Ajker Patrika

উপহারের ঘর ফেরত দিতে চায় ৮ পরিবার

কাজল সরকার, হবিগঞ্জ
আপডেট : ১৫ জুলাই ২০২১, ২৩: ২৩
উপহারের ঘর ফেরত দিতে চায় ৮ পরিবার

চলতি বছরের ২৩ জানুয়ারি চুনারুঘাট উপজেলার গাজীপুর ইউনিয়নের ভূমিহীন ৭৩টি পরিবারের হাতে ঘরের চাবি ও কাগজপত্র হস্তান্তর করা হয়। কিন্তু ছয় মাস না যেতেই ঘর পাওয়া আটটি পরিবার তাদের জন্য বরাদ্দ করা ঘর ফেরত দিতে প্রশাসনের কাছে আবেদন করেছে। তারা মনে করে, এই ঘর বসবাসের উপযুক্ত না। মুজিববর্ষের উপহার হিসেবে প্রধানমন্ত্রী এসব ঘর সারা দেশে ভূমিহীনদের হাতে তুলে দিয়েছেন।

উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) মিল্টন পাল ঘর ফেরত দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তের কাছাকাছি ইকরতলী এলাকায় আশ্রয়ণ প্রকল্পে ৭৪টি ঘর নির্মাণ করে সরকার। ৭৩টি হস্তান্তর করা হয়।

আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাসিন্দা আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা আগে কালেঙ্গা বনে থাকতাম। সেখানে অনেক কাজ ছিল। বাগানে কাজ করতে পারতাম, জুমচাষ করতাম, লাকড়ি কুড়াতাম। কিন্তু এখানে ঘর পেলেও বাচ্চাকাচ্চা নিয়ে না খেয়ে থাকতে হচ্ছে। ১০ কিলোমিটারের মধ্যে কোনো কাজ নেই। পানির সমস্যা। ছয় মাস হয়ে গেছে বিদ্যুৎ নেই।’ 

আমিনুল বলেন, ‘বিদ্যুতের জন্য আমাদের কাছ থেকে ২ হাজার করে টাকা নিয়েছে। কিন্তু বিদ্যুৎ দিচ্ছে না। তাই অনেকে চলে গেছে। আমরা চলে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’ 
আরেক বাসিন্দা আফিয়া বেগম বলেন, ‘এখানে কাজকাম নাই। বিদ্যুৎ নাই। পানির সমস্যা। কোনো নিরাপত্তা নাই। বখাটে পুলাপান দিনরাতে এখানে বিভিন্ন অসামাজিক কাজ করে।’ তিনি বলেন, ‘অন্য সব বাদ দিলাম, বাজার করার লাগি তিন কিলোমিটার দূরে যাওয়া লাগে। তিন কিলোমিটারের ভেতরে একটা লবণের প্যাকেটও কেনা যায় না। এখানে আমরা কীভাবে থাকব?’

গাজীপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হুমায়ুন কবির খান বলেন, ‘এখানে সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো কর্মসংস্থান নেই। যে কারণে এখানে কেউ থাকতে চান না। ইতিমধ্যে ৮–৯টি পরিবার উপজেলা প্রশাসনের কাছে ঘরের চাবি ও কাগজপত্র হস্তান্তর করে দিয়েছে। তবে এ বিষয়ে উপজেলা প্রশাসনই ভালো বলতে পারবে।’

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সত্যজিৎ রায় দাশ বলেন, ‘এখানের সব সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করা হচ্ছে। নতুন করে কয়েকটি টিউবওয়েল বসানো হয়েছে। বিদ্যুতের জন্য মিটারসহ সংযোগ দিতে সরকারিভাবে চিঠি এসেছে। খুব শিগগির প্রত্যেক সংযোগ দেওয়া হবে। সেখানে খাসজমিতে কৃষি, হাঁস–মুরগি পালন, মাছ চাষ করার সুযোগ করে দেওয়ার ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

মিল্টন পাল বলেন, ‘বেশ কয়েকটি পরিবার ঘর ফেরত নিতে আমাদের কাছে আবেদন করেছে। আমার তাদের আবেদন গ্রহণ করেছি। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’ 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত