Ajker Patrika

শতবর্ষীর সংখ্যায় জাপানে নতুন রেকর্ড, ৯০ শতাংশই নারী

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

সংখ্যার দিক দিয়ে জাপানের শতবর্ষী মানুষেরা নতুন রেকর্ড গড়েছেন। দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত ১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত জাপানে ১০০ বছর বা তার বেশি বয়সী মানুষের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৯৯ হাজার ৭৬৩ জন। তবে এর মধ্যে প্রায় ৯০ শতাংশই নারী।

শুক্রবার (১২ সেপ্টেম্বর) যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম টেলিগ্রাফ জানিয়েছে, আগের বছরের তুলনায় এই বছর শতবর্ষীর সংখ্যা বেড়েছে ৪ হাজার ৬৪৪ জন। টানা ৫৫ বছর ধরে জাপান প্রায় প্রতি বছরই শতবর্ষী মানুষের সংখ্যায় নতুন রেকর্ড গড়ছে।

বর্তমানে জাপানে সবচেয়ে বেশি বয়স যার, তাঁর নাম শিগেকো কাগাওয়া। তাঁর বয়স এখন ১১৪ বছর। কিওতো অঞ্চলের নারায় বসবাসরত এই নারী ৮০ বছরের পরও চিকিৎসক হিসেবে কাজ চালিয়ে গিয়েছিলেন। তিনি জানিয়েছেন, হাঁটতে হাঁটতে রোগীদের বাড়ি গিয়ে চিকিৎসা দেওয়ার অভ্যাসই তাঁকে আজও সতেজ রেখেছে।

তবে বিশ্বের সবচেয়ে প্রবীণ ব্যক্তি বর্তমানে একজন ব্রিটিশ নাগরিক। তাঁর নাম ইথেল ক্যাটারহ্যাম। গত আগস্টে তিনি ১১৬ বছরে পা দিয়েছেন। এর আগে এই খেতাবটি ছিল জাপানের টোমিকো ইতোকার দখলে, যিনি ২০২৪ সালে ১১৬ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেন।

জাপানের ওকিনাওয়া দ্বীপ দীর্ঘায়ুর জন্য বিখ্যাত। এই অঞ্চলটিকে বিশ্বের অন্যতম ‘ব্লু জোন’ বলা হয়। এখানে রোগের হার তুলনামূলকভাবে কম এবং মানুষের গড় আয়ু বেশি। ২০২২ সালে ওকিনাওয়ায় ১ হাজার ২৭১ জন শতবর্ষী ছিলেন, যা প্রতি লাখে গড়ে ৬৮ জন। গবেষণায় দেখা গেছে, দ্বীপবাসীদের ১০০ বছর বয়স পর্যন্ত বেঁচে থাকার সম্ভাবনা অন্য জাপানিদের তুলনায় ৪০ শতাংশ বেশি। এখানেই প্রতিষ্ঠিত হয়েছে ‘ওকিনাওয়া রিসার্চ সেন্টার ফর লংজেভিটি সায়েন্স’, যেখানে দীর্ঘায়ুর রহস্য নিয়ে গবেষণা চলছে।

এদিকে বিশ্বে দীর্ঘায়ু দেশের তালিকায় শীর্ষে থাকা জাপান জনসংখ্যা সংকটে পড়েছে। বয়স্ক মানুষের সংখ্যা দ্রুত বাড়তে থাকায় দেশটিতে চিকিৎসা ও কল্যাণ ব্যয়ের চাপ ক্রমেই বাড়ছে। অন্যদিকে কর্মক্ষম জনগোষ্ঠীর সংখ্যা কমে যাচ্ছে। শুধু ২০২৪ সালেই দেশটির জনসংখ্যা ৯ লাখের বেশি কমেছে, যা এক বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ পতন।

জাপানের সদ্য সাবেক প্রধানমন্ত্রী শিগেরু ইশিবা এমন পরিস্থিতিকে ‘নীরব জরুরি অবস্থা’ আখ্যা দিয়েছেন। সংকট মোকাবিলায় তিনি নমনীয় কর্মঘণ্টা চালু, বিনা খরচে দিবাকালীন শিশুযত্ন এবং বিদেশি কর্মীদের আকর্ষণে নতুন প্রণোদনা দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছিলেন। একই সঙ্গে প্রবীণদের সেবায় দেশটিতে ‘কেয়ার রোবট’ ব্যবহারেরও উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

জাপানের মতো দক্ষিণ কোরিয়াও বার্ধক্যজনিত সংকটে ভুগছে। দক্ষিণ কোরিয়ায় বর্তমানে ৬৫ বছরের বেশি বয়সী মানুষের সংখ্যা এক কোটিরও বেশি। নিম্নগামী জনসংখ্যার আরেক দেশ ইতালিতেও নবজাতকের সংখ্যা কমে যাওয়ায় পেনশনভোগী জনগোষ্ঠীর চাপ বাড়ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত