Ajker Patrika

গাজায় যুদ্ধবিরতি নিয়ে ফের জেগেছে ক্ষীণ আশা

অনলাইন ডেস্ক
গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসনে বিধ্বস্ত একটি এলাকা। ছবি: আনাদোলু
গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসনে বিধ্বস্ত একটি এলাকা। ছবি: আনাদোলু

গাজা যুদ্ধবিরতি ও ইসরায়েলি জিম্মি মুক্তি নিয়ে আলোচনা ফের ‘জোরদার’ হয়েছে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসিকে এমনটাই জানিয়েছেন ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী ও গাজার নিয়ন্ত্রক হামাসের এক জ্যেষ্ঠ নেতা। তবে ইসরায়েলের সঙ্গে এই বিষয়ে সরাসরি কোনো আলোচনা হয়নি।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হামাসের এক জ্যেষ্ঠ নেতা বিবিসিকে জানিয়েছেন, গাজায় নতুন অস্ত্রবিরতি এবং জিম্মি মুক্তির চুক্তি নিয়ে মধ্যস্থতাকারীরা তাদের প্রচেষ্টা আরও জোরদার করেছে। তবে ইসরায়েলের সঙ্গে আলোচনায় কোনো অগ্রগতি হয়নি।

হামাসের তরফ থেকে এই মন্তব্য এমন এক সময়ে এল, যখন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যে ১২ দিনের যুদ্ধ শেষ হওয়ার পর ‘ব্যাপক অগ্রগতি’ হচ্ছে এবং তাঁর বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফের ধারণা, ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে একটি চুক্তি ‘অত্যন্ত কাছাকাছি।’

এদিকে, বুধবার গাজাজুড়ে ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ৭৮ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে অনেকেই ত্রাণের জন্য অপেক্ষা করছিলেন বলে হামাস-নিয়ন্ত্রিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে। অন্যদিকে, ইসরায়েলি সেনাবাহিনী জানিয়েছে, মঙ্গলবার হামাসের হামলায় তাদের সাতজন সেনা নিহত হয়েছে।

এর আগে, গতকাল বুধবার ট্রাম্প সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমি মনে করি, গাজা নিয়ে ব্যাপক অগ্রগতি হচ্ছে। আমি মনে করি, এটা হয়েছে আমাদের চালানো হামলার কারণে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমি মনে করি আমরা খুব শিগগিরই ভালো কিছু খবর পেতে যাচ্ছি। আমি স্টিভ উইটকফের সঙ্গে কথা বলেছি...তিনি আমাকে বলেছেন, গাজার বিষয়টি খুব কাছাকাছি।’

ট্রাম্পের বক্তব্যের কিছুক্ষণ পর হামাসের ওই সিনিয়র নেতা বিবিসিকে বলেন, ‘অস্ত্রবিরতির লক্ষ্যে মধ্যস্থতাকারীরা জোরালো যোগাযোগ চালিয়ে যাচ্ছে।’ তবে তিনি জানান, এখন পর্যন্ত কোনো নতুন প্রস্তাব তারা হাতে পাননি। ইসরায়েলের এক কর্মকর্তা দেশটির সংবাদমাধ্যম হারেৎজকে বলেছেন, আলোচনায় কোনো অগ্রগতি নেই এবং বড় ধরনের মতপার্থক্য এখনো থেকেই যাচ্ছে।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, কাতার ও মিসরের চেষ্টায় গত মে মাসের শেষ দিকে আলোচনার অগ্রগতি থমকে যায়। তখন স্টিভ উইটকফ বলেছিলেন, হামাস যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি একটি ৬০ দিনের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে ‘সম্পূর্ণ অগ্রহণযোগ্য’ সংশোধনী দাবি করেছিল। ওই প্রস্তাবে বলা হয়েছিল, যুদ্ধবিরতির সময় জীবিত ইসরায়েলি জিম্মিদের অর্ধেক এবং মৃত জিম্মিদের অর্ধেককে মুক্তি দেওয়া হবে।

ইসরায়েল ১৮ মার্চ গাজায় আবারও সামরিক অভিযান শুরু করে, যার ফলে দুই মাসের অস্ত্রবিরতি ভেঙে যায়। তারা জানিয়েছিল, হামাসের ওপর চাপ তৈরি করতেই তারা অভিযান চালাচ্ছে, যাতে হামাস জিম্মিদের মুক্তি দিতে বাধ্য হয়। এখনো ৫০ জন ইসরায়েলি জিম্মি গাজায় রয়েছে, যাদের মধ্যে অন্তত ২০ জন জীবিত বলে ধারণা করা হচ্ছে।

মার্চের শুরুতে ইসরায়েল গাজার ওপর পূর্ণাঙ্গ অবরোধ আরোপ করে, যাতে ত্রাণ সরবরাহও বন্ধ হয়ে যায়। ১১ সপ্তাহ পর যুক্তরাষ্ট্রের মিত্রদের চাপ এবং বিশেষজ্ঞদের অর্ধ মিলিয়ন মানুষের না খেয়ে মরার আশঙ্কার সতর্কতার পর ইসরায়েল আংশিকভাবে অবরোধ শিথিল করে।

একই সময়ে, ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থনে গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশন বা জিএইচএফ নামে নতুন একটি ত্রাণ বিতরণ ব্যবস্থা চালু করা হয়। এর মাধ্যমে জাতিসংঘকে পাশ কাটিয়ে সরাসরি ফিলিস্তিনিদের কাছে ত্রাণ পৌঁছানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল দাবি করেছে, এতে ত্রাণ হামাসের হাতে পড়ার ঝুঁকি কমবে। তবে হামাস বলছে, তারা কখনোই ত্রাণ চুরি করেনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত