Ajker Patrika

‘কাজ শেষ করার’ অঙ্গীকার নেতানিয়াহুর, ফিলিস্তিনে নিহত আরও ৬০

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১১: ১১
ইসরায়েলি হামলায় নিহত প্রিয়জনকে শেষ বিদায় জানাচ্ছেন স্বজনেরা। ছবি: আনাদোলু এজেন্সি
ইসরায়েলি হামলায় নিহত প্রিয়জনকে শেষ বিদায় জানাচ্ছেন স্বজনেরা। ছবি: আনাদোলু এজেন্সি

গাজার পাশাপাশি ফিলিস্তিনের অন্যান্য এলাকায়ও হামলা শুরু করেছে ইসরায়েলি সেনারা। গতকাল শুক্রবার গাজাসহ ফিলিস্তিনে ৬০ জন নিহত হয়েছেন। আল-জাজিরার প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা যায়। এদিকে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে ভাষণে হামাসের বিরুদ্ধে ‘কাজ শেষ করার’ অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছেন।

শুক্রবার এক সংবাদ সম্মেলনে জাতিসংঘের মুখপাত্র স্টেফান দুজারিক মানবিক সহায়তা সমন্বয় দপ্তরকে (ওসিএইচএ) উদ্ধৃত করে জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরায়েল ‘প্রতি ৮ থেকে ৯ মিনিট অন্তর একবার করে বোমা হামলা চালিয়েছে’।

আল-জাজিরার প্রতিবেদনে জানা যায়, গত ১৬ সেপ্টেম্বর স্থল অভিযান শুরুর পর গাজায় হামলা অনেক বাড়িয়ে দিয়েছে ইসরায়েল। শুধু গাজা শহরেই ৩০ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ ছাড়া আল-ওয়াহদা স্ট্রিট, শাতি শরণার্থীশিবির এবং নাসর এলাকাসহ বেশ কয়েকটি স্থানে হামলা চালানো হয়। পশ্চিম গাজার আবাসিক রিমাল এলাকাও হামলার শিকার হয়েছে।

রিমাল এলাকা থেকে আল জাজিরার প্রতিবেদক ইব্রাহিম আল-খলিলি জানান, কোনো ধরনের পূর্বসতর্কতা ছাড়াই হামলা করা হয়। ওই সময় ফিলিস্তিনি বেসামরিক মানুষ ধ্বংসস্তূপের মধ্য থেকে জীবিতদের উদ্ধার করছিলেন আর চিকিৎসাকর্মীরা নিহতদের মরদেহ সরিয়ে নিচ্ছিলেন।

খালিলি আরও বলেন, ইসরায়েলি হামলার তীব্রতা বাড়ার ফলে পরিস্থিতি খারাপ থেকে আরও ভয়াবহ হয়ে উঠেছে। তারা বিভিন্ন স্থাপনা ও এলাকাকে টার্গেট করছে।

ইসরায়েলি হামলায় হতাহতদের পাশাপাশি ফিলিস্তিনি চিকিৎসা সূত্র নিশ্চিত করেছে, বিতর্কিত ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্র-সমর্থিত গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশন (জিএইচএফ) পরিচালিত সহায়তা কেন্দ্রগুলো থেকে সাহায্য নেওয়ার চেষ্টা করার সময় শুক্রবার আরও ১৩ জন নিহত হয়েছেন।

গাজার চিকিৎসা সূত্রের বরাতে আল জাজিরা জানায়, অবরোধের কারণে অনাহার ও চিকিৎসা না পেয়ে কেন্দ্রীয় গাজার আল-আকসা শহীদ হাসপাতালে ১৭ বছর বয়সী এক কিশোরের মৃত্যু হয়েছে। চিকিৎসকেরা বলছেন, ওই কিশোরের মৃত্যু গাজার ক্রমবর্ধমান মানবিক ও স্বাস্থ্যসংকটকে আরও স্পষ্ট করে তুলেছে।

ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, এখন পর্যন্ত অপুষ্টিজনিত কারণে অন্তত ৪৪০ জন মারা গেছে, যাদের মধ্যে ১৪৭ জনই শিশু।

শুক্রবার আন্তর্জাতিক দাতব্য সংস্থা ডক্টরস উইদাউট বর্ডারস জানিয়েছে, ইসরায়েলি হামলার কারণে গাজা শহরে তাদের ক্লিনিকগুলো ঝুঁকির মুখে রয়েছে। এ কারণে বাধ্য হয়ে চিকিৎসা কার্যক্রম স্থগিত রাখা হয়েছে।

সংস্থাটি জানিয়েছে, শুধু গত সপ্তাহেই তারা অপুষ্টি, যুদ্ধজনিত আঘাত এবং মাতৃসেবার রোগীদের ৩ হাজার ৬৪০টির বেশি চিকিৎসা পরামর্শ দিয়েছে।

এমএসএফ সতর্ক করে বলেছে, গাজা শহরে এখনো কয়েক লাখ ফিলিস্তিনি আটকা পড়ে আছে আর গোটা উপত্যকার হাসপাতালগুলো কর্মী ও সরঞ্জামের অভাবে চরম চাপে রয়েছে।

জাতিসংঘের মানবিকবিষয়ক প্রধান টম ফ্লেচারও গাজার ভয়াবহ পরিস্থিতির কথা উল্লেখ করে জানান, সেখানে বহু ফিলিস্তিনি অনাহারে দিন কাটাচ্ছে। তিনি বলেন, ‘আমরা এখনো ভয়াবহ বাধার সম্মুখীন হচ্ছি। ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষের আরোপ করা বাধার কারণে ত্রাণ পৌঁছে দেওয়া কঠিন হয়ে পড়ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত