জাহিদ হাসান, যশোর
দোচালা টিনের ঘর। ঘরের চারপাশে কোমরপানি। কালচে রং ধারণ করা সেই পানিতে ভাসছে ছোট-বড় শেওলা। পানি ঢুকেছে রান্নাঘর, গোয়ালঘর, বসতঘরসহ সবখানে। সড়ক থেকে বাড়িতে যাওয়ার একমাত্র মাধ্যম বাঁশের সাঁকো। চার মাসের বেশি সময় ঘরের ভেতরে মাচা করে বসবাস করে আসছেন যশোরের মনিরামপুর উপজেলার হাটগাছা গ্রামের রেখা মল্লিক। বোন ও এক ছেলে নিয়েই তাঁর সংসার। শুধু বাড়িই নয়; রেখার বেঁচে থাকার একমাত্র অবলম্বন ২ বিঘা আবাদি জমিও পানিতে ডুবে রয়েছে। তাই ফলেনি কোনো ফসল। কর্মহীন এই পরিবারে দারিদ্র্যের কারণে নেমে এসেছে ঘোর অমানিশা। জলাবদ্ধতার সঙ্গে লড়াই করে টিকে থাকাই এখন বড় চ্যালেঞ্জ। তবু রেখার সংগ্রামের কাছে জীবনের রং ফিকে হয়ে এলেও উৎসবের আমেজে ভাটা পড়তে দিচ্ছেন না। চারপাশে অথই পানি থাকলেও কমতি নেই আসন্ন দুর্গাপূজার আয়োজনে। নিজেদের সাধ্যমতো চেষ্টা করছেন ধর্মীয় রীতি রক্ষার।
রেখা মল্লিক আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘টাকাপয়সা নেই। বনজঙ্গল থেকে জোগাড় করে শাকভাত করেই খাচ্ছি। ধান-চাল কবে হবে, তা তো বলা যাচ্ছে না। ভুঁই (জমি) থেকেও তো লাভ হচ্ছে না। সব জলের তলে।’ তিনি বলেন, ‘সারা বছর আশা করে থাকি, মায়ের মুখটা দর্শনের। ছেলেমেয়ে নিয়ে আনন্দ করব, ভালোমন্দ খাব, সেটা তো আর হচ্ছে না। কী করে করব, টাকাপয়সা না থাকলি’
টানা চার মাসের বেশি সময় জলাবদ্ধতায় চরম সংকটে রয়েছেন যশোরের দুঃখখ্যাত ভবদহবাসী। তারপরও নিরানন্দ পরিবেশে সামর্থ্য অনুযায়ী চলছে দুর্গাকে বরণ করার নানা আনুষ্ঠানিকতা। দুঃখ-দুর্দশায় দিন পার করা পরিবারগুলোও নিজেদের সাধ্যমতো চেষ্টা করছে ধর্মীয় রীতি রক্ষার। পানি আর দারিদ্র্যের সঙ্গে লড়াই করা এই মানুষেরা বলছেন, জাঁকজমক না হলেও সীমিত পরিসরে মণ্ডপে মণ্ডপে চলবে মায়ের পূজা-অর্চনা।
যশোরের অভয়নগর, মনিরামপুর, কেশবপুর এবং খুলনার ডুমুরিয়া ও ফুলতলা উপজেলার অংশবিশেষ নিয়ে ভবদহ অঞ্চল। পলি পড়ে এই অঞ্চলের পানি নিষ্কাশনের মাধ্যম মুক্তেশ্বরী, টেকা, শ্রী ও হরি নদ-নদী নাব্যতা হারিয়েছে। ফলে নদ দিয়ে পানি নামছে না। এই অঞ্চলে যত দূর চোখ যায়, শুধু পানি আর পানি। খেতের ফসল, ঘেরের মাছ— সবই কেড়ে নিয়েছে এই পানি। কেড়ে নিয়েছে মানুষের থাকার জায়গাটুকুও। দুই শটি গ্রামের বেশির ভাগ ঘরবাড়ি, ধর্মীয় ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, রাস্তাঘাট, কৃষিজমি এবং মাছের ঘের প্লাবিত হয়েছে। হিন্দু-অধ্যুষিত ভবদহ এলাকায় আবহমানকাল থেকে জমকালো আয়োজনে উদ্যাপন করা হয় সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বড় উৎসব দুর্গাপূজা। ষষ্ঠীপূজার মধ্য দিয়ে রোববার থেকে শুরু হচ্ছে শারদীয় দুর্গোৎসব। কিন্তু বেশির ভাগ বাড়িতেই পূজার আনন্দ নেই। যে কয়েকটি স্থানে হচ্ছে, তা-ও সীমিত।
জেলা পূজা উদ্যাপন পরিষদের তথ্যমতে, জেলায় ৭০৬টি পূজামণ্ডপে এবার শারদীয় দুর্গোৎসব হবে। এর মধ্য ভবদহ এলাকায় ৩০টি পূজামণ্ডপে শারদীয় দুর্গোৎসব হবে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, ভবদহ এলাকায় পূজার আনন্দ নেই। বাড়িতে বাড়িতে নেই প্রস্তুতিও। তবে কয়েকটি স্থানে সীমিত পরিসরে পূজামণ্ডপে প্রতিমা বসানো হয়েছে।
অভয়নগরের সুন্দলী সর্বজনীন দুর্গামন্দিরের সভাপতি উজ্জ্বল বিশ্বাস বলেন, বালু দিয়ে উঁচু করে পূজার অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। তবে জাঁকজমক নেই। মানুষের বাড়ি বাড়ি জল। ফসল না হওয়া, মাছের ঘের ডুবে যাওয়ায় বাড়ি বাড়ি অভাব। তাই চাঁদা না দেওয়ায় সীমিত পরিসরে পূজা করা হচ্ছে।
পূজা উদ্যাপন পরিষদের সভাপতি দীপংকর দাস রতন জানান, ভবদহপাড়ের বাসিন্দাদের মধ্যে উৎসব নেই। তাঁরা বাঁচতে চান। উৎসব না থাকলেও সরকারিভাবে নানা সহায়তা দেওয়া হয়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) যশোরের নির্বাহী প্রকৌশলী পলাশ কুমার ব্যানার্জী বলেন, গতবারের তুলনায় এবার জলাবদ্ধতা কম। দুর্ভোগ লাঘবে দ্রুতই ভবদহ অঞ্চলের পাঁচটি নদী পুনঃখনন করবে সেনাবাহিনী। পূজায় জলাবদ্ধতা নিরসনে কাজ চলছে।
এদিকে দুর্গাপূজা ঘিরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী যশোরে ব্যাপক তৎপর রয়েছে বলে জানিয়েছেন পুলিশ সুপার রওনক জাহান। তিনি বলেন, পুরো জেলাকে চারটি সেক্টরে ভাগ করে পুলিশের স্ট্রাইকিং টিম কাজ করবে।
দোচালা টিনের ঘর। ঘরের চারপাশে কোমরপানি। কালচে রং ধারণ করা সেই পানিতে ভাসছে ছোট-বড় শেওলা। পানি ঢুকেছে রান্নাঘর, গোয়ালঘর, বসতঘরসহ সবখানে। সড়ক থেকে বাড়িতে যাওয়ার একমাত্র মাধ্যম বাঁশের সাঁকো। চার মাসের বেশি সময় ঘরের ভেতরে মাচা করে বসবাস করে আসছেন যশোরের মনিরামপুর উপজেলার হাটগাছা গ্রামের রেখা মল্লিক। বোন ও এক ছেলে নিয়েই তাঁর সংসার। শুধু বাড়িই নয়; রেখার বেঁচে থাকার একমাত্র অবলম্বন ২ বিঘা আবাদি জমিও পানিতে ডুবে রয়েছে। তাই ফলেনি কোনো ফসল। কর্মহীন এই পরিবারে দারিদ্র্যের কারণে নেমে এসেছে ঘোর অমানিশা। জলাবদ্ধতার সঙ্গে লড়াই করে টিকে থাকাই এখন বড় চ্যালেঞ্জ। তবু রেখার সংগ্রামের কাছে জীবনের রং ফিকে হয়ে এলেও উৎসবের আমেজে ভাটা পড়তে দিচ্ছেন না। চারপাশে অথই পানি থাকলেও কমতি নেই আসন্ন দুর্গাপূজার আয়োজনে। নিজেদের সাধ্যমতো চেষ্টা করছেন ধর্মীয় রীতি রক্ষার।
রেখা মল্লিক আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘টাকাপয়সা নেই। বনজঙ্গল থেকে জোগাড় করে শাকভাত করেই খাচ্ছি। ধান-চাল কবে হবে, তা তো বলা যাচ্ছে না। ভুঁই (জমি) থেকেও তো লাভ হচ্ছে না। সব জলের তলে।’ তিনি বলেন, ‘সারা বছর আশা করে থাকি, মায়ের মুখটা দর্শনের। ছেলেমেয়ে নিয়ে আনন্দ করব, ভালোমন্দ খাব, সেটা তো আর হচ্ছে না। কী করে করব, টাকাপয়সা না থাকলি’
টানা চার মাসের বেশি সময় জলাবদ্ধতায় চরম সংকটে রয়েছেন যশোরের দুঃখখ্যাত ভবদহবাসী। তারপরও নিরানন্দ পরিবেশে সামর্থ্য অনুযায়ী চলছে দুর্গাকে বরণ করার নানা আনুষ্ঠানিকতা। দুঃখ-দুর্দশায় দিন পার করা পরিবারগুলোও নিজেদের সাধ্যমতো চেষ্টা করছে ধর্মীয় রীতি রক্ষার। পানি আর দারিদ্র্যের সঙ্গে লড়াই করা এই মানুষেরা বলছেন, জাঁকজমক না হলেও সীমিত পরিসরে মণ্ডপে মণ্ডপে চলবে মায়ের পূজা-অর্চনা।
যশোরের অভয়নগর, মনিরামপুর, কেশবপুর এবং খুলনার ডুমুরিয়া ও ফুলতলা উপজেলার অংশবিশেষ নিয়ে ভবদহ অঞ্চল। পলি পড়ে এই অঞ্চলের পানি নিষ্কাশনের মাধ্যম মুক্তেশ্বরী, টেকা, শ্রী ও হরি নদ-নদী নাব্যতা হারিয়েছে। ফলে নদ দিয়ে পানি নামছে না। এই অঞ্চলে যত দূর চোখ যায়, শুধু পানি আর পানি। খেতের ফসল, ঘেরের মাছ— সবই কেড়ে নিয়েছে এই পানি। কেড়ে নিয়েছে মানুষের থাকার জায়গাটুকুও। দুই শটি গ্রামের বেশির ভাগ ঘরবাড়ি, ধর্মীয় ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, রাস্তাঘাট, কৃষিজমি এবং মাছের ঘের প্লাবিত হয়েছে। হিন্দু-অধ্যুষিত ভবদহ এলাকায় আবহমানকাল থেকে জমকালো আয়োজনে উদ্যাপন করা হয় সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বড় উৎসব দুর্গাপূজা। ষষ্ঠীপূজার মধ্য দিয়ে রোববার থেকে শুরু হচ্ছে শারদীয় দুর্গোৎসব। কিন্তু বেশির ভাগ বাড়িতেই পূজার আনন্দ নেই। যে কয়েকটি স্থানে হচ্ছে, তা-ও সীমিত।
জেলা পূজা উদ্যাপন পরিষদের তথ্যমতে, জেলায় ৭০৬টি পূজামণ্ডপে এবার শারদীয় দুর্গোৎসব হবে। এর মধ্য ভবদহ এলাকায় ৩০টি পূজামণ্ডপে শারদীয় দুর্গোৎসব হবে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, ভবদহ এলাকায় পূজার আনন্দ নেই। বাড়িতে বাড়িতে নেই প্রস্তুতিও। তবে কয়েকটি স্থানে সীমিত পরিসরে পূজামণ্ডপে প্রতিমা বসানো হয়েছে।
অভয়নগরের সুন্দলী সর্বজনীন দুর্গামন্দিরের সভাপতি উজ্জ্বল বিশ্বাস বলেন, বালু দিয়ে উঁচু করে পূজার অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। তবে জাঁকজমক নেই। মানুষের বাড়ি বাড়ি জল। ফসল না হওয়া, মাছের ঘের ডুবে যাওয়ায় বাড়ি বাড়ি অভাব। তাই চাঁদা না দেওয়ায় সীমিত পরিসরে পূজা করা হচ্ছে।
পূজা উদ্যাপন পরিষদের সভাপতি দীপংকর দাস রতন জানান, ভবদহপাড়ের বাসিন্দাদের মধ্যে উৎসব নেই। তাঁরা বাঁচতে চান। উৎসব না থাকলেও সরকারিভাবে নানা সহায়তা দেওয়া হয়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) যশোরের নির্বাহী প্রকৌশলী পলাশ কুমার ব্যানার্জী বলেন, গতবারের তুলনায় এবার জলাবদ্ধতা কম। দুর্ভোগ লাঘবে দ্রুতই ভবদহ অঞ্চলের পাঁচটি নদী পুনঃখনন করবে সেনাবাহিনী। পূজায় জলাবদ্ধতা নিরসনে কাজ চলছে।
এদিকে দুর্গাপূজা ঘিরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী যশোরে ব্যাপক তৎপর রয়েছে বলে জানিয়েছেন পুলিশ সুপার রওনক জাহান। তিনি বলেন, পুরো জেলাকে চারটি সেক্টরে ভাগ করে পুলিশের স্ট্রাইকিং টিম কাজ করবে।
পর্যটন শহর কক্সবাজারের নাজিরারটেক থেকে টেকনাফ পর্যন্ত ১২০ কিলোমিটার সমুদ্রসৈকতকে ১৯৯৯ সালে প্রতিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকা (ইসিএ) ঘোষণা করে সরকার। এ-সংক্রান্ত আইন অনুযায়ী, সৈকতের জোয়ার-ভাটার স্থান থেকে ৩০০ মিটার পর্যন্ত যেকোনো স্থাপনা নির্মাণ ও উন্নয়ন নিষিদ্ধ।
৪৩ মিনিট আগেসম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে একটি ভিডিও। এতে দেখা যায়, সাধুর মতো দেখতে এক বৃদ্ধকে জোর করে ধরে চুল কেটে দিচ্ছেন তিন ব্যক্তি। সাধু মানুষটি প্রাণপণ চেষ্টা করেও নিজেকে ছাড়িয়ে নিতে ব্যর্থ হন।
৪৩ মিনিট আগেমুন্সিগঞ্জের গজারিয়া উপজেলার জামালপুর গ্রামে মেঘনা নদীর দুর্গম চরাঞ্চলে একটি অস্থায়ী পুলিশ ক্যাম্প চালু করা হয় গত ২২ আগস্ট। এর দুই দিন পরই ২৫ আগস্ট ওই ক্যাম্পে হামলা চালায় অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীরা। এ সময় তারা পুলিশের দিকে শতাধিক গুলি ও ককটেল ছোড়ে।
৪৩ মিনিট আগেরাজশাহীর বাগমারায় বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের বহিষ্কৃত এবং অব্যাহতিপ্রাপ্ত কয়েকজন নেতা বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন। তাঁদের অব্যাহত বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে বেসামাল হয়ে পড়েছে স্থানীয় বিএনপির রাজনীতি। নেতা-কর্মীদের মধ্যে দেখা দিয়েছে প্রচণ্ড ক্ষোভ ও অসন্তোষ।
১ ঘণ্টা আগে