Ajker Patrika

যুক্তরাষ্ট্রকে বাগরাম ঘাঁটি ফেরত দিতে ট্রাম্পের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করল তালেবান

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আফগানিস্তানের বাগরাম বিমানঘাঁটির প্রবেশদ্বার। ছবি: এপির সৌজন্যে
আফগানিস্তানের বাগরাম বিমানঘাঁটির প্রবেশদ্বার। ছবি: এপির সৌজন্যে

নাইন/ইলেভেন হামলার পর আফগানিস্তানে টানা দুই দশকের যুদ্ধে মার্কিন সেনাদের প্রধান ঘাঁটি হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছিল বাগরাম বিমানঘাঁটিটি। সম্প্রতি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বিমানঘাঁটিটি তালেবান সরকারের কাছে ফেরত চেয়েছেন। কিন্তু ট্রাম্পের এই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে তালেবান সরকার।

বার্তা সংস্থা এপির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আজ রোববার তালেবানের প্রধান মুখপাত্র জাবিহুল্লাহ মুজাহিদ ট্রাম্পের এই দাবি প্রত্যাখ্যান করেছেন। তিনি যুক্তরাষ্ট্রকে ‘বাস্তব ও যুক্তিসংগত’ নীতি গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সের এক পোস্টে মুজাহিদ এ তথ্য জানিয়েছেন। তিনি জানিয়েছেন, আফগানিস্তানের পররাষ্ট্রনীতি অর্থনীতিকেন্দ্রিক এবং তাঁরা পারস্পরিক ও সাধারণ স্বার্থের ভিত্তিতে সব দেশের সঙ্গে গঠনমূলক সম্পর্ক চান।

জাবিহুল্লাহ মুজাহিদ তাঁর পোস্টে বলেছেন, ‘দ্বিপক্ষীয় আলোচনায় যুক্তরাষ্ট্রকে বারবার জানানো হয়েছে, আফগানিস্তানের স্বাধীনতা ও আঞ্চলিক অখণ্ডতা আমাদের কাছে সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ।’

জাবিহুল্লাহ আরও বলেন, দোহা চুক্তির অধীনে যুক্তরাষ্ট্র প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল—তারা আফগানিস্তানের আঞ্চলিক অখণ্ডতা বা রাজনৈতিক স্বাধীনতার বিরুদ্ধে শক্তি প্রয়োগ করবে না বা হুমকি দেবে না কিংবা এর অভ্যন্তরীণ বিষয়েও হস্তক্ষেপ করবে না। যুক্তরাষ্ট্রকে তার প্রতিশ্রুতি রক্ষা করতে হবে।

জাবিহুল্লাহ মুজাহিদের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল—ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে কী ধরনের আলাপ হয়েছে বা ট্রাম্প পুনরায় কেন বাগরাম ঘাঁটি ফেরত পেতে চান। তবে তিনি এ বিষয়ে করা কোনো প্রশ্নের উত্তর দেননি।

এদিকে এ বিষয়ে আফগান কর্মকর্তাদের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র কী ধরনের আলোচনা করেছে, তা-ও এখনো পরিষ্কার নয়। ২০২১ সালের আগস্টে বাগরামের দখল নেওয়ার পর তালেবানরা গত বছর এর তৃতীয় বার্ষিকী উদ্‌যাপন করেছিল। সেখানে তারা কিছু পরিত্যক্ত মার্কিন সামরিক সরঞ্জামের বিশাল প্রদর্শনী করে, যা হোয়াইট হাউসের নজর কেড়েছিল।

সর্বশেষ এ বিষয়ে নিজের ট্রুথ সোশ্যালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প লিখেছেন, ‘আফগানিস্তান যদি বাগরাম বিমানঘাঁটি ফিরিয়ে না দেয়, তাহলে খুব খারাপ কিছু ঘটবে।’

প্রসঙ্গত, দুই দশক ধরে আফগানিস্তানে চলা যুদ্ধে বাগরাম বিমানঘাঁটি ছিল মার্কিন সেনাদের প্রধান ঘাঁটি। সেখানে বার্গার কিং, পিৎজা হাটের মতো রেস্তোরাঁ ছাড়াও ছিল বিভিন্ন দোকান, যেখানে ইলেকট্রনিকস থেকে শুরু করে আফগানি গালিচা পর্যন্ত পাওয়া যেত। এই ঘাঁটির ভেতরে বিশাল এক কারাগারও ছিল।

বিশেষজ্ঞদের মতে, বিশাল এই ঘাঁটি ফের চালু করা এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করা কঠিন হবে। এর জন্য বিপুল জনবল প্রয়োজন। এমনকি তালেবান আলোচনার মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রকে বাগরামে ফের প্রবেশাধিকার দিলেও ঘাঁটিটিকে ইসলামিক স্টেট (আইএস) ও আল কায়েদার মতো জঙ্গি গোষ্ঠীর হামলা থেকে রক্ষা করতে হবে।

এ ছাড়া ঘাঁটিটি ইরানের উন্নত ক্ষেপণাস্ত্র হামলার ঝুঁকিতেও পড়তে পারে। গত জুনে যুক্তরাষ্ট্র ইরানের পরমাণু স্থাপনায় হামলা চালানোর পর ইরান কাতারে মার্কিন একটি বড় ঘাঁটিতে আক্রমণ চালিয়েছিল।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত