এম এম মুজাহিদ উদ্দীন
জাপান শুধু প্রযুক্তি বা সৌজন্যর দেশ নয়, তাদের সংস্কৃতিতে লুকিয়ে আছে এমন কিছু বুদ্ধিদীপ্ত অনুশীলন, যা আমাদের দৈনন্দিন জীবনকে সহজ, সুন্দর ও সচেতন করতে পারে। বাড়াতে পারে মনোযোগ ও বুদ্ধিমত্তা। এখানে এমন পাঁচটি জাপানি কৌশল নিয়ে লিখেছেন এম এম মুজাহিদ উদ্দীন।
শিরিতরি কৌশল
একদিন বিকেলে রিমি আর ওর ভাই খেলার ছলে শুরু করল শব্দখেলা। রিমি বলল ‘চাঁদ’। ওর ভাই বলল ‘দুধ’। এরপর রিমি বলল ‘ধনুক’। এইভাবেই চলতে লাগল শব্দের পেছন ধরে নতুন শব্দ বলার খেলা। এটাই জাপানি ‘শিরিতরি’—একটি জনপ্রিয় শব্দখেলা। এতে প্রথম ব্যক্তি একটি শব্দ বলেন এবং পরের ব্যক্তি সেই শব্দের শেষ অক্ষর দিয়ে আরেকটি শব্দ বলেন। এভাবে ঘুরে ঘুরে খেলা চলতে থাকে। যে মনে রাখতে পারে না বা ভুল করে, সে বাদ। আর যে ঠিক ঠিক মনে রেখে শেষ পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি শব্দ বলতে পারে, সে-ই জয়ী হয়।
সত্যজিৎ রায় পরিচালিত ‘অরণ্যের দিনরাত্রি’ সিনেমায় একটি দৃশ্য আছে। সেখানে চরিত্ররা বনে বেড়াতে গিয়ে ‘শিরিতরি’ খেলে। এই খেলায় মজা যেমন আছে, তেমনি আছে মনোযোগ আর স্মৃতিশক্তি বাড়ানোর গুণ। পরিবারের সবাই মিলে সপ্তাহে এক দিন শিরিতরি খেলুন। সময় বেঁধে নিন যে কম সময়ে বেশি শব্দ বলবে, সে জিতবে। ছোটদের ভাষা শেখানোর জন্য এটি এক অসাধারণ কৌশল।
কানজি ভিজ্যুয়ালাইজেশন
তরুণ ছাত্র অর্ণব জাপানি ভাষা শিখতে গিয়ে দেখল, অক্ষরগুলো মুখস্থ করতে কষ্ট হচ্ছে। একদিন শিক্ষক তাঁকে বললেন, ‘তুমি প্রতিটি কানজি অক্ষরের ভেতর একটা ছবি কল্পনা করো।’ অর্ণব ‘mori’ শব্দটির মধ্যে তিনটি গাছ কল্পনা করল। বুঝল, এটা মানে ঘন বন। ‘hazashi’ মানে দুটি গাছ। অর্থাৎ জঙ্গল। এভাবেই প্রতিটি প্রতীক ছবির রূপে রূপান্তর করে মনে রাখা হয়। এই কৌশলই হলো কানজি ভিজ্যুয়ালাইজেশন।
মোজিতসুকি
নতুন বছরে জাপানের একটি গ্রামে উৎসব হচ্ছে। সবাই মিলে তৈরি করছে মোচি-চালের কেক। একজন মুগুর দিয়ে চাল পেষণ করছে, আরেকজন সময়মতো হাত ঢুকিয়ে চালের ভেতর পানি ও ছন্দ দিচ্ছে। একটুও ভুল হলে হতে পারে আঘাত, তাই দুজনের ভেতর গড়ে ওঠে এক অদ্ভুত তালমেল। এটাই হলো মোজিতসুকি। শুধু রান্না নয়, এটি সম্মিলিত মনোযোগ ও ছন্দ শেখায়। দলগত কাজের মধ্যে কীভাবে আস্থা ও সময়জ্ঞান তৈরি হয়, এটি তার এক জীবন্ত উদাহরণ।
জাজেন ফোকাস
রাফি পড়ার টেবিলে বসে আছে, কিন্তু মন একদমই বসছে না। তখন সে শিখল ‘জাজেন’। প্রতিদিন মাত্র পাঁচ মিনিট সে চুপচাপ চোখ আধা বন্ধ করে বসে থাকে, শুধু শ্বাস গোনে। প্রথমে অস্থির লাগলেও ধীরে ধীরে রাফি দেখল, মনোযোগ বাড়ছে, অস্থিরতা কমছে। এভাবেই জাজেন বা জেন ধ্যান আমাদের শেখায় নিজেকে সামলানো, মনকে প্রশিক্ষণ দেওয়া। জাপানিরা ধ্যানকে দৈনন্দিন কাজের অন্তর্ভুক্ত করে ফেলেছে। এই কাজটা নামাজের মাধ্যমেও হয়। তাই নামাজ পড়া বা ইবাদত করা যেতে পারে। অমুসলিম হলে ধ্যান বা ধর্মীয় প্রার্থনা করা যেতে পারে। প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময়ে (যেমন ভোরবেলা বা রাতে ঘুমানোর আগে) ৫ মিনিট জাজেন করুন।
কোজিজি
আকাশ প্রতিদিন সকালে এক কাপ চা বানায়। তিনি সেই চা বানানোতেই তার যত্ন, মনোযোগ, ধৈর্য—সব ঢেলে দেয়। আর এই ছোট ছোট কাজের মধ্য দিয়ে সে খুঁজে পায় শান্তি ও আনন্দ। এটাই হলো কোজিজি ছোট জিনিস, ছোট কাজ, ছোট শব্দ; যেগুলোর মাঝে লুকিয়ে থাকে বড় উপলব্ধি। জাপানিরা মনে করে, জীবন শুধু বড় সিদ্ধান্তে নয়, ছোট অভ্যাসে তৈরি হয়। জাপানিরা ইতিহাস প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে বাঁচিয়ে রাখেন গল্পের ছলে। বাড়ির বয়স্করা ছোটদের পূর্বপুরুষদের গল্প শোনান। তাঁদের ইতিহাস বই, রান্নার বই, নৃতত্ত্বের বই—এ রকম নানা কিছু গল্পের মতো করে বলা বা লেখা হয়। ইতিহাসের নানা ঘটনা আশ্রয় করে বানিয়ে ফেলা হয় সিনেমাও। ফলে সেগুলো আর বিরক্তিকর লাগে না, বরং ‘ইন্টারেস্টিং’ লাগে। আবার মনে রাখাও সহজ হয়।
জাপান শুধু প্রযুক্তি বা সৌজন্যর দেশ নয়, তাদের সংস্কৃতিতে লুকিয়ে আছে এমন কিছু বুদ্ধিদীপ্ত অনুশীলন, যা আমাদের দৈনন্দিন জীবনকে সহজ, সুন্দর ও সচেতন করতে পারে। বাড়াতে পারে মনোযোগ ও বুদ্ধিমত্তা। এখানে এমন পাঁচটি জাপানি কৌশল নিয়ে লিখেছেন এম এম মুজাহিদ উদ্দীন।
শিরিতরি কৌশল
একদিন বিকেলে রিমি আর ওর ভাই খেলার ছলে শুরু করল শব্দখেলা। রিমি বলল ‘চাঁদ’। ওর ভাই বলল ‘দুধ’। এরপর রিমি বলল ‘ধনুক’। এইভাবেই চলতে লাগল শব্দের পেছন ধরে নতুন শব্দ বলার খেলা। এটাই জাপানি ‘শিরিতরি’—একটি জনপ্রিয় শব্দখেলা। এতে প্রথম ব্যক্তি একটি শব্দ বলেন এবং পরের ব্যক্তি সেই শব্দের শেষ অক্ষর দিয়ে আরেকটি শব্দ বলেন। এভাবে ঘুরে ঘুরে খেলা চলতে থাকে। যে মনে রাখতে পারে না বা ভুল করে, সে বাদ। আর যে ঠিক ঠিক মনে রেখে শেষ পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি শব্দ বলতে পারে, সে-ই জয়ী হয়।
সত্যজিৎ রায় পরিচালিত ‘অরণ্যের দিনরাত্রি’ সিনেমায় একটি দৃশ্য আছে। সেখানে চরিত্ররা বনে বেড়াতে গিয়ে ‘শিরিতরি’ খেলে। এই খেলায় মজা যেমন আছে, তেমনি আছে মনোযোগ আর স্মৃতিশক্তি বাড়ানোর গুণ। পরিবারের সবাই মিলে সপ্তাহে এক দিন শিরিতরি খেলুন। সময় বেঁধে নিন যে কম সময়ে বেশি শব্দ বলবে, সে জিতবে। ছোটদের ভাষা শেখানোর জন্য এটি এক অসাধারণ কৌশল।
কানজি ভিজ্যুয়ালাইজেশন
তরুণ ছাত্র অর্ণব জাপানি ভাষা শিখতে গিয়ে দেখল, অক্ষরগুলো মুখস্থ করতে কষ্ট হচ্ছে। একদিন শিক্ষক তাঁকে বললেন, ‘তুমি প্রতিটি কানজি অক্ষরের ভেতর একটা ছবি কল্পনা করো।’ অর্ণব ‘mori’ শব্দটির মধ্যে তিনটি গাছ কল্পনা করল। বুঝল, এটা মানে ঘন বন। ‘hazashi’ মানে দুটি গাছ। অর্থাৎ জঙ্গল। এভাবেই প্রতিটি প্রতীক ছবির রূপে রূপান্তর করে মনে রাখা হয়। এই কৌশলই হলো কানজি ভিজ্যুয়ালাইজেশন।
মোজিতসুকি
নতুন বছরে জাপানের একটি গ্রামে উৎসব হচ্ছে। সবাই মিলে তৈরি করছে মোচি-চালের কেক। একজন মুগুর দিয়ে চাল পেষণ করছে, আরেকজন সময়মতো হাত ঢুকিয়ে চালের ভেতর পানি ও ছন্দ দিচ্ছে। একটুও ভুল হলে হতে পারে আঘাত, তাই দুজনের ভেতর গড়ে ওঠে এক অদ্ভুত তালমেল। এটাই হলো মোজিতসুকি। শুধু রান্না নয়, এটি সম্মিলিত মনোযোগ ও ছন্দ শেখায়। দলগত কাজের মধ্যে কীভাবে আস্থা ও সময়জ্ঞান তৈরি হয়, এটি তার এক জীবন্ত উদাহরণ।
জাজেন ফোকাস
রাফি পড়ার টেবিলে বসে আছে, কিন্তু মন একদমই বসছে না। তখন সে শিখল ‘জাজেন’। প্রতিদিন মাত্র পাঁচ মিনিট সে চুপচাপ চোখ আধা বন্ধ করে বসে থাকে, শুধু শ্বাস গোনে। প্রথমে অস্থির লাগলেও ধীরে ধীরে রাফি দেখল, মনোযোগ বাড়ছে, অস্থিরতা কমছে। এভাবেই জাজেন বা জেন ধ্যান আমাদের শেখায় নিজেকে সামলানো, মনকে প্রশিক্ষণ দেওয়া। জাপানিরা ধ্যানকে দৈনন্দিন কাজের অন্তর্ভুক্ত করে ফেলেছে। এই কাজটা নামাজের মাধ্যমেও হয়। তাই নামাজ পড়া বা ইবাদত করা যেতে পারে। অমুসলিম হলে ধ্যান বা ধর্মীয় প্রার্থনা করা যেতে পারে। প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময়ে (যেমন ভোরবেলা বা রাতে ঘুমানোর আগে) ৫ মিনিট জাজেন করুন।
কোজিজি
আকাশ প্রতিদিন সকালে এক কাপ চা বানায়। তিনি সেই চা বানানোতেই তার যত্ন, মনোযোগ, ধৈর্য—সব ঢেলে দেয়। আর এই ছোট ছোট কাজের মধ্য দিয়ে সে খুঁজে পায় শান্তি ও আনন্দ। এটাই হলো কোজিজি ছোট জিনিস, ছোট কাজ, ছোট শব্দ; যেগুলোর মাঝে লুকিয়ে থাকে বড় উপলব্ধি। জাপানিরা মনে করে, জীবন শুধু বড় সিদ্ধান্তে নয়, ছোট অভ্যাসে তৈরি হয়। জাপানিরা ইতিহাস প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে বাঁচিয়ে রাখেন গল্পের ছলে। বাড়ির বয়স্করা ছোটদের পূর্বপুরুষদের গল্প শোনান। তাঁদের ইতিহাস বই, রান্নার বই, নৃতত্ত্বের বই—এ রকম নানা কিছু গল্পের মতো করে বলা বা লেখা হয়। ইতিহাসের নানা ঘটনা আশ্রয় করে বানিয়ে ফেলা হয় সিনেমাও। ফলে সেগুলো আর বিরক্তিকর লাগে না, বরং ‘ইন্টারেস্টিং’ লাগে। আবার মনে রাখাও সহজ হয়।
ব্যাংকার্স সিলেকশন কমিটির (বিএসসিএস) সদস্যভুক্ত জনতা ব্যাংক পিএলসিতে ২০২১ সালভিত্তিক সিনিয়র অফিসারের (ফিন্যান্সিয়াল অ্যানালিস্ট) ২১টি শূন্য পদে অনুষ্ঠিত নিয়োগ পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হয়েছে।
১৭ ঘণ্টা আগেযমুনা ব্যাংক পিএলসিতে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়েছে। বেসরকারি ব্যাংকটির একটি শূন্য পদে লোকবল নিয়োগ দেওয়া হবে। গত ৮ মে এ নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়েছে। আগ্রহী প্রার্থীরা অনলাইনের মাধ্যমে আবেদন করতে পারবেন।
১৮ ঘণ্টা আগেজনবল নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে ইবনে সিনা ট্রাস্ট। প্রতিষ্ঠানটির একটি শূন্য পদে একাধিক লোকবল নিয়োগ দেওয়া হবে। গত ৭ মে এ নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়েছে। আগ্রহী প্রার্থীরা ডাকযোগে আবেদন করতে পারবেন।
১৮ ঘণ্টা আগেঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে (ডিএনসিসি) পুনর্নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়েছে। ডিএনসিসির ৯ ধরনের শূন্য পদে মোট ৬৩ জনকে নিয়োগ দেওয়া হবে। গত ২৯ এপ্রিল এ নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়। আগ্রহী ও যোগ্য প্রার্থীরা আবেদন করতে পারবেন।
২ দিন আগে