Ajker Patrika

ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধে লাভবান চীন, নাজুক অবস্থানে যুক্তরাষ্ট্র

অনলাইন ডেস্ক
আপডেট : ০৮ মে ২০২৫, ১০: ৫৯
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পেহেলগামে গত ২২ এপ্রিলের হামলার পর থেকেই পাকিস্তানের সঙ্গে দেশটির সংঘাতের দোলাচল ছিল। কারণ, ভারত পেহেলগাম হামলায় ২৬ জনের প্রাণহানির জন্য পাকিস্তানকেই দায়ী করছিল। কিন্তু পাকিস্তান এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে। তবে বিষয়টি সেখানে থেমে থাকেনি। গত মঙ্গলবার দিবাগত রাতে পাকিস্তানে ভারতের হামলার মধ্য দিয়ে সেই দুই দেশের মধ্যকার উত্তেজনা যুদ্ধে গড়ায়।

পাকিস্তান দাবি করেছে, তারা ভারতীয় পাঁচটি যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করেছে এবং সেগুলোর পাইলটকে আটক করেছে। তবে ভারতীয় পক্ষ এখনো বিষয়টি স্বীকার করেনি। কিন্তু ভারতের কাশ্মীরে ভূপাতিত ৪টি যুদ্ধবিমানের ধ্বংসাবশেষ উদ্ধার করা হয়েছে। কাশ্মীরের স্থানীয় কর্মকর্তারা অবশ্য ৩টি যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হওয়ার খবর দিয়েছেন। তবে দুই দেশের মধ্যকার এই যুদ্ধে এখন পর্যন্ত উভয় পক্ষে ৪৩ জন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।

তবে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যকার এই যুদ্ধ কেবল ভারতীয় উপমহাদেশে সীমাবদ্ধ থাকেনি। আঞ্চলিক গণ্ডি পেরিয়ে এই ক্ষণস্থায়ী যুদ্ধের প্রভাব গড়িয়েছে আন্তর্জাতিক মহলেও। বিশেষ করে, এই যুদ্ধের কারণে সবচেয়ে বেশি প্রভাবিত হয়েছে চীন ও যুক্তরাষ্ট্র। কারণ, চীন পাকিস্তানের ঐতিহাসিক মিত্র এবং যুক্তরাষ্ট্রও পাকিস্তানের ঐতিহাসিক সামরিক সহযোগী। একই সঙ্গে, চীন ভারতকে তার নিরাপত্তার জন্য হুমকি হিসেবেও দেখে। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে দক্ষিণ এশিয়ায় যুক্তরাষ্ট্র ভারতকে কৌশলগত মিত্র হিসেবে দেখছে। ফলে এই দুই দেশের প্রভাবিত হওয়া স্বাভাবিক।

তবে চীন ও যুক্তরাষ্ট্র বর্তমানে বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ দুই পরাশক্তি হওয়ায় এই সংকট থেকে কে আসলে বেশি লাভবান হলো তা নিয়ে বিশ্লেষক মহলে আলোচনা আছে। পাকিস্তানের সঙ্গে চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক এবং ভারতের সঙ্গে এই দুই দেশের সম্পর্কের প্রকৃতি, ধরন ও মাত্রার কারণে বিশ্লেষকেরা মনে করছেন, ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধে চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে চীন সবচেয়ে বেশি লাভবান হয়েছে। বিপরীতে নাজুক অবস্থানে পড়ে গেছে যুক্তরাষ্ট্র।

অস্ট্রেলিয়ান ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির রাজনীতি ও আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের সিনিয়র লেকচারার আলাম সালেহ বলেছেন, ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা বৃদ্ধি আবারও ‘দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার ভঙ্গুরতাকে তুলে ধরেছে।’

আলাম সালেহ আল-জাজিরাকে বলেছেন, ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সংঘর্ষের ‘বৃহত্তর ভূ-রাজনৈতিক প্রভাবও’ রয়েছে, বিশেষ করে এই অঞ্চলে চীনের ভূ-কৌশলগত অবস্থানের জন্য। তিনি বলেন, ‘ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনা জিইয়ে থাকলে চীন কৌশলগতভাবে লাভবান হয়। পাকিস্তানের ঘনিষ্ঠ মিত্র এবং ভারতের আঞ্চলিক প্রতিদ্বন্দ্বী হিসাবে বেইজিং ইসলামাবাদকে ভারতীয় প্রভাবের বিরুদ্ধে একটি মূল প্রতিভার হিসাবে দেখে।’

এই বিশ্লেষক বলেন, ‘অস্থিরতা অব্যাহত থাকলে ভারতের সম্পদ ও মনোযোগ ভারত-পাকিস্তান সীমারেখায় আবদ্ধ থাকবে। এটি ভারতের আঞ্চলিক দৃঢ়তা এবং যুক্তরাষ্ট্রের ইন্দো-প্যাসিফিক লক্ষ্যগুলোর সঙ্গে তার সমন্বয়কে সীমিত করবে। সুতরাং, চীন কূটনৈতিক ও সামরিকভাবে পাকিস্তানের প্রতি তার সমর্থন বজায় রাখবে এবং গভীর করবে।’

ভারত-পাকিস্তান সংঘাত যুক্তরাষ্ট্রের জন্য নাজুক পরিস্থিতি তৈরি করেছে। এই বিষয়ে আলাম সালেহ বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র নিজেকে একটি নাজুক অবস্থানে দেখছে। ভারতের কৌশলগত অংশীদার এবং পাকিস্তানের দীর্ঘদিনের, যদিও জটিল, নিরাপত্তা সহযোগী হিসাবে ওয়াশিংটন কোনো পক্ষেরই পুরোপুরি পক্ষ নিতে পারছে না।’ তিনি বলেন, ‘উত্তেজনা বৃদ্ধি যুক্তরাষ্ট্রের বৃহত্তর ইন্দো-প্যাসিফিক কৌশলকে ক্ষতিগ্রস্ত করার এবং এই অঞ্চলে তার হ্রাসপ্রাপ্ত প্রভাবকে আরও জটিল করার হুমকি দেয়।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

আস্থায় বাজিমাত ইসলামী ব্যাংক

‘ফের ধর্ষণচেষ্টার ক্ষোভে’ বাবাকে খুন, ৯৯৯-এ কল দিয়ে আটকের অনুরোধ মেয়ের

চিকিৎসার জন্য থাইল্যান্ডে গেছেন সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ

আ. লীগের ক্লিন ইমেজের ব্যক্তিদের বিএনপির সদস্য হতে বাধা নেই: রিজভী

১৫ স্থাপনায় পাকিস্তানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা, আকাশেই ধ্বংসের দাবি ভারতের

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত