Ajker Patrika

পাঠাগার নেই ১১৩ প্রতিষ্ঠানে, বেতন আছে গ্রন্থাগারিকদের

রেজা মাহমুদ, সৈয়দপুর (নীলফামারী)
পাঠাগার নেই ১১৩ প্রতিষ্ঠানে, বেতন আছে গ্রন্থাগারিকদের

প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাঠাগার থাকার কথা থাকলেও নীলফামারীর সৈয়দপুরে ১৩১ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মধ্য ১১৩টিতে তা নেই। কোনো কোনো বিদ্যালয়ে পাঠাগার থাকলেও সেসব ধুলাবালুতে বইয়ের গুদামঘরে পরিণত হয়েছে। এসব লাইব্রেরিতে বসার পরিবেশ নেই। অনেক শিক্ষার্থী জানেই না তাঁদের প্রতিষ্ঠানে লাইব্রেরি আছে।

অথচ এসবের মধ্যে বেশির ভাগ প্রতিষ্ঠানে লাইব্রেরিয়ান পদে লোক রয়েছেন যাঁরা সরকারি বেতন পাচ্ছেন। এমনটি জানিয়েছেন ওই সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কয়েকজন শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও অভিভাবকেরা।

সৈয়দপুর উপজেলা শিক্ষা কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলায় ৭৫টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একটিতেও নেই পাঠাগার, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ১৯টির মধ্যে নেই ১০টিতে, নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় ১০টির মধ্যে আটটিতে, স্কুল অ্যান্ড কলেজ ১১টির মধ্যে নেই পাঁচটিতে ও ১৬টি মাদ্রাসার মধ্যে আটটিতে নেই পাঠাগার।

সরেজমিনে দেখা গেছে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে কয়েকটি বাদে অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানে লাইব্রেরি নেই। কোনোটিতে গ্রন্থাগারিক আছে, কিন্তু গ্রন্থাগার নেই। কোনোটিতে কিছু বই থাকলেও তা স্টাফ রুমের আলমারিতে রাখা হয়েছে। কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে গ্রন্থাগার থাকলেও কিন্তু তা খোলা হয় না। আবার কোনোটির গ্রন্থাগার কক্ষকে বানানো হয়েছে স্টোর রুম কিংবা ডিজিটাল ল্যাব।

উপজেলার প্রাচীন বিদ্যাপীঠ সৈয়দপুর রেলওয়ে সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা গেছে, বিদ্যালয়ের গ্রন্থাগারের করুণ দশা। একটি পরিত্যক্ত কক্ষের মেঝেতে কিছু বই ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে। তালাবদ্ধ জরাজীর্ণ পাঠাগার ঘরটিতে ভাঙাচোরা দুটি আলমারিতে কয়েক সারি বই। যার অধিকাংশই পুরোনো, মলাট ছেঁড়া। আলমারি ও বইয়ে ধুলার স্তূপ। মাকড়সার জাল ছেয়ে আছে এদিক-ওদিক। এই বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা জানায়, বিদ্যালয়ে গ্রন্থাগার আছে কি না, তা তারা জানে না।

এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মাসুদ রানা বলেন, ‘গ্রন্থাগারিক পদ থাকলেও দীর্ঘদিন ধরে এ পদটি শূন্য। তা ছাড়া, পাঠাগার তো পরের কথা ক্লাসরুমেরই সংকট। কক্ষ স্বল্পতার কারণে স্টোররুমে বইগুলো রাখা হয়েছে।’

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক উপজেলার একাধিক মাধ্যমিক স্কুল ও কলেজের গ্রন্থাগারিক বলেন, প্রতিষ্ঠানে গ্রন্থাগারের জন্য আলাদা একটি ফান্ড আছে। যার নামমাত্র একটি অংশ গ্রন্থাগারের কাজে লাগানো হয়। বাকি অর্থ খরচ করা হয় অন্য খাতে। যার কারণে গ্রন্থাগারের জরাজীর্ণ অবস্থার অবসান হচ্ছে না। তা ছাড়া, একাডেমিক সিলেবাসের চাপে যেখানে শিক্ষার্থীরা এমনিতেই পর্যুদস্ত অবস্থা; সেখানে জরাজীর্ণ পরিবেশে সাহিত্য কিংবা ভিন্ন বিষয়ের বই পড়তে শিক্ষার্থীদের তেমন আগ্রহ নেই।

এ নিয়ে কথা হয় সৈয়দপুর উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আবু সাঈদ মো. আবদুল ওয়াহিদের সঙ্গে। তিনি বলেন, মাধ্যমিক থেকে একাডেমিক অনুমোদন নেওয়ার সময় সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান লিখিত মুচলেকা দেয় যে তারা নিজ উদ্যোগে লাইব্রেরি গড়ে তুলবে। এই শর্ত মেনেই অনুমোদন দেওয়া হয়।

আবদুল ওয়াহিদ আরও বলেন, ‘আমি এ উপজেলায় নবাগত। তাই কোন প্রতিষ্ঠানে গ্রন্থাগার আছে আর কোনটিতে নেই তা আমার জানা নেই। এ বিষয়ে খোঁজখবর নেওয়া হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মামলার আসামিসহ বিএসইসির ২২ কর্মকর্তাকে বরখাস্তের সিদ্ধান্ত

‘ভারতে ঢুকে’ পাকিস্তানি সেনাদের গুলি, সীমান্তে সংঘাত গড়াল ষষ্ঠ দিনে

বন্ধুকে ছাত্রলীগ সাজিয়ে পুলিশে দিয়ে তাঁর প্রেমিকাকে ধর্ষণ করলেন ছাত্রদল নেতা

মানিকগঞ্জে রাতের আঁধারে স্থানান্তর করা বিদ্যালয় ভবন পরিদর্শনে কর্মকর্তারা

পরিপাকতন্ত্রের ওষুধের পেছনেই মানুষের ব্যয় সাড়ে ৫ হাজার কোটি টাকা

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত