Ajker Patrika

ফুটবলাররা পানি না গিলে কুলি করেন কেন

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৮: ২২
পর্তুগালের ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর মতো তারকাদের এ কৌশল ব্যবহার করতে দেখা যায়। ছবি: সংগৃহীত
পর্তুগালের ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর মতো তারকাদের এ কৌশল ব্যবহার করতে দেখা যায়। ছবি: সংগৃহীত

ফুটবল ম্যাচে দর্শকেরা প্রায়ই দেখতে পান, খেলোয়াড়রা পানীয়ের বোতল থেকে এক চুমুক নিয়ে তা কিছুক্ষণ পরই মুখ থেকে ফেলে দিচ্ছেন। ব্যাপারটি দেখে অবাক লাগলেও, এর পেছনে রয়েছে পুরোদস্তুর কৌশল ও বৈজ্ঞানিক কারণ।

খেলোয়াড়দের এই অভ্যাসটি শুধু আরাম বা স্বস্তির জন্য নয়; বরং তাঁদের পারফরম্যান্স বৃদ্ধির কৌশল হিসেবেও ব্যবহৃত হয়। খেলোয়াড়দের এই অভ্যাসকে কার্ব রিন্সিং বলে। এটি বিশ্বজুড়ে আলোচনায় আসে ২০১৮ সালের ফুটবল বিশ্বকাপে, যেখানে ইংল্যান্ডের হ্যারি কেন ও পর্তুগালের ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর মতো তারকাদের এ কৌশল ব্যবহার করতে দেখা যায়।

এ কৌশলের উপকারিতা বিশেষভাবে লক্ষ করা যায় ফুটবলের মতো উচ্চ-তীব্রতার খেলায়, যেখানে একটি ম্যাচ প্রায় ৯০ মিনিট ধরে চলে। এমন দীর্ঘ সময় ধরে চলা পরিশ্রমের মধ্যে সামান্য কোনো সুবিধাও পারফরম্যান্সে বড় পার্থক্য গড়ে দিতে পারে। গবেষণায় দেখা গেছে, কার্ব রিন্সিং প্রায় ২ থেকে ৩ শতাংশ পর্যন্ত পারফরম্যান্স বৃদ্ধিতে সহায়তা করতে পারে, যা দীর্ঘস্থায়ী সহনশীলতাভিত্তিক অনুশীলনের সময় কার্বোহাইড্রেট সেবনের মতোই কার্যকর।

১. পেটের অস্বস্তি এড়ানো

খেলার মাঝখানে বা খুব প্রচণ্ড শারীরিক পরিশ্রমের সময় অতিরিক্ত পানি বা ইলেকট্রোলাইট দ্রবণ পান করলে অনেক সময় পেট ভারী মনে হতে পারে। এটি খেলোয়াড়দের জন্য অস্বস্তিকর ও মনোযোগে ব্যাঘাত ঘটাতে পারে। তাই অনেকে শুধু কুলি করেন—যাতে মুখের তৃষ্ণা প্রশমিত হয়, তবে পেট ভারী না হয়। এ ছাড়া, দ্রবণ না গিলে তা ফেলে দেওয়ার ফলে পেটের অস্বস্তিও এড়ানো যায়। খুব ঘন ঘন দ্রবণ পেটে গেলে তা হজমে সময় নেয় এবং শরীরকে তা পাতলা করতে অতিরিক্ত পানি প্রয়োজন হয়, যা খেলোয়াড়দের পেট ফাঁপা বা অস্বস্তিতে ফেলতে পারে।

২. পারফরম্যান্স বৃদ্ধির মনস্তাত্ত্বিক কৌশল

খেলোয়াড়দের মধ্যে কার্বোহাইড্রেট রিন্সিং কৌশলটি বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। এ পদ্ধতিতে, খেলোয়াড়রা কার্বোহাইড্রেটসমৃদ্ধ দ্রবণ দিয়ে মুখ কুলি করেন, তবে সেটা গিলে ফেলেন না। গবেষণা বলছে, এই কার্বোহাইড্রেট দ্রবণ মুখে আসার পর মস্তিষ্ক এটি থেকে শক্তি আসছে বলে ধরে নেয়, যদিও আসলে তা শরীরে ঢুকছে না। এতে মস্তিষ্ক সাময়িকভাবে ক্লান্তির অনুভূতি কমিয়ে দেয় এবং পারফরম্যান্সে ইতিবাচক প্রভাব পড়ে। ফলে মস্তিষ্ক ‘শক্তি আসছে’ এমন একধরনের মনস্তাত্ত্বিক সংকেত দেওয়া।

৩. মুখের শুষ্কতা থেকে মুক্তি

দীর্ঘ সময় দৌড়ানো বা পরিশ্রমের সময় মুখে ঘন লালারস জমে গিয়ে শ্বাস নিতে বা কথা বলা কষ্টকর হয়ে উঠতে পারে। কুলি করার মাধ্যমে সেই ঘন লালা পরিষ্কার হয়ে যায়, মুখে সতেজ অনুভূতি ফিরে আসে, এবং শ্বাসও সহজে নেওয়া যায়। এটি খেলোয়াড়দের আরাম দেয়। বিশেষ করে যখন তাঁরা পিপাসার্ত বোধ করছেন, তবে পানি গিলে ফেলতে চাইছেন না।

৪. ব্যক্তিগত পানির পানের চাহিদা

সব খেলোয়াড়ের পানি পানের প্রয়োজন একরকম নয়। কেউ কেউ সামান্য পানিতেই স্বস্তি পান, আবার কেউ বেশি খেললে বা ঘামলে বেশি পানিও প্রয়োজন হয়। তবে অনেকের ক্ষেত্রেই খেলার মাঝখানে বেশি পানি পান করলে পেট ফাঁপা বা অস্বস্তি দেখা দেয়। তাঁদের জন্য মুখ কুলি করে ফেলা হলো একধরনের ভারসাম্য—মুখের শুষ্কতাও দূর হলো, আবার পেটেও অতিরিক্ত চাপ পড়ল না।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

দেড় বছরে পুলিশের যে ক্ষতি হয়েছে, ৫০ বছরেও পুনরুদ্ধার কঠিন: সাবেক আইজিপি নুরুল হুদা

ফুটবলাররা পানি না গিলে কুলি করেন কেন

নেপাল পুলিশের স্বয়ংক্রিয় অস্ত্র নেই, জেন-জি বিক্ষোভে গুলি ছুড়ল কারা—ষড়যন্ত্রের অভিযোগ কে পি শর্মার

জাপাকে যে দোষ দেওয়া হচ্ছে, তার বড় ভাগীদার বিএনপি-জামায়াত: আনিসুল

শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে জেগেছে বাংলাদেশের ফাইনালের স্বপ্ন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত