Ajker Patrika

কাবুল বিস্ফোরণ: ১৩ মার্কিন সেনাসহ নিহত কমপক্ষে ১১০

আপডেট : ২৭ আগস্ট ২০২১, ১৭: ১১
কাবুল বিস্ফোরণ: ১৩ মার্কিন সেনাসহ  নিহত কমপক্ষে ১১০

কাবুল বিমানবন্দরের বাইরে জোড়া বিস্ফোরণে কমপক্ষে ১১০ জনের মৃত্যু হয়েছে। নিহতদের মধ্যে ১৩ মার্কিন সেনাও রয়েছেন। 

আফগানিস্তানে আল জাজিরার প্রতিনিধিদের একটি দল ঘটনাস্থলে অবস্থান করছে। তাঁরা হতাহতের এই পরিসংখ্যান দিয়েছেন।

তালেবান কাবুল দখলের পর আফগানিস্তান ছাড়তে মরিয়া মার্কিন নাগরিক ও আফগান সহযোগীদের নিরাপত্তায় বিমানবন্দর এলাকায় কাজ করছিলেন যুক্তরাষ্ট্র সেনাবাহিনীর সদস্যরা।

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বিমানবন্দরের গেটের সামনে শরণার্থীদের ভিড়ের মধ্যে এবং পার্শ্ববর্তী ব্যারন হোটেলের সামনে বিস্ফোরণ ঘটে। এ কারণে হতাহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

আল জাজিরার সাংবাদিক চার্লস স্ট্র্যাটফোর্ড জানিয়েছেন, উদ্ধার তৎপরতা আবার শুরু হয়েছে। বেশ কয়েকটি উড়োজাহাজ এরই মধ্যে বিমানবন্দর ত্যাগ করেছে। গতকালের পর বিমানবন্দরে লোক সমাগম অনেক বেড়েছে। বাকি কয়েকটি বিমানে ওঠার জন্য হাজার হাজার মানুষ দেয়াল টপকে ভেতরে ঢোকার চেষ্টা করছেন। 

গতকালের হামলার দায় স্বীকার করেছে আইএসআইএল বা আইএসআইএসের আফগানিস্তান শাখা। এরা মূলত খোরাসান প্রদেশ ভিত্তিক তৎপরতা চালাচ্ছে। মার্কিন সেনাবাহিনীর সহযোগী এবং অনুবাদক হিসেবে যারা কাজ করেছিল তাদের বিনাশ করার উদ্দেশ্যেই এই আত্মঘাতী হামলা ছিল বলে জানিয়েছে জঙ্গিগোষ্ঠীটি।


তালেবানের কেউ হতাহত হয়নি জানিয়েছেন যাবিউল্লাহ মুজাহিদ   

তালেবানের কেউ হতাহত হয়নি, গোষ্ঠীর মুখপাত্র যাবিউল্লাহ মুজাহিদ বিবিসির পশতু সার্ভিসকে এ কথা বলেছেন। 

মুজাহিদ বলেন, 'আমাদের (তালেবান) কেউ হতাহত হয়নি। ঘটনাটি যেখানে ঘটেছে সে এলাকা মার্কিন বাহিনী নিয়ন্ত্রিত।' 

মুজাহিদের এই বক্তব্য রয়টার্সের আগের একটি প্রতিবেদনের সঙ্গে সরাসরি বিপরীত। রয়টার্স নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক তালেবান কর্মকর্তার বরাত দিয়ে বলেছে এই হামলায় তালেবানের ২৮ জন সদস্য নিহত হয়েছে।


বিস্ফোরণ সত্ত্বেও যুক্তরাজ্য তাদের অভিযান অব্যাহত রাখবে  

প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন বলেছেন, বৃহস্পতিবার কাবুল বিমানবন্দরে 'নিন্দনীয়' হামলা সত্ত্বেও আফগানিস্তান থেকে মানুষকে সরিয়ে নেওয়ার জন্য যুক্তরাজ্য তাদের অভিযান অব্যাহত রাখবে।  

বিস্ফোরণের পর প্রধানমন্ত্রী একটি জরুরি সভা করেন, এরপর তিনি প্রতিশ্রুতি দেন যে যুক্তরাজ্য শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে যাবে।

যুক্তরাজ্যের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের  তথ্যমতে, বিস্ফোরণে যুক্তরাজ্যের কোনো সামরিক বা সরকারি কেউ হতাহত হননি


ফুটবলার এবং ক্রীড়াবিদদের সরিয়ে নেওয়া 'জটিল'  

বিশ্ব ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থা ফিফা বলেছে, আফগানিস্তান থেকে ফুটবলার এবং অন্যান্য ক্রীড়াবিদদের সরিয়ে নেওয়ার জন্য তারা আলোচনা করছে। কিন্তু এটি 'অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং'।  

গত সপ্তাহে আফগান জাতীয় দলের একজন খেলোয়াড় জাকি আনওয়ারি মার্কিন সামরিক বিমান থেকে পড়ে মারা যান। তালেবান দখলের পর তিনি কাবুল থেকে পালানোর চেষ্টা করছিলেন।

তালেবান শাসনের অধীনে ক্রীড়াবিদরা তাদের নিরাপত্তার আশঙ্কা প্রকাশ করার পর অস্ট্রেলিয়া সরকার মঙ্গলবার ৫০ জন নারী ক্রীড়াবিদকে সরিয়ে নেয়। 


 

অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন

 

বিস্ফোরণের আগেই অস্ট্রেলিয়ার সেনাদের সরিয়ে নেওয়া হয়  

গত ১৫ আগস্ট আফগানিস্তানের ক্ষমতা দখলে নেয় তালেবান। এরপর থেকেই দেশত্যাগ করতে কাবুল বিমানবন্দরে উপচে পরা ভিড় লক্ষ্য করা যায়। আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে চলে আসে কাবুল বিমানবন্দর। বিভিন্ন দেশের পক্ষ থেকে কাবুল বিমানবন্দরে হামলার আশঙ্কা করা হয়। এরপরেও থামানো যায়নি জনস্রোত। জীবনের ঝুঁকি নিয়েই দেশত্যাগ করতে কাবুল বিমানবন্দরে ভিড় করতে থাকে মানুষ। 

গতকাল বৃহস্পতিবার আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলের হামিদ কারজাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাছে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এতে এখনো পর্যন্ত ৯০ জন নিহতের খবর পাওয়া গেছে। 

আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গতকাল বৃহস্পতিবার কাবুল বিমানবন্দরে বিস্ফোরণের আগেই হামলার বিষয়ে সুস্পষ্ট তথ্য থাকায় সেনাদের সরিয়ে নিয়েছিল অস্ট্রেলিয়া। কাবুল থেকে সেনাদের সরিয়ে নেওয়ার কাজ শেষ করেছে দেশটি। আজ শুক্রবার দেশটির প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন এ কথা জানান। 

সংবাদ সম্মেলনে স্কট মরিসন বলেন, আমরা রাতের মধ্যেই অবশিষ্ট সেনাদের কাবুল থেকে ফিরিয়ে আনতে সক্ষম হই। কাবুল বিমানবন্দরের বাইরে ভয়াবহ বিস্ফোরণের অনেকক্ষণ আগেই আমরা আমাদের সেনাদের সরিয়ে নেই। 

অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, তালেবান ক্ষমতা দখলের পর কাবুল থেকে নাগরিকদের ফিরিয়ে আনতে মার্কিন এবং ব্রিটিশ সেনাবাহিনী সহযোগিতা করেছে। তাঁদের সহযোগিতায় আমরা ৪ হাজার ১০০ জনকে ফিরিয়ে আনতে সক্ষম হই। এর মধ্যে অস্ট্রেলিয়ার ভিসাধারী ৩ হাজার ২০০ জন আফগান নাগরিকও ছিল।


যুক্তরাষ্ট্রের চেয়ে আমরা বেশি মানুষ হারিয়েছি বলেছে তালেবান

কাবুল বিমানবন্দরে বোমা হামলায় তালেবানের কমপক্ষে ২৮ জন সদস্য নিহত হয়েছেন বলে একজন কর্মকর্তা বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে জানিয়েছে।   

নাম প্রকাশ না করে তালেবানের ওই কর্মকর্তা বলেন, 'আমরা যুক্তরাষ্ট্রের চেয়ে বেশি লোককে হারিয়েছি।'  

এই পরিস্থিতিতে তিনি বলেন, সেনা প্রত্যাহার ও জনগণকে সরানো সম্পন্ন করার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের সময়সীমা বাড়ানোর প্রয়োজন নেই।  

বৃহস্পতিবার রাতে কাবুল বিমানবন্দরের বাইরে দুটি বিস্ফোরণে কমপক্ষে ১৩ মার্কিন সেনাসহ ৯০ জন নিহত হয়েছেন। 

ইসলামিক স্টেট (আইএস) এই হামলার দায় শিকার করেছে।

 


জাস্টিন ট্রুডো

কানাডার প্রধানমন্ত্রী ট্রুডো আফগানিস্তানের হামলার নিন্দা জানিয়েছেন

কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো বৃহস্পতিবার কাবুলের হামিদ কারজাই বিমানবন্দরে হামলার নিন্দা জানিয়েছেন। 

ট্রুডো বলেন, 'এই জঘন্য হামলায় অনেক নিরীহ মানুষের জীবন কেড়ে নিয়েছে। আমরা নিহতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাচ্ছি এবং যারা আহত হয়েছেন তাদের সুস্থতা কামনা করছি।'

 


জো বাইডেন

'সময় এসেছে ২০ বছরের যুদ্ধ শেষ করার' 

প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, বৃহস্পতিবারের হামলার আগে ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে আফগানিস্তানে কোনো আমেরিকান যুদ্ধে হতাহত হয়নি। কারণ সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তালেবানের সঙ্গে চুক্তি করেছিল। 

হামলা না হওয়ার কারণ হিসেবে তিনি বলেছেন ১ মে আফগানিস্তান থেকে আমাদের বেরিয়ে আসার প্রতিশ্রুতি ছিল। 

ওই চুক্তির কারণে আমেরিকানরা হামলার শিকার হয়নি। 

মার্কিন প্রেসিডেন্ট তাঁর বক্তব্যের শেষে বলেন, 'সময় এসেছে ২০ বছরের যুদ্ধ শেষ করার।'


আমাদের তালেবানের 'স্বার্থের' ওপর নির্ভর করতে হবে বলেছেন বাইডেন 

মার্কিন সেনাবাহিনী কাবুল বিমানবন্দরের বাইরে নিরাপত্তা ব্যবস্থাপনায় তালেবানকে বিশ্বাস করে ভুল করেছে কিনা? এমন প্রশ্নের জবাবে বাইডেন বলেন, 'কেউ তাদের ওপর বিশ্বাস করে না। আমরা কেবল তাদের স্বার্থের ওপর নির্ভর করে কার্যক্রম তৈরি করতে থাকি।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট আরও বলেন, 'হামলাকারী কারা তা জানার প্রয়োজন আছে। আমরা তাদের খুঁজে পাব।' 


'আমেরিকা এই হামলা ভুলবে না'   

'আমরা ক্ষমা করবো না। আমরা ভুলব না।' 

হামলাকারীরা আফগানিস্তানের বিজয়ের সময় তালেবানদের দ্বারা খোলা কারাগার থেকে এসেছে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন বাইডেন। 

বাইডেন আইএসআইএস-কেও উল্লেখ করেছেন, যারা এই হামলার কৃতিত্ব নিয়েছে। 

তিনি বলেন, 'আমরা সন্ত্রাসীদের কর্মকাণ্ডে নিরাশ হব না। আমরা মিশন বন্ধ করব না। আমরা জনগণকে সরানোর অভিযান অব্যাহত রাখব।'


আফগানদের হত্যায় ক্ষুব্ধ বাইডেন 

জো বাইডেন বলেছেন, 'এই হামলায় যে আফগান পরিবারগুলো তাদের প্রিয়জনদের হারিয়েছে তাদের জন্য আমাদের হৃদয় ব্যথিত হয়েছে। 

মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, 'আমরা ক্ষুব্ধ হওয়ার পাশাপাশি ভারাক্রান্ত।' 


মার্কিন ভুক্তভোগীদের প্রশংসা করেছেন জো বাইডেন

মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, 'স্থল পরিস্থিতি এখনও বিকশিত হচ্ছে এবং আমি প্রতিনিয়ত খবর রাখছি।'  

তিনি সৈন্যদের প্রশংসা করে বলেছেন, 'অন্যের জীবন বাঁচানোর জন্য একটি বিপজ্জনক মিশনে নিযুক্ত ছিলেন তারা।'

জো বাইডেন


বিশ্ব নেতারা কাবুল হামলার প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন

বিশ্বব্যাপী রাজনীতিবিদরা কাবুল বিমানবন্দরে বোমা হামলার বিরুদ্ধে কথা বলছেন।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন শিগিগির কথা বলবেন। আমরা আপনাদের তাঁর প্রতিক্রিয়া জানাব।

ন্যাটো মহাসচিব জেনস স্টলটেনবার্গ ঘটনাটিকে 'ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলা' হিসেবে বর্ণনা করেছেন এবং বলেছেন যে 'যতটা সম্ভব মানুষকে নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া' অগ্রাধিকার হিসাবে রয়ে গেছে।

ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ একটি বিবৃতি বলেন 'চরম দৃঢ়তার সঙ্গে সন্ত্রাসী হামলা' হয়েছে। সেখানে যারা মানুষের নিরাপত্তা দিতে আছেন তাদের সম্মান জানান তিনি। 

যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডমিনিক রাব  বলেছেন 'সন্ত্রাসীদের কাপুরুষোচিত কাজ আমাদের থামতে দেবে না।' 

স্পেনের প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো সানচেজ বলেছেন, তার সরকার বিস্ফোরণে নিহতদের প্রতি 'আন্তরিক সংহতি' জানিয়েছেন। 

এ ঘটনায় কোনো ইতালীয় নাগরিক আহত হয়নি তা নিশ্চিত করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী লুইগি ডি মাইও বলেন, তিনি হামলার 'তীব্র নিন্দা' এবং সমবেদনা জানিয়েছেন।


আরেকটি বিস্ফোরণ, নিয়ন্ত্রণে জানাল তালেবান   

কাবুলের বাসিন্দারা গেল এক ঘণ্টার মধ্যে আরও একটি বড় বিস্ফোরণের শব্দ শুনেছেন।

বিবিসি'র আফগান প্রতিনিধি সেকান্দার কেরমানি বিস্ফোরণের কথা শুনেছেন বলে একটি টুইট করেছেন। 

তালেবানের মুখপাত্র যাবিউল্লাহ মুজাহিদ বলেছেন, বিস্ফোরণটি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে। শহরের বাসিন্দাদের চিন্তার কোন কারণ নেই। 


এক ঘণ্টার মধ্যে কথা বলবেন বাইডেন 

হোয়াইট হাউসের কর্মকর্তারা সাংবাদিকদের বলেছেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এক ঘণ্টার মধ্যে কাবুলের ঘটনা নিয়ে কথা বলবেন।


'সৈন্যরা চূড়ান্ত ত্যাগ স্বীকার করেছে'  

যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রসচিব ডমিনিক রাব ১২ জন সেনা সদস্যের মৃত্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন।

এক বিবৃতিতে রাব বলেন, 'অন্যদের নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য তারা চূড়ান্ত ত্যাগ স্বীকার করেছে। 

যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রসচিব বলেন, 'আমি নিহত বা আহত সকল আফগানদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাতে চাই।'


ইসলামিক স্টেট বোমা হামলার দায় স্বীকার করেছে

কাবুল বিমানবন্দরে হামলার দায় স্বীকার করেছে ইসলামিক স্টেট (আইএস) । 

তাদের নিউজ আউটলেটের টেলিগ্রাম চ্যানেলে পোস্ট করা একটি বার্তায় এই দাবি উঠে এসেছে।

মার্কিন প্রতিরক্ষা কর্মকর্তারাও বলেছেন যে তারা বিশ্বাস করেন যে বোমা হামলার পেছনে আইএস জড়িত। 

 


জেনারেল কেনেথ ম্যাকেনজি

বেসামরিক বিমান চলাচল বন্ধের কোন সময় নির্ধারণ করা হয়নি  

যুক্তরাষ্ট্র কখন তার সেনা প্রত্যাহার ও বেসামরিক নাগরিকদের সরিয়ে নেওয়া বন্ধ করবে জানতে চাইলে জেনারেল কেনেথ ম্যাকেনজি নির্দিষ্ট কোন তারিখ জানাননি। 

ম্যাকেনজি বলেন, আমাদের পরিকল্পনা হচ্ছে যে, আমরা যতজন লোককে সরিয়ে নেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছি, তার বেশি লোক সরিয়ে নেওয়া হোক। কিন্তু উভয়ের মধ্যে ভারসাম্য রক্ষা করতে হবে।


'এই হামলা অব্যাহত থাকতে পারে'  

জেনারেল ম্যাকেনজি বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র তালেবানদের সঙ্গে সমন্বয় করছে এবং এই হামলার জন্য আমরা যা যা করতে পারি তার সবই করছি।

ম্যাকেনজি এই হামলার জন্য ইসলামিক স্টেট গ্রুপকে দায়ী করেছেন। 

তিনি বলেন, 'আইসিসের হুমকি সম্পূর্ণ বাস্তব, আমরা ধারণা করি এই হামলা অব্যাহত থাকবে।'


যুক্তরাষ্ট্র আফগানিস্তানে 'মিশন' অব্যাহত রাখবে জানিয়েছে পেন্টাগন  

কাবুলের হামিদ কারজাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের বাইরে বৃহস্পতিবারের দুই আত্মঘাতী বোমা হামলায় ১২ জন মার্কিন সেনা সদস্যের মৃত্যুর ঘোষণা দিয়ে মার্কিন কেন্দ্রীয় কমান্ডের কমান্ডার জেনারেল কেনেথ ম্যাকেনজি জোর দিয়ে বলেন, আফগানিস্তানে যুক্তরাষ্ট্র তার ‘মিশন’ চালিয়ে যাবে। 

পেন্টাগনের সংবাদ সম্মেলনে ম্যাকেনজি  সাংবাদিকদের বলেন, 'আমাদের মিশন হল মার্কিন নাগরিক বা তৃতীয় দেশের নাগরিকদের, বিশেষ করে অভিবাসী ভিসাধারী, মার্কিন দূতাবাসের কর্মী এবং ঝুঁকিপূর্ণ আফগানদের সরিয়ে নেওয়া।

ম্যাকেনজি বলেন, প্রায় এক হাজার মার্কিন নাগরিক এখনো আফগানিস্তানে আছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।


পেন্টাগনের ব্রিফিং শুরু

দিনের ঘটনা নিয়ে ব্রিফিং শুরু করেছে পেন্টাগন। 

হামলায় আহতদের চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নেওয়া হচ্ছে


১২ মার্কিন সেনা সদস্য নিহত 

কর্মকর্তারা মার্কিন গণমাধ্যমকে বলেন, বিমানবন্দর হামলায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ১১ জন মেরিন ও একজন নৌবাহিনীর চিকিৎসক নিহত হয়েছেন। 

২০২০ সালের ফেব্রুয়ারির পর আফগানিস্তানে এই প্রথম মার্কিন সামরিক হতাহতের ঘটনা ঘটেছে।


'বাচ্চাটা আমার কোলেই মারা গেল'

একজন আফগান দোভাষী যিনি আমেরিকান বাহিনীর সঙ্গে কাজ করেন তিনি সিবিএস নিউজকে বলেন, আমি দেখেছি অনেক মানুষ আহত হয়ে মাটিতে পড়ে ছিল। আমি সেখানে একটি বাচ্চাকে পড়ে থাকতে দেখি। তাকে যখন আমি হাসপাতালে নিয়ে যাই তখন সেই বাচ্চা আমার হাতের ওপরই মারা যায়। তার বয়স আনুমানিক পাঁচ বছর। 

সেই প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, 'এটা হৃদয় বিদারক। এখন যা চলছে তা হৃদয় বিদারক, পুরো দেশটি ভেঙে পড়েছে।'


মার্কিন নিরাপত্তারক্ষী বাহিনীর বেশ কয়েকজন সদস্য নিহত 

আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুল বিমানবন্দরের বাইরে বোমা হামলায় মার্কিন নিরাপত্তারক্ষী বাহিনীর বেশ কয়েকজন সদস্য নিহত হয়েছেন। মার্কিন প্রতিরক্ষা দপ্তর পেন্টাগনের পক্ষ থেকে এমনটি জানানো হয়েছে। 

পেন্টাগনের পক্ষ থেকে বলা হয়, কাবুলের বিমানবন্দরের বাইরে হামলায় বেশ কয়েকজন সদস্য নিহত হয়েছেন। 

মার্কিন গণমাধ্যম জানিয়েছে, মার্কিন নৌবাহিনীর চার সদস্য নিহত হয়েছেন। আরও বেশ কয়েকজন সদস্য আহত হয়েছেন। 


বিস্ফোরণ এলাকা যুক্তরাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণে ছিল: তালেবান

কাবুল বিমানবন্দরের কাছে জোড়া হামলার সমালোচনা করেছে তালেবান। তারা বলেছে, বিস্ফোরণের এলাকাটি মার্কিন সেনাবাহিনীর নিয়ন্ত্রণে ছিল। 

তালেবান নেতা যাবিউল্লাহ মুজাহিদ এক টুইটবার্তায় বলেন, ইসলামিক এমিরেটস (তালেবান ঘোষিত আফগানিস্তান রাষ্ট্র) কাবুল বিমানবন্দরে বেসামরিক মানুষদের লক্ষ্য করে বোমা হামলার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছে।

তালেবানের এ মুখপাত্র বলেন, এই বিস্ফোরণ যে স্থানে ঘটেছে সেটি মার্কিন সেনাদের নিরাপত্তার দায়িত্বে ছিল।

তালেবানের আরেক মুখপাত্র সুহাইল শাহীন টুইটারে এক বিবৃবিতে বলেছেন, তাঁরা নাগিরকদের নিরাপত্তা ও সুরক্ষার প্রতি কঠোর নজর রাখছেন।


হামলার পেছনে আইএস-খোরাসান

মার্কিন কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়েছে আল জাজিরা বলেছে, যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তাদের দৃঢ় বিশ্বাস, কাবুল বিমানবন্দরের কাছে হামলার পেছনে রয়েছে আইএসআইএস (আইএস) খোরাসান গ্রুপ।

আফগানিস্তান বিষয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে নিয়মিত ব্রিফ্রিং করা হচ্ছে। কংগ্রেসকেও এ ব্যাপারে ব্রিফ করা হয়েছে। এই ব্রিফিং সম্পর্কে ওয়াকিবহাল একটি সূত্র বলেন, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার হামলার পেছনে রয়েছে আইএসআইএস-খোরাসান গ্রুপ। মার্কিন কর্মকর্তাদের এটা দৃঢ় বিশ্বাস। 

একটি গোয়েন্দা সূত্রও জানিয়েছে, কাবুল হামলার বিষয়টি এখনো যুক্তরাষ্ট্র তদন্ত করছে। তবে বিমানবন্দরের কাছে হামলার পেছনে আইএসআইএস-খোরাসানের হাত থাকার সম্ভাবনাই বেশি।


নালায় ফেলা হচ্ছে মৃতদেহ

কাবুল বিমানবন্দরের কাছে জোড়া বিস্ফোরণের পর ভয়াবহ দৃশ্য সামনে আসছে। 

শুরু থেকে ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী মিলাদ বার্তা সংস্থা এএফপিকে জানিয়েছেন, ক্ষতবিক্ষত দেহ, বিক্ষিপ্ত মাংস এবং মৃত মানুষদের পাশের নালায় ফেলা হচ্ছে। 

আরেক প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, বিস্ফোরণের শব্দ শোনার সঙ্গে সঙ্গে ভীত সন্ত্রস্ত মানুষ দিগ্‌বিদিক ছুটতে থাকে। তালেবান যোদ্ধারা তখন বিমানবন্দরের গেটের সামনে জড়ো হওয়া মানুষদের ছত্রভঙ্গ করতে আকাশে ফাঁকাগুলি করতে থাকে। আমি এক আহত শিশুকে বুকে জড়িয়ে এক ব্যক্তিকে ছুটতে দেখেছি।

আরেক প্রত্যক্ষদর্শী এএফপিকে বলেন, তিন শিশুসন্তান ও স্ত্রীকে নিয়ে দেশ ছাড়ার জন্য তিনি কাগজপত্র জমা দিয়েছিলাম। তিনি বলেন, আমি আর বিমানবন্দরে কখনোই যাব না। আমেরিকা নিপাত যাক, তাদের উদ্ধার তৎপরতা, তাদের ভিসার আমি নিকুচি করি!

ট্রাম্পের সাবেক উপদেষ্টা ম্যাকমাস্টার। ছবি: বিবিসির সৌজন্যে


কেবল তো শুরু: ট্রাম্পের সাবেক উপদেষ্টা

সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নিরাপত্তা উপদেষ্টা জেনারেল ম্যাকমাস্টার বরাবরই আফগানিস্তান থেকে সেনা প্রত্যাহারের সমালোচনা করে আসছেন। আজ কাবুলে বিস্ফোরণের প্রতিক্রিয়ায় বলেছেন, কেবল তো শুরু!

জেনারেল ম্যাকমাস্টার আফগানিস্তানে জ্যেষ্ঠ মার্কিন কর্মকর্তা হিসেবে কাজ করেছেন। তিনি বিবিসিকে বলেন, ওই নরক থেকে বেরিয়ে আসাই ছিল যুক্তরাষ্ট্রের অগ্রাধিকার। এর ফল যাই হোক না কেন যুক্তরাষ্ট্র এটা চেয়েছে। আর কাবুল বিমানবন্দরে যা ঘটলো এটা আসলে আপনি সন্ত্রাসী সংগঠনের কাছে আত্মসমর্পণ করলে যা হওয়ার কথা তাই হয়েছে। 

তিনি বলেন, তাঁর সাবেক বস, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে নিয়ে গতবছর তালেবানের আলোচকেরা ‘খেলেছে’। ট্রাম্প ১৪ মাসের মধ্যে আফগানিস্তান থেকে সেনা প্রত্যাহারে রাজি হন।


ঠিক যে জায়গাটিতে হামলা হয়েছে

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার দিকে কাবুল বিমানবন্দরে অন্তত দুটি বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্ররা যখন তাদের নাগরিক এবং সহযোগী আফগানদের উদ্ধারে ব্যস্ত তখন এমন হামলার ঘটনা ঘটলো।

বিস্ফোরণে বহু হতাহতের আশঙ্কা করা হচ্ছে।

তিনজন মার্কিন কর্মকর্তা এবং স্থানীয় একটি সূত্র সিএনএনকে জানিয়েছে, প্রাথমিক ভাবে জানা যাচ্ছে, হতাহতদের কয়েকজন মার্কিন নাগরিকও রয়েছেন।

সিএনএনের সৌজন্যে বিস্ফোরণস্থলের গ্রাফিকস:

map-kabul-airport


হামলার ধরন গোয়েন্দাদের সতর্কবার্তার মতোই

বিবিসির নিরাপত্তা বিষয়ক সাংবাদিক ফাঙ্ক গার্ডনার বলছেন, মার্কিন গোয়েন্দারা ঠিক যে ধরনের হামলার জন্য সতর্কবার্তা দিয়েছিলেন কাবুলের হামলা হুবহু সেরকমই।

এটা ছিল একসঙ্গে বিস্ফোরক এবং গুলির ব্যবহার। সন্ত্রাসী হামলার ধ্রুপদী কৌশল এটি। বিশেষ করে সাম্প্রতিক সময়ে আফগানিস্তানের শহরাঞ্চলে যে ধরনের হামলা হয়েছে এটিও তেমন। এ ধরনের হামলায় সাধারণত একটি আত্মঘাতী হামলার সঙ্গে গোলাগুলির ঘটনা ঘটে।

ঠিক একই ধরনের হামলার আগাম সতর্কবার্তা দিয়েছিল গোয়েন্দা সংস্থাগুলো।


সিচ্যুয়েশন রুমে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বাইডেন

আফগান পরিস্থিতির সার্বক্ষণিক হালনাগাদ পেতে ও নির্দেশনা দিতে সিচ্যুয়েশন রুমে অবস্থান করছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। তাঁর সঙ্গে রয়েছেন প্রতিরক্ষা মন্ত্রী লয়েড অস্টিন এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন।

প্রেসিডেন্টকে কাবুলের পরিস্থিতি নিয়ে তাৎক্ষণিকভাবে বিস্তারিত ব্রিফ করা হয়েছে। 

জাতীয় নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের নিয়ে আফগানিস্তান বিষয়ক নিয়মিত ব্রিফিংয়ের জন্য সিচ্যুয়েশন রুমেই ছিলেন প্রেসিডেন্ট বাইডেন। এসময় তাঁর কাছে কাবুলে বিস্ফোরণের খবর আসে। প্রেসিডেন্ট এবং তাঁর শীর্ষ সহচরেরা এখনো সেখানে রয়েছেন। তাঁরা পরিস্থিতির ওপর নজর রাখছেন। 

মার্কিন কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, স্থানীয় সময় আজ সকাল সাড়ে ১১টায় ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী নাফতালি বেনেতের সঙ্গে বাইডেনের সাক্ষাৎ করার কথা ছিল। কাবুল পরিস্থিতির কারণে সাক্ষাতের সময় পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে। 


কাবুল বিমানবন্দরের কাছে জোড়া বিস্ফোরণ

আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলে হামিদ কারজাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাছে পরপর দুটি ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার দিকে প্রথম বিস্ফোরণের শব্দ পাওয়া যায়। একই সঙ্গে পার্শ্ববর্তী ব্যারন হোটেলে বা হোটেল গেটের সামনে আরেকটি বিস্ফোরণ ঘটে। সেখানে ব্রিটিশ পাসপোর্টধারীদের নথিপত্র যাচাই করা হচ্ছিল। আর বিমানবন্দরের অ্যাবে গেটের কাছে বিস্ফোরণস্থলে গত কয়েক দিন ধরে আফগান শরণার্থীরা ভিড় করছেন।

দুই বিস্ফোরণে বহু হতাহতের আশঙ্কা করা হচ্ছে। এক তালেবান কর্মকর্তার বরাত দিয়েছে বিবিসি জানিয়েছে, বিস্ফোরণে অন্তত ১১ জন নিহত হয়েছেন। ওই কর্মকর্তা জানান, হতাহতদের মধ্যে নারী ও শিশু রয়েছে। একজন তালেবান রক্ষীও আহত হয়েছেন বলে জানান তিনি।

তবে নিরপেক্ষ সূত্রে হতাহতদের তথ্য নিশ্চিত হওয়া যায়নি। পেন্টাগনের পক্ষ থেকে মার্কিন সামরিক ও বেসামরিক নাগরিক হতাহতের কথা জানানো হলেও সুনির্দিষ্ট পরিসংখ্যান জানাতে পারেননি তাঁরা। ব্রিটিশ কর্তৃপক্ষও তাদের নাগরিকদের হতাহতের আশঙ্কা করছে।

এর আগে কাবুল বিমানবন্দরে আইএসআইএস বা আইএস (দায়েশ) গ্রুপ হামলা চালাতে পারে জানিয়ে অস্ট্রেলিয়া, যুক্তরাষ্ট্র এবং যুক্তরাজ্য নাগরিকদের জন্য সতর্কতা জারি করেছিল। মার্কিন কর্মকর্তারা ধারণা করছেন, এটি আত্মঘাতী হামলা। তবে কোনো গোষ্ঠী এখন পর্যন্ত এই হামলার দায় স্বীকার করেনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

হাদিকে হত্যাচেষ্টায় জড়িত মোটরসাইকেল শনাক্ত, মালিক সন্দেহে একজন আটক

হাদির মস্তিষ্কের অবস্থা ‘খুবই খারাপ’, এখনো আশঙ্কাজনক: চিকিৎসক

হাদিকে হত্যাচেষ্টা: সন্দেহভাজন ফয়সালের ব্যাংক হিসাব জব্দ

সুদানে নিহত ও আহত শান্তিরক্ষীদের পরিচয় জানাল আইএসপিআর

আজকের রাশিফল: প্রাক্তন ফোন করবে ও পুরোনো পাওনা টাকার কথা স্মরণ হবে, তবে পরিণতি একই

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

হাইকমিশনারকে তলবের পর অন্তর্বর্তী সরকারের অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে ভারতের বিবৃতি

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৮: ৫৬
হাইকমিশনারকে তলবের পর অন্তর্বর্তী সরকারের অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে ভারতের বিবৃতি

ঢাকায় নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মাকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তলবের পর অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের বিবৃতিতে উত্থাপিত অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে ভারত। একই সঙ্গে তলব করে যে বক্তব্য জানানো হয়েছে, সেই প্রেক্ষাপটে নয়াদিল্লি নিজের অবস্থান তুলে ধরেছে।

আজ রোববার (১৪ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিজ্ঞপ্তিতে কলা হয়, ‘১৪ ডিসেম্বর ২০২৫ তারিখে প্রকাশিত বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রেস নোটে উত্থাপিত অভিযোগগুলো ভারত দ্ব্যর্থহীনভাবে প্রত্যাখ্যান করছে।’

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বাংলাদেশে শান্তিপূর্ণ পরিবেশে অবাধ, সুষ্ঠু, অন্তর্ভুক্তিমূলক ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন আয়োজনের পক্ষে সবসময়ই ভারতের অবস্থান। ভারত আরও দাবি করে, বাংলাদেশের ‘জনগণের স্বার্থবিরোধী’ কোনো কার্যক্রম পরিচালনার জন্য কখনোই ভারতের ভূখণ্ড ব্যবহার করতে দেওয়া হয়নি।

এতে আরো বলা হয়, ‘আমরা আশা করি, শান্তিপূর্ণ নির্বাচন আয়োজনসহ অভ্যন্তরীণ আইন–শৃঙ্খলা নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নেবে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার।’

এর আগে দুপুরে বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মাকে ঢাকায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তলব করা হয়। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ভারতে অবস্থানরত পলাতক সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশের বিরুদ্ধে উসকানিমূলক বক্তব্য দিয়ে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে সমর্থকদের আহ্বান জানাচ্ছেন—এ নিয়ে ভারতের কাছে গভীর উদ্বেগ জানানো হয়। এসব কর্মকাণ্ড আসন্ন সংসদ নির্বাচন বানচালের চেষ্টা বলেও অভিযোগ করে বাংলাদেশ।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, বিচারের মুখোমুখি করতে শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকে দ্রুত প্রত্যর্পণের দাবি পুনর্ব্যক্ত করেছে বাংলাদেশ। একই সঙ্গে ভারতে অবস্থানরত পলাতক আওয়ামী লীগ নেতাদের ‘বাংলাদেশবিরোধী কর্মকাণ্ড, পরিকল্পনা ও সন্ত্রাসী তৎপরতায়’ সহায়তার অভিযোগও তুলে ধরা হয়।

এ ছাড়া সম্প্রতি ইনকিলাব মঞ্চের নেতা শরীফ ওসমান হাদির ওপর হত্যাচেষ্টার ঘটনায় জড়িত সন্দেহভাজনরা যেন ভারতে পালাতে না পারে, সে বিষয়ে সহযোগিতা চাওয়া হয়। কেউ ভারতে প্রবেশ করলে তাদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও বাংলাদেশে হস্তান্তরের আহ্বান জানানো হয়।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আরও বলেছে, প্রতিবেশী দেশ হিসেবে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা ও গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া সুরক্ষায় বাংলাদেশের জনগণের পাশে দাঁড়ানো ভারতের দায়িত্ব।

অন্যদিকে, ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মা বৈঠকে জানান, বাংলাদেশে শান্তিপূর্ণ নির্বাচন দেখতে চায় ভারত এবং এ লক্ষ্যে সব ধরনের সহযোগিতা দিতে প্রস্তুত রয়েছে তার দেশ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

হাদিকে হত্যাচেষ্টায় জড়িত মোটরসাইকেল শনাক্ত, মালিক সন্দেহে একজন আটক

হাদির মস্তিষ্কের অবস্থা ‘খুবই খারাপ’, এখনো আশঙ্কাজনক: চিকিৎসক

হাদিকে হত্যাচেষ্টা: সন্দেহভাজন ফয়সালের ব্যাংক হিসাব জব্দ

সুদানে নিহত ও আহত শান্তিরক্ষীদের পরিচয় জানাল আইএসপিআর

আজকের রাশিফল: প্রাক্তন ফোন করবে ও পুরোনো পাওনা টাকার কথা স্মরণ হবে, তবে পরিণতি একই

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বন্ডি বিচে সন্ত্রাসী হামলায় শনাক্ত কে এই নাভিদ আকরাম

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
সিডনির বন্ডি বিচে দুই হামলাকারীর মধ্যে একজন নাভিদ আকরাম। ছবি: এক্স
সিডনির বন্ডি বিচে দুই হামলাকারীর মধ্যে একজন নাভিদ আকরাম। ছবি: এক্স

সিডনির বন্ডি বিচে দুই হামলাকারীর মধ্যে একজনকে শনাক্ত করা হয়েছে। স্থানীয় পুলিশ নিশ্চিত করেছে, হামলাকারী যুবক ২৪ বছর বয়সী নাভিদ আকরাম। তিনি সিডনির দক্ষিণ-পশ্চিমের বনিরিগ এলাকার বাসিন্দা।

অস্ট্রেলীয় সংবাদমাধ্যম এবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হামলার সময় আকরাম গুলিবিদ্ধ হন। এরপর পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করে এবং বর্তমানে তিনি হেফাজতে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। অন্য বন্দুকধারী ঘটনাস্থলেই পুলিশের গুলিতে নিহত হয়েছেন।

বর্তমানে বনিরিগের পাতিয়া এলাকায় আকরামের বাড়িতে পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে। এই সম্পত্তি তাঁর পরিবার এক বছর ধরে ব্যবহার করছে।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনেকে বলছেন, নাভিদ আকরাম পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত। তবে এ বিষয়ে এখনো তেমন শক্ত কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি।

এই ভয়াবহ হামলায় এখন পর্যন্ত শিশুসহ ১২ জন নিহত ও কমপক্ষে ১৭ জন আহত হয়েছে বলে জানা গেছে।

এবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হামলার সময় বন্ডি বিচে ইহুদিদের অন্যতম প্রধান উৎসব হানুক্কার প্রথম দিনের একটি অনুষ্ঠান চলছিল। অনুষ্ঠানটির নাম ছিল ‘চানুকা বাই দ্য সি ২০২৫’। আজ রোববার স্থানীয় সময় বিকেল ৫টা থেকে বিচসংলগ্ন শিশুদের খেলার মাঠে এই অনুষ্ঠান হওয়ার কথা ছিল। চাবাদ অব বন্ডি নামের একটি ইহুদি কেন্দ্র এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিল।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, আজ সন্ধ্যা ৬টা ৪০ মিনিটের দিকে ক্যাম্পবেল প্যারেডসংলগ্ন বন্ডি প্যাভিলিয়নের কাছে একটি গাড়ি থেকে দুই ব্যক্তি নেমে আসেন। এরপর তাঁরা গুলি চালাতে শুরু করেন।

এদিকে এ ঘটনার পর অস্ট্রেলিয়ান ন্যাশনাল ইমামস কাউন্সিল ও কাউন্সিল অব ইমামস এনএসডব্লিউ এক যৌথ বিবৃতিতে বন্ডি বিচে গুলিবর্ষণের ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে। তাদের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘আমাদের সমাজে সহিংসতার কোনো স্থান নেই। এ ঘটনার জন্য দায়ী ব্যক্তিদের পূর্ণ জবাবদিহি ও আইনের আওতায় এনে শাস্তির মুখোমুখি করতে হবে।’

তারা নিহত ব্যক্তিদের পরিবার, ক্ষতিগ্রস্ত ও এই ভয়াবহ হামলার প্রত্যক্ষদর্শীদের প্রতি গভীর শোক ও সমবেদনা জানিয়েছে।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, এই চ্যালেঞ্জিং সময়ে অস্ট্রেলিয়ার মুসলিম সম্প্রদায়সহ সব অস্ট্রেলিয়ানের উচিত ঐক্য, সহানুভূতি ও সংহতি নিয়ে একসঙ্গে দাঁড়ানো, সহিংসতাকে প্রত্যাখ্যান করা এবং সামাজিক সম্প্রীতি ও সব অস্ট্রেলিয়ানের নিরাপত্তার প্রতি আমাদের যৌথ অঙ্গীকার নিশ্চিত করা।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

হাদিকে হত্যাচেষ্টায় জড়িত মোটরসাইকেল শনাক্ত, মালিক সন্দেহে একজন আটক

হাদির মস্তিষ্কের অবস্থা ‘খুবই খারাপ’, এখনো আশঙ্কাজনক: চিকিৎসক

হাদিকে হত্যাচেষ্টা: সন্দেহভাজন ফয়সালের ব্যাংক হিসাব জব্দ

সুদানে নিহত ও আহত শান্তিরক্ষীদের পরিচয় জানাল আইএসপিআর

আজকের রাশিফল: প্রাক্তন ফোন করবে ও পুরোনো পাওনা টাকার কথা স্মরণ হবে, তবে পরিণতি একই

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

লিংকডইনে গার্লফ্রেন্ড চেয়ে বিজ্ঞাপন দেওয়ার পর যা ঘটল

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৭: ৪৩
‘গার্লফ্রেন্ড’ বা নারীবন্ধুর খোঁজে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দিয়েছেন ভারতের এক ব্যক্তি। ছবি: লিংকডইন থেকে নেওয়া।
‘গার্লফ্রেন্ড’ বা নারীবন্ধুর খোঁজে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দিয়েছেন ভারতের এক ব্যক্তি। ছবি: লিংকডইন থেকে নেওয়া।

চাকরি খোঁজার জনপ্রিয় প্ল্যাটফর্ম লিংকডইন। সেখানে কর্মীরা চাকরি খোঁজেন এবং অনেক প্রতিষ্ঠান সেখান থেকে কর্মীদের বাছাই করে থাকে। এই প্ল্যাটফর্মে এবার ‘গার্লফ্রেন্ড’ বা নারীবন্ধুর খোঁজে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দিয়েছেন ভারতের এক ব্যক্তি। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চলছে হাসি-ঠাট্টা ও বিদ্রুপ।

ভারতের হরিয়ানার গুরুগ্রামের দীনেশ বৈরাগী। ‘পূর্ণকালীন’ চাকরির অফার দিয়ে নারীবন্ধু খুঁজেছেন লিংকডইনে। ওই বিজ্ঞাপনের বিবরণে সম্ভাব্য ‘গার্লফ্রেন্ড’-এর জন্য প্রয়োজনীয় নানা গুণাবলির কথাও উল্লেখ করেছেন দীনেশ।

টেক মাহিন্দ্রার সাবেক সিনিয়র অ্যাসোসিয়েট দীনেশ চাকরির বিজ্ঞাপনে লিখেছেন, ‘গুরগাঁওয়ে পূর্ণকালীন গার্লফ্রেন্ডের পদ খালি আছে। সরাসরি দেখা করা এবং দূর থেকে দায়িত্ব পালন দুটোই করতে হবে।’

প্রযুক্তিখাতে অভিজ্ঞ এই যুবক চাকরির বিজ্ঞাপনে আরও লিখেছেন, ‘এই ভূমিকায় শক্তিশালী আবেগগত সম্পর্ক গড়ে তোলা ও তা বজায় রাখা, অর্থবহ কথোপকথনে অংশ নেওয়া, সঙ্গ দেওয়া, পারস্পরিক সমর্থন এবং সঙ্গীর সঙ্গে বিভিন্ন কার্যক্রম বা শখে যুক্ত থাকার বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত থাকবে।’

তিনি আরও লেখেন, ‘সক্রিয় যোগাযোগ, পারস্পরিক সম্মান ও বোঝাপড়া এই ভূমিকাটির ভিত্তি হবে। পাশাপাশি যৌথ সিদ্ধান্ত গ্রহণ এবং ইতিবাচক ও সহায়ক সম্পর্কের পরিবেশ গড়ে তোলাও এর অন্তর্ভুক্ত।’

দীনেশ চাকরিপ্রার্থীর যোগ্যতার ক্ষেত্রে উচ্চমাত্রার আবেগগত বুদ্ধিমত্তা, শোনার সক্ষমতা, সহমর্মিতা ও আন্তঃব্যক্তিক দক্ষতার কথা উল্লেখ করেছেন। এ ছাড়া তিনি জানান, এমন একজনকে তিনি খুঁজছেন, যাঁর মধ্যে রসবোধ, দয়া এবং ইতিবাচক মানসিকতা থাকবে।

তিনি আরও যোগ করেন, ‘সম্পর্কের ক্ষেত্রে ব্যক্তিগত ও যৌথ লক্ষ্যগুলোর মধ্যে ভারসাম্য রক্ষা করার সক্ষমতা থাকতে হবে। শখ, কার্যক্রমে আগ্রহ বা একসঙ্গে নতুন অভিজ্ঞতা গড়ে তোলার মানসিকতারও প্রয়োজন রয়েছে। পাশাপাশি সম্পর্কের ভেতরে পারস্পরিক সমর্থন ও বিকাশে আগ্রহী হতে হবে।’

লিংকডইনে দেওয়া এই চাকরি খোঁজার মতো করে গার্লফ্রেন্ড খোঁজার পোস্টটি দ্রুতই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এটি নিয়ে রসিকতার বন্যা বইয়ে দেন নেটিজেনরা। অনেকেই এই অদ্ভুত চাকরির বিজ্ঞাপন নিয়ে ঠাট্টা–মশকরা করেন, আবার কেউ কেউ সরাসরি পারিশ্রমিক বা বেতন প্যাকেজ সম্পর্কে জানতে চান।

একজন ব্যবহারকারী লিখেছেন, ‘ওহ, এখন সব পরিষ্কার! তাহলে আমার প্রাক্তন আমার সঙ্গে ছয় মাস গার্লফ্রেন্ড হিসেবে ইন্টার্নশিপ করেছিল, এরপর অন্য কোথাও ফুলটাইম গার্লফ্রেন্ডের চাকরি পেয়ে চলে গেছে।’

আরেকজন মন্তব্য করেন, ‘আপনি যদি আসলেই ভারতীয় হন, তাহলে যেকোনো অ্যাপই ডেটিং অ্যাপ বানিয়ে ফেলবেন।’

তৃতীয় একজন লিখেছেন, ‘পদের বিবরণ দেখে বেশ চমকপ্রদই লাগছে, কিন্তু স্যালারি কত?’

একজন ব্যবহারকারী প্রশ্ন করেন, ‘তিনি কি লিংকডইনের পোস্টের মাধ্যমে কোনো পরীক্ষা চালাচ্ছেন?’ উত্তরে দীনেশ বলেন, ‘একেবারেই না। এটি একটি প্রকৃত শূন্যপদ। প্রোফাইলটি ভালোভাবে বোঝার জন্য আমি চাকরির বিবরণ দেখার পরামর্শ দিচ্ছি। এছাড়া কেউ যদি আগ্রহী ও যোগ্য হন, তাদেরও নির্দেশনা দেওয়া যেতে পারে।’

শেষ আপডেট অনুযায়ী দীনেশ জানিয়েছেন, এই ‘চাকরির’ জন্য এরইমধ্যে ২৬ জন আবেদন করেছেন। এখন নতুন কোনো আবেদন গ্রহণ করা হচ্ছে না বলেও জানান তিনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

হাদিকে হত্যাচেষ্টায় জড়িত মোটরসাইকেল শনাক্ত, মালিক সন্দেহে একজন আটক

হাদির মস্তিষ্কের অবস্থা ‘খুবই খারাপ’, এখনো আশঙ্কাজনক: চিকিৎসক

হাদিকে হত্যাচেষ্টা: সন্দেহভাজন ফয়সালের ব্যাংক হিসাব জব্দ

সুদানে নিহত ও আহত শান্তিরক্ষীদের পরিচয় জানাল আইএসপিআর

আজকের রাশিফল: প্রাক্তন ফোন করবে ও পুরোনো পাওনা টাকার কথা স্মরণ হবে, তবে পরিণতি একই

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

অস্ট্রেলিয়ায় সমুদ্রসৈকতে ইহুদিদের হানুক্কা উৎসবে গুলি, নিহত অন্তত ১০

অস্ট্রেলিয়ার বন্ডি বিচে বন্দুকধারীদের গুলি, নিহত অন্তত ১০

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৬: ৪২
সিডনির বন্ডি সমুদ্রসৈকতে বন্দুকধারীদের হামলায় অনেক হতাহত। ছবি: বিবিসির সৌজন্যে
সিডনির বন্ডি সমুদ্রসৈকতে বন্দুকধারীদের হামলায় অনেক হতাহত। ছবি: বিবিসির সৌজন্যে

অস্ট্রেলিয়ার জনপ্রিয় পর্যটনকেন্দ্র বন্ডি বিচে ভয়াবহ গুলিবর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। পুলিশ জানিয়েছে, এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে দুজনকে পুলিশি হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। ঘটনার পরপরই পুলিশ বন্ডি বিচ ও এর সংলগ্ন এলাকায় বড় আকারের অপারেশন শুরু করেছে।

নিউ সাউথ ওয়েলস পুলিশ ‘এক্স’ হ্যান্ডলে দেওয়া এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, পুলিশি অভিযান এখনো চলছে এবং জনসাধারণকে ওই এলাকা এড়িয়ে চলার অনুরোধ করা হচ্ছে।

পুলিশের বরাতে বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বন্দুক হামলায় কমপক্ষে ১০ জন নিহত হয়েছেন। নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে একজন হামলাকারী বা বন্দুকধারীও রয়েছেন। এ ঘটনায় আরও অন্তত ১২ জন সাধারণ নাগরিক, দুজন পুলিশ কর্মকর্তাসহ ১৪ জন আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।

জানা গেছে, হামলার সময় বন্ডি বিচে ইহুদিদের অন্যতম প্রধান উৎসব হানুক্কার প্রথম দিনের একটি অনুষ্ঠান চলছিল। অনুষ্ঠানটির নাম ছিল ‘চানুকা বাই দ্য সি ২০২৫’ এবং এটি আজ রোববার স্থানীয় সময় বিকেল ৫টা থেকে বিচসংলগ্ন শিশুদের খেলার মাঠের কাছে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। চাবাদ অব বন্ডি নামের একটি ইহুদি কেন্দ্র এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিল।

হামলার সময় অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকা প্রত্যক্ষদর্শী ব্যারি জানান, তিনি তাঁর সন্তানদের নিয়ে হানুক্কার অনুষ্ঠানে ছিলেন, তখনই গুলির শব্দ শুরু হয়। তিনি দেখতে পান, দুজন ব্যক্তি একটি ব্রিজের ওপর থেকে জনসমাবেশের দিকে গুলি চালাচ্ছেন। তিনি ঘটনাস্থলে একাধিক মৃতদেহ পড়ে থাকতে দেখেন। তিনি সন্তানদের নিয়ে দ্রুত ঘটনাস্থল থেকে বন্ধুর গাড়িতে পালিয়ে যান। ব্যারি এ সময় অস্ট্রেলিয়ার মতো দেশে একটি ইহুদি অনুষ্ঠানে এমন হামলা হওয়াকে ‘অবিশ্বাস্য’ বলে বর্ণনা করেন।

আরেক প্রত্যক্ষদর্শী, যিনি ব্রোন্টে বিচে ছিলেন, তিনি প্রায় ২০টি গুলির শব্দ শুনতে পান। প্রথমে ভেবেছিলেন, আতশবাজির শব্দ। পরে হেলিকপ্টার উড়তে দেখে ও শুটিংয়ের খবর পেয়ে তিনি ঘটনার গুরুত্ব বুঝতে পারেন।

অন্য একজন প্রত্যক্ষদর্শী জানান, তিনি বন্দুকধারীদের অস্ত্র নামিয়ে রাখার অনুরোধ করেছিলেন, কিন্তু তাঁরা সে কথায় কান দেননি।

সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রকাশিত ও যাচাই করা ভিডিওগুলোতে বন্ডি বিচের ঘটনার পরের ভয়ংকর দৃশ্য দেখা যাচ্ছে। একটি ভিডিওতে দেখা যায়, ক্যাম্পবেল প্যারেডের কারপার্ক থেকে সমুদ্রসৈকতের দিকে যাওয়া একটি ছোট সেতু থেকে দুজন বন্দুকধারী গুলি চালাচ্ছেন। সেতুটি বন্ডি পার্ক প্লেগ্রাউন্ড থেকে মাত্র ৫০ মিটার দূরে অবস্থিত।

অন্য একটি যাচাই করা ভিডিওতে দেখা যায়, একই সেতুর ওপর বেশ কয়েকজন পুলিশ সদস্য রয়েছেন। একজনের বুকে সিপিআর দেওয়া হচ্ছে আর অন্য একজন চিৎকার করে বলছেন, ‘সে মারা গেছে, সে মারা গেছে।’ আরেকটি ভিডিওতে দেখা যায়, নিথর পড়ে থাকা অন্য এক ব্যক্তির জামাকাপড় কাঁচি দিয়ে কেটে দেওয়া হচ্ছে। মেঝেতে রক্তের দাগ, একটি বুলেটপ্রুফ ভেস্ট এবং কমপক্ষে আটটি গুলির খোসা পড়ে থাকতে দেখা যায়।

পুলিশ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে দ্রুত ঘটনাস্থলে একটি বিশেষ নিরাপত্তাবেষ্টনী তৈরি করেছে এবং হাতে তৈরি বিস্ফোরক (আইইডি) নিষ্ক্রিয় করার জন্য বিশেষ দল ও সরঞ্জাম আনা হয়েছে। তবে নিরাপত্তার স্বার্থে এই এক্সক্লুশন জোনের সঠিক অবস্থান এখনো নিশ্চিত করা হয়নি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

হাদিকে হত্যাচেষ্টায় জড়িত মোটরসাইকেল শনাক্ত, মালিক সন্দেহে একজন আটক

হাদির মস্তিষ্কের অবস্থা ‘খুবই খারাপ’, এখনো আশঙ্কাজনক: চিকিৎসক

হাদিকে হত্যাচেষ্টা: সন্দেহভাজন ফয়সালের ব্যাংক হিসাব জব্দ

সুদানে নিহত ও আহত শান্তিরক্ষীদের পরিচয় জানাল আইএসপিআর

আজকের রাশিফল: প্রাক্তন ফোন করবে ও পুরোনো পাওনা টাকার কথা স্মরণ হবে, তবে পরিণতি একই

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত