Ajker Patrika

‘ভেড়ায় হামার আয় বাড়ছে’

গাইবান্ধা ও চিলমারী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি
‘ভেড়ায় হামার আয় বাড়ছে’

‘হামরা চরের মানুষ জমি তেমন নাই হামরা শাকসবজি চাষ করে লাভবান হচ্ছি। ভেড়া পালন করি হামার সংসারে আয় বাড়ছে, এই আয় দিয়ে ছাওয়াপাওয়ার লেখাপড়ার খরচ জোগাড় করছি।’ এসব কথা বলেন কুড়িগ্রামের চিলমারী ইউনিয়নের মনতলা এলাকার শাহিদা আক্তার ও পারভীন বেগম।

বন্যা ও নদীভাঙনের কবলে পড়ে প্রতিবছর গাইবান্ধা ও কুড়িগ্রামের চরাঞ্চলের অসংখ্য পরিবার গৃহহীন হয়। নষ্ট হয় চরের ফসল। এতে কৃষিনির্ভর পরিবারগুলো পড়ে চরম সংকটে। এ পরিস্থিতিতে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ফ্রেন্ডশিপ বাংলাদেশ এসব অঞ্চলের মানুষের প্রতি সহযোগিতার হাত বাড়িয়েছে। তারা দুর্যোগকালীন ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তার পাশাপাশি পারিবারিকভাবে আয়বৃদ্ধিমূলক কর্মকাণ্ড চালাচ্ছে।

চরাঞ্চলের পরিবারগুলোকে বিভিন্নভাবে সহায়তা দিয়ে উন্নয়নমুখী সহযোগিতা করা হচ্ছে। প্রশিক্ষণসহ পরিবারগুলোকে শীত ও গ্রীষ্ম মৌসুমে শাকসবজির বীজ দেওয়া ছাড়াও ভেড়া বিতরণ করছে ফ্রেন্ডশিপ। সবজি উৎপাদনে রাসায়নিক সারের পরিবর্তে জৈব সার উৎপাদন এবং ব্যবহারে সহায়তা করছে।

চিলমারী ইউনিয়নের মনতোলা গ্রামের পারভীন বেগম বলেন, ‘আমাদের সুশাসন সম্পর্কে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। আমরা পারিবারিক নির্যাতন, বাল্যবিবাহ, তালাকপ্রাপ্ত, বহুবিবাহ, পারিবারিক দ্বন্দ্ব, সংবিধান, সংসদ সম্পর্কে জানতে পেরেছি। এখন কোনো আইনি পরামর্শ প্রয়োজন হলে আমরা ফ্রেন্ডশিপের সহায়তা নিই এবং তারা আমাদের বিনা মূল্যে আইনি পরামর্শ দেয়।’

মনতোলা গ্রামের শামছুন্নাহার খাতুন ও মঞ্জুর রহমান বলেন, ‘আগে হাট থেকে রাসায়নিক সার কিনে আনতাম, এখন আমরা জৈব সার তৈরি করে ব্যবহার করি, ফেরোমন ফাঁদ দিয়ে পোকা মারছি, সরকারি সুযোগ-সুবিধা পেতে বিভিন্ন অফিসে যোগাযোগ করছি।’

রৌমারী ও চিলমারী অঞ্চলে ফ্রেন্ডশিপের এএসডি প্রজেক্টের ম্যানেজার মো. আশরাফুল ইসলাম মল্লিক জানান, ফ্রেন্ডশিপ লুক্সেমবার্গের সহায়তায় সদস্যদের আয় রোজগার নিয়মিতকরণের মাধ্যমে অর্থনৈতিক উন্নয়ন, সুশাসন এবং স্থানীয় অবকাঠামো উন্নয়নে এ প্রকল্প সহায়তা করছে।

এদিকে গাইবান্ধা সদর, ফুলছড়ি ও সুন্দরগঞ্জ উপজেলার কামারজানী, এরেন্ডাবাড়ী, কাপাশিয়া ও হরিপুর ইউনিয়নের সাতটি চরে কাজ করছে ফ্রেন্ডশিপ। প্রতিটি চরে যাদের মাথা গোঁজার ঠাঁই নাই, যারা অবহেলিত এমন ৩০ জন করে মোট ২১০ জনকে উন্নতমানের ভেড়া, সবজির বীজ দিচ্ছে।

গাইবান্ধার সদর উপজেলার ভাসানচরের শাহিনুর বেগম বলেন, ‘আগে হামারে কিছু আছিল না। ফ্রেন্ডশিপের সদস্য হয়ে হামি এক পেকেট সবজির বিচি পাছি। তাই পড়ি থাকা জমিত নাগাম। সেকনো আস্তো আস্তো বড়ো হছো। এখন হমারে ছলগুলোক স্কুলে পাঠাম। এখন আর সাংসার চালাতো অছুবিধা হয় না।’

এ বিষয়ে ফ্রেন্ডশিপের এ এস ডি প্রকল্পের প্রজেক্ট ম্যানেজার দিবাকর বিশ্বাস বলেন, ‘গাইবান্ধার একটি বড় অংশ চর। এখানকার মানুষের নদীভাঙন, খরাসহ বিভিন্ন দুর্যোগ মোকাবিলা করে বেঁচে থাকতে হয়। ২০২০ সাল থেকে এসব চরে কাজ করছি এসব মানুষকে স্বাবলম্বী করতে।’ 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

পেহেলগাম হামলা: ধরা খেয়ে গেল মোদির কাশ্মীর ন্যারেটিভ

ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনা: বিমানবাহিনীকে সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিতে বললেন প্রধান উপদেষ্টা

সারজিসের সামনেই বগুড়ায় এনসিপি ও বৈষম্যবিরোধীদের মধ্যে হাতাহাতি-সংঘর্ষ

‘ঘুষের জন্য’ ৯১টি ফাইল আটকে রাখেন মাউশির ডিডি: দুদক

রাখাইনে মানবিক করিডর কি প্রক্সি যুদ্ধের ফাঁদ হবে, ভারত-চীন কীভাবে দেখবে

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত