Ajker Patrika

ফিলিস্তিনে ৩ হাজার বছরের পুরোনো সংঘাত শেষের পথে: ট্রাম্প

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ০৫ অক্টোবর ২০২৫, ১৫: ১৬
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি: এএফপি
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি: এএফপি

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষণা দিয়েছেন, ইসরায়েল গাজা থেকে সেনা সরিয়ে নেওয়ার জন্য নির্ধারিত ‘উইথড্রয়াল লাইন বা প্রত্যাহার রেখা’র বিষয়ে প্রাথমিকভাবে সম্মত হয়েছে। এই প্রস্তাব হামাসের কাছেও পাঠানো হয়েছে। হামাসের সম্মতি পেলেই অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হবে। একই সঙ্গে শুরু হবে ইসরায়েলি জিম্মিদের মুক্তি ও ফিলিস্তিনি বন্দীদের বিনিময়।

মার্কিন সম্প্রচারমাধ্যম ফক্স নিউজ জানিয়েছে, ট্রাম্প নিজ মালিকানাধীন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে এ ঘোষণা দিয়েছেন। কেবল তা-ই নয়, ট্রাম্প দাবি করেছেন, তাঁর পরিকল্পনার মধ্য দিয়ে ৩ হাজার বছরের পুরোনো বিপর্যয়কর সংঘাতের শেষ হতে যাচ্ছে।

ট্রাম্প লিখেছেন, ‘আলোচনার পর ইসরায়েল প্রাথমিকভাবে প্রত্যাহার রেখার বিষয়ে সম্মত হয়েছে। আমরা সেটা হামাসকে জানিয়েছি এবং দেখিয়েছি। হামাস নিশ্চিত করলেই যুদ্ধবিরতি অবিলম্বে কার্যকর হবে। জিম্মি ও বন্দীদের বিনিময় শুরু হবে। এরপর আমরা সরে যাওয়ার পরবর্তী ধাপের পরিবেশ তৈরি করব, যা আমাদের এই ৩ হাজার বছরের বিপর্যয়ের সমাপ্তির কাছে নিয়ে যাবে।’

এর আগে, স্থানীয় সময় গতকাল শনিবার সকালে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এক বিবৃতিতে বলেন, ‘আমরা এক বিশাল অর্জনের দ্বারপ্রান্তে।’ তাঁর ঘোষণার ঠিক কয়েক ঘণ্টা পরেই ট্রাম্প এ ঘোষণা দেন। নেতানিয়াহু বলেন, ‘এখনো চূড়ান্ত হয়নি। আমরা গুরুত্ব দিয়ে কাজ করছি।’

ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা আশা করি, ঈশ্বরের কৃপায় আগামী কয়েক দিনের মধ্যে, সুক্কুত উৎসব চলাকালেই আমি আপনাদের জানাতে পারব—আমাদের সব জিম্মি, জীবিত বা মৃত, এক ধাপেই ফিরে এসেছে। সেই সময়ে আইডিএফ (ইসরায়েলি সেনাবাহিনী) গাজার ভেতরে এবং নিয়ন্ত্রিত এলাকায় অবস্থান করবে।’

নেতানিয়াহু দাবি করেন, সামরিক ও কূটনৈতিক চাপে হামাস ইসরায়েলের প্রস্তাবিত পরিকল্পনায় রাজি হয়েছে। যদিও এর আগে হামাস গাজা থেকে পুরোপুরি সেনা প্রত্যাহার ছাড়াই জিম্মিদের মুক্তি দিতে প্রস্তুত ছিল। প্রথম ধাপে পরিকল্পনা অনুযায়ী হামাস সব ইসরায়েলি জিম্মি মুক্তি দেবে। তবে এ সময় আইডিএফ নিজেদের অবস্থান বদলালেও গাজার ভেতরের গুরুত্বপূর্ণ কৌশলগত এলাকাগুলো নিয়ন্ত্রণে রাখবে।

জিম্মি মুক্তির টেকনিক্যাল বিষয়গুলো চূড়ান্ত করতে নেতানিয়াহু তাঁর আলোচক দলকে মিশরে পাঠাবেন। এই দলের নেতৃত্ব দেবেন মন্ত্রী রন ডারমার। কয়েক দিনের মধ্যেই এই প্রক্রিয়া শেষ হবে বলে আশা করছেন তিনি। নেতানিয়াহু জোর দিয়ে বলেন, ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্র চাইছে হামাস যেন কোনোভাবেই দেরি বা সময়ক্ষেপণ করতে না পারে।

দ্বিতীয় ধাপে নেতানিয়াহুর পরিকল্পনা অনুযায়ী হামাসকে নিরস্ত্র করা হবে এবং গাজাকে সামরিকভাবে নিরস্ত্রীকৃত এলাকা বানানো হবে। এটি কূটনৈতিকভাবে ‘ট্রাম্প প্ল্যান’-এর অধীনেও হতে পারে, না হলে সামরিক উপায়ে। নেতানিয়াহু বলেন, ‘আমি ওয়াশিংটনেও বলেছি—সহজ পথে হোক বা কঠিন পথে, এটা হতেই হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা একসঙ্গে আমাদের শত্রুদের ধ্বংসের পরিকল্পনা ঠেকিয়েছি। গাজা থেকে রাফাহ, বৈরুত থেকে দামেস্ক, ইয়েমেন থেকে তেহরান—সব জায়গায় আমরা একসঙ্গে অনেক কিছু অর্জন করেছি। বিজয় থেকে বিজয়ে আমরা মধ্যপ্রাচ্যের চেহারা বদলে দিচ্ছি। ইসরায়েলের চিরস্থায়িত্ব নিশ্চিত করতে একসঙ্গে কাজ চালিয়ে যাব।’

নেতানিয়াহু ধন্যবাদ জানান ট্রাম্পকে। ইরানের ফরদো পারমাণবিক স্থাপনায় বোমা হামলার জন্য বি-টু যুদ্ধবিমান পাঠানো এবং তাঁর অবিচল সমর্থনের জন্য ট্রাম্পের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন তিনি।

আরও খবর পড়ুন:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত