঠকের পর প্রধান উপদেষ্টা নাহিদ ইসলামের সঙ্গে বৈঠক করেছেন বলে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে। সূত্র জানায়, বৈঠকে নাহিদ তাঁদের দলের অবস্থান তুলে ধরেন। সব শুনে এ সময় সংকট সমাধানে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানান প্রধান উপদেষ্টা। তাঁদের দাবিদাওয়ার বিষয়েও এ সময় আশ্বস্ত করেন তিনি। নাহিদের সঙ্গে এই বৈঠকের মধ্য দিয়েই মূলত বিদ্যমান সংকটের আপাতত স্বস্তি মেলে বলে জানিয়েছে সূত্রগুলো।
একটি সূত্র দাবি করছে, প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে নাহিদ ইসলাম বিস্তারিত আলাপ করেছেন। তাতে মনে হচ্ছে, পরিস্থিতির কিছুটা সমাধান হয়েছে। কিন্তু তাঁদের মনে এখনো অনেক প্রশ্ন রয়ে গেছে।
এদিকে আপাতত স্বস্তি মিললেও জুলাই সনদে স্বাক্ষর করবে কি করবে না, সে বিষয়টি এখনো স্পষ্ট করেনি এনসিপি। স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকার কথা বললেও সনদে স্বাক্ষর করবে কি না, সে বিষয়টি এখনো স্পষ্ট করেনি জামায়াত। এ ছাড়া ইসলামী আন্দোলন, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস, খেলাফত মজলিস ও নেজামে ইসলাম পার্টিও একই অবস্থানে আছে। অন্যদিকে সনদে স্বাক্ষর করবে না বলে জানিয়েছে সিপিবি, বাসদ, বাসদ মার্ক্সবাদী, বাংলাদেশ জাসদ, গণফোরাম।
৩০ দল ও জোটের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার বৈঠক
জুলাই সনদ নিয়ে গতকাল সন্ধ্যায় রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে বিএনপি, জামায়াত, এনসিপিসহ ৩০টি দল ও জোটের সঙ্গে বৈঠক করেন প্রধান উপদেষ্টা। প্রধান উপদেষ্টা ছাড়াও বৈঠকে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ, কমিশনের সদস্য বিচারপতি মো. এমদাদুল হক, সফর রাজ হোসেন, ইফতেখারুজ্জামান, বদিউল আলম মজুমদার, মো. আইয়ুব মিয়া এবং প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার উপস্থিত ছিলেন। রাজনৈতিক নেতাদের মধ্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ইসমাইল জবিউল্লাহ, জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য মতিউর রহমান আকন্দ, জাতীয় নাগরিক পার্টির সদস্যসচিব আখতার হোসেন, বাসদের সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশিদ ফিরোজ, বাসদ মার্ক্সবাদীর সমন্বয়ক মাসুদ রানা, ১২ দলীয় জোটের শরিক বাংলাদেশ এলডিপির মহাসচিব শাহাদাত হোসেন সেলিম, এবি পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জুসহ ৩১টি দল ও জোটের নেতারা বৈঠকে অংশ নেন।
উৎসবমুখর অনুষ্ঠানের মাধ্যমে স্বাক্ষর অনুষ্ঠিত হবে বলে বৈঠকে আশাবাদ ব্যক্ত করেন প্রধান উপদেষ্টা। তিনি বলেন, ‘আগামী শুক্রবার জুলাই সনদ স্বাক্ষর হবে। জাতির মধ্যে সঞ্চারিত করার জন্য আমাদের এই অনুষ্ঠান। আমরা সেখানে উৎসবমুখরভাবে যাব। এই দলিলে সই করব। উৎসবে সারা জাতি শরিক হবে।’
ফেব্রুয়ারির সংসদ নির্বাচনকে জুলাই সনদেরই অংশ উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘নির্বাচনের বিষয়ে বারবার বলছি। যখন যেখানে গেছি বলেছি। ফেব্রুয়ারি মাসে নির্বাচন হবেই। নির্বাচন উৎসবমুখর পরিবেশে হবে। উৎসবমুখর নির্বাচনের জন্য যা যা করণীয়, তার সবই আমরা করব। এর সঙ্গে আমরা কোনো কম্প্রোমাইজ করব না।’
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান না হলে অন্য কোনোভাবে এই সনদ রচনা করা সম্ভব ছিল না উল্লেখ করে ড. ইউনূস বলেন, ‘কেউ আশা করেনি সত্যি এটা হবে। অনেকে এটা নিয়ে অনেক কিছু বলেছেন। কেউ কেউ এটাকে তামাশা বলেছেন। তবে আমি আশাবাদী ছিলাম, একটা না একটা কিছু হবে। এটা না হলে কাজটা এলোমেলো হয়ে যেত। আমরা এলোমেলো না করে সুন্দর ও সুশৃঙ্খলভাবে করতে পেরেছি। প্রকৃতপক্ষে কী সংস্কার হবে, আপনারা তা করে দিয়েছেন। আমরা জুলাই সনদের স্বাক্ষরের বড় উৎসবে শরিক হব। যে কলম দিয়ে স্বাক্ষরিত হবে, তা জাদুঘরে সংরক্ষণ করা হবে। আপনাদের ছবি জাদুঘরে সংরক্ষণ করা হবে।’
সংসদ নির্বাচন প্রশ্নে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘নির্বাচনের বিষয়ে বারবার বলছি। যখন যেখানে গেছি বলেছি। ফেব্রুয়ারি মাসে নির্বাচন হবেই। এটা ঐকমত্য কমিশনের সনদেরই একটি অংশ। সনদের সঙ্গে এটা (নির্বাচন) জড়িত। আমরা যে ঘোষণা করেছি, তা রক্ষা করতে হবে। এটা এমন নয় যে, কথার কথা বললাম, আচ্ছা ঠিক আছে, দুই দিন পরে হবে...এটা ও রকম নয়। নির্বাচন ফেব্রুয়ারিতে হবে এবং উৎসবমুখর পরিবেশে হবে। উৎসবমুখর নির্বাচনের জন্য যা যা করণীয়, তার সবই আমরা করব। এর সঙ্গে আমরা কোনো কম্প্রোমাইজ করব না। আপনারা সবাই মিলে সনদ তৈরি করেছেন।’
এর আগে প্রধান উপদেষ্টার উদ্দেশে বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘আমাদের কন্টিনিউয়াস (ধারাবাহিক) সমর্থন আপনার প্রতি ছিল, আছে। কিন্তু এটা কন্ডিশনাল (শর্তযুক্ত)। আমাদের সমর্থন আরও অব্যাহত থাকবে, এটা সীমাহীন নয়। আমরা চাই, আপনার নেতৃত্বে একটা ঐতিহাসিক নির্বাচন, এটাই হচ্ছে কন্ডিশন (শর্ত)। আপনার প্রতি আমাদের সীমাহীন সমর্থন নয়, আমাদের সীমারেখা আছে। আমরা গণতান্ত্রিক উত্তরণের জন্য এই সীমারেখার মধ্যে আপনাকে সমর্থন দিচ্ছি। আপনি দয়া করে এটা অনুধাবনের চেষ্টা করবেন।’
সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, সচিবালয়ে বদলি পদায়নের জন্য মন্ত্রিপরিষদ একটি ‘ক্যাবিনেট কমিটি’ করা হয়েছে। এটার কোনো চর্চা নেই, এটা কোনো নিয়ম বা রীতি নয়। এ বিষয়ে বিএনপি অসন্তোষ প্রকাশ করেছে।
প্রধান উপদেষ্টার উদ্দেশে সালাহউদ্দিন আহমদ আরও বলেন, ‘যাতে বাংলাদেশের সকল অর্গানের ব্যালেন্স (সব অঙ্গের মধ্যে ভারসাম্য) থাকে, সেটা আপনাকে চেষ্টা করতে হবে, মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা। আমরা চাই না প্রতিরক্ষা বাহিনীগুলোর মধ্যে কোনো রকমের ভারসাম্য নষ্ট হোক। আমরা সেটি অ্যাফোর্ড করতে পারব না এই মুহূর্তে। আমরা চাই, আপনার সাথে প্রতিরক্ষা বাহিনীর সুসম্পর্ক বজায় থাকুক। রাষ্ট্র একটা ব্যালেন্স অবস্থায় থাকতে হবে। আমরা নির্বাচনকে সামনে রেখে কোনো রকমের ঝুঁকির মধ্যে যেতে চাই না। যেতে পারব না।’
আলোচনায় সংস্কার বাস্তবায়ন প্রশ্নে বিএনপির আগের অবস্থানই তুলে ধরেন সালাহউদ্দিন। তিনি বলেন, জাতীয় নির্বাচনের দিন একই সঙ্গে গণভোট হলে আগামী সংসদ জুলাই সনদ বাস্তবায়নে বাধ্য থাকবে। নির্বাচনের বাকি আছে চার মাস। দুই মাস আগে তফসিল দিতে হবে। এর আগে আরেকটি নির্বাচন আয়োজন সম্ভব কি না, তিনি সে প্রশ্ন রাখেন।
জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বলেছেন, গণভোট আর জাতীয় নির্বাচন আলাদা বিষয়; এক দিনে করার প্রস্তাব উদ্ভট আলোচনা। জুলাই সনদ বাস্তবায়নে নভেম্বরে গণভোট দিতে হবে। তাহের বলেন, বিএনপি জুলাই সনদ বাস্তবায়নে গণভোটের বিষয়ে আগে দ্বিমত করলেও পরে গণভোটের বিষয়ে আগ্রহ দেখাচ্ছেন। এ জন্য বিএনপিকে ধন্যবাদ দেন তিনি।
এনসিপির সদস্যসচিব আখতার হোসেন বলেছেন, ‘শেষ মুহূর্তে কিছু বিষয় আমাদের মধ্যে সংশয়ের জায়গা তৈরি করেছে। আসলে জাতিকে অস্পষ্ট রেখে কোনো উদ্যোগ সফল করা সম্ভব নয়। আজকের এই দিনে আমরা আসতে পেরেছি এমন একটি অবস্থানে, যাতে বাংলাদেশে আর কখনো ফ্যাসিবাদ ফিরে না আসে। বাংলাদেশ যেন জবাবদিহিপূর্ণভাবে গণতান্ত্রিক পথে অগ্রসর হতে পারে, সেই বিষয়গুলো নিয়ে আমরা দীর্ঘ সময় ধরে ঐক্যবদ্ধ কমিশনের রাজনৈতিক দলগুলো এক অভূতপূর্ব পদ্ধতিতে, সুন্দর সহনশীল পরিবেশের মধ্য দিয়ে আলোচনার মাধ্যমে প্রণয়নের দিকে এগিয়েছি।’
আকতার বলেন, ‘আমাদের মূল লক্ষ্য জুলাই সনদের বাস্তবায়নের পথকে পরিষ্কার করা, তারপরই আমরা সনদ স্বাক্ষরের দিকে অগ্রসর হব। সবকিছু পরিষ্কার হওয়ার পর যদি সনদ স্বাক্ষরিত হয়, তবে সেটিই হবে আমাদের সাফল্য।’
স্বাক্ষর শেষে নাগরিকদের মধ্যে বিলি হবে সনদ
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি আলী রীয়াজ বলেন, নাগরিকেরা যাতে বুঝতে পারেন, রাষ্ট্র সংস্কারের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলো কী ঐক্যমতে পৌঁছেছে, রাষ্ট্রের ভবিষ্যৎ দিকনির্দেশনা কী এবং অগ্রগতি কত দূর হয়েছে, সেটি তাঁরা পর্যবেক্ষণ করতে পারেন।
তিনি বলেন, ‘আমরা লক্ষ করেছি, গতকাল ও আজকে কিছু তথ্য এদিক-সেদিক প্রচারিত হয়েছে। অনেক রাজনৈতিক দলের নেতা এবং সাংবাদিক আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। তবে আমি জাতীয় কমিশনের পক্ষ থেকে স্পষ্টভাবে বলতে চাই, আমাদের প্রস্তুতি সম্পূর্ণ এবং আপনাদের সহযোগিতায় আমরা আশাবাদী, যেকোনো প্রতিকূল পরিস্থিতি সত্ত্বেও জাতীয় সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠান সফলভাবে সম্পন্ন হবে।’
রাজনৈতিক দলগুলোর উদ্দেশে আলী রীয়াজ বলেন, ‘আমরা আশা করি, আপনারা এই ঐক্যের ধারা এগিয়ে নিয়ে যাবেন। সর্বোপরি, জাতীয় ঐক্য রক্ষা করা এখন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের মধ্যে রাজনৈতিক ভিন্নতা থাকবেই, কিন্তু রাষ্ট্র সংস্কারের শক্তিকে আমরা একত্রে বজায় রাখব, এই বিশ্বাসেই আমরা দাঁড়িয়ে আছি এবং সেটি অব্যাহত রাখব।’
বাণিজ্য-সংক্রান্ত বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য দেশে বিশেষায়িত বাণিজ্যিক আদালত প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। সুপ্রিম কোর্ট এ বিষয়ে প্রস্তাব ও আইনের খসড়া পাঠানোর পর আইন মন্ত্রণালয় এ নিয়ে কাজ করছে। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা আশা করছেন, বাণিজ্যিক আদালত গঠন করে আইন মন্ত্রণালয় শিগগির প্রজ্ঞাপন জারি করবে।
২ ঘণ্টা আগেপশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ে অফিস ৫০টি ভিআইপি পর্দা কিনতে ৪৪ লাখ ৪১ হাজার ৩০০ টাকা খরচ দেখিয়েছে। সেই হিসাবে একটি পর্দার দাম পড়েছে ৮৮ হাজার ৮২৬ টাকা। শুধু তাই নয়, বাজারে একটি তালার দাম ১৭৩ টাকা; অথচ সেটি কেনা হয়েছে ৫ হাজার ৫৯০ টাকায়। তেমনি ২৬০ টাকার বালতি ১ হাজার ৮৯০ এবং ৯৮ টাকার ঝাড়ু ১ হাজার ৪৪০ টাকায়...
৩ ঘণ্টা আগেবিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের সাময়িক বরখাস্ত করা উপমহাব্যবস্থাপক (আইনবিষয়ক) মো. আল মাসুদ খানের বিরুদ্ধে অনুমতি ছাড়া অফিসে প্রবেশ ও গুরুত্বপূর্ণ নথি সরানোর অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় ওই কর্মকর্তাকে ‘কারণ দর্শানোর নোটিশ’ দিয়েছে বিমান কর্তৃপক্ষ।
৩ ঘণ্টা আগে২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারিতেই আগামী জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে এবং সেই লক্ষ্য সামনে রেখেই ১৭ অক্টোবর জুলাই জাতীয় সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠান হবে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। জুলাই সনদ বাস্তবায়নের উপায় নিয়ে আজ বুধবার রাতে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের ‘অতি জরুরি’
৫ ঘণ্টা আগেএস এম নূর মোহাম্মদ, ঢাকা
বাণিজ্য-সংক্রান্ত বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য দেশে বিশেষায়িত বাণিজ্যিক আদালত প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। সুপ্রিম কোর্ট এ বিষয়ে প্রস্তাব ও আইনের খসড়া পাঠানোর পর আইন মন্ত্রণালয় এ নিয়ে কাজ করছে। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা আশা করছেন, বাণিজ্যিক আদালত গঠন করে আইন মন্ত্রণালয় শিগগির প্রজ্ঞাপন জারি করবে।
স্বাধীনতার ৫৪ বছর পর দেশে বিশেষায়িত বাণিজ্যিক আদালত প্রতিষ্ঠার এই উদ্যোগকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। আইনজ্ঞরা বলছেন, এমন আদালত প্রতিষ্ঠা হলে ব্যবসা-বাণিজ্যসংক্রান্ত বিরোধ নিষ্পত্তিতে গতি বাড়বে।
জানা গেছে, বর্তমানে বাণিজ্যিক বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য নির্দিষ্ট আদালত না থাকায় সহকারী জজ থেকে জেলা জজ আদালত বিভিন্ন বিরোধ নিষ্পত্তি করেন। ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ঋণসংক্রান্ত বিরোধ নিষ্পত্তি হয় অর্থ ঋণ আদালতে। বিদেশি কোম্পানির সঙ্গে চুক্তিসংক্রান্ত বিরোধ হলে তা আন্তর্জাতিক সালিসি (আরবিট্রেশন) বা বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক সালিসি কেন্দ্রের মাধ্যমে নিষ্পত্তি হয়। এ ছাড়া হাইকোর্ট বিভাগে রয়েছে অ্যাডমিরালটি ও কোম্পানি বেঞ্চ। তবে জেলা আদালতগুলোতে বিভিন্ন মামলার চাপ থাকায় বাণিজ্যিক বিরোধ নিষ্পত্তিতে অনেক বিলম্ব হয়। এতে ব্যবসায়িক কর্মকাণ্ডে জটিলতা সৃষ্টির পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। তাই বিনিয়োগ পরিবেশকে আরও গতিশীল ও স্বচ্ছ করতে বিশেষায়িত বাণিজ্যিক আদালত প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
জানা গেছে, ভারতে জেলা পর্যায় থেকে শুরু করে হাইকোর্ট পর্যন্ত বিশেষায়িত বাণিজ্যিক আদালত প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। শ্রীলঙ্কায় বাণিজ্যিক বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য হাইকোর্ট পর্যায়ে বিশেষ আদালত রয়েছে।
প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ গত ২৫ জানুয়ারি এক অনুষ্ঠানে বিশেষায়িত বাণিজ্যিক আদালত প্রতিষ্ঠায় পদক্ষেপ নেওয়ার কথা জানিয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন, এই আদালতগুলো বাণিজ্যিক বিরোধ দ্রুত নিষ্পত্তিতে সহায়ক হবে। ফলে ব্যবসায়ী ও বিনিয়োগকারীরা সময়োপযোগী ও কার্যকর আইনগত প্রতিকার লাভে সক্ষম হবেন, যা বিনিয়োগকারীদের আস্থা বৃদ্ধি করবে ও অধিক পরিমাণে প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করবে।
সুপ্রিম কোর্ট থেকে গত ২২ সেপ্টেম্বর এ বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে আইন মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেওয়া হয়।
জানতে চাইলে সুপ্রিম কোর্টের স্পেশাল অফিসার মোয়াজ্জেম হোছাইন আজকের পত্রিকাকে বলেন, পৃথক বাণিজ্যিক আদালত তৈরি হলে তা বাণিজ্যিক বিরোধ নিষ্পত্তির ক্ষেত্রে নতুন যুগের সূচনা করবে। বিশেষায়িত আদালতের মাধ্যমে দ্রুত বিচারপ্রাপ্তির ফলে বিনিয়োগকারীদের আস্থা বাড়বে এবং অর্থনীতির গতি ত্বরান্বিত হবে। সুপ্রিম কোর্ট থেকে বাণিজ্যিক আদালতের প্রস্তাবের সঙ্গে আইনের একটি খসড়াও পাঠানো হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে মন্ত্রণালয় কাজ করছে। তাঁরা আশা করছেন, দ্রুতই এ বিষয়ে মন্ত্রণালয় সিদ্ধান্ত নিয়ে বাণিজ্যিক আদালতের বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করবে।
সূত্র জানায়, সুপ্রিম কোর্টের প্রস্তাবে ব্যবসায়ী, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সাধারণ লেনদেন, আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম, বিমান ও নৌপরিবহন, নির্মাণ ও অবকাঠামোগত প্রকল্প, ফ্র্যাঞ্চাইজ ও লাইসেন্সিং চুক্তি, প্রযুক্তি উন্নয়ন, ট্রেডমার্ক, কপিরাইট, পেটেন্ট, শিল্প নকশা, ডোমেইন নাম, ভৌগোলিক নির্দেশক, বিমা, অংশীদারত্ব ও যৌথ উদ্যোগ চুক্তিসহ আধুনিক বাণিজ্যের বিভিন্ন দিককে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এ ছাড়া প্রস্তাবে বলা হয়েছে, পরিষেবা খাত সম্পর্কিত সাবস্ক্রিপশন ও বিনিয়োগ চুক্তি এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সম্পর্কিত বিরোধও বাণিজ্যিক আদালতের এখতিয়ারের অন্তর্ভুক্ত হবে।
মন্ত্রণালয়ে পাঠানো সুপ্রিম কোর্টের প্রস্তাব অনুযায়ী, জেলা জজদের মধ্য থেকে বাণিজ্যিক আদালতের বিচারক নিয়োগ করা হবে। আপিল হবে হাইকোর্টের নির্ধারিত বাণিজ্যিক আপিল বেঞ্চে। তবে মামলা দায়েরের পূর্বে মধ্যস্থতাকে বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। মধ্যস্থতার মাধ্যমে প্রাপ্ত সমঝোতা সালিসি রায়ের অনুরূপ আইনি কার্যকর হবে। চূড়ান্ত শুনানি ৯০ দিনের মধ্যে করতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া এই আদালতে বিরোধের বিষয়বস্তু ৫০ লাখ টাকা থেকে শুরু হবে।
বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশনও বিশেষায়িত বাণিজ্যিক আদালত করার সুপারিশ করেছে গত জানুয়ারিতে। ওই সুপারিশে বলা হয়, সংস্কার কমিশনের সঙ্গে মতবিনিময়কালে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইর প্রতিনিধিসহ অন্য অংশীজনেরা দ্রুততার সঙ্গে বাণিজ্যিক বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য প্রয়োজনীয় সংস্কারের ওপর জোর দিয়েছেন। ওই কমিশনের সদস্য তানিম হোসেইন শাওন বলেন, ‘সুপ্রিম কোর্টের খসড়া নিয়ে কাজ চলছে। বাণিজ্যিক আদালত গঠনের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন। আশা করছি শিগগির এটি হয়ে যাবে।’
বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মো. আমিরুল ইসলাম বলেন, বর্তমানে ব্যবসা-বাণিজ্যসংক্রান্ত কিছু বিরোধ সহকারী জজ আদালত থেকে যুগ্ম জেলা জজ আদালতে মানিস্যুট আকারে নিষ্পত্তি হয়। অর্থঋণ আদালতে নিষ্পত্তি হয় ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ঋণসংক্রান্ত বিরোধ। আরবিট্রেশনের মাধ্যমে ব্যবসায়িক কিছু বিরোধ নিষ্পত্তি করেন জেলা জজ আদালত। আন্তর্জাতিক কোনো বিষয় থাকলে (জাহাজসংক্রান্ত) হাইকোর্ট বিভাগে অ্যাডমিরালটি বেঞ্চে নিষ্পত্তি হয়। এ ছাড়া কোম্পানিসংক্রান্ত বিষয় দেখার জন্য হাইকোর্টে বিশেষ বেঞ্চ রয়েছে। এখন জেলা আদালতে বাণিজ্যিক বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য বিশেষ আদালত হলে অন্য আদালতগুলোতে চাপ কমবে এবং দ্রুত বিরোধ নিষ্পত্তি হবে। এতে করে ব্যবসায়ীরা উপকৃত হবেন।
বাণিজ্যিক আদালত প্রতিষ্ঠার বিষয়টিকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন আইনজ্ঞরা। দৃষ্টি আকর্ষণ করলে ব্যারিস্টার মোকছেদুল ইসলাম বলেন, বাণিজ্যিক বিরোধ দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য বিশেষায়িত বাণিজ্যিক আদালত স্থাপনের চিন্তা একটি প্রশংসনীয় পদক্ষেপ। ব্যবসা, ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠানসহ বাণিজ্যিক লেনদেনের সঙ্গে সম্পর্কিত মামলাগুলোর দ্রুত নিষ্পত্তি বিনিয়োগ পরিবেশকে আরও গতিশীল ও স্বচ্ছ করবে। তবে অতীতে বিশেষ আদালত বা বিশেষ আইনের আওতায় গঠিত অনেক প্রতিষ্ঠান কাঙ্ক্ষিত ফল দিতে পারেনি। তাই কেবল নতুন আদালত গঠন করলেই কাঙ্ক্ষিত গতি বা দক্ষতা আসবে না। এ জন্য আইনজীবী, ব্যবসায়ী ও সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোকেও তাঁদের দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করতে হবে।
বাণিজ্য-সংক্রান্ত বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য দেশে বিশেষায়িত বাণিজ্যিক আদালত প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। সুপ্রিম কোর্ট এ বিষয়ে প্রস্তাব ও আইনের খসড়া পাঠানোর পর আইন মন্ত্রণালয় এ নিয়ে কাজ করছে। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা আশা করছেন, বাণিজ্যিক আদালত গঠন করে আইন মন্ত্রণালয় শিগগির প্রজ্ঞাপন জারি করবে।
স্বাধীনতার ৫৪ বছর পর দেশে বিশেষায়িত বাণিজ্যিক আদালত প্রতিষ্ঠার এই উদ্যোগকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। আইনজ্ঞরা বলছেন, এমন আদালত প্রতিষ্ঠা হলে ব্যবসা-বাণিজ্যসংক্রান্ত বিরোধ নিষ্পত্তিতে গতি বাড়বে।
জানা গেছে, বর্তমানে বাণিজ্যিক বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য নির্দিষ্ট আদালত না থাকায় সহকারী জজ থেকে জেলা জজ আদালত বিভিন্ন বিরোধ নিষ্পত্তি করেন। ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ঋণসংক্রান্ত বিরোধ নিষ্পত্তি হয় অর্থ ঋণ আদালতে। বিদেশি কোম্পানির সঙ্গে চুক্তিসংক্রান্ত বিরোধ হলে তা আন্তর্জাতিক সালিসি (আরবিট্রেশন) বা বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক সালিসি কেন্দ্রের মাধ্যমে নিষ্পত্তি হয়। এ ছাড়া হাইকোর্ট বিভাগে রয়েছে অ্যাডমিরালটি ও কোম্পানি বেঞ্চ। তবে জেলা আদালতগুলোতে বিভিন্ন মামলার চাপ থাকায় বাণিজ্যিক বিরোধ নিষ্পত্তিতে অনেক বিলম্ব হয়। এতে ব্যবসায়িক কর্মকাণ্ডে জটিলতা সৃষ্টির পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। তাই বিনিয়োগ পরিবেশকে আরও গতিশীল ও স্বচ্ছ করতে বিশেষায়িত বাণিজ্যিক আদালত প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
জানা গেছে, ভারতে জেলা পর্যায় থেকে শুরু করে হাইকোর্ট পর্যন্ত বিশেষায়িত বাণিজ্যিক আদালত প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। শ্রীলঙ্কায় বাণিজ্যিক বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য হাইকোর্ট পর্যায়ে বিশেষ আদালত রয়েছে।
প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ গত ২৫ জানুয়ারি এক অনুষ্ঠানে বিশেষায়িত বাণিজ্যিক আদালত প্রতিষ্ঠায় পদক্ষেপ নেওয়ার কথা জানিয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন, এই আদালতগুলো বাণিজ্যিক বিরোধ দ্রুত নিষ্পত্তিতে সহায়ক হবে। ফলে ব্যবসায়ী ও বিনিয়োগকারীরা সময়োপযোগী ও কার্যকর আইনগত প্রতিকার লাভে সক্ষম হবেন, যা বিনিয়োগকারীদের আস্থা বৃদ্ধি করবে ও অধিক পরিমাণে প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করবে।
সুপ্রিম কোর্ট থেকে গত ২২ সেপ্টেম্বর এ বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে আইন মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেওয়া হয়।
জানতে চাইলে সুপ্রিম কোর্টের স্পেশাল অফিসার মোয়াজ্জেম হোছাইন আজকের পত্রিকাকে বলেন, পৃথক বাণিজ্যিক আদালত তৈরি হলে তা বাণিজ্যিক বিরোধ নিষ্পত্তির ক্ষেত্রে নতুন যুগের সূচনা করবে। বিশেষায়িত আদালতের মাধ্যমে দ্রুত বিচারপ্রাপ্তির ফলে বিনিয়োগকারীদের আস্থা বাড়বে এবং অর্থনীতির গতি ত্বরান্বিত হবে। সুপ্রিম কোর্ট থেকে বাণিজ্যিক আদালতের প্রস্তাবের সঙ্গে আইনের একটি খসড়াও পাঠানো হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে মন্ত্রণালয় কাজ করছে। তাঁরা আশা করছেন, দ্রুতই এ বিষয়ে মন্ত্রণালয় সিদ্ধান্ত নিয়ে বাণিজ্যিক আদালতের বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করবে।
সূত্র জানায়, সুপ্রিম কোর্টের প্রস্তাবে ব্যবসায়ী, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সাধারণ লেনদেন, আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম, বিমান ও নৌপরিবহন, নির্মাণ ও অবকাঠামোগত প্রকল্প, ফ্র্যাঞ্চাইজ ও লাইসেন্সিং চুক্তি, প্রযুক্তি উন্নয়ন, ট্রেডমার্ক, কপিরাইট, পেটেন্ট, শিল্প নকশা, ডোমেইন নাম, ভৌগোলিক নির্দেশক, বিমা, অংশীদারত্ব ও যৌথ উদ্যোগ চুক্তিসহ আধুনিক বাণিজ্যের বিভিন্ন দিককে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এ ছাড়া প্রস্তাবে বলা হয়েছে, পরিষেবা খাত সম্পর্কিত সাবস্ক্রিপশন ও বিনিয়োগ চুক্তি এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সম্পর্কিত বিরোধও বাণিজ্যিক আদালতের এখতিয়ারের অন্তর্ভুক্ত হবে।
মন্ত্রণালয়ে পাঠানো সুপ্রিম কোর্টের প্রস্তাব অনুযায়ী, জেলা জজদের মধ্য থেকে বাণিজ্যিক আদালতের বিচারক নিয়োগ করা হবে। আপিল হবে হাইকোর্টের নির্ধারিত বাণিজ্যিক আপিল বেঞ্চে। তবে মামলা দায়েরের পূর্বে মধ্যস্থতাকে বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। মধ্যস্থতার মাধ্যমে প্রাপ্ত সমঝোতা সালিসি রায়ের অনুরূপ আইনি কার্যকর হবে। চূড়ান্ত শুনানি ৯০ দিনের মধ্যে করতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া এই আদালতে বিরোধের বিষয়বস্তু ৫০ লাখ টাকা থেকে শুরু হবে।
বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশনও বিশেষায়িত বাণিজ্যিক আদালত করার সুপারিশ করেছে গত জানুয়ারিতে। ওই সুপারিশে বলা হয়, সংস্কার কমিশনের সঙ্গে মতবিনিময়কালে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইর প্রতিনিধিসহ অন্য অংশীজনেরা দ্রুততার সঙ্গে বাণিজ্যিক বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য প্রয়োজনীয় সংস্কারের ওপর জোর দিয়েছেন। ওই কমিশনের সদস্য তানিম হোসেইন শাওন বলেন, ‘সুপ্রিম কোর্টের খসড়া নিয়ে কাজ চলছে। বাণিজ্যিক আদালত গঠনের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন। আশা করছি শিগগির এটি হয়ে যাবে।’
বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মো. আমিরুল ইসলাম বলেন, বর্তমানে ব্যবসা-বাণিজ্যসংক্রান্ত কিছু বিরোধ সহকারী জজ আদালত থেকে যুগ্ম জেলা জজ আদালতে মানিস্যুট আকারে নিষ্পত্তি হয়। অর্থঋণ আদালতে নিষ্পত্তি হয় ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ঋণসংক্রান্ত বিরোধ। আরবিট্রেশনের মাধ্যমে ব্যবসায়িক কিছু বিরোধ নিষ্পত্তি করেন জেলা জজ আদালত। আন্তর্জাতিক কোনো বিষয় থাকলে (জাহাজসংক্রান্ত) হাইকোর্ট বিভাগে অ্যাডমিরালটি বেঞ্চে নিষ্পত্তি হয়। এ ছাড়া কোম্পানিসংক্রান্ত বিষয় দেখার জন্য হাইকোর্টে বিশেষ বেঞ্চ রয়েছে। এখন জেলা আদালতে বাণিজ্যিক বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য বিশেষ আদালত হলে অন্য আদালতগুলোতে চাপ কমবে এবং দ্রুত বিরোধ নিষ্পত্তি হবে। এতে করে ব্যবসায়ীরা উপকৃত হবেন।
বাণিজ্যিক আদালত প্রতিষ্ঠার বিষয়টিকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন আইনজ্ঞরা। দৃষ্টি আকর্ষণ করলে ব্যারিস্টার মোকছেদুল ইসলাম বলেন, বাণিজ্যিক বিরোধ দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য বিশেষায়িত বাণিজ্যিক আদালত স্থাপনের চিন্তা একটি প্রশংসনীয় পদক্ষেপ। ব্যবসা, ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠানসহ বাণিজ্যিক লেনদেনের সঙ্গে সম্পর্কিত মামলাগুলোর দ্রুত নিষ্পত্তি বিনিয়োগ পরিবেশকে আরও গতিশীল ও স্বচ্ছ করবে। তবে অতীতে বিশেষ আদালত বা বিশেষ আইনের আওতায় গঠিত অনেক প্রতিষ্ঠান কাঙ্ক্ষিত ফল দিতে পারেনি। তাই কেবল নতুন আদালত গঠন করলেই কাঙ্ক্ষিত গতি বা দক্ষতা আসবে না। এ জন্য আইনজীবী, ব্যবসায়ী ও সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোকেও তাঁদের দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করতে হবে।
চূড়ান্ত হয়েছে জুলাই জাতীয় সনদ-২০২৫। এখন সনদে রাজনৈতিক দলগুলোর স্বাক্ষর করাটাই শুধু বাকি। কিন্তু এই পর্যায়ে এসে শেষ সময়ের কাজটুকু সমাধা হওয়া নিয়েই দেখা দেয় গুরুতর সংকট। সংকট সমাধানের উপায় খুঁজতে গতকাল বুধবার দলগুলোর সঙ্গে জরুরি বৈঠক করে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। কমিশনের সভাপতি ও অন্তর্বর্তী সরকারের...
২ ঘণ্টা আগেপশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ে অফিস ৫০টি ভিআইপি পর্দা কিনতে ৪৪ লাখ ৪১ হাজার ৩০০ টাকা খরচ দেখিয়েছে। সেই হিসাবে একটি পর্দার দাম পড়েছে ৮৮ হাজার ৮২৬ টাকা। শুধু তাই নয়, বাজারে একটি তালার দাম ১৭৩ টাকা; অথচ সেটি কেনা হয়েছে ৫ হাজার ৫৯০ টাকায়। তেমনি ২৬০ টাকার বালতি ১ হাজার ৮৯০ এবং ৯৮ টাকার ঝাড়ু ১ হাজার ৪৪০ টাকায়...
৩ ঘণ্টা আগেবিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের সাময়িক বরখাস্ত করা উপমহাব্যবস্থাপক (আইনবিষয়ক) মো. আল মাসুদ খানের বিরুদ্ধে অনুমতি ছাড়া অফিসে প্রবেশ ও গুরুত্বপূর্ণ নথি সরানোর অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় ওই কর্মকর্তাকে ‘কারণ দর্শানোর নোটিশ’ দিয়েছে বিমান কর্তৃপক্ষ।
৩ ঘণ্টা আগে২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারিতেই আগামী জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে এবং সেই লক্ষ্য সামনে রেখেই ১৭ অক্টোবর জুলাই জাতীয় সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠান হবে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। জুলাই সনদ বাস্তবায়নের উপায় নিয়ে আজ বুধবার রাতে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের ‘অতি জরুরি’
৫ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী
পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ে অফিস ৫০টি ভিআইপি পর্দা কিনতে ৪৪ লাখ ৪১ হাজার ৩০০ টাকা খরচ দেখিয়েছে। সেই হিসাবে একটি পর্দার দাম পড়েছে ৮৮ হাজার ৮২৬ টাকা। শুধু তাই নয়, বাজারে একটি তালার দাম ১৭৩ টাকা; অথচ সেটি কেনা হয়েছে ৫ হাজার ৫৯০ টাকায়। তেমনি ২৬০ টাকার বালতি ১ হাজার ৮৯০ এবং ৯৮ টাকার ঝাড়ু ১ হাজার ৪৪০ টাকায় কেনা হয়েছে।
পশ্চিম রেলের ২০১৮-১৯ অর্থবছরের কেনাকাটায় এমন ভয়াবহ দুর্নীতির প্রমাণ পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এ ঘটনায় গতকাল বুধবার মামলা করেছে সংস্থাটি। মামলায় পশ্চিম রেলের সাবেক দুই মহাব্যবস্থাপকসহ (জিএম) ১৮ জনকে আসামি করা হয়েছে। দুদকের প্রধান কার্যালয়ের উপসহকারী পরিচালক মো. রোকনুজ্জামান বাদী হয়ে সমন্বিত জেলা কার্যালয়, রাজশাহীতে এ মামলা করেন। এজাহারে আসামিদের বিরুদ্ধে পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়েতে কেনাকাটায় ২ কোটি ১৮ লাখ ১৪ হাজার ১৯৬ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়েছে।
মামলার আসামিরা হলেন, পশ্চিমাঞ্চল রেলের অবসরপ্রাপ্ত মহাব্যবস্থাপক খোন্দকার শহিদুল ইসলাম ও মজিবুর রহমান; সাবেক সিওসি খায়রুল আলম ও বেলাল হোসেন সরকার; সাবেক এসিওএস জাহিদ কাওছার; তৎকালীন ডেপুটি সিসিএম ফুয়াদ হোসেন আনন্দ; তৎকালীন ডিএফএ শ্যামলী রাণী রায়; তৎকালীন উচ্চমান সহকারী আলামিন তালুকদার; সাবেক ডিএফএ (অর্থ) আলমগীর হোসেন; তৎকালীন সিওপিএস এ এম এম শাহনেওয়াজ; তৎকালীন এফএঅ্যান্ডসিএও শরিফুল ইসলাম; তৎকালীন ডেপুটি সিওপিএস হাসিনা খাতুন; সাবেক এফএঅ্যান্ডসিএও মসিহ উল হাসান; সাবেক এসিসিএম শেখ আব্দুল জব্বার; সাবেক অতিরিক্ত এফএঅ্যান্ডসিএও গোলাম রব্বানী; তৎকালীন অতিরিক্ত এফএঅ্যান্ডসিও গোলাম রহমান; সাবেক এফএঅ্যান্ডসিও সরোজ কান্তি দেব ও সাবেক সিসিএম মিহির কান্তি গুহ।
দুদক জানিয়েছে, আসামিরা বিভিন্ন পণ্য কেনার ক্ষেত্রে বাজারদরের চেয়ে ১৫ থেকে ৩৩ গুণ বেশি দাম পরিশোধ করেছেন। রেলের অভ্যন্তরীণ তদন্তেই ভয়াবহ অনিয়মের চিত্র বেরিয়ে আসে। তদন্ত কমিটির নেতৃত্বে ছিলেন রেলপথ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ড. ভুবন চন্দ্র বিশ্বাস।
দুদক জানায়, প্রতিটি তালা কিনতে ঠিকাদারকে পরিশোধ করা হয়েছে ৫ হাজার ৫৯০ টাকা; যেখানে ভ্যাট, আয়কর, মুনাফাসহ বাস্তবিক মূল্য ছিল মাত্র ১৭৩ টাকা। শুধু তালা কিনেই ১০ লাখ ৮৩ হাজার ৪০০ টাকা দুর্নীতি করা হয়েছে। অন্যদিকে ২৬০ টাকার বালতি ১ হাজার ৮৯০ টাকায়, ৬৫ টাকার বাঁশি ৪১৫ টাকায় এবং ৯৮ টাকার ঝাড়ু ১ হাজার ৪৪০ টাকায় কিনে লুট করা হয়েছে ১৮ লাখ ৮২ হাজার টাকা। একইভাবে পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ে অফিসে ৫০টি ভিআইপি পর্দা কিনতে ৪৪ লাখ ৪১ হাজার ৩০০ টাকা, লাগেজ ফিতাসহ ওয়াগন কার্ড কেনায় ২৬ লাখ ৩৭ হাজার ২৫০ টাকা এবং ভিজিটিং চেয়ার, পেডাল ডাস্টবিন, লাগেজ ট্রলি, পাপোশ, ফটোকপিয়ার, স্টিল ফ্রেম চেয়ার, লেদার ক্যাশ ব্যাগসহ আরও ১৩ ধরনের পণ্য কেনায় ১ কোটি ২৮ লাখ ৫৩ হাজার ৪৪৬ টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে। মোট চারটি দরপত্র প্রক্রিয়ায় ১৭ ধরনের পণ্য কেনাকাটায় এভাবে ২ কোটি ১৮ লাখ ১৪ হাজার ১৯৬ টাকা লুট করা হয়েছে।
তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, প্রাক্কলন কমিটি বাজারদর যাচাই না করেই প্রকৃত মূল্যের চেয়ে ১৫ থেকে ৩৩ গুণ পর্যন্ত বেশি দর নির্ধারণ করে দরপত্র আহ্বান করেছে। ১৬৬টি তালিকাভুক্ত প্রতিষ্ঠানের মধ্যে মাত্র ছয়টি প্রতিষ্ঠান দরপত্র প্রক্রিয়ায় অংশ নেয় এবং তারাই কার্যাদেশ পায়। মূল্যায়ন কমিটি বাজারদর যাচাই না করে ইচ্ছাকৃতভাবে অধিক মূল্যের দর নেয়।
দুদক বলছে, অনুমোদনকারী কর্মকর্তার দরপত্র বাতিল বা পুনরায় আহ্বান করার ক্ষমতা থাকলেও তিনি কোনো পদক্ষেপ না নিয়ে অনিয়মিতভাবে দরপত্র অনুমোদন দেন এবং ক্রয়প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেন। প্রাক্কলন কমিটি, মূল্যায়ন কমিটি, অনুমোদনকারী কর্মকর্তা ও ঠিকাদার পরস্পর যোগসাজশে বিপুল সরকারি অর্থ আত্মসাৎ করেছেন। এ কারণে সংশ্লিষ্ট সবাইকে আসামি করা হয়েছে।
দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক আমির হোসাইন বলেন, ‘মামলা রেকর্ড করা হয়েছে। এখন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা নিয়োগ করা হবে। এরপর পরবর্তী প্রক্রিয়া শুরু হবে।’
পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ে অফিস ৫০টি ভিআইপি পর্দা কিনতে ৪৪ লাখ ৪১ হাজার ৩০০ টাকা খরচ দেখিয়েছে। সেই হিসাবে একটি পর্দার দাম পড়েছে ৮৮ হাজার ৮২৬ টাকা। শুধু তাই নয়, বাজারে একটি তালার দাম ১৭৩ টাকা; অথচ সেটি কেনা হয়েছে ৫ হাজার ৫৯০ টাকায়। তেমনি ২৬০ টাকার বালতি ১ হাজার ৮৯০ এবং ৯৮ টাকার ঝাড়ু ১ হাজার ৪৪০ টাকায় কেনা হয়েছে।
পশ্চিম রেলের ২০১৮-১৯ অর্থবছরের কেনাকাটায় এমন ভয়াবহ দুর্নীতির প্রমাণ পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এ ঘটনায় গতকাল বুধবার মামলা করেছে সংস্থাটি। মামলায় পশ্চিম রেলের সাবেক দুই মহাব্যবস্থাপকসহ (জিএম) ১৮ জনকে আসামি করা হয়েছে। দুদকের প্রধান কার্যালয়ের উপসহকারী পরিচালক মো. রোকনুজ্জামান বাদী হয়ে সমন্বিত জেলা কার্যালয়, রাজশাহীতে এ মামলা করেন। এজাহারে আসামিদের বিরুদ্ধে পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়েতে কেনাকাটায় ২ কোটি ১৮ লাখ ১৪ হাজার ১৯৬ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়েছে।
মামলার আসামিরা হলেন, পশ্চিমাঞ্চল রেলের অবসরপ্রাপ্ত মহাব্যবস্থাপক খোন্দকার শহিদুল ইসলাম ও মজিবুর রহমান; সাবেক সিওসি খায়রুল আলম ও বেলাল হোসেন সরকার; সাবেক এসিওএস জাহিদ কাওছার; তৎকালীন ডেপুটি সিসিএম ফুয়াদ হোসেন আনন্দ; তৎকালীন ডিএফএ শ্যামলী রাণী রায়; তৎকালীন উচ্চমান সহকারী আলামিন তালুকদার; সাবেক ডিএফএ (অর্থ) আলমগীর হোসেন; তৎকালীন সিওপিএস এ এম এম শাহনেওয়াজ; তৎকালীন এফএঅ্যান্ডসিএও শরিফুল ইসলাম; তৎকালীন ডেপুটি সিওপিএস হাসিনা খাতুন; সাবেক এফএঅ্যান্ডসিএও মসিহ উল হাসান; সাবেক এসিসিএম শেখ আব্দুল জব্বার; সাবেক অতিরিক্ত এফএঅ্যান্ডসিএও গোলাম রব্বানী; তৎকালীন অতিরিক্ত এফএঅ্যান্ডসিও গোলাম রহমান; সাবেক এফএঅ্যান্ডসিও সরোজ কান্তি দেব ও সাবেক সিসিএম মিহির কান্তি গুহ।
দুদক জানিয়েছে, আসামিরা বিভিন্ন পণ্য কেনার ক্ষেত্রে বাজারদরের চেয়ে ১৫ থেকে ৩৩ গুণ বেশি দাম পরিশোধ করেছেন। রেলের অভ্যন্তরীণ তদন্তেই ভয়াবহ অনিয়মের চিত্র বেরিয়ে আসে। তদন্ত কমিটির নেতৃত্বে ছিলেন রেলপথ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ড. ভুবন চন্দ্র বিশ্বাস।
দুদক জানায়, প্রতিটি তালা কিনতে ঠিকাদারকে পরিশোধ করা হয়েছে ৫ হাজার ৫৯০ টাকা; যেখানে ভ্যাট, আয়কর, মুনাফাসহ বাস্তবিক মূল্য ছিল মাত্র ১৭৩ টাকা। শুধু তালা কিনেই ১০ লাখ ৮৩ হাজার ৪০০ টাকা দুর্নীতি করা হয়েছে। অন্যদিকে ২৬০ টাকার বালতি ১ হাজার ৮৯০ টাকায়, ৬৫ টাকার বাঁশি ৪১৫ টাকায় এবং ৯৮ টাকার ঝাড়ু ১ হাজার ৪৪০ টাকায় কিনে লুট করা হয়েছে ১৮ লাখ ৮২ হাজার টাকা। একইভাবে পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ে অফিসে ৫০টি ভিআইপি পর্দা কিনতে ৪৪ লাখ ৪১ হাজার ৩০০ টাকা, লাগেজ ফিতাসহ ওয়াগন কার্ড কেনায় ২৬ লাখ ৩৭ হাজার ২৫০ টাকা এবং ভিজিটিং চেয়ার, পেডাল ডাস্টবিন, লাগেজ ট্রলি, পাপোশ, ফটোকপিয়ার, স্টিল ফ্রেম চেয়ার, লেদার ক্যাশ ব্যাগসহ আরও ১৩ ধরনের পণ্য কেনায় ১ কোটি ২৮ লাখ ৫৩ হাজার ৪৪৬ টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে। মোট চারটি দরপত্র প্রক্রিয়ায় ১৭ ধরনের পণ্য কেনাকাটায় এভাবে ২ কোটি ১৮ লাখ ১৪ হাজার ১৯৬ টাকা লুট করা হয়েছে।
তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, প্রাক্কলন কমিটি বাজারদর যাচাই না করেই প্রকৃত মূল্যের চেয়ে ১৫ থেকে ৩৩ গুণ পর্যন্ত বেশি দর নির্ধারণ করে দরপত্র আহ্বান করেছে। ১৬৬টি তালিকাভুক্ত প্রতিষ্ঠানের মধ্যে মাত্র ছয়টি প্রতিষ্ঠান দরপত্র প্রক্রিয়ায় অংশ নেয় এবং তারাই কার্যাদেশ পায়। মূল্যায়ন কমিটি বাজারদর যাচাই না করে ইচ্ছাকৃতভাবে অধিক মূল্যের দর নেয়।
দুদক বলছে, অনুমোদনকারী কর্মকর্তার দরপত্র বাতিল বা পুনরায় আহ্বান করার ক্ষমতা থাকলেও তিনি কোনো পদক্ষেপ না নিয়ে অনিয়মিতভাবে দরপত্র অনুমোদন দেন এবং ক্রয়প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেন। প্রাক্কলন কমিটি, মূল্যায়ন কমিটি, অনুমোদনকারী কর্মকর্তা ও ঠিকাদার পরস্পর যোগসাজশে বিপুল সরকারি অর্থ আত্মসাৎ করেছেন। এ কারণে সংশ্লিষ্ট সবাইকে আসামি করা হয়েছে।
দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক আমির হোসাইন বলেন, ‘মামলা রেকর্ড করা হয়েছে। এখন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা নিয়োগ করা হবে। এরপর পরবর্তী প্রক্রিয়া শুরু হবে।’
চূড়ান্ত হয়েছে জুলাই জাতীয় সনদ-২০২৫। এখন সনদে রাজনৈতিক দলগুলোর স্বাক্ষর করাটাই শুধু বাকি। কিন্তু এই পর্যায়ে এসে শেষ সময়ের কাজটুকু সমাধা হওয়া নিয়েই দেখা দেয় গুরুতর সংকট। সংকট সমাধানের উপায় খুঁজতে গতকাল বুধবার দলগুলোর সঙ্গে জরুরি বৈঠক করে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। কমিশনের সভাপতি ও অন্তর্বর্তী সরকারের...
২ ঘণ্টা আগেবাণিজ্য-সংক্রান্ত বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য দেশে বিশেষায়িত বাণিজ্যিক আদালত প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। সুপ্রিম কোর্ট এ বিষয়ে প্রস্তাব ও আইনের খসড়া পাঠানোর পর আইন মন্ত্রণালয় এ নিয়ে কাজ করছে। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা আশা করছেন, বাণিজ্যিক আদালত গঠন করে আইন মন্ত্রণালয় শিগগির প্রজ্ঞাপন জারি করবে।
২ ঘণ্টা আগেবিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের সাময়িক বরখাস্ত করা উপমহাব্যবস্থাপক (আইনবিষয়ক) মো. আল মাসুদ খানের বিরুদ্ধে অনুমতি ছাড়া অফিসে প্রবেশ ও গুরুত্বপূর্ণ নথি সরানোর অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় ওই কর্মকর্তাকে ‘কারণ দর্শানোর নোটিশ’ দিয়েছে বিমান কর্তৃপক্ষ।
৩ ঘণ্টা আগে২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারিতেই আগামী জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে এবং সেই লক্ষ্য সামনে রেখেই ১৭ অক্টোবর জুলাই জাতীয় সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠান হবে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। জুলাই সনদ বাস্তবায়নের উপায় নিয়ে আজ বুধবার রাতে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের ‘অতি জরুরি’
৫ ঘণ্টা আগেবিশেষ প্রতিনিধি, ঢাকা
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের সাময়িক বরখাস্ত করা উপমহাব্যবস্থাপক (আইনবিষয়ক) মো. আল মাসুদ খানের বিরুদ্ধে অনুমতি ছাড়া অফিসে প্রবেশ ও গুরুত্বপূর্ণ নথি সরানোর অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় ওই কর্মকর্তাকে ‘কারণ দর্শানোর নোটিশ’ দিয়েছে বিমান কর্তৃপক্ষ।
জানা গেছে, সাময়িক বরখাস্ত থাকা উপমহাব্যবস্থাপক (আইনবিষয়ক) মো. আল মাসুদ খান গত শনিবার (১১ অক্টোবর) দুপুর ১২টা ১৪ মিনিটে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের প্রধান কার্যালয় বলাকা ভবনের আইন উপবিভাগে প্রবেশ করেন। প্রায় আধা ঘণ্টা পর ১২টা ৪৭ মিনিটে তিনি একটি ব্যাগ হাতে বেরিয়ে যান।
বিমান কর্তৃপক্ষের দাবি, ওই সময় অফিসে কোনো কর্মদিবস ছিল না, সেটি ছিল সাপ্তাহিক ছুটির দিন। এ ছাড়া প্রবেশ ও বের হওয়ার সময় ‘ফেস আইডি’ না দিয়েই ভবনে প্রবেশ করেন তিনি।
১৩ অক্টোবর মো. আল মাসুদ খানকে দেওয়া কারণ দর্শানোর নোটিশে স্বাক্ষর করেন বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের পরিচালক (প্রশাসন ও মানবসম্পদ, অতিরিক্ত দায়িত্ব) মো. নওসাদ হোসেন।
নোটিশে বলা হয়েছে, আইন উপবিভাগ বিমান বাংলাদেশের একটি অতীব গোপনীয় দপ্তর, যেখানে সংরক্ষিত থাকে সংবেদনশীল দলিল ও মামলাসংক্রান্ত নথি।
বরখাস্ত থাকা অবস্থায় সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা সেখানে অনুমতি ছাড়া প্রবেশ করে একটি ব্যাগ নিয়ে বেরিয়ে আসেন, যা কর্তৃপক্ষের কাছে সন্দেহজনক বলে মনে হয়েছে।
নোটিশে বলা হয়েছে, ‘আপনার এহেন কর্মকাণ্ডের জন্য কেন বিভাগীয় ও আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না, তা অত্র পত্র প্রাপ্তির ৯৬ ঘণ্টার মধ্যে লিখিতভাবে ব্যাখ্যা প্রদান করতে হবে। অন্যথায় বিধিমোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, আল মাসুদ খানকে ৯ অক্টোবর সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। বরখাস্তের নির্দেশনায় তাঁকে স্পষ্টভাবে বলা হয়েছিল যে, তিনি বর্তমান ঠিকানায় অবস্থান করবেন এবং কেবল হাজিরা দেবেন। কিন্তু বরখাস্তকালে তিনি অফিসে প্রবেশ করে বাংলাদেশ বিমান করপোরেশন কর্মচারী (চাকরি) প্রবিধানমালা, ১৯৭৯-এর ৫৫ ধারা অনুযায়ী অসদাচরণ করেছেন, যা শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
উল্লেখ্য, ৯ অক্টোবর দুর্নীতি, তথ্য গোপন ও আদালতের নির্দেশনা অমান্যের অভিযোগে বিমানের উপমহাব্যবস্থাপক মাসুদ খানকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছিল।
সাময়িক বরখাস্তের অফিস আদেশে বলা হয়, ক্যাপ্টেন আলী রুবাইয়াত চৌধুরীর করা রিট পিটিশনের শুনানিতে আদালত বিমান কর্তৃপক্ষকে ৩০ দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছিলেন। কিন্তু আল মাসুদ খান কারণ দর্শানোর নোটিশের জবাব না দিয়ে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে প্রতিবেদন আদালতে জমা দেননি। এর ফলে আদালত অবমাননার পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়।
এ ছাড়া অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, ২০২৪ সালের ২১ নভেম্বর অফিস আদেশ অনুযায়ী তদন্ত প্রতিবেদন অফিসে জমা পড়লেও তিনি ‘দুর্নীতির আশ্রয় নিয়ে’ তা আদালতে জমা দেননি। একই সঙ্গে কন্টেম্প কেস ২৪০/২০২৫-সংক্রান্ত তথ্য গোপন করে প্রতি মাসে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো মামলার তালিকায় এ মামলা অন্তর্ভুক্ত করেননি, যা গুরুতর অসদাচরণ হিসেবে বিবেচিত হয়েছে।
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস করপোরেশন কর্মচারী (চাকরি) প্রবিধানমালা, ১৯৭৯-এর ৫৮ ধারায় প্রদত্ত ক্ষমতাবলে তাঁকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। সাময়িক বরখাস্তকালীন তিনি বিধি অনুযায়ী খোরপোশ ভাতা পাবেন এবং তাঁকে নিয়মিত হাজিরা দিতে হবে বলে আদেশে উল্লেখ করা হয়।
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের সাময়িক বরখাস্ত করা উপমহাব্যবস্থাপক (আইনবিষয়ক) মো. আল মাসুদ খানের বিরুদ্ধে অনুমতি ছাড়া অফিসে প্রবেশ ও গুরুত্বপূর্ণ নথি সরানোর অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় ওই কর্মকর্তাকে ‘কারণ দর্শানোর নোটিশ’ দিয়েছে বিমান কর্তৃপক্ষ।
জানা গেছে, সাময়িক বরখাস্ত থাকা উপমহাব্যবস্থাপক (আইনবিষয়ক) মো. আল মাসুদ খান গত শনিবার (১১ অক্টোবর) দুপুর ১২টা ১৪ মিনিটে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের প্রধান কার্যালয় বলাকা ভবনের আইন উপবিভাগে প্রবেশ করেন। প্রায় আধা ঘণ্টা পর ১২টা ৪৭ মিনিটে তিনি একটি ব্যাগ হাতে বেরিয়ে যান।
বিমান কর্তৃপক্ষের দাবি, ওই সময় অফিসে কোনো কর্মদিবস ছিল না, সেটি ছিল সাপ্তাহিক ছুটির দিন। এ ছাড়া প্রবেশ ও বের হওয়ার সময় ‘ফেস আইডি’ না দিয়েই ভবনে প্রবেশ করেন তিনি।
১৩ অক্টোবর মো. আল মাসুদ খানকে দেওয়া কারণ দর্শানোর নোটিশে স্বাক্ষর করেন বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের পরিচালক (প্রশাসন ও মানবসম্পদ, অতিরিক্ত দায়িত্ব) মো. নওসাদ হোসেন।
নোটিশে বলা হয়েছে, আইন উপবিভাগ বিমান বাংলাদেশের একটি অতীব গোপনীয় দপ্তর, যেখানে সংরক্ষিত থাকে সংবেদনশীল দলিল ও মামলাসংক্রান্ত নথি।
বরখাস্ত থাকা অবস্থায় সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা সেখানে অনুমতি ছাড়া প্রবেশ করে একটি ব্যাগ নিয়ে বেরিয়ে আসেন, যা কর্তৃপক্ষের কাছে সন্দেহজনক বলে মনে হয়েছে।
নোটিশে বলা হয়েছে, ‘আপনার এহেন কর্মকাণ্ডের জন্য কেন বিভাগীয় ও আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না, তা অত্র পত্র প্রাপ্তির ৯৬ ঘণ্টার মধ্যে লিখিতভাবে ব্যাখ্যা প্রদান করতে হবে। অন্যথায় বিধিমোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, আল মাসুদ খানকে ৯ অক্টোবর সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। বরখাস্তের নির্দেশনায় তাঁকে স্পষ্টভাবে বলা হয়েছিল যে, তিনি বর্তমান ঠিকানায় অবস্থান করবেন এবং কেবল হাজিরা দেবেন। কিন্তু বরখাস্তকালে তিনি অফিসে প্রবেশ করে বাংলাদেশ বিমান করপোরেশন কর্মচারী (চাকরি) প্রবিধানমালা, ১৯৭৯-এর ৫৫ ধারা অনুযায়ী অসদাচরণ করেছেন, যা শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
উল্লেখ্য, ৯ অক্টোবর দুর্নীতি, তথ্য গোপন ও আদালতের নির্দেশনা অমান্যের অভিযোগে বিমানের উপমহাব্যবস্থাপক মাসুদ খানকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছিল।
সাময়িক বরখাস্তের অফিস আদেশে বলা হয়, ক্যাপ্টেন আলী রুবাইয়াত চৌধুরীর করা রিট পিটিশনের শুনানিতে আদালত বিমান কর্তৃপক্ষকে ৩০ দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছিলেন। কিন্তু আল মাসুদ খান কারণ দর্শানোর নোটিশের জবাব না দিয়ে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে প্রতিবেদন আদালতে জমা দেননি। এর ফলে আদালত অবমাননার পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়।
এ ছাড়া অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, ২০২৪ সালের ২১ নভেম্বর অফিস আদেশ অনুযায়ী তদন্ত প্রতিবেদন অফিসে জমা পড়লেও তিনি ‘দুর্নীতির আশ্রয় নিয়ে’ তা আদালতে জমা দেননি। একই সঙ্গে কন্টেম্প কেস ২৪০/২০২৫-সংক্রান্ত তথ্য গোপন করে প্রতি মাসে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো মামলার তালিকায় এ মামলা অন্তর্ভুক্ত করেননি, যা গুরুতর অসদাচরণ হিসেবে বিবেচিত হয়েছে।
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস করপোরেশন কর্মচারী (চাকরি) প্রবিধানমালা, ১৯৭৯-এর ৫৮ ধারায় প্রদত্ত ক্ষমতাবলে তাঁকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। সাময়িক বরখাস্তকালীন তিনি বিধি অনুযায়ী খোরপোশ ভাতা পাবেন এবং তাঁকে নিয়মিত হাজিরা দিতে হবে বলে আদেশে উল্লেখ করা হয়।
চূড়ান্ত হয়েছে জুলাই জাতীয় সনদ-২০২৫। এখন সনদে রাজনৈতিক দলগুলোর স্বাক্ষর করাটাই শুধু বাকি। কিন্তু এই পর্যায়ে এসে শেষ সময়ের কাজটুকু সমাধা হওয়া নিয়েই দেখা দেয় গুরুতর সংকট। সংকট সমাধানের উপায় খুঁজতে গতকাল বুধবার দলগুলোর সঙ্গে জরুরি বৈঠক করে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। কমিশনের সভাপতি ও অন্তর্বর্তী সরকারের...
২ ঘণ্টা আগেবাণিজ্য-সংক্রান্ত বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য দেশে বিশেষায়িত বাণিজ্যিক আদালত প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। সুপ্রিম কোর্ট এ বিষয়ে প্রস্তাব ও আইনের খসড়া পাঠানোর পর আইন মন্ত্রণালয় এ নিয়ে কাজ করছে। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা আশা করছেন, বাণিজ্যিক আদালত গঠন করে আইন মন্ত্রণালয় শিগগির প্রজ্ঞাপন জারি করবে।
২ ঘণ্টা আগেপশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ে অফিস ৫০টি ভিআইপি পর্দা কিনতে ৪৪ লাখ ৪১ হাজার ৩০০ টাকা খরচ দেখিয়েছে। সেই হিসাবে একটি পর্দার দাম পড়েছে ৮৮ হাজার ৮২৬ টাকা। শুধু তাই নয়, বাজারে একটি তালার দাম ১৭৩ টাকা; অথচ সেটি কেনা হয়েছে ৫ হাজার ৫৯০ টাকায়। তেমনি ২৬০ টাকার বালতি ১ হাজার ৮৯০ এবং ৯৮ টাকার ঝাড়ু ১ হাজার ৪৪০ টাকায়...
৩ ঘণ্টা আগে২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারিতেই আগামী জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে এবং সেই লক্ষ্য সামনে রেখেই ১৭ অক্টোবর জুলাই জাতীয় সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠান হবে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। জুলাই সনদ বাস্তবায়নের উপায় নিয়ে আজ বুধবার রাতে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের ‘অতি জরুরি’
৫ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারিতেই আগামী জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে এবং সেই লক্ষ্য সামনে রেখে ১৭ অক্টোবর জুলাই জাতীয় সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠান হবে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। জুলাই সনদ বাস্তবায়নের উপায় নিয়ে আজ বুধবার রাতে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের ‘অতি জরুরি’ বৈঠকে তিনি এ সিদ্ধান্ত জানান।
জুলাই জাতীয় সনদ প্রণয়নের জন্য সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে ঐকমত্য কমিশনের সভাপতি ও সরকারপ্রধান বলেন, ‘নির্বাচনের কথা এসেছে, আমি সব সময় বলি, আবারও বলছি, বারবারই বলি, যত জায়গায় যাই... এই যে সম্মেলন করলাম, সেখানেও বলে এসেছি, ফেব্রুয়ারি মাসে নির্বাচন হবেই। এই যে ঐকমত্য কমিশনের যে সনদ, এটা সনদেরই (ফেব্রুয়ারি মাসে নির্বাচন) অংশ। এটার সঙ্গে এটা জড়িত। এই যে ঘোষণা আমরা করলাম, এটা আমাদের রক্ষা করতে হবে। এটা এমন না যে কথার কথা বলে ফেলেছি।... ওই রকম না। এটা ফেব্রুয়ারিতে হবে এবং ওই যে বারবার বলেছি, এটা উৎসবমুখর নির্বাচন হবে।’
রাজনৈতিক দলের নেতাদের উদ্দেশে ড. ইউনূস বলেন, ‘আপনারা যেমন সবাই মিলে সনদ তৈরি করেছেন, আমাদের সরকারের দায়িত্ব হলো, সবাই মিলে উৎসবমুখর নির্বাচনটা করে দেওয়া। তাহলেই আমাদের কাজ পরিণত হলো।’
সনদ ও নির্বাচন বিচ্ছিন্ন কোনো জিনিস নয় উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, উত্তরণটা কীভাবে হবে, এটা নিয়ে প্রশ্ন ছিল। সেটার উত্তরও জুলাই সনদে দেওয়া আছে। এই উত্তর নিয়ে সন্তোষভাবে উত্তরণটা করতে হবে। রাজনৈতিক দলগুলো যেভাবে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, সেভাবে রূপান্তরটি হবে।
ড. ইউনূস বলেন, ‘আমাদের পরিপূর্ণ প্রচেষ্টা হবে, আপনারা যত কষ্ট করে এগুলো রচনা করছেন, সেটা যেন আমরা বাস্তবে রূপান্তর করতে পারি। নির্বাচনের মাধ্যমে এবং আমাদের দৈনন্দিন রাজনৈতিক মাধ্যমে যেন আমরা সেটাকে রূপান্তর করতে পারি। এই হলো আমাদের আশা। আগামী শুক্রবার আমরা সেই আশাকে সারা জাতির সামনে নিয়ে আসব।’
১৭ অক্টোবর জুলাই সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠান নিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা উৎসবমুখরভাবে সেখানে যাব, এই দলিলে সই করব এবং উৎসব করব। সবাই, সারা জাতি এটায় শরিক হবে। আপনারা তাদের সামনের সারির মানুষ, যাঁরা প্রকৃত সই করছেন। সারা দেশের মানুষ চিন্তার মধ্যে, তাদের ভাবনার মধ্যে আপনাদের সঙ্গে সই করছে।...জাতির জন্য এটা স্মরণীয় হয়ে থাকবে।’
এর আগে বক্তব্যের শুরুতে রাজনৈতিক দল ও ঐকমত্য কমিশনকে একান্তভাবে ধন্যবাদ দেওয়ার জন্য আজ এই বৈঠকে যোগ দিয়েছেন বলে জানান প্রধান উপদেষ্টা। বন্ধুত্বপূর্ণ পরিবেশে, কঠিন কঠিন বিষয়ে আলোচনা করা এবং সন্তোষজনকভাবে রাজনৈতিক দল ও ঐকমত্য কমিশন মিলে এর সমাপ্তি আনায় তিনি ব্যক্তিগতভাবে তাদের ধন্যবাদ জানান। অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘যে অসম্ভবকে আপনারা সম্ভব করেছেন, এটা শুধু বাংলাদেশের ইতিহাসে নয়, পৃথিবীর পলিটিক্যাল সিস্টেমের (রাজনৈতিক ব্যবস্থার) ইতিহাসে উল্লেখযোগ্য হয়ে থাকবে।’
২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারিতেই আগামী জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে এবং সেই লক্ষ্য সামনে রেখে ১৭ অক্টোবর জুলাই জাতীয় সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠান হবে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। জুলাই সনদ বাস্তবায়নের উপায় নিয়ে আজ বুধবার রাতে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের ‘অতি জরুরি’ বৈঠকে তিনি এ সিদ্ধান্ত জানান।
জুলাই জাতীয় সনদ প্রণয়নের জন্য সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে ঐকমত্য কমিশনের সভাপতি ও সরকারপ্রধান বলেন, ‘নির্বাচনের কথা এসেছে, আমি সব সময় বলি, আবারও বলছি, বারবারই বলি, যত জায়গায় যাই... এই যে সম্মেলন করলাম, সেখানেও বলে এসেছি, ফেব্রুয়ারি মাসে নির্বাচন হবেই। এই যে ঐকমত্য কমিশনের যে সনদ, এটা সনদেরই (ফেব্রুয়ারি মাসে নির্বাচন) অংশ। এটার সঙ্গে এটা জড়িত। এই যে ঘোষণা আমরা করলাম, এটা আমাদের রক্ষা করতে হবে। এটা এমন না যে কথার কথা বলে ফেলেছি।... ওই রকম না। এটা ফেব্রুয়ারিতে হবে এবং ওই যে বারবার বলেছি, এটা উৎসবমুখর নির্বাচন হবে।’
রাজনৈতিক দলের নেতাদের উদ্দেশে ড. ইউনূস বলেন, ‘আপনারা যেমন সবাই মিলে সনদ তৈরি করেছেন, আমাদের সরকারের দায়িত্ব হলো, সবাই মিলে উৎসবমুখর নির্বাচনটা করে দেওয়া। তাহলেই আমাদের কাজ পরিণত হলো।’
সনদ ও নির্বাচন বিচ্ছিন্ন কোনো জিনিস নয় উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, উত্তরণটা কীভাবে হবে, এটা নিয়ে প্রশ্ন ছিল। সেটার উত্তরও জুলাই সনদে দেওয়া আছে। এই উত্তর নিয়ে সন্তোষভাবে উত্তরণটা করতে হবে। রাজনৈতিক দলগুলো যেভাবে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, সেভাবে রূপান্তরটি হবে।
ড. ইউনূস বলেন, ‘আমাদের পরিপূর্ণ প্রচেষ্টা হবে, আপনারা যত কষ্ট করে এগুলো রচনা করছেন, সেটা যেন আমরা বাস্তবে রূপান্তর করতে পারি। নির্বাচনের মাধ্যমে এবং আমাদের দৈনন্দিন রাজনৈতিক মাধ্যমে যেন আমরা সেটাকে রূপান্তর করতে পারি। এই হলো আমাদের আশা। আগামী শুক্রবার আমরা সেই আশাকে সারা জাতির সামনে নিয়ে আসব।’
১৭ অক্টোবর জুলাই সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠান নিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা উৎসবমুখরভাবে সেখানে যাব, এই দলিলে সই করব এবং উৎসব করব। সবাই, সারা জাতি এটায় শরিক হবে। আপনারা তাদের সামনের সারির মানুষ, যাঁরা প্রকৃত সই করছেন। সারা দেশের মানুষ চিন্তার মধ্যে, তাদের ভাবনার মধ্যে আপনাদের সঙ্গে সই করছে।...জাতির জন্য এটা স্মরণীয় হয়ে থাকবে।’
এর আগে বক্তব্যের শুরুতে রাজনৈতিক দল ও ঐকমত্য কমিশনকে একান্তভাবে ধন্যবাদ দেওয়ার জন্য আজ এই বৈঠকে যোগ দিয়েছেন বলে জানান প্রধান উপদেষ্টা। বন্ধুত্বপূর্ণ পরিবেশে, কঠিন কঠিন বিষয়ে আলোচনা করা এবং সন্তোষজনকভাবে রাজনৈতিক দল ও ঐকমত্য কমিশন মিলে এর সমাপ্তি আনায় তিনি ব্যক্তিগতভাবে তাদের ধন্যবাদ জানান। অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘যে অসম্ভবকে আপনারা সম্ভব করেছেন, এটা শুধু বাংলাদেশের ইতিহাসে নয়, পৃথিবীর পলিটিক্যাল সিস্টেমের (রাজনৈতিক ব্যবস্থার) ইতিহাসে উল্লেখযোগ্য হয়ে থাকবে।’
চূড়ান্ত হয়েছে জুলাই জাতীয় সনদ-২০২৫। এখন সনদে রাজনৈতিক দলগুলোর স্বাক্ষর করাটাই শুধু বাকি। কিন্তু এই পর্যায়ে এসে শেষ সময়ের কাজটুকু সমাধা হওয়া নিয়েই দেখা দেয় গুরুতর সংকট। সংকট সমাধানের উপায় খুঁজতে গতকাল বুধবার দলগুলোর সঙ্গে জরুরি বৈঠক করে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। কমিশনের সভাপতি ও অন্তর্বর্তী সরকারের...
২ ঘণ্টা আগেবাণিজ্য-সংক্রান্ত বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য দেশে বিশেষায়িত বাণিজ্যিক আদালত প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। সুপ্রিম কোর্ট এ বিষয়ে প্রস্তাব ও আইনের খসড়া পাঠানোর পর আইন মন্ত্রণালয় এ নিয়ে কাজ করছে। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা আশা করছেন, বাণিজ্যিক আদালত গঠন করে আইন মন্ত্রণালয় শিগগির প্রজ্ঞাপন জারি করবে।
২ ঘণ্টা আগেপশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ে অফিস ৫০টি ভিআইপি পর্দা কিনতে ৪৪ লাখ ৪১ হাজার ৩০০ টাকা খরচ দেখিয়েছে। সেই হিসাবে একটি পর্দার দাম পড়েছে ৮৮ হাজার ৮২৬ টাকা। শুধু তাই নয়, বাজারে একটি তালার দাম ১৭৩ টাকা; অথচ সেটি কেনা হয়েছে ৫ হাজার ৫৯০ টাকায়। তেমনি ২৬০ টাকার বালতি ১ হাজার ৮৯০ এবং ৯৮ টাকার ঝাড়ু ১ হাজার ৪৪০ টাকায়...
৩ ঘণ্টা আগেবিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের সাময়িক বরখাস্ত করা উপমহাব্যবস্থাপক (আইনবিষয়ক) মো. আল মাসুদ খানের বিরুদ্ধে অনুমতি ছাড়া অফিসে প্রবেশ ও গুরুত্বপূর্ণ নথি সরানোর অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় ওই কর্মকর্তাকে ‘কারণ দর্শানোর নোটিশ’ দিয়েছে বিমান কর্তৃপক্ষ।
৩ ঘণ্টা আগে