Ajker Patrika

৪৫ বছর ছদ্মবেশে বিলাসী জীবন, অবশেষে বিচারের মুখে গুম-খুনের হোতা গোয়েন্দাপ্রধান

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ১৮ অক্টোবর ২০২৫, ১২: ৪৩
শাহ পাহলভীর গোয়েন্দা সংস্থার প্রধান পারভেজ সাবেতি। ছবি: দ্য গার্ডিয়ানের সৌজন্যে
শাহ পাহলভীর গোয়েন্দা সংস্থার প্রধান পারভেজ সাবেতি। ছবি: দ্য গার্ডিয়ানের সৌজন্যে

ইরানের সাবেক শাহ মোহাম্মদ রেজা পাহলভীর কুখ্যাত অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা ও গোয়েন্দা সংস্থার নাম ছিল সাভাক। ভিন্নমতাবলম্বী ও বিরোধী রাজনৈতিক নেতাদের ধরে নিয়ে গিয়ে অমানবিক নির্যাতন করাই ছিল এই সংস্থার প্রধান কাজ।

এই সংস্থার প্রধান পারভেজ সাবেতি (৮৯) বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডা অঙ্গরাজ্যের উইন্ডারমেরে একটি অভিজাত এলাকায় বসবাস করেন। পিটার ছদ্মনামে এত দিন নির্ঝঞ্ঝাটেই কাটিয়েছেন তিনি। আপাতদৃষ্টিতে শান্তশিষ্ট এক অবসরপ্রাপ্ত বৃদ্ধ হিসেবেই মানুষ তাঁকে চিনত। কিন্তু সম্প্রতি পরিচয় ফাঁস হয়ে গেছে। অতীত কর্মকাণ্ডের জন্য যুক্তরাষ্ট্রেই আইনি চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছেন তিনি।

প্রায় ৪৫ বছর ধরে নিজেকে লোকচক্ষুর আড়ালে রাখতে পেরেছিলেন সাবেতি। তবে সম্প্রতি সাবেক তিন রাজনৈতিক বন্দী তাঁর বিরুদ্ধে ২২৫ মিলিয়ন ডলারের (প্রায় ২,৪০০ কোটি টাকা) ক্ষতিপূরণ মামলা করেছেন।

একজন ইরানি ভিন্নমতাবলম্বী, জ্যেষ্ঠ সাভাক কর্মকর্তার বাড়ির ভান্ডারে পাওয়া বেশ কয়েকটি তিন-স্তরের গ্রিডের একটিতে শুয়ে আছেন। এই বাড়ির নিচেই পাওয়া গেছে মানুষ পোড়ানোর চুল্লি। বিক্ষোভকারীরা সেখানে হামলা চালিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয়। ১৯৭৮ সালের ৩১ ডিসেম্বর তোলা ছবি। ছবি: দ্য গার্ডিয়ানের সৌজন্যে
একজন ইরানি ভিন্নমতাবলম্বী, জ্যেষ্ঠ সাভাক কর্মকর্তার বাড়ির ভান্ডারে পাওয়া বেশ কয়েকটি তিন-স্তরের গ্রিডের একটিতে শুয়ে আছেন। এই বাড়ির নিচেই পাওয়া গেছে মানুষ পোড়ানোর চুল্লি। বিক্ষোভকারীরা সেখানে হামলা চালিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয়। ১৯৭৮ সালের ৩১ ডিসেম্বর তোলা ছবি। ছবি: দ্য গার্ডিয়ানের সৌজন্যে

পারভেজ সাবেতি শাহের শাসনামলে সাভাক-এর অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা বিভাগের পরিচালক ছিলেন। তাঁকে শাহের শাসনের সবচেয়ে ক্ষমতাধর এবং ভয়ংকর পুরুষদের একজন হিসেবে গণ্য করা হতো। ১৯৭৮ সালে লেখা মার্কিন সিআইএর একটি গোপন নথিতেও সাবেতিকে শাহের একান্ত অনুগত হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে মামলার বিবরণের বরাত দিয়ে বলা হয়েছে, দেশজুড়ে বিরোধীদের গ্রেপ্তার, জিজ্ঞাসাবাদ এবং বিচারের ক্ষমতা ছিল সাবেতির হাতে। সাভাক প্রতিষ্ঠার পর থেকে ১৯৭৯ সালে বিলুপ্ত হওয়া পর্যন্ত হাজার হাজার মানুষকে আটক ও নির্যাতন করা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে শত শত ব্যক্তিকে হত্যা করেছে এই সাভাক।

মামলার বাদী তিন ব্যক্তি, যাঁদের বয়স এখন ৬৮ থেকে ৮৫ বছরের মধ্যে, তাঁরা বর্তমানে ক্যালিফোর্নিয়ায় বসবাস করেন। তাঁরা অভিযোগ করেছেন, সাবেতির সরাসরি নির্দেশে তেহরানের কারাগারে তাঁদের ওপর অকথ্য নির্যাতন চালানো হয়েছিল। অত্যাচারের মধ্যে ছিল: ধর্ষণ, বৈদ্যুতিক শক, পানিতে চুবানো ও হাত-পায়ের নখ উপড়ে ফেলা।

বাদীপক্ষের অভিযোগ অনুসারে, সাভাক-এর কারাগারে ‘অ্যাপোলো’ নামে একটি বিশেষ বৈদ্যুতিক চেয়ারের মতো যন্ত্র ব্যবহার করা হতো। এ যন্ত্রটিতে একটি ধাতব হেলমেট ছিল। এই হেলমেট পরার কারণে নির্যাতিত ব্যক্তিরা যখন যন্ত্রণায় চিৎকার করতেন, সেই চিৎকার বহুগুণে বর্ধিত হয়ে নিজেদের কানেই ফিরে আসত। ফলে যন্ত্রণায় চিৎকার করলে যন্ত্রণা আরও বেড়ে যেত।

ইরানে শাহের শাসনামলে রাজনৈতিক পুলিশ সাভাকের হাতে নির্যাতনে অঙ্গ হারানো বন্দীরা। ১৯৮০ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি তোলা ছবি। ছবি: দ্য গার্ডিয়ানের সৌজন্যে
ইরানে শাহের শাসনামলে রাজনৈতিক পুলিশ সাভাকের হাতে নির্যাতনে অঙ্গ হারানো বন্দীরা। ১৯৮০ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি তোলা ছবি। ছবি: দ্য গার্ডিয়ানের সৌজন্যে

সাবেতির আইনজীবীরা যুক্তি দিয়ে মামলাটি খারিজ করার আবেদন করেছেন। তাঁদের দাবি, এই অভিযোগ ‘দায়ের করার সময়সীমা’ পার হয়ে গেছে। কিন্তু গত ১২ আগস্ট, ফ্লোরিডার কেন্দ্রীয় ফেডারেল জেলা আদালতের বিচারক গ্রেগরি প্রেসনেল তাঁদের আবেদন আংশিকভাবে খারিজ করে দেন। বিচারক রায় দেন, নির্যাতনের শিকার ব্যক্তিদের সুরক্ষা আইনের অধীনে করা অভিযোগ আমলে নেওয়া হবে।

যদিও আদালতের নির্দেশে রাজ্যের অন্যান্য সংশ্লিষ্ট আইনি অভিযোগগুলো খারিজ করা হয়েছে। তবে এখন নির্যাতনের অভিযোগটি দায়েরের সময়সীমার বাইরে কি না, তা নির্ধারণের জন্য উভয় পক্ষকে সাক্ষ্য-প্রমাণ সংগ্রহের প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে হবে। যদি অভিযোগটি দায়ের করার সময়সীমার মধ্যে বলে প্রমাণিত হয়, তবে আগামী বছরই এর বিচার শুরু হতে পারে।

সাবেতি এর আগে দাবি করেছিলেন, তিনি ‘সর্বদা নির্যাতনের বিরোধী ছিলেন’ এবং সাভাক কখনো বন্দীদের নির্যাতন করত না।

আত্মগোপন ও পরিচয় ফাঁস

পারভেজ সাবেতি ও তাঁর স্ত্রী নাসরিন (৭৫) ১৯৭৮ সালে তেহরান থেকে পালিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে আসেন। ফাঁস হওয়া স্টেট ডিপার্টমেন্টের নথি অনুযায়ী, তাঁরা ইরান থেকে ২০ মিলিয়ন ডলারের বেশি অর্থ স্থানান্তর করতে সক্ষম হয়েছিলেন। যুক্তরাষ্ট্রে আসার পর তাঁরা নাম পরিবর্তন করে যথাক্রমে পিটার ও ন্যান্সি রাখেন। এই ছদ্মনামে সাবেতি ফ্লোরিডায় একটি রিয়েল এস্টেট ডেভেলপমেন্ট কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করেন এবং ফ্লোরিডার অরেঞ্জ কাউন্টিতে ৩ দশমিক ৫ মিলিয়ন ডলার মূল্যের বিলাসবহুল উইন্ডারমের ম্যানশনসহ কমপক্ষে আটটি সম্পত্তির মালিক হন।

মামলার আরজিতে দাবি করা হয়েছে, ৪৫ বছর ধরে লোকচক্ষুর আড়ালে থাকা সাবেতির পরিচয় প্রকাশ্যে আসে ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে। তাঁর এক মেয়ে লস অ্যাঞ্জেলেসে ইরান সরকারের বিরুদ্ধে একটি র‍্যালিতে বাবার ছবি টুইট করেন, এতেই ফাঁস হয়ে যায় পরিচয়। বাদীপক্ষ দাবি করেছে, এই ঘটনাটির ফলেই তাঁরা সাবেতির অবস্থান চিহ্নিত করতে এবং মামলা করতে সক্ষম হন।

বর্তমানে সাবেতি সাবেক শাহের পুত্র রেজা পাহলভীর নিরাপত্তা উপদেষ্টা হিসেবেও কাজ করছেন বলে জানা যায়।

বাদীপক্ষের আইনজীবী সারা কোলন আদালতের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন। তিনি তাঁর মক্কেলদের নাম গোপন রাখার আবেদন মঞ্জুর করায় স্বস্তি প্রকাশ করেছেন। কারণ মামলা দায়ের করার পর থেকেই তাঁদের হত্যার হুমকি এবং ভয়ভীতি প্রদর্শন করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন তিনি।

নির্যাতনের শিকার ব্যক্তিদের পক্ষে কাজ করা ‘ইরানি কালেক্টিভ ফর জাস্টিস অ্যান্ড অ্যাকাউন্টেবিলিটি’ নামের একটি সংস্থা জানিয়েছে, সাবেতির এই মামলা শাহের শাসন এবং তার পরবর্তী ইসলামি সরকারের অধীনে ইরানে চলে আসা ‘হিংসার চক্র’ বন্ধ করতে সাহায্য করবে। সংস্থাটির মুখপাত্র বলেন, ‘বার্তাটি সহজ এবং স্পষ্ট হওয়া উচিত: সমস্ত ভুক্তভোগী ন্যায়বিচার পাওয়ার যোগ্য এবং নির্যাতন ও নিপীড়নে জড়িত প্রত্যেককেই জবাবদিহির আওতায় আনা উচিত।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

৫ ঘণ্টায়ও নিয়ন্ত্রণে আসেনি শাহজালালের আগুন, ফ্লাইট ওঠানামা স্থগিত

৪৫ বছর ছদ্মবেশে বিলাসী জীবন, অবশেষে বিচারের মুখে গুম-খুনের হোতা গোয়েন্দাপ্রধান

আজকের রাশিফল: প্রেমের সম্পর্কে গভীরতা বাড়বে, পকেটে আসবে টাকা

ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে প্রধান শিক্ষক গ্রেপ্তার

মা-বাবাকে খুন করে জেলে রাজু, অনিশ্চিত স্ত্রী ও ৯ মাসের শিশুকন্যার ভবিষ্যৎ

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

অপারেশন সিঁদুর ছিল ট্রেলার, পাকিস্তানের প্রতি ইঞ্চি মাটি এখন ব্রহ্মসের আওতায়: রাজনাথ সিং

কলকাতা প্রতিনিধি  
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

ভারতের প্রতিরক্ষা ক্ষমতা এখন শুধু সীমান্ত রক্ষার মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই, বরং বিশ্বদরবারে শক্তির প্রতীক হয়ে উঠছে, তার প্রমাণ আবারও দেখা গেল লক্ষ্ণৌয়ে। আজ শনিবার উত্তর প্রদেশের রাজধানী লক্ষ্ণৌর সারোজিনি নগরে ব্রহ্মস মিসাইল উৎপাদন কারখানার প্রথম ব্যাচের উদ্বোধন করলেন ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং। অনুষ্ঠানে রাজনাথ সিং বলেন, ‘অপারেশন সিঁদুরের সময় যা ঘটেছিল, তা ছিল ট্রেলার। পাকিস্তানের প্রতি ইঞ্চি মাটি এখন ভারতের ব্রহ্মসের আওতায়।’ প্রতিরক্ষামন্ত্রীর এই বক্তব্যের মধ্যে ছিল একটি কঠোর বার্তা—ভারতের সামরিক প্রতিক্রিয়া কেবল সীমান্তে প্রতিরক্ষামূলক নয়, বরং প্রয়োজনে আক্রমণাত্মক এবং সুনির্দিষ্টও হতে পারে।

সম্প্রতি অপারেশন সিঁদুর নামটি আলোচনায় আসে। গত এপ্রিলে জম্মু ও কাশ্মীরের পেহেলগামে এক ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার প্রতিক্রিয়ায় মে মাসে ভারতের সামরিক বাহিনী পাকিস্তানের ভেতরে একটি অভিযান চালায়। ওই অভিযানের নামই ছিল অপারেশন সিঁদুর। ভারত এই অভিযানে পাকিস্তানে থাকা একাধিক জঙ্গিঘাঁটি এবং প্রতিরক্ষা স্থাপনায় লক্ষ্যভেদী আঘাত হানে। সেই অভিযানে ব্যবহৃত হয় দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি ব্রহ্মস সুপারসনিক মিসাইল, যার গতি শব্দের তিন গুণ এবং নির্ভুলতা প্রায় শতভাগ।

প্রতিরক্ষা সূত্রে জানা যায়, এই মিসাইল এমনভাবে তৈরি, শত্রুপক্ষের রাডার একে শনাক্ত করতে পারবে না। ফলে এটি কার্যত ‘দৃশ্যের আড়ালে’ গিয়েই আঘাত হানতে পারবে। অপারেশন সিঁদুরের পরে থেকে এই মিসাইল আন্তর্জাতিকভাবে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে।

রাজনাথ সিং বলেন, ‘ব্রহ্মস শুধুই একটি মিসাইল নয়, এটি ভারতের আত্মবিশ্বাসের প্রতীক, যা আমাদের সামরিক বাহিনীর তিনটি শাখারই অন্যতম স্তম্ভ হয়ে উঠেছে।’ তাঁর বক্তব্যে ছিল জাতীয় গর্বের সুর, কিন্তু একই সঙ্গে ছিল একটি রাজনৈতিক ইঙ্গিতও—দেশীয় প্রযুক্তি ও প্রতিরক্ষা শিল্পের উত্থানকে সরকারের সাফল্য হিসেবে দেখানো।

যোগী আদিত্যনাথ বলেন, ‘লক্ষ্ণৌ আজ কেবল সংস্কৃতি বা ঐতিহ্যের শহর নয়, এটি এখন প্রযুক্তি ও শিল্পেরও শহর। এখানে ব্রহ্মস মিসাইল তৈরি হচ্ছে—এটাই প্রমাণ করছে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আত্মনির্ভর ভারতের স্বপ্ন বাস্তব হয়ে উঠছে।’ তিনি জানান, উত্তর প্রদেশ ডিফেন্স ইন্ডাস্ট্রিয়াল করিডরের মাধ্যমে এ রাজ্য এখন দেশীয় প্রতিরক্ষাসামগ্রী উৎপাদনের এক বড় কেন্দ্র হিসেবে গড়ে উঠছে, যা শুধু নিরাপত্তা নয়, কর্মসংস্থান ও প্রযুক্তিগত দক্ষতারও নতুন দিগন্ত খুলে দিয়েছে।

রাজনাথ সিং বলেন, ‘অপারেশন সিঁদুরের সময় যা ঘটেছিল, তা শুধু এক দিনের ঘটনা নয়, এটি ভারতের জয়ের অভ্যাসের প্রতিফলন। এখন সেই আত্মবিশ্বাস ধরে রাখা আমাদের সবার দায়িত্ব।’ তিনি আরও বলেন, ‘ব্রহ্মস এখন শুধু ভারতের নয়, বরং বিশ্ববাসীর কাছেও ভারতের শক্তির প্রতীক হয়ে উঠছে।’

ভারতীয় নিরাপত্তা বিশ্লেষকেরা মনে করছেন, প্রতিরক্ষামন্ত্রীর এই বক্তব্যের ভেতর দিয়ে একদিকে যেমন পাকিস্তানের প্রতি কড়া বার্তা দেওয়া হয়েছে, তেমনি আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলেও ভারতের কৌশলগত অবস্থান স্পষ্ট করা হয়েছে। দক্ষিণ এশিয়ায় সামরিক ভারসাম্যের প্রশ্নে এটি একটি নতুন অধ্যায়; কারণ, এই প্রথম ভারতের মন্ত্রী প্রকাশ্যে বলেছেন, পাকিস্তানের প্রতি ইঞ্চি মাটি এখন ভারতের মিসাইলের আওতায়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

৫ ঘণ্টায়ও নিয়ন্ত্রণে আসেনি শাহজালালের আগুন, ফ্লাইট ওঠানামা স্থগিত

৪৫ বছর ছদ্মবেশে বিলাসী জীবন, অবশেষে বিচারের মুখে গুম-খুনের হোতা গোয়েন্দাপ্রধান

আজকের রাশিফল: প্রেমের সম্পর্কে গভীরতা বাড়বে, পকেটে আসবে টাকা

ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে প্রধান শিক্ষক গ্রেপ্তার

মা-বাবাকে খুন করে জেলে রাজু, অনিশ্চিত স্ত্রী ও ৯ মাসের শিশুকন্যার ভবিষ্যৎ

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ভারতের পার্লামেন্টের পাশে এমপিদের অ্যাপার্টমেন্টে অগ্নিকাণ্ড

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

ভারতের পার্লামেন্ট ভবন থেকে মাত্র ২০০ মিটার দূরে অবস্থিত একটি অ্যাপার্টমেন্টে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। দিল্লির বিডি মার্গে অবস্থিত ব্রহ্মপুত্র নামের এই অ্যাপার্টমেন্টটি সংসদ সদস্যদের জন্য বরাদ্দ সরকারি বাসভবনগুলোর মধ্যে অন্যতম।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আজ শনিবার স্থানীয় সময় দুপুরের দিকে ভবনটির ওপরের তলায় আগুন লাগে। এতে ভবনটির বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। পরবর্তীকালে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ফায়ার সার্ভিসের একাধিক কর্মী দ্রুত ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন। তবে আগুন লাগার কারণ তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি।

এ ঘটনায় তৃণমূল কংগ্রেসের সংসদ সদস্য সাকেত গোখলে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তিনি অভিযোগ করেছেন, ঘটনাস্থলে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা পৌঁছাতে অনেক দেরি করেছেন। তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে লিখেছেন, ‘দিল্লির বিডি মার্গের ব্রহ্মপুত্র অ্যাপার্টমেন্টে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। এখানে সবাই রাজ্যসভার সাংসদ। ভবনটি পার্লামেন্ট থেকে ২০০ মিটার দূরে। ৩০ মিনিট ধরে কোনো ফায়ার ব্রিগেড নেই। আগুন এখনো জ্বলছে এবং বাড়ছে। বারবার ফোন করা সত্ত্বেও দমকল বাহিনীর খবর নেই। দিল্লি সরকারের লজ্জা হওয়া উচিত।’

শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে বলে জানা গেছে।

প্রসঙ্গত, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ২০২০ সালে এই ভবনটি উদ্বোধন করেছিলেন। এখানে লোকসভা ও রাজ্যসভার বেশ কয়েকজন সংসদ সদস্য বসবাস করেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

৫ ঘণ্টায়ও নিয়ন্ত্রণে আসেনি শাহজালালের আগুন, ফ্লাইট ওঠানামা স্থগিত

৪৫ বছর ছদ্মবেশে বিলাসী জীবন, অবশেষে বিচারের মুখে গুম-খুনের হোতা গোয়েন্দাপ্রধান

আজকের রাশিফল: প্রেমের সম্পর্কে গভীরতা বাড়বে, পকেটে আসবে টাকা

ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে প্রধান শিক্ষক গ্রেপ্তার

মা-বাবাকে খুন করে জেলে রাজু, অনিশ্চিত স্ত্রী ও ৯ মাসের শিশুকন্যার ভবিষ্যৎ

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ট্রাম্পের বরাদ্দ কাটছাঁটের পরেও আয় ও অনুদানে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের রেকর্ড

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ছবি: এএফপি
ছবি: এএফপি

বিশ্বের সবচেয়ে ধনী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়। ২০২৫ অর্থবছরে বিশ্ববিদ্যালয়টির তহবিল প্রায় ৪০০ কোটি ডলার বেড়ে ৫৬ দশমিক ৯ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ট্রাম্প প্রশাসনের গবেষণা তহবিল কমানোর চাপের মধ্যেও বিপুল পরিমাণ বিনিয়োগ রিটার্ন এই প্রবৃদ্ধির মূল চালিকাশক্তি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের বিনিয়োগ ব্যবস্থাপনা সংস্থা হার্ভার্ড ম্যানেজমেন্ট কোম্পানি (এইচএমসি) জানিয়েছে, চলতি অর্থবছরে (২০২৫ সালের ৩০ জুনের পর থেকে) এখন পর্যন্ত তারা ১১ দশমিক ৯ শতাংশ আয় করেছে। এটি হার্ভার্ডের স্বাভাবিক লক্ষ্য ৮ শতাংশের চেয়ে অনেক বেশি। এর আগের বছর (২০২৪ অর্থবছর) বিশ্ববিদ্যালয়টির তহবিল ৯ দশমিক ৬ শতাংশ বেড়ে মোট ৫৩ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছিল।

বিশ্ববিদ্যালয়টি জানিয়েছে, চলতি বছর তারা প্রাক্তন শিক্ষার্থী ও শুভানুধ্যায়ীদের কাছ থেকে রেকর্ড ৬০০ মিলিয়ন ডলার অনুদান পেয়েছে। কোনো শর্ত ছাড়াই এই বিপুল পরিমাণ অর্থ বিশ্ববিদ্যালয়ের তহবিলে যুক্ত হয়েছে।

এদিকে, তহবিল বৃদ্ধির এই খবর এল এমন সময়ে, যখন হার্ভার্ড ও প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের মধ্যে দ্বন্দ্ব চলছে। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প অভিযোগ করেছেন, গাজায় যুদ্ধ চলাকালে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় ইহুদি-বিরোধিতা উসকে দিয়েছে। তবে সমালোচকেরা বলছেন, এটি আসলে ট্রাম্পের একটি বৃহত্তর প্রচারণার অংশ, যার লক্ষ্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বামঘেঁষা মনোভাব দমন করা।

ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে চলা এ বিতর্কটি এখন আদালতে গড়িয়েছে। এতে ট্রাম্প প্রশাসনের গবেষণা তহবিল কমানো এবং বিদেশি শিক্ষার্থী ভর্তি সীমিত করার পদক্ষেপও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ট্রাম্প প্রশাসনের এসব সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে লড়ছে।

এইচএমসির প্রধান নির্বাহী এন পি নারভেকার এক চিঠিতে জানিয়েছেন, হার্ভার্ডের তহবিলের ৪১ শতাংশ প্রাইভেট ইকুইটি শেয়ারভিত্তিক বিনিয়োগে, ৩১ শতাংশ হেজ ফান্ডে, এবং ১৪ শতাংশ পাবলিক ইকুইটিতে বিনিয়োগ করা হয়েছে।

নারভেকার বলেন, ‘যদিও পাবলিক ইকুইটির তুলনায় প্রাইভেট বিনিয়োগ কম থাকায় কিছুটা প্রভাব পড়েছে, তবুও দক্ষ বিনিয়োগ ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে সামগ্রিকভাবে ভালো ফল পাওয়া গেছে।’

আইভি লিগভুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর বিনিয়োগ ও রিটার্ন সব সময়ই আলোচনায় থাকে। কারণ, তারা প্রথম থেকেই হেজ ফান্ড ও প্রাইভেট ইকুইটি ব্যবহারের পথিকৃৎ। তবে সাম্প্রতিক রাজনৈতিক টানাপোড়েনে তাদের কর্মকাণ্ড এখন আরও বেশি নজরদারিতে।

হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেসিডেন্ট অ্যালান গারবার বলেন, ‘আমরা অনিশ্চয়তা এবং আয়ের উৎসে হুমকির সঙ্গে খাপ খাওয়ানোর চেষ্টা করছি।’ তবে তিনি সরাসরি ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে তাদের দ্বন্দ্বের কথা উল্লেখ করেননি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

৫ ঘণ্টায়ও নিয়ন্ত্রণে আসেনি শাহজালালের আগুন, ফ্লাইট ওঠানামা স্থগিত

৪৫ বছর ছদ্মবেশে বিলাসী জীবন, অবশেষে বিচারের মুখে গুম-খুনের হোতা গোয়েন্দাপ্রধান

আজকের রাশিফল: প্রেমের সম্পর্কে গভীরতা বাড়বে, পকেটে আসবে টাকা

ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে প্রধান শিক্ষক গ্রেপ্তার

মা-বাবাকে খুন করে জেলে রাজু, অনিশ্চিত স্ত্রী ও ৯ মাসের শিশুকন্যার ভবিষ্যৎ

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

২৭ মাস বেতন নেই, কর্ণাটকে সরকারি দপ্তরের সামনে ‘আত্মহত্যা’ কর্মচারীর

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ১৮ অক্টোবর ২০২৫, ১৬: ০৭
পানি সরবরাহ কর্মী চিকুসা নায়াকা। ছবি: এনডিটিভি
পানি সরবরাহ কর্মী চিকুসা নায়াকা। ছবি: এনডিটিভি

ভারতের কর্ণাটকের চামরাজনগর জেলায় পঞ্চায়েত অফিসের সামনে চিকুসা নায়াকা নামের একজন পানি সরবরাহ কর্মী ‘আত্মহত্যা’ করেছেন। ২৭ মাস ধরে বেতন পাচ্ছিলেন না তিনি। বেতন চাইতে গেলে স্থানীয় কর্মকর্তারা তাঁকে মানসিকভাবে হয়রানি করেন। এসব অভিযোগ তুলে ওই কর্মী ‘আত্মহত্যা’ করেছেন বলে জানিয়েছে এনডিটিভি।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যমটির প্রতিবেদনে বলা হয়, চামরাজনগর জেলার হোঙ্গানুরু গ্রামে ২০১৬ সাল থেকে ওয়াটারম্যান বা পানি সরবরাহ কর্মী হিসেবে কাজ করছিলেন চিকুসা।

সুইসাইড নোটে তিনি লিখেছেন, গত ২৭ মাসের বকেয়া বেতন পরিশোধের জন্য বারবার অনুরোধ করলেও কোনো সাড়া মেলেনি। এমনকি অসুস্থতার কারণে পদত্যাগপত্র জমা দেওয়ার পরও কর্তৃপক্ষ কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।

সুইসাইড নোটে তিনি লেখেন, ‘২০১৬ সাল থেকে পানি সরবরাহ কর্মী হিসেবে কাজ করছি। পঞ্চায়েত উন্নয়ন কর্মকর্তা (পিডিও) ও গ্রাম পঞ্চায়েত সভাপতি—দুজনকেই আমার ২৭ মাসের বকেয়া বেতন পরিশোধের অনুরোধ জানিয়েছি। কিন্তু তাঁরা কোনো গুরুত্ব দেননি। এমনকি জেলা পঞ্চায়েতের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার (সিইও) কাছেও গিয়েছিলাম। কিন্তু কিছুই হয়নি।’

‘আত্মহত্যার’ আগে রেখে যাওয়া চিঠিতে চিকুসা আরও অভিযোগ করেন, পিডিও রামে গৌড়া ও গ্রাম পঞ্চায়েত সভাপতির স্বামী মোহনকুমার তাঁকে ক্রমাগত মানসিকভাবে হয়রানি করতেন।

চিকুসা লেখেন, ‘আমি ছুটি চাইলে তাঁরা বলতেন, আগে নিজের বিকল্প কাউকে খুঁজে নিয়ে আসো। তাঁরা সকাল ৮টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত আমাকে অফিসে থাকতে বাধ্য করতেন। পিডিও ও মোহনকুমারের নির্যাতনের কারণেই আমি জীবন শেষ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’

সুইসাইড নোটে প্রশাসনের কাছে এই দুই ব্যক্তির বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ জানান তিনি।

চিকুসার ‘আত্মহত্যার’ ঘটনার পর পিডিও, গ্রাম পঞ্চায়েত সভাপতি ও তাঁর স্বামীর বিরুদ্ধে তফসিলি জাতি অত্যাচার প্রতিরোধ আইনে মামলা করে পুলিশ।

এই ঘটনার পর দায়িত্বে অবহেলা ও সরকারি নিয়মভঙ্গের অভিযোগে পিডিও রামে গৌড়াকে সাময়িক বরখাস্ত করেন জেলা পঞ্চায়েতের সিইও।

এদিকে এই ঘটনায় কংগ্রেস নেতা ও কর্ণাটক রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়ার কড়া সমালাচনা করেছে বিজেপি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

৫ ঘণ্টায়ও নিয়ন্ত্রণে আসেনি শাহজালালের আগুন, ফ্লাইট ওঠানামা স্থগিত

৪৫ বছর ছদ্মবেশে বিলাসী জীবন, অবশেষে বিচারের মুখে গুম-খুনের হোতা গোয়েন্দাপ্রধান

আজকের রাশিফল: প্রেমের সম্পর্কে গভীরতা বাড়বে, পকেটে আসবে টাকা

ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে প্রধান শিক্ষক গ্রেপ্তার

মা-বাবাকে খুন করে জেলে রাজু, অনিশ্চিত স্ত্রী ও ৯ মাসের শিশুকন্যার ভবিষ্যৎ

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত