Ajker Patrika

ভারতের হামলায় পাকিস্তানে সন্ত্রাসী স্থাপনা দ্বিখণ্ডিত, ধরা পড়ল স্যাটেলাইটে

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ০১ জুলাই ২০২৫, ০০: ৩৬
পাকিস্তান-নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের রাজধানী মুজাফফরাবাদে অবস্থিত সায়েদনা বিলাল ক্যাম্প ছিল জইশ-ই-মুহাম্মদের সঙ্গে যুক্ত সন্ত্রাসীদের গুরুত্বপূর্ণ ঘাঁটি। ছবি: এনডিটিভির সৌজন্যে
পাকিস্তান-নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের রাজধানী মুজাফফরাবাদে অবস্থিত সায়েদনা বিলাল ক্যাম্প ছিল জইশ-ই-মুহাম্মদের সঙ্গে যুক্ত সন্ত্রাসীদের গুরুত্বপূর্ণ ঘাঁটি। ছবি: এনডিটিভির সৌজন্যে

গত মাসে অপারেশন সিঁদুরের অংশ হিসেবে পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীরের দুটি প্রধান সন্ত্রাসী স্থাপনা লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছিল ভারত। এবার এই প্রথম হাই রেজল্যুশনের নতুন স্যাটেলাইট ছবিতে এসব হামলার ক্ষয়ক্ষতির চিত্র ধরা পড়েছে। এনডিটিভির হাতে আসা এই ছবিগুলোতে হামলার তীব্রতা স্পষ্ট ফুটে উঠেছে। যদিও ভারতীয় সামরিক বাহিনী হামলায় ব্যবহৃত অস্ত্রের নাম প্রকাশ করেনি। তবে ধারণা করা হচ্ছে, উভয় লক্ষ্যবস্তুতে ড্রোন ব্যবহার করা হয়েছিল।

এই ছবিগুলো কাশ্মীরের তাংধারের ৩৬ কিলোমিটার পশ্চিমে মুজাফফরাবাদের সায়েদনা বিলাল ক্যাম্প এবং জম্মুর রাজৌরি থেকে ৪০ কিলোমিটার পশ্চিমে কোটলি গুলপুর ক্যাম্পের। ৭ মে ভোরের দিকে এই দুটি সন্ত্রাসী স্থাপনা লক্ষ্য করে ভারত হামলা চালায়। গত ২২ এপ্রিল পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হন। এই হামলার জেরে পাকিস্তান ও পাকিস্তান-নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের একাধিক সন্ত্রাসী অবকাঠামো লক্ষ্য করে এই অভিযান চালায় ভারত। পেহেলগামের হামলা ছিল ২০০০ সালের মার্চে ছত্রিসিঙ্গপোরা হত্যাকাণ্ডের পর জম্মু ও কাশ্মীরে সবচেয়ে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলা, যেখানে ৩৬ জন শিখকে হত্যা করা হয়েছিল।

পাকিস্তান-নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের রাজধানী মুজাফফরাবাদে অবস্থিত সায়েদনা বিলাল ক্যাম্প ছিল জইশ-ই-মুহাম্মদের সঙ্গে যুক্ত সন্ত্রাসীদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘাঁটি। এই ক্যাম্পে অস্ত্র পরিচালনা, জঙ্গলে টিকে থাকা এবং বিস্ফোরক ও গোলাবারুদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হতো।

হামলার আগের ও পরের ছবিগুলোতে দেখা যায়, ৮১ বাই ৯২ ফুট পরিমাপের একাধিক ভবন সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে গেছে। ধারণা করা হচ্ছে, এটি একটি ড্রোন হামলার ফল। এলাকার আশপাশে অন্য কোনো ক্ষয়ক্ষতি দেখা যায়নি।

সেনাবাহিনী সূত্রে জানা গেছে, ২০২৩ সালের জুন মাসে বিশেষ প্রশিক্ষণের জন্য এই সায়েদনা বিলালে নতুন জঙ্গিদের পাঠানো হয়েছিল। তাদের উদ্দেশ্য ছিল উরি ও কেরান সেক্টরে লাইন অব কন্ট্রোল বা নিয়ন্ত্রণরেখা পেরিয়ে কাঠুয়া ও রামবানের রেলসেতুতে হামলা চালানো। প্রশিক্ষণের পর এই সন্ত্রাসীদের পাকিস্তানের পাঞ্জাবের ঘাঁটি ও লঞ্চপ্যাডগুলোতে পাঠানো হতো, যেখানে তারা যোগাযোগেরও বিশেষ প্রশিক্ষণ পেত। প্রশিক্ষণ শেষে তারা চার থেকে আটজনের দলে বিভক্ত হয়ে ২০২৪ সালের মার্চ থেকে মে মাসের মধ্যে আন্তর্জাতিক সীমান্ত দিয়ে ভারতে অনুপ্রবেশ করে। গত বছর জম্মুতে সংঘটিত অধিকাংশ সন্ত্রাসী হামলা এই সন্ত্রাসীরাই চালিয়েছিল বলে ধারণা করা হয়।

জইশ-ই-মুহাম্মদের শীর্ষ সন্ত্রাসী নেতা মুফতি আসগর খান কাশ্মীরি, আমির জে এম আবদুল্লাহ জেহাদি এবং আশিক নিগরু নিয়মিত এই ক্যাম্পে আসতেন। জইশ-ই-মুহাম্মদের সিনিয়র কমান্ডারদের জন্য ক্যাম্পের কাছে গেস্টহাউসও তৈরি করা হয়েছিল। সেনাবাহিনী সূত্র জানায়, এই ক্যাম্পগুলোকে পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা, বিশেষ করে ইন্টার-সার্ভিসেস ইন্টেলিজেন্স (আইএসআই) অর্থসহায়তা ও সুরক্ষা দিত। এ ছাড়া জম্মু ও কাশ্মীরে সন্ত্রাসীদের প্রশিক্ষণ, অস্ত্র সরবরাহ এবং নিরাপদ যাতায়াতের ব্যবস্থাও করা হতো।

শ্রীনগরে অবস্থিত ১৫ কোরের সাবেক কমান্ডার লেফটেন্যান্ট জেনারেল সতীশ দুয়া (অব.) বলেন, কোটলি ও মুজাফফরাবাদের সন্ত্রাসী আস্তানাগুলো লক্ষ্য করে চালানো সুনির্দিষ্ট হামলার এই ছবিগুলো ভারতের সক্ষমতার সুস্পষ্ট প্রমাণ। তিনি আরও বলেন, ‘কয়েক দশক ধরে আমরা অসহায় বোধ করতাম যে সুনির্দিষ্ট অবস্থান জানা সত্ত্বেও বিভিন্ন পরিস্থিতি বিবেচনায় সন্ত্রাসী ঘাঁটিগুলোতে আঘাত করতে পারছি না। কিন্তু পেহেলগাম সবকিছু বদলে দিয়েছে।’ জার্মান সংবাদমাধ্যম টিআরটি জার্মানও এই ছবিগুলো মুজাফফরাবাদের সায়েদনা বিলাল ক্যাম্পের বলে প্রচার করেছে।

কোটলির গুলপুরে অবস্থিত এই ভবন জম্মুর রাজৌরি-পুঞ্চ এলাকার হামলায় জড়িত লস্কর-ই তাইয়েবা সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর বেসক্যাম্প ছিল। হামলার আগে ও পরের ছবি। ছবি: এনডিটিভির সৌজন্যে
কোটলির গুলপুরে অবস্থিত এই ভবন জম্মুর রাজৌরি-পুঞ্চ এলাকার হামলায় জড়িত লস্কর-ই তাইয়েবা সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর বেসক্যাম্প ছিল। হামলার আগে ও পরের ছবি। ছবি: এনডিটিভির সৌজন্যে

ছবির দ্বিতীয় সেটটি কোটলির গুলপুর ক্যাম্পের। এতে কিছু ভবনের ছবি দেখা যায়, যা জম্মুর রাজৌরি-পুঞ্চ এলাকার হামলায় জড়িত লস্কর-ই তাইয়েবা সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর একটি বেসক্যাম্প বলে ধারণা করা হচ্ছে।

স্যাটেলাইট চিত্র দেখাচ্ছে, ১১০ বাই ৩০ ফুটের একটি কাঠামো ঠিক মাঝখান থেকে দুভাগে বিভক্ত হয়ে গেছে। এই ভবনের ঠিক পাশে থাকা একটি ছোট কাঠামোর ছাদও মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ভারতের দাবি, এখানে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত সন্ত্রাসীরা ২০২৩ সালে পুঞ্চে এবং গত বছর তীর্থযাত্রীদের বাসে হামলা চালিয়েছিল। এই ক্যাম্প ২০২২ সালের আগস্ট থেকে সেপ্টেম্বরের মধ্যে নির্মিত হয়েছিল।

সেনাবাহিনী সূত্রে জানা গেছে, এই প্রশিক্ষণকেন্দ্র ছিল লস্কর-ই-তাইয়েবার একটি সুপ্রতিষ্ঠিত প্রশিক্ষণকেন্দ্র, যেখানে আত্মঘাতী বোমারুসহ বিপুলসংখ্যক সন্ত্রাসী উন্নত যুদ্ধের প্রশিক্ষণ নিচ্ছিল। আবাসিক সুবিধাসম্পন্ন এই স্থানে ৩০-৫০ জন সন্ত্রাসী ও তাদের প্রশিক্ষকেরা থাকতেন। সাম্প্রতিক বছরগুলোয় পুঞ্চ এবং রাজৌরি অঞ্চলে সন্ত্রাসবাদ পুনরুজ্জীবিত করার চেষ্টাকারী সন্ত্রাসীরা এটি ব্যবহার করত। সেনাবাহিনী সূত্রে আরও জানা গেছে, এই প্রশিক্ষণকেন্দ্র একাধিক সন্ত্রাসী গোষ্ঠী সক্রিয়ভাবে ব্যবহার করছিল। এটি পাকিস্তানি সন্ত্রাসী সংগঠনগুলোর জন্য গেরিলা যুদ্ধ, বেঁচে থাকার কৌশল এবং অস্ত্র প্রশিক্ষণের একটি সুপরিচিত কেন্দ্র ছিল।

২০১৯ সালে ভারতের বালাকোট হামলার পর ক্যাম্পটি সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল, তবে ২০২০ সালে এটি সন্ত্রাসীদের জন্য আবার প্রশিক্ষণ কার্যক্রম শুরু করেছে বলে জানা গেছে।

লেফটেন্যান্ট জেনারেল ডি এস হুদা (অব.) ২০১৬ সালে ভারতীয় সেনাবাহিনী কর্তৃক পাকিস্তানে পরিচালিত ‘সার্জিক্যাল স্ট্রাইক’ চালানোর সময় ভারতের নর্দান আর্মি কমান্ডার ছিলেন। জেনারেল ডি এস হুদা বলেন, ‘অপারেশন সিঁদুরের সময় আমাদের মনোযোগ ছিল মুরিদকে, বাহাওয়ালপুর এবং পাকিস্তানি বিমানঘাঁটিগুলোর দিকে। তবে পাকিস্তান-নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের সন্ত্রাসী স্থাপনাগুলোতে চালানো হামলাও সমান গুরুত্বপূর্ণ ছিল।’ তিনি আরও বলেন, ‘এই ক্যাম্পগুলো থেকেই সন্ত্রাসীরা অনুপ্রবেশের রুটগুলো সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করে এবং ভারতীয় ভূখণ্ডে প্রবেশের আগে চূড়ান্ত প্রশিক্ষণ ও পরিকল্পনা করে। এই অবকাঠামো ধ্বংসের ফলে সন্ত্রাসীদের মনোবল এবং জম্মু ও কাশ্মীর উভয় অঞ্চলে হামলা চালানোর ক্ষমতায় তাৎক্ষণিক প্রভাব পড়বে।’

প্রসঙ্গত, ভারত ৭ মে অপারেশন সিঁদুর শুরু করে। এই অভিযানের অংশ হিসেবে ভারত লস্কর-ই-তাইয়েবা, জইশ-ই-মুহাম্মদ এবং হিজবুল মুজাহিদিনের মতো সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলোর সঙ্গে নয়টি অবকাঠামোতে আঘাত হানে। হামলাগুলো ওই দিন রাত ১টা ৫ থেকে ১টা ৩০-এর মধ্যে হয়েছিল।

লক্ষ্যবস্তুগুলোর মধ্যে চারটি ছিল পাকিস্তানে—বাহাওয়ালপুর, মুরিদকে, শিয়ালকোট এবং শাকার গড়ের কাছাকাছি একটি গ্রাম। বাকি পাঁচটি লক্ষ্যবস্তু ছিল পাকিস্তান-নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের মুজাফফরাবাদ, কোটলি, ভিম্বর, রাওয়ালকোট ও চাকসওয়ারি। ধারণা করা হচ্ছে, এই হামলায় শতাধিক সন্ত্রাসী নিহত হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

গাজায় শিগগির ২০ হাজার সদস্যের আন্তর্জাতিক বাহিনী মোতায়েন, থাকছে কোন কোন দেশ

‘জাহানারা মুখ খুলেছে, জুনিয়ররা অ্যাবিউজ হলে কি মুখ খুলতে পারবে’

চট্টগ্রামে বিএনপি প্রার্থীর গণসংযোগে গুলিতে বাবলা নিহতের ঘটনায় দুজন গ্রেপ্তার

উচ্চতা ‘কম’ বলে ডেটিং অ্যাপে মামদানিকে প্রত্যাখ্যান করেছিলেন, এখন আফসোস হচ্ছে

সুদান যুদ্ধে আমিরাতের বিপরীতে মিসর-তুরস্কের বিরল ঐক্য, ঢুকছে অস্ত্র ও ড্রোনচালক

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ডায়াবেটিস, স্থূলতা ও হৃদ্‌রোগ থাকলে বাতিল হতে পারে মার্কিন ভিসার আবেদন

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ০৮ নভেম্বর ২০২৫, ০০: ৩৪
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসের জন্য ভিসাপ্রার্থীদের মধ্যে যাঁদের ডায়াবেটিস বা স্থূলতার মতো স্বাস্থ্য সমস্যা আছে, তাঁদের আবেদন বাতিল হতে পারে—এমন একটি নির্দেশনা জারি করেছে ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন। গতকাল বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর (স্টেট ডিপার্টমেন্ট) নতুন এ নির্দেশিকা জারি করে, যেখানে বলা হয়েছে, এ ধরনের স্বাস্থ্য সমস্যায় আক্রান্ত আবেদনকারীরা যুক্তরাষ্ট্রের জন্য ‘পাবলিক চার্জ’ বা অর্থনৈতিকভাবে বোঝা হয়ে উঠতে পারেন এবং রাষ্ট্রীয় সম্পদ ক্ষয় করতে পারেন। তাই যুক্তরাষ্ট্রে আসার আগে এসব বিষয় যাচাই করতে হবে।

ওয়াশিংটনভিত্তিক সংবাদমাধ্যম কেএফএফ হেলথ নিউজের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এ নির্দেশনা মার্কিন দূতাবাস ও কনস্যুলেটগুলোতে নোটিশ আকারে পাঠানো হয়েছে।

এর আগে মার্কিন ভিসাপ্রক্রিয়ায় সংক্রামক রোগ, টিকাদানের ইতিহাস, মানসিক অবস্থা ও শারীরিক সুস্থতার মতো বিষয়গুলোই বিবেচনায় নেওয়া হতো। তবে নতুন এই নীতিমালায় আরও কিছু স্বাস্থ্য সমস্যাকে যুক্ত করা হয়েছে।

নির্দেশনায় বলা হয়েছে, আবেদনকারীর স্বাস্থ্য বিবেচনা করতে হবে। কিছু রোগের (যেমন হৃদ্‌রোগ, শ্বাসযন্ত্র, ক্যানসার, ডায়াবেটিস, মেটাবলিক, স্নায়বিক ও মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা) চিকিৎসার জন্য কয়েক লাখ ডলার পর্যন্ত খরচ হতে পারে। এ ক্ষেত্রে ভিসা কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, আবেদনকারী চিকিৎসা ব্যয় বহন করতে সক্ষম কি না, তা মূল্যায়ন করতে হবে।

অলাভজনক আইনি সহায়তা সংস্থা ক্যাথলিক লিগ্যাল ইমিগ্রেশন নেটওয়ার্কের সিনিয়র অ্যাটর্নি চার্লস হুইলার বলেছেন, যদিও এ নির্দেশনা সব ধরনের ভিসার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য, তবে এটি মূলত স্থায়ী বসবাসের (পারমানেন্ট রেসিডেন্সি) আবেদনকারীদের ওপরই প্রয়োগ করা হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

হুইলার আরও বলেন, চিকিৎসাসংক্রান্ত বিষয়গুলো মূল্যায়নের ক্ষমতা ভিসা কর্মকর্তাদের ওপর ন্যস্ত করাটা উদ্বেগজনক। তাঁরা চিকিৎসক নন, এ ক্ষেত্রে তাঁদের কোনো অভিজ্ঞতা নেই আর তাঁদের নিজস্ব ধারণা বা পক্ষপাতের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নেওয়া অনুচিত।

স্টেট ডিপার্টমেন্টের নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, আবেদনকারীর কি আজীবন চিকিৎসার খরচ বহনের মতো পর্যাপ্ত আর্থিক সামর্থ্য আছে, যাতে তিনি সরকারি সহায়তা বা দীর্ঘমেয়াদি প্রতিষ্ঠানভিত্তিক সেবার প্রয়োজন ছাড়াই জীবন যাপন করতে পারেন? বিষয়টি অবশ্যই যাচাই করতে হবে।

নির্দেশনায় আরও বলা হয়েছে, আবেদনকারীর পরিবারের সদস্যদের স্বাস্থ্যের দিকও বিবেচনা করতে হবে। যেমন সন্তান বা প্রবীণ অভিভাবকের কোনো শারীরিক অক্ষমতা, দীর্ঘস্থায়ী রোগ বা বিশেষ যত্নের প্রয়োজন আছে কি না। নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, কোনো নির্ভরশীল সদস্যের (ডিপেনডেন্ট) এমন কোনো শারীরিক বা মানসিক অবস্থা আছে কি না, যার কারণে আবেদনকারীর কাজে কোনো প্রভাব পড়তে পারে?

জর্জটাউন বিশ্ববিদ্যালয়ের অভিবাসন আইনজীবী সোফিয়া জেনোভেস বলেন, এ নির্দেশিকায় আবেদনকারীদের চিকিৎসা ইতিহাসের ভিত্তিতে তাঁদের চিকিৎসা ব্যয়ের সম্ভাবনা ও যুক্তরাষ্ট্রে কর্মসংস্থানের সক্ষমতা যাচাই করতে ভিসা কর্মকর্তাদের উৎসাহিত করা হয়েছে; যাতে তাঁরা বুঝতে পারেন, যুক্তরাষ্ট্রে আসার আবেদনকারী এ ধরনের কোনো জটিলতায় না পড়েন।

সার্বিকভাবে, স্বাস্থ্য সমস্যায় আক্রান্ত আবেদনকারীরা যুক্তরাষ্ট্রে এসে যেন ‘পাবলিক চার্জ’ বা অর্থনৈতিকভাবে বোঝা হয়ে না ওঠেন, তা এড়াতে এই নতুন নিয়ম।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

গাজায় শিগগির ২০ হাজার সদস্যের আন্তর্জাতিক বাহিনী মোতায়েন, থাকছে কোন কোন দেশ

‘জাহানারা মুখ খুলেছে, জুনিয়ররা অ্যাবিউজ হলে কি মুখ খুলতে পারবে’

চট্টগ্রামে বিএনপি প্রার্থীর গণসংযোগে গুলিতে বাবলা নিহতের ঘটনায় দুজন গ্রেপ্তার

উচ্চতা ‘কম’ বলে ডেটিং অ্যাপে মামদানিকে প্রত্যাখ্যান করেছিলেন, এখন আফসোস হচ্ছে

সুদান যুদ্ধে আমিরাতের বিপরীতে মিসর-তুরস্কের বিরল ঐক্য, ঢুকছে অস্ত্র ও ড্রোনচালক

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বাংলাদেশ সীমান্তে সেনাসমাবেশ বাড়াচ্ছে ভারত, চিকেনস নেকের কাছে নতুন তিন গ্যারিসন

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের কাছে নতুন তিনটি সক্রিয় সেনাঘাঁটি স্থাপন করেছে ভারত। সিলিগুড়ি করিডর বা ‘চিকেনস নেক’ নামে পরিচিত এই অঞ্চল কৌশলগতভাবে ভারতের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ধারণা করা হচ্ছে, এর নিরাপত্তা বাড়াতেই এমন পদক্ষেপ নিয়েছে দেশটি।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আসাম-বাংলাদেশ সীমান্তের ধুবড়ির কাছে বামুনি, বিহারের কিশনগঞ্জ এবং পশ্চিমবঙ্গের চোপড়ায় এই তিন নতুন ঘাঁটি তৈরি করা হয়েছে। এই পদক্ষেপ ভারতের পূর্ব সীমান্তে প্রতিরক্ষা জোরদার করার বড় পরিকল্পনার অংশ, যার লক্ষ্য সীমান্তে নজরদারি বাড়ানো, ট্যাকটিক্যাল ঘাটতি পূরণ করা এবং দ্রুত প্রতিক্রিয়া জানানোর সক্ষমতা বৃদ্ধি করা।

উত্তরবঙ্গের ২২ কিলোমিটার প্রশস্ত সিলিগুড়ি করিডর ভারতের মূল ভূখণ্ডকে সাতটি উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যের সঙ্গে যুক্ত করে। এই অঞ্চল চারদিক থেকে নেপাল, ভুটান, বাংলাদেশ ও চীনের ঘেরা।

চিকেনস নেককে অনেকে ভারতের দুর্বল অংশ মনে করলেও ভারতীয় সেনাবাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা একে দেশের ‘সবচেয়ে শক্তিশালী প্রতিরক্ষা করিডর’ বলে আখ্যা দিয়েছেন।

সংশ্লিষ্ট এক সেনা সূত্রের ভাষায়, ‘সিলিগুড়ি করিডর বহুস্তরীয় নিরাপত্তাবলয়ে সুরক্ষিত। নতুন ঘাঁটিগুলো আমাদের দ্রুত চলাচল, লজিস্টিকস এবং রিয়েল টাইম গোয়েন্দা তথ্য সংহত করার ক্ষমতা আরও বাড়াবে।’

এর আগে ভারতীয় সেনাপ্রধানও মন্তব্য করেছিলেন, ‘চিকেনস নেককে আমি দুর্বল অংশ হিসেবে দেখি না। এটি আমাদের সবচেয়ে শক্তিশালী অঞ্চল। কারণ, পশ্চিমবঙ্গ, সিকিম এবং উত্তর-পূর্বাঞ্চলে অবস্থানরত আমাদের সব বাহিনী এখানে একত্রে মোতায়েন করা যায়।’

জানা গেছে, সিলিগুড়ির কাছে সুখনায় অবস্থিত ত্রি-শক্তি কর্পস (৩৩-কর্পস) এই করিডরের প্রতিরক্ষা তদারক করে।

ইন্ডিয়া টুডের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আকাশপথে করিডরের নিরাপত্তা নিশ্চিত করছে পশ্চিমবঙ্গের হাশিমারা বিমানঘাঁটিতে মোতায়েন রাফাল যুদ্ধবিমান। এ ছাড়া মিগ সিরিজের বিমান এবং ব্রহ্মস ক্ষেপণাস্ত্র রেজিমেন্টও রয়েছে।

এ ছাড়া ভারত এই অঞ্চলে একটি উন্নত তিনস্তরের বিমান প্রতিরক্ষাব্যবস্থা স্থাপন করেছে, যেখানে রয়েছে রাশিয়া থেকে আনা এস-৪০০ সারফেস-টু-এয়ার ক্ষেপণাস্ত্র, ইসরায়েল ও ডিআরডিওর যৌথভাবে তৈরি এমআরএসএএম সিস্টেম এবং দেশীয় আকাশ ক্ষেপণাস্ত্রব্যবস্থা। এই তিনটি মিলেই পূর্ব ও উত্তর-পূর্ব দিক থেকে আসা বিমান ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলার বিরুদ্ধে পূর্ণাঙ্গ প্রতিরক্ষা কাভারেজ দেয়।

ইন্ডিয়া টুডের প্রতিবেদন অনুযায়ী, এই অঞ্চলে এস-৪০০ সিস্টেম মূলত চীন বা অন্য শত্রুপক্ষের বিমান অনুপ্রবেশ ঠেকানোর উদ্দেশ্যে স্থাপন করা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

গাজায় শিগগির ২০ হাজার সদস্যের আন্তর্জাতিক বাহিনী মোতায়েন, থাকছে কোন কোন দেশ

‘জাহানারা মুখ খুলেছে, জুনিয়ররা অ্যাবিউজ হলে কি মুখ খুলতে পারবে’

চট্টগ্রামে বিএনপি প্রার্থীর গণসংযোগে গুলিতে বাবলা নিহতের ঘটনায় দুজন গ্রেপ্তার

উচ্চতা ‘কম’ বলে ডেটিং অ্যাপে মামদানিকে প্রত্যাখ্যান করেছিলেন, এখন আফসোস হচ্ছে

সুদান যুদ্ধে আমিরাতের বিপরীতে মিসর-তুরস্কের বিরল ঐক্য, ঢুকছে অস্ত্র ও ড্রোনচালক

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ভারতে ‘বন্দে মাতরম’ নিয়ে আবারও বিতর্ক—বাদ দেওয়া হয়েছিল স্তবক, কিন্তু কেন

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ০৭ নভেম্বর ২০২৫, ২৩: ৫১
‘বন্দে মাতরম’ কবিতাটি লিখেছিলেন বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়। ছবি: সংগৃহীত
‘বন্দে মাতরম’ কবিতাটি লিখেছিলেন বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়। ছবি: সংগৃহীত

ভারতীয় প্রজাতন্ত্রের জাতীয় সংগীত নিয়ে বিতর্ক আবারও সামনে এসেছে। আজ শুক্রবার (৭ নভেম্বর) ‘বন্দে মাতরম’ শিরোনামে এই সংগীত রচনার ১৫০ বছর পূর্তি ছিল। এই উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি পুরো কবিতাটি পাঠ করেন এবং অভিযোগ করেন, বর্তমান বিরোধী দল কংগ্রেস কবিতাটিকে অতীতে ‘ছিন্নভিন্ন’ করেছে।

১৮৭৫ সালের ৭ নভেম্বর বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় লিখেছিলেন ‘বন্দে মাতরম’ কবিতাটি। এটি পরে তাঁর ‘আনন্দমঠ’ (১৮৮২) উপন্যাসে প্রকাশিত হয়। ছয় স্তবকের এই কবিতা একসময় ভারতীয় স্বাধীনতাসংগ্রামের অনুপ্রেরণার প্রতীক হয়ে ওঠে। কবিতাটিতে মাতৃভূমিকে এক দেবীরূপে কল্পনা করা হয়েছে—যিনি একই সঙ্গে স্নেহময়ী ও দুর্জয়। বঙ্কিমচন্দ্র শেষের স্তবকগুলোয় ভারতমাতাকে দুর্গা, লক্ষ্মী ও সরস্বতী রূপে উল্লেখ করেছিলেন।

এদিকে ১৯৩৭ সালে কংগ্রেস দলের একটি অধিবেশনে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়—জাতীয় অনুষ্ঠানে শুধু প্রথম দুটি স্তবক গাওয়া হবে। কারণ, অন্য স্তবকগুলোতে হিন্দু দেবীদের সরাসরি উল্লেখ কিছু মুসলিম প্রতিনিধির কাছে ‘বর্জনমূলক’ মনে হয়েছিল। সেই সময় দলের নেতা জওহরলাল নেহরু নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুকে চিঠি লিখে জানান—পুরো কবিতাটি সুপাঠ্য হলেও এর কিছু অংশ মুসলিম সমাজে অস্বস্তি সৃষ্টি করছে। তাই আপাতত কেবল প্রথম দুটি স্তবকই জাতীয় সংগীত হিসেবে গাওয়া উচিত বলে তিনি মত দেন।

আজ দেশটির সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কংগ্রেসের এই সিদ্ধান্তকেই আজ বিজেপি ‘বিভাজনের বীজ বপন’ বলে সমালোচনা করছে। প্রধানমন্ত্রী মোদির দাবি, কংগ্রেস রাজনৈতিক সুবিধার জন্য জাতীয় ঐক্যকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। অন্যদিকে কংগ্রেসের সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে পাল্টা মন্তব্যে বলেছেন, যারা আজ জাতীয়তাবাদের রক্ষক সেজেছে—আরএসএস ও বিজেপি—বন্দে মাতরম তারা কখনোই গায়নি।

বিতর্ক আরও তীব্র হয়, যখন নেহরু ও নেতাজির মধ্যে ১৯৩৭ সালে আদান-প্রদান হওয়া চিঠি প্রকাশ করে বিজেপি। সেই পত্রে নেহরু স্বীকার করেন, কিছু মুসলিমের আপত্তির ক্ষেত্রে যুক্তি থাকতে পারে।

প্রায় ৯০ বছর পর কংগ্রেসের সেই সিদ্ধান্ত ভারতের রাজনীতিতে নতুন করে উত্তেজনা সৃষ্টি করেছে। বিশেষ করে, পশ্চিমবঙ্গের আগামী নির্বাচনের প্রাক্কালে দেশপ্রেম ও মুসলিম তোষণ ইস্যুতে ‘বন্দে মাতরম’ আবারও রাজনৈতিক তরবারি হয়ে উঠেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

গাজায় শিগগির ২০ হাজার সদস্যের আন্তর্জাতিক বাহিনী মোতায়েন, থাকছে কোন কোন দেশ

‘জাহানারা মুখ খুলেছে, জুনিয়ররা অ্যাবিউজ হলে কি মুখ খুলতে পারবে’

চট্টগ্রামে বিএনপি প্রার্থীর গণসংযোগে গুলিতে বাবলা নিহতের ঘটনায় দুজন গ্রেপ্তার

উচ্চতা ‘কম’ বলে ডেটিং অ্যাপে মামদানিকে প্রত্যাখ্যান করেছিলেন, এখন আফসোস হচ্ছে

সুদান যুদ্ধে আমিরাতের বিপরীতে মিসর-তুরস্কের বিরল ঐক্য, ঢুকছে অস্ত্র ও ড্রোনচালক

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট শারার ওপর জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার, সোমবার হোয়াইট হাউসে বৈঠক

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট আল-শারার সঙ্গে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি সংগৃহীত
সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট আল-শারার সঙ্গে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি সংগৃহীত

সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট আহমদ আল-শারার ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে নিয়েছে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ। আগামী সোমবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে হোয়াইট হাউসে বৈঠকের ঠিক আগে গতকাল বৃহস্পতিবার এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের খসড়া করা এই প্রস্তাবে সিরিয়ার অভ্যন্তরীণ মন্ত্রী আনাস খাত্তাবের ওপর থেকেও নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হয়েছে। ১৫ সদস্যের নিরাপত্তা পরিষদে প্রস্তাবটির পক্ষে ১৪টি ভোট পড়ে, তবে চীন ভোটদানে বিরত ছিল।

ওয়াশিংটন কয়েক মাস ধরে ১৫ সদস্যের নিরাপত্তা পরিষদকে সিরিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা শিথিল করার জন্য তাগিদ দিচ্ছিল। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প গত মে মাসে যখন সিরিয়ার ওপর থেকে মার্কিন নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার ঘোষণা দেন, তখনই যুক্তরাষ্ট্রের নীতিতে একটি বড় পরিবর্তন আসে।

গতকাল বৃহস্পতিবার ওয়াশিংটনে ট্রাম্প সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমি মনে করি, শারা দারুণ কাজ করছেন। অঞ্চলটি কঠিন, তিনিও কঠিন প্রকৃতির মানুষ, কিন্তু তাঁর সঙ্গে আমার খুব ভালো সম্পর্ক গড়ে উঠেছে। আমরা সিরিয়া নিয়ে অনেক দূর এগিয়েছি।’

ট্রাম্প আরও বলেন, ‘আমরা সিরিয়ার ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়েছি, যাতে তারা নিজেদের ভবিষ্যতের জন্য নতুনভাবে লড়াইয়ের সুযোগ পায়।’

১৩ বছরের বিধ্বংসী গৃহযুদ্ধের পর গত ডিসেম্বরে সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ বিদ্রোহী জোটের আকস্মিক হামলায় ক্ষমতাচ্যুত হন। ইসলামপন্থী সংগঠন হায়াত তাহরির আল-শাম (এইচটিএস) নেতৃত্ব দেয় সেই হামলায়।

এইচটিএস একসময় আল-কায়েদার সিরীয় শাখা নুসরা ফ্রন্ট নামে পরিচিত ছিল। ২০১৬ সালে তারা আনুষ্ঠানিকভাবে আল-কায়েদার সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করে। ২০১৪ সালের মে মাস থেকে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের আল-কায়েদা ও আইএস-সম্পর্কিত নিষেধাজ্ঞার তালিকায় রয়েছে এই সংগঠন।

এইচটিএসের একাধিক সদস্যের ওপর জাতিসংঘের ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা, সম্পদ জব্দ এবং অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা বহাল রয়েছে। তবে এবার প্রেসিডেন্ট শারা ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী খাত্তাবের বিরুদ্ধে সেই নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হলো।

জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞা বিষয়ে পর্যবেক্ষকেরা জানিয়েছেন, চলতি বছর আল-কায়েদা ও এইচটিএসের মধ্যে কোনো সক্রিয় সম্পর্কের প্রমাণ পাওয়া যায়নি। বিষয়টি নিয়ে জুলাইয়ে রয়টার্সের হাতে আসা জাতিসংঘের এক প্রতিবেদনেও এমন তথ্যের উল্লেখ ছিল।

নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাবে ভোটদানে বিরত থাকে চীন। জাতিসংঘে নিযুক্ত দেশটির রাষ্ট্রদূত ফু কং বলেন, ‘খসড়া প্রস্তাবটিতে সিরিয়ার সন্ত্রাসবিরোধী ও নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে আমাদের উদ্বেগ যথাযথভাবে বিবেচনায় নেওয়া হয়নি।’

চীন দীর্ঘদিন ধরে সিরিয়ায় ইস্টার্ন তুর্কিস্তান ইসলামিক মুভমেন্টের (ইটিআইএম) কর্মকাণ্ড নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে আসছে। এই সংগঠনে চীন ও মধ্য এশিয়া থেকে আসা উইঘুর যোদ্ধারা যুক্ত রয়েছে।

তবে নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাবে ভোট দিয়েছে রাশিয়া। দেশটির জাতিসংঘে নিযুক্ত রাষ্ট্রদূত ভাসিলি নেবেনজিয়া বলেন, মস্কো এই সংক্ষিপ্ত প্রস্তাবকে সমর্থন করেছে; কারণ, এটি ‘সিরীয় জনগণের নিজস্ব স্বার্থ ও আকাঙ্ক্ষাকে প্রতিফলিত করে।’

গৃহযুদ্ধ চলাকালীন রাশিয়া বারবার জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে সিরিয়ার আসাদ সরকারের পক্ষে ভেটো দেয়। এ সময় চীনও রাশিয়ার পাশে ছিল। প্রসঙ্গত, যুদ্ধকালীন সিরিয়া ইস্যুতে রাজনৈতিক, মানবিক ও রাসায়নিক অস্ত্রবিষয়ক আলোচনার জন্য পরিষদ মাসে একাধিকবার বৈঠকে বসত।

এদিকে, দীর্ঘ বিভাজনের পর নিরাপত্তা পরিষদের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে সিরিয়ার জাতিসংঘ প্রতিনিধি ইব্রাহিম ওলাবি। তিনি বলেন, ‘এটি সিরিয়ার নারী-পুরুষদের জন্য মাতৃভূমি পুনর্গঠন এবং জীবন পুনঃস্থাপনে আশার সঞ্চার করবে।’

ইব্রাহিম ওলাবি আরও বলেন, ‘নতুন সিরিয়া হবে এক সাফল্যের গল্প। এটি প্রমাণ করবে যে আন্তর্জাতিক সম্পর্কের সর্বোত্তম পথ হলো ইতিবাচক সম্পৃক্ততা ও গঠনমূলক সহযোগিতা। যদি কারও কোনো উদ্বেগ থাকে, সিরিয়া তা সমাধানে সদিচ্ছাসহ পারস্পরিক সম্মানের ভিত্তিতে কাজ করতে প্রস্তুত।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

গাজায় শিগগির ২০ হাজার সদস্যের আন্তর্জাতিক বাহিনী মোতায়েন, থাকছে কোন কোন দেশ

‘জাহানারা মুখ খুলেছে, জুনিয়ররা অ্যাবিউজ হলে কি মুখ খুলতে পারবে’

চট্টগ্রামে বিএনপি প্রার্থীর গণসংযোগে গুলিতে বাবলা নিহতের ঘটনায় দুজন গ্রেপ্তার

উচ্চতা ‘কম’ বলে ডেটিং অ্যাপে মামদানিকে প্রত্যাখ্যান করেছিলেন, এখন আফসোস হচ্ছে

সুদান যুদ্ধে আমিরাতের বিপরীতে মিসর-তুরস্কের বিরল ঐক্য, ঢুকছে অস্ত্র ও ড্রোনচালক

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত