Ajker Patrika

কাশ্মীরের লাদাখে পৃথক রাজ্য ও চাকরিতে কোটার দাবিতে বিক্ষোভ, সহিংসতায় নিহত ৪

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৯: ৩৮
বিক্ষুব্ধ আন্দোলনকারীরা পুলিশের গাড়িতেও আগুন দেন। ছবি: পিটিআই
বিক্ষুব্ধ আন্দোলনকারীরা পুলিশের গাড়িতেও আগুন দেন। ছবি: পিটিআই

লাদাখে পৃথক রাজ্যের মর্যাদা ও স্থানীয় লোকদের জন্য চাকরিতে কোটার দাবিতে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষে অন্তত চারজন নিহত ও ডজনখানেক আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। আজ বুধবার এ ঘটনা ঘটে বলে রয়টার্সকে নিশ্চিত করেছে স্থানীয় দুটি সূত্র।

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সরকার ২০১৯ সালে জম্মু ও কাশ্মীর রাজ্য থেকে লাদাখকে আলাদা করে একটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল হিসেবে ঘোষণা করে। এর পর থেকে এটি সরাসরি দিল্লির অধীনে পরিচালিত হচ্ছে।

জলবায়ুকর্মী সোনম ওয়াংচুকের নেতৃত্বে বিক্ষোভকারীরা দীর্ঘদিন ধরে লাদাখের জন্য বিশেষ মর্যাদা দাবি করে আসছেন। গতকাল মঙ্গলবার তাঁর সঙ্গে থাকা দুজন অনশনকারী অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন। এ খবরে মানুষের ক্ষোভ আরও বেড়ে যায়।

ভারতীয় সংবাদ সংস্থা এএনআই জানিয়েছে, লেহ শহরের প্রধান কার্যালয়সহ বিজেপির বেশ কয়েকটি ভবনে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। এএনআইয়ের ভিডিওতে দেখা যায়, কার্যালয়ের সীমানাপ্রাচীরের ভেতর থেকে কালো ধোঁয়া বের হচ্ছে এবং শত শত মানুষ স্লোগান দিচ্ছেন।

ভারতীয় টিভি চ্যানেলগুলোতে একটি পুলিশ ভ্যানেও আগুন জ্বলতে দেখা গেছে। স্থানীয় গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, কিছু তরুণ বিক্ষোভকারী পুলিশের দিকে পাথর নিক্ষেপ করলে পুলিশ তাঁদের ছত্রভঙ্গ করতে কাঁদানে গ্যাস ব্যবহার করে। পুলিশের একটি সূত্র জানিয়েছে, এ ঘটনায় ২০ জন পুলিশ সদস্যসহ ৫০ জনেরও বেশি মানুষ আহত হয়েছেন।

এদিকে ১৫ দিন ধরে অনশন চালিয়ে আসা সোনম ওয়াংচুক এ সহিংসতার পর তাঁর অনশন ভেঙেছেন। তিনি বলেন, ‘তরুণদের হতাশার কারণেই তারা রাস্তায় নেমেছে... আমি তরুণদের কাছে সহিংসতা পরিহার করার আহ্বান জানাচ্ছি।’

ওয়াংচুক আরও বলেন, ‘এটি লাদাখের সমস্যার সমাধান নয়... যদি আমাদের তরুণদের দুঃখ ও কষ্ট থাকে যে আমরা অনশনে আছি, তাহলে আমরা আজ থেকে আমাদের অনশন ভেঙে দিচ্ছি।’

লাদাখের লেফটেন্যান্ট গভর্নর ও পুলিশ এ বিষয়ে রয়টার্সের মন্তব্যের অনুরোধে সাড়া দেয়নি। জেলা প্রশাসক রোমিল সিং ডোনক একটি বিজ্ঞপ্তিতে শান্তি বজায় রাখার জন্য বিক্ষোভ, জনসমাবেশ ও উসকানিমূলক বক্তব্য নিষিদ্ধ করেছেন।

উল্লেখ্য, লাদাখের একটি দীর্ঘ সীমান্ত চীনের সঙ্গে সংযুক্ত এবং এটি ভারতের জন্য একটি কৌশলগত অঞ্চল। তাই দিল্লির জন্য এই পরিস্থিতি অত্যন্ত উদ্বেগের। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, উচ্চপর্যায়ের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে এবং ৬ অক্টোবর একটি বৈঠকের দিন নির্ধারণ করা হয়েছে। লেহ অ্যাপেক্স বডি ও কারগিল ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্সের প্রতিনিধি এবং বিভিন্ন সামাজিক, রাজনৈতিক ও ধর্মীয় সংগঠনের সঙ্গে এই আলোচনা হবে।

কিন্তু লাদাখের প্রতিনিধিরা সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী নাকি স্বীকার করেছেন যে পৃথক কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল ঘোষণা করা ভুল ছিল এবং তাঁদের দাবিদাওয়া কার্যত বাতিল করে দেওয়া হয়েছে। এই অভিযোগ প্রকাশ্যে আসার পর আন্দোলন আরও বিস্ফোরক আকার নেয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত