Ajker Patrika

বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ের সুযোগ নেই

সাবিত আল হাসান, নারায়ণগঞ্জ
বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ের সুযোগ নেই

নারায়ণগঞ্জ জেলা পরিষদ নির্বাচন ক্রমেই জমে উঠেছে। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ইতিমধ্যে তাঁদের সমর্থিত প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেছেন। অন্যদিকে বিএনপি এই নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্তে রয়েছে অটল। এরই মধ্যে নতুন করে জাতীয় পার্টির দলীয় সমর্থন পেয়েছেন জয়নাল আবেদীন (আল জয়নাল)। তাঁর উপস্থিতিতে জেলা পরিষদ নির্বাচন নতুন করে আলোচনায় এসেছে।

১০ সেপ্টেম্বর রাতে নারায়ণগঞ্জ জেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সমর্থন দেওয়া হয় মহানগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি বাবু চন্দন শীলকে। তিনি নারায়ণগঞ্জের প্রবীণ আওয়ামী লীগ নেতা এবং ত্যাগী কর্মী হিসেবে পরিচিত। চাষাঢ়ায় আওয়ামী লীগ অফিসে বোমা হামলায় দুই পা হারিয়েও তিনি দলের রাজনীতিতে ভূমিকা রাখায় সম্মানিত হয়েছেন সর্বমহলে। সংসদ সদস্য শামীম ওসমানের বন্ধু এবং দলীয় প্রার্থী হিসেবে তাঁর জয় অনেকটাই নিশ্চিত বলে মনে করছেন আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা।

তবে মনোনয়নের দুদিন আগেই এক নির্বাচনী আলাপচারিতায় চন্দন শীল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এবার নির্বাচনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার সম্ভাবনা আমরা দেখছি না। কোনো না কোনোভাবে একাধিক প্রার্থী থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। অনেকেরই বাসনা রয়েছে এই পদে নির্বাচন করার।’

চন্দন শীল সেই উক্তিকেই যেন সত্য প্রমাণিত করতে নির্বাচনী মাঠে নেমেছেন জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা পার্টির উপদেষ্টা জয়নাল আবেদীন। ১১ সেপ্টেম্বর দলটির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদেরের স্বাক্ষরিত এক পত্রে জয়নাল আবেদীনের সর্বাঙ্গীণ সফলতা কামনা করা হয়। দলীয় প্যাডে স্বাক্ষরিত সেই পত্র ইতিমধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে সর্বত্র।

নির্বাচনের বিষয়ে জয়নাল আবেদীন বলেন, ‘আমাকে আমার দল জাতীয় পার্টি থেকে সমর্থন দেওয়া হয়েছে। আমি এবার নির্বাচন করব। 

১৫ সেপ্টেম্বর (আজ) মনোনয়নপত্র দাখিল শেষে প্রচার-প্রচারণায় মনোযোগ দেব।’ মহাজোটের অংশ হিসেবে জাতীয় পার্টির প্রার্থী শেষ সময়ে সরে দাঁড়াবেন কি না, এমন প্রশ্ন তিনি বলেন, ‘সরে আসার তো প্রশ্নই ওঠে না। আমি সবকিছু জেনেবুঝেই নির্বাচনে নেমেছি, আর দলের চেয়ারম্যান যেখানে আমার পাশে আছেন, সেখানে অন্য কে কী বলল, সেদিকে দৃষ্টি দেওয়ার সুযোগ নেই।’

জাতীয় পার্টির প্রার্থীর বিষয়ে চন্দন শীল বলেন, ‘আমিও শুনেছি বিষয়টি; কিন্তু আমাকে নারায়ণগঞ্জের দুজন জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য সমর্থন দিয়েছেন। তাঁদের তো আওয়ামী লীগের বিপক্ষে দাঁড়িয়ে নির্বাচন করার কথা নয়। আমার বিশ্বাস, মহাজোটের অংশ হিসেবে জাপা প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে নেবেন। যদি তিনি নির্বাচন করতে চান তা হলেও স্বাগতম। ’

২০১৬ সালের ২৮ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত জেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছিলেন মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেন। সে সময় তিনি চেয়ারম্যান পদে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়লাভ করেন। সেই ধারাবাহিকতায় এবারও এই পদে আসীন হতে প্রতিযোগিতা শুরু হয় দলটিতে। সাবেক দুই চেয়ারম্যানসহ মনোনয়নপত্র জমা দেন ১০ জন আওয়ামী লীগ নেতা। তবে শেষ হাসি হাসেন চন্দন শীল।

নির্বাচনের বিষয়ে জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মতিয়ুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আগামী ১৭ অক্টোবর ইভিএমের মাধ্যমে জেলা পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। তফসিল অনুযায়ী, মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ সময় ১৫ সেপ্টেম্বর। মনোনয়নপত্র বাছাই হবে ১৮ সেপ্টেম্বর। প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময় ২৫ সেপ্টেম্বর। প্রতীক বরাদ্দ ২৬ সেপ্টেম্বর। জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নির্বাচনে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন, উপজেলা, বিভিন্ন পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদের ৬১৫  জনপ্রতিনিধি ভোট দেবেন।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত