Ajker Patrika

ফসল নষ্ট করে মাটি কাটায় ক্ষোভ

বাসাইল প্রতিনিধি
আপডেট : ১৯ এপ্রিল ২০২২, ১৫: ১৪
ফসল নষ্ট করে মাটি কাটায় ক্ষোভ

বাসাইলে বোরো ধানের ভরা মৌসুমে উঠতি ফসল নষ্ট করে রাস্তার ধারের কৃষিজমি থেকে মাটি কাটার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ অভিযোগ উঠেছে পৌরসভার এক কমিশনারের বিরুদ্ধে। ধানখেতের থোর-ধান নষ্ট করে রাস্তার মাটি কেটে নেওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন এলাকার ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকেরা।

জানা গেছে, রাস্তা নির্মাণের ওই প্রকল্পের টেন্ডারের কাজে পিডির অনুমোদন, ওয়ার্ক অর্ডারসহ আনুষঙ্গিক কাজ এখনো প্রক্রিয়াধীন। প্রকল্পের অফিশিয়াল প্রক্রিয়া শেষে বাস্তবায়নের কার্যক্রম শুরু করলে তত দিনে কৃষকের ধান ঘরে উঠে যেত। তখন আর জমির ধান নষ্ট করে রাস্তার মাটি কাটা লাগত না। এতে কৃষকেরাও ক্ষতিগ্রস্ত হতেন না।

ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকেরা জানান, তাঁদের জমি থেকে মাটি কাটতে নিষেধ করলে হামলা-মামলা, পুলিশি হয়রানিসহ নানা ভয়ভীতি দেখান ওই কমিশনার। মাটি কাটার বিষয়টি নিয়ে পৌরসভা অথবা অন্য কোথাও অভিযোগ দিলে তাঁদের দেখে নেওয়ারও হুমকি দেন বলে অভিযোগ করেন কৃষকেরা।

পৌরসভা এবং ওই ওয়ার্ডবাসী সূত্রে জানা গেছে, গত ২৪ মার্চ তারিখে ‘টি-টেন’ প্রকল্পের আওতায় পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের বর্ণীকিশোরী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সংলগ্ন সেতু থেকে আকতারের বাড়ি পর্যন্ত ৩০০ মিটার কাঁচা রাস্তায় মাটি ফেলে দুই পাশে ১০ ইঞ্চি গাইডওয়ালসহ ‘এইচবিবি’ কাজের জন্য পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়। কাজটির ব্যয় ধরা হয় ৩১ লাখ ৪৫ হাজার টাকা।

৯ নম্বর ওয়ার্ড কমিশনার এরশাদের ভাতিজা মো. আরিফ মিয়ার মালিকানাধীন মেসার্স শারমিন এন্টারপ্রাইজ কাজটি পায়। আর কাজটি সম্পন্ন করার দায়িত্ব নেন কমিশনার নিজেই। মাটি না দিলে তাঁদের বিরুদ্ধে সরকার বাদী মামলা দেওয়া হবে। এর কয়েক দিন পর থেকেই রাস্তার পাশের খেতের ধান নষ্ট করে মাটি কাটার যন্ত্র (ভেকু) বসিয়ে মাটি কাটা শুরু করা হয়।

ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক আব্দুর রশিদ, আবুল হোসেন, শহীদ খান ও সাজু মিয়া বলেন, ‘আমরা দরিদ্র কৃষক। অনেক খরচ কইরা খেতে আবাদ করেছি। সেই খেতের ধানসহ মাটি কাইটা নিছে। এই জমির ধান থেকে আমাদের সারা বছরের খরচ চলে। কয়টা দিন পরে মাটি কাটলেই আমাদের এত বড় ক্ষতি হতো না। আমরা এর ক্ষতিপূরণ চাই।’

এ ব্যাপারে অভিযুক্ত ওয়ার্ড কমিশনার এরশাদ আলমের সঙ্গে তাঁর কার্যালয়ে কথা বলতে গেলে কৌশলে সরে যান তিনি। পরে তাঁর মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে সাংবাদিক পরিচয় পেয়ে কলটি কেটে দেন।

তবে এ বিষয়ে বাসাইল উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নাজনীন আক্তার বলেন, ‘আমরা ক্ষতিপূরণের কোনো ব্যবস্থা করতে পারব না। তবে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে ক্ষতিপূরণ চেয়ে আবেদন করতে পারেন। ইউএনও নির্দেশ দিলে ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণ করে দেওয়া হবে।’

পৌরসভার প্রকৌশলী (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মোশারফ হোসেন বলেন, ‘বোরো ধানের জমি থেকে ধানসহ কে বা কারা মাটি কেটেছে, জানি না। মাটি কাটার সঙ্গে টেন্ডারের প্রক্রিয়ার কোনো সম্পর্ক নেই। টেন্ডারে শারমিন এন্টারপ্রাইজ লটারিতে উইনার হয়েছে। নিয়মানুযায়ী ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে কাগজপত্র পাঠানো হয়েছে। এর আগেই কেউ যদি মাটি কাটে, সেটা তার ব্যাপার। আমরা জানি না।’

পৌর মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রহিম আহমেদ বলেন, ‘বোরো ধানসহ জমির মাটি কেটে নেওয়ার বিষয়ে কোনো অভিযোগ এখনো পাইনি। তা ছাড়া আমরা কোনো ওয়ার্ক অর্ডারও দিইনি। কোনো রাস্তায় যদি কেউ অনুমতি ছাড়া মাটি ফেলে, এটা তার ব্যক্তিগত ব্যাপার।’

ইউএনও নাহিদা পারভীন বলেন, ‘এ-সংক্রান্ত কোনো অভিযোগ পাইনি। পৌর মেয়রের সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখা হবে।’

টাঙ্গাইলের ১০টি পৌরসভার ভৌত অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের পরিচালক (পিডি) দেলোয়ার হোসেন মজুমদার বলেন, ওই প্রকল্পের কার্যাদেশই এখনো দেওয়া হয়নি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

হরমুজ প্রণালিতে প্রবেশ করে ইউটার্ন নিল দুটি জাহাজ

ইসরায়েলে ২০ লাখ রুশভাষীর বাস, রাশিয়াকে তাঁদের কথা ভাবতে হয়: পুতিন

গুমে জড়িত ছিল ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা: গুম কমিশনের প্রতিবেদন

ইরানের হামলার তীব্র নিন্দা কাতারের, পাল্টা জবাবের হুঁশিয়ারি

মধ্যপ্রাচ্যের চার দেশে পরবর্তী ঘোষণার আগপর্যন্ত বাংলাদেশি সব ফ্লাইট বাতিল

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত