অনলাইন ডেস্ক
বিশ্বজুড়ে ক্যানসারজনিত মৃত্যুর অন্যতম প্রধান কারণ কোলোরেক্টাল ক্যানসার বা কোলন ও রেকটামের ক্যানসার। বয়স ও বংশগতির মতো পরিচিত ঝুঁকির পাশাপাশি বিজ্ঞানীরা এখন নিশ্চিত যে, স্থূলতাও এ ধরনের ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি ৫০ শতাংশ পর্যন্ত বাড়াতে পারে।
বিশ্বব্যাপী স্থূলতার হার বাড়তে থাকায় কোলোরেক্টাল ক্যানসার প্রতিরোধ এবং প্রাথমিক পর্যায়ে তা শনাক্ত করার গুরুত্ব এখন আগের চেয়েও বেশি।
শুধু অতিরিক্ত ওজন থাকাই স্থূলতা নয়। এটি শরীরের হরমোন, রোগ প্রতিরোধব্যবস্থা ও কোষের কার্যকারিতার ওপর প্রভাব ফেলে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, ১৯৭৫ সালের পর থেকে স্থূলতার হার প্রায় তিন গুণ বেড়েছে।
২০২৩ সালেই বিশ্বজুড়ে ৬৫ কোটিরও বেশি প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ স্থূলতার মধ্যে পড়েছেন। এর ফলে নানা স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি হয়েছে, যার মধ্যে কোলোরেক্টাল ক্যানসার একটি।
গবেষণা বলছে, স্থূল ব্যক্তিদের কোলোরেক্টাল ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি স্বাভাবিক ওজনের তুলনায় ৩০ শতাংশ থেকে ৫০ শতাংশ বেশি। বিশেষ করে পেটের আশপাশে জমে থাকা চর্বি দীর্ঘমেয়াদি প্রদাহ সৃষ্টি করে, যা ক্যানসার হওয়ার পেছনে বড় ভূমিকা রাখে।
এ ছাড়া স্থূলতা শরীরের ইনসুলিন ও গ্রোথ হরমোনের কার্যকারিতাও বদলে দেয়, ফলে বৃহদান্ত্রে অস্বাভাবিক কোষ জন্মানোর ঝুঁকি বাড়ে এবং তা ধীরে ধীরে ক্যানসারে রূপ নিতে পারে।
ক্যানসার ও বিপাকক্রিয়ার বিশেষজ্ঞ ডা. মারিয়া থম্পসন বলেন, ‘স্থূলতা এমন এক পরিবেশ তৈরি করে, যেখানে ক্যানসার সহজে জন্মাতে পারে। এ কারণে স্বাস্থ্যকর ওজন ধরে রাখা কোলোরেক্টাল ক্যানসার প্রতিরোধে খুব গুরুত্বপূর্ণ।’
আশ্চর্যের বিষয় হলো—শরীরে মোট কতটা চর্বি আছে, তার চেয়ে কোথায় সেই চর্বি জমছে, তা বেশি গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষ করে পেটের চর্বি, যাকে বলে সেন্ট্রাল অবেসিটি, সবচেয়ে বিপজ্জনক। এটি সাধারণত কোমরের মাপ বা কোমর-নিতম্ব অনুপাত দিয়ে পরিমাপ করা হয়।
২০২৫ সালে জার্নাল অব দ্য আমেরিকান মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনে (জেএএমএ) প্রকাশিত একটি বড় গবেষণায় বলা হয়েছে, পুরুষদের মধ্যে প্রায় এক-চতুর্থাংশ কোলোরেক্টাল ক্যানসার কেবল কেন্দ্রীয় স্থূলতার কারণেই হতে পারে। এর মানে, কারও বিএমআই (বিএসআই) স্বাভাবিক থাকলেও যদি পেটে বেশি চর্বি জমে, তবে তিনিও ঝুঁকিতে রয়েছেন।
যেভাবে প্রতিরোধ সম্ভব
জীবনযাপনে পরিবর্তনই এর প্রধান চাবিকাঠি। গবেষণা বলছে, লাল মাংস ও প্রক্রিয়াজাত মাংস কম খাওয়া এবং বেশি ফল, শাকসবজি ও আঁশযুক্ত খাবার খেলে কোলোরেক্টাল ক্যানসারের ঝুঁকি অনেকটা কমে যায়। নিয়মিত শরীরচর্চা, স্বাস্থ্যকর ওজন বজায় রাখা, ধূমপান ও অতিরিক্ত অ্যালকোহল পরিহার করাও গুরুত্বপূর্ণ।
এমনকি অল্প ওজন কমালেও শরীরের প্রদাহ কমে এবং রক্তে চিনির মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে, যা ক্যানসার প্রতিরোধে সাহায্য করে।
এ ছাড়া প্রাথমিক অবস্থায় ক্যানসার শনাক্ত করাও অত্যন্ত জরুরি। সময়মতো ধরা পড়লে কোলোরেক্টাল ক্যানসারের অনেক সহজেই চিকিৎসা করা যায়। কলোনোস্কোপির মতো প্রচলিত স্ক্রিনিং পদ্ধতি কার্যকর হলেও অনেকেই তা এড়িয়ে চলেন, কারণ এটি কিছুটা অসুবিধাজনক।
এ কারণে ক্যানসার শনাক্তে বড় ভূমিকা রাখতে পারে ‘COLOTECT’ নামের একটি নতুন নন-ইনভেসিভ (অআক্রমণাত্মক) মল পরীক্ষা। এটি মলে থাকা কিছু জিনগত ও অন্যান্য উপাদান শনাক্ত করে, যা কোলোরেক্টাল ক্যানসারের সঙ্গে সম্পর্কিত। এটি ফিক্যাল ইমিউনোকেমিক্যাল টেস্টের (এফআইটি) চেয়ে অনেক বেশি সংবেদনশীল, ফলে আরও আগেভাগেই ক্যানসার ধরা পড়ে।
এই পরীক্ষা সহজে করা যায় এবং হাসপাতাল যাওয়ারও প্রয়োজন পড়ে না। ফলে যাঁরা কলোনোস্কোপি করতে চান না, তাঁদের জন্য এটি একটি কার্যকর বিকল্প হতে পারে।
বিশ্বব্যাপী ক্যানসারের হার ২০৫০ সালের মধ্যে ৭৭ শতাংশ পর্যন্ত বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। তাই কোলোরেক্টাল ক্যানসারের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে চাই বহুমুখী উদ্যোগ—মানুষকে সচেতন করা, স্বাস্থ্যকর জীবনযাপনের পরিবেশ তৈরি করা এবং COLOTECT-এর মতো আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার।
কোলোরেক্টাল ক্যানসার প্রতিরোধ শুধু একটি উপায় নয়, বরং এটি একটি সমন্বিত প্রয়াস—স্বাস্থ্যকর জীবনধারা, কার্যকর স্ক্রিনিং এবং পেটের চর্বির মতো গোপন ঝুঁকিগুলোর সচেতনতা। এখনই ব্যবস্থা নিলে এই প্রাণঘাতী, তবে প্রতিরোধযোগ্য রোগের বিস্তার কমানো সম্ভব।
তথ্যসূত্র: নোরডিজ সায়েন্স
বিশ্বজুড়ে ক্যানসারজনিত মৃত্যুর অন্যতম প্রধান কারণ কোলোরেক্টাল ক্যানসার বা কোলন ও রেকটামের ক্যানসার। বয়স ও বংশগতির মতো পরিচিত ঝুঁকির পাশাপাশি বিজ্ঞানীরা এখন নিশ্চিত যে, স্থূলতাও এ ধরনের ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি ৫০ শতাংশ পর্যন্ত বাড়াতে পারে।
বিশ্বব্যাপী স্থূলতার হার বাড়তে থাকায় কোলোরেক্টাল ক্যানসার প্রতিরোধ এবং প্রাথমিক পর্যায়ে তা শনাক্ত করার গুরুত্ব এখন আগের চেয়েও বেশি।
শুধু অতিরিক্ত ওজন থাকাই স্থূলতা নয়। এটি শরীরের হরমোন, রোগ প্রতিরোধব্যবস্থা ও কোষের কার্যকারিতার ওপর প্রভাব ফেলে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, ১৯৭৫ সালের পর থেকে স্থূলতার হার প্রায় তিন গুণ বেড়েছে।
২০২৩ সালেই বিশ্বজুড়ে ৬৫ কোটিরও বেশি প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ স্থূলতার মধ্যে পড়েছেন। এর ফলে নানা স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি হয়েছে, যার মধ্যে কোলোরেক্টাল ক্যানসার একটি।
গবেষণা বলছে, স্থূল ব্যক্তিদের কোলোরেক্টাল ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি স্বাভাবিক ওজনের তুলনায় ৩০ শতাংশ থেকে ৫০ শতাংশ বেশি। বিশেষ করে পেটের আশপাশে জমে থাকা চর্বি দীর্ঘমেয়াদি প্রদাহ সৃষ্টি করে, যা ক্যানসার হওয়ার পেছনে বড় ভূমিকা রাখে।
এ ছাড়া স্থূলতা শরীরের ইনসুলিন ও গ্রোথ হরমোনের কার্যকারিতাও বদলে দেয়, ফলে বৃহদান্ত্রে অস্বাভাবিক কোষ জন্মানোর ঝুঁকি বাড়ে এবং তা ধীরে ধীরে ক্যানসারে রূপ নিতে পারে।
ক্যানসার ও বিপাকক্রিয়ার বিশেষজ্ঞ ডা. মারিয়া থম্পসন বলেন, ‘স্থূলতা এমন এক পরিবেশ তৈরি করে, যেখানে ক্যানসার সহজে জন্মাতে পারে। এ কারণে স্বাস্থ্যকর ওজন ধরে রাখা কোলোরেক্টাল ক্যানসার প্রতিরোধে খুব গুরুত্বপূর্ণ।’
আশ্চর্যের বিষয় হলো—শরীরে মোট কতটা চর্বি আছে, তার চেয়ে কোথায় সেই চর্বি জমছে, তা বেশি গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষ করে পেটের চর্বি, যাকে বলে সেন্ট্রাল অবেসিটি, সবচেয়ে বিপজ্জনক। এটি সাধারণত কোমরের মাপ বা কোমর-নিতম্ব অনুপাত দিয়ে পরিমাপ করা হয়।
২০২৫ সালে জার্নাল অব দ্য আমেরিকান মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনে (জেএএমএ) প্রকাশিত একটি বড় গবেষণায় বলা হয়েছে, পুরুষদের মধ্যে প্রায় এক-চতুর্থাংশ কোলোরেক্টাল ক্যানসার কেবল কেন্দ্রীয় স্থূলতার কারণেই হতে পারে। এর মানে, কারও বিএমআই (বিএসআই) স্বাভাবিক থাকলেও যদি পেটে বেশি চর্বি জমে, তবে তিনিও ঝুঁকিতে রয়েছেন।
যেভাবে প্রতিরোধ সম্ভব
জীবনযাপনে পরিবর্তনই এর প্রধান চাবিকাঠি। গবেষণা বলছে, লাল মাংস ও প্রক্রিয়াজাত মাংস কম খাওয়া এবং বেশি ফল, শাকসবজি ও আঁশযুক্ত খাবার খেলে কোলোরেক্টাল ক্যানসারের ঝুঁকি অনেকটা কমে যায়। নিয়মিত শরীরচর্চা, স্বাস্থ্যকর ওজন বজায় রাখা, ধূমপান ও অতিরিক্ত অ্যালকোহল পরিহার করাও গুরুত্বপূর্ণ।
এমনকি অল্প ওজন কমালেও শরীরের প্রদাহ কমে এবং রক্তে চিনির মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে, যা ক্যানসার প্রতিরোধে সাহায্য করে।
এ ছাড়া প্রাথমিক অবস্থায় ক্যানসার শনাক্ত করাও অত্যন্ত জরুরি। সময়মতো ধরা পড়লে কোলোরেক্টাল ক্যানসারের অনেক সহজেই চিকিৎসা করা যায়। কলোনোস্কোপির মতো প্রচলিত স্ক্রিনিং পদ্ধতি কার্যকর হলেও অনেকেই তা এড়িয়ে চলেন, কারণ এটি কিছুটা অসুবিধাজনক।
এ কারণে ক্যানসার শনাক্তে বড় ভূমিকা রাখতে পারে ‘COLOTECT’ নামের একটি নতুন নন-ইনভেসিভ (অআক্রমণাত্মক) মল পরীক্ষা। এটি মলে থাকা কিছু জিনগত ও অন্যান্য উপাদান শনাক্ত করে, যা কোলোরেক্টাল ক্যানসারের সঙ্গে সম্পর্কিত। এটি ফিক্যাল ইমিউনোকেমিক্যাল টেস্টের (এফআইটি) চেয়ে অনেক বেশি সংবেদনশীল, ফলে আরও আগেভাগেই ক্যানসার ধরা পড়ে।
এই পরীক্ষা সহজে করা যায় এবং হাসপাতাল যাওয়ারও প্রয়োজন পড়ে না। ফলে যাঁরা কলোনোস্কোপি করতে চান না, তাঁদের জন্য এটি একটি কার্যকর বিকল্প হতে পারে।
বিশ্বব্যাপী ক্যানসারের হার ২০৫০ সালের মধ্যে ৭৭ শতাংশ পর্যন্ত বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। তাই কোলোরেক্টাল ক্যানসারের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে চাই বহুমুখী উদ্যোগ—মানুষকে সচেতন করা, স্বাস্থ্যকর জীবনযাপনের পরিবেশ তৈরি করা এবং COLOTECT-এর মতো আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার।
কোলোরেক্টাল ক্যানসার প্রতিরোধ শুধু একটি উপায় নয়, বরং এটি একটি সমন্বিত প্রয়াস—স্বাস্থ্যকর জীবনধারা, কার্যকর স্ক্রিনিং এবং পেটের চর্বির মতো গোপন ঝুঁকিগুলোর সচেতনতা। এখনই ব্যবস্থা নিলে এই প্রাণঘাতী, তবে প্রতিরোধযোগ্য রোগের বিস্তার কমানো সম্ভব।
তথ্যসূত্র: নোরডিজ সায়েন্স
এডিস মশাবাহিত ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে কারও মৃত্যু হয়নি। তবে এ সময়ে সারা দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে আরও ১৯০ জন রোগী। আজ শুক্রবার (৮ আগস্ট) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ অ্যান্ড ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
১১ ঘণ্টা আগেবাংলাদেশে গত ২৪ ঘণ্টায় (গতকাল বুধবার সকাল ৮টা থেকে আজ বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা পর্যন্ত) ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে আরও তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। একই সময়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে আরও ৪০৮ জন ডেঙ্গু রোগী।
১ দিন আগেদেশে গত ২৪ ঘণ্টায় এডিস মশাবাহিত রোগ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে আরও তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। একই সময়ে ৩১৯ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। আজ মঙ্গলবার (৫ আগস্ট) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোলরুম থেকে পাঠানো ডেঙ্গুবিষয়ক এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
৩ দিন আগেদেশে গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে আরও দুজন চিকিৎসাধীন রোগীর মৃত্যু হয়েছে। এ ছাড়া আরও ৩৯৫ জন ডেঙ্গু রোগী সারা দেশের হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে।
৪ দিন আগে