Ajker Patrika

হায়দরাবাদে বিস্ফোরণে নিহত বেড়ে ৩৬, কারখানা কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে পুলিশের মামলা

অনলাইন ডেস্ক
ছবি: এক্স ভিডিও থেকে
ছবি: এক্স ভিডিও থেকে

ভারতের হায়দরাবাদে রাসায়নিক কারখানায় বিস্ফোরণে নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ৩৬ জন। এখনো নিখোঁজ রয়েছেন বেশ কয়েকজন। স্থানীয় পুলিশের বরাত দিয়ে এ তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, উদ্ধার তৎপরতা ও ধ্বংসাবশেষ অপসারণের কাজ প্রায় শেষ। নিহতদের মধ্যে অন্তত ছয়জনের পরিচয় নিশ্চিত করতে ডিএনএ পরীক্ষার প্রয়োজন হবে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ। মৃতদেহগুলোর কোনো কোনোটি এতটাই ঝলসে গেছে যে পরিচয় শনাক্তের আর কোনো উপায় নেই।

এদিকে, এই বিস্ফোরণ ও অগ্নিকাণ্ডের জন্য কর্তৃপক্ষের গাফিলতিই দায়ী বলে অভিযোগ উঠছে। তেলেঙ্গানা অগ্নি নির্বাপণ দপ্তরের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, সিগাচি ইন্ডাস্ট্রিজের এই কারখানাটির কাছে ফায়ার ডিপার্টমেন্টের কোনো ‘নো অবজেকশন সার্টিফিকেট’ (এনওসি) ছিল না, অর্থাৎ অগ্নি নিরাপত্তা ছাড়াই চালানো হচ্ছিল এই ইউনিট। কারখানায় ছিল না কোনো অগ্নিবাহিত সংকেত (ফায়ার অ্যালার্ম) বা তাপমাত্রা শনাক্তকারী সেন্সর (হীট সেন্সর)-এর ব্যবস্থা।

তিনি বলেন, ‘এনওসিপাওয়ার জন্য একটি নির্দিষ্ট অনলাইন প্রক্রিয়া রয়েছে। কোনো প্রতিষ্ঠান অনলাইনে আবেদন করলে একটি কমিটি তা খতিয়ে দেখে সিদ্ধান্ত দেয়। কিন্তু এই ইউনিট কোনো আবেদনই করেনি, তাই আমরা কোনো সার্টিফিকেট ইস্যু করিনি।’

বিস্ফোরণে নিহত এক ব্যক্তির পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে কারখানা কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করেছে সঙ্গারেড্ডি জেলা পুলিশ। ভারতীয় দণ্ডবিধির সংশোধিত ধারা বিএনএস-এর অধীনে এটি দায়ের করা হয়—যার মধ্যে রয়েছে ১০৫ ধারা (ইচ্ছাকৃত হত্যা নয়, কিন্তু প্রাণনাশের দায়ে শাস্তিযোগ্য অপরাধ), ১১০ ধারা (প্রাণনাশের চেষ্টায় জড়িত থাকা), এবং ১১৭ ধারা (ইচ্ছাকৃতভাবে গুরুতর আঘাত হানা)।

গত সোমবার স্থানীয় সময় সকালে হায়দরাবাদ থেকে ৫০ কিলোমিটার দূরে সঙ্গারেড্ডি জেলার পশমাইলারাম শিল্প এলাকায় সিগাচি ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের ফার্মাসিউটিক্যাল কারখানায় একটি ভয়াবহ বিস্ফোরণ ঘটে। পাশামাইলারাম শিল্পাঞ্চলে সিগাচি ইন্ডাস্ট্রিজের কেমিক্যাল উৎপাদন ও গবেষণা কেন্দ্রে এই বিস্ফোরণ হয়। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, একটি বড় বিস্ফোরণের শব্দে কেঁপে ওঠে গোটা এলাকা। সঙ্গে সঙ্গেই আকাশে উঠতে দেখা যায় কালো ধোঁয়া।

জানা গেছে, একটি রাসায়নিক রিঅ্যাক্টরের ভেতরেই এই বিস্ফোরণ ঘটে। মুহূর্তের মধ্যে আগুন ছড়িয়ে পড়ে কারখানার অন্য অংশে। এ ঘটনায় গুরুতর আহত হয়েছেন আরও ৩৫ কর্মী, যাদের মধ্যে ১১ জনের অবস্থা সংকটাপন্ন।

কর্তৃপক্ষের তথ্যমতে, কারখানাটির ২৭ কর্মী এখনো নিখোঁজ। তারা ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে আছেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। ঘটনাস্থলে নিরলস কাজ করে যাচ্ছেন রাজ্য দুর্যোগ মোকাবিলা বাহিনী (এসডিআরএফ), হায়দরাবাদ দুর্যোগ মোকাবিলা ও সম্পদ সুরক্ষা সংস্থা (এইচওয়াইআরএএ) এবং পুলিশ। কর্তৃপক্ষ আরও জানিয়েছে, নিখোঁজ কর্মীদের বেশির ভাগই মধ্যে বিহার, উত্তর প্রদেশ এবং ওড়িশার পরিযায়ী শ্রমিক।

দুর্ঘটনায় সময় কারখানার ভেতর ১০৮ জন কর্মী ছিল। স্থানীয়রা বলছেন, পাঁচ কিলোমিটার দূর থেকেও শোনা গেছে বিস্ফোরণের শব্দ। ফায়ার সার্ভিস কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, আগুন নেভাতে ব্যবহার করা হয়েছে মোট ১৫টি অগ্নিনির্বাপক ইঞ্জিন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছে, বিস্ফোরণের তীব্রতা এতই ছিল যে শ্রমিকেরা আক্ষরিক অর্থেই আকাশে ছিটকে কয়েক মিটার দূরে গিয়ে পড়েন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

লুটপাটে শেষ ৫ কোটির প্রকল্প: ইউএনও-উপজেলা প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে শুনানি কাল

চীন–রাশিয়া থেকে ভারতকে দূরে রাখতে কয়েক দশকের মার্কিন প্রচেষ্টা ভেস্তে দিচ্ছেন ট্রাম্প: জন বোল্টন

‘হানি ট্র্যাপের’ ঘটনা ভিডিও করায় খুন হন সাংবাদিক তুহিন: পুলিশ

আটজন উপদেষ্টার ‘সীমাহীন’ দুর্নীতির প্রমাণ আছে: সাবেক সচিব

স্ত্রীকে মেরে ফেলেছি, আমাকে নিয়ে যান— ৯৯৯–এ স্বামীর ফোন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত