Ajker Patrika

ইফতারের নামে চাঁদাবাজি

খান রফিক, বরিশাল
আপডেট : ২২ এপ্রিল ২০২২, ০৯: ৫২
ইফতারের নামে চাঁদাবাজি

ঐতিহ্যবাহী বরিশাল জিলা স্কুল প্রাঙ্গণে ইফতারের আড়ালে বড় রাজনৈতিক কর্মসূচি করেছে বিএনপি। এই ইফতার আয়োজন সফল করতে দলের ভেতরে চাঁদাবাজির অভিযোগ উঠেছে নেতাদের বিরুদ্ধে। এতে দলের নেতা-কর্মীদের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে বলে জানা গেছে। এদিকে গতকালের ইফতারের সময় দুই দফা মারামারি হয় বিএনপি নেতা-কর্মীদের মধ্যে।

জানা গেছে ২ হাজার থেকে ১ লাখ টাকা পর্যন্ত চাঁদা তুলেছে নগর বিএনপির নতুন নেতৃত্ব। এ চাঁদা দেওয়ার তালিকায় যেমন বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্যরা ছিলেন; তেমনি ওয়ার্ড নেতা, অঙ্গ সংগঠনের অনেক নেতা-কর্মীকেও দিতে হয়েছে। বিশেষ করে বিএনপি সমর্থক নগরের কয়েকজন ব্যবসায়ী ও ঠিকাদারের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের চাঁদা নেওয়ায় দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়েছে বলে মনে করেন নেতা-কর্মীরা। নগর বিএনপি সূত্র এমন অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছেন, হিতাকাঙ্ক্ষী এবং নিজেদের অর্থে ইফতারের খরচ চালানো হয়েছে।

গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টায় জিলা স্কুলে গিয়ে দেখা গেছে, স্কুলের মাঠের মাঝখানে বিশাল শামিয়ানা এবং ডিজিটাল ডিসপ্লে বসানো হয়েছে। সেখানে নগর বিএনপির আহ্বায়ক মনিরুজ্জামান ফারুক এবং সদস্যসচিব মীর জাহিদুল কবিরসহ নেতা-কর্মীরা ব্যস্ত সময় পার করছেন।

ইফতার পার্টিতে স্কাইপিতে অংশ নিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। প্রধান অতিথি ছিলেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য বেগম সেলিমা রহমান। নগর বিএনপির সভাপতি মনিরুজ্জামান ফারুক ইফতার ও দোয়া অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন। তবে ইফতার চলাকালে বিএনপি নেতা-কর্মীদের মধ্যে দুই দফা মারামারি হয়।

বরিশাল মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য মুসা কাজল বলেন, ‘আমার কাছে যুগ্ম আহ্বায়ক মাকসুছুর রহমান মাকসুদ ইফতারের জন্য চাঁদা চেয়েছে, আমি দিইনি।’

আহ্বায়ক কমিটির অপর সদস্য আফরোজা খানম নাসরিন বলেন, ‘সদস্যসচিব আমার কাছে ২ হাজার টাকা চেয়েছেন। আমি বলেছি, আপনারা আহ্বায়ক এবং সদস্যসচিব ইফতারের আয়োজন করবেন, আমরা কেন টাকা দেব?’

বরিশাল নগর বিএনপির আহ্বায়ক মনিরুজ্জামান ফারুক সাংবাদিকদের বলেন, ‘যাঁরা ইফতারিতে চাঁদাবাজির কথা বলেন, তাঁরা ১৪ গুণ বেশি করেছেন। তাঁরা কী করেছেন, সবার আগে সেই হিসাব দিন। আমাদের অনেক হিতাকাঙ্ক্ষী আছেন, তাঁদের কাছ থেকে ইফতারের খরচ তোলা হয়েছে।’

আহ্বায়ক জোর দিয়ে বলেন, ‘আমরা আমাদের নিজেদের খরচে কর্মসূচি করি, চাঁদাবাজি করি না। কিন্তু যখন দল ক্ষমতায় ছিল, তখন অনেকে সাংসদ, মেয়র ছিলেন। তাঁরা কী করেছেন তা সবাই জানে।’ চাঁদাবাজি করি এমনটা প্রমাণ করতে পারলে দল ত্যাগ করবেন বলে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছেন বিএনপি নেতা ফারুক।

তবে দলটির একাধিক ওয়ার্ড বিএনপি নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে অভিযোগ করেন, ইফতার আয়োজনের জন্য তাঁদের চাঁদা দিতে হয়েছে। কারণ নগরের ৩০টি ওয়ার্ড সম্প্রতি ভেঙে দেওয়া হয়েছে। এখন চাঁদা না দিলে তো নতুন কমিটিতে আসতে পারবেন না। কত টাকা দেওয়া হয়েছে এ প্রসঙ্গে বলেন, ২ হাজার থেকে ১০ হাজার টাকা নেওয়া হয়েছে।

জানা গেছে, সবচেয়ে আলোচিত হয়েছে একজন ঠিকাদারের কাছ থেকে ১ লাখ টাকা চাঁদা আদায় করা নিয়ে। ওই ঠিকাদার নগরে সাম্প্রতিক সময়ে ব্যাপক আলোচিত এবং ক্ষমতাসীন দলের সঙ্গে সমঝোতায় নানা ধরনের উন্নয়নকাজ করছেন। এভাবে চাঁদা নেওয়ায় গতকাল ইফতার পার্টিতে নেতা-কর্মীদের মধ্যে কানাঘুষা এবং অসন্তোষ দেখা গেছে।

মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক জিয়াউদ্দিন সিকদার বলেন, ‘তথ্যপ্রমাণ ও যাচাই-বাছাই ছাড়া চাঁদাবাজির বিষয়টি বলা উচিত নয়।’ ইফতারে নগর বিএনপিকে তিনি কোনো চাঁদা দেননি।

বিএনপির কেন্দ্রীয় সহসাংগঠনিক সম্পাদক আকন কুদ্দুসর রহমান বলেন, ‘ইফতার ইস্যুতে এটা করা উচিত নয়। তবে করছে কি না তা খতিয়ে দেখতে হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ফোন-ইন্টারনেট ভাতা পাচ্ছেন মাঠ প্রশাসনের সব কর্মচারী

এস আলমের জামাতার পেটে ৩৭৪৫ কোটি টাকা

ভাড়া বাড়িতে চলা ১৬ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিসহ সব শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধের নির্দেশ

পিপির বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব ৪৯ জন সহকারী পিপির

জোবাইদার নিরাপত্তার নামে প্রতিবেশীদের বিরক্ত না করার নির্দেশ তারেক রহমানের

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত