কাউসার লাবীব

মেঘনা, শীতলক্ষ্যা, আড়িয়াল খাঁ ও পুরোনো ব্রহ্মপুত্রের তীরবিধৌত প্রাচীন সভ্যতা ও ঐতিহ্যে লালিত জেলার নাম নরসিংদী। এ জেলার বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে রয়েছে বেশ কিছু প্রাচীন মুসলিম স্থাপত্য। আছে বেশ কিছু ঐতিহাসিক মসজিদ। এই স্থাপনাগুলো যেমনি প্রাচীন স্থাপত্যরীতির সাক্ষ্য দেয়, তেমনি তুলে ধরে মুসলিম ইতিহাসের এক গৌরবময় অধ্যায়।
কালের সাক্ষী বেলাব জামে মসজিদ
বাংলাদেশের দৃষ্টিনন্দন মসজিদগুলোর মধ্যে অন্যতম নরসিংদী জেলার বেলাব উপজেলার বেলাব বাজার কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ। প্রায় ৩০০ বছর আগে প্রতিষ্ঠিত এই মসজিদটির প্রথম প্রতিষ্ঠাতা ও জমিদাতা ছিলেন বেলাব উপজেলার বাজনাব ইউনিয়নের বাসিন্দা মাহমুদ ব্যাপারী।
প্রথম নির্মাণের সময় মসজিদটির ছিল সাতটি গম্বুজ, যা একে অত্র এলাকার অন্যান্য মসজিদ থেকে আলাদাভাবে চিহ্নিত করেছিল। লোকমুখে প্রচলিত আছে—প্রতিষ্ঠার শুরুর সময় মসজিদের ভেতর কোরআন তিলাওয়াতের গায়েবি আওয়াজ শোনা যেত। এই কারণেই মসজিদটি ‘ফজিলতের মসজিদ’ হিসেবে পরিচিতি লাভ করে।
প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই জুমার নামাজে এখানে বিপুলসংখ্যক মুসল্লির সমাগম হতো, যা ধীরে ধীরে মসজিদের ধারণক্ষমতার বাইরে চলে যায়। মুসল্লির সংখ্যা ক্রমাগত বাড়তে থাকায় মসজিদটি আধুনিক অবকাঠামোতে নির্মাণ করা হয়। তিনতলাবিশিষ্ট এই বিশাল মসজিদটি শুধু নামাজ আদায়ের স্থান নয়, বরং দর্শনার্থীদের কাছেও একটি আকর্ষণীয় স্থানে পরিণত হয়েছে। মসজিদের ভেতরে ঝাড়বাতির দৃষ্টিনন্দন সাজ, সুউচ্চ মিনার ও গম্বুজ এবং পশ্চিম পাশে অবস্থিত পুকুর—সব মিলিয়ে এটি এক অপূর্ব সৌন্দর্য ধারণ করে। রাতে বৈদ্যুতিক আলোয় আলোকিত হয়ে পুরো এলাকা এক দৃষ্টিনন্দন পরিবেশ সৃষ্টি করে, যা যেকোনো দর্শনার্থীর মন কাড়ে।

৩০০ বছরের পুরোনো দেওয়ান শরিফ মসজিদ
নরসিংদী জেলার পলাশ উপজেলার নিবিড় পল্লি পারুলিয়া গ্রামে শান্ত পরিবেশে দাঁড়িয়ে আছে ৩০০ বছর পুরোনো একটি ঐতিহাসিক মসজিদ। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ঘেরা মোগল আমলের এই নিদর্শনটি মুসলিম স্থাপত্য ও ইতিহাসের এক জীবন্ত দলিল।
১৭১৯ খ্রিষ্টাব্দে মসজিদটি নির্মাণ করেন বাংলার সুবেদার মুর্শিদকুলি খাঁর কন্যা ও ঈশা খাঁর পঞ্চম অধস্তন বংশধর দেওয়ান শরিফ খাঁর স্ত্রী—জয়নব বিবি। মসজিদটির আওতায় রয়েছে প্রায় ১২ বিঘা জমি। রয়েছে চারটি শানবাঁধানো পুকুরঘাট। প্রায় ৫ ফুট প্রস্থ দেয়ালে নির্মিত মসজিদটির ভেতরে রয়েছে মজবুত পাথরের খিলান এবং শিল্পসুষমামণ্ডিত কারুকাজ। মসজিদে রয়েছে একটি প্রধান গেট, পূর্বদিকে তিনটি দরজা এবং উত্তর ও দক্ষিণ পাশে একটি করে দরজা। প্রাঙ্গণের উত্তর-পূর্ব কোণে দাঁড়িয়ে আছে দুটি সুউচ্চ মিনার। প্রাচীরবেষ্টিত প্রশস্ত প্রাঙ্গণজুড়ে মসজিদটির পরিবেশ এক অনন্য পবিত্রতা সৃষ্টি করে।
মসজিদের সৌন্দর্য বৃদ্ধির লক্ষ্যে নির্মাণকালে ইরান, বাগদাদ ও ইয়েমেন থেকে আনা হয়েছিল দক্ষ কারিগরদের, যা এর শিল্পনির্মাণে স্পষ্টভাবে প্রতিফলিত। মসজিদের পাশেই, পশ্চিম দিকের পুকুরঘাটের পূর্ব তীরে রয়েছে এক গম্বুজবিশিষ্ট সৌধ। এখানে রয়েছে দেওয়ান শরিফ খাঁ ও তাঁর স্ত্রী জয়নব বিবির যুগল সমাধি।

তাজমহলের আদলে আটকান্দি নীলকুঠি মসজিদ
রায়পুরা উপজেলার আমিরগঞ্জ ইউনিয়নের আটকান্দি গ্রামে অবস্থিত আটকান্দি নীলকুঠি জামে মসজিদ। এটির নির্মাতা মৌলভি আলিম উদ্দিন, যিনি দারুল উলুম দেওবন্দ থেকে মাওলানা পাস করেছিলেন। মেঘনার শাখা নদীর পাড়ে, ছায়ানিবিড় পরিবেশে স্থাপিত এ মসজিদটি কালের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে প্রায় ২০০ বছরের বেশি সময় ধরে।
মসজিদটির স্থাপত্যশৈলী মোগল আমলের নিদর্শন বহন করে। সুদূর মহীশূর থেকে আনা কারিগরদের দিয়ে মসজিদটি নির্মাণ করা হয়। অনেকে এর গম্বুজগুলোর সঙ্গে আগ্রার তাজমহলের গম্বুজের তুলনা করেন। মসজিদটির সবচেয়ে বড় বৈশিষ্ট্য এর আটটি গম্বুজ—মূল মসজিদে তিনটি। এর মধ্যে মাঝেরটি অপেক্ষাকৃত বড়; এবং বারান্দায় রয়েছে আরও পাঁচটি গম্বুজ। এই আটটি গম্বুজ থেকে গ্রামেরও নামকরণ হয় ‘আটকান্দি।’
মসজিদটির প্রবেশপথ অত্যন্ত দৃষ্টিনন্দন। বারান্দায় প্রবেশের জন্য সাতটি এবং ভেতরে প্রবেশের জন্য রয়েছে দুটি দরজা। বারান্দা ও দেয়ালের গায়ে রয়েছে ৩৪টি খিলান, প্রতিটির দেয়ালের ওপর রয়েছে শৈল্পিক কারুকাজ। দেয়ালগুলো দুই ফুট পুরু। মসজিদের কারুকাজে ব্যবহৃত হয়েছে বাহারি রঙের মোজাইক, মার্বেল এবং দুর্লভ পুঁথি পাথর। মিহরাবে রয়েছে নানা ফুল ও পাতার চিত্রকর্ম।

আশ্রাবপুর গায়েবি মসজিদ
আশরাফপুর গ্রামটি নরসিংদী জেলার শিবপুর উপজেলার একটি প্রাচীন জনপদ। এই জনপদেই বিস্ময় জাগানো গায়েবি মসজিদের অবস্থান। মসজিদটি ১৫২৪ খ্রিষ্টাব্দে গৌড়ের স্বাধীন নরপতি আলাউদ্দিন হোসেন শাহের পুত্র সুলতান নাসিরুদ্দিন আবুল মুজাফফর নসর শাহর শাসনামলে দিলওয়ার খান নির্মাণ করেছিলেন। এটি ছিল সুলতানি স্থাপত্যরীতিতে নির্মিত এক গম্বুজবিশিষ্ট ছোট মসজিদ।
তবে ১৮৯৭ সালের বিধ্বংসী ভূমিকম্পে মসজিদটি ভেঙে পড়ে এবং পরবর্তী সময়ে জঙ্গলে ঢাকা পড়ে। ঘন জঙ্গলে ঢাকা অবস্থায় এটি একরকম হারিয়েই গিয়েছিল ইতিহাসের পাতায়! পরে ১৯৪০ সালে মাওলানা সৈয়দ আলীর নেতৃত্বে জঙ্গল পরিষ্কার করে মসজিদটি পুনরুদ্ধার করা হয়। অনেকেই তখন একে ‘গায়েবি মসজিদ’ নামে অভিহিত করতেন। সে সময়ও মিহরাব এবং পশ্চিম দেয়ালের কিছু অংশ অবশিষ্ট ছিল। বর্তমানে ওই স্থানেই একটি আধুনিক তিন গম্বুজবিশিষ্ট মসজিদ নির্মিত হয়েছে।
মসজিদটির উত্তরে একসময় ছিল বৃহৎ দিঘি, যার অস্তিত্ব আজ আর দৃশ্যমান নয়। কিন্তু তার নিঃশব্দ চিহ্ন আজও মাটি ও স্মৃতিতে বিদ্যমান। দিঘির পাশেই রয়েছে পাথর দিয়ে বাঁধানো চারটি কবর, যা নির্মাতা বা তাঁর পরিবারের সদস্যদের সমাধি বলে ধারণা করা হয়।

মেঘনা, শীতলক্ষ্যা, আড়িয়াল খাঁ ও পুরোনো ব্রহ্মপুত্রের তীরবিধৌত প্রাচীন সভ্যতা ও ঐতিহ্যে লালিত জেলার নাম নরসিংদী। এ জেলার বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে রয়েছে বেশ কিছু প্রাচীন মুসলিম স্থাপত্য। আছে বেশ কিছু ঐতিহাসিক মসজিদ। এই স্থাপনাগুলো যেমনি প্রাচীন স্থাপত্যরীতির সাক্ষ্য দেয়, তেমনি তুলে ধরে মুসলিম ইতিহাসের এক গৌরবময় অধ্যায়।
কালের সাক্ষী বেলাব জামে মসজিদ
বাংলাদেশের দৃষ্টিনন্দন মসজিদগুলোর মধ্যে অন্যতম নরসিংদী জেলার বেলাব উপজেলার বেলাব বাজার কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ। প্রায় ৩০০ বছর আগে প্রতিষ্ঠিত এই মসজিদটির প্রথম প্রতিষ্ঠাতা ও জমিদাতা ছিলেন বেলাব উপজেলার বাজনাব ইউনিয়নের বাসিন্দা মাহমুদ ব্যাপারী।
প্রথম নির্মাণের সময় মসজিদটির ছিল সাতটি গম্বুজ, যা একে অত্র এলাকার অন্যান্য মসজিদ থেকে আলাদাভাবে চিহ্নিত করেছিল। লোকমুখে প্রচলিত আছে—প্রতিষ্ঠার শুরুর সময় মসজিদের ভেতর কোরআন তিলাওয়াতের গায়েবি আওয়াজ শোনা যেত। এই কারণেই মসজিদটি ‘ফজিলতের মসজিদ’ হিসেবে পরিচিতি লাভ করে।
প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই জুমার নামাজে এখানে বিপুলসংখ্যক মুসল্লির সমাগম হতো, যা ধীরে ধীরে মসজিদের ধারণক্ষমতার বাইরে চলে যায়। মুসল্লির সংখ্যা ক্রমাগত বাড়তে থাকায় মসজিদটি আধুনিক অবকাঠামোতে নির্মাণ করা হয়। তিনতলাবিশিষ্ট এই বিশাল মসজিদটি শুধু নামাজ আদায়ের স্থান নয়, বরং দর্শনার্থীদের কাছেও একটি আকর্ষণীয় স্থানে পরিণত হয়েছে। মসজিদের ভেতরে ঝাড়বাতির দৃষ্টিনন্দন সাজ, সুউচ্চ মিনার ও গম্বুজ এবং পশ্চিম পাশে অবস্থিত পুকুর—সব মিলিয়ে এটি এক অপূর্ব সৌন্দর্য ধারণ করে। রাতে বৈদ্যুতিক আলোয় আলোকিত হয়ে পুরো এলাকা এক দৃষ্টিনন্দন পরিবেশ সৃষ্টি করে, যা যেকোনো দর্শনার্থীর মন কাড়ে।

৩০০ বছরের পুরোনো দেওয়ান শরিফ মসজিদ
নরসিংদী জেলার পলাশ উপজেলার নিবিড় পল্লি পারুলিয়া গ্রামে শান্ত পরিবেশে দাঁড়িয়ে আছে ৩০০ বছর পুরোনো একটি ঐতিহাসিক মসজিদ। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ঘেরা মোগল আমলের এই নিদর্শনটি মুসলিম স্থাপত্য ও ইতিহাসের এক জীবন্ত দলিল।
১৭১৯ খ্রিষ্টাব্দে মসজিদটি নির্মাণ করেন বাংলার সুবেদার মুর্শিদকুলি খাঁর কন্যা ও ঈশা খাঁর পঞ্চম অধস্তন বংশধর দেওয়ান শরিফ খাঁর স্ত্রী—জয়নব বিবি। মসজিদটির আওতায় রয়েছে প্রায় ১২ বিঘা জমি। রয়েছে চারটি শানবাঁধানো পুকুরঘাট। প্রায় ৫ ফুট প্রস্থ দেয়ালে নির্মিত মসজিদটির ভেতরে রয়েছে মজবুত পাথরের খিলান এবং শিল্পসুষমামণ্ডিত কারুকাজ। মসজিদে রয়েছে একটি প্রধান গেট, পূর্বদিকে তিনটি দরজা এবং উত্তর ও দক্ষিণ পাশে একটি করে দরজা। প্রাঙ্গণের উত্তর-পূর্ব কোণে দাঁড়িয়ে আছে দুটি সুউচ্চ মিনার। প্রাচীরবেষ্টিত প্রশস্ত প্রাঙ্গণজুড়ে মসজিদটির পরিবেশ এক অনন্য পবিত্রতা সৃষ্টি করে।
মসজিদের সৌন্দর্য বৃদ্ধির লক্ষ্যে নির্মাণকালে ইরান, বাগদাদ ও ইয়েমেন থেকে আনা হয়েছিল দক্ষ কারিগরদের, যা এর শিল্পনির্মাণে স্পষ্টভাবে প্রতিফলিত। মসজিদের পাশেই, পশ্চিম দিকের পুকুরঘাটের পূর্ব তীরে রয়েছে এক গম্বুজবিশিষ্ট সৌধ। এখানে রয়েছে দেওয়ান শরিফ খাঁ ও তাঁর স্ত্রী জয়নব বিবির যুগল সমাধি।

তাজমহলের আদলে আটকান্দি নীলকুঠি মসজিদ
রায়পুরা উপজেলার আমিরগঞ্জ ইউনিয়নের আটকান্দি গ্রামে অবস্থিত আটকান্দি নীলকুঠি জামে মসজিদ। এটির নির্মাতা মৌলভি আলিম উদ্দিন, যিনি দারুল উলুম দেওবন্দ থেকে মাওলানা পাস করেছিলেন। মেঘনার শাখা নদীর পাড়ে, ছায়ানিবিড় পরিবেশে স্থাপিত এ মসজিদটি কালের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে প্রায় ২০০ বছরের বেশি সময় ধরে।
মসজিদটির স্থাপত্যশৈলী মোগল আমলের নিদর্শন বহন করে। সুদূর মহীশূর থেকে আনা কারিগরদের দিয়ে মসজিদটি নির্মাণ করা হয়। অনেকে এর গম্বুজগুলোর সঙ্গে আগ্রার তাজমহলের গম্বুজের তুলনা করেন। মসজিদটির সবচেয়ে বড় বৈশিষ্ট্য এর আটটি গম্বুজ—মূল মসজিদে তিনটি। এর মধ্যে মাঝেরটি অপেক্ষাকৃত বড়; এবং বারান্দায় রয়েছে আরও পাঁচটি গম্বুজ। এই আটটি গম্বুজ থেকে গ্রামেরও নামকরণ হয় ‘আটকান্দি।’
মসজিদটির প্রবেশপথ অত্যন্ত দৃষ্টিনন্দন। বারান্দায় প্রবেশের জন্য সাতটি এবং ভেতরে প্রবেশের জন্য রয়েছে দুটি দরজা। বারান্দা ও দেয়ালের গায়ে রয়েছে ৩৪টি খিলান, প্রতিটির দেয়ালের ওপর রয়েছে শৈল্পিক কারুকাজ। দেয়ালগুলো দুই ফুট পুরু। মসজিদের কারুকাজে ব্যবহৃত হয়েছে বাহারি রঙের মোজাইক, মার্বেল এবং দুর্লভ পুঁথি পাথর। মিহরাবে রয়েছে নানা ফুল ও পাতার চিত্রকর্ম।

আশ্রাবপুর গায়েবি মসজিদ
আশরাফপুর গ্রামটি নরসিংদী জেলার শিবপুর উপজেলার একটি প্রাচীন জনপদ। এই জনপদেই বিস্ময় জাগানো গায়েবি মসজিদের অবস্থান। মসজিদটি ১৫২৪ খ্রিষ্টাব্দে গৌড়ের স্বাধীন নরপতি আলাউদ্দিন হোসেন শাহের পুত্র সুলতান নাসিরুদ্দিন আবুল মুজাফফর নসর শাহর শাসনামলে দিলওয়ার খান নির্মাণ করেছিলেন। এটি ছিল সুলতানি স্থাপত্যরীতিতে নির্মিত এক গম্বুজবিশিষ্ট ছোট মসজিদ।
তবে ১৮৯৭ সালের বিধ্বংসী ভূমিকম্পে মসজিদটি ভেঙে পড়ে এবং পরবর্তী সময়ে জঙ্গলে ঢাকা পড়ে। ঘন জঙ্গলে ঢাকা অবস্থায় এটি একরকম হারিয়েই গিয়েছিল ইতিহাসের পাতায়! পরে ১৯৪০ সালে মাওলানা সৈয়দ আলীর নেতৃত্বে জঙ্গল পরিষ্কার করে মসজিদটি পুনরুদ্ধার করা হয়। অনেকেই তখন একে ‘গায়েবি মসজিদ’ নামে অভিহিত করতেন। সে সময়ও মিহরাব এবং পশ্চিম দেয়ালের কিছু অংশ অবশিষ্ট ছিল। বর্তমানে ওই স্থানেই একটি আধুনিক তিন গম্বুজবিশিষ্ট মসজিদ নির্মিত হয়েছে।
মসজিদটির উত্তরে একসময় ছিল বৃহৎ দিঘি, যার অস্তিত্ব আজ আর দৃশ্যমান নয়। কিন্তু তার নিঃশব্দ চিহ্ন আজও মাটি ও স্মৃতিতে বিদ্যমান। দিঘির পাশেই রয়েছে পাথর দিয়ে বাঁধানো চারটি কবর, যা নির্মাতা বা তাঁর পরিবারের সদস্যদের সমাধি বলে ধারণা করা হয়।
কাউসার লাবীব

মেঘনা, শীতলক্ষ্যা, আড়িয়াল খাঁ ও পুরোনো ব্রহ্মপুত্রের তীরবিধৌত প্রাচীন সভ্যতা ও ঐতিহ্যে লালিত জেলার নাম নরসিংদী। এ জেলার বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে রয়েছে বেশ কিছু প্রাচীন মুসলিম স্থাপত্য। আছে বেশ কিছু ঐতিহাসিক মসজিদ। এই স্থাপনাগুলো যেমনি প্রাচীন স্থাপত্যরীতির সাক্ষ্য দেয়, তেমনি তুলে ধরে মুসলিম ইতিহাসের এক গৌরবময় অধ্যায়।
কালের সাক্ষী বেলাব জামে মসজিদ
বাংলাদেশের দৃষ্টিনন্দন মসজিদগুলোর মধ্যে অন্যতম নরসিংদী জেলার বেলাব উপজেলার বেলাব বাজার কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ। প্রায় ৩০০ বছর আগে প্রতিষ্ঠিত এই মসজিদটির প্রথম প্রতিষ্ঠাতা ও জমিদাতা ছিলেন বেলাব উপজেলার বাজনাব ইউনিয়নের বাসিন্দা মাহমুদ ব্যাপারী।
প্রথম নির্মাণের সময় মসজিদটির ছিল সাতটি গম্বুজ, যা একে অত্র এলাকার অন্যান্য মসজিদ থেকে আলাদাভাবে চিহ্নিত করেছিল। লোকমুখে প্রচলিত আছে—প্রতিষ্ঠার শুরুর সময় মসজিদের ভেতর কোরআন তিলাওয়াতের গায়েবি আওয়াজ শোনা যেত। এই কারণেই মসজিদটি ‘ফজিলতের মসজিদ’ হিসেবে পরিচিতি লাভ করে।
প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই জুমার নামাজে এখানে বিপুলসংখ্যক মুসল্লির সমাগম হতো, যা ধীরে ধীরে মসজিদের ধারণক্ষমতার বাইরে চলে যায়। মুসল্লির সংখ্যা ক্রমাগত বাড়তে থাকায় মসজিদটি আধুনিক অবকাঠামোতে নির্মাণ করা হয়। তিনতলাবিশিষ্ট এই বিশাল মসজিদটি শুধু নামাজ আদায়ের স্থান নয়, বরং দর্শনার্থীদের কাছেও একটি আকর্ষণীয় স্থানে পরিণত হয়েছে। মসজিদের ভেতরে ঝাড়বাতির দৃষ্টিনন্দন সাজ, সুউচ্চ মিনার ও গম্বুজ এবং পশ্চিম পাশে অবস্থিত পুকুর—সব মিলিয়ে এটি এক অপূর্ব সৌন্দর্য ধারণ করে। রাতে বৈদ্যুতিক আলোয় আলোকিত হয়ে পুরো এলাকা এক দৃষ্টিনন্দন পরিবেশ সৃষ্টি করে, যা যেকোনো দর্শনার্থীর মন কাড়ে।

৩০০ বছরের পুরোনো দেওয়ান শরিফ মসজিদ
নরসিংদী জেলার পলাশ উপজেলার নিবিড় পল্লি পারুলিয়া গ্রামে শান্ত পরিবেশে দাঁড়িয়ে আছে ৩০০ বছর পুরোনো একটি ঐতিহাসিক মসজিদ। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ঘেরা মোগল আমলের এই নিদর্শনটি মুসলিম স্থাপত্য ও ইতিহাসের এক জীবন্ত দলিল।
১৭১৯ খ্রিষ্টাব্দে মসজিদটি নির্মাণ করেন বাংলার সুবেদার মুর্শিদকুলি খাঁর কন্যা ও ঈশা খাঁর পঞ্চম অধস্তন বংশধর দেওয়ান শরিফ খাঁর স্ত্রী—জয়নব বিবি। মসজিদটির আওতায় রয়েছে প্রায় ১২ বিঘা জমি। রয়েছে চারটি শানবাঁধানো পুকুরঘাট। প্রায় ৫ ফুট প্রস্থ দেয়ালে নির্মিত মসজিদটির ভেতরে রয়েছে মজবুত পাথরের খিলান এবং শিল্পসুষমামণ্ডিত কারুকাজ। মসজিদে রয়েছে একটি প্রধান গেট, পূর্বদিকে তিনটি দরজা এবং উত্তর ও দক্ষিণ পাশে একটি করে দরজা। প্রাঙ্গণের উত্তর-পূর্ব কোণে দাঁড়িয়ে আছে দুটি সুউচ্চ মিনার। প্রাচীরবেষ্টিত প্রশস্ত প্রাঙ্গণজুড়ে মসজিদটির পরিবেশ এক অনন্য পবিত্রতা সৃষ্টি করে।
মসজিদের সৌন্দর্য বৃদ্ধির লক্ষ্যে নির্মাণকালে ইরান, বাগদাদ ও ইয়েমেন থেকে আনা হয়েছিল দক্ষ কারিগরদের, যা এর শিল্পনির্মাণে স্পষ্টভাবে প্রতিফলিত। মসজিদের পাশেই, পশ্চিম দিকের পুকুরঘাটের পূর্ব তীরে রয়েছে এক গম্বুজবিশিষ্ট সৌধ। এখানে রয়েছে দেওয়ান শরিফ খাঁ ও তাঁর স্ত্রী জয়নব বিবির যুগল সমাধি।

তাজমহলের আদলে আটকান্দি নীলকুঠি মসজিদ
রায়পুরা উপজেলার আমিরগঞ্জ ইউনিয়নের আটকান্দি গ্রামে অবস্থিত আটকান্দি নীলকুঠি জামে মসজিদ। এটির নির্মাতা মৌলভি আলিম উদ্দিন, যিনি দারুল উলুম দেওবন্দ থেকে মাওলানা পাস করেছিলেন। মেঘনার শাখা নদীর পাড়ে, ছায়ানিবিড় পরিবেশে স্থাপিত এ মসজিদটি কালের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে প্রায় ২০০ বছরের বেশি সময় ধরে।
মসজিদটির স্থাপত্যশৈলী মোগল আমলের নিদর্শন বহন করে। সুদূর মহীশূর থেকে আনা কারিগরদের দিয়ে মসজিদটি নির্মাণ করা হয়। অনেকে এর গম্বুজগুলোর সঙ্গে আগ্রার তাজমহলের গম্বুজের তুলনা করেন। মসজিদটির সবচেয়ে বড় বৈশিষ্ট্য এর আটটি গম্বুজ—মূল মসজিদে তিনটি। এর মধ্যে মাঝেরটি অপেক্ষাকৃত বড়; এবং বারান্দায় রয়েছে আরও পাঁচটি গম্বুজ। এই আটটি গম্বুজ থেকে গ্রামেরও নামকরণ হয় ‘আটকান্দি।’
মসজিদটির প্রবেশপথ অত্যন্ত দৃষ্টিনন্দন। বারান্দায় প্রবেশের জন্য সাতটি এবং ভেতরে প্রবেশের জন্য রয়েছে দুটি দরজা। বারান্দা ও দেয়ালের গায়ে রয়েছে ৩৪টি খিলান, প্রতিটির দেয়ালের ওপর রয়েছে শৈল্পিক কারুকাজ। দেয়ালগুলো দুই ফুট পুরু। মসজিদের কারুকাজে ব্যবহৃত হয়েছে বাহারি রঙের মোজাইক, মার্বেল এবং দুর্লভ পুঁথি পাথর। মিহরাবে রয়েছে নানা ফুল ও পাতার চিত্রকর্ম।

আশ্রাবপুর গায়েবি মসজিদ
আশরাফপুর গ্রামটি নরসিংদী জেলার শিবপুর উপজেলার একটি প্রাচীন জনপদ। এই জনপদেই বিস্ময় জাগানো গায়েবি মসজিদের অবস্থান। মসজিদটি ১৫২৪ খ্রিষ্টাব্দে গৌড়ের স্বাধীন নরপতি আলাউদ্দিন হোসেন শাহের পুত্র সুলতান নাসিরুদ্দিন আবুল মুজাফফর নসর শাহর শাসনামলে দিলওয়ার খান নির্মাণ করেছিলেন। এটি ছিল সুলতানি স্থাপত্যরীতিতে নির্মিত এক গম্বুজবিশিষ্ট ছোট মসজিদ।
তবে ১৮৯৭ সালের বিধ্বংসী ভূমিকম্পে মসজিদটি ভেঙে পড়ে এবং পরবর্তী সময়ে জঙ্গলে ঢাকা পড়ে। ঘন জঙ্গলে ঢাকা অবস্থায় এটি একরকম হারিয়েই গিয়েছিল ইতিহাসের পাতায়! পরে ১৯৪০ সালে মাওলানা সৈয়দ আলীর নেতৃত্বে জঙ্গল পরিষ্কার করে মসজিদটি পুনরুদ্ধার করা হয়। অনেকেই তখন একে ‘গায়েবি মসজিদ’ নামে অভিহিত করতেন। সে সময়ও মিহরাব এবং পশ্চিম দেয়ালের কিছু অংশ অবশিষ্ট ছিল। বর্তমানে ওই স্থানেই একটি আধুনিক তিন গম্বুজবিশিষ্ট মসজিদ নির্মিত হয়েছে।
মসজিদটির উত্তরে একসময় ছিল বৃহৎ দিঘি, যার অস্তিত্ব আজ আর দৃশ্যমান নয়। কিন্তু তার নিঃশব্দ চিহ্ন আজও মাটি ও স্মৃতিতে বিদ্যমান। দিঘির পাশেই রয়েছে পাথর দিয়ে বাঁধানো চারটি কবর, যা নির্মাতা বা তাঁর পরিবারের সদস্যদের সমাধি বলে ধারণা করা হয়।

মেঘনা, শীতলক্ষ্যা, আড়িয়াল খাঁ ও পুরোনো ব্রহ্মপুত্রের তীরবিধৌত প্রাচীন সভ্যতা ও ঐতিহ্যে লালিত জেলার নাম নরসিংদী। এ জেলার বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে রয়েছে বেশ কিছু প্রাচীন মুসলিম স্থাপত্য। আছে বেশ কিছু ঐতিহাসিক মসজিদ। এই স্থাপনাগুলো যেমনি প্রাচীন স্থাপত্যরীতির সাক্ষ্য দেয়, তেমনি তুলে ধরে মুসলিম ইতিহাসের এক গৌরবময় অধ্যায়।
কালের সাক্ষী বেলাব জামে মসজিদ
বাংলাদেশের দৃষ্টিনন্দন মসজিদগুলোর মধ্যে অন্যতম নরসিংদী জেলার বেলাব উপজেলার বেলাব বাজার কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ। প্রায় ৩০০ বছর আগে প্রতিষ্ঠিত এই মসজিদটির প্রথম প্রতিষ্ঠাতা ও জমিদাতা ছিলেন বেলাব উপজেলার বাজনাব ইউনিয়নের বাসিন্দা মাহমুদ ব্যাপারী।
প্রথম নির্মাণের সময় মসজিদটির ছিল সাতটি গম্বুজ, যা একে অত্র এলাকার অন্যান্য মসজিদ থেকে আলাদাভাবে চিহ্নিত করেছিল। লোকমুখে প্রচলিত আছে—প্রতিষ্ঠার শুরুর সময় মসজিদের ভেতর কোরআন তিলাওয়াতের গায়েবি আওয়াজ শোনা যেত। এই কারণেই মসজিদটি ‘ফজিলতের মসজিদ’ হিসেবে পরিচিতি লাভ করে।
প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই জুমার নামাজে এখানে বিপুলসংখ্যক মুসল্লির সমাগম হতো, যা ধীরে ধীরে মসজিদের ধারণক্ষমতার বাইরে চলে যায়। মুসল্লির সংখ্যা ক্রমাগত বাড়তে থাকায় মসজিদটি আধুনিক অবকাঠামোতে নির্মাণ করা হয়। তিনতলাবিশিষ্ট এই বিশাল মসজিদটি শুধু নামাজ আদায়ের স্থান নয়, বরং দর্শনার্থীদের কাছেও একটি আকর্ষণীয় স্থানে পরিণত হয়েছে। মসজিদের ভেতরে ঝাড়বাতির দৃষ্টিনন্দন সাজ, সুউচ্চ মিনার ও গম্বুজ এবং পশ্চিম পাশে অবস্থিত পুকুর—সব মিলিয়ে এটি এক অপূর্ব সৌন্দর্য ধারণ করে। রাতে বৈদ্যুতিক আলোয় আলোকিত হয়ে পুরো এলাকা এক দৃষ্টিনন্দন পরিবেশ সৃষ্টি করে, যা যেকোনো দর্শনার্থীর মন কাড়ে।

৩০০ বছরের পুরোনো দেওয়ান শরিফ মসজিদ
নরসিংদী জেলার পলাশ উপজেলার নিবিড় পল্লি পারুলিয়া গ্রামে শান্ত পরিবেশে দাঁড়িয়ে আছে ৩০০ বছর পুরোনো একটি ঐতিহাসিক মসজিদ। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ঘেরা মোগল আমলের এই নিদর্শনটি মুসলিম স্থাপত্য ও ইতিহাসের এক জীবন্ত দলিল।
১৭১৯ খ্রিষ্টাব্দে মসজিদটি নির্মাণ করেন বাংলার সুবেদার মুর্শিদকুলি খাঁর কন্যা ও ঈশা খাঁর পঞ্চম অধস্তন বংশধর দেওয়ান শরিফ খাঁর স্ত্রী—জয়নব বিবি। মসজিদটির আওতায় রয়েছে প্রায় ১২ বিঘা জমি। রয়েছে চারটি শানবাঁধানো পুকুরঘাট। প্রায় ৫ ফুট প্রস্থ দেয়ালে নির্মিত মসজিদটির ভেতরে রয়েছে মজবুত পাথরের খিলান এবং শিল্পসুষমামণ্ডিত কারুকাজ। মসজিদে রয়েছে একটি প্রধান গেট, পূর্বদিকে তিনটি দরজা এবং উত্তর ও দক্ষিণ পাশে একটি করে দরজা। প্রাঙ্গণের উত্তর-পূর্ব কোণে দাঁড়িয়ে আছে দুটি সুউচ্চ মিনার। প্রাচীরবেষ্টিত প্রশস্ত প্রাঙ্গণজুড়ে মসজিদটির পরিবেশ এক অনন্য পবিত্রতা সৃষ্টি করে।
মসজিদের সৌন্দর্য বৃদ্ধির লক্ষ্যে নির্মাণকালে ইরান, বাগদাদ ও ইয়েমেন থেকে আনা হয়েছিল দক্ষ কারিগরদের, যা এর শিল্পনির্মাণে স্পষ্টভাবে প্রতিফলিত। মসজিদের পাশেই, পশ্চিম দিকের পুকুরঘাটের পূর্ব তীরে রয়েছে এক গম্বুজবিশিষ্ট সৌধ। এখানে রয়েছে দেওয়ান শরিফ খাঁ ও তাঁর স্ত্রী জয়নব বিবির যুগল সমাধি।

তাজমহলের আদলে আটকান্দি নীলকুঠি মসজিদ
রায়পুরা উপজেলার আমিরগঞ্জ ইউনিয়নের আটকান্দি গ্রামে অবস্থিত আটকান্দি নীলকুঠি জামে মসজিদ। এটির নির্মাতা মৌলভি আলিম উদ্দিন, যিনি দারুল উলুম দেওবন্দ থেকে মাওলানা পাস করেছিলেন। মেঘনার শাখা নদীর পাড়ে, ছায়ানিবিড় পরিবেশে স্থাপিত এ মসজিদটি কালের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে প্রায় ২০০ বছরের বেশি সময় ধরে।
মসজিদটির স্থাপত্যশৈলী মোগল আমলের নিদর্শন বহন করে। সুদূর মহীশূর থেকে আনা কারিগরদের দিয়ে মসজিদটি নির্মাণ করা হয়। অনেকে এর গম্বুজগুলোর সঙ্গে আগ্রার তাজমহলের গম্বুজের তুলনা করেন। মসজিদটির সবচেয়ে বড় বৈশিষ্ট্য এর আটটি গম্বুজ—মূল মসজিদে তিনটি। এর মধ্যে মাঝেরটি অপেক্ষাকৃত বড়; এবং বারান্দায় রয়েছে আরও পাঁচটি গম্বুজ। এই আটটি গম্বুজ থেকে গ্রামেরও নামকরণ হয় ‘আটকান্দি।’
মসজিদটির প্রবেশপথ অত্যন্ত দৃষ্টিনন্দন। বারান্দায় প্রবেশের জন্য সাতটি এবং ভেতরে প্রবেশের জন্য রয়েছে দুটি দরজা। বারান্দা ও দেয়ালের গায়ে রয়েছে ৩৪টি খিলান, প্রতিটির দেয়ালের ওপর রয়েছে শৈল্পিক কারুকাজ। দেয়ালগুলো দুই ফুট পুরু। মসজিদের কারুকাজে ব্যবহৃত হয়েছে বাহারি রঙের মোজাইক, মার্বেল এবং দুর্লভ পুঁথি পাথর। মিহরাবে রয়েছে নানা ফুল ও পাতার চিত্রকর্ম।

আশ্রাবপুর গায়েবি মসজিদ
আশরাফপুর গ্রামটি নরসিংদী জেলার শিবপুর উপজেলার একটি প্রাচীন জনপদ। এই জনপদেই বিস্ময় জাগানো গায়েবি মসজিদের অবস্থান। মসজিদটি ১৫২৪ খ্রিষ্টাব্দে গৌড়ের স্বাধীন নরপতি আলাউদ্দিন হোসেন শাহের পুত্র সুলতান নাসিরুদ্দিন আবুল মুজাফফর নসর শাহর শাসনামলে দিলওয়ার খান নির্মাণ করেছিলেন। এটি ছিল সুলতানি স্থাপত্যরীতিতে নির্মিত এক গম্বুজবিশিষ্ট ছোট মসজিদ।
তবে ১৮৯৭ সালের বিধ্বংসী ভূমিকম্পে মসজিদটি ভেঙে পড়ে এবং পরবর্তী সময়ে জঙ্গলে ঢাকা পড়ে। ঘন জঙ্গলে ঢাকা অবস্থায় এটি একরকম হারিয়েই গিয়েছিল ইতিহাসের পাতায়! পরে ১৯৪০ সালে মাওলানা সৈয়দ আলীর নেতৃত্বে জঙ্গল পরিষ্কার করে মসজিদটি পুনরুদ্ধার করা হয়। অনেকেই তখন একে ‘গায়েবি মসজিদ’ নামে অভিহিত করতেন। সে সময়ও মিহরাব এবং পশ্চিম দেয়ালের কিছু অংশ অবশিষ্ট ছিল। বর্তমানে ওই স্থানেই একটি আধুনিক তিন গম্বুজবিশিষ্ট মসজিদ নির্মিত হয়েছে।
মসজিদটির উত্তরে একসময় ছিল বৃহৎ দিঘি, যার অস্তিত্ব আজ আর দৃশ্যমান নয়। কিন্তু তার নিঃশব্দ চিহ্ন আজও মাটি ও স্মৃতিতে বিদ্যমান। দিঘির পাশেই রয়েছে পাথর দিয়ে বাঁধানো চারটি কবর, যা নির্মাতা বা তাঁর পরিবারের সদস্যদের সমাধি বলে ধারণা করা হয়।

হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর রাজনৈতিক নেতৃত্ব কেবল একটি নতুন ধর্মীয় মতবাদ প্রতিষ্ঠার মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল না, বরং এটি ছিল প্রাক্-ইসলামিক আরবের গোত্রীয় সংঘাত ও নৈরাজ্যের বিপরীতে এক সুসংগঠিত, একত্ববাদী এবং সাংবিধানিক রাষ্ট্রের ভিত্তি স্থাপন। তাঁর নেতৃত্বের কৌশল ছিল গভীর দূরদর্শিতা, নৈতিক কর্তৃত্ব...
১ ঘণ্টা আগে
বর্তমানে ইন্টারনেটে বিভিন্ন ডিজিটাল জাকাত ক্যালকুলেটর পাওয়া যায়। এসব ক্যালকুলেটরে সম্পদের সার্বিক তথ্য দিলে সম্ভাব্য জাকাতের পরিমাণ নির্ণয় করে দেওয়া হয়। ইসলামে এ ধরনের ডিজিটাল ক্যালকুলেটর ব্যবহার করার সঠিক বিধান কী? এ বিষয়ে জানতে চাই।
২ ঘণ্টা আগে
দ্বীনি মাহফিল মুসলিম সমাজের আত্মশুদ্ধি, জ্ঞানচর্চা ও ইমান জাগরণের অন্যতম মাধ্যম। এসব মাহফিলের মাধ্যমে মানুষ আল্লাহভীতি অর্জন করে এবং জীবনকে কোরআন-সুন্নাহর পথে পরিচালনার অনুপ্রেরণা পায়। তবে একটি দ্বীনি মাহফিল তখনই ফলপ্রসূ হয়, যখন এর বক্তা, শ্রোতা ও আয়োজক—সবাই নিজেদের দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করেন।
২ ঘণ্টা আগে
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
৮ ঘণ্টা আগেজাহিদ হাসান

হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর রাজনৈতিক নেতৃত্ব কেবল একটি নতুন ধর্মীয় মতবাদ প্রতিষ্ঠার মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল না, বরং এটি ছিল প্রাক্-ইসলামিক আরবের গোত্রীয় সংঘাত ও নৈরাজ্যের বিপরীতে এক সুসংগঠিত, একত্ববাদী এবং সাংবিধানিক রাষ্ট্রের ভিত্তি স্থাপন। তাঁর নেতৃত্বের কৌশল ছিল গভীর দূরদর্শিতা, নৈতিক কর্তৃত্ব এবং কার্যকর কূটনীতির এক অনন্য সমন্বয়, যা আধুনিক রাষ্ট্রবিজ্ঞান, সামরিক কৌশল ও বিপ্লবী চেতনার জন্য আজও অনুকরণীয়।
নবীজি (সা.) শুধু ধর্ম সংস্কারক বা ধর্মপ্রচারকই ছিলেন না; তিনি ছিলেন তৎকালীন আরবের সবচেয়ে প্রভাবশালী রাষ্ট্রনায়ক, ন্যায়পরায়ণ বিচারক, সফল সামরিক নেতা এবং দূরদর্শী কূটনীতিক। তিনি আরবের বিচ্ছিন্ন ও খণ্ড খণ্ড সমাজকে ঐক্যবদ্ধ করে এমন এক আদর্শ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করেন, যা কেবল সপ্তম শতকেই নয়, আধুনিক যুগেও তা নজিরবিহীন। আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় তিনি ছিলেন অত্যন্ত ন্যায়পরায়ণ, সামরিক নেতৃত্বে ছিলেন এক অকুতোভয় সেনাপতি এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে তিনি ছিলেন এক দূরদর্শী ও প্রভাবশালী ব্যক্তিত্ব।
মহানবী (সা.)-এর রাজনৈতিক নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠার সূচনা হয়েছিল নবুওয়াত প্রাপ্তির বহু আগেই, তাঁর নৈতিক কর্তৃত্বের ভিত্তিতে। তাঁর নেতৃত্বের প্রথম নিদর্শন হিসেবে ফুটে ওঠে হিলফুল ফুজুল নামের একটি সামাজিক সংগঠন প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে। কিছু সামাজিক সংস্কারের লক্ষ্যে তিনি আরবের সচেতন যুবকদের নিয়ে এই সংগঠনটি প্রতিষ্ঠা করেন। যুদ্ধবিধ্বস্ত আরব সমাজে শান্তি প্রতিষ্ঠা ও অন্যায় অবিচার দূরীকরণই ছিল হিলফুল ফুজুলের মূল লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য।
রাসুল (সা.)-এর এই নৈতিক মূল্যবোধই তাঁকে সর্বজনীন গ্রহণযোগ্যতা এনে দিয়েছিল। যেমন, কাবা ঘরের সংস্কারের সময় হাজরে আসওয়াদ স্থাপন নিয়ে কুরাইশ গোত্রগুলোর মধ্যে যখন চরম বিরোধ দেখা দেয় এবং রক্তপাতের আশঙ্কা তৈরি হয়, তখন তারা সর্বসম্মতভাবে তাঁকে বিচারক হিসেবে গ্রহণ করেছিল। তাঁর সিদ্ধান্তের ওপর কুরাইশরা শতভাগ আস্থা রেখেছিল। এই ঘটনা প্রমাণ করে যে তিনি প্রাক্-নবুওয়াতি যুগ থেকেই একজন নিরপেক্ষ মধ্যস্থতাকারী এবং ন্যায় বিচারক হিসেবে স্বীকৃতি অর্জন করেছিলেন। তাঁর এই সর্বজনীন ন্যায়পরায়ণতার স্বীকৃতি পরবর্তী সময়ে মদিনায় ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক বৈধতার ভিত্তি স্থাপন করে।
৪০ বছর বয়সে রাসুল (সা.) নবুওয়াত প্রাপ্তির পর, মক্কায় গোপনে তাওহিদের দাওয়াত দিয়ে বিচ্ছিন্ন আরব সমাজকে আল্লাহর একত্ববাদের ছায়াতলে ঐক্যবদ্ধ করতে থাকেন। পরে তিনি যখন প্রকাশ্যে তাওহিদের দাওয়াত দিতে শুরু করেন, তখন মক্কার পরিবেশ তাঁর ও তাঁর সাথিদের জন্য এক প্রতিকূল পরিবেশে রূপান্তরিত হয়। তাঁদের ওপর নেমে আসে অমানবিক অত্যাচার, যা পরে মুসলমানদের মদিনায় হিজরতের দিকে ধাবিত করে। হিজরত কেবল ধর্মীয় আশ্রয় গ্রহণ ছিল না, বরং এটি ছিল মক্কার গোত্রীয় ক্ষমতার বাইরে গিয়ে একটি নতুন রাজনৈতিক ও আর্থসামাজিক রাষ্ট্রব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার প্রথম কৌশলগত পদক্ষেপ। এই পদক্ষেপের মধ্য দিয়েই মুহাম্মদ (সা.) স্বাধীন রাজনৈতিক নেতৃত্বের প্রভাবশালী ব্যক্তিত্ব হিসেবে গড়ে ওঠেন।
মদিনায় হিজরতের পর তাঁর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক কাজ ছিল মদিনার সনদ প্রণয়ন, যা ইতিহাসের প্রথম লিখিত রাজনৈতিক চুক্তি ও প্রথম লিখিত সংবিধান হিসেবে পরিচিত। এই মদিনার সনদই ছিল মদিনায় স্বাধীন একটি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার মূল ভিত্তি। ৬২৪ খ্রিষ্টাব্দের প্রথম দিকে প্রণীত এই সনদ মদিনার মুসলমান, ইহুদি এবং পৌত্তলিকদের একত্র করে একটি সাধারণ জাতি গঠনে সহায়তা করেছিল। এই সংবিধানের একটি গুরুত্বপূর্ণ ধারা হলো একটি কেন্দ্রীয় রাজনৈতিক কর্তৃত্ব স্থাপন। এই সংবিধানের ভিত্তিতে ঘোষণা করা হয় যে মুহাম্মদ (সা.) হবেন নবগঠিত এই রাষ্ট্রের রাষ্ট্রপ্রধান। এই ধারা মদিনার নবগঠিত রাষ্ট্রকাঠামো এবং ক্ষমতাকাঠামোর কেন্দ্রবিন্দুতে তাঁর অবস্থানকে আইনি বৈধতা দান করে।
মদিনা সনদে সব সম্প্রদায়কে স্বাধীনভাবে নিজ নিজ ধর্ম পালনের স্বাধীনতা দেওয়া হয়েছিল, যেখানে কেউ কারও ধর্মে হস্তক্ষেপ করতে পারবে না। এমনকি ইহুদিদের মিত্ররাও সমান নিরাপত্তা ও স্বাধীনতা ভোগ করার আইনি নিশ্চয়তা লাভ করে। এর মাধ্যমে ধর্মীয় পরিচয়ের ঊর্ধ্বে রাষ্ট্রীয় নাগরিকত্বের ধারণা প্রবর্তন করা হয়। মদিনা সনদের মাধ্যমে মদিনা রাষ্ট্রে এক যৌথ প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তাব্যবস্থার প্রবর্তন করেন। সনদের ধারা অনুযায়ী, কোনো গোত্র বহিঃশত্রু দ্বারা আক্রান্ত হলে চুক্তিবদ্ধ গোত্রগুলোর সম্মিলিত শক্তি দিয়ে শত্রু প্রতিহত করবে ও মদিনার নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে এবং চুক্তিবদ্ধ সব গোত্র যুদ্ধের ব্যয়ভার গ্রহণ করবে।
রাসুল (সা.)-এর রাজনৈতিক দূরদর্শিতা সব থেকে বেশি প্রকাশিত হয়েছে তাঁর বৈদেশিক নীতি, আন্তগোত্রীয় সম্পর্ক নির্ধারণের মধ্য দিয়ে। যেখানে তিনি সব ধর্ম ও সম্প্রদায়ের প্রতি সহিষ্ণুতা দেখিয়েছেন এবং ব্যক্তিগত স্বাধীনতাকে সম্মান করেছেন। তাঁর অন্যতম বৃহৎ কূটনৈতিক সাফল্য হলো হুদাইবিয়ার সন্ধি, যা পবিত্র কোরআনে ফাতহুম মুবিন নামে পরিচিত। এই সন্ধির মাধ্যমে মক্কার কুরাইশরা মদিনার রাষ্ট্রকে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি দেয়। এই রাজনৈতিক স্বীকৃতি মুহাম্মদ (সা.)-এর রাজনৈতিক গ্রহণযোগ্যতা বহুগুণে বাড়িয়ে দেয়। এই সন্ধি রাসুল (সা.)-এর কূটনৈতিক প্রজ্ঞার এক নজিরবিহীন দৃষ্টান্ত।
হুদাইবিয়ার সন্ধির পর যখন শান্তিপূর্ণ পরিবেশ তৈরি হয়, মুহাম্মদ (সা.) তখন বিশ্বের বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রপ্রধানদের কাছে পত্র দিয়ে ইসলামের বাণীকে বিশ্ব-দরবারে তুলে ধরার সুযোগ পেয়েছিলেন। যার কারণে ইসলাম আরবের গণ্ডি ছাড়িয়ে সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে। পরবর্তী সময়ে তাঁর সামরিক কৌশলগত নেতৃত্বের ফলাফল হিসেবে মক্কা বিজয় হলো এক উৎকৃষ্ট উদাহরণ। মক্কা বিজয়ের পর তিনি সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করেন। এই ক্ষমাশীল ব্যক্তিত্ব তাঁর রাজনৈতিক নেতৃত্বকে সুউচ্চ আসনে প্রতিষ্ঠিত করে।
লেখক: শিক্ষার্থী, আরবি বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।

হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর রাজনৈতিক নেতৃত্ব কেবল একটি নতুন ধর্মীয় মতবাদ প্রতিষ্ঠার মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল না, বরং এটি ছিল প্রাক্-ইসলামিক আরবের গোত্রীয় সংঘাত ও নৈরাজ্যের বিপরীতে এক সুসংগঠিত, একত্ববাদী এবং সাংবিধানিক রাষ্ট্রের ভিত্তি স্থাপন। তাঁর নেতৃত্বের কৌশল ছিল গভীর দূরদর্শিতা, নৈতিক কর্তৃত্ব এবং কার্যকর কূটনীতির এক অনন্য সমন্বয়, যা আধুনিক রাষ্ট্রবিজ্ঞান, সামরিক কৌশল ও বিপ্লবী চেতনার জন্য আজও অনুকরণীয়।
নবীজি (সা.) শুধু ধর্ম সংস্কারক বা ধর্মপ্রচারকই ছিলেন না; তিনি ছিলেন তৎকালীন আরবের সবচেয়ে প্রভাবশালী রাষ্ট্রনায়ক, ন্যায়পরায়ণ বিচারক, সফল সামরিক নেতা এবং দূরদর্শী কূটনীতিক। তিনি আরবের বিচ্ছিন্ন ও খণ্ড খণ্ড সমাজকে ঐক্যবদ্ধ করে এমন এক আদর্শ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করেন, যা কেবল সপ্তম শতকেই নয়, আধুনিক যুগেও তা নজিরবিহীন। আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় তিনি ছিলেন অত্যন্ত ন্যায়পরায়ণ, সামরিক নেতৃত্বে ছিলেন এক অকুতোভয় সেনাপতি এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে তিনি ছিলেন এক দূরদর্শী ও প্রভাবশালী ব্যক্তিত্ব।
মহানবী (সা.)-এর রাজনৈতিক নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠার সূচনা হয়েছিল নবুওয়াত প্রাপ্তির বহু আগেই, তাঁর নৈতিক কর্তৃত্বের ভিত্তিতে। তাঁর নেতৃত্বের প্রথম নিদর্শন হিসেবে ফুটে ওঠে হিলফুল ফুজুল নামের একটি সামাজিক সংগঠন প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে। কিছু সামাজিক সংস্কারের লক্ষ্যে তিনি আরবের সচেতন যুবকদের নিয়ে এই সংগঠনটি প্রতিষ্ঠা করেন। যুদ্ধবিধ্বস্ত আরব সমাজে শান্তি প্রতিষ্ঠা ও অন্যায় অবিচার দূরীকরণই ছিল হিলফুল ফুজুলের মূল লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য।
রাসুল (সা.)-এর এই নৈতিক মূল্যবোধই তাঁকে সর্বজনীন গ্রহণযোগ্যতা এনে দিয়েছিল। যেমন, কাবা ঘরের সংস্কারের সময় হাজরে আসওয়াদ স্থাপন নিয়ে কুরাইশ গোত্রগুলোর মধ্যে যখন চরম বিরোধ দেখা দেয় এবং রক্তপাতের আশঙ্কা তৈরি হয়, তখন তারা সর্বসম্মতভাবে তাঁকে বিচারক হিসেবে গ্রহণ করেছিল। তাঁর সিদ্ধান্তের ওপর কুরাইশরা শতভাগ আস্থা রেখেছিল। এই ঘটনা প্রমাণ করে যে তিনি প্রাক্-নবুওয়াতি যুগ থেকেই একজন নিরপেক্ষ মধ্যস্থতাকারী এবং ন্যায় বিচারক হিসেবে স্বীকৃতি অর্জন করেছিলেন। তাঁর এই সর্বজনীন ন্যায়পরায়ণতার স্বীকৃতি পরবর্তী সময়ে মদিনায় ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক বৈধতার ভিত্তি স্থাপন করে।
৪০ বছর বয়সে রাসুল (সা.) নবুওয়াত প্রাপ্তির পর, মক্কায় গোপনে তাওহিদের দাওয়াত দিয়ে বিচ্ছিন্ন আরব সমাজকে আল্লাহর একত্ববাদের ছায়াতলে ঐক্যবদ্ধ করতে থাকেন। পরে তিনি যখন প্রকাশ্যে তাওহিদের দাওয়াত দিতে শুরু করেন, তখন মক্কার পরিবেশ তাঁর ও তাঁর সাথিদের জন্য এক প্রতিকূল পরিবেশে রূপান্তরিত হয়। তাঁদের ওপর নেমে আসে অমানবিক অত্যাচার, যা পরে মুসলমানদের মদিনায় হিজরতের দিকে ধাবিত করে। হিজরত কেবল ধর্মীয় আশ্রয় গ্রহণ ছিল না, বরং এটি ছিল মক্কার গোত্রীয় ক্ষমতার বাইরে গিয়ে একটি নতুন রাজনৈতিক ও আর্থসামাজিক রাষ্ট্রব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার প্রথম কৌশলগত পদক্ষেপ। এই পদক্ষেপের মধ্য দিয়েই মুহাম্মদ (সা.) স্বাধীন রাজনৈতিক নেতৃত্বের প্রভাবশালী ব্যক্তিত্ব হিসেবে গড়ে ওঠেন।
মদিনায় হিজরতের পর তাঁর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক কাজ ছিল মদিনার সনদ প্রণয়ন, যা ইতিহাসের প্রথম লিখিত রাজনৈতিক চুক্তি ও প্রথম লিখিত সংবিধান হিসেবে পরিচিত। এই মদিনার সনদই ছিল মদিনায় স্বাধীন একটি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার মূল ভিত্তি। ৬২৪ খ্রিষ্টাব্দের প্রথম দিকে প্রণীত এই সনদ মদিনার মুসলমান, ইহুদি এবং পৌত্তলিকদের একত্র করে একটি সাধারণ জাতি গঠনে সহায়তা করেছিল। এই সংবিধানের একটি গুরুত্বপূর্ণ ধারা হলো একটি কেন্দ্রীয় রাজনৈতিক কর্তৃত্ব স্থাপন। এই সংবিধানের ভিত্তিতে ঘোষণা করা হয় যে মুহাম্মদ (সা.) হবেন নবগঠিত এই রাষ্ট্রের রাষ্ট্রপ্রধান। এই ধারা মদিনার নবগঠিত রাষ্ট্রকাঠামো এবং ক্ষমতাকাঠামোর কেন্দ্রবিন্দুতে তাঁর অবস্থানকে আইনি বৈধতা দান করে।
মদিনা সনদে সব সম্প্রদায়কে স্বাধীনভাবে নিজ নিজ ধর্ম পালনের স্বাধীনতা দেওয়া হয়েছিল, যেখানে কেউ কারও ধর্মে হস্তক্ষেপ করতে পারবে না। এমনকি ইহুদিদের মিত্ররাও সমান নিরাপত্তা ও স্বাধীনতা ভোগ করার আইনি নিশ্চয়তা লাভ করে। এর মাধ্যমে ধর্মীয় পরিচয়ের ঊর্ধ্বে রাষ্ট্রীয় নাগরিকত্বের ধারণা প্রবর্তন করা হয়। মদিনা সনদের মাধ্যমে মদিনা রাষ্ট্রে এক যৌথ প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তাব্যবস্থার প্রবর্তন করেন। সনদের ধারা অনুযায়ী, কোনো গোত্র বহিঃশত্রু দ্বারা আক্রান্ত হলে চুক্তিবদ্ধ গোত্রগুলোর সম্মিলিত শক্তি দিয়ে শত্রু প্রতিহত করবে ও মদিনার নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে এবং চুক্তিবদ্ধ সব গোত্র যুদ্ধের ব্যয়ভার গ্রহণ করবে।
রাসুল (সা.)-এর রাজনৈতিক দূরদর্শিতা সব থেকে বেশি প্রকাশিত হয়েছে তাঁর বৈদেশিক নীতি, আন্তগোত্রীয় সম্পর্ক নির্ধারণের মধ্য দিয়ে। যেখানে তিনি সব ধর্ম ও সম্প্রদায়ের প্রতি সহিষ্ণুতা দেখিয়েছেন এবং ব্যক্তিগত স্বাধীনতাকে সম্মান করেছেন। তাঁর অন্যতম বৃহৎ কূটনৈতিক সাফল্য হলো হুদাইবিয়ার সন্ধি, যা পবিত্র কোরআনে ফাতহুম মুবিন নামে পরিচিত। এই সন্ধির মাধ্যমে মক্কার কুরাইশরা মদিনার রাষ্ট্রকে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি দেয়। এই রাজনৈতিক স্বীকৃতি মুহাম্মদ (সা.)-এর রাজনৈতিক গ্রহণযোগ্যতা বহুগুণে বাড়িয়ে দেয়। এই সন্ধি রাসুল (সা.)-এর কূটনৈতিক প্রজ্ঞার এক নজিরবিহীন দৃষ্টান্ত।
হুদাইবিয়ার সন্ধির পর যখন শান্তিপূর্ণ পরিবেশ তৈরি হয়, মুহাম্মদ (সা.) তখন বিশ্বের বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রপ্রধানদের কাছে পত্র দিয়ে ইসলামের বাণীকে বিশ্ব-দরবারে তুলে ধরার সুযোগ পেয়েছিলেন। যার কারণে ইসলাম আরবের গণ্ডি ছাড়িয়ে সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে। পরবর্তী সময়ে তাঁর সামরিক কৌশলগত নেতৃত্বের ফলাফল হিসেবে মক্কা বিজয় হলো এক উৎকৃষ্ট উদাহরণ। মক্কা বিজয়ের পর তিনি সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করেন। এই ক্ষমাশীল ব্যক্তিত্ব তাঁর রাজনৈতিক নেতৃত্বকে সুউচ্চ আসনে প্রতিষ্ঠিত করে।
লেখক: শিক্ষার্থী, আরবি বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।

মেঘনা, শীতলক্ষ্যা, আড়িয়াল খাঁ ও পুরোনো ব্রহ্মপুত্রের তীরবিধৌত প্রাচীন সভ্যতা ও ঐতিহ্যে লালিত জেলার নাম নরসিংদী। এ জেলার বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে রয়েছে বেশ কিছু প্রাচীন মুসলিম স্থাপত্য। আছে বেশ কিছু ঐতিহাসিক মসজিদ। এই স্থাপনাগুলো যেমনি প্রাচীন স্থাপত্যরীতির সাক্ষ্য দেয়, তেমনি তুলে ধরে মুসলিম ইতিহাসের
১২ সেপ্টেম্বর ২০২৫
বর্তমানে ইন্টারনেটে বিভিন্ন ডিজিটাল জাকাত ক্যালকুলেটর পাওয়া যায়। এসব ক্যালকুলেটরে সম্পদের সার্বিক তথ্য দিলে সম্ভাব্য জাকাতের পরিমাণ নির্ণয় করে দেওয়া হয়। ইসলামে এ ধরনের ডিজিটাল ক্যালকুলেটর ব্যবহার করার সঠিক বিধান কী? এ বিষয়ে জানতে চাই।
২ ঘণ্টা আগে
দ্বীনি মাহফিল মুসলিম সমাজের আত্মশুদ্ধি, জ্ঞানচর্চা ও ইমান জাগরণের অন্যতম মাধ্যম। এসব মাহফিলের মাধ্যমে মানুষ আল্লাহভীতি অর্জন করে এবং জীবনকে কোরআন-সুন্নাহর পথে পরিচালনার অনুপ্রেরণা পায়। তবে একটি দ্বীনি মাহফিল তখনই ফলপ্রসূ হয়, যখন এর বক্তা, শ্রোতা ও আয়োজক—সবাই নিজেদের দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করেন।
২ ঘণ্টা আগে
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
৮ ঘণ্টা আগেমুফতি শাব্বির আহমদ

প্রশ্ন: বর্তমানে ইন্টারনেটে বিভিন্ন ডিজিটাল জাকাত ক্যালকুলেটর পাওয়া যায়। এসব ক্যালকুলেটরে সম্পদের সার্বিক তথ্য দিলে সম্ভাব্য জাকাতের পরিমাণ নির্ণয় করে দেওয়া হয়। ইসলামে এ ধরনের ডিজিটাল ক্যালকুলেটর ব্যবহার করার সঠিক বিধান কী? এ বিষয়ে জানতে চাই।
আসলাম শেখ, গোপালগঞ্জ।
উত্তর: আপনার প্রশ্নটি বর্তমান প্রযুক্তির যুগে অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক। জাকাত ইসলামের পাঁচটি স্তম্ভের অন্যতম এবং এর সঠিক হিসাব ও আদায় প্রতিটি সম্পদশালী মুসলমানের জন্য ফরজ। ডিজিটাল জাকাত ক্যালকুলেটরের ব্যবহার সম্পর্কে ইসলামের নির্দেশনা নিচে তুলে ধরা হলো।
ইসলামে প্রযুক্তির ব্যবহার
ইসলাম একটি চির আধুনিক জীবনব্যবস্থা। নবী-রাসুলগণও তাঁদের যুগে দাওয়াত ও দ্বীন প্রচারে তৎকালীন প্রযুক্তির সঠিক ব্যবহার করেছেন। সঠিকভাবে ব্যবহার করতে পারলে বর্তমান যুগেও কম্পিউটার, ইন্টারনেট ও মোবাইল ফোন হচ্ছে ইসলামের প্রচার-প্রসার এবং ব্যক্তিগত ইবাদত পালনে সহায়তাকারী অত্যন্ত শক্তিশালী মাধ্যম।
ডিজিটাল জাকাত ক্যালকুলেটর এই আধুনিক প্রযুক্তিরই একটি ফসল। প্রযুক্তি ব্যবহারের মূল উদ্দেশ্য যদি শরিয়তসম্মত হয়, তাহলে এর ব্যবহার নীতিগতভাবে সম্পূর্ণ জায়েজ ও অনুমোদিত।
জাকাত ক্যালকুলেটর ব্যবহারের সঠিক বিধান
ডিজিটাল জাকাত ক্যালকুলেটর ব্যবহার করা বৈধ হলেও, জাকাত একটি ফরজ ইবাদত হওয়ায় এর হিসাবে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করা আবশ্যক। এই ক্যালকুলেটরগুলো ব্যবহারের সঠিক বিধান ও গুরুত্বপূর্ণ সতর্কতার দিকগুলো নিম্নরূপ:
১. ডিজিটাল ক্যালকুলেটরকে জাকাতের হিসাবকার্যে সহায়তাকারী একটি যন্ত্র হিসেবে গণ্য করতে হবে। এটি কোনোভাবেই চূড়ান্ত নির্ভুল হিসাবের নিশ্চয়তা প্রদানকারী নয়। জাকাত ফরজ হওয়ার জন্য সম্পদের নিসাব (সাড়ে সাত ভরি সোনা বা সাড়ে বায়ান্ন ভরি রুপা অথবা সমমূল্যের সম্পদ) এবং এক বছর অতিবাহিত হওয়া—এই শর্তগুলো সঠিকভাবে পূরণ হয়েছে কি না, তা ব্যবহারকারীকেই নিশ্চিত করতে হবে।
২. ক্যালকুলেটরের হিসাব সম্পূর্ণভাবে নির্ভর করে ব্যবহারকারী কর্তৃক সঠিকভাবে তথ্য দেওয়ার ওপর। যদি ভুল তথ্য দেওয়া হয় (যেমন নিসাব পরিমাণ অর্থ, বর্ধনশীল সম্পদ, ঋণ ইত্যাদি ভুলভাবে প্রবেশ করানো হয়), তাহলে ক্যালকুলেটর দ্বারা প্রাপ্ত জাকাতের পরিমাণও ভুল হবে। ভুল তথ্যের কারণে হিসাব ভুল হলে এর দায় সম্পূর্ণভাবে ব্যবহারকারীর ওপর বর্তাবে।
৩. জাকাতের হিসাব অত্যন্ত সূক্ষ্ম ও সংবেদনশীল। বিভিন্ন ধরনের সম্পদ, ঋণ এবং ব্যবসায়িক লেনদেনের কারণে হিসাবের জটিলতা সৃষ্টি হতে পারে। তাই ডিজিটাল ক্যালকুলেটরের মাধ্যমে প্রাথমিকভাবে জাকাতের একটি হিসাব নির্ণয় করার পর, সেটির যথার্থতা নিশ্চিত হওয়ার জন্য একজন অভিজ্ঞ মুফতি সাহেব বা ইসলামি স্কলারের শরণাপন্ন হয়ে হিসাবটি যাচাই করে নেওয়া আবশ্যক। এটিই সতর্কতা ও ইবাদতের পূর্ণতা নিশ্চিত করার সর্বোত্তম পন্থা।
ডিজিটাল জাকাত ক্যালকুলেটর ব্যবহার করা শরিয়তের দৃষ্টিতে বৈধ এবং এটি একটি সুবিধাজনক মাধ্যম। তবে এটি শুধু একটি সহায়ক সরঞ্জাম। জাকাতদাতার প্রধান দায়িত্ব হলো, নিজে সঠিকভাবে সব তথ্য দেওয়া এবং ফরজ ইবাদত নিশ্চিত করার জন্য প্রাপ্ত হিসাব একজন বিজ্ঞ আলেমের মাধ্যমে যাচাই করে নেওয়া। এতে প্রযুক্তির সুবিধা গ্রহণ করা হলো এবং একই সঙ্গে ইবাদতের সূক্ষ্মতা ও যথার্থতা নিশ্চিত করা গেল।
উত্তর দিয়েছেন: মুফতি শাব্বির আহমদ, ইসলামবিষয়ক গবেষক

প্রশ্ন: বর্তমানে ইন্টারনেটে বিভিন্ন ডিজিটাল জাকাত ক্যালকুলেটর পাওয়া যায়। এসব ক্যালকুলেটরে সম্পদের সার্বিক তথ্য দিলে সম্ভাব্য জাকাতের পরিমাণ নির্ণয় করে দেওয়া হয়। ইসলামে এ ধরনের ডিজিটাল ক্যালকুলেটর ব্যবহার করার সঠিক বিধান কী? এ বিষয়ে জানতে চাই।
আসলাম শেখ, গোপালগঞ্জ।
উত্তর: আপনার প্রশ্নটি বর্তমান প্রযুক্তির যুগে অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক। জাকাত ইসলামের পাঁচটি স্তম্ভের অন্যতম এবং এর সঠিক হিসাব ও আদায় প্রতিটি সম্পদশালী মুসলমানের জন্য ফরজ। ডিজিটাল জাকাত ক্যালকুলেটরের ব্যবহার সম্পর্কে ইসলামের নির্দেশনা নিচে তুলে ধরা হলো।
ইসলামে প্রযুক্তির ব্যবহার
ইসলাম একটি চির আধুনিক জীবনব্যবস্থা। নবী-রাসুলগণও তাঁদের যুগে দাওয়াত ও দ্বীন প্রচারে তৎকালীন প্রযুক্তির সঠিক ব্যবহার করেছেন। সঠিকভাবে ব্যবহার করতে পারলে বর্তমান যুগেও কম্পিউটার, ইন্টারনেট ও মোবাইল ফোন হচ্ছে ইসলামের প্রচার-প্রসার এবং ব্যক্তিগত ইবাদত পালনে সহায়তাকারী অত্যন্ত শক্তিশালী মাধ্যম।
ডিজিটাল জাকাত ক্যালকুলেটর এই আধুনিক প্রযুক্তিরই একটি ফসল। প্রযুক্তি ব্যবহারের মূল উদ্দেশ্য যদি শরিয়তসম্মত হয়, তাহলে এর ব্যবহার নীতিগতভাবে সম্পূর্ণ জায়েজ ও অনুমোদিত।
জাকাত ক্যালকুলেটর ব্যবহারের সঠিক বিধান
ডিজিটাল জাকাত ক্যালকুলেটর ব্যবহার করা বৈধ হলেও, জাকাত একটি ফরজ ইবাদত হওয়ায় এর হিসাবে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করা আবশ্যক। এই ক্যালকুলেটরগুলো ব্যবহারের সঠিক বিধান ও গুরুত্বপূর্ণ সতর্কতার দিকগুলো নিম্নরূপ:
১. ডিজিটাল ক্যালকুলেটরকে জাকাতের হিসাবকার্যে সহায়তাকারী একটি যন্ত্র হিসেবে গণ্য করতে হবে। এটি কোনোভাবেই চূড়ান্ত নির্ভুল হিসাবের নিশ্চয়তা প্রদানকারী নয়। জাকাত ফরজ হওয়ার জন্য সম্পদের নিসাব (সাড়ে সাত ভরি সোনা বা সাড়ে বায়ান্ন ভরি রুপা অথবা সমমূল্যের সম্পদ) এবং এক বছর অতিবাহিত হওয়া—এই শর্তগুলো সঠিকভাবে পূরণ হয়েছে কি না, তা ব্যবহারকারীকেই নিশ্চিত করতে হবে।
২. ক্যালকুলেটরের হিসাব সম্পূর্ণভাবে নির্ভর করে ব্যবহারকারী কর্তৃক সঠিকভাবে তথ্য দেওয়ার ওপর। যদি ভুল তথ্য দেওয়া হয় (যেমন নিসাব পরিমাণ অর্থ, বর্ধনশীল সম্পদ, ঋণ ইত্যাদি ভুলভাবে প্রবেশ করানো হয়), তাহলে ক্যালকুলেটর দ্বারা প্রাপ্ত জাকাতের পরিমাণও ভুল হবে। ভুল তথ্যের কারণে হিসাব ভুল হলে এর দায় সম্পূর্ণভাবে ব্যবহারকারীর ওপর বর্তাবে।
৩. জাকাতের হিসাব অত্যন্ত সূক্ষ্ম ও সংবেদনশীল। বিভিন্ন ধরনের সম্পদ, ঋণ এবং ব্যবসায়িক লেনদেনের কারণে হিসাবের জটিলতা সৃষ্টি হতে পারে। তাই ডিজিটাল ক্যালকুলেটরের মাধ্যমে প্রাথমিকভাবে জাকাতের একটি হিসাব নির্ণয় করার পর, সেটির যথার্থতা নিশ্চিত হওয়ার জন্য একজন অভিজ্ঞ মুফতি সাহেব বা ইসলামি স্কলারের শরণাপন্ন হয়ে হিসাবটি যাচাই করে নেওয়া আবশ্যক। এটিই সতর্কতা ও ইবাদতের পূর্ণতা নিশ্চিত করার সর্বোত্তম পন্থা।
ডিজিটাল জাকাত ক্যালকুলেটর ব্যবহার করা শরিয়তের দৃষ্টিতে বৈধ এবং এটি একটি সুবিধাজনক মাধ্যম। তবে এটি শুধু একটি সহায়ক সরঞ্জাম। জাকাতদাতার প্রধান দায়িত্ব হলো, নিজে সঠিকভাবে সব তথ্য দেওয়া এবং ফরজ ইবাদত নিশ্চিত করার জন্য প্রাপ্ত হিসাব একজন বিজ্ঞ আলেমের মাধ্যমে যাচাই করে নেওয়া। এতে প্রযুক্তির সুবিধা গ্রহণ করা হলো এবং একই সঙ্গে ইবাদতের সূক্ষ্মতা ও যথার্থতা নিশ্চিত করা গেল।
উত্তর দিয়েছেন: মুফতি শাব্বির আহমদ, ইসলামবিষয়ক গবেষক

মেঘনা, শীতলক্ষ্যা, আড়িয়াল খাঁ ও পুরোনো ব্রহ্মপুত্রের তীরবিধৌত প্রাচীন সভ্যতা ও ঐতিহ্যে লালিত জেলার নাম নরসিংদী। এ জেলার বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে রয়েছে বেশ কিছু প্রাচীন মুসলিম স্থাপত্য। আছে বেশ কিছু ঐতিহাসিক মসজিদ। এই স্থাপনাগুলো যেমনি প্রাচীন স্থাপত্যরীতির সাক্ষ্য দেয়, তেমনি তুলে ধরে মুসলিম ইতিহাসের
১২ সেপ্টেম্বর ২০২৫
হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর রাজনৈতিক নেতৃত্ব কেবল একটি নতুন ধর্মীয় মতবাদ প্রতিষ্ঠার মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল না, বরং এটি ছিল প্রাক্-ইসলামিক আরবের গোত্রীয় সংঘাত ও নৈরাজ্যের বিপরীতে এক সুসংগঠিত, একত্ববাদী এবং সাংবিধানিক রাষ্ট্রের ভিত্তি স্থাপন। তাঁর নেতৃত্বের কৌশল ছিল গভীর দূরদর্শিতা, নৈতিক কর্তৃত্ব...
১ ঘণ্টা আগে
দ্বীনি মাহফিল মুসলিম সমাজের আত্মশুদ্ধি, জ্ঞানচর্চা ও ইমান জাগরণের অন্যতম মাধ্যম। এসব মাহফিলের মাধ্যমে মানুষ আল্লাহভীতি অর্জন করে এবং জীবনকে কোরআন-সুন্নাহর পথে পরিচালনার অনুপ্রেরণা পায়। তবে একটি দ্বীনি মাহফিল তখনই ফলপ্রসূ হয়, যখন এর বক্তা, শ্রোতা ও আয়োজক—সবাই নিজেদের দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করেন।
২ ঘণ্টা আগে
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
৮ ঘণ্টা আগেফয়জুল্লাহ রিয়াদ

দ্বীনি মাহফিল মুসলিম সমাজের আত্মশুদ্ধি, জ্ঞানচর্চা ও ইমান জাগরণের অন্যতম মাধ্যম। এসব মাহফিলের মাধ্যমে মানুষ আল্লাহভীতি অর্জন করে এবং জীবনকে কোরআন-সুন্নাহর পথে পরিচালনার অনুপ্রেরণা পায়। তবে একটি দ্বীনি মাহফিল তখনই ফলপ্রসূ হয়, যখন এর বক্তা, শ্রোতা ও আয়োজক—সবাই নিজেদের দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করেন।
বক্তার দায়িত্ব খালেস নিয়তে দ্বীনের দাওয়াত: একজন বক্তার দায়িত্ব হলো খালেস নিয়তে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের উদ্দেশ্যে বয়ান করা। হৃদয়ে এ চিন্তা জাগরূক রাখা যে মাহফিল শুধু বক্তব্য দেওয়ার মঞ্চ নয়; বরং এটি দ্বীনের দাওয়াত ও ধর্মীয় জ্ঞান প্রচারের পবিত্র দায়িত্ব ও আমানত। বক্তাকে অবশ্যই কোরআন-হাদিসের আলোকে বক্তব্য উপস্থাপন করতে হবে। এর জন্য প্রচুর অধ্যয়ন ও গবেষণার মাধ্যমে পূর্বপ্রস্তুতি গ্রহণ করা জরুরি। অন্যথায় মনগড়া কথা বলার আশঙ্কা তৈরি হয়, যা গুরুতর পাপের কারণ। হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আমর (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি আমার নামে মিথ্যা বলে, সে যেন জাহান্নামে নিজের ঠিকানা বানিয়ে নেয়।’ (সহিহ বুখারি: ১০৭) একজন প্রকৃত বক্তা কখনোই মিথ্যা, অতিরঞ্জন বা লোকপ্রিয়তার জন্য ভিত্তিহীন ঘটনা বলতে পারেন না। বক্তাকে তাই হতে হবে সত্যনিষ্ঠ, বিনয়ী ও মননশীল। কণ্ঠের জোরে নয়, বরং কথার মাধুর্য, শক্তিশালী দলিল ও আন্তরিকতার গুণে তিনি মানুষকে প্রভাবিত করবেন।
শ্রোতার দায়িত্ব মনোযোগ ও আমলের নিয়ত: শ্রোতার দায়িত্ব হলো মনোযোগ, শ্রদ্ধাবোধ এবং আমলের নিয়তে বয়ান শোনা। বয়ানের সময় হট্টগোল, হাসাহাসি করা বা অন্যমনস্ক হওয়া অনুচিত। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘কোরআন পাঠ করা হলে তোমরা মনোযোগ দিয়ে শোনো এবং চুপ করে থাকো, যাতে তোমরা রহমত লাভ করতে পারো।’ (সুরা আরাফ: ২০৪) এই আদেশ দ্বীনি বক্তব্য শোনার ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। শ্রোতারা যদি মনোযোগ না দেয় কিংবা আলোচনাকে জীবনে প্রয়োগ না করে, তবে ওয়াজ-মাহফিল শুধু আনুষ্ঠানিক আয়োজনে সীমাবদ্ধ থেকে যায়। তাই শ্রোতার উচিত বক্তার উপকারী কথাগুলো গ্রহণ করা এবং সেগুলো আমলে রূপ দেওয়ার চেষ্টা করা।
আয়োজকদের দায়িত্ব আন্তরিকতা ও শৃঙ্খলা: ওয়াজ-মাহফিলে আয়োজকদের দায়িত্বও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রথমত, মাহফিল আয়োজনের উদ্দেশ্য যেন বেশি লোকসমাগম, লৌকিকতা প্রদর্শন বা লোকদেখানোর জন্য না হয়। উদ্দেশ্য হতে হবে আল্লাহর সন্তুষ্টি ও দ্বীনের প্রচার। দ্বিতীয়ত, মাহফিলের পরিবেশ হবে শান্ত, শালীন ও বয়ান শোনার উপযোগী। তৃতীয়ত, বক্তা নির্বাচনের ক্ষেত্রে জ্ঞান, প্রজ্ঞা, চরিত্র ও দ্বীনদারিকে অগ্রাধিকার দেওয়া জরুরি। একইভাবে ব্যয়, সাজসজ্জা ও মঞ্চ পরিচালনায় অপচয় বা অহংকার প্রদর্শন ইসলামের দৃষ্টিতে নিন্দনীয়।
আয়োজকদের আরও দায়িত্ব হলো সময়মতো মাহফিল শুরু ও শেষ করা, অধিক রাত পর্যন্ত মাহফিল না করা, এলাকার অসুস্থ, বৃদ্ধ ও শিশুদের যেন কষ্ট না হয় এবং শিক্ষার্থীদের পড়ালেখায় যাতে ব্যাঘাত না ঘটে, সেদিকে সতর্ক দৃষ্টি রাখা, নারী-পুরুষের পর্দা বজায় রাখা এবং শ্রোতাদের জন্য আরামদায়ক বসার ব্যবস্থা করা।
লেখক: মুহাদ্দিস, জামিয়া আরাবিয়া দারুস সুন্নাহ রাজাবাড়ী, দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ, ঢাকা।

দ্বীনি মাহফিল মুসলিম সমাজের আত্মশুদ্ধি, জ্ঞানচর্চা ও ইমান জাগরণের অন্যতম মাধ্যম। এসব মাহফিলের মাধ্যমে মানুষ আল্লাহভীতি অর্জন করে এবং জীবনকে কোরআন-সুন্নাহর পথে পরিচালনার অনুপ্রেরণা পায়। তবে একটি দ্বীনি মাহফিল তখনই ফলপ্রসূ হয়, যখন এর বক্তা, শ্রোতা ও আয়োজক—সবাই নিজেদের দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করেন।
বক্তার দায়িত্ব খালেস নিয়তে দ্বীনের দাওয়াত: একজন বক্তার দায়িত্ব হলো খালেস নিয়তে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের উদ্দেশ্যে বয়ান করা। হৃদয়ে এ চিন্তা জাগরূক রাখা যে মাহফিল শুধু বক্তব্য দেওয়ার মঞ্চ নয়; বরং এটি দ্বীনের দাওয়াত ও ধর্মীয় জ্ঞান প্রচারের পবিত্র দায়িত্ব ও আমানত। বক্তাকে অবশ্যই কোরআন-হাদিসের আলোকে বক্তব্য উপস্থাপন করতে হবে। এর জন্য প্রচুর অধ্যয়ন ও গবেষণার মাধ্যমে পূর্বপ্রস্তুতি গ্রহণ করা জরুরি। অন্যথায় মনগড়া কথা বলার আশঙ্কা তৈরি হয়, যা গুরুতর পাপের কারণ। হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আমর (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি আমার নামে মিথ্যা বলে, সে যেন জাহান্নামে নিজের ঠিকানা বানিয়ে নেয়।’ (সহিহ বুখারি: ১০৭) একজন প্রকৃত বক্তা কখনোই মিথ্যা, অতিরঞ্জন বা লোকপ্রিয়তার জন্য ভিত্তিহীন ঘটনা বলতে পারেন না। বক্তাকে তাই হতে হবে সত্যনিষ্ঠ, বিনয়ী ও মননশীল। কণ্ঠের জোরে নয়, বরং কথার মাধুর্য, শক্তিশালী দলিল ও আন্তরিকতার গুণে তিনি মানুষকে প্রভাবিত করবেন।
শ্রোতার দায়িত্ব মনোযোগ ও আমলের নিয়ত: শ্রোতার দায়িত্ব হলো মনোযোগ, শ্রদ্ধাবোধ এবং আমলের নিয়তে বয়ান শোনা। বয়ানের সময় হট্টগোল, হাসাহাসি করা বা অন্যমনস্ক হওয়া অনুচিত। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘কোরআন পাঠ করা হলে তোমরা মনোযোগ দিয়ে শোনো এবং চুপ করে থাকো, যাতে তোমরা রহমত লাভ করতে পারো।’ (সুরা আরাফ: ২০৪) এই আদেশ দ্বীনি বক্তব্য শোনার ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। শ্রোতারা যদি মনোযোগ না দেয় কিংবা আলোচনাকে জীবনে প্রয়োগ না করে, তবে ওয়াজ-মাহফিল শুধু আনুষ্ঠানিক আয়োজনে সীমাবদ্ধ থেকে যায়। তাই শ্রোতার উচিত বক্তার উপকারী কথাগুলো গ্রহণ করা এবং সেগুলো আমলে রূপ দেওয়ার চেষ্টা করা।
আয়োজকদের দায়িত্ব আন্তরিকতা ও শৃঙ্খলা: ওয়াজ-মাহফিলে আয়োজকদের দায়িত্বও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রথমত, মাহফিল আয়োজনের উদ্দেশ্য যেন বেশি লোকসমাগম, লৌকিকতা প্রদর্শন বা লোকদেখানোর জন্য না হয়। উদ্দেশ্য হতে হবে আল্লাহর সন্তুষ্টি ও দ্বীনের প্রচার। দ্বিতীয়ত, মাহফিলের পরিবেশ হবে শান্ত, শালীন ও বয়ান শোনার উপযোগী। তৃতীয়ত, বক্তা নির্বাচনের ক্ষেত্রে জ্ঞান, প্রজ্ঞা, চরিত্র ও দ্বীনদারিকে অগ্রাধিকার দেওয়া জরুরি। একইভাবে ব্যয়, সাজসজ্জা ও মঞ্চ পরিচালনায় অপচয় বা অহংকার প্রদর্শন ইসলামের দৃষ্টিতে নিন্দনীয়।
আয়োজকদের আরও দায়িত্ব হলো সময়মতো মাহফিল শুরু ও শেষ করা, অধিক রাত পর্যন্ত মাহফিল না করা, এলাকার অসুস্থ, বৃদ্ধ ও শিশুদের যেন কষ্ট না হয় এবং শিক্ষার্থীদের পড়ালেখায় যাতে ব্যাঘাত না ঘটে, সেদিকে সতর্ক দৃষ্টি রাখা, নারী-পুরুষের পর্দা বজায় রাখা এবং শ্রোতাদের জন্য আরামদায়ক বসার ব্যবস্থা করা।
লেখক: মুহাদ্দিস, জামিয়া আরাবিয়া দারুস সুন্নাহ রাজাবাড়ী, দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ, ঢাকা।

মেঘনা, শীতলক্ষ্যা, আড়িয়াল খাঁ ও পুরোনো ব্রহ্মপুত্রের তীরবিধৌত প্রাচীন সভ্যতা ও ঐতিহ্যে লালিত জেলার নাম নরসিংদী। এ জেলার বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে রয়েছে বেশ কিছু প্রাচীন মুসলিম স্থাপত্য। আছে বেশ কিছু ঐতিহাসিক মসজিদ। এই স্থাপনাগুলো যেমনি প্রাচীন স্থাপত্যরীতির সাক্ষ্য দেয়, তেমনি তুলে ধরে মুসলিম ইতিহাসের
১২ সেপ্টেম্বর ২০২৫
হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর রাজনৈতিক নেতৃত্ব কেবল একটি নতুন ধর্মীয় মতবাদ প্রতিষ্ঠার মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল না, বরং এটি ছিল প্রাক্-ইসলামিক আরবের গোত্রীয় সংঘাত ও নৈরাজ্যের বিপরীতে এক সুসংগঠিত, একত্ববাদী এবং সাংবিধানিক রাষ্ট্রের ভিত্তি স্থাপন। তাঁর নেতৃত্বের কৌশল ছিল গভীর দূরদর্শিতা, নৈতিক কর্তৃত্ব...
১ ঘণ্টা আগে
বর্তমানে ইন্টারনেটে বিভিন্ন ডিজিটাল জাকাত ক্যালকুলেটর পাওয়া যায়। এসব ক্যালকুলেটরে সম্পদের সার্বিক তথ্য দিলে সম্ভাব্য জাকাতের পরিমাণ নির্ণয় করে দেওয়া হয়। ইসলামে এ ধরনের ডিজিটাল ক্যালকুলেটর ব্যবহার করার সঠিক বিধান কী? এ বিষয়ে জানতে চাই।
২ ঘণ্টা আগে
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
৮ ঘণ্টা আগেইসলাম ডেস্ক

জীবনকে সুশৃঙ্খল করতে এবং আল্লাহর সান্নিধ্য পেতে নামাজের কোনো বিকল্প নেই। একজন মুমিনের জন্য নামাজ হলো আল্লাহর সঙ্গে সরাসরি কথোপকথনের মাধ্যম। এটি এমন এক ইবাদত—যা আমাদের মনে আধ্যাত্মিক প্রশান্তি আনে, জীবনের প্রতিটি কাজে আনে বরকত। প্রতিদিন সময় মতো পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা প্রত্যেক মুসলমানের ওপর আবশ্যক। তাই জেনে নেওয়া যাক আজ কোন ওয়াক্তের নামাজ কখন আদায় করতে হবে।
আজ শুক্রবার, ০৭ নভেম্বর ২০২৫ ইংরেজি, ২২ কার্তিক ১৪৩২ বাংলা, ১৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৭ হিজরি। ঢাকা ও তার আশপাশের এলাকার নামাজের সময়সূচি তুলে ধরা হলো—
| নামাজ | ||
|---|---|---|
| তাহাজ্জুদ ও সেহরির শেষ সময় | ০০: ০০ | ০৪: ৪৯ মিনিট |
| ফজর | ০৪: ৫০ মিনিট | ০৬: ০৭ মিনিট |
| জুমা | ১১: ৪৩ মিনিট | ০৩: ৩৯ মিনিট |
| আসর | ০৩: ৪০ মিনিট | ০৫: ১৫ মিনিট |
| মাগরিব | ০৫: ১৭ মিনিট | ০৬: ৩২ মিনিট |
| এশা | ০৬: ৩৩ মিনিট | ০৪: ৪৯ মিনিট |
উল্লিখিত সময়ের সঙ্গে যেসব বিভাগের সময় যোগ-বিয়োগ করতে হবে, সেগুলো হলো:
বিয়োগ করতে হবে—
চট্টগ্রাম: ০৫ মিনিট
সিলেট: ০৬ মিনিট
যোগ করতে হবে—
খুলনা: ০৩ মিনিট
রাজশাহী: ০৭ মিনিট
রংপুর: ০৮ মিনিট
বরিশাল: ০১ মিনিট
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
আসুন, নামাজের মাধ্যমে আমরা নিজেদেরকে তাঁর আরও কাছে নিয়ে যাই। জীবনে নিয়ে আসি ইমানের নুর।

জীবনকে সুশৃঙ্খল করতে এবং আল্লাহর সান্নিধ্য পেতে নামাজের কোনো বিকল্প নেই। একজন মুমিনের জন্য নামাজ হলো আল্লাহর সঙ্গে সরাসরি কথোপকথনের মাধ্যম। এটি এমন এক ইবাদত—যা আমাদের মনে আধ্যাত্মিক প্রশান্তি আনে, জীবনের প্রতিটি কাজে আনে বরকত। প্রতিদিন সময় মতো পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা প্রত্যেক মুসলমানের ওপর আবশ্যক। তাই জেনে নেওয়া যাক আজ কোন ওয়াক্তের নামাজ কখন আদায় করতে হবে।
আজ শুক্রবার, ০৭ নভেম্বর ২০২৫ ইংরেজি, ২২ কার্তিক ১৪৩২ বাংলা, ১৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৭ হিজরি। ঢাকা ও তার আশপাশের এলাকার নামাজের সময়সূচি তুলে ধরা হলো—
| নামাজ | ||
|---|---|---|
| তাহাজ্জুদ ও সেহরির শেষ সময় | ০০: ০০ | ০৪: ৪৯ মিনিট |
| ফজর | ০৪: ৫০ মিনিট | ০৬: ০৭ মিনিট |
| জুমা | ১১: ৪৩ মিনিট | ০৩: ৩৯ মিনিট |
| আসর | ০৩: ৪০ মিনিট | ০৫: ১৫ মিনিট |
| মাগরিব | ০৫: ১৭ মিনিট | ০৬: ৩২ মিনিট |
| এশা | ০৬: ৩৩ মিনিট | ০৪: ৪৯ মিনিট |
উল্লিখিত সময়ের সঙ্গে যেসব বিভাগের সময় যোগ-বিয়োগ করতে হবে, সেগুলো হলো:
বিয়োগ করতে হবে—
চট্টগ্রাম: ০৫ মিনিট
সিলেট: ০৬ মিনিট
যোগ করতে হবে—
খুলনা: ০৩ মিনিট
রাজশাহী: ০৭ মিনিট
রংপুর: ০৮ মিনিট
বরিশাল: ০১ মিনিট
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
আসুন, নামাজের মাধ্যমে আমরা নিজেদেরকে তাঁর আরও কাছে নিয়ে যাই। জীবনে নিয়ে আসি ইমানের নুর।

মেঘনা, শীতলক্ষ্যা, আড়িয়াল খাঁ ও পুরোনো ব্রহ্মপুত্রের তীরবিধৌত প্রাচীন সভ্যতা ও ঐতিহ্যে লালিত জেলার নাম নরসিংদী। এ জেলার বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে রয়েছে বেশ কিছু প্রাচীন মুসলিম স্থাপত্য। আছে বেশ কিছু ঐতিহাসিক মসজিদ। এই স্থাপনাগুলো যেমনি প্রাচীন স্থাপত্যরীতির সাক্ষ্য দেয়, তেমনি তুলে ধরে মুসলিম ইতিহাসের
১২ সেপ্টেম্বর ২০২৫
হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর রাজনৈতিক নেতৃত্ব কেবল একটি নতুন ধর্মীয় মতবাদ প্রতিষ্ঠার মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল না, বরং এটি ছিল প্রাক্-ইসলামিক আরবের গোত্রীয় সংঘাত ও নৈরাজ্যের বিপরীতে এক সুসংগঠিত, একত্ববাদী এবং সাংবিধানিক রাষ্ট্রের ভিত্তি স্থাপন। তাঁর নেতৃত্বের কৌশল ছিল গভীর দূরদর্শিতা, নৈতিক কর্তৃত্ব...
১ ঘণ্টা আগে
বর্তমানে ইন্টারনেটে বিভিন্ন ডিজিটাল জাকাত ক্যালকুলেটর পাওয়া যায়। এসব ক্যালকুলেটরে সম্পদের সার্বিক তথ্য দিলে সম্ভাব্য জাকাতের পরিমাণ নির্ণয় করে দেওয়া হয়। ইসলামে এ ধরনের ডিজিটাল ক্যালকুলেটর ব্যবহার করার সঠিক বিধান কী? এ বিষয়ে জানতে চাই।
২ ঘণ্টা আগে
দ্বীনি মাহফিল মুসলিম সমাজের আত্মশুদ্ধি, জ্ঞানচর্চা ও ইমান জাগরণের অন্যতম মাধ্যম। এসব মাহফিলের মাধ্যমে মানুষ আল্লাহভীতি অর্জন করে এবং জীবনকে কোরআন-সুন্নাহর পথে পরিচালনার অনুপ্রেরণা পায়। তবে একটি দ্বীনি মাহফিল তখনই ফলপ্রসূ হয়, যখন এর বক্তা, শ্রোতা ও আয়োজক—সবাই নিজেদের দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করেন।
২ ঘণ্টা আগে