Ajker Patrika

গাজার ৪০ শিক্ষার্থীকে পড়ার সুযোগ দিতে চায় যুক্তরাজ্য, লাগবে ইসরায়েলের অনুমোদন

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
সম্পূর্ণ সরকারি খরচে যুক্তরাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনার সুযোগ পাবে এই শিক্ষার্থীরা। ছবি: হ্যান্ডআউট।
সম্পূর্ণ সরকারি খরচে যুক্তরাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনার সুযোগ পাবে এই শিক্ষার্থীরা। ছবি: হ্যান্ডআউট।

গাজা থেকে ৪০ জন শিক্ষার্থীকে যুক্তরাজ্যে পড়াশোনার সুযোগ করে দিতে উদ্যোগ নিয়েছে দেশটির সরকার। আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে সম্পূর্ণ সরকারি খরচে যুক্তরাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনার সুযোগ পাবে তাঁরা।

এর মধ্যে ৯ জনকে জানানো হয়েছে, তাঁরা শেভনিং কর্মসূচির আওতায় বৃত্তি নিয়ে গাজা ছাড়ার সহায়তা পাবে। শেভনিং স্কিম মূলত সরকার-অর্থায়িত একটি উদ্যোগ, যার মাধ্যমে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীরা এক বছরের মাস্টার্স প্রোগ্রামে পড়ার সুযোগ পায়।

বিবিসির প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, আরও ৩০ জন শিক্ষার্থী অন্যান্য বেসরকারি প্রকল্পের মাধ্যমে সম্পূর্ণ অর্থায়নপ্রাপ্ত হয়ে যুক্তরাজ্যে পড়ার সুযোগ পাবেন।

২০২৩ সালে ইসরায়েলে হামাসের হামলার জবাবে গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসন শুরু হওয়ার পর থেকে এই শিক্ষার্থীরাই প্রথম যারা পড়াশোনার জন্য গাজা ছাড়তে পারবে। তবে প্রতিটি শিক্ষার্থীকে গাজা ছাড়তে ইসরায়েলের অনুমোদন নিতে হবে।

এর আগে যুক্তরাজ্য বলেছিল, ইসরায়েল যদি গাজায় যুদ্ধ সম্পর্কিত কিছু শর্ত পূরণ না করে, তবে তারা সেপ্টেম্বর মাসে ফিলিস্তিনকে একটি রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেবে। এরপর ইসরায়েল-যুক্তরাজ্য সম্পর্কের অবনতি ঘটে।

এ পরিস্থিতিতে গাজা থেকে শিক্ষার্থীদের নিয়ে আসায় বড় ধরনের লজিস্টিক চ্যালেঞ্জ রয়েছে। তাদের যুক্তরাজ্যে আনার আগে ভিসা ও বায়োমেট্রিক যাচাইয়ের জন্য এই অঞ্চলের তৃতীয় কোনো দেশে নিয়ে যেতে হবে।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র জানিয়েছে, এই পরিকল্পনাটি অত্যন্ত ‘জটিল ও চ্যালেঞ্জিং। তবে তারা এই বিষয়ে সফলতা পেতে চায়। তারা চায় শিক্ষার্থীরা যুক্তরাজ্যে আসুক এবং পড়ার সুযোগ পাক।

এই সিদ্ধান্তটি এসেছে রাজনীতিবিদ, শিক্ষাবিদ এবং অন্যদের পক্ষ থেকে কয়েক মাসের প্রচারণার পর, যারা এই বছর যুক্তরাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে অফার পাওয়া ৮০ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনি শিক্ষার্থীর পক্ষে কাজ করেছেন। যদিও সর্বশেষ এই সিদ্ধান্তে প্রায় ৪০ জন শিক্ষার্থীকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, আরও অনেকে আছে যাদের জন্য সম্পূর্ণ অর্থায়নের ব্যবস্থা নেই।

তবে কিছু শিক্ষার্থী বিবিসিকে জানিয়েছেন, সরিয়ে নেওয়ার আগেই তাঁদের মৃত্যু হতে পারে। আবার অনেকে বলছেন, প্রিয়জনদের ফেলে যাওয়া তাঁদের জন্য কঠিন হয়ে পড়বে।

আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে গুরুতর অসুস্থ ও আহত কিছু ফিলিস্তিনি শিশুকেও চিকিৎসার জন্য যুক্তরাজ্যে আনার পরিকল্পনা করছে দেশটির সরকার।

ইতালি, আয়ারল্যান্ড ও ফ্রান্সসহ আরও কয়েকটি দেশ এরইমধ্যে শিক্ষার্থীদের সরিয়ে নিয়েছে। তবে ফ্রান্স চলতি মাসের শুরুর দিকে তাদের সরিয়ে নেওয়ার কর্মসূচি স্থগিত করে। দেশটিতে অবস্থানরত এক ফিলিস্তিনি শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে অনলাইনে ইহুদিবিদ্বেষী মন্তব্য করার অভিযোগ উঠলে এ সিদ্ধান্ত নেয় দেশটি।

২০২৩ সালের অক্টোবরে দক্ষিণ ইসরায়েলে হামলা চালিয়ে হামাস প্রায় ১২০০ জনকে হত্যা করে এবং আরও ২৫১ জনকে জিম্মি করে। এর পরপরই ইসরায়েল গাজায় সামরিক অভিযান শুরু করে। এরপর থেকে গাজায় ৬২ হাজারেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত