Ajker Patrika

গণতন্ত্র লাইফ সাপোর্টে নির্বাচন আইসিইউতে

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ১৫ নভেম্বর ২০২১, ১০: ০৭
গণতন্ত্র লাইফ সাপোর্টে  নির্বাচন আইসিইউতে

নির্বাচন কমিশনের মেয়াদ আর তিন মাস। এই সময় যতই যাচ্ছে ততই যেন উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ছেন বর্তমান কমিশনের দায়িত্বে থাকা জ্যেষ্ঠ কমিশনার মাহবুব তালুকদার। নির্বাচনব্যবস্থা, বিনা ভোটে প্রার্থীদের বিজয়, সহিংসতা, নির্বাচন কমিশনের আইন প্রণয়নসহ নানা কারণে উদ্বিগ্ন তিনি। সার্বিক অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে মাহবুব তালুকদার নির্বাচনব্যবস্থা এখন ‘আইসিইউতে’ রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন। গতকাল রোববার আগারগাঁওয়ে নিজ কার্যালয়ে তিনি এ মন্তব্য করেন।

মাহবুব তালুকদার বলেন, ‘প্রকৃত পক্ষে নির্বাচন এখন আইসিইউতে’। এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হিসেবে গণতন্ত্র এখন ‘লাইফ সাপোর্টে’। কথাগুলোর ব্যাখ্যা করা যেতে পারে। দেশে প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর অসহিষ্ণু মনোভাব গণতন্ত্রকে অন্তিম অবস্থায় নিয়ে গেছে। খেলায় যেমন পক্ষ-বিপক্ষের প্রয়োজন হয়, তেমনই একপক্ষীয় কোনো গণতন্ত্র হয় না। বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য দলমত-নির্বিশেষে ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টার প্রয়োজন বলেও মনে করেন এই নির্বাচন কমিশনার।

বর্তমান সংকট দূর করার ক্ষেত্রে সংবিধান অনুযায়ী আইন প্রণয়ন জরুরি। তবে সে আইন ৫০ বছরেও প্রণয়ন হয়নি। অবশ্য নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কারের জন্য আইন প্রণয়ন আবশ্যক হলেও তা যথেষ্ট নয় বলে দাবি মাহবুব তালুকদারের। তাঁর মতে, ‘একপক্ষীয় আইন করে কোনো লাভ হবে না। একপক্ষীয় আইন কেবল একদলীয় শাসনের পথ উন্মুক্ত করে। বিষয়টির যত তাড়াতাড়ি ফয়সালা হয় ততই ভালো। নইলে দেশব্যাপী নৈরাজ্যের আশঙ্কা আছে।’

সদ্য শেষ হওয়া ইউনিয়ন পরিষদের দ্বিতীয় ধাপের ভোটের সহিংসতা প্রসঙ্গ টেনে নির্বাচনকে ‘রক্তাক্ত নির্বাচন’ বলে আখ্যা দিয়েছেন মাহবুব তালুকদার। ভোটের আগে-পরে ৩৯ জনের প্রাণহানি ঘটেছে, যা নজিরবিহীন। নিজের ব্যর্থতার দায় স্বীকার করে তিনি বলেন, ‘জীবনের চেয়ে নির্বাচন বড় নয়—এই বার্তা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গের কাছে পৌঁছাতে সম্ভবত ব্যর্থ হয়েছি।’

ইউপি ভোটের দ্বিতীয় ধাপে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয় পাওয়া নিয়ে তীব্র সমালোচনা করেছেন মাহবুব তালুকদার। যেখানে প্রতিদ্বন্দ্বিতা নেই, সেখানে নির্বাচন নেই। ইউপি নির্বাচন দলীয় ভিত্তিতে না হয়ে আগের মতো সবার জন্য উন্মুক্ত হলে, বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়ার সুযোগ থাকবে না। পৃথক একটি স্থানীয় নির্বাচন কর্তৃপক্ষ গঠন করে এসব নির্বাচন করার পরামর্শও দিয়েছেন তিনি।

মাহবুব তালুকদার বিভিন্ন সময়ের নির্বাচনগুলোতে দায়িত্ব পালন করা রিটার্নিং কর্মকর্তাদের অসহায়ত্বের কথাও তুলে ধরেন সংবাদ সম্মেলনে। রিটার্নিং কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলাপে তিনি জানতে পারেন, সাহসী ভূমিকা পালন করার ইচ্ছা থাকলেও রাজনৈতিক চাপে পড়ে তা করা যায় না। যে কারণে ভোটের মাঠে সহিংসতা, আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগগুলো ধামাচাপা দিতে চান।

মাহবুব তালুকদার বলেন, ‘তাঁদের ধামাধরা না হয়ে উপায় থাকে না। বিভিন্ন নির্বাচনে রিটার্নিং অফিসারদের সঙ্গে কথা বলে আমার এই ধারণা হয়েছে। তাঁদের নির্বাচনে সাহসী ভূমিকা পালনের কথা বলে লাভ নেই। স্থানীয় ক্ষমতাধরদের রোষানল থেকে রক্ষা করতে সাহসী রিটার্নিং অফিসার ও সাহসী কর্মকর্তাদের প্রয়োজনীয় সুরক্ষা বা নিরাপত্তা দেওয়ার নজির নেই।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

টাকা দিয়ে নারীর চাবুকের ঘা খাচ্ছিলেন পুরুষ, দুজন গ্রেপ্তার

ভারতের সঙ্গে সংঘাতে পাকিস্তানের ভাগ্যনিয়ন্তা সেনাপ্রধান জেনারেল মুনির

প্রবাসীর রেমিট্যান্সের অর্থ আত্মসাৎ, নারী ব্যাংক কর্মকর্তা কারাগারে

পাকিস্তানে কীভাবে হামলা চালাতে পারে ভারত, ইতিহাস যা বলছে

কোটি টাকা ‘ভর্তুকি’র জিম্বাবুয়ে সিরিজে বাংলাদেশ যা পেল

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত