Ajker Patrika

হুমকি দিয়ে সিট থেকে ছাত্রকে নামাল ছাত্রলীগ

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি
আপডেট : ১৩ এপ্রিল ২০২২, ১৩: ৫৫
হুমকি দিয়ে সিট থেকে ছাত্রকে নামাল ছাত্রলীগ

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শের-ই-বাংলা এ কে ফজলুল হক হলের এক আবাসিক শিক্ষার্থীকে সিট থেকে নামিয়ে দিয়েছেন ছাত্রলীগের এক নেতা। গত সোমবার রাত ১২টার দিকে সিট ছেড়ে দেওয়ার হুঁশিয়ারি দেওয়া হয় তাঁকে। এরপর গতকাল মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে জিনিসপত্রসহ তাঁকে কক্ষ থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে। গতকাল সকালে ওই ছাত্র রুমের সামনে জিনিসপত্র নিয়ে অবস্থান করছিলেন।

অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা মোস্তাফিজুর রহমান রাতুল রাবির শের-ই-বাংলা হল ছাত্রলীগের সভাপতি। তিনি শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ রুনুর অনুসারী।

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর নাম আকিব জাভেদ। তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের পরিসংখ্যান বিভাগের শিক্ষার্থী। শের-ই-বাংলা হলের ১২৯ নম্বর কক্ষের আবাসিক শিক্ষার্থী তিনি।

ভুক্তভোগী ও হলসূত্রে জানা যায়, গত জানুয়ারির প্রথম দিকে আবাসিক ছাত্রদের জন্য আবেদন নেয় হল প্রশাসন। তারপর মৌখিক পরীক্ষা নেওয়া হয় ফেব্রুয়ারিতে। মার্চের প্রথমে হল প্রাধ্যক্ষের অনুমতি নিয়ে ১২৯ নম্বর কক্ষে ওঠেন আকিব জাভেদ। ওই শয্যায় আশিক মাহমুদ নামের ২০১৫-১৬ সেশনের এক ছাত্র অগে থেকেই ছিলেন। আকিব তাঁর সঙ্গে এক শয্যায় (ডাবলিং) থাকছিলেন। ৮ এপ্রিল আশিক চলে গেলে আকিব ওই শয্যায় একা থাকা শুরু করেন।

আকিব বলেন, হলের রুমে শয্যা ভাগ করে থাকার সময়ও ছাত্রলীগ নেতা রাতুল এসে তাঁকে হুমকি দিয়েছিলেন। সবশেষ গত সোমবার রাতে এসে তাঁকে সিট নেমে যেতে বলেন এবং সকাল ৯টা পর্যন্ত সময় বেঁধে দেন।

আকিব অভিযোগ করেন, সকাল ৯টার দিকে রাতুলের নেতৃত্বে সাত-আটজন এসে তাঁর জিনিসপত্র কক্ষ থেকে বের করে দেন। সেখানে কমল নামের এক অনাবাসিক শিক্ষার্থীকে তুলে দেওয়া হয়েছে।

অভিযোগের বিষয়ে ছাত্রলীগ নেতা মোস্তাফিজুর রহমান রাতুল বলেন, ‘১২৯ নম্বর কক্ষে আমার এক বন্ধু ছিল। তাঁর সঙ্গে কথা ছিল, সে চলে যাওয়ার সময় আমাকে সিটটা দিয়ে যাবে। আমার এক ছোট ভাই সেখানে তাঁর জিনিসপত্র রেখে এসেছিল। কিন্তু ওই বন্ধু আমাকে না জানিয়ে চলে গেছে। পরে গতকাল রাতে গিয়ে দেখি আকিব নামের এক ছেলে ওই সিটে থাকছে।’

আকিব আরও বলেন, ‘প্রাধ্যক্ষ স্যার আমাকে একটা পরিত্যক্ত কক্ষে সিট দিতে চেয়েছেন। কিন্তু আমি এই সিটেই থাকতে চাই।’

সার্বিক বিষয়ে হল প্রাধ্যক্ষ মো. হবিবুর রহমান বলেন, ‘ওই কক্ষের সিনিয়র শিক্ষার্থী নিয়ম অনুযায়ী হল ছাড়ার সময় প্রশাসনকে জানাননি। আকিবও ওই শয্যায় ওঠার সময় জানাননি। তবে আকিব ওই কক্ষের আবাসিক শিক্ষার্থী। তাঁকে অন্য একটি কক্ষে থাকার ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়েছে।’

হলের কক্ষ থেকে জিনিসপত্র বের করে দেওয়ায় ছাত্রলীগের ওই নেতার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হবে কি না এমন প্রশ্ন করলে বিষয়টি এড়িয়ে যান প্রাধ্যক্ষ মো. হবিবুর রহমান। তবে তিনি বলেন, ‘এই ঘটনা কীভাবে ঘটল, আমরা হল প্রশাসন বসে খোঁজ নেব।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত