আজকের পত্রিকা ডেস্ক
যুদ্ধবিমানের মহড়া, লাল গালিচায় সংবর্ধনা আর দেয়ালে সাঁটানো স্লোগান ‘শান্তির পথে অগ্রযাত্রা’। গতকাল শুক্রবার এমন রাজকীয় আবহে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে যুক্তরাষ্ট্রে স্বাগত জানান মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তবে আলাস্কায় বৈঠক যে আশায়, তা যেন এখনো অধরা। আকস্মিকভাবে বৈঠক শেষ হয়ে যাওয়া এই বৈঠকের ফলাফল অজানাই রয়ে গেছে।
প্রায় তিন ঘণ্টা বৈঠকের পর দুই নেতা যৌথভাবে অগ্রগতির ঘোষণা দিলেও বৈঠকের পর সংবাদ সম্মেলনে জানা গেল না কী অর্জিত হয়েছে এই দীর্ঘ সময়ের বৈঠকে। কোনো ব্যাখ্যা দেননি এই দুই নেতা।
বিশ্ব রাজনীতির শীর্ষ এই দুই নেতার এই কাজে একটা বিষয় স্পষ্ট হয়ে ওঠে যে এই বৈঠকেও কোনো চুক্তি হয়নি। এমনকি বৈঠক শেষে যুদ্ধবিরতি কার্যকর করার কথা থাকলেও তা বাস্তবায়নের কোনো আভাস পাওয়া যায়নি। বরং ট্রাম্প ‘একটা চুক্তি করতে’ বারবার দায় চাপাচ্ছিলেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির ওপর।
সংবাদ সম্মেলনে ট্রাম্প বলেন, ‘আমরা অনেক বিষয়ে একমত হয়েছি, আমি বলব বেশির ভাগ বিষয়েই। তবে কিছু বড় বিষয়ে এখনো পুরোপুরি সিদ্ধান্তে পৌঁছানো সম্ভব হয়নি, তবে আমরা কিছুটা অগ্রগতি করেছি।’
ট্রাম্প স্পষ্ট ভাষায় ঘোষণা দেন, ‘চুক্তি হওয়ার আগে কোনো চুক্তি বলে কিছু নেই।’
এরপর সাংবাদিকদের কোনো প্রশ্নের উত্তর না দিয়েই মঞ্চ ত্যাগ করেন দুই নেতা।
জমকালো আয়োজন ও নিরাপত্তার চাকচিক্যে সাজানো এই বৈঠক রয়ে গেল ফলশূন্য। তবে এ বৈঠক মূলত পুতিনকে আবারও বৈশ্বিক কূটনৈতিক পরিমণ্ডলে স্বাগত জানানোর এক ইঙ্গিত রেখে গেল।
শুরু থেকেই বোঝা যাচ্ছিল, ট্রাম্পের কাজ কতটা কঠিন হতে যাচ্ছে। এলমেনডর্ফ বিমানঘাঁটির টারমাকে যখন দুই প্রেসিডেন্ট একে অপরকে শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন, ঠিক সেই মুহূর্তেই ইউক্রেনে বাজতে শুরু করে সতর্কবার্তা। খবর আসতে থাকে রুশ ড্রোন ও বিমান হামলার। এতে স্পষ্ট হয়, ট্রাম্প পুতিনকে সম্মান জানানোর আয়োজন করলেও ইউক্রেনে যুদ্ধ চালিয়ে যেতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ অবস্থান থেকে সরিয়ে আনতে পারেননি।
শুক্রবারের তিন ঘণ্টার বৈঠকের মূল বিষয়গুলো ছিল এ রকম—
অগ্রগতি হয়েছে, কিন্তু নেই চুক্তির খবর ঘণ্টার পর ঘণ্টা আলোচনার পরও ফলাফল ছিল অস্পষ্ট। আলোচনার অগ্রগতি নিয়ে দুই নেতাই স্পষ্টভাবে কিছু বলেননি।
সাংবাদিকদের ট্রাম্প বলেন, ‘আমাদের বৈঠক অত্যন্ত ফলপ্রসূ ছিল। বহু বিষয়ে আমরা একমত হয়েছি। কিছু খুব অল্প বিষয় বাকি আছে তবে তেমন গুরুত্বপূর্ণ নয়। আর একটি সম্ভবত সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আমরা আলোচনায় এগিয়ে আছি। সেটি নিয়ে সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারব আশা করছি। যদিও এবার তা হয়নি, তবু সম্ভাবনা উজ্জ্বল।’
বৈঠক নিয়ে ফক্স নিউজে এক সাক্ষাৎকারে ট্রাম্পকে প্রশ্ন করা হয়, রাশিয়াকে অতিরিক্ত ভূখণ্ড দেওয়ার মতো কোনো ছাড় কিংবা ইউক্রেনের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তা নিশ্চয়তা বিষয়ে কোনো সমঝোতা হয়েছে কি না।
জবাবে ট্রাম্প বলেন, ‘আমার মনে হয় এগুলো সেই বিষয় যেগুলো নিয়ে আলোচনা হয়েছে, আর এগুলো নিয়েই আমরা মূলত একমত হয়েছি।’ তবে তিনি বিস্তারিত ব্যাখ্যা দেননি।
তিনি জোর দিয়ে বলেন, ‘ইউক্রেনকে অবশ্যই এতে রাজি হতে হবে।’ আর প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিকে কী পরামর্শ দেবেন, জানতে চাইলে ট্রাম্পের সংক্ষিপ্ত উত্তর, ‘একটি চুক্তিতে পৌঁছাতে হবে।’
পুতিন যা বলবেন তা পছন্দ না হলে বৈঠক ছেড়ে চলে আসবেন বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন ট্রাম্প। এমনকি যৌথ সংবাদ সম্মেলনকে একক ব্রিফিংয়ে নামিয়ে আনার কথাও বলেছিলেন তিনি। পাশাপাশি ঘোষণা করেছিলেন, যুদ্ধ শেষ না হলে মস্কোর জন্য আসবে ‘গুরুতর’ পরিণতি।
কিন্তু আঙ্কোরেজের পথে বিমানে ওঠার সময় ট্রাম্প নিজেই স্বীকার করেন, ‘যখনেরটা তখন দেখা যাবে।’
শেষ পর্যন্ত বৈঠক শেষ হওয়ার পরও সেই ট্রাম্পের হাতে সাফল্য অধরা রয়ে গেল।
পুতিন-জেলেনস্কি বৈঠকে থাকবেন ট্রাম্প
ফক্স নিউজকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প জানান, সম্ভাব্য দ্বিতীয় বৈঠকে পুতিন ও জেলেনস্কি দুজনই তাঁকে চান। আলাস্কা বৈঠকের আগেই তিনি বলেছিলেন, এটিই তাঁর চূড়ান্ত লক্ষ্য।
ফক্স নিউজকে ট্রাম্প বলেন, ‘ওরা দুজনই আমাকে সেখানে চাইছে, আর আমি থাকব।’
তবে সংবাদ সম্মেলনে তিনি ত্রিপক্ষীয় বৈঠকের প্রসঙ্গে কিছুই বলেননি। বরং ইঙ্গিত দেন, তিনি ‘যাদের প্রয়োজন মনে করেন’ তাদের সঙ্গে রাখবেন, যার মধ্যে জেলেনস্কিও থাকবেন, টেলিফোনে কথা বলবেন এবং বৈঠকের আপডেট দেবেন।
তবে ট্রাম্প-পুতিনের যৌথ উপস্থিতিতে যে একমাত্র পরবর্তী বৈঠকের ইঙ্গিত মেলে, তা ছিল রুশ প্রেসিডেন্টের সঙ্গে সম্ভাব্য দ্বিতীয় দফা আলোচনা।
ট্রাম্প বলেন, ‘খুব শিগগিরই আপনাদের সঙ্গে আবার কথা হবে, আর সম্ভবত আবার দেখা হবে।’
এর জবাবে ইংরেজিতে পুতিন বলেন, ‘নেক্সট টাইম ইন মস্কো।’ যা কার্যত আলোচনায় জেলেনস্কিকে বাদ দেওয়ার ইঙ্গিতই বহন করে।
আবার কূটনীতির মূল স্রোতে পুতিন
যুক্তরাষ্ট্রে পৌঁছানোর পর ট্রাম্পের লিমোজিনের জানালা দিয়ে তাকিয়ে পুতিনের হাসিমুখ বলে দেয়, বছরের পর বছর পশ্চিমা বৈরিতার পর, তিনি আবার পৃথিবীর সবচেয়ে শক্তিশালী দেশের মাটিতে পা রেখেছেন।
১০ বছর আগে পুতিন শেষবার আমেরিকায় এসেছিলেন এবং তার আগেও কোনো বড় প্রেসিডেন্ট সম্মেলনে স্বাগত পাননি। ২০২২ সালে তিনি ইউক্রেনে আগ্রাসন চালানোর পর বহু পশ্চিমা নেতার কাছে পুতিন ‘সমাজচ্যুত’ হয়ে যান। অধিকাংশ পশ্চিমা দেশ থেকে বহিস্কৃত করা হয় এবং আন্তর্জাতিক ফৌজদারি আদালত তাঁকে গ্রেপ্তারের হুমকিও দিয়েছিল। আর আঙ্কোরেজ বৈঠকের জন্য আলাস্কাকে বেছে নেওয়ার একটি কারণই ছিল, যুক্তরাষ্ট্র আন্তর্জাতিক ফৌজদারি আদালতের সদস্য নয়।
আঙ্কোরেজে পুতিনের বিমান অবতরণ করার সঙ্গে সঙ্গে তাঁর ‘সমাজচ্যুতি’র অবসান ঘটল। লাল গালিচা সংবর্ধনা, যুদ্ধবিমানের মহড়া এবং স্বয়ং মার্কিন প্রেসিডেন্টের করতালি—সব মিলিয়ে ট্রাম্প বুঝিয়ে দিলেন পুতিন আবার কূটনীতির মূল স্রোতে ফিরছেন। তাঁদের হাসিমুখে শুভেচ্ছা বিনিময়কে রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে ‘এক ঐতিহাসিক করমর্দন’ হিসেবে তুলে ধরা হয়।
যদিও পুতিন এখনো ইউরোপের অনেক দেশে বহিস্কৃত তবে ট্রাম্পের মতো বিশ্বের বৃহত্তম অর্থনীতি ও শক্তিশালী সেনাবাহিনী পরিচালনাকারী নেতা তাঁকে আমন্ত্রণ জানানো কূটনৈতিক বর্জনের প্রচেষ্টা অনেকটা দুর্বল করে দিয়েছে।
এটি আরও স্পষ্ট হলো যখন পুতিন ট্রাম্পের সামরিক গাড়িতে ওঠেন। যা মুহূর্তেই দেখিয়েছে রাশিয়ান নেতার বৈশ্বিক কূটনীতিতে ফেরার প্রতীক। বৈঠক থেকে কোনো বড় অগ্রগতি না হলেও, পুতিনের জন্য এটি ছিল একটি বিজয়।
দুই নেতার একান্ত বৈঠক থেকে প্রতিনিধি সংযোজন
প্রথমে বলা হয়েছিল, বৈঠকটি হবে শীর্ষ দুই নেতার মধ্যে। কেবল তাদের অনুবাদকেরা থাকবেন। আর কেউ এই বৈঠকে থাকবে না। পরবর্তীতে সিদ্ধান্ত আসে দ্বিপাক্ষিক আলোচনায় দুই নেতার সঙ্গে দুইজন করে প্রতিনিধি থাকবেন।
ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে পুতিনের সঙ্গে একক বৈঠকগুলো রহস্যে ঘেরা থাকত। কেবল অনুবাদক উপস্থিত থাকায়, আলোচনার বিস্তারিত প্রায় সবসময় অজানা থাকত। কখনো কখনো সহযোগীদের জন্যও বোঝা কঠিন হতো যে দুজন নেতা কোনো সমঝোতায় পৌঁছেছেন কি না। জার্মানিতে এমন একটি বৈঠকের পর ট্রাম্প তাঁর অনুবাদককে নির্দেশ দিয়েছিলেন তাঁর নোটস ফেলে দিতে।
শুক্রবারের সেশনে দুইজন প্রতিনিধি রাষ্ট্রপতি মার্কো রুবিও এবং মার্কিন বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ যোগ হওয়ায় আগামী দিনে বিষয়গুলো আরও স্পষ্ট হতে পারে। বিশেষ করে যদি রাশিয়া ঘটনার বিবরণ মার্কিন দৃষ্টিকোণ থেকে ভিন্ন প্রদান করে।
তবে একটি মুহূর্ত ছিল যা কেবল ট্রাম্প ও পুতিনই বলতে পারবেন, বিমানঘাঁটির টারমাক থেকে বৈঠকের কক্ষে প্রেসিডেন্টের লিমোজিনে তাঁদের সংক্ষিপ্ত যাত্রা। গাড়িতে অন্য কেউ ছিল না, না কোনো উপদেষ্টা, না অনুবাদক। কেবল সিক্রেট সার্ভিসের এজেন্টরা ছিলেন।
বলা যায়, সেই সংক্ষিপ্ত কথোপকথনের বিষয়বস্তু শুধুমাত্র তাঁদের দুজনের জানা।
যুদ্ধবিমানের মহড়া, লাল গালিচায় সংবর্ধনা আর দেয়ালে সাঁটানো স্লোগান ‘শান্তির পথে অগ্রযাত্রা’। গতকাল শুক্রবার এমন রাজকীয় আবহে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে যুক্তরাষ্ট্রে স্বাগত জানান মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তবে আলাস্কায় বৈঠক যে আশায়, তা যেন এখনো অধরা। আকস্মিকভাবে বৈঠক শেষ হয়ে যাওয়া এই বৈঠকের ফলাফল অজানাই রয়ে গেছে।
প্রায় তিন ঘণ্টা বৈঠকের পর দুই নেতা যৌথভাবে অগ্রগতির ঘোষণা দিলেও বৈঠকের পর সংবাদ সম্মেলনে জানা গেল না কী অর্জিত হয়েছে এই দীর্ঘ সময়ের বৈঠকে। কোনো ব্যাখ্যা দেননি এই দুই নেতা।
বিশ্ব রাজনীতির শীর্ষ এই দুই নেতার এই কাজে একটা বিষয় স্পষ্ট হয়ে ওঠে যে এই বৈঠকেও কোনো চুক্তি হয়নি। এমনকি বৈঠক শেষে যুদ্ধবিরতি কার্যকর করার কথা থাকলেও তা বাস্তবায়নের কোনো আভাস পাওয়া যায়নি। বরং ট্রাম্প ‘একটা চুক্তি করতে’ বারবার দায় চাপাচ্ছিলেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির ওপর।
সংবাদ সম্মেলনে ট্রাম্প বলেন, ‘আমরা অনেক বিষয়ে একমত হয়েছি, আমি বলব বেশির ভাগ বিষয়েই। তবে কিছু বড় বিষয়ে এখনো পুরোপুরি সিদ্ধান্তে পৌঁছানো সম্ভব হয়নি, তবে আমরা কিছুটা অগ্রগতি করেছি।’
ট্রাম্প স্পষ্ট ভাষায় ঘোষণা দেন, ‘চুক্তি হওয়ার আগে কোনো চুক্তি বলে কিছু নেই।’
এরপর সাংবাদিকদের কোনো প্রশ্নের উত্তর না দিয়েই মঞ্চ ত্যাগ করেন দুই নেতা।
জমকালো আয়োজন ও নিরাপত্তার চাকচিক্যে সাজানো এই বৈঠক রয়ে গেল ফলশূন্য। তবে এ বৈঠক মূলত পুতিনকে আবারও বৈশ্বিক কূটনৈতিক পরিমণ্ডলে স্বাগত জানানোর এক ইঙ্গিত রেখে গেল।
শুরু থেকেই বোঝা যাচ্ছিল, ট্রাম্পের কাজ কতটা কঠিন হতে যাচ্ছে। এলমেনডর্ফ বিমানঘাঁটির টারমাকে যখন দুই প্রেসিডেন্ট একে অপরকে শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন, ঠিক সেই মুহূর্তেই ইউক্রেনে বাজতে শুরু করে সতর্কবার্তা। খবর আসতে থাকে রুশ ড্রোন ও বিমান হামলার। এতে স্পষ্ট হয়, ট্রাম্প পুতিনকে সম্মান জানানোর আয়োজন করলেও ইউক্রেনে যুদ্ধ চালিয়ে যেতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ অবস্থান থেকে সরিয়ে আনতে পারেননি।
শুক্রবারের তিন ঘণ্টার বৈঠকের মূল বিষয়গুলো ছিল এ রকম—
অগ্রগতি হয়েছে, কিন্তু নেই চুক্তির খবর ঘণ্টার পর ঘণ্টা আলোচনার পরও ফলাফল ছিল অস্পষ্ট। আলোচনার অগ্রগতি নিয়ে দুই নেতাই স্পষ্টভাবে কিছু বলেননি।
সাংবাদিকদের ট্রাম্প বলেন, ‘আমাদের বৈঠক অত্যন্ত ফলপ্রসূ ছিল। বহু বিষয়ে আমরা একমত হয়েছি। কিছু খুব অল্প বিষয় বাকি আছে তবে তেমন গুরুত্বপূর্ণ নয়। আর একটি সম্ভবত সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আমরা আলোচনায় এগিয়ে আছি। সেটি নিয়ে সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারব আশা করছি। যদিও এবার তা হয়নি, তবু সম্ভাবনা উজ্জ্বল।’
বৈঠক নিয়ে ফক্স নিউজে এক সাক্ষাৎকারে ট্রাম্পকে প্রশ্ন করা হয়, রাশিয়াকে অতিরিক্ত ভূখণ্ড দেওয়ার মতো কোনো ছাড় কিংবা ইউক্রেনের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তা নিশ্চয়তা বিষয়ে কোনো সমঝোতা হয়েছে কি না।
জবাবে ট্রাম্প বলেন, ‘আমার মনে হয় এগুলো সেই বিষয় যেগুলো নিয়ে আলোচনা হয়েছে, আর এগুলো নিয়েই আমরা মূলত একমত হয়েছি।’ তবে তিনি বিস্তারিত ব্যাখ্যা দেননি।
তিনি জোর দিয়ে বলেন, ‘ইউক্রেনকে অবশ্যই এতে রাজি হতে হবে।’ আর প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিকে কী পরামর্শ দেবেন, জানতে চাইলে ট্রাম্পের সংক্ষিপ্ত উত্তর, ‘একটি চুক্তিতে পৌঁছাতে হবে।’
পুতিন যা বলবেন তা পছন্দ না হলে বৈঠক ছেড়ে চলে আসবেন বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন ট্রাম্প। এমনকি যৌথ সংবাদ সম্মেলনকে একক ব্রিফিংয়ে নামিয়ে আনার কথাও বলেছিলেন তিনি। পাশাপাশি ঘোষণা করেছিলেন, যুদ্ধ শেষ না হলে মস্কোর জন্য আসবে ‘গুরুতর’ পরিণতি।
কিন্তু আঙ্কোরেজের পথে বিমানে ওঠার সময় ট্রাম্প নিজেই স্বীকার করেন, ‘যখনেরটা তখন দেখা যাবে।’
শেষ পর্যন্ত বৈঠক শেষ হওয়ার পরও সেই ট্রাম্পের হাতে সাফল্য অধরা রয়ে গেল।
পুতিন-জেলেনস্কি বৈঠকে থাকবেন ট্রাম্প
ফক্স নিউজকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প জানান, সম্ভাব্য দ্বিতীয় বৈঠকে পুতিন ও জেলেনস্কি দুজনই তাঁকে চান। আলাস্কা বৈঠকের আগেই তিনি বলেছিলেন, এটিই তাঁর চূড়ান্ত লক্ষ্য।
ফক্স নিউজকে ট্রাম্প বলেন, ‘ওরা দুজনই আমাকে সেখানে চাইছে, আর আমি থাকব।’
তবে সংবাদ সম্মেলনে তিনি ত্রিপক্ষীয় বৈঠকের প্রসঙ্গে কিছুই বলেননি। বরং ইঙ্গিত দেন, তিনি ‘যাদের প্রয়োজন মনে করেন’ তাদের সঙ্গে রাখবেন, যার মধ্যে জেলেনস্কিও থাকবেন, টেলিফোনে কথা বলবেন এবং বৈঠকের আপডেট দেবেন।
তবে ট্রাম্প-পুতিনের যৌথ উপস্থিতিতে যে একমাত্র পরবর্তী বৈঠকের ইঙ্গিত মেলে, তা ছিল রুশ প্রেসিডেন্টের সঙ্গে সম্ভাব্য দ্বিতীয় দফা আলোচনা।
ট্রাম্প বলেন, ‘খুব শিগগিরই আপনাদের সঙ্গে আবার কথা হবে, আর সম্ভবত আবার দেখা হবে।’
এর জবাবে ইংরেজিতে পুতিন বলেন, ‘নেক্সট টাইম ইন মস্কো।’ যা কার্যত আলোচনায় জেলেনস্কিকে বাদ দেওয়ার ইঙ্গিতই বহন করে।
আবার কূটনীতির মূল স্রোতে পুতিন
যুক্তরাষ্ট্রে পৌঁছানোর পর ট্রাম্পের লিমোজিনের জানালা দিয়ে তাকিয়ে পুতিনের হাসিমুখ বলে দেয়, বছরের পর বছর পশ্চিমা বৈরিতার পর, তিনি আবার পৃথিবীর সবচেয়ে শক্তিশালী দেশের মাটিতে পা রেখেছেন।
১০ বছর আগে পুতিন শেষবার আমেরিকায় এসেছিলেন এবং তার আগেও কোনো বড় প্রেসিডেন্ট সম্মেলনে স্বাগত পাননি। ২০২২ সালে তিনি ইউক্রেনে আগ্রাসন চালানোর পর বহু পশ্চিমা নেতার কাছে পুতিন ‘সমাজচ্যুত’ হয়ে যান। অধিকাংশ পশ্চিমা দেশ থেকে বহিস্কৃত করা হয় এবং আন্তর্জাতিক ফৌজদারি আদালত তাঁকে গ্রেপ্তারের হুমকিও দিয়েছিল। আর আঙ্কোরেজ বৈঠকের জন্য আলাস্কাকে বেছে নেওয়ার একটি কারণই ছিল, যুক্তরাষ্ট্র আন্তর্জাতিক ফৌজদারি আদালতের সদস্য নয়।
আঙ্কোরেজে পুতিনের বিমান অবতরণ করার সঙ্গে সঙ্গে তাঁর ‘সমাজচ্যুতি’র অবসান ঘটল। লাল গালিচা সংবর্ধনা, যুদ্ধবিমানের মহড়া এবং স্বয়ং মার্কিন প্রেসিডেন্টের করতালি—সব মিলিয়ে ট্রাম্প বুঝিয়ে দিলেন পুতিন আবার কূটনীতির মূল স্রোতে ফিরছেন। তাঁদের হাসিমুখে শুভেচ্ছা বিনিময়কে রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে ‘এক ঐতিহাসিক করমর্দন’ হিসেবে তুলে ধরা হয়।
যদিও পুতিন এখনো ইউরোপের অনেক দেশে বহিস্কৃত তবে ট্রাম্পের মতো বিশ্বের বৃহত্তম অর্থনীতি ও শক্তিশালী সেনাবাহিনী পরিচালনাকারী নেতা তাঁকে আমন্ত্রণ জানানো কূটনৈতিক বর্জনের প্রচেষ্টা অনেকটা দুর্বল করে দিয়েছে।
এটি আরও স্পষ্ট হলো যখন পুতিন ট্রাম্পের সামরিক গাড়িতে ওঠেন। যা মুহূর্তেই দেখিয়েছে রাশিয়ান নেতার বৈশ্বিক কূটনীতিতে ফেরার প্রতীক। বৈঠক থেকে কোনো বড় অগ্রগতি না হলেও, পুতিনের জন্য এটি ছিল একটি বিজয়।
দুই নেতার একান্ত বৈঠক থেকে প্রতিনিধি সংযোজন
প্রথমে বলা হয়েছিল, বৈঠকটি হবে শীর্ষ দুই নেতার মধ্যে। কেবল তাদের অনুবাদকেরা থাকবেন। আর কেউ এই বৈঠকে থাকবে না। পরবর্তীতে সিদ্ধান্ত আসে দ্বিপাক্ষিক আলোচনায় দুই নেতার সঙ্গে দুইজন করে প্রতিনিধি থাকবেন।
ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে পুতিনের সঙ্গে একক বৈঠকগুলো রহস্যে ঘেরা থাকত। কেবল অনুবাদক উপস্থিত থাকায়, আলোচনার বিস্তারিত প্রায় সবসময় অজানা থাকত। কখনো কখনো সহযোগীদের জন্যও বোঝা কঠিন হতো যে দুজন নেতা কোনো সমঝোতায় পৌঁছেছেন কি না। জার্মানিতে এমন একটি বৈঠকের পর ট্রাম্প তাঁর অনুবাদককে নির্দেশ দিয়েছিলেন তাঁর নোটস ফেলে দিতে।
শুক্রবারের সেশনে দুইজন প্রতিনিধি রাষ্ট্রপতি মার্কো রুবিও এবং মার্কিন বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ যোগ হওয়ায় আগামী দিনে বিষয়গুলো আরও স্পষ্ট হতে পারে। বিশেষ করে যদি রাশিয়া ঘটনার বিবরণ মার্কিন দৃষ্টিকোণ থেকে ভিন্ন প্রদান করে।
তবে একটি মুহূর্ত ছিল যা কেবল ট্রাম্প ও পুতিনই বলতে পারবেন, বিমানঘাঁটির টারমাক থেকে বৈঠকের কক্ষে প্রেসিডেন্টের লিমোজিনে তাঁদের সংক্ষিপ্ত যাত্রা। গাড়িতে অন্য কেউ ছিল না, না কোনো উপদেষ্টা, না অনুবাদক। কেবল সিক্রেট সার্ভিসের এজেন্টরা ছিলেন।
বলা যায়, সেই সংক্ষিপ্ত কথোপকথনের বিষয়বস্তু শুধুমাত্র তাঁদের দুজনের জানা।
চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই আগামী ১৮ আগস্ট ভারত সফরে আসছেন। তিন বছরেরও বেশি সময়ের মধ্যে এটিই তাঁর প্রথম নয়া দিল্লি সফর। ভারত সরকারের আমন্ত্রণে তিনি আগামী ১৮ থেকে ২০ আগস্ট পর্যন্ত নয়া দিল্লিতে অবস্থান করবেন। আজ শনিবার চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে এ ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।
১৬ মিনিট আগেআলাস্কায় রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে বৈঠকের পর ট্রাম্প ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট এবং ন্যাটো ও ইউরোপীয় নেতাদের সঙ্গে দীর্ঘ আলোচনা করেছেন। ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, তিনি আগামী সোমবার ওয়াশিংটন সফর করবেন। ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠক করবেন তিনি।
৩৯ মিনিট আগেভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে চলমান রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক টানাপোড়েনের মধ্যেও বাংলাদেশের শাড়ি ব্যবসায়ীরা কলকাতার সায়েন্স সিটি ময়দানে শুরু হওয়া ইন্ডিয়া ইন্টারন্যাশনাল গ্র্যান্ড ট্রেড ফেয়ার-২০২৫ (আইআইজিটিএফ)—এ অংশ নিচ্ছেন। বড় এই বাণিজ্য মেলায় সক্রিয়ভাবে অংশ নেওয়ার পাশাপাশি বাংলাদেশি ব্যবসায়ীরা দিল্লি, মুম্বাই
২ ঘণ্টা আগেপাকিস্তানের উত্তরাঞ্চলে বন্যা, ভূমিধস এবং অন্যান্য বৃষ্টিপাতজনিত ঘটনার কারণে মানুষের জীবন বিপন্ন হয়েছে। খাইবার পাখতুনখাওয়া প্রদেশে গত ৪৮ ঘণ্টায় ৩০৭ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। প্রাদেশিক দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ (পিডিএমএ) জানিয়েছে, নিহতদের মধ্যে ২৭৯ পুরুষ, ১৫ নারী এবং ১৩ শিশু।
৩ ঘণ্টা আগে