Ajker Patrika

বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় রাগাসার আঘাতে বিপর্যস্ত চীন, তাইওয়ানে নিহত ১৫

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
তাইওয়ানের হুয়ালিয়েন কাউন্টিতে প্রবল পানির তোড়ে ভেসে যান অনেকে। ছবি: এএফপি
তাইওয়ানের হুয়ালিয়েন কাউন্টিতে প্রবল পানির তোড়ে ভেসে যান অনেকে। ছবি: এএফপি

এখন পর্যন্ত বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী ক্রান্তীয় ঘূর্ণিঝড় রাগাসা এবার তাণ্ডব চালাল পূর্ব এশিয়ায়। স্থানীয় সময় আজ বুধবার ভোরে এটি দক্ষিণ চীন উপকূলে আছড়ে পড়ে। এর আগে, এই ঘূর্ণিঝড়ের তাণ্ডবে তাইওয়ানে অন্তত ১৫ জন প্রাণ হারান। দ্বীপটির হুয়ালিয়েন কাউন্টিতে এখনো ১৭ জন নিখোঁজ। এই ঝড়ের তাণ্ডবে পড়েছিল হংকংও।

বার্তা সংস্থা রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছে, তাইওয়ানের পূর্বাঞ্চলীয় হুয়ালিয়েন কাউন্টিতে জলোচ্ছ্বাস ও বৃষ্টিপাতের কারণে একটি পাহাড়ি বাঁধ উপচে পড়ে। পানির ঢলে ভাটিতে থাকা শহর ভেসে যায়। এর পর থেকে ১৭ জনের খোঁজ মিলছে না। গত সোমবার থেকে রাগাসার প্রভাবে তাইওয়ানজুড়ে টানা বৃষ্টি ঝরাচ্ছে।

স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, কর্তৃপক্ষ সময়মতো সতর্কবার্তা দেয়নি। সাধারণত ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা থেকে দ্রুত মানুষ সরিয়ে নিতে তাইওয়ান সরকার সুপরিচিত হলেও এবার সে উদ্যোগ দেরিতে নেওয়া হয়।

এদিকে, তাইওয়ানে বৃষ্টি ঝরতে থাকলেও হংকংয়ে দেখা দেয় বিশাল ঢেউ। শহরের পূর্ব ও দক্ষিণ উপকূলে রাস্তা ও ফুটপাত প্লাবিত হয়। অনেক আবাসিক এলাকায় পানি ঢুকে পড়ে। দক্ষিণ হংকংয়ের নামকরা ফুলারটন হোটেলের কাচের দরজা ভেঙে ভেতরে ঢুকে পড়ে সমুদ্রের পানি। ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লেও হোটেল কর্তৃপক্ষ কোনো মন্তব্য করেনি।

হংকংয়ের হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, অন্তত ৫০ জন আহত হয়েছেন। শহরজুড়ে ৫০টি অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে, যেখানে ৭৯১ জন আশ্রয় নিয়েছেন। হংকংয়ের উপকূলে ঘূর্ণিঝড় কেমন হয়, তা দেখতে গিয়ে এক নারী ও তাঁর পাঁচ বছরের ছেলে সমুদ্রে ভেসে যান। পরে তাঁদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া হয়। দুজনই এখন আইসিইউতে।

চীনের সমুদ্র কর্তৃপক্ষ এ বছর প্রথমবারের মতো সর্বোচ্চ লাল সতর্কবার্তা জারি করেছে। গাংদং প্রদেশে জলোচ্ছ্বাসের উচ্চতা ২ দশমিক ৮ মিটার পর্যন্ত হতে পারে। পার্ল রিভার ডেল্টার জনবহুল অঞ্চলের দিকে ধেয়ে আসায় আতঙ্ক আরও বেড়েছে।

গত সপ্তাহে পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগরে সৃষ্টি হয় ঘূর্ণিঝড় রাগাসা। উষ্ণ সমুদ্রের পানি আর অনুকূল আবহাওয়ার কারণে দ্রুত শক্তি সঞ্চয় করে গত সোমবার এটি ঘণ্টায় ২৬০ কিলোমিটার বেগের বাতাস নিয়ে ক্যাটাগরি-৫ সুপার টাইফুনে পরিণত হয়। পরে দুর্বল হলেও বুধবার দক্ষিণ চীনে আছড়ে পড়ার সময় এটি ক্যাটাগরি–৩ পর্যায়ের ছিল। তবে তাতেই গাছ ও বিদ্যুতের খুঁটি উপড়ে পড়েছে, জানালা ভেঙেছে, ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে অনেক ভবন।

ইকোনমিস্ট ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের জলবায়ু ও জ্বালানি বিশেষজ্ঞ চিম লি বলেন, ‘হাটো (২০১৭) আর মাংখুত (২০১৮) থেকে শিক্ষা নিয়েছে চীনা কর্তৃপক্ষ। পার্ল রিভার ডেল্টা এখন টাইফুনের জন্য সবচেয়ে প্রস্তুত অঞ্চলের একটি। বড় কোনো বিপর্যয়ের শঙ্কা নেই। এ বছর হংকং স্টক মার্কেট টাইফুনের মধ্যেও খোলা ছিল। এটি অবকাঠামোগত স্থিতিশীলতা প্রমাণ করে।’

চীনের জরুরি ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, মঙ্গলবারই গাংদং প্রদেশে পাঠানো হয়েছে হাজার হাজার তাঁবু, ভাঁজযোগ্য খাট, জরুরি লাইটসহ ত্রাণসামগ্রী। এ ছাড়া ৭ লাখ ৭০ হাজার মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।

স্থানীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে, অনেক ভাড়ায় বড় ট্রাক এনে দোকানপাটের সামনে দাঁড় করিয়েছে, যাতে ঝড়ের আঘাত ঠেকানো যায়।

শেনজেনের বাসিন্দা লিয়াং বলেন, ‘আমরা ওপরের ফ্লোরে থাকি। তাই মনে হয়েছে তেমন ঝুঁকি নেই। তাই বাচ্চাদের নিয়ে বের হয়েছি ঝড়-বৃষ্টি উপভোগ করতে। খোলা রাস্তায় হেঁটেছি, তবে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রেখেছি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ড. ইউনূসের সফরসঙ্গী হয়েও ফখরুল–আখতাররা ভিভিআইপি সুবিধা পাননি কেন—জানাল প্রেস উইং

স্পিকারের বাসভবনই হবে প্রধানমন্ত্রীর অস্থায়ী আবাস

আ.লীগের ঝটিকা মিছিল: মানিকগঞ্জের প্যানেল মেয়র আরশেদ আলীসহ চারজন কারাগারে

ঘরে সদ্য বিবাহিত বিক্রয় প্রতিনিধির লাশ, চিরকুটে লেখা ‘জীবন খুবই কঠিন’

জাতীয় সংসদ নির্বাচন: আলোচনায় আসনের ভাগ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত