ডা. তাহমিদা খানম
মানুষের শরীর ৬০ শতাংশ পানি দিয়ে তৈরি। ৭০ কেজি ওজনের পুরুষ মানুষের দেহে প্রায় ৪০ লিটার পানীয় অংশ থাকে। যদিও এই পরিমাণ শিশুদের ক্ষেত্রে কিছুটা বেশি এবং নারীদের ক্ষেত্রে কিছু কম হয়ে থাকে। ফলে পানির অন্য নাম ‘জীবন’। পানি ছাড়া জীবের কোনো জৈবিক প্রক্রিয়াই সম্পন্ন হয় না।
বেঁচে থাকার জন্য যে বিভিন্ন রাসায়নিক জিনিস প্রয়োজন হয়, তা কোষের ভেতরে বিভিন্ন রাসায়নিক প্রক্রিয়ায় তৈরি হয়। এই প্রক্রিয়ায় কাঁচামাল হিসেবে যেসব কণা প্রয়োজন, তা রক্তের সঙ্গে মিশে উৎপাদনস্থলে পৌঁছায়। আর রক্তের মূল উপাদান হলো পানি; অর্থাৎ দেহের অভ্যন্তরে প্রতিটি ছোট-বড় জৈব ও রাসায়নিক ক্রিয়া সম্পাদনে পানি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ নিয়ামক।
এ ছাড়া শরীরের আরও যেসব উল্লেখযোগ্য কাজে পানির ভূমিকা আছে, সেগুলো হলো:
পর্যাপ্ত পানি পানে সহজে মুক্তি মেলে
বদহজম, কোষ্ঠকাঠিন্য, গ্যাস্ট্রিক, আলসার, কিডনির পাথর, মূত্রনালির প্রদাহ ও সংক্রমণ, বাত-ব্যথা, ত্বকের ব্রণ ও চুলকানি এবং অন্যান্য সংক্রমণ, উচ্চ রক্তচাপ, মাইগ্রেন-জাতীয় মাথাব্যথা, পাকস্থলী ও পরিপাকতন্ত্রের অন্যান্য অংশে প্রদাহ এবং সংক্রমণ।
স্বাস্থ্য সুরক্ষায় পর্যাপ্ত বিশুদ্ধ পানি পান করতে হবে। দূষিত পানি পানে বিভিন্ন অসুখ ও শারীরিক সমস্যা দেখা দিতে পারে। প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের কারণে পানিতে উচ্চমাত্রার আর্সেনিক থাকলে সেখান থেকে আর্সেনিকোসিস নামক রোগ দেখা দেয়। পানিতে প্রয়োজনীয় মাত্রার বেশি ফ্লুরাইড থাকলে দাঁতের গঠনগত ও ক্ষয়জনিত রোগ ফ্লুরোসিস হতে পারে।
উচ্চমাত্রার রাসায়নিক বর্জ্যযুক্ত পানির ক্ষতি উচ্চমাত্রার রাসায়নিক বর্জ্যযুক্ত পানি পানে সেসব ক্ষতি হতে পারে, সেগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো, চুল পড়ে যাওয়া, চুলকানি ও বিভিন্ন চর্মরোগ, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাওয়া এবং বিভিন্ন ধরনের ক্যানসারের প্রবণতা বেড়ে যাওয়া।
বিভিন্ন সময় পানি সরবরাহ পাইপ থেকে পানিতে মিশে যায় সিসা। দীর্ঘদিন সিসাযুক্ত পানি পানে ত্বক, চুল, চোখের অসুখ ছাড়াও রক্তশূন্যতাজনিত বিভিন্ন
রোগ হতে পারে।
খেতে হবে তরল খাবার
শুধু পানিই নয়। পান করতে হবে
প্রতিদিনের পানির পরিমাণ
প্রতিদিনের বিভিন্ন জৈবিক প্রক্রিয়ায়, যেমন ঘাম, মূত্রত্যাগ, মলত্যাগ, শ্বাসপ্রশ্বাস ইত্যাদির মাধ্যমে আমরা ২ থেকে ৩ লিটার পানি হারাই। পক্ষান্তরে শরীরে প্রতিদিন মাত্র ৪০০ মিলিলিটার পানি তৈরি হয়।
তাই একজন মানুষ প্রতিদিন ন্যূনতম কতটুকু পানি পান করবে বয়স, ওজন, লিঙ্গ, কাজের ধরন, আবহাওয়ার পার্থক্য, দীর্ঘমেয়াদি অসুখ ইত্যাদি বিষয়কে বিবেচনা করে পরিমাপ করা হয়।
দৈনিক কমপক্ষে ৮ গ্লাস পানি পান করার প্রয়োজনীয়তা আমরা সবাই জানি। এখানে এক গ্লাসে ২০০ মিলিলিটার পানি হিসাব করা হয়। এটি একটি প্রচলিত কথা। খুব সহজভাবে হিসাব করা হয় যে একজন মানুষের ওজনকে ০.০৩৩ দিয়ে ভাগ করলে যা পাওয়া যায়, তাকে দৈনিক তত মিলিলিটার পানি পান করতে হবে। তাই একজন ৭০ কেজি ওজনের মানুষের দৈনিক কমপক্ষে ২ লিটার বা ১০ গ্লাস পানি পান করা উচিত।
ঠান্ডা নাকি গরম পানি
পানি তো পান করতে হবে, কিন্তু সেই পানি কেমন হলে বেশি স্বাস্থ্যসম্মত হবে, ঠান্ডা নাকি কুসুম গরম। এ প্রশ্ন কখনো কখনো আমাদের মনে জাগে। ঠান্ডা বা কুসুম গরম পানির পক্ষে-বিপক্ষে অনেক যুক্তি থাকলেও সেগুলোর বৈজ্ঞানিক তথ্য-প্রমাণ খুব একটা নেই।
কুসুম গরম পানি পানে শ্বাসতন্ত্রের বিভিন্ন প্রদাহ, হজমের সমস্যা, মাথাব্যথা, ক্লান্তিবোধ ইত্যাদি বিষয়ে উপকার পাওয়া যায়। আবার ঠান্ডা পানি বা বরফের টুকরোমিশ্রিত পানি পানে তীব্র পিপাসা নিবারণে এবং একসঙ্গে বেশি পানি পান করতে সাহায্য করে। তাই ব্যক্তি যে তাপমাত্রার পানি পানে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন এবং পর্যাপ্ত পান করতে পারেন, সেটাই তাঁর গ্রহণ করা উচিত। যদিও বিশেষজ্ঞরা রুম তাপমাত্রার পানিকে বেশি গ্রহণযোগ্য মনে করেন।
ডা. তাহমিদা খানম, মেডিসিন বিশেষজ্ঞ, খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল
মানুষের শরীর ৬০ শতাংশ পানি দিয়ে তৈরি। ৭০ কেজি ওজনের পুরুষ মানুষের দেহে প্রায় ৪০ লিটার পানীয় অংশ থাকে। যদিও এই পরিমাণ শিশুদের ক্ষেত্রে কিছুটা বেশি এবং নারীদের ক্ষেত্রে কিছু কম হয়ে থাকে। ফলে পানির অন্য নাম ‘জীবন’। পানি ছাড়া জীবের কোনো জৈবিক প্রক্রিয়াই সম্পন্ন হয় না।
বেঁচে থাকার জন্য যে বিভিন্ন রাসায়নিক জিনিস প্রয়োজন হয়, তা কোষের ভেতরে বিভিন্ন রাসায়নিক প্রক্রিয়ায় তৈরি হয়। এই প্রক্রিয়ায় কাঁচামাল হিসেবে যেসব কণা প্রয়োজন, তা রক্তের সঙ্গে মিশে উৎপাদনস্থলে পৌঁছায়। আর রক্তের মূল উপাদান হলো পানি; অর্থাৎ দেহের অভ্যন্তরে প্রতিটি ছোট-বড় জৈব ও রাসায়নিক ক্রিয়া সম্পাদনে পানি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ নিয়ামক।
এ ছাড়া শরীরের আরও যেসব উল্লেখযোগ্য কাজে পানির ভূমিকা আছে, সেগুলো হলো:
পর্যাপ্ত পানি পানে সহজে মুক্তি মেলে
বদহজম, কোষ্ঠকাঠিন্য, গ্যাস্ট্রিক, আলসার, কিডনির পাথর, মূত্রনালির প্রদাহ ও সংক্রমণ, বাত-ব্যথা, ত্বকের ব্রণ ও চুলকানি এবং অন্যান্য সংক্রমণ, উচ্চ রক্তচাপ, মাইগ্রেন-জাতীয় মাথাব্যথা, পাকস্থলী ও পরিপাকতন্ত্রের অন্যান্য অংশে প্রদাহ এবং সংক্রমণ।
স্বাস্থ্য সুরক্ষায় পর্যাপ্ত বিশুদ্ধ পানি পান করতে হবে। দূষিত পানি পানে বিভিন্ন অসুখ ও শারীরিক সমস্যা দেখা দিতে পারে। প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের কারণে পানিতে উচ্চমাত্রার আর্সেনিক থাকলে সেখান থেকে আর্সেনিকোসিস নামক রোগ দেখা দেয়। পানিতে প্রয়োজনীয় মাত্রার বেশি ফ্লুরাইড থাকলে দাঁতের গঠনগত ও ক্ষয়জনিত রোগ ফ্লুরোসিস হতে পারে।
উচ্চমাত্রার রাসায়নিক বর্জ্যযুক্ত পানির ক্ষতি উচ্চমাত্রার রাসায়নিক বর্জ্যযুক্ত পানি পানে সেসব ক্ষতি হতে পারে, সেগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো, চুল পড়ে যাওয়া, চুলকানি ও বিভিন্ন চর্মরোগ, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাওয়া এবং বিভিন্ন ধরনের ক্যানসারের প্রবণতা বেড়ে যাওয়া।
বিভিন্ন সময় পানি সরবরাহ পাইপ থেকে পানিতে মিশে যায় সিসা। দীর্ঘদিন সিসাযুক্ত পানি পানে ত্বক, চুল, চোখের অসুখ ছাড়াও রক্তশূন্যতাজনিত বিভিন্ন
রোগ হতে পারে।
খেতে হবে তরল খাবার
শুধু পানিই নয়। পান করতে হবে
প্রতিদিনের পানির পরিমাণ
প্রতিদিনের বিভিন্ন জৈবিক প্রক্রিয়ায়, যেমন ঘাম, মূত্রত্যাগ, মলত্যাগ, শ্বাসপ্রশ্বাস ইত্যাদির মাধ্যমে আমরা ২ থেকে ৩ লিটার পানি হারাই। পক্ষান্তরে শরীরে প্রতিদিন মাত্র ৪০০ মিলিলিটার পানি তৈরি হয়।
তাই একজন মানুষ প্রতিদিন ন্যূনতম কতটুকু পানি পান করবে বয়স, ওজন, লিঙ্গ, কাজের ধরন, আবহাওয়ার পার্থক্য, দীর্ঘমেয়াদি অসুখ ইত্যাদি বিষয়কে বিবেচনা করে পরিমাপ করা হয়।
দৈনিক কমপক্ষে ৮ গ্লাস পানি পান করার প্রয়োজনীয়তা আমরা সবাই জানি। এখানে এক গ্লাসে ২০০ মিলিলিটার পানি হিসাব করা হয়। এটি একটি প্রচলিত কথা। খুব সহজভাবে হিসাব করা হয় যে একজন মানুষের ওজনকে ০.০৩৩ দিয়ে ভাগ করলে যা পাওয়া যায়, তাকে দৈনিক তত মিলিলিটার পানি পান করতে হবে। তাই একজন ৭০ কেজি ওজনের মানুষের দৈনিক কমপক্ষে ২ লিটার বা ১০ গ্লাস পানি পান করা উচিত।
ঠান্ডা নাকি গরম পানি
পানি তো পান করতে হবে, কিন্তু সেই পানি কেমন হলে বেশি স্বাস্থ্যসম্মত হবে, ঠান্ডা নাকি কুসুম গরম। এ প্রশ্ন কখনো কখনো আমাদের মনে জাগে। ঠান্ডা বা কুসুম গরম পানির পক্ষে-বিপক্ষে অনেক যুক্তি থাকলেও সেগুলোর বৈজ্ঞানিক তথ্য-প্রমাণ খুব একটা নেই।
কুসুম গরম পানি পানে শ্বাসতন্ত্রের বিভিন্ন প্রদাহ, হজমের সমস্যা, মাথাব্যথা, ক্লান্তিবোধ ইত্যাদি বিষয়ে উপকার পাওয়া যায়। আবার ঠান্ডা পানি বা বরফের টুকরোমিশ্রিত পানি পানে তীব্র পিপাসা নিবারণে এবং একসঙ্গে বেশি পানি পান করতে সাহায্য করে। তাই ব্যক্তি যে তাপমাত্রার পানি পানে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন এবং পর্যাপ্ত পান করতে পারেন, সেটাই তাঁর গ্রহণ করা উচিত। যদিও বিশেষজ্ঞরা রুম তাপমাত্রার পানিকে বেশি গ্রহণযোগ্য মনে করেন।
ডা. তাহমিদা খানম, মেডিসিন বিশেষজ্ঞ, খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল
গর্ভধারণের আগে দক্ষিণ এশিয়ার বিবাহিত নারীদের মধ্যে অপুষ্টির সমস্যা থেকেই যাচ্ছে। এই পরিস্থিতির আশানুরূপ উন্নতি হয়নি। এ-সংক্রান্ত একটি বিশ্লেষণে আরও দেখা গেছে, এই অঞ্চলে নারীদের স্বাভাবিকের চেয়ে কম ওজন থাকাটা বড় সমস্যা ছিল। কিন্তু এখন দেখা যাচ্ছে, স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি ওজন একটি সমস্যা হিসেবে আবির্ভূত
৩ ঘণ্টা আগেডায়াবেটিস ও ওজন কমানোর চিকিৎসায় বহুল ব্যবহৃত ওষুধ ওজেম্পিক ও ওয়েগোভির মূল উপাদান সেমাগ্লুটাইড। তবে এই ওষুধটির ভিন্ন ব্যবহারও আবিষ্কার করেছেন একদল আন্তর্জাতিক গবেষক। তাঁরা বলেছে, যারা লিভার তথা যকৃতের বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত তাদের চিকিৎসার জন্যও এই ওষুধটি বেশ কার্যকর হতে পারে।
৫ ঘণ্টা আগে‘ডিজিটাল অন্তরঙ্গতা বাস্তব জীবনের প্রতি আগ্রহ নষ্ট করে। তাই শিশুরা যখন গেম খেলে অথবা জীবনসঙ্গীরা যখন গেমে মগ্ন হয়, তারা প্রকৃত ঘনিষ্ঠতার প্রতি আগ্রহ হারায়। শিশুরা পরিবারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা, গুরুত্বপূর্ণ হওয়ার আকাঙ্ক্ষা ও সংযুক্তির প্রয়োজন মেটানোর আগ্রহ হারিয়ে ফেলে; যা তাদের ও মা-বাবার মধ্যকার...
১১ ঘণ্টা আগেকখনো কখনো তীব্র মাথাব্যথা, বমি বমি ভাব, আলো ও শব্দে অসহ্য যন্ত্রণা; এসবের কারণে কাজের জায়গা তো বটেই, ব্যক্তিগত জীবনও প্রভাবিত হতে পারে। এসবই মাইগ্রেন নামের এক নীরব শত্রুর কাজ। অনেকে মাসের পর মাস, এমনকি বছরের পর বছর মাইগ্রেনকে সাধারণ মাথাব্যথা ভেবে অবহেলা করেন। অথচ সময়মতো চিকিৎসা নিলে...
১১ ঘণ্টা আগে