Ajker Patrika

জুমার নামাজে না গেলে জেল-জরিমানা করবে মালয়েশিয়ার প্রদেশ

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ১৯ আগস্ট ২০২৫, ২২: ৪৭
মালয়েশিয়ায় জুমার নামাজে অংশ নেওয়া মুসলিমেরা। ছবি: এএফপি
মালয়েশিয়ায় জুমার নামাজে অংশ নেওয়া মুসলিমেরা। ছবি: এএফপি

মালয়েশিয়ার তেরেংগানু প্রদেশে মুসলিম পুরুষদের জন্য শুক্রবারের জুমার নামাজে হাজিরা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। আর এ নিয়ম ভাঙলে শাস্তির বিধানও ঘোষণা করা হয়েছে। নতুন আইনে বলা হয়েছে, কোনো যৌক্তিক কারণ ছাড়া জুমার নামাজ বাদ দিলে মুসলিম পুরুষদের দুই বছরের কারাদণ্ড কিংবা সর্বোচ্চ তিন হাজার রিঙ্গিত (৮৬ হাজার টাকা) জরিমানা অথবা উভয় শাস্তির মুখোমুখি হতে হবে।

যুক্তরাজ্যভিত্তিক ইনডিপেনডেন্ট জানিয়েছে, গতকাল সোমবার (১৮ আগস্ট) প্রাদেশিক সরকার পরিচালিত ‘শরিয়া ক্রিমিনাল অফেন্সেস’ (তাকজির) আইন অনুযায়ী এ ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।

তেরেংগানু রাজ্য নির্বাহী পরিষদের সদস্য মুহাম্মদ খলিল আব্দুল হাদি জানিয়েছেন, আগে ওই রাজ্যে টানা তিন জুমা মিস করলে শাস্তির বিধান ছিল। কিন্তু এখন একবার জুমার নামাজ বাদ দিলেও তা অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে। তিনি বলেন, জুমার নামাজ মুসলিম জীবনে শুধু একটি ধর্মীয় প্রতীক নয়, বরং আল্লাহর প্রতি আনুগত্য প্রকাশের গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম। তাই বারবার সতর্ক করার পরও কেউ যদি এ দায়িত্ব এড়িয়ে চলেন, তখনই শাস্তি কার্যকর হবে।

প্রাদেশিক ওই সরকার জানিয়েছে, সাধারণ মানুষকে নিয়মিত জুমার নামাজের গুরুত্ব সম্পর্কে সচেতন করতে মসজিদে ব্যানার টানানো হবে এবং বিভিন্ন প্রচারণা চালানো হবে। পাশাপাশি স্থানীয় বাসিন্দারা অভিযোগ করলে কিংবা নজরদারিতে আইন ভাঙার কোনো প্রমাণ পাওয়া গেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

তেরেংগানুতে এই আইন কার্যকরের মধ্য দিয়ে মালয়েশিয়ার বৃহত্তম ইসলামপন্থী রাজনৈতিক দল প্যান-মালয়েশিয়ান ইসলামিক পার্টি (পিএএস) আবারও কঠোর শরিয়া আইন বাস্তবায়নের লক্ষ্যে এগোচ্ছে। দেশটির ১৩টি অঙ্গরাজ্যের মধ্যে চারটি রাজ্যে তারা ক্ষমতায় রয়েছে। দলটি বহু বছর ধরে অপরাধের বিপরীতে কঠোর শাস্তির বিধান প্রচলনের পক্ষে। এমনকি একসময় চুরি ও ব্যভিচারের মতো অপরাধে তারা হাত কেটে দেওয়া কিংবা পাথর ছুড়ে মৃত্যুদণ্ডের মতো ‘হুদুদ আইন’ চালুরও প্রস্তাব করেছিল।

এদিকে তেরেংগানু রাজ্যের নতুন ঘোষণাটি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক সমালোচনা শুরু হয়েছে। মালয়েশিয়ার আইনজীবী আজিরা আজিজ এক্স প্ল্যাটফর্মে লিখেছেন, ‘ইসলামে কোনো জোরজবরদস্তি নেই বলার পরও এ ধরনের আইন হয়েছে। এ থেকেই বোঝা যাচ্ছে, তেরেংগানুর পুরুষেরা নামাজে যাচ্ছেন না। নামাজ ফরজ—এ ব্যাপারে কারও দ্বিমত নেই। তবে এটিকে অপরাধ হিসেবে আইন করে শাস্তি দেওয়ার প্রয়োজন ছিল না। সচেতনতামূলক প্রচারণাই যথেষ্ট হতো।’

মালয়েশিয়ার আইনব্যবস্থা দ্বিমুখী। এ ক্ষেত্রে মুসলিমদের ব্যক্তিগত ও পারিবারিক বিষয়ে শরিয়া আইন প্রযোজ্য হলেও অন্য ক্ষেত্রগুলোতে সিভিল আইন কার্যকর। দেশটির ৩ কোটি ৩০ লাখ মানুষের দুই-তৃতীয়াংশই মালয় মুসলমান। অন্য অংশ চীনা ও ভারতীয় বংশোদ্ভূত।

এর আগে গত নভেম্বর মাসে দেশটির জোহর রাজ্যও শুক্রবারের নামাজে হাজিরা নিশ্চিত করতে অনুরূপ ব্যবস্থা নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছিল। তবে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে মালয়েশিয়ার সর্বোচ্চ আদালত শরিয়াভিত্তিক কয়েকটি রাজ্য আইনকে অসাংবিধানিক ঘোষণা করেন। এর ফলে ইসলামপন্থীদের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়।

মালয়েশিয়ার কেলান্তান রাজ্যে প্রণীত আইনে সমকামিতা, যৌন হয়রানি, রক্ত সম্পর্কের মধ্যে অবৈধ সম্পর্ক, ভিন্ন লিঙ্গের পোশাক পরা ও ভুয়া সাক্ষ্য দেওয়ার মতো অপরাধের জন্য শাস্তির বিধান রাখা হয়েছিল। তবে দেশটির আদালত জানান, এসব বিষয় ফেডারেল আইনের অধীন। তাই রাজ্য সরকার এ ধরনের আইন করতে পারে না।

আদালতের ওই রায়ের পর পিএএস পার্টি ব্যাপক বিক্ষোভ করে এবং শরিয়া আইন রক্ষার দাবি তোলে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

তারা বড় হলে নিজেদের ভুল বুঝতে পেরে লজ্জিত হবে: সেনাপ্রধান

যুগ্ম সদস্যসচিব মাহিন সরকারকে বহিষ্কারের কারণ জানাল এনসিপি

‘আমি যে মাপের লোক, আমারে সে মাপের অস্ত্র দিয়া ফাঁসাইতি’

আবাসন কোম্পানির অনিয়ম অনুসন্ধানে গড়িমসি, দুদকের উপপরিচালক বরখাস্ত

বিপুল বকেয়া সত্ত্বেও ব্যবসা হারানোর ভয়ে বাংলাদেশ-নেপালে সম্প্রচার চালিয়ে যাচ্ছে ভারতীয় চ্যানেলগুলো

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত