Ajker Patrika

অবশেষে প্যানেল দিল ছাত্রদল ও বাগছাস

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
ডাকসু নির্বাচনে প্যানেল ঘোষণা করেছে ছাত্রদল। ভিপি, জিএস, এজিএসসহ ২৭ পদে প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেছে সংগঠনটি। ছবি: আজকের পত্রিকা
ডাকসু নির্বাচনে প্যানেল ঘোষণা করেছে ছাত্রদল। ভিপি, জিএস, এজিএসসহ ২৭ পদে প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেছে সংগঠনটি। ছবি: আজকের পত্রিকা

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে গতকাল বুধবার প্যানেল ঘোষণা করেছে ছাত্রদল। ‘বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থী সংসদ’ নামে প্যানেল ঘোষণা করেছে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সাবেক সমন্বয়কদের উদ্যোগে গঠিত নতুন ছাত্রসংগঠন বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ (বাগছাস)। এ ছাড়া বাম তিন সংগঠনের ‘অপরাজেয় ৭১ ও অদম্য ২৪’ ও ‘ইসলামী ছাত্র আন্দোলন’—এই দুই প্যানেল ঘোষণা করা হয়েছে গতকাল।

গতকাল দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে সংবাদ সম্মেলনে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব ছাত্রদলের প্যানেল ঘোষণা করেন। এই প্যানেলে ঢাবি শাখা ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. আবিদুল ইসলাম খানকে সহসভাপতি (ভিপি), কবি জসীমউদ্‌দীন হল শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক শেখ তানভীর বারী হামিমকে সাধারণ সম্পাদক (জিএস) ও বিজয় একাত্তর হল শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক তানভীর আল হাদী মায়েদকে সহসাধারণ সম্পাদক (এজিএস) প্রার্থী করা হয়েছে।

প্যানেল ঘোষণার পর ছাত্রদলের প্রার্থীরা মনোনয়নপত্র জমা দিতে ঢাবির সিনেট ভবনে যান। সেখানে যাওয়ার আগে ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম বলেন, মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার পর তাঁরা জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে শহীদ আনাসের কবর জিয়ারত করবেন। এর মধ্য দিয়ে ছাত্রদলের নির্বাচনী কার্যক্রম শুরু হবে।

তন্বীকে সমর্থন

ডাকসুতে ২৮টি পদে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলেও জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে আহত ঢাবির শিক্ষার্থী সানজিদা আহমেদ তন্বীর সম্মানে গবেষণা ও প্রকাশনা সম্পাদক পদটি শূন্য রেখে তাঁকে সমর্থন দিয়েছে ছাত্রদল। তন্বী এই পদে ডাকসুতে নির্বাচন করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার বাগছাসের পক্ষ থেকেও জানানো হয়, এই পদে তাঁদের কেউ মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করবেন না।

বাগছাসের প্যানেলে যাঁরা

গতকাল বিকেলে ঢাবির কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে ‘বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থী সংসদের’ প্যানেল ঘোষণা করে গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ। জুলাই অভ্যুত্থানের শহীদ ফারহান ফাইয়াজের বাবা শহীদুল ইসলাম ভূঁইয়া প্যানেলের প্রার্থীদের নামগুলো পড়ে শোনান। এই প্যানেল থেকে ডাকসুর সহসভাপতি (ভিপি) পদে আবদুল কাদের, সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদে মো. আবু বাকের মজুমদার ও সহসাধারণ সম্পাদক (এজিএস) পদে আশরেফা খাতুন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। তাঁরা তিনজনই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়ক।

আরও লড়ছেন যাঁরা

এ ছাড়া বামপন্থী তিন সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন (একাংশ), সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট ও বাংলাদেশ ছাত্রলীগ-বিসিএল সমর্থিত প্যানেল ঘোষণা করা হয় গতকাল। দুপুরে ঢাবির মধুর ক্যানটিনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন থেকে এই প্যানেল ঘোষণা দেওয়া হয়। ছাত্র ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় সভাপতি মাহির শাহরিয়ার ১৫ সদস্যের প্যানেল ঘোষণা করেন। ‘অপরাজেয় ৭১ ও অদম্য ২৪’ নামে এ প্যানেল ঘোষণা করা হয়। প্যানেলে প্রধান প্রার্থীদের মধ্যে ভিপি পদে নাঈম হাসান হৃদয়, জিএস পদে এনামুল হাসান অনয় এবং এজিএস পদে অদিতি ইসলামের নাম ঘোষণা করা হয়েছে।

শঙ্কায় প্রার্থীরা

ডাকসুর ২৮ পদে ৫০৯টি ও হল সংসদে ১ হাজার ১০৯টি মনোনয়নপত্র জমা পড়েছে। গতকাল মনোনয়ন জমা দেওয়ার শেষ দিনে এ তথ্য নিশ্চিত করে নির্বাচন কমিশনারের সদস্য অধ্যাপক গোলাম রব্বানী।

ডাকসুতে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া ৫০৯ জন প্রার্থীর মধ্য অনেকে ডাকসু নির্বাচনকে ঘিরে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন। এ প্রসঙ্গে সদ্য সাবেক এনসিপির যুগ্ম সদস্যসচিব ও ডিইউ ফার্স্ট থেকে স্বতন্ত্র জিএস প্রার্থী মাহিন সরকার বলেন, একটি ছাত্রসংগঠনের বিশেষ সুবিধা দেওয়ার জন্য মনোনয়ন সংগ্রহের সময়সীমা বর্ধিত করেছে। এখানেই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। বড় দল হিসেবে তাদের যদি এমন সুবিধা দেয়, তাহলে নির্বাচনের মাঠে সুবিধা দেবে না, এমন কি গ্যারান্টি আছে?

ছাত্র অধিকার প্যানেলের ভিপি প্রার্থী বিন ইয়ামিন মোল্লা আজকের পত্রিকাকে বলেন, প্রশাসনের পক্ষপাতের আচরণ পরিলক্ষিত হচ্ছে, বিশেষ করে একটি দলের প্রতি। ডাকসু নির্বাচন ঠেকাতে কখনো কখনো ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে ক্যাম্পাসে। এসব কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ে একটা শঙ্কা থেকে যায়।

‘বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থী সংসদের’ ভিপি প্রার্থী আব্দুল কাদের বলেন, ছাত্রদলের জিএস পাঁচের অধিক লোক নিয়ে মনোয়ন সংগ্রহে স্লোগান দিয়েছেন, যা আচরণবিধির লঙ্ঘন। এটার বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। পক্ষপাত করেছে তারা। এ থেকে প্রশ্ন থেকে যায়, সামনে নির্বাচন সুষ্ঠু হবে কি না।

তবে ছাত্রদল থেকে মনোনীত ভিপি প্রার্থী আবিদুল ইসলাম খান বলেন, আচরণবিধি লঙ্ঘন হয়েছে, সেটার বিপরীতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। তাদের প্রতিবেদন অনুযায়ী, এখানে তারা কোনো অসংগতি দেখতে পায়নি। সুতরাং, যেটা বলা হচ্ছে, সেটা অপপ্রচার ও গুজব।

এদিকে স্বতন্ত্র ভিপি প্রার্থী উমামা ফাতেমা বলেন, আপাতত ডাকসু নির্বাচনের যথেষ্ট পরিবেশ-পরিস্থিতি আছে। ক্যাম্পাসে যে রাজনৈতিক পরিবেশ আপাতত সহাবস্থানে আছে, তা যেকোনো মুহূর্তে অস্থিতিশীল হতে পারে।

তবে ডাকসু নির্বাচন কমিশনাররা শঙ্কা দেখছেন না। রিটার্নিং কর্মকর্তা ও সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক গোলাম রব্বানী বলেন, ‘আমরা তো কোনো শঙ্কা দেখছি না। কেউই আমাদের কাছে অভিযোগও দেয়নি। সুষ্টু নির্বাচনের দিকেই আমরা হাঁটছি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

দাম্পত্যকলহের গুঞ্জন, মুখ খুললেন জাহিদ হাসান

গভর্নর আমাকে বাধ্যতামূলক ছুটি দেওয়ার কে: বিএফআইইউর প্রধান শাহীনুল

সেই রুহুল আমিনের বসুন্ধরা, বনানী ও উত্তরার জমিসহ ৫০০ কোটি টাকার সম্পত্তি ক্রোক

ছাত্রীকে তিন দিন আটকে রেখে ধর্ষণ, গ্রাম্য সালিসের মাধ্যমে বিয়ে

ঠাকুরগাঁওয়ের ৩টি আসনেই জয়ী হবে জামায়াত: মাওলানা হালিম

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত