Ajker Patrika

বারোমাসিয়ার তীরের মানুষের দুঃখ বারো মাস

ফুলবাড়ী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি
আপডেট : ২৭ ডিসেম্বর ২০২১, ১৩: ১১
বারোমাসিয়ার তীরের মানুষের দুঃখ বারো মাস

কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলায় দিন দিন ভাঙনে প্রশস্ত হচ্ছে বারোমাসিয়া নদী। জেগে উঠছে নতুন নতুন চর। ভাঙন রোধে কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় নিঃস্ব হয়ে যাচ্ছেন নদীর দুই তীরের মানুষ।

সেতু না থাকায় নদী পারাপারে ১২ মাসই ভোগান্তি নিয়ে চলতে হয় নদী অববাহিকার চার গ্রামের প্রায় ১৫ হাজার মানুষের।

ফুলবাড়ী উপজেলায় ভারতের সীমান্ত ঘেঁষা বারোমাসিয়া নদী তীরবর্তী গোড়কমন্ডল, পূর্ব ও পশ্চিম ফুলমতি, ঝাউকুটি, কান্দারপাড়া এবং কিশামত শিমুলবাড়ি গ্রাম। এসব গ্ৰামের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়ে গেছে ভারত থেকে আসা বারোমাসিয়া নদী।

স্থানীয়রা জানান, গভীর এই নদীতে বছরজুড়ে পানি প্রবাহ থাকে। এই কারণে নাম হয়েছে বারোমাসিয়া নদী। নদীর ওপর একটি সেতু নির্মাণে তাঁদের দাবি প্রায় তিন যুগ ধরে। জনপ্রতিনিধি থেকে শুরু করে প্রশাসনের কর্তা ব্যক্তিরা দিনের পর দিন শুধু আশ্বাস দিয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু তৈরি হচ্ছে না একটি সেতু।

এদিকে একটি ভাঙা ও নড়বড়ে সাঁকো দিয়ে পারাপার হচ্ছেন ওই সব গ্রামের মানুষ। ভরসার এই সেতুটি নিয়মিত সংস্কার না হওয়ায় বর্তমানে ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।

কান্দাপাড়া গ্রামের আবদুর রহমান বলেন, ‘সাঁকোটির ১২০ ফুট লম্বা এবং চার ফুট প্রস্থের সাঁকোটির দুই পাশের পাটাতন নড়বড়ে হয়ে চরম ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে।’

ফুলমতি গ্রামের কান্দাপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন জায়গায় ভাঙনের ফলে নদীতে বিলীন হচ্ছে ফসলি জমি ও বসতবাড়ি। ওই এলাকার কৃষক দেবেন্দ্রনাথ, মনসুর আলী, সেবেন্দ্রনাথ ও কৃঞ্চ চন্দ্র বলেন, আমরা কৃষিকাজ করেই জীবিকা নির্বাহ করি। ধীরে ধীরে আমাদের ফসলি জমি নদীতে বিলীন হচ্ছে। নদীতে সেতু না থাকায় আমরা নদী পারাপারে চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছি। জমিতে উৎপাদিত ধান, গম, পাট, কলাসহ বিভিন্ন ফসল নদী পার করে আনতে ভোগান্তির পাশাপাশি আমাদের বাড়তি খরচ বহন করতে হয়।

ফুলমতি গ্রামের বিধবা ছামিনা বেগম বলেন, ‘আমার শেষ সম্বল বাড়ি ভিটা দিনে দিনে নদীতে বিলীন হচ্ছে। মাথা গোঁজার ঠাঁই শেষ হয়ে যাচ্ছে।’ এই কথা বলেই কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি।

নাওডাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হাসেন আলী এবং ইউপির ৪ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য শহিদুল ইসলাম বলেন, নদী ভাঙনে এ অঞ্চলের কৃষকেরা প্রতি বছর ফসলি জমি হারানোর শঙ্কায় থাকেন। অনেকের বসতবাড়ি নদীতে বিলীন হয়েছে। নদী পারাপারের সেতু না থাকায় এ অঞ্চলের মানুষের শিক্ষা, চিকিৎসা, কৃষি ও জীবিকায় বিরূপ প্রভাব পড়েছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা প্রকৌশলী আসিফ ইকবাল রাজীব আজকের পত্রিকাকে বলেন, সেতু নির্মাণের সম্ভাব্যতা যাচাইয়ে ইতিমধ্যে ওই এলাকার মাটি পরীক্ষা হয়েছে। এটি এখন নকশা তৈরির পর্যায়ে আছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সুমন দাস আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বিষয়টি নজরে এলে আমরা ব্যবস্থা নেওয়ার চেষ্টা করছি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

চিৎকার শুনে ছুটে আসা স্থানীয়রা ধর্ষণের শিকার নারীকেই মারধর করে

বিমানবন্দরের প্রকল্পে ‘অসম’ চুক্তি, স্বার্থের সংঘাতে জড়িয়েছেন ঢাকায় ইউএই রাষ্ট্রদূত

মন্ত্রীর আত্মীয়তাই ‘যোগ্যতা’

আদানিকে আরও ৩৮৪ মিলিয়ন ডলার দিল বাংলাদেশ, মোট পরিশোধ ১.৫ বিলিয়ন

অশ্লীল ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে স্কুলছাত্রীকে দুই বন্ধুর ধর্ষণ

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত