Ajker Patrika

দুর্দিন চাতাল মালিকদের

আদমদীঘি (বগুড়া) প্রতিনিধি
আপডেট : ২৪ নভেম্বর ২০২১, ১৫: ৫৪
দুর্দিন চাতাল মালিকদের

বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলার ড্রাম বয়লারের চালকলগুলো (হাসকিং রাইস মিল) বন্ধ হওয়ার পথে। স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত ধান ও চালের মূল্যের ব্যবধান তো আছেই। সেই সঙ্গে আধুনিকতার ছোঁয়ায় অটোরাইস মিলের দাপট। নানা প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে না পেরে উপজেলার চাতাল মিলগুলোর মালিকদের দুর্দিন চলছে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, অটোরাইস মিলের চালের মানের তুলনায় চালকলের তৈরি চাল কিছুটা নিম্ন মানের। এ জন্য চলমান বাজারে তা টিকতে পারছে না। অন্যদিকে বর্তমান ধানের বাজারমূল্যের সঙ্গে চালের দাম সমন্বয়হীনতা আছে। যার কারণে চালকল ব্যবসায়ীদের বড় ধরনের লোকসান দেখা দিচ্ছে।

বর্তমান বাজারদরে ধান কিনে চালের বাজারে বিক্রি করতে গেলে ধান ক্রয় ও চালের বিক্রির মধ্যে সমন্বয় না থাকায় লোকসানের কারণে ইতিমধ্যেই উপজেলার অধিকাংশ চালকল বন্ধ হয়ে গেছে। এই চাতালগুলোতে একসময় শ্রমিকদের কর্মচঞ্চলতা দেখা যেত। তবে নানা সংকটে তা বন্ধ হওয়ায় শত শত শ্রমিক কর্ম হারিয়ে বেকার হয়ে অভাব-অনটনে জীবনযাপন করছেন।

আদমদীঘি উপজেলার খাদ্য অফিস সূত্রে জানা গেছে, আশির দশকের শুরুতে আদমদীঘি সদর, সান্তাহার, মুরইল, নসরতপুর, কুন্দগ্রাম ও চাঁপাপুর এলাকার বেশকিছু জায়গায় চালকলের ব্যবসা শুরু হয়। সেই সময় থেকেই রমরমা ব্যবসা হওয়ার সুবাদে কিছু উদ্যমী ব্যবসায়ী পর্যায়ক্রমে চাতাল তৈরি করেন।

এই চাতালগুলোতে যে পরিমাণ চাল উৎপাদন হতো, তা দিয়ে এ অঞ্চলের চাহিদা মিটিয়ে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করা হতো। এই প্রতিষ্ঠানগুলোতে মাঝারি পর্যায়ের ব্যবসায়ী যেমন তাঁদের কর্মকাণ্ড চালিয়ে লাভবান হতেন, তেমনি এই চাতালগুলোতে সৃষ্টি হয়েছিল শত দরিদ্র নারী-পুরুষ শ্রমিকের কর্মসংস্থান। এর সঙ্গে সম্পৃক্ত চাল ব্যবসায়ী ও মালিক-শ্রমিকদের অনেকেই দারিদ্র্য জয় করে পুঁজিপতি বনে গেছেন।

বর্তমানে উপজেলায় ১৪টি অটোমেটিক রাইস মিল এবং ১৭৪টি চালকল রয়েছে। অনেক চালকলের মালিক হতাশাই তাঁদের ব্যবসা গুটিয়েছেন। চালের মতো সুনামখ্যাত ব্যবসা ছেড়ে অন্য পেশার দিকে ধাবিত হয়েছেন তাঁরা।

উপজেলার একরাম চালকলের স্বত্বাধিকারী চাতাল ব্যবসায়ী একরাম হোসেন মণ্ডল জানান, বর্তমান মৌসুমে চলতি দরে বাজার থেকে ধান কিনে যে পরিমাণ চাল হয়, সে মোতাবেক বাজারে বিক্রি করলে লাভ তো দূরের কথা; লোকসানের ঘানি টেনে ব্যবসা চালু রাখা কঠিন। এ জন্য চালকলগুলো বন্ধ হয়ে যাচ্ছে।

একরাম হোসেন মণ্ডল আরও বলেন, ‘আমাদের তৈরি চাল আর অটোরাইস মিলের চালের দর প্রকারভেদে প্রতি মণে এক শ থেকে দেড় শ টাকা বেশি। অথচ বাজার থেকে ধান কেনার সময় প্রায় একই দরে কেনা হয়।’

উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কে এম গোলাম রব্বানী জানান, অটোরাইস মিলের চালের মানের সঙ্গে সাধারণ চালকলের তৈরি চাল কিছুটা নিম্ন মানের হওয়ায় চলমান বাজারে টিকতে পারছেন না। কিন্তু যাঁরা চালকল ব্যবসায়ী আছেন, বর্তমান ধানের বাজারমূল্যের সঙ্গে চালের দাম সমন্বয়হীনতার কারণে ব্যবসায় বড় ধরনের লোকসান দেখা দেয় বলে তিনি জানান।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মৌচাকে গাড়িতে লাশ: ২৫ লাখ টাকায় যুক্তরাষ্ট্রের কথা বলে জাকিরকে শ্রীলঙ্কায় নিয়েছিল দালাল

যেভাবে শেখ হাসিনাকে ফেরানোর পরিকল্পনা চলছিল, স্বীকারোক্তিতে জানালেন মেজর সাদিকের স্ত্রী জাফরিন

পুলিশের এডিসিকে ছুরি মেরে পালিয়ে গেল ছিনতাইকারী

রিটার্ন না দিলে গ্যাস-বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন

উত্তরায় বকশীগঞ্জের সাবেক মেয়র নজরুল ইসলাম গ্রেপ্তার

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত