কাজী ফারজানা আফরীন
আল্লাহ তাআলা পৃথিবীবাসীর কাছে হেদায়াতের বার্তা পৌঁছে দিতে যুগে যুগে নবী-রাসুল পাঠিয়েছেন। পবিত্র কোরআনে এরশাদ হচ্ছে, ‘আর স্মরণ করো, যখন তোমার রব আদম সন্তানদের পিঠ থেকে তাদের বংশধরদের বের করলেন এবং তাদেরকে তাদের নিজেদের জন্য সাক্ষী বানালেন এই মর্মে যে—আমি কি তোমাদের রব নই? তারা বলল, নিশ্চয়ই! আমরা সাক্ষ্য দিলাম। যাতে কিয়ামতের দিন তোমরা বলতে না পারো যে নিশ্চয়ই আমরা এ বিষয়ে অনবগত ছিলাম।’ (সুরা আরাফ: ১৭২) তাই নবী-রাসুলদের আগমনের প্রধান উদ্দেশ্য হলো, ভুলে যাওয়া সেই অঙ্গীকার মানুষকে স্মরণ করিয়ে দেওয়া এবং সেই অনুযায়ী আনুগত্যের পথে জীবন পরিচালনা করা।
নবুওয়তের ধারার সর্বশেষ নবী ও রাসুল হলেন মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)। তাঁর আগমনের মাধ্যমে নবুওয়ত ও রিসালাত পূর্ণতা পেয়েছে, নবী-রাসুলের আগমনের সমাপ্তি ঘটেছে। মহানবী (সা.)-কে পৃথিবীতে পাঠানোর লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য বয়ান করে পবিত্র কোরআনে বিভিন্ন সুরা ও আয়াত নাজিল করা হয়েছে। যার সারকথা মূলত ৩টি: ১. পুরো বিশ্বের মানুষকে হেদায়াতের পথ দেখানো, ২. আল্লাহর বিধান জানিয়ে দেওয়া এবং ৩. অহিভিত্তিক জ্ঞান প্রচার করে তা সমাজে প্রতিষ্ঠা করা।
মহান আল্লাহ বলেন, ‘আমি সুসংবাদদাতা ও সাবধানকারী রাসুল প্রেরণ করেছি, যাতে তার আগমনের পর আল্লাহর বিরুদ্ধে মানুষের কোনো অভিযোগ না থাকে।’ (সুরা নিসা: ১৬৫) তাই তাঁর আগমনের অন্যতম উদ্দেশ্য ছিল মানুষকে সিরাতে মুস্তাকিম তথা সত্য-সরল পথ দেখানো। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘নিশ্চয়ই আপনি প্রেরিত রাসুলদের একজন। সরল পথে প্রতিষ্ঠিত।’ (সুরা ইয়াসিন: ৩-৪) অন্য আয়াতে এরশাদ হয়েছে, ‘আর রাসুল তোমাদের যা দেন, তা তোমরা গ্রহণ করো এবং যা তোমাদের নিষেধ করেন, তা থেকে বিরত থেকো।’ (সুরা হাশর: ৭)
মহানবী (সা.)-কে বিশেষ কোনো জাতি বা গোষ্ঠীর হেদায়াতের জন্য পাঠানো হয়নি; বিশেষ কোনো দেশ বা অঞ্চলের জন্যও তাঁকে পাঠানো হয়নি; বরং তাঁকে পুরো বিশ্বের সব মানুষের হেদায়াতের জন্য পাঠানো হয়েছে। এরশাদ হয়েছে, ‘আর আমি আপনাকে পাঠিয়েছি পুরো মানবতার জন্য সুসংবাদদাতা ও সাবধানকারী হিসেবে; কিন্তু অধিকাংশ মানুষ জানে না।’ (সুরা সাবা: ২৮) অন্য আয়াতে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘হে নবী, আমি আপনাকে বিশ্বজগতের রহমত বানিয়ে পাঠিয়েছি।’ (সুরা আম্বিয়া: ১০৭)
উন্নত চরিত্র ও কল্যাণকামিতা শেখাতেই তাঁর আগমন। নিজের আগমনের উদ্দেশ্য সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘আমাকে উন্নত চরিত্রের পূর্ণতা দিতে পাঠানো হয়েছে।’ (তিরমিজি) তিনি আরও বলেন, ‘আমি শিক্ষকরূপেই প্রেরিত হয়েছি।’ (মুসলিম)
সব নবী-রাসুলের সরদার তিনি। তাঁর পরে আর কোনো নবী আসবেন না। মহান আল্লাহর প্রিয় বন্ধু তিনি। তাঁর অনুসরণেই দুনিয়া-আখেরাতে মুক্তি মিলবে। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘হে নবী, বলুন, তোমরা যদি আল্লাহর ভালোবাসা পেতে চাও, তবে আমার অনুসরণ করো; তাহলেই আল্লাহ তোমাদের ভালোবাসবেন।’ (সুরা আলে ইমরান: ৩১)
তিনি পৃথিবীতে এসেছিলেন আল্লাহ ও বান্দার মধ্যে সেতুবন্ধন তৈরি করতে। এ বিষয়ে মহানবী (সা.) বলেন, ‘আমি আল্লাহর প্রিয়তম বন্ধু; অহংকার করছি না।’ (বুখারি)
তিনি রহমত ও করুণার আধার। তিনিই আল্লাহর রহমত বণ্টনকারী। তিনি বলেন, ‘আমি বণ্টনকারী, আল্লাহ দাতা।’ (তিরমিজি)
তিনিই উম্মতের মুক্তির সুপারিশকারী। এরশাদ হচ্ছে, ‘আমার উম্মতের বড় বড় গুনাহগার অপরাধীদের জন্য আমি সুপারিশ করব।’ (বুখারি) সুপারিশ লাভের উপায় সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘যে আমার রওজা জিয়ারত করল, তার জন্য সুপারিশ করা আমার ওপর ওয়াজিব হয়ে গেল।’ (বুখারি ও মুসলিম)
কোমলতা, দরদ ও মহব্বতের ভান্ডার তিনি। মানুষের কল্যাণকামনা ও পরকালীন সাফল্যচিন্তায় ব্যাকুল থাকতেন। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আল্লাহর অনুগ্রহ যে আপনি তাদের প্রতি কোমল-হৃদয় হয়েছিলেন। যদি আপনি রূঢ় ও কঠিনচিত্ত হতেন, তবে তারা আপনার আশপাশ থেকে সরে যেত। কাজেই আপনি তাদের অপরাধ ক্ষমা করে দিন, তাদের জন্য ক্ষমাপ্রার্থনা করুন এবং দীন ইসলামের কাজে তাদের সঙ্গে পরামর্শ করুন।’ (সুরা আলে ইমরাম: ১৫৯)
মোটকথা, তাঁর আগমনের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য হলো—অসুন্দর, অন্যায়, অপরাধ ও মন্দ কাজের অশুভ পরিণতি সম্পর্কে মানুষকে সতর্ক করা এবং সুন্দর, ন্যায়, পরোপকার, কল্যাণকামিতা ও সৎ কাজের ফলাফল সম্পর্কে মানুষকে সুসংবাদ দিয়ে কল্যাণের পথে পরিচালিত করা। দায়িত্ব পালনে তিনি শতভাগ সফল। বিদায় হজের ময়দানে লক্ষাধিক সাহাবি তাঁর দায়িত্ব পালনের সাক্ষ্য দিয়েছেন। তাঁর আদর্শের আলোয় আলোকিত হয়েছে পুরো পৃথিবী।
লেখক: সহকারী অধ্যাপক, ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
আল্লাহ তাআলা পৃথিবীবাসীর কাছে হেদায়াতের বার্তা পৌঁছে দিতে যুগে যুগে নবী-রাসুল পাঠিয়েছেন। পবিত্র কোরআনে এরশাদ হচ্ছে, ‘আর স্মরণ করো, যখন তোমার রব আদম সন্তানদের পিঠ থেকে তাদের বংশধরদের বের করলেন এবং তাদেরকে তাদের নিজেদের জন্য সাক্ষী বানালেন এই মর্মে যে—আমি কি তোমাদের রব নই? তারা বলল, নিশ্চয়ই! আমরা সাক্ষ্য দিলাম। যাতে কিয়ামতের দিন তোমরা বলতে না পারো যে নিশ্চয়ই আমরা এ বিষয়ে অনবগত ছিলাম।’ (সুরা আরাফ: ১৭২) তাই নবী-রাসুলদের আগমনের প্রধান উদ্দেশ্য হলো, ভুলে যাওয়া সেই অঙ্গীকার মানুষকে স্মরণ করিয়ে দেওয়া এবং সেই অনুযায়ী আনুগত্যের পথে জীবন পরিচালনা করা।
নবুওয়তের ধারার সর্বশেষ নবী ও রাসুল হলেন মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)। তাঁর আগমনের মাধ্যমে নবুওয়ত ও রিসালাত পূর্ণতা পেয়েছে, নবী-রাসুলের আগমনের সমাপ্তি ঘটেছে। মহানবী (সা.)-কে পৃথিবীতে পাঠানোর লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য বয়ান করে পবিত্র কোরআনে বিভিন্ন সুরা ও আয়াত নাজিল করা হয়েছে। যার সারকথা মূলত ৩টি: ১. পুরো বিশ্বের মানুষকে হেদায়াতের পথ দেখানো, ২. আল্লাহর বিধান জানিয়ে দেওয়া এবং ৩. অহিভিত্তিক জ্ঞান প্রচার করে তা সমাজে প্রতিষ্ঠা করা।
মহান আল্লাহ বলেন, ‘আমি সুসংবাদদাতা ও সাবধানকারী রাসুল প্রেরণ করেছি, যাতে তার আগমনের পর আল্লাহর বিরুদ্ধে মানুষের কোনো অভিযোগ না থাকে।’ (সুরা নিসা: ১৬৫) তাই তাঁর আগমনের অন্যতম উদ্দেশ্য ছিল মানুষকে সিরাতে মুস্তাকিম তথা সত্য-সরল পথ দেখানো। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘নিশ্চয়ই আপনি প্রেরিত রাসুলদের একজন। সরল পথে প্রতিষ্ঠিত।’ (সুরা ইয়াসিন: ৩-৪) অন্য আয়াতে এরশাদ হয়েছে, ‘আর রাসুল তোমাদের যা দেন, তা তোমরা গ্রহণ করো এবং যা তোমাদের নিষেধ করেন, তা থেকে বিরত থেকো।’ (সুরা হাশর: ৭)
মহানবী (সা.)-কে বিশেষ কোনো জাতি বা গোষ্ঠীর হেদায়াতের জন্য পাঠানো হয়নি; বিশেষ কোনো দেশ বা অঞ্চলের জন্যও তাঁকে পাঠানো হয়নি; বরং তাঁকে পুরো বিশ্বের সব মানুষের হেদায়াতের জন্য পাঠানো হয়েছে। এরশাদ হয়েছে, ‘আর আমি আপনাকে পাঠিয়েছি পুরো মানবতার জন্য সুসংবাদদাতা ও সাবধানকারী হিসেবে; কিন্তু অধিকাংশ মানুষ জানে না।’ (সুরা সাবা: ২৮) অন্য আয়াতে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘হে নবী, আমি আপনাকে বিশ্বজগতের রহমত বানিয়ে পাঠিয়েছি।’ (সুরা আম্বিয়া: ১০৭)
উন্নত চরিত্র ও কল্যাণকামিতা শেখাতেই তাঁর আগমন। নিজের আগমনের উদ্দেশ্য সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘আমাকে উন্নত চরিত্রের পূর্ণতা দিতে পাঠানো হয়েছে।’ (তিরমিজি) তিনি আরও বলেন, ‘আমি শিক্ষকরূপেই প্রেরিত হয়েছি।’ (মুসলিম)
সব নবী-রাসুলের সরদার তিনি। তাঁর পরে আর কোনো নবী আসবেন না। মহান আল্লাহর প্রিয় বন্ধু তিনি। তাঁর অনুসরণেই দুনিয়া-আখেরাতে মুক্তি মিলবে। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘হে নবী, বলুন, তোমরা যদি আল্লাহর ভালোবাসা পেতে চাও, তবে আমার অনুসরণ করো; তাহলেই আল্লাহ তোমাদের ভালোবাসবেন।’ (সুরা আলে ইমরান: ৩১)
তিনি পৃথিবীতে এসেছিলেন আল্লাহ ও বান্দার মধ্যে সেতুবন্ধন তৈরি করতে। এ বিষয়ে মহানবী (সা.) বলেন, ‘আমি আল্লাহর প্রিয়তম বন্ধু; অহংকার করছি না।’ (বুখারি)
তিনি রহমত ও করুণার আধার। তিনিই আল্লাহর রহমত বণ্টনকারী। তিনি বলেন, ‘আমি বণ্টনকারী, আল্লাহ দাতা।’ (তিরমিজি)
তিনিই উম্মতের মুক্তির সুপারিশকারী। এরশাদ হচ্ছে, ‘আমার উম্মতের বড় বড় গুনাহগার অপরাধীদের জন্য আমি সুপারিশ করব।’ (বুখারি) সুপারিশ লাভের উপায় সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘যে আমার রওজা জিয়ারত করল, তার জন্য সুপারিশ করা আমার ওপর ওয়াজিব হয়ে গেল।’ (বুখারি ও মুসলিম)
কোমলতা, দরদ ও মহব্বতের ভান্ডার তিনি। মানুষের কল্যাণকামনা ও পরকালীন সাফল্যচিন্তায় ব্যাকুল থাকতেন। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আল্লাহর অনুগ্রহ যে আপনি তাদের প্রতি কোমল-হৃদয় হয়েছিলেন। যদি আপনি রূঢ় ও কঠিনচিত্ত হতেন, তবে তারা আপনার আশপাশ থেকে সরে যেত। কাজেই আপনি তাদের অপরাধ ক্ষমা করে দিন, তাদের জন্য ক্ষমাপ্রার্থনা করুন এবং দীন ইসলামের কাজে তাদের সঙ্গে পরামর্শ করুন।’ (সুরা আলে ইমরাম: ১৫৯)
মোটকথা, তাঁর আগমনের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য হলো—অসুন্দর, অন্যায়, অপরাধ ও মন্দ কাজের অশুভ পরিণতি সম্পর্কে মানুষকে সতর্ক করা এবং সুন্দর, ন্যায়, পরোপকার, কল্যাণকামিতা ও সৎ কাজের ফলাফল সম্পর্কে মানুষকে সুসংবাদ দিয়ে কল্যাণের পথে পরিচালিত করা। দায়িত্ব পালনে তিনি শতভাগ সফল। বিদায় হজের ময়দানে লক্ষাধিক সাহাবি তাঁর দায়িত্ব পালনের সাক্ষ্য দিয়েছেন। তাঁর আদর্শের আলোয় আলোকিত হয়েছে পুরো পৃথিবী।
লেখক: সহকারী অধ্যাপক, ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
পাকিস্তানে ভারতের হামলার সমালোচনা করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। চীনও এই হামলাকে ‘দুঃখজনক’ বলে অভিহিত করেছে। উদ্বেগ জানিয়েছে জাতিসংঘও। উত্তেজনা যেন আরও না বাড়ে, সে জন্য দুই পক্ষকে সংযত থাকার আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘ, ফ্রান্সসহ বিভিন্ন দেশ। এদিকে ভারতের অবস্থানকে সমর্থন করেছে...
৩৬ মিনিট আগেভারতনিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলা নিয়ে দুই চিরবৈরী প্রতিবেশীর মধ্যে উত্তেজনার পারদ ক্রমেই চড়ছিল। তা তুঙ্গে উঠল এবার পাকিস্তানের ভূখণ্ডে ভারতের ‘অপারেশন সিঁদুর’ নামের ক্ষেপণাস্ত্র ও বিমান হামলা দিয়ে। পাশাপাশি সীমান্তেও দুই দেশের সামরিক বাহিনীর মধ্যে ব্যাপক গোলাগুলি হয়েছে...
৩ ঘণ্টা আগেঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লা এলাকায় যাত্রীবাহী বাসে ডাকাতি বেড়েই চলছে। এ কারণে চালক ও যাত্রীদের কাছে আতঙ্কের নাম হয়ে উঠছে এই সড়ক। ডাকাতির শিকার বেশি হচ্ছেন প্রবাসফেরত লোকজন। ডাকাতেরা অস্ত্র ঠেকিয়ে লুট করে নিচ্ছে সর্বস্ব। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পরিচয়েও ঘটছে ডাকাতির ঘটনা।
০২ মার্চ ২০২৫বিআরটিসির বাস দিয়ে চালু করা বিশেষায়িত বাস র্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) লেনে অনুমতি না নিয়েই চলছে বেসরকারি কোম্পানির কিছু বাস। ঢুকে পড়ছে সিএনজিচালিত অটোরিকশা, ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা। উল্টো পথে চলছে মোটরসাইকেল। অন্যদিকে বিআরটিসির মাত্র ১০টি বাস চলাচল করায় সোয়া চার হাজার কোটি টাকার এই প্রকল্প থেকে...
১৬ জানুয়ারি ২০২৫