Ajker Patrika

রাশিয়া খুবই বড় শক্তি, চুক্তি ছাড়া ইউক্রেনের কোনো গতি নেই: ট্রাম্প

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ১৬ আগস্ট ২০২৫, ২৩: ৫৮
ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে গতকাল আলাস্কায় ট্রাম্প-পুতিনের এক ঐতিহাসিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ছবি: রয়টার্সের সৌজন্যে
ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে গতকাল আলাস্কায় ট্রাম্প-পুতিনের এক ঐতিহাসিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ছবি: রয়টার্সের সৌজন্যে

চলমান যুদ্ধ বন্ধে ইউক্রেনকে রাশিয়ার সঙ্গে একটি চুক্তি করার আহ্বান জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তাঁর যুক্তি, ‘রাশিয়া খুবই বড় শক্তি, ইউক্রেন নয়। তাই যুদ্ধ এড়িয়ে টিকে থাকতে হলে চুক্তি ছাড়া ইউক্রেনের কোনো গতি নেই।’ এই মন্তব্য ট্রাম্পের আলাস্কা বৈঠকের পর এসেছে, যার অর্থ যুদ্ধবিরতি বা ভূমি বিনিময়—যেভাবেই এই যুদ্ধের সমাধান হোক না কেন, ইউক্রেনকেই বড় ছাড় দিতে হবে।

এদিকে বার্তা সংস্থা রয়টার্স তাদের একটি বিশেষ প্রতিবেদনে বলছে, আলাস্কার ওই বৈঠকে ট্রাম্পের কাছে ইউক্রেনের আরও কিছু ভূমি দাবি করেছেন পুতিন। সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র রয়টার্সকে জানিয়েছে, বৈঠকের পরপরই ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কিকে ট্রাম্প বলেন, পুতিন একটি প্রস্তাব দিয়েছেন, ‘যদি কিয়েভ পুরো দোনেৎস্ক ছেড়ে দেয়, তাহলে রাশিয়া অধিকাংশ ফ্রন্টলাইন থেকে সেনা প্রত্যাহার করে নেবে।’

শিল্পসমৃদ্ধ দোনেৎস্ক রাশিয়ার অন্যতম প্রধান লক্ষ্য। তবে জেলেনস্কি তাৎক্ষণিকভাবে এই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছেন। উল্লেখ্য, বর্তমানে ইউক্রেনের এক-পঞ্চমাংশ এলাকা নিয়ন্ত্রণ করছে রাশিয়া, যার মধ্যে দোনেৎস্কের প্রায় তিন-চতুর্থাংশ অন্তর্ভুক্ত।

আলাস্কার বৈঠকের পর ট্রাম্প পুতিনের সঙ্গে একমত হয়েছেন, অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির পরিবর্তে সরাসরি একটি শান্তিচুক্তি করা উচিত। এর আগে ইউক্রেন ও তার ইউরোপীয় মিত্ররা যুদ্ধবিরতিকেই প্রথম শর্ত হিসেবে দাবি করে আসছিল। ট্রাম্প তাঁর ট্রুথ সোশ্যালে লিখেছেন, ‘রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে এই ভয়াবহ যুদ্ধ শেষ করার সর্বোত্তম উপায় হলো সরাসরি একটি শান্তিচুক্তিতে যাওয়া, যা যুদ্ধের অবসান ঘটাবে, নিছক একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তি নয়, যা প্রায়শই কার্যকর থাকে না।’

যদিও পুতিনের এই দাবি ও ট্রাম্পের অবস্থানের পরিবর্তন ইউক্রেন এবং তার ইউরোপীয় মিত্রদের জন্য হতাশাজনক, তবু তারা ট্রাম্পের এই প্রচেষ্টাকে স্বাগত জানিয়েছে। জেলেনস্কি আগামী সোমবার ওয়াশিংটনে ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠকে বসতে যাচ্ছেন। তিনি জানিয়েছেন, ইউক্রেনের নিরাপত্তা নিয়ে তিনি ট্রাম্পের সঙ্গে আলোচনা করবেন।

এদিকে, ইউরোপের কিছু রাজনীতিবিদ এবং বিশ্লেষক এই বৈঠক নিয়ে তীব্র সমালোচনা করেছেন। জার্মান রাষ্ট্রদূত উলফগ্যাং ইসচিঙ্গার বলেন, ‘পুতিন ট্রাম্পের কাছ থেকে লালগালিচা সংবর্ধনা পেয়েছেন, অথচ ট্রাম্প কিছুই পাননি।’ তিনি এই বৈঠককে ‘পুতিনের জন্য ১-০’ জয় হিসেবে অভিহিত করেছেন।

ইউক্রেনে এই যুদ্ধ ইউরোপের গত ৮০ বছরের ইতিহাসে সবচেয়ে ভয়াবহ। এতে উভয় পক্ষের ১০ লক্ষাধিক মানুষ হতাহত হয়েছে। এই বৈঠকের পর পুতিন তাঁর অবস্থানে কোনো পরিবর্তন আনেননি। এই বৈঠক তাঁর জন্য একটি কূটনৈতিক বিজয় হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। যুদ্ধের আগে ট্রাম্পের পক্ষ থেকে কঠোর নিষেধাজ্ঞার হুমকি দেওয়া হলেও বৈঠকের পর ট্রাম্প জানিয়েছেন, তিনি আপাতত চীনের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের বিষয়টি স্থগিত রাখবেন, যা রাশিয়ার জন্যও স্বস্তির খবর। কারণ, ভারতের মতো চীনও রাশিয়ার তেল কেনে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

গ্রেপ্তারি পরোয়ানায় মর‍াল এফেক্ট পড়েছে, তবে সেনাবাহিনী ন্যায়ের পক্ষে অটল: সেনাসদর

ট্রাইব্যুনালের গ্রেপ্তারি পরোয়ানাভুক্ত ১৫ সেনা কর্মকর্তা হেফাজতে: সেনাসদর

‘গোপনে’ দুই অধ্যাদেশের অনুমোদনে টিআইবির নিন্দা, মতামত নিয়ে সংশোধনের দাবি

বিগত সরকারের সমর্থকদের পক্ষে নিতে উঠেপড়ে লেগেছে প্রায় সব দল: ডিআইজি হাবীব

চীনের বেলুন সহ্য হয়নি, এখন যুক্তরাষ্ট্রের মাটিতে কাতারকে বিমানঘাঁটি দিচ্ছেন ট্রাম্প

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত