Ajker Patrika

ইসি কি বিতর্কমুক্ত হতে চায় না

সম্পাদকীয়
ইসি কি বিতর্কমুক্ত হতে চায় না

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হবে কি না, তা এখনো নিশ্চিত নয়। তবে দেশি-বিদেশি নানা মহলের তৎপরতায় সরকার এটা বলছে যে আগামী নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ হবে। নভেম্বর মাসের যেকোনো দিন নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হবে বলেও একজন নির্বাচন কমিশনার জানিয়েছেন। নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে নানা রকম তথ্য প্রকাশ করা হচ্ছে। যেমন জানানো হয়েছে, নির্বাচনব্যবস্থা সহজ করতে একটি অ্যাপ তৈরি হচ্ছে এবং এটি আগামী নভেম্বরে চালু করার আশাবাদও 
ব্যক্ত করা হয়েছে। তবে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে নির্বাচন কমিশন (ইসি) ৬৮টি পর্যবেক্ষক 
সংস্থার প্রাথমিক যে তালিকা প্রকাশ করেছে, তা ইসিকে বিতর্কিত করবে বলেই মনে হচ্ছে।

আজকের পত্রিকায় এই প্রতিষ্ঠানগুলো সম্পর্কে একটি চমৎকার প্রতিবেদন ছাপা হয়েছে বৃহস্পতিবার। ‘চাল-চুলাহীন নামসর্বস্ব প্রতিষ্ঠানের ছড়াছড়ি’ শিরোনামের ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ৬৮টির মধ্যে ৩৯টি সংস্থার কার্যালয় পরিদর্শন করেছেন আজকের পত্রিকার সংবাদকর্মীরা। তাতে দেখা গেছে, বেশির ভাগ প্রতিষ্ঠানই নামসর্বস্ব। সেগুলোর এমনই চাল-চুলাহীন অবস্থা যে অনেক প্রতিষ্ঠানের অফিসও নেই। যে কয়েকটির অফিস আছে, সেগুলো জরাজীর্ণ, এমনকি অফিস পাওয়া গেছে কৃষিজমিতেও। 
এমন সব প্রতিষ্ঠানকে নির্বাচন পর্যবেক্ষণের জন্য কোন বিবেচনায় ও প্রক্রিয়ায় প্রাথমিকভাবে বাছাই করেছে ইসি, সে প্রশ্ন করাই যায়। নির্বাচন পর্যবেক্ষণের জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ আরও অনেকের আগ্রহ আছে। বিষয়টি ছেলেখেলা নয়।

আমাদের আগামী নির্বাচনের প্রতি যে আন্তর্জাতিক নজর আছে, সেটা নির্বাচন কমিশনেরও অজানা নয়। তার পরও এমন সব দেশীয় সংগঠনকে কেন পর্যবেক্ষক হিসেবে বাছাই করা হচ্ছে, যারা নামসর্বস্ব ও চাল-চুলাহীন?

 এমনিতেই নির্বাচন কমিশনের ওপর দেশের সব রাজনৈতিক দলের আস্থা-বিশ্বাস কম। এই কমিশন সাহস ও সততার সঙ্গে একটি বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন তদারকিতে সক্ষম কি না, সেই সংশয় যখন প্রবল, তখন ইসির তো উচিত এমন কিছু না করা, যা নিয়ে বিতর্ক তৈরি হতে পারে। কিন্তু ইসি কেন সেই পথে হাঁটছে না?   
নির্বাচন পর্যবেক্ষণ নীতিমালায় বলা আছে, ‘পর্যবেক্ষক হিসেবে নিয়োজিত ব্যক্তির কোনো রাজনৈতিক দল বা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী কোনো প্রার্থীর সঙ্গে ব্যক্তিগত স্বার্থসংশ্লিষ্টতা থাকিতে পারিবে না; কোনো রাজনৈতিক দল বা এর কোনো অঙ্গসংগঠনের সঙ্গে কোনোভাবে যুক্ত কেহ নির্বাচন পর্যবেক্ষক হইতে পারিবেন না।’ 

পর্যবেক্ষক সংস্থা নিয়োগের আগে ইসি কি নিজেদের নীতিমালা ভালোভাবে পড়ে দেখেছে? যদি নীতিমালা পড়া থাকে, তাহলে ইসির তালিকায় থাকা অনেক পর্যবেক্ষক সংস্থার প্রধানই রাজনৈতিক দলের পদবিধারী হন কীভাবে?

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে,  রাজশাহীর স্বাস্থ্য শিক্ষা সেবা ফাউন্ডেশনের (সেফ) নাম আছে তালিকায়। জানা যায়, এর প্রধান রুপন কুমার দত্ত রাজশাহী মহানগর তাঁতী লীগের সিনিয়র সভাপতি। আবার তালিকায় থাকা ডেমক্রেসিওয়াচের ঠিকানায় গিয়ে দেখা গেছে, সেটি মূলত তালেয়া রেহমানের বাসভবন। তিনি স্বামী শফিক রেহমানসহ চার বছর ধরে লন্ডনে আছেন।  
ইসি কি নতুন করে ভাববে?

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত