Ajker Patrika

ইসরায়েলবিরোধী বিক্ষোভে মার্কিন ক্যাম্পাস রণক্ষেত্র, ৫ শতাধিক গ্রেপ্তার

আপডেট : ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৪: ১১
ইসরায়েলবিরোধী বিক্ষোভে মার্কিন ক্যাম্পাস রণক্ষেত্র, ৫ শতাধিক গ্রেপ্তার

হামাসের সঙ্গে ইসরায়েলের যুদ্ধবিরতির দাবিতে বিক্ষোভে যুক্তরাষ্ট্রের বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস যেন রণক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে। গত এক সপ্তাহে পুলিশ ৫৫০ জনেরও বেশি বিক্ষোভকারীকে গ্রেপ্তার করেছে। পুলিশ ও বিক্ষোভকারীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটেছে।

আটলান্টার এমোরি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের নির্দেশে বিক্ষোভকারীদের ওপর টেজার ও টিয়ার গ্যাস ব্যবহার করে পুলিশ। যদিও বেশির ভাগ ক্ষেত্রে বিক্ষোভ শান্তিপূর্ণ ছিল বলে ঘটনাস্থলে উপস্থিত কর্মী ও মিডিয়া কর্মীরা জানান।

এমোরি ক্যাম্পাসে পুলিশ প্রবেশের পরবর্তী দৃশ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংলিশ অ্যান্ড ইনডিজেনাস বিষয়ের অধ্যাপক এমিল কেমেকে কিশোর বয়সে গুয়াতেমালার গৃহযুদ্ধের কথা মনে করিয়ে দেয়। পরিস্থিতি বর্ণনা করতে গিয়ে দ্য গার্ডিয়ানকে বলেন, ‘পুলিশ ক্যাম্পাসে ঢোকার পরপরই সবাইকে জোর করে সরাতে থাকে। সশস্ত্র পুলিশ ও তাদের রাবার বুলেট এসব দেখে আমার মনে হচ্ছিল আমি কোনো যুদ্ধক্ষেত্রে আছি। আমাদের ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দেওয়া হয়।’ 

তিনি আরও বলেন, ‘পুলিশ আমার পাশে এক শিক্ষার্থীকে ধরে নিয়ে যায়, এক বৃদ্ধাকে ধাক্কা দেয়, এরপর আমাকেও ধাক্কা দেয়।’ 

বিক্ষোভকারী শিক্ষার্থীরা বলছেন, তাঁরা গাজার ফিলিস্তিনিদের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করছেন। হামাস নিয়ন্ত্রিত ওই অঞ্চলের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলছে, উপত্যকাটিতে এরই মধ্যে ৩৪ হাজার ৩০৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। বিক্ষোভকারীরা চান বিশ্ববিদ্যালয়গুলো যেন ইসরায়েলের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট এমন সবকিছুতে বিনিয়োগ বন্ধ করে, যা গাজা যুদ্ধে ইন্ধন জোগায়। এর মানে হলো ব্ল্যাকরক, গুগলের পাশাপাশি অ্যামাজনের ক্লাউড পরিষেবা, লকহিড মার্টিন, এমনকি এয়ারবিএনবি থেকে ক্যাম্পাসের অর্থায়ন বিচ্ছিন্ন করার দাবি জানিয়েছেন তাঁরা। 

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এক ভিডিওতে দুই নারী অধ্যাপককে আটক করতে দেখা যায়সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দুই নারী অধ্যাপককে আটক করতে দেখা যায়। এর মধ্যে এক অধ্যাপককে মাটিতে ঠেসে ধরে এক পুলিশ এবং আরেক পুলিশ তার হাত পিছমোড়া করে হাতকড়া পরায়। 

ক্যাম্পাসে স্থাপিত তাঁবু গেড়ে বসা শিক্ষার্থীদের ছত্রভঙ্গ করার যৌথ অভিযানে নেতৃত্ব দিচ্ছে আটলান্টা পুলিশ ও জর্জিয়ার সেনারা। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এক বিবৃতিতে বলে, ক্যাম্পাসে পুলিশ প্রবেশের কয়েক মুহূর্তের মধ্যে ২৮ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এর মধ্যে ২০ জনই এমোরি বিশ্ববিদ্যালয়ের সদস্য ছিলেন। 

স্কুলের প্রেসিডেন্ট বলেন, শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের ভিডিওগুলো দেখে তিনি ‘হতবাক’ হয়েছেন এবং তিনি ‘আতঙ্কিত’ যে এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সদস্যদের এই জাতীয় ঘটনার প্রত্যক্ষ করতে হয়েছে। 

সাম্প্রতিক কয়েক সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ঘটে যাওয়া বিক্ষোভের ঘটনার মধ্যে এবারই এমন দ্রুত প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে পুলিশ। এটিই সম্ভবত একমাত্র ক্যাম্পাস যেখানে শিক্ষার্থীদের ওপর মরিচের তৈরি বল, স্টান বন্দুক এবং রাবার বুলেট ব্যবহার করা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত