Ajker Patrika

গেটে ইসরায়েলি সেনা, গাজার বৃহত্তম হাসপাতালে লাশের স্তূপ খুবলে খাচ্ছে কুকুর

আপডেট : ১৪ নভেম্বর ২০২৩, ১০: ২৯
গেটে ইসরায়েলি সেনা, গাজার বৃহত্তম হাসপাতালে লাশের স্তূপ খুবলে খাচ্ছে কুকুর

গাজায় আল-শিফা হাসপাতাল প্রাঙ্গণে ফিলিস্তিনিদের লাশ খুবলে খাচ্ছে রাস্তার কুকুর! হাসপাতাল প্রাঙ্গণে স্তূপাকারে জমা হচ্ছে ফিলিস্তিনিদের মরদেহ। রোববার (১২ নভেম্বর) হামাস নিয়ন্ত্রিত গাজার স্বাস্থ্যমন্ত্রী মাই আল-কাইলা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন বলে জানিয়েছে আরব নিউজ। এরই মধ্যে ইসরায়েলি সেনারা হাসপাতালের প্রধান ফটকে পৌঁছে গেছে বলে জানিয়েছে দ্য গার্ডিয়ান।

হামলার আগে অধিবাসীদের সরে যাওয়ার জন্য সতর্ক করছে ইসরায়েল। এ প্রসঙ্গে আল-কাইলা বলেন, ‘ইসরায়েলি দখলদার বাহিনী হাসপাতাল থেকে রোগীদের সরিয়ে নিচ্ছে না বরং আহত ও অসুস্থদের রাস্তায় নিশ্চিত মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিচ্ছে। এটি সরিয়ে নেওয়া নয় বরং বন্দুকের নলের মুখে উচ্ছেদ।’

তিনি বলেন, ‘গাজার হাসপাতালগুলোতে এখন বিপর্যয় ঘটছে, যেখানে রোগীরা এখন চিকিৎসা না পেয়ে মারা যাচ্ছে। শিশু ও প্রাপ্তবয়স্করা ডায়ালাইসিসের অভাবে মারা যাচ্ছে।’ 

মন্ত্রীর তথ্য অনুসারে, জ্বালানি ও চিকিৎসা সরঞ্জামের অভাবে আল-শিফা মেডিকেল কমপ্লেক্সে শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ১২ রোগীর মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে দুটি নবজাতকও রয়েছে। 

এক বিবৃতিতে আল-কাইলা বলেন, ‘ইসরায়েলি দখলদাররা স্থানীয়দের এলাকা ছাড়তে বাধ্য করার পর থেকে আল-রানতিসি এবং আল-তুর্কি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ৩ হাজার অনকোলজি রোগীর সবাই এখন মৃত্যুপথযাত্রী। সমস্ত গর্ভবতী নারী ওো উচ্চ ঝুঁকির গর্ভাবস্থার নারীদের নিয়ে শঙ্কা বেশি। কারণ তাঁরা গাজায় চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়ার মতো কাউকে খুঁজে পাচ্ছেন না। যেসব নারী সন্তান প্রসব করতে যাচ্ছেন তাঁরা চিকিৎসা সেবা নেওয়ার মতো কাউকে পাবেন না।’ 

বিবৃতি অনুসারে, ‘অসুস্থ ও আহতরা আল-শিফা মেডিকেল কমপ্লেক্সে পৌঁছাতে পারছেন না এবং অনেকেই প্রাণ হারিয়েছেন। চিকিৎসাকর্মীরা আল-শিফা হাসপাতালের বিভিন্ন বিভাগ ও ভবনের মধ্যে চলাচল করতে পারছেন না। কারণ, কমপ্লেক্সের ভেতরে কেউ চলাচল করলেই ইসরায়েলের ড্রোন তাঁদের লক্ষ্যবস্তু করছে।’ 

 ‘আরেকটি বিপদ রোগীদের জীবন এবং স্বাস্থ্য হুমকির মুখে ফেলেছে। মেডিকেল টিমগুলোর ১০০ জন শহীদকে দাফন করার মতো সক্ষমতা নেই। তাঁদের লাশ হাসপাতালের প্রাঙ্গণে পচতে শুরু করেছে। চিকিৎসাকর্মীদের সাক্ষ্য অনুসারে, এর মধ্যে কয়েকটি লাশ রাস্তার কুকুর খুবলে খেয়েছে।’

গাজার মন্ত্রী বলেন, আহত, অসুস্থ এবং মেডিকেল টিমগুলোর খাবার নেই, কমপ্লেক্সে পানি সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। 

এর সমাধান হলো, মেডিকেল কমপ্লেক্সগুলোকে বিদ্যুৎ, চিকিৎসা সরঞ্জাম, ওষুধ ও জ্বালানি সরবরাহ করা। এ ছাড়া গাজার হাসপাতালগুলোতে আর আহতদের ভর্তি করার ক্ষমতা না থাকায় রোগীদের চিকিৎসার জন্য মিসরের আরব রিপাবলিকে নিরাপদে সরিয়ে নেওয়ার ওপর জোর দেন তিনি।

গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গাজার বৃহত্তম হাসপাতাল আল-শিফার মূল ফটকে ইসরায়েলি সেনারা অবস্থান নিয়েছে। হাসপাতালের ভেতর আটকা পড়েছে হাজার হাজার মানুষ। এই মানুষগুলো হাসপাতালে আশ্রয় নিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে শত শত রোগী আরও ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে।

এদিকে প্যালেস্টাইন রেক ক্রিসেন্ট সোসাইটি জানিয়েছে, আল-কুদস হাসপাতাল থেকে লোক সরিয়ে নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না, কারণ ইসরায়েল একনাগাড়ে গোলা ফেলছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত