Ajker Patrika

বিমানের আকাশে দুর্যোগের ঘনঘটা

  • গত এক মাসে অন্তত ৯টি উড়োজাহাজে বিভিন্ন ধরনের যান্ত্রিক ত্রুটি।
  • প্রশ্ন উঠেছে বিমানের নিরাপত্তা ও রক্ষণাবেক্ষণ প্রক্রিয়া নিয়ে।
মনজুরুল ইসলাম ঢাকা
আপডেট : ১২ আগস্ট ২০২৫, ১১: ৩৯
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের একটি উড়োজাহাজ। ফাইল ছবি
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের একটি উড়োজাহাজ। ফাইল ছবি

আকাশে যেন দুর্যোগের মেঘ। বিপদ হেঁটে চলেছে পাশ ঘেঁষে, আর অল্পের জন্য রক্ষা পেয়ে যাচ্ছে বিমান। উড়ন্ত উড়োজাহাজে যেভাবে একের পর এক যান্ত্রিক ত্রুটি ধরা পড়ছে, তাতে যেকোনো সময় বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।

গত এক মাসে উড়াল দেওয়ার আগে-পরে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের অন্তত ৯টি উড়োজাহাজে বিভিন্ন ধরনের যান্ত্রিক ত্রুটি ধরা পড়েছে। তবে আশার কথা হলো, কিছু ক্ষেত্রে বড় ধরনের দুর্ঘটনা এড়ানো গেছে অলৌকিকভাবে। যাত্রী ও ক্রুরা নিরাপদ থাকেলেও ঘন ঘন যান্ত্রিক ত্রুটির এসব ঘটনায় রাষ্ট্রায়ত্ত এই আকাশ পরিবহন সংস্থার নিরাপত্তার মান ও রক্ষণাবেক্ষণ প্রক্রিয়া নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন উঠেছে।

বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের তথ্য বলছে, গত ৩০ দিনে ঢাকাসহ আবুধাবি, ব্যাংকক, সিঙ্গাপুর ও কুয়ালালামপুর রুটের একাধিক আন্তর্জাতিক ফ্লাইটে মাঝ আকাশে যান্ত্রিক সমস্যা দেখা দিয়েছে। কোথাও টয়লেটের ফ্লাশ বিকল হয়ে ফেরত আসতে হয়েছে, কোথাও ইঞ্জিনে ত্রুটি ধরা পড়ে জরুরি অবতরণ করতে হয়েছে। কিছু ফ্লাইট যাত্রা শুরু করার পরই মিয়ানমার বা ভারতের আকাশ থেকে ফিরে আসে, আবার কিছু ফ্লাইট উড্ডয়নের আগে রানওয়েতে আটকে যায়। এর ফলে শত শত যাত্রীকে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বিমানবন্দরে অপেক্ষা করতে হয়েছে, অনেকের সংযোগ ফ্লাইট মিস হয়েছে, কেউ কেউ গন্তব্যে যেতে পারেননি।

এই অবস্থায় অভিযোগ উঠেছে, বিমানের হ্যাঙ্গারে কর্মরত প্রকৌশলীরা উড়োজাহাজের রক্ষণাবেক্ষণে দায়সারা কাজ করছেন। একাধিক সূত্র জানায়, নির্ধারিত ‘চেক’ ও ‘সার্ভিসিং’ সঠিকভাবে না হওয়া, অভিজ্ঞ প্রকৌশলীর ঘাটতি এবং যন্ত্রাংশের অভাবে ত্রুটি বেড়ে চলছে।

একের পর এক যান্ত্রিক ত্রুটির ঘটনায় চলতি মাসে একাধিক তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বিমান কর্তৃপক্ষ। সেই সঙ্গে যেকোনো উড়োজাহাজ উড্ডয়নের আগে পূর্ণাঙ্গ কারিগরি পরীক্ষার বাধ্যবাধকতা আরোপ করা হয়েছে। সর্বশেষ গত রোববার (১০ আগস্ট) বিমানের প্রকৌশল বিভাগের সঙ্গে একাধিক বৈঠক করেন এয়ারলাইনসটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক। কিন্তু এসব বৈঠক ও জরুরি নির্দেশনা কোনো কাজে আসছে না। উল্টো রোববার উড়োজাহাজের ডানার ফ্ল্যাপে ত্রুটির কারণে রোমের লিওনার্দো দ্য ভিঞ্চি বিমানবন্দরে ‘গ্রাউন্ডেড’ করতে হয় বিমানের একটি বোয়িং ড্রিমলাইনার।

প্রকৌশলীরা উড়োজাহাজটির ডানার ফ্ল্যাপে ত্রুটি শনাক্ত করেন, যা উড্ডয়ন নিয়ন্ত্রণে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ যন্ত্রাংশ। লন্ডন থেকে প্রয়োজনীয় যন্ত্রাংশ পাঠানোর পর মেরামত করে একই উড়োজাহাজে যাত্রীদের দেশে ফেরানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বিকল্প কোনো ফ্লাইটের ব্যবস্থা করতে না পেরে ২৬২ যাত্রীকে বিমানের খরচে হোটেলে রাখা হয়। অন্যদিকে রোম বিমানবন্দরে অতিরিক্ত অবস্থানের জন্য বিমানকে অতিরিক্ত ফি দিতে হবে।

এই ঘটনার পরদিন গতকাল সোমবার ড‍্যাস-৮ মডেলের একটি উড়োজাহাজের কেবিনের তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়ায় ২০ মিনিট উড়ে ঢাকায় ফিরে আসে চট্টগ্রামগামী একটি অভ্যন্তরীণ ফ্লাইট। পরে যাত্রীদের অন্য একটি উড়োজাহাজে চট্টগ্রামে পাঠানো হয়।

অতি সাম্প্রতিক এ দুটি ঘটনা ছাড়াও চলতি আগস্ট মাসে আরও তিনটি উড়োজাহাজে যান্ত্রিক ত্রুটিতে পড়ে বিমান। ৬ আগস্ট ব্যাংককগামী একটি বোয়িং ৭৩৭ ইঞ্জিনে অতিরিক্ত কম্পন অনুভূত হওয়ায় মিয়ানমারের আকাশ থেকে ফিরে আসে। ৭ আগস্ট আবুধাবিগামী একটি বোয়িং তিনটি টয়লেটের ফ্লাশ বিকল হওয়ায় ১ ঘণ্টা উড়ে ঢাকায় ফিরে আসে। ৯ আগস্ট সিঙ্গাপুরের চাঙ্গি বিমানবন্দরে পৌঁছানোর পর একটি বোয়িংয়ে সমস্যা দেখা দিলে তা সারিয়ে ২ ঘণ্টা বিলম্বে ঢাকায় ফেরানো হয়।

বিমানের প্রকৌশল বিভাগের তথ্য বলছে, ৬ আগস্ট মিয়ানমারের আকাশ থেকে ফিরে আসা ব্যাংককগামী বোয়িং ৭৩৭ উড়োজাহাজটি প্রায় আট মাস হ্যাঙ্গারে রেখে মেরামত করা হয়েছিল। অভিযোগ রয়েছে, মেরামতের পর যথাযথ মান নিয়ন্ত্রণ পরীক্ষা ছাড়া সেটিকে উড্ডয়নের জন্য প্রস্তুত ঘোষণা করা হয় এবং আকাশে ওঠার পরই নতুন করে ত্রুটি দেখা দেয়।

বিশ্লেষকেরা বলছেন, বিমানের সাম্প্রতিক ধারাবাহিক যান্ত্রিক ত্রুটিগুলো কোনো আকস্মিক দুর্ঘটনা নয়; বরং এটি দীর্ঘদিন ধরে অবহেলিত রক্ষণাবেক্ষণ-ব্যবস্থার প্রতিফলন। তাঁদের পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, বহরের উড়োজাহাজগুলো নিয়মিত ও পূর্ণাঙ্গভাবে পর্যবেক্ষণ এবং মান নিয়ন্ত্রণ পরীক্ষার আওতায় না আসায় ছোটখাটো কারিগরি সমস্যা সময়মতো ধরা পড়ছে না। ফলে এসব ত্রুটি ধীরে ধীরে জটিল আকার ধারণ করে উড্ডয়ন-নিরাপত্তাকে ঝুঁকির মুখে ফেলছে। বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে বলেছেন, এমন পরিস্থিতি অব্যাহত থাকলে বড় ধরনের বিপর্যয়ের আশঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া যায় না, যা শুধু আর্থিক ক্ষতিই নয়, যাত্রীদের জীবনহানির ঝুঁকিও বহুগুণ বাড়িয়ে দেবে।

এ প্রসঙ্গে এভিয়েশন বিশেষজ্ঞ ও বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের পরিচালনা পর্ষদের সাবেক সদস্য কাজী ওয়াহিদুল আলম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ধারাবাহিক যান্ত্রিক ত্রুটির এসব ঘটনা বিমানের ভাবমূর্তি আরও ক্ষতিগ্রস্ত করছে। বাজারে যেখানে প্রতিষ্ঠানটির সুনাম পুনর্গঠনের প্রয়োজন, সেখানে বারবার এই বিপত্তি যাত্রীদের আস্থা কমিয়ে দিচ্ছে। যদিও বিমানের ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ দক্ষতার সঙ্গে প্রতিটি ত্রুটি সমাধানের চেষ্টা করছে। তিনি বলেন, বিমানের বহরের বেশির ভাগ উড়োজাহাজ দীর্ঘদিন ধরে ব্যবহৃত হচ্ছে। ফলে বয়সজনিত কারণে নানা ধরনের ত্রুটি ও প্রযুক্তিগত বিচ্যুতি নিয়মিতভাবে দেখা দিচ্ছে। এর ফলে যাত্রীরা বিড়ম্বনার শিকার হচ্ছেন এবং বাজারে নেতিবাচক প্রভাব আরও গভীর হচ্ছে।

গত জুলাই মাসেও বিমানের উড়োজাহাজে ধারাবাহিকভাবে বেশ কয়েকটি যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দিয়েছে। ১৬ জুলাই দুবাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ‘চাকায় ত্রুটি’র কারণে একটি বোয়িং ৭৮৭-৯ ড্রিমলাইনার গ্রাউন্ডেড হয়, যা মেরামতের পর ৩০ ঘণ্টা বিলম্বে দেশে ফেরে। ২৪ জুলাই দুবাই থেকে আসা আরেকটি ড্রিমলাইনারের ল্যান্ডিং গিয়ারের দরজা ঠিকভাবে বন্ধ না হওয়ায় সেটি চট্টগ্রামে ফিরে আসে এবং ত্রুটি সারিয়ে ২ ঘণ্টা পর আবার ঢাকায় যায়। ২৮ জুলাই দাম্মামগামী একটি বোয়িং ৭৭৭-ইআর কেবিন প্রেশারের ত্রুটির সংকেত পেয়ে ঢাকায় ফিরে আসে, পরে যাত্রীদের অন্য উড়োজাহাজে পাঠানো হয়। ৩০ জুলাই শারজা বিমানবন্দরে যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে একটি বোয়িং ৭৩৭ ছয় ঘণ্টা আটকে থাকে।

বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের জনসংযোগ বিভাগের মহাব্যবস্থাপক (জিএম) এ বি এম রওশন কবীর বলেন, যাত্রীদের সুরক্ষা ও নিরাপত্তাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস পরিচালিত হচ্ছে। কোনো উড়োজাহাজে সামান্যতম ত্রুটি শনাক্ত হলে তা শতভাগ সমাধান না হওয়া পর্যন্ত সেটি আকাশে ওড়ানো হয় না। তিনি আরও বলেন, বিমানের দক্ষ মেইনটেন্যান্স টিম দ্রুত যেকোনো কারিগরি সমস্যা মেরামত করে থাকে এবং বিলম্ব হলে যাত্রীদের হোটেলে থাকার ব্যবস্থা, খাবার সরবরাহসহ নিয়মিত সেবা নিশ্চিত করা হয়।

বর্তমানে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের বহরে মোট ২১টি উড়োজাহাজ রয়েছে, যার মধ্যে ১৬টি বোয়িং। এগুলোর মধ্যে ছয়টি বোয়িং ৭৮৭ ড্রিমলাইনার, চারটি বোয়িং ৭৭৭-৩০০ ইআর এবং ছয়টি ন্যারোবডি বোয়িং ৭৩৭। এ ছাড়া স্বল্প দূরত্বের রুটে চলাচলের জন্য বহরে পাঁচটি ড্যাশ-৮০০ উড়োজাহাজ রয়েছে। তবে এসব উড়োজাহাজের বড় একটি অংশ প্রায়ই যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে বিকল হয়ে থাকে, যা সরাসরি ফ্লাইট শিডিউলে বিঘ্ন ঘটায় এবং যাত্রীদের ভোগান্তি বাড়ায়।

বহর প্রসঙ্গে বিমানের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, যাত্রীদের এই ভোগান্তি কমাতে দুটি নতুন উড়োজাহাজ লিজ নেওয়ার প্রক্রিয়া প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে এবং আরও কয়েকটি উড়োজাহাজ কেনার পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হয়েছে। লিজ নেওয়া উড়োজাহাজগুলো দ্রুতই বহরে যুক্ত হবে; তবে ক্রয়প্রক্রিয়া সম্পন্ন হতে কিছুটা সময় লাগবে। তাঁর মতে, নতুন উড়োজাহাজ সংযোজন করা হলে বহরের সক্ষমতা বাড়বে এবং ফ্লাইট শিডিউল বিঘ্নিত হওয়ার প্রবণতা উল্লেখযোগ্যভাবে কমে আসবে।

প্রসঙ্গত, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় দুর্ঘটনা ঘটে ১৯৮৪ সালে। ওই বছরের ৫ আগস্ট চট্টগ্রাম বিমানবন্দর থেকে ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে আসা একটি ফকার এফ-২৭ উড়োজাহাজ দুর্ঘটনায় পড়ে। দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে কয়েকবার অবতরণের চেষ্টার পর রানওয়ের ৫০০ মিটার আগে মুখ থুবড়ে পড়ে উড়োজাহাজটি। ওই দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান ৪৯ জন। এটাই বিমানের বাণিজ্যিক ফ্লাইটের একমাত্র বড় ধরনের দুর্ঘটনা, যেখানে প্রাণহানির ঘটনা ঘটে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

টিভির ব্রেকিং নিউজে এনসিপির প্রার্থী তালিকা নিয়ে যা বললেন তাজনুভা জাবীন

জন্মস্থানে প্রথমবার ভোটের লড়াইয়ে নামছেন খালেদা জিয়া

দলে দলে নিউজিল্যান্ড ছাড়ছে মানুষ, কিন্তু অস্ট্রেলিয়ায় কেন যাচ্ছে

কার্গো ভিলেজে আগুন: বিমানবন্দরের ভল্ট ভেঙে চুরি হলো ৭ আগ্নেয়াস্ত্র

৭-৮ নভেম্বর প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করতে পারে এনসিপি

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

জোটে নিজ দলীয় প্রতীকে নির্বাচনের বিধান রেখে আরপিও অধ্যাদেশ জারি

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ০৪ নভেম্বর ২০২৫, ১০: ০১
জোটে নিজ দলীয় প্রতীকে নির্বাচনের বিধান রেখে আরপিও অধ্যাদেশ জারি

গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) সংশোধন করে সরকার অধ্যাদেশ জারি করেছে। আজ মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) সকালে আইন মন্ত্রণালয় সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে। তবে আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের লেজিসলেটিভ ও সংসদবিষয়ক বিভাগ থেকে গতকাল সোমবার অধ্যাদেশ জারি করা হয়।

সংশোধিত আরপিওতে জোটবদ্ধ নির্বাচনের ক্ষেত্রে প্রতীক পছন্দের বিষয়ে বলা হয়েছে, দুই বা ততোধিক নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের সমন্বয়ের ক্ষেত্রে যারা নির্বাচনে যৌথ প্রার্থী মনোনীত করতে সম্মত হয়েছে, তারা প্রার্থী যে দলের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট, সেই রাজনৈতিক দলের জন্য সংরক্ষিত প্রতীক বরাদ্দ করবে।

প্রস্তাবিত আরপিওতে জোট প্রার্থীর নিজস্ব দলীয় প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার বাধ্যবাধকতা রাখা হয়েছিল। এ বিষয়টি নিয়ে বিএনপি তীব্র আপত্তি জানায়। এটি সংশোধনের আবেদন জানিয়ে আনুষ্ঠানিক চিঠিও দিয়েছিল তারা। তবে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) ও জামায়াতে ইসলামী বিধানটি রাখার পক্ষে।

আরপিওতে এবার ‘না’ ভোটের বিধানও যুক্ত করা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, যাচাই-বাছাই বা পর্যালোচনার পর একটি আসন থেকে সদস্য হিসেবে নির্বাচনের জন্য মাত্র একজন ব্যক্তি বৈধভাবে মনোনীত থাকেন অথবা প্রার্থিতা প্রত্যাহারের পর মাত্র একজন প্রার্থী অবশিষ্ট থাকেন, সে ক্ষেত্রে নির্বাচনটি একক প্রার্থী এবং 'না ভোট' (No Vote) বিকল্পের মধ্যে অনুষ্ঠিত হবে।

যদি প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী কর্তৃক প্রাপ্ত ভোটের সংখ্যা 'না ভোট'-এর সংখ্যা অপেক্ষা বেশি হয়, তাহলে রিটার্নিং কর্মকর্তা জনবিজ্ঞপ্তি দ্বারা ওই প্রার্থীকে নির্বাচিত বলে ঘোষণা করবেন।

যদি 'না ভোট'-এর সংখ্যা প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী কর্তৃক প্রাপ্ত ভোটের সংখ্যা অপেক্ষা বেশি হয়, তবে নতুন সময়সূচি ঘোষণা করে সেই নির্বাচনী এলাকায় নতুন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

টিভির ব্রেকিং নিউজে এনসিপির প্রার্থী তালিকা নিয়ে যা বললেন তাজনুভা জাবীন

জন্মস্থানে প্রথমবার ভোটের লড়াইয়ে নামছেন খালেদা জিয়া

দলে দলে নিউজিল্যান্ড ছাড়ছে মানুষ, কিন্তু অস্ট্রেলিয়ায় কেন যাচ্ছে

কার্গো ভিলেজে আগুন: বিমানবন্দরের ভল্ট ভেঙে চুরি হলো ৭ আগ্নেয়াস্ত্র

৭-৮ নভেম্বর প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করতে পারে এনসিপি

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বিচার বিভাগ: পদোন্নতির প্যানেলে ১১ শতাধিক কর্মকর্তা

  • সুপ্রিম কোর্টের ফুলকোর্ট সভায় উঠছে আজ।
  • প্যানেলে আছেন দুদকে অনুসন্ধান চলা কর্মকর্তাও।
  • একসঙ্গে এত কর্মকর্তা আগে প্যানেলভুক্ত হননি।
  • ‘নতুন পদ ও আদালতের কারণে সংখ্যা বেড়েছে।’
এস এম নূর মোহাম্মদ, ঢাকা  
আপডেট : ০৪ নভেম্বর ২০২৫, ১১: ২৬
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

আইন মন্ত্রণালয় থেকে সম্প্রতি ১১ শতাধিক বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তাকে পদোন্নতির প্যানেলভুক্ত করার প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। প্রস্তাবটি অনুমোদনের জন্য আজ মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টের ফুলকোর্ট সভায় উঠছে। এ সভায় বিষয়টি অনুমোদিত হলে তা আবারও পাঠানো হবে আইন মন্ত্রণালয়ে। এরপর সময়ে সময়ে ওই প্যানেল থেকে পদোন্নতি দেওয়া হবে।

বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তাদের পদোন্নতির জন্য প্যানেল তৈরি করে রাখা হয়। পদ খালি হলে পর্যায়ক্রমে শূন্য পদে পদোন্নতি দেওয়া হয় ওই প্যানেল থেকে। সুপ্রিম কোর্টের আপিল ও হাইকোর্ট বিভাগের সব বিচারপতির অংশগ্রহণে আজ ফুলকোর্ট সভা ডেকেছেন প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ। বেলা ৩টায় সুপ্রিম কোর্টের কনফারেন্স রুমে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।

সুপ্রিম কোর্টে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পদোন্নতির জন্য প্যানেলে রয়েছেন অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ থেকে জেলা ও দায়রা জজ পদের জন্য ৩৪৫ জন, যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ থেকে অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ পদে ২০৭ জন, সিনিয়র সহকারী জজ থেকে যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ পদে ৫৫১ জন। সব মিলিয়ে এবারের পদোন্নতির প্যানেলে ১ হাজার ১০৩ জন বিচারিক কর্মকর্তার নাম রয়েছে।

এবারের পদোন্নতির প্যানেলে কয়েকজন বিতর্কিত বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তার নাম রয়েছে বলে জানিয়েছে একটি সূত্র। ওই কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনে অনুসন্ধান চলমান রয়েছে। তাঁদের পদোন্নতির বিষয়ে অবশ্য চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন ফুলকোর্ট সভা। ফুলকোর্ট সভার মতামত অনুযায়ী পদোন্নতির বিষয়ে পদক্ষেপ নেবে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়।

এবারের মতো এত বেশিসংখ্যক কর্মকর্তার নাম কখনো একসঙ্গে পদোন্নতির প্যানেলে পাঠানো হয়নি বলে জানিয়েছেন একাধিক বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তা। এই বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মো. আমিরুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, সম্প্রতি ১৯১টি জেলা জজের পদ সৃষ্টি হয়েছে। এ ছাড়া দেওয়ানি ও ফৌজদারি আদালত পৃথক করায় নতুন আদালত সৃষ্টি হয়েছে। এ কারণেই একসঙ্গে এত বিচারকের পদোন্নতির জন্য প্যানেল করে রাখতে হচ্ছে।

এ নিয়ে জানতে চাইলে সুপ্রিম কোর্টের স্পেশাল অফিসার মো. মোয়াজ্জেম হোছাইনও কিছুটা অনুরূপ জবাব দেন। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, এবারের ফুলকোর্টে ২০২৬ সালের ক্যালেন্ডার ও পদোন্নতি-সংক্রান্ত কিছু বিষয় অনুমোদনের জন্য রয়েছে। ...আড়াই শর মতো নতুন পদ সৃষ্টি হয়েছে। এ ছাড়া বিভিন্ন ব্যাচের একসঙ্গে পদোন্নতির জন্য প্রস্তাব এসেছে। এ কারণে সংখ্যাটা বেশি মনে হচ্ছে। তবে এটি স্বাভাবিক।’

সব মন্ত্রণালয়ে পদোন্নতির জন্য ডিপিসি (বিভাগীয় পদোন্নতি কমিটি) থাকে। এ কমিটি পদোন্নতির প্যানেল চূড়ান্ত করার পর তা প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় হয়ে রাষ্ট্রপতির দপ্তরে যায়। রাষ্ট্রপতি অনুমোদন দিলে এক দিনেই প্যানেলের সবার পদোন্নতির আদেশ জারি করা হয়। তবে বিচারকদের ক্ষেত্রে প্যানেল চূড়ান্ত করার পর তা সুপ্রিম কোর্টে পাঠানো হয়। বাছাই কমিটির মাধ্যমে বিষয়টি সুপ্রিম কোর্টের ফুলকোর্ট সভায় ওঠে। সভায় অনুমোদন দেওয়ার পর তা আবার মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। মন্ত্রণালয় থেকে তা প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় হয়ে রাষ্ট্রপতির দপ্তরে যায়। রাষ্ট্রপতি অনুমোদন দিলে ওই প্যানেল আইন মন্ত্রণালয়ে সংরক্ষিত থাকে। এরপর পদ খালি হওয়া সাপেক্ষে সময়ে সময়ে আদেশ জারি করা হয়।

বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস বিধিমালা ২০০৭ অনুযায়ী সিনিয়র সহকারী জজ পদে পদোন্নতির জন্য সহকারী জজদের এই পদে চার বছর দায়িত্ব পালনের শর্ত পূরণ করতে হয়। সিনিয়র সহকারী জজদের যুগ্ম জেলা জজ পদে পদোন্নতির জন্য দুই বছর, যুগ্ম জেলা জজ থেকে অতিরিক্ত জেলা জজ পদে পদোন্নতির জন্য দুই বছর এবং অতিরিক্ত জেলা জজ থেকে জেলা জজ পদে পদোন্নতির জন্য দুই বছরের শর্ত পূরণ করতে হয়। তবে বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তাদের পদোন্নতির ক্ষেত্রে অনেক সময় এই নিয়ম মানা হয় না। অনেকেই প্যানেলভুক্ত হয়ে থাকেন বছরের পর বছর।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

টিভির ব্রেকিং নিউজে এনসিপির প্রার্থী তালিকা নিয়ে যা বললেন তাজনুভা জাবীন

জন্মস্থানে প্রথমবার ভোটের লড়াইয়ে নামছেন খালেদা জিয়া

দলে দলে নিউজিল্যান্ড ছাড়ছে মানুষ, কিন্তু অস্ট্রেলিয়ায় কেন যাচ্ছে

কার্গো ভিলেজে আগুন: বিমানবন্দরের ভল্ট ভেঙে চুরি হলো ৭ আগ্নেয়াস্ত্র

৭-৮ নভেম্বর প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করতে পারে এনসিপি

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

জুলাই সনদ বাস্তবায়ন: সমঝোতার জন্য দলগুলোকে এক সপ্তাহের আলটিমেটাম দিল সরকার

  • দলগুলো আলোচনা করে এক সপ্তাহের মধ্যে সরকারকে জানাবে।
  • অপেক্ষা শেষে সরকার নিজেদের মতো সিদ্ধান্ত নেবে।
‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ০৪ নভেম্বর ২০২৫, ০৮: ১৩
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ছবি: পিআইডি
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ছবি: পিআইডি

জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন প্রশ্নে গণভোট এবং নোট অব ডিসেন্ট (আপত্তি) নিয়ে সৃষ্টি হওয়া সংকট সমাধানের ভার রাজনৈতিক দলগুলোর ওপর ছেড়ে দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে দলগুলো ঐক্যবদ্ধ সিদ্ধান্ত দিতে না পারলে সরকার নিজেদের মতো করে সিদ্ধান্ত দেবে। গতকাল সোমবার প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে উপদেষ্টা পরিষদের বিশেষ বৈঠকে এমন সিদ্ধান্ত হয়।

প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে সকাল সাড়ে ৯টা থেকে শুরু হওয়া বৈঠক চলে প্রায় ২ ঘণ্টা। পরে বৈঠকের বিষয় নিয়ে আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল সংবাদ সম্মেলন করেন। তিনি জানান, জুলাই সনদের গুরুত্ব প্রস্তাবে ও গণভোটের দিনক্ষণ নিয়ে দলগুলোর মতভিন্নতায় উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে।

সংকট সমাধানে ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনের সহযোগী দলগুলোকে নিজেদের উদ্যোগে বৈঠক করার আহ্বান জানিয়েছে উপদেষ্টা পরিষদ। আসিফ নজরুল বলেন, ‘দলগুলোকে স্বীয় উদ্যোগে নিজেদের মধ্যে আলাপ-আলোচনা করে দ্রুততম সময়ে (সম্ভব হলে আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে) সরকারকে ঐক্যবদ্ধ দিকনির্দেশনা প্রদান করার আহ্বান জানানো হয়েছে। এমন নির্দেশনা পেলে সরকারের পক্ষে সিদ্ধান্ত গ্রহণ অনেক সহজ হবে। বর্তমান পরিস্থিতিতে কালক্ষেপণের যে কোনো সুযোগ নেই, তা-ও আমাদের সবার বিবেচনায় রাখা প্রয়োজন।’

আদেশ কবে জারি হতে পারে—এমন প্রশ্নের জবাবে আসিফ নজরুল বলেন, ‘ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে রাজনৈতিক দলগুলো ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন করেছে। তাঁদের কিছু সময় দিতে চায় সরকার। যেসব বিষয় উল্লেখ করেছি, সেগুলোতে তারা আলোচনা করে একমত হতে পারে কি না, আমরা দেখি।’

দলগুলো একমত না হলে সরকার কী করবে, এমন প্রশ্নের জবাবে আসিফ নজরুল বলেন, ‘আমরা অপেক্ষা করব, তারপর অবশ্যই সরকার সরকারের মতো সিদ্ধান্ত (অ্যাক্ট) নেবে।’

রাজনৈতিক দলগুলোকে আলোচনার আয়োজন সরকার করে দেবে না কি, এমন প্রশ্নের জবাবে আসিফ নজরুল বলেন, ‘সরকারের আয়োজনে বহু আলোচনা হয়েছে। সরকার আর কোনো আয়োজন করতে যাচ্ছে না। ফ্যাসিবাদ- বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো গত ১৫ বছর নিজেরা নিজেরা আলোচনা করে বহু গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তাঁরা অত্যন্ত প্রতিকূল সময়ে একসঙ্গে আন্দোলন করেছেন, নির্যাতনের শিকার হয়েছেন।

এখন তাঁরা নিজ উদ্যোগে আলোচনা করে ঐক্যবদ্ধ সিদ্ধান্ত নেবেন, এ প্রত্যাশা করছি। আমি কালকেই দেখলাম একটি দলের পক্ষ থেকে আলোচনার আহ্বান জানানো হয়েছে—আমরা এটাকে স্বাগত জানাই।’

জাতীয় ঐকমত্য কমিশন গত ২৭ অক্টোবর অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার কাছে জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন বিষয়ে সুপারিশ জমা দেয়। যেখানে জুলাই জাতীয় সনদ (সংবিধান সংস্কার) বাস্তবায়ন আদেশ জারির কথা বলা হয়। পাশাপাশি সনদ বাস্তবায়নে দুটি বিকল্প প্রস্তাব দেওয়া হয়। প্রথম প্রস্তাবে বলা হয়েছে, গণভোটের আগে সরকার জাতীয় সনদের ভিত্তিতে একটি খসড়া বিল প্রস্তুত করবে, যা গণভোটে উপস্থাপন করা হবে। ফল ইতিবাচক হলে নবনির্বাচিত সংসদ সদস্যরা একই সঙ্গে এমপি ও সংবিধান সংস্কার পরিষদের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। তাঁরা প্রথম অধিবেশন থেকে ২৭০ দিনের মধ্যে সংস্কার সম্পন্ন করবেন। নির্ধারিত সময় পার হলে বিলটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে কার্যকর হবে।

দ্বিতীয় প্রস্তাবে বিলের কথা বলা নেই। এক্ষেত্রে সংবিধান সংস্কার পরিষদকে গাঠনিক ক্ষমতা দেওয়া হয়। তবে তারা প্রথম অধিবেশন শুরুর ২৭০ দিনের মধ্যে জুলাই সনদ অনুসারে সংবিধান সংস্কার শেষ করবে এবং এরপর পরিষদের কার্যক্রম শেষ হবে। বাকি ধারাগুলো একই আছে। দুটি প্রস্তাবেই পরিষদের কার্যক্রম শেষ হওয়ার ৪৫ দিনের মধ্যে পিআরের ভিত্তিতে উচ্চকক্ষ গঠনের কথা বলা হয়েছে।

বাস্তবায়নের সুপারিশে নোট অব ডিসেন্ট না থাকায় এর সমালোচনা করছে বিএনপি। দলটি আপত্তির বিষয়টি সনদে যুক্ত করার দাবি জানিয়েছে। জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) বলেছে, প্রধান উপদেষ্টার মাধ্যমে আদেশ জারি করতে হবে, দলটি গণভোটের প্রশ্নে ছাড় দিতে চায়।

গত সপ্তাহে গণপ্রতিনিধিত্ব অধ্যাদেশ (আরপিও) সংশোধন করা হয়। সেখানে বলা হয়, জোটভুক্ত দলগুলোকে নিজ দলের প্রতীকেই ভোট করতে হবে। বিষয়টিতেও রয়েছে আপত্তি বিএনপির। এটি সংশোধনে দলের পক্ষ থেকে আইন উপদেষ্টা ও প্রধান নির্বাচন কমিশনারের কাছে চিঠি দেওয়া হয়। জামায়াত ও এনসিপি জোটভুক্ত দলগুলোকে নিজ দলের প্রতীকে নির্বাচন করার পক্ষে, যা নিয়ে এক সপ্তাহ ধরে দেশের রাজনীতিতে নতুন সংকট সৃষ্টি হয়েছে।

সংকট সমাধানে গত সপ্তাহ থেকে সরকারের চার উপদেষ্টা বিএনপি, জামায়াত, এনসিপিসহ একাধিক দলের সঙ্গে অনানুষ্ঠানিক বৈঠক করেছে। সেখানে আলোচনা হয়, পিআর পদ্ধতিতে উচ্চকক্ষ ও তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়ে বিএনপি আপত্তি প্রত্যাহার করলেই তারা ভোটের দিন গণভোট মেনে নেবে জামায়াত। এনসিপিও পিআরে উচ্চকক্ষের দাবি করে আসছে। অন্যদিকে বিএনপির দাবি অনুযায়ী, আরপিও সংশোধন করবে সরকার। তবে পিআরে উচ্চকক্ষ ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা ছাড়া সনদে থাকা বিএনপির বাকি আপত্তিগুলোর কী হবে, সেটি নিয়ে সমাধান হয়নি। কমিশনের দ্বিতীয় প্রস্তাব অনুযায়ী, ২৭০ দিনের সময়সীমা উঠিয়ে দিয়ে আদেশ জারির পরিকল্পনা সরকার নিয়েছিল। কিন্তু উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে সে সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসে সরকার। আদেশ জারির পর নতুন সংকট সৃষ্টির পথ বন্ধ করতে দলগুলোকে নিজেদের মধ্যে আলোচনা করতে এক সপ্তাহ সময় দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। এক্ষেত্রে দলগুলো একমত না হলে আগামী সপ্তাহে সরকার আদেশ জারি করবে বলে একাধিক সূত্রে জানা গেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

টিভির ব্রেকিং নিউজে এনসিপির প্রার্থী তালিকা নিয়ে যা বললেন তাজনুভা জাবীন

জন্মস্থানে প্রথমবার ভোটের লড়াইয়ে নামছেন খালেদা জিয়া

দলে দলে নিউজিল্যান্ড ছাড়ছে মানুষ, কিন্তু অস্ট্রেলিয়ায় কেন যাচ্ছে

কার্গো ভিলেজে আগুন: বিমানবন্দরের ভল্ট ভেঙে চুরি হলো ৭ আগ্নেয়াস্ত্র

৭-৮ নভেম্বর প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করতে পারে এনসিপি

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

সালমানসহ ৩৪ জনের নামে দুদকের পাঁচ মামলা

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
সালমান এফ রহমান। ফাইল ছবি
সালমান এফ রহমান। ফাইল ছবি

প্রায় ২ হাজার কোটি টাকা ঋণ জালিয়াতি, আত্মসাৎ ও পাচারের অভিযোগে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা ও বেক্সিমকো গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান সালমান এফ রহমানসহ ৩৪ জনের নামে পৃথক পাঁচটি মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। আজ সোমবার (৩ নভেম্বর) বিকেলে দুদকের প্রধান কার্যালয়ে সাংবাদিকদের মামলার বিষয়টি জানান কমিশনের মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন।

দুদকের উপপরিচালক মুহাম্মদ জয়নাল আবেদীনের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের একটি টিম অনুসন্ধান শেষে গত বৃহস্পতিবার মামলা করার আবেদন করলে কমিশন তা অনুমোদন করে।

দুদকের মহাপরিচালক বলেন, তাঁদের বিরুদ্ধে শেয়ারবাজারে জালিয়াতি, প্লেসমেন্ট শেয়ার কারসাজি ও প্রতারণার মাধ্যমে শেয়ারহোল্ডারদের হাজার হাজার কোটি টাকা লোপাট, অবৈধ প্রভাব খাটিয়ে সরকারি ও বেসরকারি বিভিন্ন ব্যাংক থেকে প্রায় ৩৬ হাজার কোটি টাকা ঋণ নিয়ে আত্মসাৎসহ হাজার হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচারের অভিযোগ অনুসন্ধানের অংশ হিসেবে মামলাগুলো করা হয়।

এই পাঁচ মামলার বাদী হলেন দুদকের উপপরিচালক মুহাম্মদ জয়নাল আবেদীন, সহকারী পরিচালক মিনহাজ বিন রহমান ও সাজ্জাদ হোসেন, উপসহকারী পরিচালক রোমান উদ্দিন ও এলমান আহম্মদ অনি।

মামলাগুলোতে সালমান এফ রহমান ছাড়াও তাঁর ছেলে আহমেদ শায়ান ফজলুর রহমান, সালমানের ভাই এ এস এফ রহমান, তাঁর ছেলে আহমেদ শাহরিয়ার রহমানসহ তাঁদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের ১৮ জন ও রাষ্ট্রায়ত্ত জনতা ব্যাংকের ১২ কর্মকর্তাকে আসামি করা হয়েছে।

অন্য আসামিরা হলেন বেক্সিমকো লিমিটেডের পরিচালক ইকবাল আহমেদ, এ বি সিদ্দিকুর রহমান, মাসুদ ইকরামুল্লাহ খান, শাহ মঞ্জুরুল হক, রীম এইচ শামসুদ্দোহা, ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ওসমান কাওসার চৌধুরী, স্কাইনেট অ্যাপারেলস লিমিটেডের এমডি আনোয়ারুল বাশার, পরিচালক নাসরিন আহমেদ, ক্রিসেন্ট অ্যাকসেসরিজ লিমিটেডের এমডি আবু নাঈম মাহমুদ সালেহিন, পরিচালক মো. মোস্তাফিজুর রহমান তানভীর, প্লাটিনাম গার্মেন্টস লিমিটেডের এমডি মোহাম্মদ আলিফ ইবনে জুলফিকার, মোসা. নুসরাত হায়দার, নিউ ঢাকা ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের চেয়ারম্যান সালাউদ্দিন খান মজলিস, পরিচালক আব্দুর রউফ, কাঁচপুর অ্যাপারেলসের এমডি মাহফুজুর রহমান খান, পরিচালক সৈয়দ তানভীর এলাহী, পিয়ারলেস গার্মেন্টসের এমডি ওয়াসীউর রহমান, পরিচালক রিজিয়া আক্তার।

জনতা ব্যাংকের যেসব কর্মকর্তাকে আসামি করা হয়েছে তাঁরা হলেন ব্যাংকটির সাবেক এমডি ও সিইও আবদুস ছালাম আজাদ, সাবেক মহাব্যবস্থাপক মিজানুর রহমান, উপমহাব্যবস্থাপক (অব.) মো. আব্দুর রহিম, সাবেক মহাব্যবস্থাপক মো. শহিদুল ইসলাম, ডিজিএম (অব.) মো. মমতাজুল ইসলাম, সিনিয়র অফিসার রফিকুল ইসলাম, ব্যবস্থাপক মো. সালেহ আহমেদ, সহকারী মহাব্যবস্থাপক (অব.) মোহাম্মদ মোয়াজ্জেম হোসেন, সাবেক এজিএম মোহাম্মদ শাজাহান, ব্যবস্থাপক মো. হুমায়ুন কবির ঢালী ও ব্যবস্থাপক শ ম মাহাতাব হোসাইন বাদশা।

মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, পিয়ারলেস গার্মেন্টস ৫ কোটি ২ লাখ ৫০ হাজার ৭৭২ দশমিক ২৫ মার্কিন ডলার, প্লাটিনাম গার্মেন্টস ১ কোটি ৮৯ লাখ ৩ হাজার ৬৫৮ দশমিক ৯ ডলার, কাঁচপুর অ্যাপারেলস ৮ কোটি ৪০ লাখ ২৯ হাজার ৫৪৭ দশমিক ৪৪ ডলার, স্কাইনেট অ্যাপারেলস ১ কোটি ৪৭ লাখ ২৯ হাজার ৩৪০ ডলার এবং নিউ ঢাকা ইন্ডাস্ট্রিজ ৪ কোটি ৭৭ লাখ ১৫ হাজার ৪৮২ দশমিক ৪৬ ডলারসহ মোট ২১ কোটি ৫৫ লাখ ২৮ হাজার ৮০১ ডলার বা (প্রতি ডলার ৯০ টাকা হারে) ১ হাজার ৯৩৯ কোটি ৭৫ লাখ ৯২ হাজার ৯৪ টাকা জনতা ব্যাংকের লোকাল অফিস থেকে ঋণের নামে আত্মসাৎ করে মানি লন্ডারিংয়ের অপরাধ প্রাথমিক অনুসন্ধানে প্রমাণিত হয়েছে।

সালমানের বিরুদ্ধে আরও ২০ মামলা হচ্ছে

জনতা ব্যাংক থেকে ঋণের নামে প্রায় ১৩ হাজার কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে সালমান এফ রহমানসহ অন্যদের বিরুদ্ধে আরও ২০টি মামলা করা হবে বলে দুদকের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা আজকের পত্রিকাকে জানিয়েছেন।

দুদকের ওই কর্মকর্তা জানান, এসব মামলায় জনতা ব্যাংক থেকে এলসি সুবিধা নেওয়ার নামে প্রতারণা ও জালিয়াতি করে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ আনা হবে।

মামলাগুলোতে সায়ান ফজলুর রহমান, সোহেল ফশিউর রহমানের (এ এস এফ রহমান), আহমেদ শাহরিয়ার রহমান ও জনতা ব্যাংকের সাবেক এমডি আবদুস ছালামসহ প্রায় ৬০০ জনকে আসামি করা হতে পারে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

টিভির ব্রেকিং নিউজে এনসিপির প্রার্থী তালিকা নিয়ে যা বললেন তাজনুভা জাবীন

জন্মস্থানে প্রথমবার ভোটের লড়াইয়ে নামছেন খালেদা জিয়া

দলে দলে নিউজিল্যান্ড ছাড়ছে মানুষ, কিন্তু অস্ট্রেলিয়ায় কেন যাচ্ছে

কার্গো ভিলেজে আগুন: বিমানবন্দরের ভল্ট ভেঙে চুরি হলো ৭ আগ্নেয়াস্ত্র

৭-৮ নভেম্বর প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করতে পারে এনসিপি

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত