Ajker Patrika

৭৬১ মামলায় আসামি ১,১৬৮ পুলিশ: কারাগারে ৬৩, অন্যরা গ্রেপ্তার আতঙ্কে

  • ৭৬১ মামলায় আসামি ১,১৬৮ জন পুলিশ।
  • হত্যাসহ বিভিন্ন মামলায় ৬৩ জন গ্রেপ্তার।
  • ‘প্রমাণ না পাওয়া পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে না।’
  • ৬৪ জনকে বাধ্যতামূলক অবসর।
রাসেল মাহমুদ, ঢাকা
আপডেট : ১২ আগস্ট ২০২৫, ১৬: ৩০
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

জুলাই-আগস্ট গণ-অভ্যুত্থানে ছাত্র-জনতাকে গুলি করে হত্যাসহ আওয়ামী লীগ সরকারের ১৫ বছরের হত্যা, গুম, নির্যাতনসহ বিভিন্ন অভিযোগে পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে অনেক মামলা করা হয়েছে। এসব মামলায় এক হাজারের বেশি পুলিশ সদস্যকে আসামি করা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে এ পর্যন্ত সাবেক আইজিসহ পুলিশের ৬৩ জন সদস্য গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে আছেন। মামলার অন্য আসামি পুলিশ সদস্যরা রয়েছেন গ্রেপ্তার-আতঙ্কে। এ ছাড়া গত এক বছরে অভিযোগ থাকা অনেক কর্মকর্তা ও কর্মচারীর বিরুদ্ধে চাকরিচ্যুতি, ওএসডি ও বদলিসহ বিভিন্ন ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

পুলিশ সদর দপ্তর বলছে, অনেকে মামলার আসামি হলেও যেসব পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে সুস্পষ্ট প্রমাণ রয়েছে, শুধু তাঁদেরকেই গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সুনির্দিষ্ট প্রমাণ না পাওয়া পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে না।

পুলিশসহ বিভিন্ন বাহিনীর বিরুদ্ধে শেখ হাসিনার দেড় দশকের স্বৈরশাসনামলে ব্যাপক মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ রয়েছে। সর্বশেষ পর্যায়ে চব্বিশের জুলাই-আগস্ট অভ্যুত্থান কঠোরভাবে দমনের সময় পুলিশের গুলিসহ বিভিন্নভাবে শত শত মানুষ নিহত হন। ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার পতন হলে বিক্ষুব্ধ জনতার ক্ষোভের শিকার হয় শত শত থানা। কর্মস্থল ছেড়ে পালিয়ে যান পুলিশ সদস্যরা। সরকার বারবার হুঁশিয়ারিমূলক বিজ্ঞপ্তি দিয়ে তাঁদের ধীরে ধীরে কাজে ফিরিয়ে আনে।

সরকারের পক্ষ থেকে জুলাই-আগস্ট গণ-অভ্যুত্থানে ৮৪৪ জন নিহত হওয়ার হিসাব দিয়েছে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়। এসব হত্যার অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক

মন্ত্রী ও সংসদ সদস্য, বিচারপতি ও আমলার পাশাপাশি পুলিশ সদস্যদেরকেও আসামি করা হয়েছে। তাঁদের অনেকে গ্রেপ্তারও হয়েছেন।

পুলিশ সদর দপ্তর সূত্রে জানা যায়, গণ-অভ্যুত্থানে পুলিশের গুলিতে হতাহতের ঘটনায় সারা দেশে ৭৬১টি মামলা করা হয়েছে। মামলায় পুলিশের ১,১৬৮ জনকে আসামি করা হয়েছে। আসামিদের মধ্যে পুলিশের সাবেক ও বর্তমান বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা রয়েছেন। তাঁদের মধ্যে সাবেক আইজিপি ৭, অতিরিক্ত আইজিপি ৪১, সাবেক ডিআইজি ১২ ও ১১ জন বর্তমান ডিআইজি, অতিরিক্ত ডিআইজি ৪৯, পুলিশ সুপার (এসপি) ৬৬, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ৬৫, সহকারী পুলিশ সুপার ৩৫, পরিদর্শক ১৮৭, উপপরিদর্শক (এসআই) ৩৪০, এএসআই ১১৭ ও কনস্টেবল ২২৪ জন। বাকিরা টিএসআই, এটিএসআই, নায়েক ও পদ উল্লেখ না থাকা পুলিশ সদস্য।

মামলার তথ্য অনুযায়ী, ডিএমপির সাবেক অতিরিক্ত কমিশনার ও ডিবিপ্রধান হারুন অর রশীদের বিরুদ্ধে সবচেয়ে বেশি, ১৭৫টি মামলা করা হয়েছে। এরপর সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে ১৫৯, যুগ্ম কমিশনার বিপ্লব কুমার সরকারের বিরুদ্ধে ১২৯, ডিএমপির সাবেক কমিশনার হাবিবুর রহমানের বিরুদ্ধে ১১৮, ডিএমপির ওয়ারী বিভাগের সাবেক উপকমিশনার (ডিসি) মোহাম্মদ ইকবাল হোসাইনের বিরুদ্ধে ২৭, সাবেক আইজিপি শহীদুল হকের বিরুদ্ধে ২৪ এবং বেনজীর আহমেদের বিরুদ্ধে ১৩টি মামলা করা হয়েছে।

অভ্যুত্থানের সময় গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ করার অভিযোগে পুলিশের সাবেক ৬২ জন সদস্যের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। এর মধ্যে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে ডিএমপির সাবেক উপকমিশনার মো. জসীম উদ্দীন মোল্লা, পুলিশ সুপার তানভীর সালেহীন, এস এম তানভীর আরাফাত, আবদুল্লাহিল কাফীসহ ১৮ কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। তাঁদের বিচারপ্রক্রিয়া চলছে। অন্যান্য মামলার তদন্ত করছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই), অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) ও অন্য ইউনিটগুলো।

বিভিন্ন মামলার আসামি মোট পুলিশ সদস্যের মধ্যে এখন পর্যন্ত ৬৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন, এ কে এম শহীদুল হক, ডিএমপির সাবেক কমিশনার মো. আছাদুজ্জামান মিয়া, যুগ্ম কমিশনার মশিউর রহমান, ডিআইজি মোল্লা নজরুল ইসলাম, চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের (সিএমপি) সাবেক কমিশনার সাইফুল ইসলাম, সিএমপির সাবেক কমিশনার অতিরিক্ত আইজি ইকবাল বাহার রয়েছেন।

আসামিদের মধ্যে পলাতক রয়েছেন আলোচিত সাবেক অতিরিক্ত আইজিপি মো. মনিরুল ইসলাম, ডিএমপির সাবেক কমিশনার হাবিবুর রহমান, ডিএমপির সাবেক ডিবিপ্রধান মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ, যুগ্ম কমিশনার বিপ্লব কুমার সরকার, মেহেদী হাসানসহ অনেকে। তাঁদের অনেকে দেশত্যাগ করেছেন বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, ‘মাঠে দায়িত্ব পালন করা পুলিশ সদস্যরা আদেশ পালন করেছেন। এতেই এখন তাঁরা হত্যা মামলার আসামি। মামলার আসামি অনেককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকিদের ভাগ্যে কী আছে, জানা নেই।’

তবে মামলার আসামি হলেই গ্রেপ্তার করা হচ্ছে না বলে জানিয়েছে পুলিশ সদর দপ্তর। গত ২৮ এপ্রিল এক সংবাদ সম্মেলনে পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজি) বাহারুল আলম বলেন, ‘৫ আগস্টের পর একটি মহল হয়রানির উদ্দেশ্যে মূল আসামির সঙ্গে অসংখ্য নিরীহ মানুষকে মামলার আসামি করেছে। কিন্তু তদন্তে যাদের বিরুদ্ধে দায়ভার পাওয়া যাবে, শুধু তার জন্যই আমরা গ্রেপ্তারি পরোয়ানা দেব।’

হত্যা ছাড়াও ৫ আগস্টের পটপরিবর্তনের পর পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ধরনের মামলা করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে ক্ষমতার অপব্যবহার, মারধর, গুলি চালানো, লুটপাট, অতিরিক্ত বলপ্রয়োগ এবং মিথ্যা মামলা করার অভিযোগ। অভিযোগ থাকা এসব পুলিশ সদস্যের মধ্যে গত এক বছরে জনস্বার্থে অবসর দেওয়া হয়েছে অতিরিক্ত আইজিপিসহ ৬৪ জনকে। এই ৬৪ জনের মধ্যে রয়েছেন সুপারনিউমারারি পদোন্নতিপ্রাপ্তসহ অতিরিক্ত আইজিপি ১৮, ডিআইজি ১৫, অতিরিক্ত ডিআইজি ১, পুলিশ সুপার ২, সহকারী পুলিশ সুপার ১৯ ও পরিদর্শক ৯ জন। এ ছাড়া আন্দোলনের সময় ‘বিতর্কিত ভূমিকা রাখায়’ শতাধিক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে অফিসার অন স্পেশাল ডিউটি (ওএসডি) করা হয়েছে। বদলি করা হয়েছে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে থাকা প্রায় সব কর্মকর্তাকে।

গত ২৩ জুলাই ডিএমপির ওয়ারী বিভাগের সাবেক উপকমিশনার (ডিসি) মোহাম্মদ ইকবাল হোসাইনকে সাময়িক বরখাস্ত করে সরকার। আন্দোলনের পরপরই তাঁর একটি ভিডিও ভাইরাল হয়। সরকার পরিবর্তনের পর হত্যা মামলার আসামি ডিসি ইকবাল কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকায় সরকারি কর্মচারী বিধিমালা অনুযায়ী বিষয়টিকে পলায়নের শামিল উল্লেখ করে তাঁকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।

সবশেষ গত ১০ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের সময় ঢাকা মহানগরের বিভিন্ন থানায় ওসি হিসেবে দায়িত্ব পালন করা নয় পুলিশ পরিদর্শককে (নিরস্ত্র) অবসর দিয়েছে সরকার।

অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক থেকে শুরু করে পরিদর্শক পর্যন্ত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে পদবঞ্চিত অনেকে পদোন্নতিও পেয়েছেন।

জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে পুলিশ সদস্যদের অনেকে নিহতও হয়েছেন। পুলিশ সদর দপ্তরের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ছাত্র-জনতার আন্দোলন চলাকালে সংঘর্ষ, হামলা, অগ্নিসংযোগসহ নানাভাবে পুলিশের ৪৪ সদস্য নিহত হন।

পুলিশ সদর দপ্তরের সহকারী মহাপরিদর্শক (মিডিয়া অ্যান্ড পিআর) এ এইচ এম শাহাদাত হোসাইন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘যেসব পুলিশ সদস্য হত্যাসহ বিভিন্ন মামলার আসামি, তাঁদের মধ্যে সুস্পস্ট প্রমাণ পাওয়া ব্যক্তিদেরই কেবল গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সুস্পষ্ট প্রমাণ ছাড়া কাউকে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে না।’

শাহাদাত হোসাইন আরও বলেন, গত বছরের ৫ আগস্ট যে পরিস্থিতি ছিল, সেখান থেকে পুলিশ বাহিনী তাদের মনোবল বাড়ানোর পাশাপাশি অপরাধ নিয়ন্ত্রণ ও আইনশৃঙ্খলা স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা করছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

নিউইয়র্কের প্রথম মুসলিম মেয়র নির্বাচিত হলেন মামদানি

বাংলা ভাষার সঙ্গে জোহরান মামদানির ঘরের সম্পর্ক, যোগসূত্র মা মীরা নায়ার

জোট নয়, নির্বাচনী সমঝোতা করবে জামায়াত—জানালেন আমির

আজকের রাশিফল: অফিসে মিষ্টি কথায় মন গলবে বসের, প্রেমের ঝগড়ায় চ্যাটজিপিটিতে ভরসা নয়

বুমরা-সূর্যকুমারকে শাস্তি দিল আইসিসি, নিষিদ্ধ পাকিস্তানি ক্রিকেটার

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ভোটার এলাকা পরিবর্তনের সুযোগ দিল ইসি

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ইতিমধ্যে খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। দাবি-আপত্তি শেষে ১৮ নভেম্বর চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করা হবে। নতুন করে আর ভোটার তালিকায় নাম অন্তর্ভুক্ত করা না হলেও ভোটার এলাকা পরিবর্তন করার সুযোগ দিয়েছে ইসি।

ঠিকানা পরিবর্তন করে স্থানান্তর হতে চাইলে ১০ নভেম্বরের মধ্যে আবেদন করতে হবে। রেজিস্ট্রেশন কর্মকর্তাদের ১৭ নভেম্বরের মধ্যে আবেদনগুলো অনুমোদন বা বাতিল করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

গতকাল মঙ্গলবার ইসির সিনিয়র সহকারী সচিব মো. নাসির উদ্দিন চৌধুরী স্বাক্ষরিত এ সংক্রান্ত চিঠি সব উপজেলা ও থানা নির্বাচন কর্মকর্তার কাছে পাঠানো হয়েছে। চিঠির অনুলিপি ইসি সচিবালয়সহ মাঠপর্যায়ের সকল কর্মকর্তার কাছে পাঠানো হয়েছে।

আবাসস্থল পরিবর্তনের কারণে ভোটার স্থানান্তরের আবেদন নিষ্পত্তি সংক্রান্ত চিঠিতে বলা হয়, ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য ভোটার তালিকা চূড়ান্ত করার আগে আবাসস্থল পরিবর্তনের কারণে ভোটার স্থানান্তরের আবেদন দাখিল ও দাখিলকৃত আবেদনগুলো নিষ্পত্তি করতে বিস্তারিত সময়সূচি অনুমোদন দিয়েছে নির্বাচন কমিশন।

ইসি কর্মকর্তারা জানান, ভোটার এলাকা পরিবর্তন করতে হলে ১৩ নম্বর ফরম পূরণ করে সংশ্লিষ্ট উপজেলা/থানা নির্বাচন অফিসে জমা দিতে হয়।

এদিকে মাঠপর্যায়ে পাঠানো আরেকটি নির্দেশনায়, প্রবাসীদের ভোটার নিবন্ধনের আবেদন আগামীকালের বৃহস্পতিবার মধ্যে নিষ্পত্তি করতে বলা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার ইসির জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের পরিচালক (নিবন্ধন ও প্রবাসী) খান আবি শাহানুর খান স্বাক্ষরিত এ সংক্রান্ত চিঠি সব আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা, জেলা ও উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তাদের পাঠানো হয়।

চিঠিতে বলা হয়, প্রবাসে বসবাসরত বাংলাদেশি নাগরিকদের নিবন্ধন কার্যক্রম চলমান। যেসব প্রবাসীর বায়োমেট্রিক কার্যক্রম সম্পন্ন করা হয়েছে তাঁদের আবেদন সিএমএস পোর্টালের অনলাইন অ্যাপ্লিকেশনের এনআরবি মেনুতে পাওয়া যাবে। উপজেলা/থানা/রেজিস্ট্রেশন কর্মকর্তা আবেদনকৃত ভোটার ফরম ও সংযুক্ত দলিলাদি প্রিন্ট করে সরেজমিনে তদন্ত সম্পন্ন করবেন।

চিঠিতে আরও বলা হয়েছে, ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত প্রবাসী নাগরিকেরা ভোটার রেজিস্ট্রেশনের জন্য যেসব আবেদন দাখিল করেছেন সেগুলোর তদন্ত প্রতিবেদন ৬ নভেম্বরের মধ্যে আবশ্যিকভাবে তদন্ত সম্পন্ন করতে হবে। তবে, ১ সেপ্টেম্বর বা তার পরের আবেদনের সঙ্গে ডকুমেন্ট সংযুক্ত করা না থাকলে সেসব আবেদন রেখে প্রতিবেদন ছকে ‘ডকুমেন্ট সংযুক্ত নেই’ মর্মে উল্লেখ করতে হবে। পরবর্তীতে ডকুমেন্ট সংযুক্ত করা হলে তদন্ত কার্যক্রম সম্পাদন করতে হবে। তদন্ত কার্যক্রম সম্পন্ন শেষে আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তার মাধ্যমে সংযুক্ত ছক মোতাবেক মহাপরিচালক, জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগ বরাবর প্রতিবেদন পাঠাতে হবে।

ডিসেম্বরের শুরুর দিকে তফসিল ঘোষণা করে আগামী বছরের ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন করার পরিকল্পনা করছে নির্বাচন কমিশন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

নিউইয়র্কের প্রথম মুসলিম মেয়র নির্বাচিত হলেন মামদানি

বাংলা ভাষার সঙ্গে জোহরান মামদানির ঘরের সম্পর্ক, যোগসূত্র মা মীরা নায়ার

জোট নয়, নির্বাচনী সমঝোতা করবে জামায়াত—জানালেন আমির

আজকের রাশিফল: অফিসে মিষ্টি কথায় মন গলবে বসের, প্রেমের ঝগড়ায় চ্যাটজিপিটিতে ভরসা নয়

বুমরা-সূর্যকুমারকে শাস্তি দিল আইসিসি, নিষিদ্ধ পাকিস্তানি ক্রিকেটার

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

নির্বাচন হলে দেশের স্থিতিশীলতা আরও ভালো হবে: সেনাবাহিনী

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ০৫ নভেম্বর ২০২৫, ১৬: ৩৫
বুধবার দুপুরে সেনাসদরে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে কথা বলেন সেনাসদরের ট্রেনিং অ্যান্ড ডকট্রিন কমান্ডের লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. মাইনুল রহমান। ছবি: আজকের পত্রিকা
বুধবার দুপুরে সেনাসদরে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে কথা বলেন সেনাসদরের ট্রেনিং অ্যান্ড ডকট্রিন কমান্ডের লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. মাইনুল রহমান। ছবি: আজকের পত্রিকা

দেশের জনগণ যেমন চায়, সেনাবাহিনীও চায় সরকার ঘোষিত রূপরেখা অনুযায়ী অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠিত হোক। রূপরেখায় নির্ধারিত সময়সীমাও রয়েছে। নির্বাচন হলে দেশের স্থিতিশীলতা আরও ভালো হবে এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ধীরে ধীরে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরবে বলে আশা করে সেনাবাহিনী। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে সেনাবাহিনীও ব্যারাকে ফিরে যেতে পারবে।

আজ বুধবার দুপুরে সেনাসদরে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সেনাসদরের ট্রেনিং অ্যান্ড ডকট্রিন কমান্ডের লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. মাইনুল রহমান এসব কথা বলেন।

লেফটেন্যান্ট জেনারেল মাইনুল রহমান বলেন, সরকার যে রূপরেখা ঘোষণা করেছে, সেটির ভিত্তিতেই সেনাবাহিনী প্রস্তুতি নিচ্ছে। প্রশিক্ষণ কার্যক্রম এখন সীমিত পরিসরে হলেও নির্বাচনের সময়ে সেনাবাহিনীর করণীয়কে কেন্দ্র করে এর পরিকল্পনা করা হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, শান্তিকালীন পরিস্থিতিতে সেনাবাহিনীর দায়িত্ব হলো যুদ্ধের জন্য প্রস্তুতি নেওয়া। কিন্তু গত ১৫ মাস ধরে সেনাবাহিনী মাঠে দায়িত্ব পালন করছে। প্রয়োজনে নির্বাচন ও নির্বাচনের পরবর্তী কিছু সময়েও এই দায়িত্ব অব্যাহত রাখতে হতে পারে। ফলে সেনাবাহিনীর মূল প্রশিক্ষণ কার্যক্রমে বিঘ্ন ঘটছে।

সেনাবাহিনীর এ কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘যে পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে আমরা গত ১৫ মাস দায়িত্ব পালন করেছি, তা একেবারেই সহজ ছিল না। বাংলাদেশ এ ধরনের পরিস্থিতির মুখোমুখি প্রতিদিন হয় না। তাই আমরাও চাই, একটি সুষ্ঠু নির্বাচন হোক এবং আমরা সেনানিবাসে ফিরে যাই।’

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সেনাবাহিনীকে ঘিরে প্রচারিত বিভিন্ন গুজব প্রসঙ্গে মাইনুল রহমান বলেন, গত ১৫ মাস সেনাবাহিনী অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং পরিস্থিতিতে দায়িত্ব পালন করেছে। এ সময় কিছু স্বার্থান্বেষী চক্র সেনাবাহিনীর নেতৃত্বকে প্রশ্নবিদ্ধ করার উদ্দেশ্যে মিথ্যা ও সাজানো অপপ্রচার চালিয়েছে। তিনি স্পষ্টভাবে বলেন, ‘আমি আপনাদের নিশ্চিত করতে চাই, সেনাবাহিনীর প্রতিটি সদস্য সেনাবাহিনীর প্রধান ও সিনিয়র লিডারশিপের প্রতি শতভাগ অনুগত। যেকোনো সময়ের তুলনায় এখন সেনাবাহিনী আরও ঐক্যবদ্ধ, সুশৃঙ্খল এবং ভ্রাতৃত্ববোধে দৃঢ়।’

লেফটেন্যান্ট জেনারেল মাইনুল রহমান বলেন, সেনাবাহিনী দেশের জনগণের সেনাবাহিনী; তাই জনগণের স্থিতিশীলতা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য প্রয়োজনীয় দায়িত্ব সেনাবাহিনী পালন করে যাবে।

দুদিন আগে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য দলীয় প্রার্থীদের মনোনয়ন ঘোষণা করা হয়েছে। এর পরপরই কিছু এলাকায় উত্তেজনা ও সংঘাতের ঘটনা ঘটেছে। সংবাদ সম্মেলনের শুরুতে সেনাবাহিনীর মিলিটারি অপারেশনস অধিদপ্তরের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল দেওয়ান মোহাম্মদ মনজুর হোসেনকে সাংবাদিকেরা এ বিষয়ে প্রশ্ন করেন। জবাবে তিনি বলেন, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে অন্য সব আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে সহযোগিতা করছে, ভবিষ্যতেও করবে।

নির্বাচনকালীন সরকার কিংবা নির্বাচন পেছানোর গুঞ্জনের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মনজুর হোসেন বলেন, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য সরকারের ঘোষিত নির্দেশনা অনুযায়ী এবং নির্বাচন কমিশন যে পরিপত্র দেবে, তার আলোকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করবে।

আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে সেনাবাহিনীর ভূমিকা কী হবে—সে প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে তিন বাহিনীর প্রধান সাক্ষাৎ করেছেন। আলোচনার বিষয়বস্তু ইতিমধ্যে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে। একটি সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের পূর্বশর্ত হলো স্থিতিশীল আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি। আইনশৃঙ্খলা যাতে স্বাভাবিক থাকে, সে লক্ষ্যে আমরা কাজ করতে বদ্ধপরিকর।’

মনজুর হোসেন আরও বলেন, ‘নির্বাচনের সময় ৯০ হাজার থেকে ১ লাখ সেনাসদস্য মাঠে মোতায়েন থাকবে—যা এ যাবৎ সর্বোচ্চ। আমাদের পরিকল্পনায় রয়েছে জেলা, উপজেলা এমনকি আসনভিত্তিক ক্যাম্প স্থাপন করে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখা। নির্বাচন কমিশনকে সহযোগিতা করার জন্য যা যা প্রয়োজন, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী তা করতে প্রস্তুত।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

নিউইয়র্কের প্রথম মুসলিম মেয়র নির্বাচিত হলেন মামদানি

বাংলা ভাষার সঙ্গে জোহরান মামদানির ঘরের সম্পর্ক, যোগসূত্র মা মীরা নায়ার

জোট নয়, নির্বাচনী সমঝোতা করবে জামায়াত—জানালেন আমির

আজকের রাশিফল: অফিসে মিষ্টি কথায় মন গলবে বসের, প্রেমের ঝগড়ায় চ্যাটজিপিটিতে ভরসা নয়

বুমরা-সূর্যকুমারকে শাস্তি দিল আইসিসি, নিষিদ্ধ পাকিস্তানি ক্রিকেটার

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

মাইলস্টোন ট্র্যাজেডি: তদন্তে বিমান বিধ্বস্তের যে কারণ জানা গেল

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ০৫ নভেম্বর ২০২৫, ১৭: ১৩
রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে প্রেস বিফ্রিং করেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। ছবি: আজকের পত্রিকা
রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে প্রেস বিফ্রিং করেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। ছবি: আজকের পত্রিকা

রাজধানীর উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তের ঘটনার তদন্ত প্রতিবেদন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে জমা দেওয়া হয়েছে। প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, পাইলটের উড্ডয়নে ত্রুটির কারণে বিমানটি বিধ্বস্ত হয়। তিনি বিমানটি উড্ডয়নের পর নিয়ন্ত্রণ করতে ব্যর্থ হন।

আজ বুধবার (৫ নভেম্বর) প্রধান উপদেষ্টার কাছে এ তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়। পরে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে এ কথা জানান।

শফিকুল আলম জানান, জননিরাপত্তার বিষয়টি বিবেচনা করে ঢাকার বাইরে বিমানবাহিনীর প্রশিক্ষণ পরিচালনা করার সুপারিশসহ ৩৩টি রিকমেন্ডেশন দিয়েছে তদন্ত কমিটি।

উল্লেখ্য, গত ২১ জুলাই দুপুরে মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ক্যাম্পাসের হায়দার আলী ভবনে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হয়। এ ঘটনায় বিমানের পাইলট ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মো. তৌকির ইসলাম, স্কুলটির শিক্ষক, শিক্ষার্থী, আয়াসহ ৩৬ জন নিহত হয়েছে। আহত হয় শতাধিক মানুষ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

নিউইয়র্কের প্রথম মুসলিম মেয়র নির্বাচিত হলেন মামদানি

বাংলা ভাষার সঙ্গে জোহরান মামদানির ঘরের সম্পর্ক, যোগসূত্র মা মীরা নায়ার

জোট নয়, নির্বাচনী সমঝোতা করবে জামায়াত—জানালেন আমির

আজকের রাশিফল: অফিসে মিষ্টি কথায় মন গলবে বসের, প্রেমের ঝগড়ায় চ্যাটজিপিটিতে ভরসা নয়

বুমরা-সূর্যকুমারকে শাস্তি দিল আইসিসি, নিষিদ্ধ পাকিস্তানি ক্রিকেটার

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

খোয়া যাওয়া অস্ত্র উদ্ধারে ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত পুরস্কার ঘোষণা পুলিশের

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ০৫ নভেম্বর ২০২৫, ১৭: ৫৪
খোয়া যাওয়া অস্ত্র উদ্ধারে ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত পুরস্কার ঘোষণা পুলিশের

‎পুলিশের খোয়া যাওয়া অস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধারে নগদ অর্থ পুরস্কারের ঘোষণা দিয়েছে পুলিশ সদর দপ্তর। উদ্ধার করা অস্ত্রের ধরন অনুযায়ী নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ দেওয়া হবে। ‎

আজ বুধবার পুলিশ ‎সদর দপ্তর থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, এলএমজি (লাইট মেশিনগান) উদ্ধার করলে পুরস্কার হিসেবে দেওয়া হবে ৫ লাখ টাকা, এসএমজি (সাব মেশিনগান) উদ্ধারে দেড় লাখ টাকা, চায়না রাইফেল উদ্ধারে ১ লাখ টাকা এবং পিস্তল বা শটগান উদ্ধারে পুরস্কার নির্ধারণ করা হয়েছে ৫০ হাজার টাকা। এ ছাড়া উদ্ধার করা প্রতিটি গুলির জন্য পুরস্কার দেওয়া হবে ৫০০ টাকা করে। ‎

‎এর আগে পুলিশ সদর দপ্তর জানায়, এসব অস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধারে যাঁরা পুলিশকে তথ্য দেবেন, তাঁদের পরিচয় ও তথ্য গোপন রাখা হবে এবং যথাযথ যাচাইয়ের পর পুরস্কার দেওয়া হবে।

পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন, পুরস্কার ঘোষণার লক্ষ্য হলো দ্রুত এসব অস্ত্র উদ্ধার এবং অস্ত্রের অপব্যবহার ঠেকানো।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

নিউইয়র্কের প্রথম মুসলিম মেয়র নির্বাচিত হলেন মামদানি

বাংলা ভাষার সঙ্গে জোহরান মামদানির ঘরের সম্পর্ক, যোগসূত্র মা মীরা নায়ার

জোট নয়, নির্বাচনী সমঝোতা করবে জামায়াত—জানালেন আমির

আজকের রাশিফল: অফিসে মিষ্টি কথায় মন গলবে বসের, প্রেমের ঝগড়ায় চ্যাটজিপিটিতে ভরসা নয়

বুমরা-সূর্যকুমারকে শাস্তি দিল আইসিসি, নিষিদ্ধ পাকিস্তানি ক্রিকেটার

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত